পুরান ঢাকার ব‌িখ্যাত কাপড়ের মার্কেট ইসলামপুর | Islampur Fabric Market - Textile Lab | Textile Learning Blog
পুরান ঢাকার ব‌িখ্যাত কাপড়ের মার্কেট ইসলামপুর
দেশে তৈরি পোশাকের পাইকারি বাজার হিসেবে খ্যাত রাজধানীর পুরান ঢাকার ইসলামপুর। পাইকারি বাজার হিসেবে

অধিক পরিচিত হলেও, খুচরা দোকানের সংখ্যাও এখানে অনেক। বিশেষ করে যারা কাপড় কিনে জামা তৈরি করেন, তাদের সবসময়ের পছন্দ ইসলামপুর। পুরান ঢাকার ইসলামপুর হলো দেশের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী পাইকারি গজ ও শাড়ি কাপড়ের বিশাল বাজার। এখানকার ব্যবসায়ীদের দাবি, রাজধানীর অন্যান্য বিপণিবিতানগুলোর তুলনায় এখানকার পণ্যের দাম কম। আর এ জন্যই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাইকারি ও খুচরা ক্রেতায় জমজমাট থাকে ইসলামপুর বাজার। দেশে নরসিংদীর বাবুরহাট ও রূপগঞ্জের ভুলতা-গাউছিয়া বৃহৎ কাপড়ের ব্যবসার জন্য পরিচিত হলেও কাপড়ের বৈচিত্র্যতার কারণে দেশজুড়ে ব্যবসায়ীদের কাছে ইসলামপুর মার্কেটের কদর একটু বেশি। 

তাই ঈদসহ বিভিন্ন উৎসব সামনে রেখে ইসলামপুরে রাজধানীর নিউমার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনী চক, মিরপুর, ধানমন্ডি, মগবাজার, সদরঘাটসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা আসছেন কাপড় কিনতে।

নামকরণের ইতিহাসঃ

এসি মার্কেট, হামিদ ম্যানসন, চায়না মার্কেট, নবাববাড়ী গেটসহ পুরো এলাকায় পাইকারি ও খুচরা দোকান রয়েছে প্রায় ৫ হাজার। জানা যায়, মোগল আমলে বাংলার সুবাদার ইসলাম খাঁ চিশতির নামানুসারে এ এলাকাটির নামকরণ হয়েছে ইসলামপুর। এখানে মূলত কোম্পানি আমলের ১৭৭৩ সাল থেকে পাইকারি কাপড়ের ব্যবসা শুরু হয়। তবে তার আগে ইসলামপুরে বিভিন্ন ফলের ব্যবসা ছিল, সে জন্য এলাকাটিকে আমপট্টি বলা হতো।

এখানে ছোট-বড় দোকান আছে প্রায় ২ হাজার। এর বাইরেও অন্তত ৩ হাজার ছোট ও মাঝারি দোকান আছে বলে জানান এখানকার ব্যবসায়ীরা। তারা আরও জানান যে, প্রতিদিন এ বাজারে গড়ে কয়েক কোটি টাকার কাপড়ের ব্যবসা হয়। তবে ঈদের প্রাক্কালে তা কখনো শতকোটি টাকাতেও ওঠে। ইসলামপুরের কাপড় শুধু দেশেই নয়, দেশের বাইরেও রপ্তানি করা হয়। মেয়েদের পোশাকের থ্রি-পিস আমেরিকা, সৌদি আরব ও কানাডায় এবং শার্ট-প্যান্টের কাপড় আমেরিকা, জার্মানি, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ায় রপ্তানি করা হয় বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

কোথায় কী আছেঃ

ইসলামপুর মূল সড়কের প্রথম ও শেষ ভাগের দুপাশের মার্কেটগুলোয় রয়েছে শাড়ি-কাপড়। মাঝামাঝি স্থানের মার্কেটে বেচাবিক্রি হয় চাদর, থ্রি-পিস, স্যুটিং কাপড়, ভয়েল পপলিন ও মার্কিন কাপড়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কাপড়ের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখন মূল সড়ক ছাপিয়ে আশপাশের সড়ক ও লেনেও স্থান করে নিয়েছে। জিএল গার্থ লেন, আশেক লেন, সৈয়দ আওলাদ হোসেন রোডসহ নওয়াববাড়িতে রয়েছে বিশাল সব কাপড়ের মার্কেট, বিশেষ করে এখন পাইকারি কাপড়ের বাজার বলতেই ক্রেতাদের প্রথম পছন্দের তালিকাই হলো এই নওয়াববাড়ী। 

নওয়াববাড়ীর প্রধান ফটক পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলেই দুপাশে চোখে পড়বে বিশাল সব পাইকারি মার্কেট, সঙ্গে খুচরা ক্রেতাদের জন্যও রয়েছে হকার্স মার্কেট। চায়না মার্কেট পার করে আরেকটু এগিয়ে গেলে দেখা মিলবে প্লাজা মার্কেটের। এখানকার নামকরা সব মার্কেট হলো মনসুর ক্যাসেল, ইসলাম প্লাজা, কে হাবিবুল্লাহ মার্কেট ও চায়না মার্কেট। আটতলা ভবনের প্রত্যেক তলায়ই পাবেন গজ কাপড়ের বাহারি সব কালেকশন।

ইসলামপুর মার্কেট নিয়ে কথা হচ্ছিল মার্কেট মালিক সমিতির সেক্রেটারি মাকসুদুর রহমান সোহেলের সঙ্গে। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল এ মার্কেটের বিশেষত্ব সম্পর্কে, কেনই বা ক্রেতারা এ মার্কেটে আসবেন ? সব প্রশ্নের উত্তরই তিনি সাবলীলভাবে দিয়েছেন। 

তিনি জানান, বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী মার্কেট এটি। ‘আমাদের সুনাম বলেন, আস্থা বলেন সব আমরা আগেই অর্জন করে নিয়েছি। এখন আর আমাদের নতুন করে আস্থা বা সুনাম কিংবা ক্রেতা ধরে রাখার কোনো বিষয় নেই। ক্রেতারা জানেন আমাদের বাজারের কাপড়ের মান সম্পর্কে। বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো মানের কাপড় এখানেই তৈরি হয় এবং এখানেই কেনাবেচা হয়।’ তার কাছে আরও জানতে চাওয়া হয়েছিল এত ছোট এলাকায় বিশাল বাণিজ্যে কোনো ধরনের নিরাপত্তাজনিত সমস্যা হয় কিনা। 

তিনি জানান, নিরাপত্তাজনিত সমস্যা দূরীকরণে আমরা বিশেষ পদপে গ্রহণ করেছি। এখানে সার্বণিক কমিউনিটি পুলিশসহ থানা থেকে টহল পুলিশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সর্বোপরি তিনি বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী মার্কেট ইসলামপুর মার্কেট। এ মার্কেটের সব সুনাম ও সুবিধাদি এবং সকল সমস্যা নিরসনে আমরা বদ্ধপরিকর।

লোকেশন অনুযায়ী মার্কেটঃ 

জি এল গার্থ লেন, আশেক লেন, সৈয়দ আওলাদ হোসেন রোড সহ নওয়াব বাড়ীতে রয়েছে বিশাল বিশাল সব কাপড়ের মার্কেট, বিশেষ করে এখন পাইকারী কাপড়ের বাজার বলতেই ক্রেতাদের প্রথম পছন্দের তালিকায় হল এই নওয়াব বাড়ী । ঐতিহ্যবাহি নওয়াব বাড়ীর প্রধান ফটক পেরিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলেই দু-পাশে রয়েছে বিশাল বিশাল সব পাইকারী মার্কেট সঙ্গে খুচরা ক্রেতাদের জন্যও রয়েছে হকার্স মার্কেট ।

এবার জেনে নেয়া যাক সেসব মার্কেটে দোকানিরা কি কি পসরা বিক্রির জন্য সাজিয়ে রেখেছেন। নওয়াব বড়ী গেট দিয়ে প্রবেশ করতেই প্রথমে পড়বে মনসুর ক্যাসেল, ইসলাম প্লাজা ,কে হাবিবুল্লাহ মার্কেট।এসব মার্কেটে মিলবে দেশি বিদেশি শার্ট ,প্যান্ট,পাঞ্জাবি ও মহিলাদের জামার গজ কাপড়।

আরেকটু এগিয়ে গেলে পাবেন জুবায়ের ম্যানসনে এক কালার পলেষ্টার ও আন ষ্টিজ থ্রী পিছ। 

জুবায়ের ম্যানসনের পাশেই রয়েছে হোসেন মার্কেট সেখানেও মিলবে বাহারি ডিজাইনের বিভিন্ন প্রকারের গজ কাপড়।হোসেন মার্কেটের ঠিক সম্মুখেই রয়েছে ঐতিহ্যবাহি আহসান মঞ্জীল সুপার মার্কেট যা চায়না মার্কেট নামেই সর্বাধিক পরিচিত। অষ্টম তলা পর্যন্ত এই মার্কেটে পাবেন সর্ব প্রকারের গজ কাপড়। একই মার্কেটে সব ধরণের গজ কাপড়ের দোকান রয়েছে যা ২য় আর কোন মার্কেটে নেই । বিশাল আয়তনের এই মার্কেটের শেষ সিমা একেবারে আহসান মঞ্জীল জাদু ঘরের সিমানা প্রাচীর পর্যন্ত। 

চায়না মার্কেটের প্রতিটি শো-রুমেই দেশিয় কাপড়ের পাশা পাশি উন্নত মানের বিদেশি গজ কাপড়ও বিক্রয় করা হয়। চায়না মার্কেটের দু-পাশে রয়েছে নওয়াব বাড়ী ফুট পাত দোকান মালিক সমিতির খুচড়া গজ কাপড়ের দোকান।যেখান থেকে সাধারণ ক্রেতারা তুলনা মূলক সাশ্রয়ী মূল্যে গজ কাপড় কিনতে পারবেন । 

নওয়াব বাড়ীর সর্বশেষ প্রান্তে রয়েছে প্লাজা মার্কেট।এখানে পাবেন গার্মেন্টস ক্যাটাগরির গজ কাপড় ।

ইসলামপুর এলাকার আরো একটি প্রসিদ্ধ গজ কাপড়ের মার্কেটের নাম হল গুলশান আরা সিটি । এখানে পাওয়া যাবে শিফন জর্জেট ,টিস্যু, ভেলবেট, জিন্স সহ ডেনিমের গজ কাপড় । 

চাদরের গজ কাপড়ের জন্য রয়েছে দৌলত কমপ্লেক্স 

ভারতীয় নন স্ট্রেস থ্রী পিছের জন্য হায়াৎ দোলন কমপ্লেক্স সহ বেশ কয়েকটি মার্কেট । আদেল কমপ্লেক্স, হাকিম ম্যানসন, আমির মার্কেট সহ বেশ কিছু মার্কেটে রয়েছে দেশিয় শাড়ী কাপড়ের দোকান ।

কেন কি কারণে বর্তমানে ব্যবসায় ধস নেমেছে ? 

বিশিষ্ট ব্যবসায়ি জানালেন কাপড় আমদানি করার পর সঠিক সময়ে এসে বাজারে পৌছাতে না পারার কারণে খরচ বেড়ে যায় , ডিজাইন ফেল হয়ে যায় ফলে লোকসানে মাল বিক্রি করে ব্যাংক লোন পরিষোধ করতে হয় ।  

লোকসানের কারণ খুজতে গিয়ে জানা গেল দেশি সাটিং কাপড়ের গজ যখন ছিল ৭০ টাকা তখন পাশবর্তি দেশের প্রতি গজ ছিল ১২০ টাকা । আর এখন অবৈধ উপায়ে মাল আসায় ,সেই দেশের কাপড়ের প্রতি গজ হল মাত্র ৫০ - ৫৫ টাকা । প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে অনেক মিল প্রায় বন্ধ ।

পুরান ঢাকার ব‌িখ্যাত কাপড়ের মার্কেট ইসলামপুর | Islampur Fabric Market

পুরান ঢাকার ব‌িখ্যাত কাপড়ের মার্কেট ইসলামপুর
দেশে তৈরি পোশাকের পাইকারি বাজার হিসেবে খ্যাত রাজধানীর পুরান ঢাকার ইসলামপুর। পাইকারি বাজার হিসেবে

অধিক পরিচিত হলেও, খুচরা দোকানের সংখ্যাও এখানে অনেক। বিশেষ করে যারা কাপড় কিনে জামা তৈরি করেন, তাদের সবসময়ের পছন্দ ইসলামপুর। পুরান ঢাকার ইসলামপুর হলো দেশের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী পাইকারি গজ ও শাড়ি কাপড়ের বিশাল বাজার। এখানকার ব্যবসায়ীদের দাবি, রাজধানীর অন্যান্য বিপণিবিতানগুলোর তুলনায় এখানকার পণ্যের দাম কম। আর এ জন্যই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাইকারি ও খুচরা ক্রেতায় জমজমাট থাকে ইসলামপুর বাজার। দেশে নরসিংদীর বাবুরহাট ও রূপগঞ্জের ভুলতা-গাউছিয়া বৃহৎ কাপড়ের ব্যবসার জন্য পরিচিত হলেও কাপড়ের বৈচিত্র্যতার কারণে দেশজুড়ে ব্যবসায়ীদের কাছে ইসলামপুর মার্কেটের কদর একটু বেশি। 

তাই ঈদসহ বিভিন্ন উৎসব সামনে রেখে ইসলামপুরে রাজধানীর নিউমার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনী চক, মিরপুর, ধানমন্ডি, মগবাজার, সদরঘাটসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা আসছেন কাপড় কিনতে।

নামকরণের ইতিহাসঃ

এসি মার্কেট, হামিদ ম্যানসন, চায়না মার্কেট, নবাববাড়ী গেটসহ পুরো এলাকায় পাইকারি ও খুচরা দোকান রয়েছে প্রায় ৫ হাজার। জানা যায়, মোগল আমলে বাংলার সুবাদার ইসলাম খাঁ চিশতির নামানুসারে এ এলাকাটির নামকরণ হয়েছে ইসলামপুর। এখানে মূলত কোম্পানি আমলের ১৭৭৩ সাল থেকে পাইকারি কাপড়ের ব্যবসা শুরু হয়। তবে তার আগে ইসলামপুরে বিভিন্ন ফলের ব্যবসা ছিল, সে জন্য এলাকাটিকে আমপট্টি বলা হতো।

এখানে ছোট-বড় দোকান আছে প্রায় ২ হাজার। এর বাইরেও অন্তত ৩ হাজার ছোট ও মাঝারি দোকান আছে বলে জানান এখানকার ব্যবসায়ীরা। তারা আরও জানান যে, প্রতিদিন এ বাজারে গড়ে কয়েক কোটি টাকার কাপড়ের ব্যবসা হয়। তবে ঈদের প্রাক্কালে তা কখনো শতকোটি টাকাতেও ওঠে। ইসলামপুরের কাপড় শুধু দেশেই নয়, দেশের বাইরেও রপ্তানি করা হয়। মেয়েদের পোশাকের থ্রি-পিস আমেরিকা, সৌদি আরব ও কানাডায় এবং শার্ট-প্যান্টের কাপড় আমেরিকা, জার্মানি, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ায় রপ্তানি করা হয় বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

কোথায় কী আছেঃ

ইসলামপুর মূল সড়কের প্রথম ও শেষ ভাগের দুপাশের মার্কেটগুলোয় রয়েছে শাড়ি-কাপড়। মাঝামাঝি স্থানের মার্কেটে বেচাবিক্রি হয় চাদর, থ্রি-পিস, স্যুটিং কাপড়, ভয়েল পপলিন ও মার্কিন কাপড়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কাপড়ের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখন মূল সড়ক ছাপিয়ে আশপাশের সড়ক ও লেনেও স্থান করে নিয়েছে। জিএল গার্থ লেন, আশেক লেন, সৈয়দ আওলাদ হোসেন রোডসহ নওয়াববাড়িতে রয়েছে বিশাল সব কাপড়ের মার্কেট, বিশেষ করে এখন পাইকারি কাপড়ের বাজার বলতেই ক্রেতাদের প্রথম পছন্দের তালিকাই হলো এই নওয়াববাড়ী। 

নওয়াববাড়ীর প্রধান ফটক পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলেই দুপাশে চোখে পড়বে বিশাল সব পাইকারি মার্কেট, সঙ্গে খুচরা ক্রেতাদের জন্যও রয়েছে হকার্স মার্কেট। চায়না মার্কেট পার করে আরেকটু এগিয়ে গেলে দেখা মিলবে প্লাজা মার্কেটের। এখানকার নামকরা সব মার্কেট হলো মনসুর ক্যাসেল, ইসলাম প্লাজা, কে হাবিবুল্লাহ মার্কেট ও চায়না মার্কেট। আটতলা ভবনের প্রত্যেক তলায়ই পাবেন গজ কাপড়ের বাহারি সব কালেকশন।

ইসলামপুর মার্কেট নিয়ে কথা হচ্ছিল মার্কেট মালিক সমিতির সেক্রেটারি মাকসুদুর রহমান সোহেলের সঙ্গে। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল এ মার্কেটের বিশেষত্ব সম্পর্কে, কেনই বা ক্রেতারা এ মার্কেটে আসবেন ? সব প্রশ্নের উত্তরই তিনি সাবলীলভাবে দিয়েছেন। 

তিনি জানান, বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী মার্কেট এটি। ‘আমাদের সুনাম বলেন, আস্থা বলেন সব আমরা আগেই অর্জন করে নিয়েছি। এখন আর আমাদের নতুন করে আস্থা বা সুনাম কিংবা ক্রেতা ধরে রাখার কোনো বিষয় নেই। ক্রেতারা জানেন আমাদের বাজারের কাপড়ের মান সম্পর্কে। বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো মানের কাপড় এখানেই তৈরি হয় এবং এখানেই কেনাবেচা হয়।’ তার কাছে আরও জানতে চাওয়া হয়েছিল এত ছোট এলাকায় বিশাল বাণিজ্যে কোনো ধরনের নিরাপত্তাজনিত সমস্যা হয় কিনা। 

তিনি জানান, নিরাপত্তাজনিত সমস্যা দূরীকরণে আমরা বিশেষ পদপে গ্রহণ করেছি। এখানে সার্বণিক কমিউনিটি পুলিশসহ থানা থেকে টহল পুলিশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সর্বোপরি তিনি বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী মার্কেট ইসলামপুর মার্কেট। এ মার্কেটের সব সুনাম ও সুবিধাদি এবং সকল সমস্যা নিরসনে আমরা বদ্ধপরিকর।

লোকেশন অনুযায়ী মার্কেটঃ 

জি এল গার্থ লেন, আশেক লেন, সৈয়দ আওলাদ হোসেন রোড সহ নওয়াব বাড়ীতে রয়েছে বিশাল বিশাল সব কাপড়ের মার্কেট, বিশেষ করে এখন পাইকারী কাপড়ের বাজার বলতেই ক্রেতাদের প্রথম পছন্দের তালিকায় হল এই নওয়াব বাড়ী । ঐতিহ্যবাহি নওয়াব বাড়ীর প্রধান ফটক পেরিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলেই দু-পাশে রয়েছে বিশাল বিশাল সব পাইকারী মার্কেট সঙ্গে খুচরা ক্রেতাদের জন্যও রয়েছে হকার্স মার্কেট ।

এবার জেনে নেয়া যাক সেসব মার্কেটে দোকানিরা কি কি পসরা বিক্রির জন্য সাজিয়ে রেখেছেন। নওয়াব বড়ী গেট দিয়ে প্রবেশ করতেই প্রথমে পড়বে মনসুর ক্যাসেল, ইসলাম প্লাজা ,কে হাবিবুল্লাহ মার্কেট।এসব মার্কেটে মিলবে দেশি বিদেশি শার্ট ,প্যান্ট,পাঞ্জাবি ও মহিলাদের জামার গজ কাপড়।

আরেকটু এগিয়ে গেলে পাবেন জুবায়ের ম্যানসনে এক কালার পলেষ্টার ও আন ষ্টিজ থ্রী পিছ। 

জুবায়ের ম্যানসনের পাশেই রয়েছে হোসেন মার্কেট সেখানেও মিলবে বাহারি ডিজাইনের বিভিন্ন প্রকারের গজ কাপড়।হোসেন মার্কেটের ঠিক সম্মুখেই রয়েছে ঐতিহ্যবাহি আহসান মঞ্জীল সুপার মার্কেট যা চায়না মার্কেট নামেই সর্বাধিক পরিচিত। অষ্টম তলা পর্যন্ত এই মার্কেটে পাবেন সর্ব প্রকারের গজ কাপড়। একই মার্কেটে সব ধরণের গজ কাপড়ের দোকান রয়েছে যা ২য় আর কোন মার্কেটে নেই । বিশাল আয়তনের এই মার্কেটের শেষ সিমা একেবারে আহসান মঞ্জীল জাদু ঘরের সিমানা প্রাচীর পর্যন্ত। 

চায়না মার্কেটের প্রতিটি শো-রুমেই দেশিয় কাপড়ের পাশা পাশি উন্নত মানের বিদেশি গজ কাপড়ও বিক্রয় করা হয়। চায়না মার্কেটের দু-পাশে রয়েছে নওয়াব বাড়ী ফুট পাত দোকান মালিক সমিতির খুচড়া গজ কাপড়ের দোকান।যেখান থেকে সাধারণ ক্রেতারা তুলনা মূলক সাশ্রয়ী মূল্যে গজ কাপড় কিনতে পারবেন । 

নওয়াব বাড়ীর সর্বশেষ প্রান্তে রয়েছে প্লাজা মার্কেট।এখানে পাবেন গার্মেন্টস ক্যাটাগরির গজ কাপড় ।

ইসলামপুর এলাকার আরো একটি প্রসিদ্ধ গজ কাপড়ের মার্কেটের নাম হল গুলশান আরা সিটি । এখানে পাওয়া যাবে শিফন জর্জেট ,টিস্যু, ভেলবেট, জিন্স সহ ডেনিমের গজ কাপড় । 

চাদরের গজ কাপড়ের জন্য রয়েছে দৌলত কমপ্লেক্স 

ভারতীয় নন স্ট্রেস থ্রী পিছের জন্য হায়াৎ দোলন কমপ্লেক্স সহ বেশ কয়েকটি মার্কেট । আদেল কমপ্লেক্স, হাকিম ম্যানসন, আমির মার্কেট সহ বেশ কিছু মার্কেটে রয়েছে দেশিয় শাড়ী কাপড়ের দোকান ।

কেন কি কারণে বর্তমানে ব্যবসায় ধস নেমেছে ? 

বিশিষ্ট ব্যবসায়ি জানালেন কাপড় আমদানি করার পর সঠিক সময়ে এসে বাজারে পৌছাতে না পারার কারণে খরচ বেড়ে যায় , ডিজাইন ফেল হয়ে যায় ফলে লোকসানে মাল বিক্রি করে ব্যাংক লোন পরিষোধ করতে হয় ।  

লোকসানের কারণ খুজতে গিয়ে জানা গেল দেশি সাটিং কাপড়ের গজ যখন ছিল ৭০ টাকা তখন পাশবর্তি দেশের প্রতি গজ ছিল ১২০ টাকা । আর এখন অবৈধ উপায়ে মাল আসায় ,সেই দেশের কাপড়ের প্রতি গজ হল মাত্র ৫০ - ৫৫ টাকা । প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে অনেক মিল প্রায় বন্ধ ।

কোন মন্তব্য নেই: