পলিমার (Polymer) কি? পলিমারের প্রকারভেদ, বৈশিষ্ট্য , সুবিধা - Textile Lab | Textile Learning Blog
পলিমার (Polymer) কি? পলিমারের প্রকারভেদ, বৈশিষ্ট্য এবং সুবিধা।
দুটি গ্রিক ‘পলি’ (poly) এবং ‘মেরস’ (meros) থেকে ‘পলিমার’ শব্দটি উৎপন্ন। ‘পলি’ শব্দের অর্থ বহু (many) এবং ‘মেরস’ শব্দের অর্থ অংশ বা খণ্ড (parts)। সুতরাং পলিমার হলো বহু অংশ বা খণ্ডবিশিষ্ট অণু। অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অণু রাসায়নিকভাবে পরপর যুক্ত হয়ে যে দীর্ঘ শৃঙ্খল বিশিষ্ট বৃহদাকার অণু গঠন করে (যাদের আণবিক ভর 10,000 থেকে কয়েক লক্ষ হতে পারে) তাদেরকে পলিমার অণু বলে। যে ক্ষুদ্র অণু থেকে পলিমার অণু গঠিত হয়, তাদের প্রত্যেকটিকে মনোমার অণু বলে। তবে পলিমারকে macromolecule বা দানবীয় অণুও বলা হয়। পলিমার তৈরির প্রক্রিয়াকে পলিমারকরণ বা পলিমারাইজেশন বলা হয়।

প্লাস্টিক, রবার ও তন্তু এই তিন প্রকার পদার্থই পলিমার পদার্থ। পলিমার অণু থেকে পলিমার পদার্থ উৎপন্ন হয়। এই অণুগুলি মূলত C, H, O ও N দিয়ে গঠিত। তবে কতকগুলি বিশেষ পলিমার আছে যেগুলিতে P, Cl, F প্রভৃতি মৌল বর্তমান। পলিমার অণুগুলি দীর্ঘ শৃঙ্খল এবং উচ্চ আণবিক ভর বিশিষ্ট হয়। পলিমার অণুতে উপস্থিত যে ক্ষুদ্রতম অংশটি পুনরাবৃত্ত হয়ে সমগ্র পলিমার শৃঙ্খল গঠন করে, তাকে ঐ পলিমারের পুনরাবৃত্তি একক বলে। যেমন- পলিইথিলিন অণু।

পলিমারের প্রকারভেদঃ 

১. আণবিক ভর অনুযায়ী: টার পলিমার (খুবই কম আণবিক ভর বিশিষ্ট), অলিগোপলিমার (কম আণবিক ভর বিশিষ্ট), হাই পলিমার (উচ্চ আণবিক ভর বিশিষ্ট), আল্ট্রা পলিমার (অতি উচ্চ আণবিক ভর বিশিষ্ট)।

২. উৎস অনুযায়ী: প্রাকৃতিক পলিমার (রাবার, প্রোটিন, স্টার্চ, সেলুলোজ,নিউক্লিক এসিডসমূহ), কৃত্রিম পলিমার (পলিথিন, নাইলন, PVC, টেফলন), অর্ধকৃত্রিম পলিমার (সেলুলোজ নাইট্রেট, সেলুলোজ অ্যাসিটেট, হাইড্রোজেনেটেড রাবার)।

৩. গঠন প্রকৃতি অনুযায়ী: যুত পলিমার (পলিথিন, পিভিসি, টেফলন, পলি প্রোপিন, পলিস্টাইরিন), ঘনীভবন পলিমার (নাইলন, ব্যাকেলাইট, ফরমিকা, মেলামাইন ও পলিএস্টার)।

৪. প্রয়োগের দিক অনুযায়ী: রাবার (প্রাকৃতিক রাবার, পলিক্লোরোপিন রাবার), প্লাস্টিক (পলিথিন, ব্যাকেলাইট, মেলামাইন, ফরমিকা, পিভিসি) তন্তু (পশম, রেশম, তুলা, নাইলন), তরল রেজিন (ফেভিকল, মোভিকল)।

৫. তাপের প্রভাব অনুযায়ী: থার্মোপ্লাস্টিক, (পলিথিন), থার্মোসেটিং (ব্যাকেলাইট)।

থার্মোপ্লাস্টিক পলিমার : 
যেসব পলিমার তাপের প্রভাবে নমনীয় হয় কিন্তু তাপ অপসারণে পুণরায় কঠিন অবস্থায় পরিণত হয় এবং এই পদ্ধতি যদি পলিমারের ধর্ম অক্ষুন্ন রেখে বারবার সম্পন্ন করা যায়, তাদের থার্মোপ্লাস্টিক পলিমার বলে। যেমন- পলিথিন, পিভিসি পলিস্টাইরিন, পলিপ্রোপিন।

থার্মোসেটিং পলিমার : 
যেসব পলিমার তাপ প্রয়োগে নমনীয় হয় এবং তাপ অপসারণে পুনরায় কঠিনে পরিণত হয়, কিন্তু দ্বিতীয়বার তাপ প্রয়োগে আর নমনীয় করা যায় না, তাদের থার্মোসেটিং পলিমার বলে। যেমন- ফেনল-ফরমালডিহাইড রেজিন, ইপোক্সিরেজিন, অসম্পৃক্ত পলিএস্টার।

পলিমারের বৈশিষ্ট্য

পলিমারের বৈশিষ্ট্য নিচে দেয়া হলো–

১. পলিমারের ঘনত্ব ধাতব পদার্থের তুলনায় অনেক কম। তাই পলিমারের তৈরি দ্রব্য হালকা হয়।

২. এরা তাপ ও বিদ্যুৎ অপরিবাহী।

৩. সাধারণত পানিতে অদ্রবণীয় কিন্তু জৈব দ্রাবকে দ্রবণীয়।

৪. এরা বর্ণহীন, স্বচ্ছ বা অস্বচ্ছ হতে পারে।

৫. এদের সুনির্দিষ্ট কোনো গলনাঙ্ক বা স্ফুটনাঙ্ক থাকে না।

৬. পলিমারের গলনাঙ্ক ধাতু বা সিরামিকের তুলনায় অনেক কম। পলিমারের গলনাঙ্ক সাধারণত 100°C – 300°C এর মধ্যে হয়ে থাকে। অল্প তাপশক্তি খরচ করে পণ্য উৎপাদন করা যায়।

৭. পলিমার দ্রবণের সান্দ্রতা উচ্চমানের হয়ে থাকে।

পলিমার ব্যবহারের সুবিধাঃ 

পলিমার সহজেই ব্যবহার করা যায় কারণ এর ঘনত্ব কম।
ক্ষয় রোধে কার্যকর।

পলিমার রঙিন যৌগ হিসেবে তৈরি করা যায়।

এটি অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক।

পলিমারের ভঙ্গুরতা কম।

জৈব পলিমার:

যে পলিমারের প্রধান শিকল কার্বন পরমাণু দ্বারা গঠিত তাকে জৈব পলিমার বলে। জৈব পলিমারগুলি পলিমার উপাদান যা মূলত ব্যাকবোনটিতে কার্বন পরমাণু ধারণ করে। সুতরাং, এগুলিতে কেবল কার্বন-কার্বন কোভ্যালেন্ট বন্ধন রয়েছে। এই পলিমারগুলি কেবল জৈব মনোমের অণু থেকে তৈরি হয়। বেশিরভাগ সময়, এই পলিমারগুলি পরিবেশ বান্ধব, কারণ এগুলি বায়োডেজেডযোগ্য।

অজৈব পলিমার:

যে পলিমারের প্রধান শিকল কার্বন ছাড়া অন্য কোনো পরমাণু (ফসফরাস, সিলিকন, সালফার) দ্বারা গঠিত হয় তবে এ পলিমারকে অজৈব পলিমার বলে। অজৈব পলিমার হ’ল পলিমার উপাদান যা ব্যাকবোনটিতে কার্বন পরমাণু নেই। তবে এই পলিমারের বেশিরভাগই হাইব্রিড পলিমার কারণ কিছু জৈব অঞ্চলও রয়েছে regions এই পদার্থগুলি উচ্চ শাখা কাঠামো এবং কার্বন ব্যতীত রাসায়নিক উপাদান রয়েছে; যেমন: সালফার, নাইট্রোজেন।

জৈব ও অজৈব পলিমারের মধ্যে পার্থক্য:

যে পলিমারের প্রধান শিকল কার্বন পরমাণু দ্বারা গঠিত তাকে জৈব পলিমার বলে। জৈব ও অজৈব পলিমারের মধ্যে পার্থক্য নিচে আলোচনা করা হয়েছে-

১। জৈব পলিমারসমূহসাধারণত C-C বন্ধনীর মাধ্যমে সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া C-O–C-N- বন্ধনীর মাধ্যমে ও মূল শিকল তৈরি হয়। অন্যদিকে অজৈব পলিমারসমূহের শিকল C-C বন্ধনীর দ্বারা সৃষ্টি হয় না। Si-O, P-N, S-N, S-S, B-N প্রকৃতি বন্ধন দ্বারা অজৈব পলিমারের মূল কাঠামো তৈরি হয়।

২। জৈব পলিমারসমূহের গঠন ত্রিমাত্রিক, তবে সাধারণত শূন্য বিভিন্ন অংশের অবস্থান অনিয়মিত। ফলে জৈব পলিমারসমূহ স্ফটিকাকার হয় না। অন্যদিকে অজৈব পলিমারসমূহ সাধারণত সুনির্দিষ্ট প্যার্টানসহ ত্রিমাত্রিক গঠনবিশিষ্ট হয়। এ কারণে অজৈব পলিমারসমূহ সজটিকাকার হয়।

৩। জৈব পলিমারের C-C বন্ধন শক্তি প্রায় ৮৩ কিলোক্যালরী/ মোল। অর্থাৎ এ বন্ধন শক্তি মধ্যম ধরনের। অন্যদিকে অনেক অজৈব পলিমারের মূলকাঠামোর বন্ধনী শক্তি উচ্চ ধরণের। যেমনঃ- সিলিকেট ও সিলিকেট ও সিলিকোনসমূহে Si-O বন্ধনী শক্তি 106 কিলোক্যালরী।

৪। জৈব পলিমারসমূহের তাপ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিম্ন। অনেক জৈব পলিমার বাতাসে 300 ডিগ্রি তাপমাত্রায় বিয়োজিত হয়। অন্যদিকে সাধারণত অজৈব পলিমারসমূহের তাপ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি, এ কারণে উচ্চতর তাপমাত্রায় পিচ্ছিলকার হিসাবে কিছু কিছু অজৈব পলিমার ব্যবহৃত হয়। তবে H2Sn যৌগসমূহ সহজেই বিয়োজিত হয়।

৫। জৈব পলিমারসমূহ ক্ষার, অ্যাসিড ও জারক দ্বারা কিছুটা আক্রান্ত হয়। বিভিন্ন দ্রাবক দ্বারা ও জৈব পলিমারসমূহ আক্রান্ত হয়। অন্যদিকে সিলিকেটসমূহ সহজে অ্যাসিড বা জারক দ্বারা আক্রান্ত হয় না। তবে অন্যান্য কিছু অজৈব পলিমার এ সকল বিজারক দ্বারা অনেক সহজে আক্রান্ত হয়।

৬। -C-C- শিকল বিশিষ্ট জৈব পলিমারসমূহ আর্দ্র বিশ্লেষিত হয় না। -C-O- এবং -C-N শিকল বিশিষ্ট জৈব পলিমারসমূহ ধীরে আর্দ্র বিশ্লেষিত হয়। অন্যদিকে অনেক অজৈব পলিমার সহজে আর্দ্র বিশ্লেষিত হয়। তবে Si-O বন্ধনী বিশিষ্ট পলিমারসমূহ আর্দ্র বিশ্লেষিত হয় না।

পলিমার, প্লাস্টিসিটি (Polymer, Plasticity)

প্রশ্ন: প্লাস্টিসিটি কী? সব পলিমার প্লাস্টিক নয় অথচ সব প্লস্টিক পলিমার কেন? (Plasticity and Not all polymers are plastic but why all plastic polymers)

উত্তরঃ প্লাস্টিসিটি ও Plastic হলো পলিমার এর একটি রূপ। যেসব পলিমারকে তাপ দিলে তা নমনীয় হয় এবং চাপ দিয়ে বিভিন্ন আকৃতি দেয়া যায় তারই নাম প্লাস্টিক। আর প্লাস্টিক দ্রব্যের বৈশিষ্ট্যকেই বলা হয় প্লাস্টিসিটি। অর্থাৎ কোন পলিমারীয় দ্রব্যকে তাপ প্রয়োগে নমনীয় করে এর flexibility, প্রক্রিয়াকরণ এবং আকৃতি প্রদান যোগ্যতা বৃদ্ধি করার গুণাবলিকেই বলা হয় প্লাস্টিসিটি । 

বস্তুত সব পলিমারই প্লাস্টিক নয়। কারণ সাধারণত একটি পলিমারের দীর্ঘ চেইনের বিভিন্ন অংশের (segment) মধ্যে উচ্চ আর্কষণ বল বিরাজ করে যার কারণে পলিমার চেইনের অংশগুলোর নড়াচড়া (mobility) বন্ধ হয়ে যায়। ফলে পলিমারের কাঠামো কঠিন হয়ে যায়। এ কারণে পলিমার ভঙ্গুর হয়, বিশেষ করে নিম্ন তাপমাত্রায়। 

যেমন- একটি রাবার বল –70°C এর নিচে শীতল করার পর যদি একে মেঝেতে ফেলে দেয়া হয় তাহলে বলটি ভেঙ্গে কাঁচের মত টুকরা টুকরা হয়ে গেছে। এ বিষয়টির নাম ভঙ্গুরতা (brittleness)। এ তাপমাত্রাটি যার নিচে প্লাস্টিক ভঙ্গুরতা অর্থাৎ glassy কাঠামো লাভ করে এবং যে তাপমাত্রার উপর এটির ভঙ্গুরতা লোপ পেয়ে নমনীয় ও আকৃতি প্রদানযোগ্য হয় তবে গলেনা (গলন তাপমাত্রার নাম Tm) Glass transition temperature (Tg) 

খুবই কম আণবিক ভরবিশিষ্ট পলিমারকে টার পলিমার (Tar polymer), কম আণবিক ভরবিশিষ্ট পলিমারকে অলিগোমার (Oligomer), উচ্চ আণবিক ভরবিশিষ্ট পলিমারকে উচ্চ পলিমার (High polymer) এবং অতি উচ্চ আণবিক ভরবিশিষ্ট পলিমারকে আলট্রা অই পলিমার (Ultra high polymer) বলা হয়ে থাকে ।

পলিমারের শ্রেণিবিভাগ: (Classification of Polymer): উৎসের উপর ভিত্তি করে পলিমারকে তিন ভাগে করা হয়ে থাকে। 

(ক) প্রাকৃতিক পলিমার, 

(খ) কৃত্রিম পলিমার, 

(গ) অকৃত্রিম পলিমার। 

(ক) প্রাকৃতিক পলিমার: (Natural Polymer): 
সাধারণভাবে প্রকৃতি অর্থাৎ উদ্ভিদ ও প্রাণী থেকে প্রাপ্ত পলিমার এ জাতীয় পলিমার । যেমন- প্রাকৃতিক রাবার, স্টার্চ, সেলুলোজ ইত্যাদি। 

(খ) কৃত্রিম পলিমার: (Synthetic polymer) : 
পরীক্ষাগারে কৃত্রিমভাবে প্রস্তুতকৃত পলিমারসমূহ এ জাতীয় পলিমার। যেমন- পলিইথিলিন, পলিস্ট্যারিন, পলিভিনাইল ক্লোরাইড, নাইলন, টেরিলিন ইত্যাদি। 

(গ) অর্ধকৃত্রিম: (Semi-artificial): 
প্রাকৃতিক পলিমারকে বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিবর্তিত করে এ জাতীয় পলিমার উৎপন্ন করা হয়ে থাকে। যেমন- হাইড্রোজেনেটেড প্রাকৃতিক রাবার, হ্যালোজেনেটেড প্রাকৃতির রাবার, সেলুলোজ অ্যাসিটেট, সেলুলোজ নাইট্রেট ইত্যাদি। 

প্রয়োগের দিক থেকে বিবেচনা করলে পলিমারকে তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়ে থাকে। যথা-

(ক) রবার (Rubber): 
সাধারণ অবস্থায় এদের উপর টান বা পীড়ন (strees) প্রয়োগ করলে এদের আকারের বিকতি ঘটে কিন্তু টান বা পীড়ন সরিয়ে নিলে পুনরায় পূর্বের আকার বা অবস্থায় ফিরে আসে। যেমন- প্রাকৃতিক রবার পলিবিউটাডাইইন রবার জাতীয় পলিমার অনিয়তাকার ও উচ্চ আণবিক ভর সম্পন্ন হয়। এরে প্রসারণশীলতা ও টানশক্তির মান খুবই উচ্চ এবং এ মান 300 psi হতে 3000 psi পর্যন্ত হয়ে থাকে । 

(খ) পাস্টিক (Plastic) : 
পলিমারের উপর টান বা পীড়ন প্রয়োগের ফলে যেসব পলিমারের আকারের স্থায়ী পরিবর্তন ঘটে তাদের পাস্টিক বলা হয়ে থাকে। প্লাস্টিক জাতীয় পদার্থগুলো আংশিক কেলাসাকার এবং রবারের তুলনায় বেশি শক্তিশালী হয়। তবে বেশ কিছু প্রাস্টিক আবার শক্ত, দৃঢ় ও অনমনীয়। যেমন- পলিস্ট্যাইরিন, ফেনল- ফরমালডিহাইড রেজিন, ইউরিয়াফরমালডিহাইড রেজিন ইত্যাদি। আবার কিছু প্লাস্টিক আছে যেগুলো নরম, কোমল ও নমনীয় যেমন- পলিইথিলিন, পলিপ্রোপিলিন বা পলি, পলিভিনাইল অ্যাসিটেট ইত্যাদি। পাস্টিক জাতীয় পদার্থগুলো রবারে তুলনায় কম প্রসারণশীল এবং এদের টানশক্তির মান সাধারণত 400 psi হতে 15000 psi হয়ে থাকে। 

(গ) তন্তু (Fiber): 
এদের ক্ষেত্রে, এদের দৈর্ঘ্য ও ব্যাসের অনুপাত অন্ততপক্ষে 100 হতে হয়। তবে কৃত্রিমভাবে প্রস্তুত তন্তু ক্ষেত্রে এ মান 3000 পর্যন্ত হতে পারে। এক্ষেত্রে পলিমার অণুগুলো রৈকিক শৃঙ্খলযুক্ত হয়ে থাকে। এদের পলিমার অণুর বর্তমান হাইড্রোজেন বন্ধন অণুকে আরও সুদৃঢ় করে থাকে। যেমন- তুলা, রেশম, পশম, পাট, টেরিলিন, সিল্ক, নাইল প্রভৃতি তন্তু জাতীয় পলিমারের উদাহরণ।

প্রশ্ন: পলিমার কী? পলিমারের শ্রেণীবিভাগ আলোচনা কর । (Polymer and it’s classification)

উত্তর: গ্রিক শব্দ পলি (poly) অর্থ বহু এবং মেরোস (meros) অর্থ অংশ বা একক (unit)। সুতরাং ছোট একক অণু থেকে বৃহৎ অণু সৃষ্টির প্রক্রিয়াই হচ্ছে পলিমারকরণ। অর্থাৎ যে বিক্রিয়ায় একই যৌগের (যেমন- অসম্পৃক্ত হাইড্রো

পলিমার (Polymer) কি? পলিমারের প্রকারভেদ, বৈশিষ্ট্য , সুবিধা

পলিমার (Polymer) কি? পলিমারের প্রকারভেদ, বৈশিষ্ট্য এবং সুবিধা।
দুটি গ্রিক ‘পলি’ (poly) এবং ‘মেরস’ (meros) থেকে ‘পলিমার’ শব্দটি উৎপন্ন। ‘পলি’ শব্দের অর্থ বহু (many) এবং ‘মেরস’ শব্দের অর্থ অংশ বা খণ্ড (parts)। সুতরাং পলিমার হলো বহু অংশ বা খণ্ডবিশিষ্ট অণু। অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অণু রাসায়নিকভাবে পরপর যুক্ত হয়ে যে দীর্ঘ শৃঙ্খল বিশিষ্ট বৃহদাকার অণু গঠন করে (যাদের আণবিক ভর 10,000 থেকে কয়েক লক্ষ হতে পারে) তাদেরকে পলিমার অণু বলে। যে ক্ষুদ্র অণু থেকে পলিমার অণু গঠিত হয়, তাদের প্রত্যেকটিকে মনোমার অণু বলে। তবে পলিমারকে macromolecule বা দানবীয় অণুও বলা হয়। পলিমার তৈরির প্রক্রিয়াকে পলিমারকরণ বা পলিমারাইজেশন বলা হয়।

প্লাস্টিক, রবার ও তন্তু এই তিন প্রকার পদার্থই পলিমার পদার্থ। পলিমার অণু থেকে পলিমার পদার্থ উৎপন্ন হয়। এই অণুগুলি মূলত C, H, O ও N দিয়ে গঠিত। তবে কতকগুলি বিশেষ পলিমার আছে যেগুলিতে P, Cl, F প্রভৃতি মৌল বর্তমান। পলিমার অণুগুলি দীর্ঘ শৃঙ্খল এবং উচ্চ আণবিক ভর বিশিষ্ট হয়। পলিমার অণুতে উপস্থিত যে ক্ষুদ্রতম অংশটি পুনরাবৃত্ত হয়ে সমগ্র পলিমার শৃঙ্খল গঠন করে, তাকে ঐ পলিমারের পুনরাবৃত্তি একক বলে। যেমন- পলিইথিলিন অণু।

পলিমারের প্রকারভেদঃ 

১. আণবিক ভর অনুযায়ী: টার পলিমার (খুবই কম আণবিক ভর বিশিষ্ট), অলিগোপলিমার (কম আণবিক ভর বিশিষ্ট), হাই পলিমার (উচ্চ আণবিক ভর বিশিষ্ট), আল্ট্রা পলিমার (অতি উচ্চ আণবিক ভর বিশিষ্ট)।

২. উৎস অনুযায়ী: প্রাকৃতিক পলিমার (রাবার, প্রোটিন, স্টার্চ, সেলুলোজ,নিউক্লিক এসিডসমূহ), কৃত্রিম পলিমার (পলিথিন, নাইলন, PVC, টেফলন), অর্ধকৃত্রিম পলিমার (সেলুলোজ নাইট্রেট, সেলুলোজ অ্যাসিটেট, হাইড্রোজেনেটেড রাবার)।

৩. গঠন প্রকৃতি অনুযায়ী: যুত পলিমার (পলিথিন, পিভিসি, টেফলন, পলি প্রোপিন, পলিস্টাইরিন), ঘনীভবন পলিমার (নাইলন, ব্যাকেলাইট, ফরমিকা, মেলামাইন ও পলিএস্টার)।

৪. প্রয়োগের দিক অনুযায়ী: রাবার (প্রাকৃতিক রাবার, পলিক্লোরোপিন রাবার), প্লাস্টিক (পলিথিন, ব্যাকেলাইট, মেলামাইন, ফরমিকা, পিভিসি) তন্তু (পশম, রেশম, তুলা, নাইলন), তরল রেজিন (ফেভিকল, মোভিকল)।

৫. তাপের প্রভাব অনুযায়ী: থার্মোপ্লাস্টিক, (পলিথিন), থার্মোসেটিং (ব্যাকেলাইট)।

থার্মোপ্লাস্টিক পলিমার : 
যেসব পলিমার তাপের প্রভাবে নমনীয় হয় কিন্তু তাপ অপসারণে পুণরায় কঠিন অবস্থায় পরিণত হয় এবং এই পদ্ধতি যদি পলিমারের ধর্ম অক্ষুন্ন রেখে বারবার সম্পন্ন করা যায়, তাদের থার্মোপ্লাস্টিক পলিমার বলে। যেমন- পলিথিন, পিভিসি পলিস্টাইরিন, পলিপ্রোপিন।

থার্মোসেটিং পলিমার : 
যেসব পলিমার তাপ প্রয়োগে নমনীয় হয় এবং তাপ অপসারণে পুনরায় কঠিনে পরিণত হয়, কিন্তু দ্বিতীয়বার তাপ প্রয়োগে আর নমনীয় করা যায় না, তাদের থার্মোসেটিং পলিমার বলে। যেমন- ফেনল-ফরমালডিহাইড রেজিন, ইপোক্সিরেজিন, অসম্পৃক্ত পলিএস্টার।

পলিমারের বৈশিষ্ট্য

পলিমারের বৈশিষ্ট্য নিচে দেয়া হলো–

১. পলিমারের ঘনত্ব ধাতব পদার্থের তুলনায় অনেক কম। তাই পলিমারের তৈরি দ্রব্য হালকা হয়।

২. এরা তাপ ও বিদ্যুৎ অপরিবাহী।

৩. সাধারণত পানিতে অদ্রবণীয় কিন্তু জৈব দ্রাবকে দ্রবণীয়।

৪. এরা বর্ণহীন, স্বচ্ছ বা অস্বচ্ছ হতে পারে।

৫. এদের সুনির্দিষ্ট কোনো গলনাঙ্ক বা স্ফুটনাঙ্ক থাকে না।

৬. পলিমারের গলনাঙ্ক ধাতু বা সিরামিকের তুলনায় অনেক কম। পলিমারের গলনাঙ্ক সাধারণত 100°C – 300°C এর মধ্যে হয়ে থাকে। অল্প তাপশক্তি খরচ করে পণ্য উৎপাদন করা যায়।

৭. পলিমার দ্রবণের সান্দ্রতা উচ্চমানের হয়ে থাকে।

পলিমার ব্যবহারের সুবিধাঃ 

পলিমার সহজেই ব্যবহার করা যায় কারণ এর ঘনত্ব কম।
ক্ষয় রোধে কার্যকর।

পলিমার রঙিন যৌগ হিসেবে তৈরি করা যায়।

এটি অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক।

পলিমারের ভঙ্গুরতা কম।

জৈব পলিমার:

যে পলিমারের প্রধান শিকল কার্বন পরমাণু দ্বারা গঠিত তাকে জৈব পলিমার বলে। জৈব পলিমারগুলি পলিমার উপাদান যা মূলত ব্যাকবোনটিতে কার্বন পরমাণু ধারণ করে। সুতরাং, এগুলিতে কেবল কার্বন-কার্বন কোভ্যালেন্ট বন্ধন রয়েছে। এই পলিমারগুলি কেবল জৈব মনোমের অণু থেকে তৈরি হয়। বেশিরভাগ সময়, এই পলিমারগুলি পরিবেশ বান্ধব, কারণ এগুলি বায়োডেজেডযোগ্য।

অজৈব পলিমার:

যে পলিমারের প্রধান শিকল কার্বন ছাড়া অন্য কোনো পরমাণু (ফসফরাস, সিলিকন, সালফার) দ্বারা গঠিত হয় তবে এ পলিমারকে অজৈব পলিমার বলে। অজৈব পলিমার হ’ল পলিমার উপাদান যা ব্যাকবোনটিতে কার্বন পরমাণু নেই। তবে এই পলিমারের বেশিরভাগই হাইব্রিড পলিমার কারণ কিছু জৈব অঞ্চলও রয়েছে regions এই পদার্থগুলি উচ্চ শাখা কাঠামো এবং কার্বন ব্যতীত রাসায়নিক উপাদান রয়েছে; যেমন: সালফার, নাইট্রোজেন।

জৈব ও অজৈব পলিমারের মধ্যে পার্থক্য:

যে পলিমারের প্রধান শিকল কার্বন পরমাণু দ্বারা গঠিত তাকে জৈব পলিমার বলে। জৈব ও অজৈব পলিমারের মধ্যে পার্থক্য নিচে আলোচনা করা হয়েছে-

১। জৈব পলিমারসমূহসাধারণত C-C বন্ধনীর মাধ্যমে সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া C-O–C-N- বন্ধনীর মাধ্যমে ও মূল শিকল তৈরি হয়। অন্যদিকে অজৈব পলিমারসমূহের শিকল C-C বন্ধনীর দ্বারা সৃষ্টি হয় না। Si-O, P-N, S-N, S-S, B-N প্রকৃতি বন্ধন দ্বারা অজৈব পলিমারের মূল কাঠামো তৈরি হয়।

২। জৈব পলিমারসমূহের গঠন ত্রিমাত্রিক, তবে সাধারণত শূন্য বিভিন্ন অংশের অবস্থান অনিয়মিত। ফলে জৈব পলিমারসমূহ স্ফটিকাকার হয় না। অন্যদিকে অজৈব পলিমারসমূহ সাধারণত সুনির্দিষ্ট প্যার্টানসহ ত্রিমাত্রিক গঠনবিশিষ্ট হয়। এ কারণে অজৈব পলিমারসমূহ সজটিকাকার হয়।

৩। জৈব পলিমারের C-C বন্ধন শক্তি প্রায় ৮৩ কিলোক্যালরী/ মোল। অর্থাৎ এ বন্ধন শক্তি মধ্যম ধরনের। অন্যদিকে অনেক অজৈব পলিমারের মূলকাঠামোর বন্ধনী শক্তি উচ্চ ধরণের। যেমনঃ- সিলিকেট ও সিলিকেট ও সিলিকোনসমূহে Si-O বন্ধনী শক্তি 106 কিলোক্যালরী।

৪। জৈব পলিমারসমূহের তাপ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিম্ন। অনেক জৈব পলিমার বাতাসে 300 ডিগ্রি তাপমাত্রায় বিয়োজিত হয়। অন্যদিকে সাধারণত অজৈব পলিমারসমূহের তাপ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি, এ কারণে উচ্চতর তাপমাত্রায় পিচ্ছিলকার হিসাবে কিছু কিছু অজৈব পলিমার ব্যবহৃত হয়। তবে H2Sn যৌগসমূহ সহজেই বিয়োজিত হয়।

৫। জৈব পলিমারসমূহ ক্ষার, অ্যাসিড ও জারক দ্বারা কিছুটা আক্রান্ত হয়। বিভিন্ন দ্রাবক দ্বারা ও জৈব পলিমারসমূহ আক্রান্ত হয়। অন্যদিকে সিলিকেটসমূহ সহজে অ্যাসিড বা জারক দ্বারা আক্রান্ত হয় না। তবে অন্যান্য কিছু অজৈব পলিমার এ সকল বিজারক দ্বারা অনেক সহজে আক্রান্ত হয়।

৬। -C-C- শিকল বিশিষ্ট জৈব পলিমারসমূহ আর্দ্র বিশ্লেষিত হয় না। -C-O- এবং -C-N শিকল বিশিষ্ট জৈব পলিমারসমূহ ধীরে আর্দ্র বিশ্লেষিত হয়। অন্যদিকে অনেক অজৈব পলিমার সহজে আর্দ্র বিশ্লেষিত হয়। তবে Si-O বন্ধনী বিশিষ্ট পলিমারসমূহ আর্দ্র বিশ্লেষিত হয় না।

পলিমার, প্লাস্টিসিটি (Polymer, Plasticity)

প্রশ্ন: প্লাস্টিসিটি কী? সব পলিমার প্লাস্টিক নয় অথচ সব প্লস্টিক পলিমার কেন? (Plasticity and Not all polymers are plastic but why all plastic polymers)

উত্তরঃ প্লাস্টিসিটি ও Plastic হলো পলিমার এর একটি রূপ। যেসব পলিমারকে তাপ দিলে তা নমনীয় হয় এবং চাপ দিয়ে বিভিন্ন আকৃতি দেয়া যায় তারই নাম প্লাস্টিক। আর প্লাস্টিক দ্রব্যের বৈশিষ্ট্যকেই বলা হয় প্লাস্টিসিটি। অর্থাৎ কোন পলিমারীয় দ্রব্যকে তাপ প্রয়োগে নমনীয় করে এর flexibility, প্রক্রিয়াকরণ এবং আকৃতি প্রদান যোগ্যতা বৃদ্ধি করার গুণাবলিকেই বলা হয় প্লাস্টিসিটি । 

বস্তুত সব পলিমারই প্লাস্টিক নয়। কারণ সাধারণত একটি পলিমারের দীর্ঘ চেইনের বিভিন্ন অংশের (segment) মধ্যে উচ্চ আর্কষণ বল বিরাজ করে যার কারণে পলিমার চেইনের অংশগুলোর নড়াচড়া (mobility) বন্ধ হয়ে যায়। ফলে পলিমারের কাঠামো কঠিন হয়ে যায়। এ কারণে পলিমার ভঙ্গুর হয়, বিশেষ করে নিম্ন তাপমাত্রায়। 

যেমন- একটি রাবার বল –70°C এর নিচে শীতল করার পর যদি একে মেঝেতে ফেলে দেয়া হয় তাহলে বলটি ভেঙ্গে কাঁচের মত টুকরা টুকরা হয়ে গেছে। এ বিষয়টির নাম ভঙ্গুরতা (brittleness)। এ তাপমাত্রাটি যার নিচে প্লাস্টিক ভঙ্গুরতা অর্থাৎ glassy কাঠামো লাভ করে এবং যে তাপমাত্রার উপর এটির ভঙ্গুরতা লোপ পেয়ে নমনীয় ও আকৃতি প্রদানযোগ্য হয় তবে গলেনা (গলন তাপমাত্রার নাম Tm) Glass transition temperature (Tg) 

খুবই কম আণবিক ভরবিশিষ্ট পলিমারকে টার পলিমার (Tar polymer), কম আণবিক ভরবিশিষ্ট পলিমারকে অলিগোমার (Oligomer), উচ্চ আণবিক ভরবিশিষ্ট পলিমারকে উচ্চ পলিমার (High polymer) এবং অতি উচ্চ আণবিক ভরবিশিষ্ট পলিমারকে আলট্রা অই পলিমার (Ultra high polymer) বলা হয়ে থাকে ।

পলিমারের শ্রেণিবিভাগ: (Classification of Polymer): উৎসের উপর ভিত্তি করে পলিমারকে তিন ভাগে করা হয়ে থাকে। 

(ক) প্রাকৃতিক পলিমার, 

(খ) কৃত্রিম পলিমার, 

(গ) অকৃত্রিম পলিমার। 

(ক) প্রাকৃতিক পলিমার: (Natural Polymer): 
সাধারণভাবে প্রকৃতি অর্থাৎ উদ্ভিদ ও প্রাণী থেকে প্রাপ্ত পলিমার এ জাতীয় পলিমার । যেমন- প্রাকৃতিক রাবার, স্টার্চ, সেলুলোজ ইত্যাদি। 

(খ) কৃত্রিম পলিমার: (Synthetic polymer) : 
পরীক্ষাগারে কৃত্রিমভাবে প্রস্তুতকৃত পলিমারসমূহ এ জাতীয় পলিমার। যেমন- পলিইথিলিন, পলিস্ট্যারিন, পলিভিনাইল ক্লোরাইড, নাইলন, টেরিলিন ইত্যাদি। 

(গ) অর্ধকৃত্রিম: (Semi-artificial): 
প্রাকৃতিক পলিমারকে বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিবর্তিত করে এ জাতীয় পলিমার উৎপন্ন করা হয়ে থাকে। যেমন- হাইড্রোজেনেটেড প্রাকৃতিক রাবার, হ্যালোজেনেটেড প্রাকৃতির রাবার, সেলুলোজ অ্যাসিটেট, সেলুলোজ নাইট্রেট ইত্যাদি। 

প্রয়োগের দিক থেকে বিবেচনা করলে পলিমারকে তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়ে থাকে। যথা-

(ক) রবার (Rubber): 
সাধারণ অবস্থায় এদের উপর টান বা পীড়ন (strees) প্রয়োগ করলে এদের আকারের বিকতি ঘটে কিন্তু টান বা পীড়ন সরিয়ে নিলে পুনরায় পূর্বের আকার বা অবস্থায় ফিরে আসে। যেমন- প্রাকৃতিক রবার পলিবিউটাডাইইন রবার জাতীয় পলিমার অনিয়তাকার ও উচ্চ আণবিক ভর সম্পন্ন হয়। এরে প্রসারণশীলতা ও টানশক্তির মান খুবই উচ্চ এবং এ মান 300 psi হতে 3000 psi পর্যন্ত হয়ে থাকে । 

(খ) পাস্টিক (Plastic) : 
পলিমারের উপর টান বা পীড়ন প্রয়োগের ফলে যেসব পলিমারের আকারের স্থায়ী পরিবর্তন ঘটে তাদের পাস্টিক বলা হয়ে থাকে। প্লাস্টিক জাতীয় পদার্থগুলো আংশিক কেলাসাকার এবং রবারের তুলনায় বেশি শক্তিশালী হয়। তবে বেশ কিছু প্রাস্টিক আবার শক্ত, দৃঢ় ও অনমনীয়। যেমন- পলিস্ট্যাইরিন, ফেনল- ফরমালডিহাইড রেজিন, ইউরিয়াফরমালডিহাইড রেজিন ইত্যাদি। আবার কিছু প্লাস্টিক আছে যেগুলো নরম, কোমল ও নমনীয় যেমন- পলিইথিলিন, পলিপ্রোপিলিন বা পলি, পলিভিনাইল অ্যাসিটেট ইত্যাদি। পাস্টিক জাতীয় পদার্থগুলো রবারে তুলনায় কম প্রসারণশীল এবং এদের টানশক্তির মান সাধারণত 400 psi হতে 15000 psi হয়ে থাকে। 

(গ) তন্তু (Fiber): 
এদের ক্ষেত্রে, এদের দৈর্ঘ্য ও ব্যাসের অনুপাত অন্ততপক্ষে 100 হতে হয়। তবে কৃত্রিমভাবে প্রস্তুত তন্তু ক্ষেত্রে এ মান 3000 পর্যন্ত হতে পারে। এক্ষেত্রে পলিমার অণুগুলো রৈকিক শৃঙ্খলযুক্ত হয়ে থাকে। এদের পলিমার অণুর বর্তমান হাইড্রোজেন বন্ধন অণুকে আরও সুদৃঢ় করে থাকে। যেমন- তুলা, রেশম, পশম, পাট, টেরিলিন, সিল্ক, নাইল প্রভৃতি তন্তু জাতীয় পলিমারের উদাহরণ।

প্রশ্ন: পলিমার কী? পলিমারের শ্রেণীবিভাগ আলোচনা কর । (Polymer and it’s classification)

উত্তর: গ্রিক শব্দ পলি (poly) অর্থ বহু এবং মেরোস (meros) অর্থ অংশ বা একক (unit)। সুতরাং ছোট একক অণু থেকে বৃহৎ অণু সৃষ্টির প্রক্রিয়াই হচ্ছে পলিমারকরণ। অর্থাৎ যে বিক্রিয়ায় একই যৌগের (যেমন- অসম্পৃক্ত হাইড্রো

কোন মন্তব্য নেই: