বাংলাদেশী ফেব্রিক সাপ্লায়ার | Fabric: Made in Bangladesh - Textile Lab | Textile Learning Blog
Fabric: Made in Bangladesh
বাংলাদেশে বর্তমানে ৪২৪ টি স্পিনিং মিল, ৭৯৪ টি টেক্সটাইল উইভিং মিল, ২৪১ টি ডাইং এবং ফিনিশিং মিল এবং মোট ৬,৫০০ টির বেশি নিবন্ধিত এবং ৫০০ টিরও বেশি অনিবন্ধিত গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল কারখানা রয়েছে। ১১ এপ্রিল, ২০১৭। সূত্রঃ গুগল। 

এই ৭০০০ টি গারমেন্টের প্রডাকশনের জন্য যে পরিমাণ ফেব্রিক যোগান দেয়া দরকার তা দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা দেশীয় ফেব্রিক দিয়ে নিন্মক্ত কয়েকটি কারণেঃ 

১। বায়াররা চাইনিজ ফেব্রিক এপ্প্রুভ করে, কারণ চাইনিজরা বায়ারদেরকে তাদের ফেব্রিকের স্যাম্পল খুব দ্রুত বায়ারকে পাঠায় এবং বায়ার চায় তার প্রডাক্টে এই নতুন ডিসাইনের ফেব্রিক টা অবশ্যই থাকুক। যাতে সবার আগে সে বেচতে পারে। তাই ফেব্রিক এপ্রুভ হয়ে যায় তাড়াতাড়ি। 

২। আমাদের দেশীয় উদ্যোক্তারা ফেব্রিক মিল খোলার চাইতে গারমেন্ট কারখানা খোলাটাকে কম ঝামেলার মনে করে। 

৩। দেশীয় কাঁচামালের যোগান সেই পরিমাণ নেই তাই কাঁচামালের জন্য আবার চায়না বা অন্য দেশের দিকে হাত বাড়াতে হয়। 

৪। আমাদের ফেব্রিক গারমেন্টে ব্যাবহার না হওয়ায় ফেব্রিক মিল গুলি দিন দিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অর্ডারের অভাবে। 

৫। আবার দেশীয় ফেব্রিকের মার্কেটিং দুর্বল হওয়ায় বায়ারদেরকে আকৃষ্টও করা যাচ্ছে না।  

এরকম আরও অনেক খুটি নাটি বিষয় আছে যার কারণে দেশে ফেব্রিক মিল বাড়ছে না বরং কমছে দিনকে দিন। 

তাতে সমস্যা কি ? 

সমস্যা অবশ্যই আছে। চায়নাতে এক সময় প্রচুর গারমেন্ট কারখানা ছিল। কিন্তু শ্রমিকের মজুরি বেশী হওয়ায় চায়না গারমেন্ট বন্ধ করে দিচ্ছে দিন কে দিন। তবে সে বন্ধ করেনি ফেব্রিক মিল এবং ট্রিমস ফেকটরি। এটা একটা বিজনেস পলিসি। 

ফেব্রিক বেচার জন্য সে বাংলাদেশের কোন ফ্যাক্টরির মালিকের সামনে এসে বসে থাকেনি। সে ধরেছে সরাসরি বায়ারকে। বায়ারকে সে কনভিন্স করেছে। এবার আপনি যাইবেন কই? ফেব্রিক আপনাকে তার কাছ থেকে কিনতেই হবে। উপায় নাই। কিন্তু ওখানেই সমস্যা। 

ফেব্রিকের জন্য আমরা যখন চায়নার উপর পুরাপুরি ঝুঁকে পরছি ঠিক এমন সময় যদি চায়না বলে যে আমি ফেব্রিক দিতে পারবো না তখন কি হবে? 

এই ৭০০০ পোশাক কারখানার কি হবে? কোথায় যাবে এতো শ্রমিক? 

যেভাবে গারমেন্ট শ্রমিকের মজুরি বেশী হওয়ায় চায়না গারমেন্ট বন্ধ করে দিয়েছিল তেমনি যদি একই কারণে চায়না ফেব্রিক মিলও বন্ধ কর দেয় তবে আমাদের জন্য এটা হবে বিশাল ক্ষতি আর এই ক্ষতি কোন কিছু দিয়ে  পূরণ করা যাবে না। কারণ, একবার যদি বায়ার হাত ছাড়া হয়ে যায় তবে তাকে আবার ফিরিয়ে আনা সহজ সাধ্য নয়। 

তা; কি করা যায়? 

১। দেশে আরো বেশী বেশী ফেব্রিক মিল খুলতে হবে। 

২। কাঁচামালের পর্যাপ্ত যোগান দিতে হবে। 

৩। দেশীয় কাপড় বায়ারদের চাহিদা অনুযায়ী বানিয়ে এপ্প্রুভ করাতে হবে। 

৪। দেশে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে হবে ফেব্রিক এন্ড ট্রিমসের কারখানা খুলতে হবে। 

৫। প্রয়োজনে চায়নিজ উদ্যোক্তা দেশে এনে ফেব্রিক কারখানা খুলাতে হবে, তাকে বুঝতে হবে যে তোমার দেশের চাইতে আমার দেশে শ্রমিকের মজুরি কম। 

৬। সরকারিভাবে উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে হবে ফেব্রিক মিল খুলার জন্য। 

৭। ট্যাক্স বা অন্যান্য খরচ কমিয়ে দিয়ে হলেও ফেব্রিক মিল খুলতে উৎসাহিত করতে হবে।

৮। কাপড়ের কাঁচামালের যোগান যেই দেশে বেশী প্রয়োজনে তাদেরকে উৎসাহিত করতে হবে যে তোমরা ফেব্রিক মিল খুলো আমরা ফেব্রিক কিনবো তোমার কাছ থেকে। 

৯। দেশীয় ফেব্রিকের মার্কেটিং বাড়াতে হবে 

১০। যেকোনো ভাবে চায়নার একটা বিকল্প তৈরি করে রাখতে হবে আমাদের পোশাক শিল্পকে বাঁচাতে হলে। 

একচেটিয়া বা মোনোপলি বিজনেস করে যাচ্ছে চায়না আমাদের দেশে সেটা হয়তো সমস্যা না কারণ আমরা তো ফেব্রিক পাচ্ছি । কিন্তু সমস্যা হবে তখন যখন কোন একটা বিশেষ কারণে চায়না ফেব্রিক বানানো বন্ধ করে দিবে বা আমাদেরকে দরকারের তুলনায় কম ফেব্রিক দিবে। তাই এটা নিয়ে ভাবার এখনই সময় যদিও অনেক দেরী হয়ে গেছে।

Syed Rijoan Islam (Munna)🇧🇩
Social & Technical Auditor, Team leader: Inspection, Training. BVCPS BD, Myanmar, Sri Lanka, Fields: Garments, Soft & Hard Goods, Home Textile, Footwear, Accessories. Certified: BRC, Lean-Six Sigma Black Belt

বাংলাদেশী ফেব্রিক সাপ্লায়ার | Fabric: Made in Bangladesh

Fabric: Made in Bangladesh
বাংলাদেশে বর্তমানে ৪২৪ টি স্পিনিং মিল, ৭৯৪ টি টেক্সটাইল উইভিং মিল, ২৪১ টি ডাইং এবং ফিনিশিং মিল এবং মোট ৬,৫০০ টির বেশি নিবন্ধিত এবং ৫০০ টিরও বেশি অনিবন্ধিত গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল কারখানা রয়েছে। ১১ এপ্রিল, ২০১৭। সূত্রঃ গুগল। 

এই ৭০০০ টি গারমেন্টের প্রডাকশনের জন্য যে পরিমাণ ফেব্রিক যোগান দেয়া দরকার তা দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা দেশীয় ফেব্রিক দিয়ে নিন্মক্ত কয়েকটি কারণেঃ 

১। বায়াররা চাইনিজ ফেব্রিক এপ্প্রুভ করে, কারণ চাইনিজরা বায়ারদেরকে তাদের ফেব্রিকের স্যাম্পল খুব দ্রুত বায়ারকে পাঠায় এবং বায়ার চায় তার প্রডাক্টে এই নতুন ডিসাইনের ফেব্রিক টা অবশ্যই থাকুক। যাতে সবার আগে সে বেচতে পারে। তাই ফেব্রিক এপ্রুভ হয়ে যায় তাড়াতাড়ি। 

২। আমাদের দেশীয় উদ্যোক্তারা ফেব্রিক মিল খোলার চাইতে গারমেন্ট কারখানা খোলাটাকে কম ঝামেলার মনে করে। 

৩। দেশীয় কাঁচামালের যোগান সেই পরিমাণ নেই তাই কাঁচামালের জন্য আবার চায়না বা অন্য দেশের দিকে হাত বাড়াতে হয়। 

৪। আমাদের ফেব্রিক গারমেন্টে ব্যাবহার না হওয়ায় ফেব্রিক মিল গুলি দিন দিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অর্ডারের অভাবে। 

৫। আবার দেশীয় ফেব্রিকের মার্কেটিং দুর্বল হওয়ায় বায়ারদেরকে আকৃষ্টও করা যাচ্ছে না।  

এরকম আরও অনেক খুটি নাটি বিষয় আছে যার কারণে দেশে ফেব্রিক মিল বাড়ছে না বরং কমছে দিনকে দিন। 

তাতে সমস্যা কি ? 

সমস্যা অবশ্যই আছে। চায়নাতে এক সময় প্রচুর গারমেন্ট কারখানা ছিল। কিন্তু শ্রমিকের মজুরি বেশী হওয়ায় চায়না গারমেন্ট বন্ধ করে দিচ্ছে দিন কে দিন। তবে সে বন্ধ করেনি ফেব্রিক মিল এবং ট্রিমস ফেকটরি। এটা একটা বিজনেস পলিসি। 

ফেব্রিক বেচার জন্য সে বাংলাদেশের কোন ফ্যাক্টরির মালিকের সামনে এসে বসে থাকেনি। সে ধরেছে সরাসরি বায়ারকে। বায়ারকে সে কনভিন্স করেছে। এবার আপনি যাইবেন কই? ফেব্রিক আপনাকে তার কাছ থেকে কিনতেই হবে। উপায় নাই। কিন্তু ওখানেই সমস্যা। 

ফেব্রিকের জন্য আমরা যখন চায়নার উপর পুরাপুরি ঝুঁকে পরছি ঠিক এমন সময় যদি চায়না বলে যে আমি ফেব্রিক দিতে পারবো না তখন কি হবে? 

এই ৭০০০ পোশাক কারখানার কি হবে? কোথায় যাবে এতো শ্রমিক? 

যেভাবে গারমেন্ট শ্রমিকের মজুরি বেশী হওয়ায় চায়না গারমেন্ট বন্ধ করে দিয়েছিল তেমনি যদি একই কারণে চায়না ফেব্রিক মিলও বন্ধ কর দেয় তবে আমাদের জন্য এটা হবে বিশাল ক্ষতি আর এই ক্ষতি কোন কিছু দিয়ে  পূরণ করা যাবে না। কারণ, একবার যদি বায়ার হাত ছাড়া হয়ে যায় তবে তাকে আবার ফিরিয়ে আনা সহজ সাধ্য নয়। 

তা; কি করা যায়? 

১। দেশে আরো বেশী বেশী ফেব্রিক মিল খুলতে হবে। 

২। কাঁচামালের পর্যাপ্ত যোগান দিতে হবে। 

৩। দেশীয় কাপড় বায়ারদের চাহিদা অনুযায়ী বানিয়ে এপ্প্রুভ করাতে হবে। 

৪। দেশে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে হবে ফেব্রিক এন্ড ট্রিমসের কারখানা খুলতে হবে। 

৫। প্রয়োজনে চায়নিজ উদ্যোক্তা দেশে এনে ফেব্রিক কারখানা খুলাতে হবে, তাকে বুঝতে হবে যে তোমার দেশের চাইতে আমার দেশে শ্রমিকের মজুরি কম। 

৬। সরকারিভাবে উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে হবে ফেব্রিক মিল খুলার জন্য। 

৭। ট্যাক্স বা অন্যান্য খরচ কমিয়ে দিয়ে হলেও ফেব্রিক মিল খুলতে উৎসাহিত করতে হবে।

৮। কাপড়ের কাঁচামালের যোগান যেই দেশে বেশী প্রয়োজনে তাদেরকে উৎসাহিত করতে হবে যে তোমরা ফেব্রিক মিল খুলো আমরা ফেব্রিক কিনবো তোমার কাছ থেকে। 

৯। দেশীয় ফেব্রিকের মার্কেটিং বাড়াতে হবে 

১০। যেকোনো ভাবে চায়নার একটা বিকল্প তৈরি করে রাখতে হবে আমাদের পোশাক শিল্পকে বাঁচাতে হলে। 

একচেটিয়া বা মোনোপলি বিজনেস করে যাচ্ছে চায়না আমাদের দেশে সেটা হয়তো সমস্যা না কারণ আমরা তো ফেব্রিক পাচ্ছি । কিন্তু সমস্যা হবে তখন যখন কোন একটা বিশেষ কারণে চায়না ফেব্রিক বানানো বন্ধ করে দিবে বা আমাদেরকে দরকারের তুলনায় কম ফেব্রিক দিবে। তাই এটা নিয়ে ভাবার এখনই সময় যদিও অনেক দেরী হয়ে গেছে।

Syed Rijoan Islam (Munna)🇧🇩
Social & Technical Auditor, Team leader: Inspection, Training. BVCPS BD, Myanmar, Sri Lanka, Fields: Garments, Soft & Hard Goods, Home Textile, Footwear, Accessories. Certified: BRC, Lean-Six Sigma Black Belt

কোন মন্তব্য নেই: