আসুন কিভাবে অংশগ্রহণকারী কমিটি নির্বাচন করতে হবে তার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো জানি –
বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ২০৫ (১) মোতাবেক অন্যূন পঞ্চাশ জন শ্রমিক কর্মরত আছেন এরূপ প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের মালিক “উক্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদেরকে প্রত্যক্ষ্যভাবে সম্পৃক্ত করিয়া – সংশোধিত২০১৩” বিধি দ্বারা নির্ধারিত পন্থায় তাহার প্রতিষ্ঠানে একটি অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠন করিবেন।
খেয়াল করুন বিধি দ্বারা নির্ধারিত পন্থায় অর্থাৎ এই ধারার এতটুকু বাদে এখান থেকে আর কিছুর আপনার প্রয়োজন নেই আপনি বিধিমালা ২০১৫ তে চলে যান শুধুমাত্র দুটি উপধারা যেমন উপধারা (২) উক্ত কমিটি মালিক ও শ্রমিকগণের প্রতিনিধি সমন্বয়ে গঠিত হইবে এবং উপধারা (৩) উক্ত কমিটিতে শ্রমিকগণের প্রতিনিধির সংখ্যা মালিকের প্রতিনিধির কম হইবেনা, এই দুটি উপধারা মনে রাখবেন। এখানে আরো একটি বিষয় পরিষ্কার করা দরকার শ্রমিক সম্বলিত যেকোন প্রতিষ্ঠানের যেকোন কমিটিতে উভয় পক্ষের সমান প্রতিনিধি থাকাই শ্রেয়।
এরপরে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পন্থার জন্য চলে যেতে হবে সোজা বিধিমালা ২০১৫ এর বিধি ১৮৩ তে, এখানে উপবিধি (২) খেয়াল করুন – সদস্য সংখ্যা ৬ এর কম এবং ৩০ এর বেশী হইবেনা, সংখ্যানুপাত জানতে উপবিধি (৩) এর “ছক” দেখুন।
নির্বাচন এবং কমিটি গঠন করবেন যেভাবে ক্রমানুসারে –
১) একটি পলিসি বা নীতিমালা তৈরি করা যেখানে আইন ও বিধি অনুযায়ী নির্বাচন পদ্ধতি ও কমিটির কার্যক্রম উল্লেখ থাকবে।
২) শুরুতেই প্রতিষ্ঠানের সকল ইনচার্জ ও বর্তমান কমিটির সকলের সাথে আলোচনা করে নির্বাচন এর উপযুক্ত তারিখ নির্ধারণ করা।
৩) নির্বাচনের অন্যূন ৩০ দিন পূর্বে মালিক কর্তৃক মনোনীত ৫ (পাঁচ) সদস্য/সদস্যা বিশিষ্ট একটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা এবং শ্রম পরিচালকের নিকট প্রেরণ করা (মনে রাখতে হবে এই পরিচালনা কমিটিতে মালিক ও শ্রমিক পক্ষের অনুপাত হবে ২:৩)।
৪) একটি ভোটার তালিকা তৈরি করা ( প্রতিষ্ঠানে অন্যূন তিনমাস চাকরি করিয়াছেন এমন সকলেই ভোটার হতে পারবেন তবে সাময়িক, বদলি, শিক্ষাধীন, মৌসুমি শ্রমিক ও ঠিকাদার শ্রমিক বাদে)।
৫) ভোটার তালিকা কারখানার নোটিশ বোর্ড ও প্রকাশ্য সকল স্থানে টানিয়ে দিতে হইবে এবং একটি প্রতিলিপি শ্রম পরিচালক বা রেজিস্টার অব ট্রেড ইউনিয়ন্স এর নিকট প্রেরণ করিতে হইবে, এটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির স্বাক্ষরিত হইবে (মনে রাখতে হইবে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠিত হওয়ার পরে অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠিত হওয়ার আগ পর্যন্ত যেকোন অধিদপ্তরে পাঠানো এ সংশ্লিষ্ট যেকোন নথিপত্রে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক বা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের স্বাক্ষরিত হইবে)।
৬) কারখানা বা প্রতিষ্ঠানে একটি নোটিশ করা যে এই ভোটার তালিকা নিয়ে কারো কোন আপত্তি বা অভিযোগ আছে কিনা।
৭) কারখানা বা প্রতিষ্ঠানে একটি নোটিশ করা যে আগামী — তারিখ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হইবে।
৮) এরপরে নোটিশ অনুযায়ী নির্বাচন এর তফসিল ঘোষণা করা এটাকে প্রেস কনফারেন্সও বলা যেতে পারে যেখানে নির্বাচনের তারিখ, মনোনয়নপত্র বিতরণের তারিখ (মনোনয়নপত্র বিধিমালার ফরম – ৬৪ অনুযায়ী), মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ, প্রার্থিতা যাচাই বাছাইয়ের তারিখ, বৈধ প্রার্থী তালিকা প্রকাশের তারিখ, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের তারিখ, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের তারিখ, প্রতীক বরাদ্ধের তারিখ সহ সকল কিছু উল্লেখ থাকবে।
৯) মনোনয়নপত্র জমাদানকারীদের তালিকা প্রকাশ।
১০) যাচাই বাছাইয়ের পরে বৈধ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ (যেকোন প্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিক প্রার্থী হতে পারবে তবে প্রতিষ্ঠানে চাকরীর বয়স ছয় মাসের কম হইলে সে প্রার্থী হতে পারবেননা কিন্তু প্রতিষ্ঠানের বয়স এক বছরের কম হইলে চাকরীর মেয়াদ প্রযোজ্য হইবেনা, যাচাই বাছাই প্রার্থী বা তাহার প্রতিনিধির সম্মুখে করিতে হইবে)।
১১) প্রতীক বরাদ্ধ – সকল বৈধ প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করিতে হইবে যদি একই প্রতীক অধিক সংখ্যকের পছন্দ হয় তাহলে লটারি করিতে হইবে ( প্রতীক গুলো প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা সাইনগুলো দেয়া শ্রেয় এতে সকলের কাছে এটার পরিচিতি বাড়ে যেমন ফায়ার ইক্সটিংগুইসার, ফায়ার এলারম, ফায়ার এলারম সুইচ, এক্সিট বক্স, স্মোক ডিটেক্টর, সেইফটি হেলমেট, ফায়ার হোজবক্স, গাম বুট, লক কাটার, ফায়ার বাকেট, নিডেল গার্ড, ফায়ার ব্লাঙ্কেট, এয়ার প্লাগ, গ্যাস মাস্ক, স্ট্রেচার, আই সেইফটি গ্লাস প্রভৃতি)।
১২) নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ও ব্যালট পেপার পরিচিতি (ব্যালট পেপারে প্রার্থীর নাম ও প্রতীক উল্লেখ থাকিতে হইবে)।
১৩) ভোট গ্রহণ – স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোট গ্রহণ করিতে হইবে এবং অমোচনীয় কালি ব্যবহার করিতে হইবে, ভোট গ্রহণের সময় প্রত্যেক বুথে প্রত্যেক প্রার্থীর একজন করে প্রতিনিধি উপস্থিত থাকিতে পারিবেন এবং নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় প্রতিনিধি থাকিতে হইবে।
১৪) ভোট গণনা – ভোট গ্রহণ শেষে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সকল
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন