১০০% রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের(গার্মেন্টস + অন্যান্য) রপ্তানি সংশ্লিষ্ট আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ড জেনে রাখুন কাজে লাগবে।
(১) EXP Form কী? এটি কে জারী করেন?
উত্তরঃ পণ্য রপ্তানির সময় পণ্যের রপ্তানি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য সম্বলিত ফর্ম হলো EXP Form, EXP (Export Permission ) Form লিয়েন ব্যাংক জারী করে থাকেন, এটি লিয়েন ব্যাংক জারী করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ড্যাস বোর্ড / ই- সার্ভিস পোস্ট দিয়ে রাখে। EXP Form যে সকল তথ্য থাকে;
(ক) লিয়েন ব্যাংক নাম, ঠিকানা ;
(খ) ক্রেতার নাম, ঠিকানা ;
(গ) রপ্তানিকারকের নাম, ঠিকানা ;
(ঘ) রপ্তানি পণ্যের বর্ননা;
(ঙ) পরিমাণ ;
(চ) পণ্য মূল্য ;
(ছ) পণ্যের এইচ,এস,কোড;
(জ) পণ্যের ডেস্টিনেশন;
উল্লেখ্য একটি মাস্টার এলসি-এর বিপরীতে একাধিক EXP হতে পারে। অর্থাৎ মুল মাস্টার এলসি-এর বিপরীতে ঐ এলসি-এর যত পণ্য যেই পরিমাণ পণ্য, যে মুল্যের পণ্য, যে চালানে যতটুকু রপ্তানি হবে সেই পরিমাণ পণ্যের জন্য একটি ই,এক্স,পি হবে।
EXP শুধুমাত্র সরাসরি রপ্তানিকারক ও ইপিজেড এর ক্ষেত্রে জারী করে থাকেন। তবে Deemed Exporter এর ক্ষেত্রে EXP Form হয় না। Deemed Exporter এর ক্ষেত্রে ইউ,পি এবং ব্যাক টু ব্যাক এলসি এর মাধ্যমে রপ্তানি হয়ে থাকে ম
(২) PRC (Proceed Realization Certificate)যাচাই কিভাবে করতে হয়?
উত্তরঃ EXP Form - এ যে তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ই-সার্ভিসের ড্যাস বোর্ড থাকে সেটিই পরবর্তীতে যখন ফরেন কারেন্সি রিয়েলাইজ হয়ে যায় তখন PRC তে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায় বা রপ্তান্তরিত হয়ে যায় । সরাসরি রপ্তানিকারকের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের ড্যাস বোর্ড গিয়ে PRC যাচাই করা যায় তবে প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারকের ক্ষেত্রে লিয়েন ব্যাংকে গিয়ে PRC তথ্য যাচাই করতে হয়। সে ক্ষেত্রে বিল গুলো ভালো করে যাচাই করতে হয়। খালি রেজিস্ট্রারে তথ্য থাকলে হবে না, বিল গুলোর পেমেন্ট কোন মুদ্রায় এসেছে সেই চেক/ড্রাফট /আনুষঙ্গিক দলিলাদি দেখে বা যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হতে হয়।
(৩) পণ্য রপ্তানির পর রপ্তানিমূল্যের কী পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা এলে তা গ্রহণযোগ্য হবে?
উত্তরঃ মোট মাস্টার এলসি-এর ৫% কমবেশি বৈদেশিক মুদ্রা এলে তা গ্রহণযোগ্য হবে। উদাহরণস্বরুপ রহমান গার্মেন্টস যে ১,০০,০০০ মাঃডঃ এর মাস্টার এলসি পেয়েছিল সে মাস্টার এলসি বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংকে সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা প্রত্যাবাসন হবে তবে তার বিভিন্ন কমিশন, ফি ইত্যাদি কর্তন করে বাকি অর্থ বাংলাদেশ টাকায় রুপান্তর করে আমদানিকারকের ( রহমান গার্মেন্টস) লিয়েন ব্যাংকে পরিশোধ করবেন। সাধারণত এই কমবেশি অবশ্যই ৫% বা তার কম হতে হবে।
(৪) ৫% এর কম বৈদেশিক মুদ্রা রিয়েলাইজ হলে কী তা গ্রহণযোগ্য হবে?
উত্তরঃ ৫% কমবেশি বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ গ্রহনযোগ্য হবে। তবে কোন বিশেষ কারণে এর চেয়ে কম হলে তার ব্যাখ্যা বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে উল্লেখ থাকতে হবে। তবে ৫% এর কম হলে ডিমান্ড নোট জারী করতে হবে মানে প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানো নোটিশ জারী করতে হবে। উদাহরণস্বরুপ রহমান গার্মেন্টস যদি ৯৩,০০০ হাজার মাঃডঃ রিয়েলাইজ করল, তখন প্রশ্ন এসে যায় উক্ত প্রতিষ্ঠান রপ্তানির লক্ষ্যে ১,০০,০০০ মাঃডঃ এর পণ্য উৎপাদনে যে পরিমাণ কাচামাল প্রয়োজন তাই সে সংগ্রহ করেছে কিন্তু সমপরিমাণ পণ্য উৎপাদন করে পণ্য রপ্তানি করে সম্পূর্ণ বৈদেশিক মুদ্রা প্রত্যাবাসন করতে পারেননি অর্থাৎ ধরে নেওয়া হবে এক্ষেত্রে তিনি কিছু কাচামাল রপ্তানি করতে ব্যর্থ হয়েছেন ফলে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা উপকরণের উপর প্রযোজ্য শুল্ককর তাকে হারাহারি ভাবে ফেরত দিতে হবে। অপর দিকে আমদানি নীতি আদেশে ন্যুনতম ভ্যালু এডিশন বিষয় বলা হয়েছে তাও কমপ্লাই করে না, ফলে এ জাতীয় ক্ষেত্রে ৫% এর কম বৈদেশিক মুদ্রা প্রত্যাবাসন হলে প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানো নোটিশ জারী করতে হবে, ডিমান্ড নোট জারী করে শুল্ককর আদায় করে নিতে হবে।
(লেখা ভালো লাগলে শেয়ার দিন, আরো লেখা চান কিনা মন্তব্য করবেন)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন