কর্পোরেট অব্জার্ভেশন অথবা বস্ত্র-খাতের উৎপাদন বৃদ্ধি নিয়ে কিছু কথা:
Sustainability, Sustainable Growth Rate, Organic Growth টেকসই বৃদ্ধি, টেকসই প্রযুক্তি কথাগুলো শুনছি ২০০৭-৮ এর বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার পর থেকে। তার আগে এই শব্দগুলো আমার কান পর্যন্ত পৌঁছায়নি । আমার প্রাথমিক শিক্ষা বিজ্ঞান বিভাগে । পদার্থ , রসায়ন, গণিতের চক্র পেরিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং। তারপরে ঘুরে ফিরে দেশের বৃহত্তম রপ্তানীমুখি বস্ত্রশিল্পের কেরানী !
টেকসই বৃদ্ধি কি , কেন , কিভাবে-- সেটা একজন অর্থনীতিবিদের কাছ থেকে শোনার আকাঙ্ক্ষা আছে আমার। সে রকম কাউকে পাচ্ছি না আশে পাশে। কিন্তু আমি আমার অত্যল্প অভিজ্ঞতা দিয়ে , পরিপার্শ্ব দিয়ে, যেটুকু বুঝতে পারছি ,বোঝার চেষ্টা করছি-- সেটা সবার সঙ্গে আলোচনা করতে দোষ কি ! আশা করছি এই আলোচনা চোখে পড়লে আমার বন্ধু তালিকার কেউ না কেউ বিষয়টিকে আরো জলবৎ তরল করে দিতে পারবেন।
ব্যবসায় টিকে থাকার অন্যতম প্রধানতম শর্ত হচ্ছে ব্যবসা-বৃদ্ধি। প্রতিবছর ব্যবসা বৃদ্ধির টার্গেট থাকতে হবে, সেটার অ্যাচিভমেন্ট থাকতে হবে। মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতিবছর উৎপাদন বাড়তে হবে, কর্মচারীর বেতন সুবিধা বাড়াতে হবে ; পরিশেষে মালিকের মুনাফা বাড়তে হবে। এটি এতোই সহজবোধ্য একটা ব্যাপার, যে এই তত্ত্বের আর কোন বিকল্প থাকতে পারে, সেটা নিয়ে আমাদেরকে কেউ ভাবতে বলে নি। আমরা ভাবিও না ! শোনাকথা যেটুকু জানি, সাধারণত: ২০ থেকে ৩০ ভাগ ব্যবসা বৃদ্ধির টার্গেট থাকে মালিক-পক্ষের। তবে ১০ থেকে ১৫ ভাগ বৃদ্ধি হলেই বোঝা যায়, ব্যবসা লাভজনক রাস্তায় আছে। ব্যবসা বৃদ্ধির যথোপযুক্ত পন্থার সঙ্গে সঙ্গে গত কয়েকবছরে আরো কিছু শব্দের সঙ্গে আমি পরিচিতি হয়েছি। Breakeven , Depreciation Cost, Asset, Equity, Liability, Profit Margin, Business Expansion ইত্যাদি ইত্যাদি।
টেক্সটাইল ফ্যাক্টরী থেকে গার্মেন্টসে এসেছি প্রায় দেড়যুগ। গত আঠারো বছরে নানা মাপের গার্মেন্টস মালিকের সঙ্গে পরিচয় ঘটেছে। অনেকেই আমাকে তাঁদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ হওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। কয়েকজনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সৌহার্দ্যের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। অনেককে ছোট একটা কারখানা থেকে বৃহদায়তন কারখানায় উন্নীত হতে দেখেছি। গুটিকয়েক আছেন , যারা সুযোগ থাকা স্বত্বেও একটা নির্দিষ্ট আয়তনের বেশী উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ান নি। দেড়যুগ আগেও গার্মেন্টস ব্যবসার লাভ চোখে পড়ার মতো ছিল। ১টি আমেরিকান ডলার বাংলাদেশের ব্যাংকে এসেই সেটা ৭০ গুন ৮০ গুণের টাকায় পরিণত হতে দেখে উদ্যোক্তার এগিয়ে এসেছেন। পর্যাপ্ত সস্তা শ্রম , গ্যাসের সাপ্লাই, জমি, পানির সহজলভ্যতা আমদের দেশে আছে বলেই নানাধরনের উদ্যোক্তারা তাঁদের পুঁজি ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এই শিল্পে অংশ নিয়েছেন। বছর শেষের লাভের উদ্বৃত্ত টাকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ কারখানার মালিকরা তাঁদের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়েছেন। বাড়াতে বাড়াতে কেউ কেউ এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছেন ; এখন তাঁরা না পারছেন সেটা গিলতে না পারছেন উগরাতে !
তাজরিন ফ্যাশানের ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ও রানা প্লাজার ট্র্যাজেডি আমাদের পুরো গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রিকে খোলনলচে বদলে দিয়েছে। ছোট মাপের যে কারখানাগুলো বিভিন্ন মার্কেটের শেয়ার বিল্ডিং এ ছিল, তা বন্ধ হয়ে গেছে ACCORD , ALLIANCE –এর ধাক্কায়। মাঝারি মাপের ( ৬ থেকে ১২ লাইনের) কারখানাগুলোকে অগ্নি নির্বাপণ, বিল্ডিং স্ট্রাকচার ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হয়েছে। এতে করে ছোটদের যদি ৭০ লক্ষ থেকে ১ কোটি বাড়তি খরচ লেগে থাকে বড়দের লেগেছে আরো অনেক অনেক বেশী।
ট্রাজেডি হচ্ছে, এতো কিছু করার পরেও ক্রেতাদের মনরক্ষা করা যাচ্ছে না। বৈশ্বিক চাহিদার পতন ( কয়েকবছরে বিশ্বজুড়ে টেক্সটাইল পণ্যের বিক্রয় প্রায় ৪% কমে গেছে) , ক্রেতাদের অন্তঃর্বতী প্রতিযোগিতা , বিশ্ব-মন্দা ; নানাবিধ কারণে ইউরোপ , আমেরিকায় গার্মেন্টস-এর খুচরা মূল্যের দরপতন হয়েছে। এবং সেটার মাশুল দিতে হচ্ছে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পকে। জীবনযাত্রার মূল্য ও মান বৃদ্ধির ফলে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি আবশ্যকীয়। গার্মেন্টস-এর মূল উপাদান কাপড় ও অ্যাকসেসরিজ। বিশ্বব্যাপী গ্রিন আন্দোলনের ফলে চীন অনেক রঙ উৎপাদনের কারখানায় বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। ফলে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম গেছে বেড়ে। অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্যেরও দাম বেড়েছে একই সঙ্গে। এর প্রভাবে উৎপাদিত কাপড় ও আমদানি করা কাপড়ের দাম ঊর্ধ্বমুখি । শেষের কয়েক সিজনে এতো মন্দ সংবাদের ভিতরে একমাত্র সুসংবাদ ছিল সুতার দামের স্থিতাবস্থা। সুতার সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা লম্ফঝম্প করতে পারছিলেন না ; কারণ বিশ্বব্যাপী তুলার দাম কমতির দিকে। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহে হুট করে কটন সুতার দাম ১০~ ১৫% বেড়ে গেছে। যার যুক্তিসঙ্গত কারণ কি ,সেটা কেউ বলতে পারছেন না !
মোদ্দা কথা গার্মেন্টস শিল্প প্রাথমিক বছরগুলোতে যে পরিমাণ লাভ করতে পেরেছে এখন তা করতে পারছে না ! কিন্তু আমাদের মালিকেরা এমনভাবে তাঁদের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছেন ও করে চলেছেন যে তাঁদের বিশাল কারখানাগুলোকে টিকিয়ে রাখতে হলে খুব সস্তা দরের কাজ হলেও করতে হচ্ছে। খুচরা বিক্রয় মূল্যের সঙ্গে তাল মিলাতে গিয়ে , প্রাইস কোটেশন কোনভাবেই মিলাতে পারছেন না কেউ। এখন আমাদের সবাইকে নজর দিতে বলা হচ্ছে , অপচয়ের পরিমাণ কমিয়ে, কর্মদক্ষতা বাড়িয়ে, প্রোডাক্টিভিটি বাড়িয়ে নিজেদেরকে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকার চেষ্টা করতে।
আগের কথায় আসি ; যেহেতু আমাদের বস্ত্র-খাতের উৎপাদন বৃদ্ধি আজকের আলোচ্য । গত তিন দশকে আমাদের বস্ত্রশিল্পের উৎপাদন ক্ষমতা Sustainable Growth Rate-এ হয়েছে নাকি সেটা বা Organic Growth ছিল? এটা কিছুটা প্রশ্নবিদ্ধ। ১৫ বছর আগে যে মালিককে বলতে শুনেছি যে , তিনি ১২ লাইনের বেশী কারখানা বাড়াবেন না-- পরে সেই মালিককেই দেখেছি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ১০০ লাইনের গার্মেন্টস করতে! আর উচ্চ-সুদে মুফতে পাওয়া মুদ্রার তারল্য নিয়ে বিপাকে পড়া ব্যাংকাররা আরো বেশী উচ্চ-সুদে মালিকদেরকে শিল্প ঋণ দিয়েছেন। মালিকরাও সহজলভ্য ঋণ পেয়ে নিজেদের Asset তো বাড়িয়েছেন, একই সঙ্গে বাড়িয়েছেন তাঁদের Liability !
২০১৪-১৫ সালে শীতবস্ত্রের বড় একটা পরিমাণ বাংলাদেশ থেকে চীনে সরে যায়। আমাদের সোয়েটার কারখানার মালিকরা হতবাক ! ম্যানুয়াল মেশিনের সোয়েটারে আমরা বিনা প্রতিযোগিতায় বেসিক অর্ডারগুলো করছিলাম। একই সঙ্গে প্রায় শতকরা আশি ভাগ মালিক জার্মান , জাপানি ও চীনের জ্যাকার্ড মেশিন নিয়ে এসে নিজেদের সক্ষমতা বাড়িয়েছেন। এতো কিছুর পরেও দেখা গেল, চীনের কিছু কারখানা আমাদের চেয়েও ৩০% বা ৫০% কম সিএম( Cutting & Making) দিয়ে অর্ডার নিয়ে গেছে। বাজারের খোঁজ (Market Information) থেকে দেখা গেল, চীনের কিছু এলাকার মালিকরা হয়তো নিজের পুঁজি ও ব্যাঙ্কের ঋণ নিয়ে কারখানা করেছেন। সেটা একটা নির্দিষ্ট উৎপাদন ক্ষমতার । বছর তিনেকের ভিতরে তাঁদের নিজের পুঁজি ও ঋণ Breakeven-এ পৌঁছে গেছে। তাঁদের জ্যাকার্ড নিটিং মেশিনগুলোর Depreciation/ অবচয় এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সে যদি শুধুমাত্র শ্রমিকের খরচ ও বিদ্যুৎ খরচ হিসাব করে তাঁর সিএম মূল্য খুবই কম দাঁড়ায়। অন্যদিকে আমাদের মালিকের মাথার উপরে আছে ১২ থেকে ১৮% সুদের ব্যাংক ঋণ। আমাদের কস্টিং চীনের ওই সব কারখানার কাছে মার খাচ্ছে। এবং গত কয়েকবছরে আমাদের সোয়েটারের সিএম কস্টিং হু হু করে নীচে নামাতে বাধ্য হয়েছি আমরা।
ব্যাংকার বন্ধুর সাথে কথা বলে যা বোঝা গেল, তাঁরা উদ্যমী মালিকদের উৎসাহ দিয়ে থাকেন, কারখানার ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করার জন্য। একই সঙ্গে মালিকদের ও ব্যবসার নিজস্ব কতগুলো সীমাবদ্ধতা আছে, যেখানে কারখানার ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করা ছাড়া উপায় থাকে না।
প্রথমত: মুনাফার টাকার সঙ্গে ঋণের সহজলভ্যতা যোগ করে আমাদের মালিকদের পক্ষে হুট করে কারখানার ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করা তেমন দুঃসাধ্য কিছু নয়। তাই, কারখানা Breakeven মূল্যে পৌঁছানোর আগেই তাঁরা আরো বেশী ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে ধারণক্ষমতা বাড়িয়ে বসেন। তা ছাড়া এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা গার্মেন্টস। দ্বিতীয় কোন বিকল্প শিল্প নেই , যেখানে তাঁরা নিশ্চিন্তে ইনভেস্ট করতে পারেন।
দ্বিতীয়ত: অনেক ক্রেতাই কারখানা মালিকদের আরো বেশী উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য যুক্তিসংগত ও অযৌক্তিক উৎসাহ দিয়ে থাকেন। কিছু ক্রেতা আছে, যারা বড় কারখানা ছাড়া কাজ দিতে চায় না। বেশী লাভের আশায় মালিকরা তাঁদের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়ে চলেন।
তৃতীয়ত: একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরে, ম্যানেজমেন্টের Overhead Cost নির্দিষ্ট সীমায় পৌঁছে যায়। যে ধরণের মিড লেভেল ম্যানেজমেন্ট দিয়ে একটা ১২ লাইনের কারখানা চালানো যায় ; ঠিক সেই একই ম্যানেজমেন্ট দিয়ে ৩০ লাইনের কারখানা চালানো যায়। Overhead Cost একই রেখে শুধু মেশিন আর অপারেটর বাড়ালেই চলে। এই ব্যাপারটি অনেক মালিককে উদ্বুদ্ধ করে অপ্রয়োজনীয় উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে।
চতুর্থত: মালিক-পক্ষ চূড়ান্ত লাভক্ষতির হিসাব দূরে থাক ; নিজের সক্ষমতা বৃদ্ধির দিকে নজর না দিয়ে শুধুমাত্র উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর ব্যাপারে তাঁদের মধ্যে একটা লোভ কাজ করে। সামাজিক অবস্থানের একটা ব্যাপার স্যাপারও আছে, কে কতো বড় কারখানার মালিক ইত্যাদি ! অনেকাংশে দেখা যায়, মালিক যে দক্ষতার সঙ্গে ২০ লাইনের কারখানা চালাচ্ছেন। উৎপাদন ক্ষমতা দ্বিগুণ হয়ে গেলে , তিনি তাঁর মিড লেভেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে সেটা ম্যানেজ করতে হিমসিম খান। ফলশ্রুতিতে কারখানা অলাভজনক হয়ে যায় এবং সস্তা দরের কাজ করতে বাধ্য হন তিনি। অথবা ঋণের বোঝা কাঁধে নিয়ে নিতান্তই আইনি ঝামেলা এড়াতে কারখানা চালিয়ে যান।
আমাদের শিল্পমন্ত্রী স্বপ্ন দেখাচ্ছেন, ২০২১ সাল নাগাদ ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি-মুখী করার ব্যাপারে। আমাদের নিজেদের দক্ষতা, চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা, রাস্তা ঘাট, বিদ্যুৎ, গ্যাসের পর্যাপ্ততা আছে কিনা সেটা যাচাই-বাছাই করা জরুরী। যদিও আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, যতোদিন যাবে আমরা বেশী মূল্যের গার্মেন্টস করব। আমাদের উচ্চমূল্যের / High End Garment Product তৈরি একটা বড় ভূমিকা রাখবে ৫০ বিলিয়নের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে। তাছাড়া, সকল বড় কারখানার মালিকরাই, এখন অত্যাধুনিক মেশিন নিয়ে উৎপাদন বাড়াচ্ছেন। সকলেই অপচয় কমানোর দিকে নজর দিয়েছেন। ERP, Lean Method, Industrial Engineering প্রয়োগ করে সবাই কর্মদক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সবকিছুর পরে, ২৭-২৮ বিলিয়নের রপ্তানি ১০~ ১৫% Organic Growth ধরে যদি ৪০ বিলিয়নেও পৌঁছায়, তাতেও আমাদের এই জনবহুল বাংলাদেশের আগামী কয়েক দশক বেশ ভালোই কাটবে।
শেষ করার আগে এই সেক্টরের এক বড়ভাইয়ের প্রয়োজনীয় রসিকতা মনে পড়ে গেল। সেই বড়ভাই আমাকে বলছিলেন, ‘শ্রমিকদের যে রকম নানা ধরণের ট্রেনিং দেওয়া হয়। সময় হয়েছে আমাদের কারখানার মালিকদেরকে বিশেষ ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করা!’
Written By :
Jahid Jahidur Sir
TEX-EBO INTERNATIONAL PTE LTD.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন