বি.এস.সি. ইন টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং সিলেবাস (কিছু ভুল ধারনা, কিছু কথা, কিছু বাস্তবতা, কিছু সীমাবদ্ধতা, কিছু করনীয়) - Textile Lab | Textile Learning Blog
প্রসঙ্গ: বি.এস.সি. ইন টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং সিলেবাস (কিছু ভুল ধারনা, কিছু কথা, কিছু বাস্তবতা, কিছু সীমাবদ্ধতা, কিছু করনীয়)
টেক্সটাইল সেক্টরের সাথে জড়িত সবার জন্য। অনেক বড় পোস্ট কিন্তু গুরুত্বপূর্ন তাই সকলকে পড়ার অনুরোধ রইল আর যদি মনে করেন তবে শেয়ার-ও করতে পারেন।

কিছু ভুল ধারনা:
আমাদের অনেকের মনে-ই কিছু ভুল ধারনা আছে যে, আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থা এত খারাপ যে ছেলে-পুলেরা পাশ করার পর কিছুই পারে না। তাদের কে লেটেস্ট টেকনোলজি শেখানো উচি‌ৎ। লেটেস্ট মেশিন সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান দেয়া উচি‌ৎ। মান্ধাতার আমলের টেকনোলজি ফেলে দেয়া উচি‌ৎ।

আমি বলব একটু থামেন, আমরা কোন ট্রেনিং প্রোগ্রাম শেখাই না বা বি.এস.সি. ইন টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং কোন যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষন নয় যে আপনার যে মেশিন দিয়ে কাজ করতে হবে সেই মেশিনের ট্রেনিং দিয়ে দিব। যদি তাই হয় তাহলে দেখেন আজকে পৃথিবী এতটাই দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে যে ১ম বর্ষে একটা ছাত্রকে যদি লেটেস্ট কোন মেশিন শেখানো-ও হয় তবু সে পাশ করে বের হতে হতে সেই টেকনোলজি ৩ বছরের পুরনো হয়ে যাবে।
প্রকৃতপক্ষে গ্র্যাডুয়েশনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে যে, একটি ছাত্র যেন তার ৪ বছরের শিক্ষা জীবনে এটা শিখতে পারে যে কিভাবে শিখতে হয় তাহলে সে যেখানেই যাক না কেন যে মেশিনেই কাজ করুক না কেন সেটা তার জন্য কোন সমস্যার সৃষ্টি করবে না। আসলেই একজন ইন্জিনিয়ারিং স্টুডেন্ট এর ৪ বছর সে ইন্জিনিয়ারিং বেসিক বা বর্ণপরিচয় সম্পন্ন হয়, শেখা শুরু হয় তো যখন সে কাজ করা শুরু করে।



কিছু কথা:
আমি যেহেতু বি.এস.সি. ইন টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং পড়াই তাই আমাদের একটি টার্গেট থাকে যে একটি ছাত্র যাতে পড়াশোনা শেষ করে যেখানেই চাকরি বা কাজ করুক না কেন সে যেন কখনোই অপ্রস্তুত বা অপমানজনক কোন পরিস্থিতিতে না পরে তাই সুযোগ পেলেই ক্লাসে আমি একটা কথা বলি, "Learn what do you need, Do what you have learned". আসলে কথা হল,জ্ঞান অসীম তাই একজনের জীবদ্দশায় সকল জ্ঞানের সন্ধান কস্মিনকালেও সম্ভব না আর আমরা প্রকৌশল শিক্ষায় এতটা সময়-ও থাকে না যে সব কিছু নিয়ে আলোচনা করতে পারব। যে কারনে বাংলায় একটা কথা আছে, "জানার কোন শেষ নাই, জানার চেষ্টা বৃথা তাই" কিন্তু এখানে একটা সমস্যা হল যখন একজন পড়াশোনা করে তখন সে কিভাবে জানবে যে, তার প্রফেশনাল লাইফে আসলে কি প্রয়োজন হবে? এর সহজ উত্তর হলো, আমাদের সিলেবাস। সিলেবাস বা কারিকুলাম ডিজাইন করা হয় সাধারনত এই সমস্ত কিছু মাথায় রেখেই যাতে একজন ছাত্র তার জীবনের সকল প্রয়োজনীয় জ্ঞানের একটি সম্যক ধারনা পেয়ে যায় যাতে সে নিজে নিজেই সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারে। তাছাড়া সে যেন তার ব্যাক্তিজীবন, পারিবারিক জীবন সর্বোপরি নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সুনাগরিক হয়ে গড়ে উঠতে পারে। এই সমস্ত কিছু মাথায় রেখেই কারিকুলাম ডিজাইন করার কথা তবে সেটা হয়েছে কিনা তা বিচার করার ক্ষমতা আমার নেই তাই সে ব্যাপারে আমি কোন মন্তব্য করতে একেবারেই নারাজ।



কিছু বাস্তবতা:
আমাদের বর্তমান যে কারিকুলাম তা কবে, কে বা কারা, কিভাবে বা কি পদ্ধতিতে ডিজাইন করেছিলেন তা আমার জানা নাই তবে সেটা ঐ সময়ের চিন্তা ভাবনায় চম‌ৎকার একটি কারিকুলাম ছিল সেটা আমি এককথায় বলতে পারি। তবে কারিকুলাম ডিজাইন একটি চলমান প্রক্রিয়া যা আমার মতে বহুদিন ধরে আধুনিকায়নের প্রয়োজনীয়তার দাবীদার। এর মধ্যে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার সিলেবাস পরিবর্তন করা হয়েছে বলে আমার জানা আছে তবে তাতে গুনগত কোন পরিবর্তন হয়েছে কিনা সে ব্যাপারে আমার পরিস্কার ধারনা না থাকলেও এটুকু বুঝতে পারি যে একটা কোর্স ভেঙ্গে একাধিক কোর্স আর একাধিক কোর্স মিলে একটি কোর্স করা ছাড়া আহামরি কোন পরিবর্তন আমার চোখে পরে নাই।
যেহেতু আমাদের ছেলেমেয়েরা এখান থেকে পড়াশোনা শেষ করে টেক্সটাইল সেক্টরে কাজ করে তাই এই সেক্টরের বিশেষজ্ঞ দের সাথে মত বিনিময় করে তাদের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট মতামত নিয়ে সিলেবাস-এ তার প্রতিফলন কাম্য ছিল সেটাও উল্লেখযোগ্য ভাবে করা সম্ভব হয়নি।
একই ভাবে যারা এই সেক্টরের চাকরিদাতা বা মালিকপক্ষ তাদের কাছ থেকেও মতামত নেয়াটা অতীব জরুরী। কিছুদিন আগে বি.টি.এম.এ-র সভাপতি জনাব তপন চৌধুরী-র সাথে আমার একটা ছোট মিটিং ধরনের কিছু ছিল। ঐ সময়ের মধ্যেই উনি আমাকে শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে একগাদা অভিযোগ করলেন। যাই হোক আমি বোঝাতে চেয়েছি যে আমরা যাদের জন্য কাজ করছি তাদের স্যাটিসফ্যাকশনের বিষয়টা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।
আমাদের অনেকেরই অভিযোগ হচ্ছে টেক্সটাইল সেক্টরে অনেক নামমাত্র বিদেশী এক্সপার্ট কাজ করছে। এর পেছনেও দায়ী আমরা-ই। আমি হয়ত টেকনিক্যাল বিষয়টি খুব ভালভাবেই বুঝতে পারছি কিন্তু ভাষাগত অদক্ষতার কারনে কাউকে বোঝাতে পারছি না আর নামমাত্র বিদেশী এক্সপার্ট ভুজুং ভাজুং দিয়ে সকল ক্রেডিট নিয়ে নিচ্ছে।
এগুলোর গভীরে আজকে আলোচনা করতে গেলে লেখা অনেক বড় হয়ে যেতে পারে। এখানে আমি যেটা বোঝাতে চেয়েছি বর্তমান পরিস্থিতিতে একটি যুগোপযোগী কারিকুলাম ডিজাইন করা আমাদের কাছে ভবিষ্য‌ৎ প্রজন্মের অধিকার। আমরা যদি তা না করতে পারি তাহলে ভবিষ্য‌ৎ প্রজন্ম হয়ত আমাদের কখনোই ক্ষমা করবে না।




কিছু সীমাবদ্ধতা:
অনেক বড় বড় কথা বলে ফেলেছি সেজন্য ক্ষমা চাইছি। বাস্তবে এই কাজটি করতে গেলে সীমাবদ্ধতার কোন শেষ নেই। আমি যখন ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিতে ছিলাম শ্রদ্ধেয় ড: মাহবুব স্যার অনেক বার বলেছেন যে চল আমরা সিলেবাস নিয়ে কাজ করি। যতবারই কাজ করতে গেছি কোর্স কোড পরিবর্তন, এদিক থেকে ওদিক আর ওদিক থেকে এদিক সাথে কিছু কম গুরুত্বপূর্ন কোর্স ঢুকেছে কিছু কম গুরুত্বপূর্ণ কোর্স বাদ গেছে এই পরিবর্তন হয়েছে, নিটার এ যে কয়দিন ছিলাম ততদিনে একাজে হাত দিতে হয়নি যদিও হাত দেয়া অতীব প্রয়োজন। বুটেক্স এ আমি একেবারে নতুন ঢুকেই দেখি কারিকুলাম পরিবর্তনের মহো‌ৎসব চলছে। শ্রদ্ধেয় বেলাল স্যার এর রুমে ৭-৮ দিন টানা সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ২-৩ টা পর্যন্ত ফেব্রিক ডিপার্টমেন্টের সকল শিক্ষক মিলে মিটিং করেও যা দাড়িয়েছে তাতে আমরাই এখনও সন্তুষ্ট নই। আসলে কাজটা করা এতটা সহজ নয়। টেক্সটাইল একটি বিশাল সেক্টর এখানে একজন ছাত্র পাশ করে কোথায় চাকরি করবে সেটা সে নিজেও হয়ত জানে না। সকল সেক্টরে কাজ করার বেসিক জ্ঞান যেন তার থাকে সে ব্যাপারটি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। আর সেটা আমার মত ৫-৬ জনের কাজ নয়। সকলের সক্রিয় অংশগ্রহন প্রয়োজন।




কিছু করনীয়
এতক্ষন অনেক সমস্যার কথা বলেছি, এখন সমাধানের কথা বলি।
আমি ইতোমধ্যে বড় স্যারদের সাথে মতবিনিময় সভার ব্যাপারে আলোচনা করেছি। প্রত্যেকে এ ব্যাপারে যথেষ্ট আগ্রহী তবে এ ধরনের অনুষ্ঠান করাটা সবসময়-ই একটু সময়সাপেক্ষ। তবে আমরা এ ব্যাপারে খুবই আশাবাদী যে এ ধরনের প্রোগ্রাম অবশ্যই অনুষ্ঠিত হবে।
টেক্সটাইল সেক্টরের সাথে সম্পৃক্ত যে কেউ ( পাশকৃত টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ার, টেক্সটাইল মিলের মালিক, দীর্ঘদিন টেক্সটাইল শিল্পের সাথে জড়িত)  আপনি আপনার সুনির্দিষ্ট মতামত আমাকে কে জানাতে পারেন। আমি উপযুক্ত জায়গায় আপনার মতামত পৌছে দেবার চেষ্টা করব আপনার পরিচয় সহকারে।

লেখকঃ
মোর্শেদ আলাম স্যার
লেকচারার
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সটাইল
ই-মেইল murshedtex@gmail.com

বি.এস.সি. ইন টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং সিলেবাস (কিছু ভুল ধারনা, কিছু কথা, কিছু বাস্তবতা, কিছু সীমাবদ্ধতা, কিছু করনীয়)

প্রসঙ্গ: বি.এস.সি. ইন টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং সিলেবাস (কিছু ভুল ধারনা, কিছু কথা, কিছু বাস্তবতা, কিছু সীমাবদ্ধতা, কিছু করনীয়)
টেক্সটাইল সেক্টরের সাথে জড়িত সবার জন্য। অনেক বড় পোস্ট কিন্তু গুরুত্বপূর্ন তাই সকলকে পড়ার অনুরোধ রইল আর যদি মনে করেন তবে শেয়ার-ও করতে পারেন।

কিছু ভুল ধারনা:
আমাদের অনেকের মনে-ই কিছু ভুল ধারনা আছে যে, আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থা এত খারাপ যে ছেলে-পুলেরা পাশ করার পর কিছুই পারে না। তাদের কে লেটেস্ট টেকনোলজি শেখানো উচি‌ৎ। লেটেস্ট মেশিন সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান দেয়া উচি‌ৎ। মান্ধাতার আমলের টেকনোলজি ফেলে দেয়া উচি‌ৎ।

আমি বলব একটু থামেন, আমরা কোন ট্রেনিং প্রোগ্রাম শেখাই না বা বি.এস.সি. ইন টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং কোন যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষন নয় যে আপনার যে মেশিন দিয়ে কাজ করতে হবে সেই মেশিনের ট্রেনিং দিয়ে দিব। যদি তাই হয় তাহলে দেখেন আজকে পৃথিবী এতটাই দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে যে ১ম বর্ষে একটা ছাত্রকে যদি লেটেস্ট কোন মেশিন শেখানো-ও হয় তবু সে পাশ করে বের হতে হতে সেই টেকনোলজি ৩ বছরের পুরনো হয়ে যাবে।
প্রকৃতপক্ষে গ্র্যাডুয়েশনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে যে, একটি ছাত্র যেন তার ৪ বছরের শিক্ষা জীবনে এটা শিখতে পারে যে কিভাবে শিখতে হয় তাহলে সে যেখানেই যাক না কেন যে মেশিনেই কাজ করুক না কেন সেটা তার জন্য কোন সমস্যার সৃষ্টি করবে না। আসলেই একজন ইন্জিনিয়ারিং স্টুডেন্ট এর ৪ বছর সে ইন্জিনিয়ারিং বেসিক বা বর্ণপরিচয় সম্পন্ন হয়, শেখা শুরু হয় তো যখন সে কাজ করা শুরু করে।



কিছু কথা:
আমি যেহেতু বি.এস.সি. ইন টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং পড়াই তাই আমাদের একটি টার্গেট থাকে যে একটি ছাত্র যাতে পড়াশোনা শেষ করে যেখানেই চাকরি বা কাজ করুক না কেন সে যেন কখনোই অপ্রস্তুত বা অপমানজনক কোন পরিস্থিতিতে না পরে তাই সুযোগ পেলেই ক্লাসে আমি একটা কথা বলি, "Learn what do you need, Do what you have learned". আসলে কথা হল,জ্ঞান অসীম তাই একজনের জীবদ্দশায় সকল জ্ঞানের সন্ধান কস্মিনকালেও সম্ভব না আর আমরা প্রকৌশল শিক্ষায় এতটা সময়-ও থাকে না যে সব কিছু নিয়ে আলোচনা করতে পারব। যে কারনে বাংলায় একটা কথা আছে, "জানার কোন শেষ নাই, জানার চেষ্টা বৃথা তাই" কিন্তু এখানে একটা সমস্যা হল যখন একজন পড়াশোনা করে তখন সে কিভাবে জানবে যে, তার প্রফেশনাল লাইফে আসলে কি প্রয়োজন হবে? এর সহজ উত্তর হলো, আমাদের সিলেবাস। সিলেবাস বা কারিকুলাম ডিজাইন করা হয় সাধারনত এই সমস্ত কিছু মাথায় রেখেই যাতে একজন ছাত্র তার জীবনের সকল প্রয়োজনীয় জ্ঞানের একটি সম্যক ধারনা পেয়ে যায় যাতে সে নিজে নিজেই সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারে। তাছাড়া সে যেন তার ব্যাক্তিজীবন, পারিবারিক জীবন সর্বোপরি নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সুনাগরিক হয়ে গড়ে উঠতে পারে। এই সমস্ত কিছু মাথায় রেখেই কারিকুলাম ডিজাইন করার কথা তবে সেটা হয়েছে কিনা তা বিচার করার ক্ষমতা আমার নেই তাই সে ব্যাপারে আমি কোন মন্তব্য করতে একেবারেই নারাজ।



কিছু বাস্তবতা:
আমাদের বর্তমান যে কারিকুলাম তা কবে, কে বা কারা, কিভাবে বা কি পদ্ধতিতে ডিজাইন করেছিলেন তা আমার জানা নাই তবে সেটা ঐ সময়ের চিন্তা ভাবনায় চম‌ৎকার একটি কারিকুলাম ছিল সেটা আমি এককথায় বলতে পারি। তবে কারিকুলাম ডিজাইন একটি চলমান প্রক্রিয়া যা আমার মতে বহুদিন ধরে আধুনিকায়নের প্রয়োজনীয়তার দাবীদার। এর মধ্যে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার সিলেবাস পরিবর্তন করা হয়েছে বলে আমার জানা আছে তবে তাতে গুনগত কোন পরিবর্তন হয়েছে কিনা সে ব্যাপারে আমার পরিস্কার ধারনা না থাকলেও এটুকু বুঝতে পারি যে একটা কোর্স ভেঙ্গে একাধিক কোর্স আর একাধিক কোর্স মিলে একটি কোর্স করা ছাড়া আহামরি কোন পরিবর্তন আমার চোখে পরে নাই।
যেহেতু আমাদের ছেলেমেয়েরা এখান থেকে পড়াশোনা শেষ করে টেক্সটাইল সেক্টরে কাজ করে তাই এই সেক্টরের বিশেষজ্ঞ দের সাথে মত বিনিময় করে তাদের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট মতামত নিয়ে সিলেবাস-এ তার প্রতিফলন কাম্য ছিল সেটাও উল্লেখযোগ্য ভাবে করা সম্ভব হয়নি।
একই ভাবে যারা এই সেক্টরের চাকরিদাতা বা মালিকপক্ষ তাদের কাছ থেকেও মতামত নেয়াটা অতীব জরুরী। কিছুদিন আগে বি.টি.এম.এ-র সভাপতি জনাব তপন চৌধুরী-র সাথে আমার একটা ছোট মিটিং ধরনের কিছু ছিল। ঐ সময়ের মধ্যেই উনি আমাকে শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে একগাদা অভিযোগ করলেন। যাই হোক আমি বোঝাতে চেয়েছি যে আমরা যাদের জন্য কাজ করছি তাদের স্যাটিসফ্যাকশনের বিষয়টা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।
আমাদের অনেকেরই অভিযোগ হচ্ছে টেক্সটাইল সেক্টরে অনেক নামমাত্র বিদেশী এক্সপার্ট কাজ করছে। এর পেছনেও দায়ী আমরা-ই। আমি হয়ত টেকনিক্যাল বিষয়টি খুব ভালভাবেই বুঝতে পারছি কিন্তু ভাষাগত অদক্ষতার কারনে কাউকে বোঝাতে পারছি না আর নামমাত্র বিদেশী এক্সপার্ট ভুজুং ভাজুং দিয়ে সকল ক্রেডিট নিয়ে নিচ্ছে।
এগুলোর গভীরে আজকে আলোচনা করতে গেলে লেখা অনেক বড় হয়ে যেতে পারে। এখানে আমি যেটা বোঝাতে চেয়েছি বর্তমান পরিস্থিতিতে একটি যুগোপযোগী কারিকুলাম ডিজাইন করা আমাদের কাছে ভবিষ্য‌ৎ প্রজন্মের অধিকার। আমরা যদি তা না করতে পারি তাহলে ভবিষ্য‌ৎ প্রজন্ম হয়ত আমাদের কখনোই ক্ষমা করবে না।




কিছু সীমাবদ্ধতা:
অনেক বড় বড় কথা বলে ফেলেছি সেজন্য ক্ষমা চাইছি। বাস্তবে এই কাজটি করতে গেলে সীমাবদ্ধতার কোন শেষ নেই। আমি যখন ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিতে ছিলাম শ্রদ্ধেয় ড: মাহবুব স্যার অনেক বার বলেছেন যে চল আমরা সিলেবাস নিয়ে কাজ করি। যতবারই কাজ করতে গেছি কোর্স কোড পরিবর্তন, এদিক থেকে ওদিক আর ওদিক থেকে এদিক সাথে কিছু কম গুরুত্বপূর্ন কোর্স ঢুকেছে কিছু কম গুরুত্বপূর্ণ কোর্স বাদ গেছে এই পরিবর্তন হয়েছে, নিটার এ যে কয়দিন ছিলাম ততদিনে একাজে হাত দিতে হয়নি যদিও হাত দেয়া অতীব প্রয়োজন। বুটেক্স এ আমি একেবারে নতুন ঢুকেই দেখি কারিকুলাম পরিবর্তনের মহো‌ৎসব চলছে। শ্রদ্ধেয় বেলাল স্যার এর রুমে ৭-৮ দিন টানা সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ২-৩ টা পর্যন্ত ফেব্রিক ডিপার্টমেন্টের সকল শিক্ষক মিলে মিটিং করেও যা দাড়িয়েছে তাতে আমরাই এখনও সন্তুষ্ট নই। আসলে কাজটা করা এতটা সহজ নয়। টেক্সটাইল একটি বিশাল সেক্টর এখানে একজন ছাত্র পাশ করে কোথায় চাকরি করবে সেটা সে নিজেও হয়ত জানে না। সকল সেক্টরে কাজ করার বেসিক জ্ঞান যেন তার থাকে সে ব্যাপারটি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। আর সেটা আমার মত ৫-৬ জনের কাজ নয়। সকলের সক্রিয় অংশগ্রহন প্রয়োজন।




কিছু করনীয়
এতক্ষন অনেক সমস্যার কথা বলেছি, এখন সমাধানের কথা বলি।
আমি ইতোমধ্যে বড় স্যারদের সাথে মতবিনিময় সভার ব্যাপারে আলোচনা করেছি। প্রত্যেকে এ ব্যাপারে যথেষ্ট আগ্রহী তবে এ ধরনের অনুষ্ঠান করাটা সবসময়-ই একটু সময়সাপেক্ষ। তবে আমরা এ ব্যাপারে খুবই আশাবাদী যে এ ধরনের প্রোগ্রাম অবশ্যই অনুষ্ঠিত হবে।
টেক্সটাইল সেক্টরের সাথে সম্পৃক্ত যে কেউ ( পাশকৃত টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ার, টেক্সটাইল মিলের মালিক, দীর্ঘদিন টেক্সটাইল শিল্পের সাথে জড়িত)  আপনি আপনার সুনির্দিষ্ট মতামত আমাকে কে জানাতে পারেন। আমি উপযুক্ত জায়গায় আপনার মতামত পৌছে দেবার চেষ্টা করব আপনার পরিচয় সহকারে।

লেখকঃ
মোর্শেদ আলাম স্যার
লেকচারার
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সটাইল
ই-মেইল murshedtex@gmail.com

কোন মন্তব্য নেই: