নাসা গ্রুপ
১৯৯০ সালে উদ্যোক্তা মো. নজরুল ইসলাম মজুমদার প্রতিষ্ঠা করেন নাসা গ্রুপ। তিনিই গ্রুপটিতে চেয়্যারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। তার নেতৃত্ব ও পরিশ্রমের ফলে অল্প সময়ের মধ্যে দেশের শীর্ষস্থানীয় কনগ্লোমারেটে পরিণত হয় গ্রুপটি। তৈরি পোশাক শিল্প, ব্যাংক, রিয়েল এস্টেট, ব্রোকারিং, শিক্ষা, ভ্রমণ প্রভৃতি খাতে বিনিয়োগ রয়েছে এই গ্রুপের। গ্রুপটির বর্তমান বার্ষিক আয়ের পরিমাণ প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন ডলার।
১৯৯৫ সালে হংকংয়ে নাসা গ্রুপের সোর্সিং অফিস চালু করা হয়। ১৯৯৯ সালে এক্সিম ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে নাসা গ্রুপ। ২০০২ সালে নাসা তাইপেই টেক্সটাইল মিলস চালু হয়। ২০০৫ সালে তাইপেই ডেনিমস লিমিটেড চালু করে গ্রুপটি। ওই একই বছর নাসা স্পিনিং লিমিটেড প্রতিষ্ঠিত হয়।
২০০৭ সালে যাত্রা শুরু করে নাসা প্রোপার্টিজ লিমিটেড। দেশের অভিজাত শ্রেণির মানুষদের আবাসনসুবিধা দেওয়ার জন্য ২০০৮ সালে গ্রুপটি প্রতিষ্ঠা করে র্যানস রিয়েল এস্টেট লিমিটেড। ২০১২ সালে এএনডব্লিউ অ্যাসোসিয়েটস লন্ডন লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠা করে নাসা ব্রোকারেজ হাউজ।
বাংলাদেশের পোশাক খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে নাসা গ্রুপের। বর্তমানে এই গ্রুপে ৩৪টি গার্মেন্ট রয়েছে। গার্মেন্টগুলোয় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ কর্মরত রয়েছেন। তাদের তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল খাতের সুনাম রয়েছে বিশ্বজুড়ে। গুণগত দিকটি বজায় রেখে উন্নতমানের পণ্য সঠিক সময়ে ক্রেতার কাছে সরবরাহ করা প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন ধারণা উপহার দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এখানে উদ্ভাবনী শক্তিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ক্রেতার সন্তুষ্টি অর্জনে চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই।
বিশ্বের নামকরা অভিজাত ব্র্যান্ডের জন্য সুতা, টেক্সটাইল ও পোশাক সরবরাহ করে থাকে তারা। ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে কেমার্ট, ওয়ালমার্ট, সিয়ার্স, চিপ মানডে, মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার, বিএইচএস, জেসি পেনি, স্প্রিংফিল্ড, ক্যারিফোর, টেসকো, এইচ অ্যান্ড এম,
জারা, বেরশকা, অক্সিলেন, ওরসে, প্রোমোড জেমো প্রভৃতি।
এক্সিম ব্যাংকঃ
এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেডই এক্সিম ব্যাংক নামে পরিচিত। বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক এটি। দেশের প্রথম বেসরকারি ব্যাংক হিসেবে ২০০৯ সালে যুক্তরাজ্যে এক্সচেঞ্জ হাউজ চালু করে এই ব্যাংক। পরে কানাডায়ও এক্সচেঞ্জ কোম্পানি চালু করে ব্যাংকটি। যুক্তরাজ্য ও কানাডায় বসবাসরত ও কর্মরত বাংলাদেশি সর্বোত্তম রেমিট্যান্স সেবাদানের লক্ষ্যে এক্সচেঞ্জ কোম্পানি চালু করা হয়েছে।
রিটেইল, করপোরেট, এসএমই ও কৃষি ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি বৈদেশিক বাণিজ্য চালু রয়েছে এখানে। করপোরেট সামাজিক দায়িত্বের অংশ হিসেবে এক্সিম ব্যাংক আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিয়ে থাকে। ২০০৬ সাল থেকে এই কর্মসূচি পালন করে আসছে ব্যাংকটি। বৃত্তিপ্রাপ্ত একজন ছাত্র কিংবা ছাত্রীর শিক্ষাজীবন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত রাখে তারা। এছাড়া অসহায় দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করে থাকে ব্যাংকটি। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে নিয়মিত অনুদান দিয়ে আসছে ব্যাংকটি।
এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ঃ
বেসরকারি পর্যায়ের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশে কৃষি গবেষণাভিত্তিক প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এটি। এক্সিম ব্যাংক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ২০১৩ সালের ৯ অক্টোবর এটি উদ্বোধন করা হয়। ২০১৪ সালে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে এ বিশ্ববিদ্যালয়। নাসা গ্রুপের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ দেশবরেণ্য শিল্পপতিদের নিয়ে এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বোর্ড অব ট্রাস্টি গঠিত।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বড় ইন্দারামোড়ে সাততলাবিশিষ্ট আধুনিক ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়টির অস্থায়ী ক্যাম্পাস রয়েছে। বর্তমানে এখানে কৃষি, কৃষি অর্থনীতি, আইন, বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ফিসারিজ, ভেটেরিনারি মেডিসি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং, লাইফ সায়েন্স, সোশ্যাল সায়েন্স প্রভৃতি অনুষদ চালু রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নে ২০ একর জমি কেনা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে আরও জমি কেনার পরিকল্পনা রয়েছে।
নতুন বই ও জার্নালসমৃদ্ধ সুসজ্জিত একটি গ্রন্থাগার রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। বৈশ্বিক মানসম্পন্ন কারিকুলামসহ আন্তর্জাতিক মানের শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য উচ্চগতির ওয়াইফাই ইন্টারনেটসমৃদ্ধ একটি কম্পিউটার ল্যাব আছে। রয়েছে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন গবেষণাগার। এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ক্রেডিট ট্রান্সফারের সুযোগ দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। শিক্ষার্থীদের ইংরেজি বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাউন্সেলিং সুবিধা চালু রয়েছে। রয়েছে খেলাধুলার ব্যবস্থা।
কৃষি গবেষণায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার, শিক্ষা উপকরণ ও মানসম্মত শিক্ষাদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছ এই বিশ্ববিদ্যালয়টি। শিক্ষার্থীদের দক্ষ গবেষক হিসেবে গড়ে তুলতে চায় তারা। নাসা গ্রুপের অন্য সিসটার কনসার্নের মতো এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
নাসা গ্রুপের টেক্সটাইল ইউনিটঃ
মোট ফ্যাক্টরি 34
মোট উৎপাদন ক্ষমতা 50 মিলিয়ন
মোট প্রডাকশন স্পেস ৩ মিলিয়ন বর্গফুট
মোট উৎপাদন লাইন 210 টি
মেশিন ডিপ্লয় 19,000
মোট কর্মক্ষম ম্যানপাওয়ার 30,500
NASSA GROUP Address :
238, Tejgaon Industrial Area,
Gulshan Link Road, Dhaka-1208
রতন কুমার দাস
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন