টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি পরিচিতি - অ্যাম্বার গ্রুপ | Amber Denim | Amber Cotton Mills | AMBER GROUP - Textile Lab | Textile Learning Blog
অ্যাম্বার গ্রুপ
 
অ্যাম্বার গ্রুপ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৬ সালে। তখন অ্যাম্বার কটন মিলস লিমিটেডের মাধ্যমে এ গ্রুপের যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার পর অল্প সময়ের মধ্যে গ্রাহকের চাহিদা পূরণে সক্ষম হয় তারা। সুতা উৎপাদনের পাশাপাশি ডেনিম, বোর্ড, দরজা, ইন্টারনেট গেটওয়ে, শপিং আউটলেট, বিনোদনকেন্দ্র প্রভৃতি খাতে বিনিয়োগ করে গ্রুপটি। তাদের সব প্রতিষ্ঠানে সর্বাধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।
উচ্চশিক্ষিত ও দক্ষ পেশাজীবীর সমন্বয়ে গড়ে তোলা হয়েছে অ্যাম্বার গ্রুপ। কর্মীরাই এর প্রধান সম্পদ। গ্রুপটিতে চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন শওকত আজিজ রাসেল। তিনি দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোর শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টরের দায়িত্বে রয়েছেন একেএম হাশমী। পরিচালনা পর্ষদে রয়েছেন ফারহানাজ চৌধুরী ও ব্যারিস্টার সুমাইয়া আজিজ।

শিল্পোদ্যোগঃ

১. অ্যাম্বার কটন মিলসঃ

নিটিং ও উইভিং খাতের জন্য স্প্যান ইয়ার্ন উৎপাদন করে অ্যাম্বার কটন মিলস। প্রতিষ্ঠানটির মতে, দেশের স্প্যান ইয়ার্নের চাহিদার বেশিরভাগ পূরণ করছে এ প্রতিষ্ঠানটি। শুধু তা-ই নয়, রফতানিও করছে। ব্যবসায় যথাযথ নৈতিকতা মেনে চলে অ্যাম্বার কটন মিলস।
২. অ্যাম্বার বোর্ড লিমিটেডঃ

বোর্ড ধরনের পণ্যের বাজারে পরিচিত নাম অ্যাম্বার বোর্ড। প্রতিষ্ঠানটির সব ধরনের পণ্য দামে সাশ্রয়ী। গৃহস্থালী ও বাণিজ্যিক ডেকোরেশনের কাজে ব্যবহৃত হয় এসব পণ্য। বাছাইকৃত শক্ত ও টেকসই কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয় পণ্যগুলো। পর্যাপ্ত কোরের স্তর থাকায় বোর্ডগুলো তুলনামূলক বেশি মজবুত। অন্যান্য গুণের মধ্যে রয়েছে, এ ধরনের বোর্ড অধিক স্ক্রু ধারণ করতে পারে। ফাঙ্গাস, ঘুণ কিংবা উইপোকা প্রতিরোধক হিসেবে এর সুনাম রয়েছে। সব আবহাওয়ায় দীর্ঘদিন টিকে থাকে। গুণগত মানের কারণে গ্রাহকের আস্থা অর্জন করেছে অ্যাম্বার বোর্ডের পণ্য।

৩. অ্যাম্বার ডেনিম লিমিটেডঃ

মৌলিক মানের জিন্স দিয়ে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু হয়। তবে দীর্ঘদিন ধরে ডেনিম কাপড় উৎপাদন, ওয়াশিং, প্রসেসিং প্রভৃতি খাতে বিশেষ অবদান রাখছে। এ খাতে সক্ষমতা অর্জন করেছে তারা। অ্যাম্বার রোটর মিলস লিমিটেড, অ্যাম্বার রোটর স্পিনিং মিলস লিমিটেড ও অ্যাম্বার কটন মিলস লিমিটেডের তিনটি প্রতিষ্ঠান ডেনিম উৎপাদন করে। সঠিক সময়ে বিদেশি ক্রেতার কাছে ডেনিম সরবরাহ করে তারা। প্রিমিয়াম ক্যাটেগরির ডেনিম প্রস্তুতকারক হিসেবে তারা এগিয়ে রয়েছে। আরামদায়ক, অর্গানিক ডেনিম রয়েছে তাদের। তাদের তৈরি ডেনিমে কখনও ক্রিজ পড়ে না। এর স্থায়িত্ব তুলনামূলক বেশি।

৪. অ্যাম্বার আইটিঃ

অ্যাম্বার আইটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৭ সালে। ডায়াল-আপ ও রেডিও লিংক ইন্টারনেট দিয়ে শুরু হয় তাদের ব্যবসা। তখন মূলত স্থানীয় পর্যায়ের ভোক্তাসাধারণের বিষয়টি মাথায় রেখে তারা প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করে। তবে উন্নত সেবাদানের কারণে অল্প সময়ের মধ্যে দেশের শীর্ষস্থানীয় আইটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। টেলিযোগাযোগ খাতে তাদের ভূমিকা ঈর্ষণীয়।

৫. অ্যাম্বার লাইফস্টাইলঃ

পাশ্চাত্যের সঙ্গে দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের মিশেলে নতুন ধারায় উন্নত পোশাক-পরিচ্ছদ সরবরাহ করে থাকে অ্যাম্বার লাইফস্টাইল। ২০১৪ সালের অক্টোবরে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কে এর প্রথম আউটলেট চালু করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির পণ্যগুলো আরামদায়ক ও আকর্ষণীয়। সব ঋতুতে স্বস্তিদায়ক। বাংলাদেশের জনসাধারণের শপিংয়ের অভিজ্ঞতা সুবিধাজনক করে তুলতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। সংগত কারণে ক্রেতাদের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সাড়া পাচ্ছে অ্যাম্বার লাইফস্টাইল।

৬. অ্যাম্বার ইন্টারন্যাশনালঃ 

কটন: কারগিল কমোডিটিস, লিউস ড্রেফুস কমোডিটিস, ডুনাভ্যান্ট প্রভৃতি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের সঙ্গে ব্যবসা রয়েছে অ্যাম্বার ইন্টারন্যাশনালের।
জ্বালানি: দুটি পাওয়ার প্লান্ট রয়েছে তাদের।
কয়লা: প্রতিষ্ঠানটি সূত্রে জানা যায়,
দেশের শীর্ষস্থানীয় কয়লা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এটি।

চিনি পরিশোধক: ইপিসি চুক্তির আওতায় দিনে প্রায় ৩৮০০ টন চিনি পরিশোধন করে অ্যাম্বার ইন্টারন্যাশনাল।

৭. ভাওয়াল রিসোর্ট

নকশা, আধুনিকতা, নান্দনিকতা ও সবুজের মিশেলে তৈরি করা হয়েছে ভাওয়াল রিসোর্ট। এর নকশায় আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখা হয়েছে। আধুনিক সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এখানে। গাজীপুরের ভাওয়াল গড় ও মধুপুরের বন ঘেঁষে রিসোর্টটি নির্মাণ করা হয়েছে। 

গাজীপুরের মির্জাপুর ইউনিয়নের নলজানি গ্রামে এর অবস্থান। প্রকৃতির কোনো ক্ষতি না করে গড়ে তোলা হয়েছে এটি। এখানে রয়েছে সাইক্লিং সুবিধাসহ লন টেনিস, ব্যাডমিন্টন, পুল খেলার সুযোগ। রয়েছে সুইমিংপুল, জিমনেসিয়াম, স্পা সুবিধা। 
পাঁচটি জোনসহ ৬১টি কটেজ রয়েছে ভাওয়াল রিসোর্টে। হানিমুন, ফ্যামিলি ট্যুরসহ বিয়ে, কনফারেন্স, সেমিনার, ওয়ার্কশপ প্রভৃতি আয়োজনের সুবিধা রয়েছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রিসোর্টটিতে। অতিথিদের নিরাপত্তার জন্য আনসার বাহিনীর রয়েছে, সার্বিক দেখভাল করছেন প্রায় দেড়শ কর্মকর্তা-কর্মচারী।

৮. বিডি হাব
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) ও প্রযুক্তি খাতের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে অ্যাম্বার গ্রুপের বিডি হাব।




পরিবেশবান্ধব মসজিদ নির্মাণে সেরা পুরস্কার

ব্যতিক্রমী মসজিদ ও শাটল লুম শেডের বৈশিষ্ট্য হলো প্রাকৃতিকভাবে ভিতরে বায়ুপ্রবাহের ব্যবস্থা ও আলোর খেলা। এনেছে নতুন এক বৈচিত্র্য

 

ওয়াটারস্কেপ ও ল্যান্ডস্কেপের সমন্বয়ে সম্পূর্ণ নতুন চিন্তায় প্রাকৃতিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ব্যতিক্রমী মসজিদ ও শাটল লুম শেড বানিয়ে আলোচনার ঝড় তুলেছেন উদীয়মান একদল প্রকৌশলী। এই ব্যতিক্রমী মসজিদ ও শাটল লুম শেডের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো প্রাকৃতিকভাবে ভিতরে বায়ুপ্রবাহের ব্যবস্থা ও আলোর খেলা। ব্যতিক্রমী এই মসজিদ ও শাটল লুম শেড দেশের শিল্প-কারখানায় এনেছে নতুন এক বৈচিত্র্য। গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকার অ্যাম্বার ডেনিম কারখানায় পরিবেশবান্ধব মসজিদ ও শাটল লুম শেড নির্মাণ করে আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন ওই প্রকৌশলীরা।

মূলত ওয়াটারস্কেপ ও ল্যান্ডস্কেপের সমন্বিত একটি রূপ দিয়ে বানানো হয়েছে মসজিদটি। শিল্প এলাকায় নির্মাণ করা এই মসজিদে প্রাকৃতিকভাবে বায়ুপ্রবাহের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এখানে ব্যবহার করা হয়েছে পার্ফোরেটেড কংক্রিট ব্লক। বাইরের আলো-বাতাসের সঙ্গে স্থাপনার ভিতরও আলো-বাতাসের খেলা চলবে এটিই ছিল এই নকশার মূল বিষয়।

শাটল লুম শেড চত্বর ঘিরে আছে জলাধার, যার ওপর দিয়ে বাতাস প্রবাহিত হয়ে চত্বরে প্রবেশ করছে। এতে কারখানার ভিতরের তাপমাত্রা  কিছুটা কম থাকছে। এই বাতাস প্রবাহের জন্য প্রচলিত ইটের দেয়ালের পরিবর্তে দেওয়া হয়েছে বাঁশের তৈরি এক ধরনের বিশেষ দেয়াল, যা একই সঙ্গে সৌন্দর্য বাড়ানোর পাশাপাশি পর্যাপ্ত আলোর নিশ্চয়তা দিচ্ছে। কার্বন নিঃসরণ ও বিদ্যুৎ খরচও কম। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, অ্যাম্বার ডেনিম কারখানার ভিতরে পূর্ব পাশে খোলা জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে শাটল লুম শেড। শেডের পূর্ব-পশ্চিম পাশে রয়েছে জলাধার, যা থেকে ঠাণ্ডা বায়ু শেডের ভিতরে প্রবেশ করছে। শাটল লুম শেডটি দেখতেও নান্দনিক। একটু উত্তরেই ব্যতিক্রমী ওই মসজিদ। মসজিদের দেয়াল এমনভাবে নির্মিত যে বাইরের বাতাস ভিতরে যাচ্ছে। আবার অন্যদিক দিয়ে বেরিয়েও যাচ্ছে। এমনকি মসজিদের ওপর দিয়েও বাতাস ও আলো সরাসরি ভিতরে প্রবেশ করছে। মসজিদের চারপাশে রয়েছে

জলাধার। এই জলাধারের স্বচ্ছ পানিতে বিদেশি নানা জাতের মাছ খেলা করতে দেখা যায়। এশিয়ার সেরা সব স্থাপত্যশৈলীকে প্রশংসিত করার আয়োজন করে থাকে আর্কেশিয়া কাউন্সিল। এশীয় সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়নমূলক টেকসই সব স্থাপত্যকর্ম আর পরিকল্পনা নিয়ে এশিয়ার সব দেশের সেরা স্থপতিরা একত্র হন আর্কেশিয়া কাউন্সিলে। স্থাপত্যকর্মের ওপর সংস্থাটি আর্কেশিয়া অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার পুরস্কার দিয়ে থাকে। এবার ২১ থেকে ২৬ মে ভারতের জয়পুরে হয়ে গেল ১৯তম আর্কেশিয়া ফোরাম। আর সেই ফোরামে পাবলিক অ্যামেনিটি ও শিল্প স্থাপনা এই দুটি বিভাগে সম্মানসূচক পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাদেশের একদল প্রকৌশলী। পরিবেশবান্ধব মসজিদ ও শাটল লুম শেড নির্মাণ করে এই পুরস্কার জয় করেছেন স্থপতি লুত্ফুল্লাহিল মজিদ, মো. জোবায়ের হাসান, নবী নেওয়াজ খানসহ বাংলাদেশি প্রকৌশলী দলের সদস্যরা। গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকার অ্যাম্বার ডেনিম কারখানার চত্বরে নির্মিত হয়েছে এই পরিবেশবান্ধব মসজিদ। মূলত ওয়াটারস্কেপ ও ল্যান্ডস্কেপ সমন্বিত একটি রূপ দিয়ে বানানো হয়েছে এই মসজিদ। বাইরের আলো-বাতাসের সঙ্গে স্থাপনার ভিতরেও আলোর খেলা চলবে এটিই ছিল এ নকশার মূল বিষয়। পাশাপাশি শাটল লুম শেড প্রকল্পের জন্য এসেছে শিল্প স্থাপনা বিভাগে আর্কেশিয়ার বিশেষ পুরস্কার। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতি ও উপাদান ব্যবহার করে নির্মিত এই স্থাপনাগুলো পরিবেশের সঙ্গে যেমন মানানসই, তেমনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের জন্য নিয়ে এসেছে সম্মাননা। তিন বন্ধু জুবায়ের হাসান, লুত্ফুল্লাহিল মজিদ ও নবী নেওয়াজ খান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থাপত্যে স্নাতক শেষ করে গড়ে তোলেন আর্কিটেকচার ফার্ম আর্কিগ্রাউন্ড। একদিন তিন বন্ধু বুয়েট প্রাঙ্গণে এসে ব্যতিক্রমী কিছু করার চিন্তা করেন। তখন তিন বন্ধু বলেন, চারপাশে জলাধার, যার ওপর দিয়ে বাতাস প্রবাহিত হয়ে ভিতরে প্রবেশ করবে, বাতাস চলাচলের সুবিধার পাশাপাশি থাকবে বাঁশ দিয়ে তৈরি এক ধরনের বিশেষ দেয়াল, যা সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি পর্যাপ্ত আলোর নিশ্চয়তা দেবে, বিদ্যুৎ খরচও কমবে— এমন একটি স্থাপনা গড়ে তোলা দরকার। যে কথা সেই কাজ। গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকার অ্যাম্বার ডেনিম কারখানা চত্বরে মসজিদ নির্মাণের সুযোগ এলো। হাতছাড়া করলেন না তারা এ সুযোগ। পরিবেশবান্ধব এ মসজিদের ছাদে ইন্ডাস্ট্রিয়াল শিটের পরিবর্তে একই খরচে লাগানো হলো সিমেন্ট-কংক্রিটের ব্লক। সব মিলিয়ে শ্রমিকদের জন্য আরামদায়ক পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই পুরো পরিকল্পনা করা হলো। এখানেই শেষ নয়, রাখা হলো শ্রমিকদের অবসরে হস্তশিল্পের কাজ করার সুযোগ; তাদের ছেলেমেয়ের জন্য তৈরি হবে পাঠশালা। স্বল্প পরিসরে দেশীয় সরঞ্জাম ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে চমৎকার এই নকশা। প্রকৌশলী জুবায়ের হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘তাঁত দিয়ে কাপড় বোনা বাংলাদেশের বহু প্রাচীন ঐতিহ্যের একটি। তাঁতি সম্প্রদায়ের জন্য আরামদায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমরা একটি প্রকল্পের কথা ভাবছিলাম। স্বল্প খরচে দেশীয় সামগ্রী ব্যবহার করে এই পরিবেশ তৈরি করার চ্যালেঞ্জটাও আমরা নিতে চেয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘প্রকল্পে আমার সঙ্গে সঙ্গ দিয়েছেন দুই বন্ধু লুত্ফুল্লাহিল মজিদ ও নবী নেওয়াজ খান।’


আম্বার ডেনিম মসজিদ

জঙ্গলবাড়ি,রাজেন্দ্রপুর,গাজীপুর 
⚫নির্মাণঃ ২০১৬ সাল
🟤প্রতিষ্ঠানঃ আর্কিগ্রাউন্ড  
🔵স্থপতিঃ লুত্ফুল্লাহিল মাজিদ
🟠অ্যাওয়ার্ডঃ ইয়াং আর্কিটেক্টস ক্যাটাগরিতে ২০১৭ সালে ৮ম বার্জার অ্যাওয়ার্ড ফর এক্সেলেন্স ইন আর্কিটেকচার (বি. এ. ই. এ)-এর পুরস্কার পান মসজিদটির জন্য   

বিশেষ আকর্ষণঃ 
মসজিদে কোন দরজা জানালা নেই তবুও প্রচুর আলো বাতাস তার নির্মাণ কৌশলের জন্য।
মসজিদটির দেয়ালগুলো কংক্রিট ব্লকের তৈরি, চারপাশে গাছ ও পানি দিয়ে ঘেরা মসজিদটি, মসজিদের ভিতরের ডিজাইন গাছের মত,
আবার বর্ষার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ১৮ ফুট উপরে ছাদে একধরণের বিশেষ ছাতা রয়েছে, যেটা বর্ষা শুরু হলে আপনা-আপনিই খুলে যায়। 


ফেক্টরির কিছু ছবি যা আপনাকে ভালো লাগতে বাধ্য করবেঃ

লেখঃ 
রতন কুমার দাস

টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি পরিচিতি - অ্যাম্বার গ্রুপ | Amber Denim | Amber Cotton Mills | AMBER GROUP

অ্যাম্বার গ্রুপ
 
অ্যাম্বার গ্রুপ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৬ সালে। তখন অ্যাম্বার কটন মিলস লিমিটেডের মাধ্যমে এ গ্রুপের যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার পর অল্প সময়ের মধ্যে গ্রাহকের চাহিদা পূরণে সক্ষম হয় তারা। সুতা উৎপাদনের পাশাপাশি ডেনিম, বোর্ড, দরজা, ইন্টারনেট গেটওয়ে, শপিং আউটলেট, বিনোদনকেন্দ্র প্রভৃতি খাতে বিনিয়োগ করে গ্রুপটি। তাদের সব প্রতিষ্ঠানে সর্বাধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।
উচ্চশিক্ষিত ও দক্ষ পেশাজীবীর সমন্বয়ে গড়ে তোলা হয়েছে অ্যাম্বার গ্রুপ। কর্মীরাই এর প্রধান সম্পদ। গ্রুপটিতে চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন শওকত আজিজ রাসেল। তিনি দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোর শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টরের দায়িত্বে রয়েছেন একেএম হাশমী। পরিচালনা পর্ষদে রয়েছেন ফারহানাজ চৌধুরী ও ব্যারিস্টার সুমাইয়া আজিজ।

শিল্পোদ্যোগঃ

১. অ্যাম্বার কটন মিলসঃ

নিটিং ও উইভিং খাতের জন্য স্প্যান ইয়ার্ন উৎপাদন করে অ্যাম্বার কটন মিলস। প্রতিষ্ঠানটির মতে, দেশের স্প্যান ইয়ার্নের চাহিদার বেশিরভাগ পূরণ করছে এ প্রতিষ্ঠানটি। শুধু তা-ই নয়, রফতানিও করছে। ব্যবসায় যথাযথ নৈতিকতা মেনে চলে অ্যাম্বার কটন মিলস।
২. অ্যাম্বার বোর্ড লিমিটেডঃ

বোর্ড ধরনের পণ্যের বাজারে পরিচিত নাম অ্যাম্বার বোর্ড। প্রতিষ্ঠানটির সব ধরনের পণ্য দামে সাশ্রয়ী। গৃহস্থালী ও বাণিজ্যিক ডেকোরেশনের কাজে ব্যবহৃত হয় এসব পণ্য। বাছাইকৃত শক্ত ও টেকসই কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয় পণ্যগুলো। পর্যাপ্ত কোরের স্তর থাকায় বোর্ডগুলো তুলনামূলক বেশি মজবুত। অন্যান্য গুণের মধ্যে রয়েছে, এ ধরনের বোর্ড অধিক স্ক্রু ধারণ করতে পারে। ফাঙ্গাস, ঘুণ কিংবা উইপোকা প্রতিরোধক হিসেবে এর সুনাম রয়েছে। সব আবহাওয়ায় দীর্ঘদিন টিকে থাকে। গুণগত মানের কারণে গ্রাহকের আস্থা অর্জন করেছে অ্যাম্বার বোর্ডের পণ্য।

৩. অ্যাম্বার ডেনিম লিমিটেডঃ

মৌলিক মানের জিন্স দিয়ে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু হয়। তবে দীর্ঘদিন ধরে ডেনিম কাপড় উৎপাদন, ওয়াশিং, প্রসেসিং প্রভৃতি খাতে বিশেষ অবদান রাখছে। এ খাতে সক্ষমতা অর্জন করেছে তারা। অ্যাম্বার রোটর মিলস লিমিটেড, অ্যাম্বার রোটর স্পিনিং মিলস লিমিটেড ও অ্যাম্বার কটন মিলস লিমিটেডের তিনটি প্রতিষ্ঠান ডেনিম উৎপাদন করে। সঠিক সময়ে বিদেশি ক্রেতার কাছে ডেনিম সরবরাহ করে তারা। প্রিমিয়াম ক্যাটেগরির ডেনিম প্রস্তুতকারক হিসেবে তারা এগিয়ে রয়েছে। আরামদায়ক, অর্গানিক ডেনিম রয়েছে তাদের। তাদের তৈরি ডেনিমে কখনও ক্রিজ পড়ে না। এর স্থায়িত্ব তুলনামূলক বেশি।

৪. অ্যাম্বার আইটিঃ

অ্যাম্বার আইটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৭ সালে। ডায়াল-আপ ও রেডিও লিংক ইন্টারনেট দিয়ে শুরু হয় তাদের ব্যবসা। তখন মূলত স্থানীয় পর্যায়ের ভোক্তাসাধারণের বিষয়টি মাথায় রেখে তারা প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করে। তবে উন্নত সেবাদানের কারণে অল্প সময়ের মধ্যে দেশের শীর্ষস্থানীয় আইটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। টেলিযোগাযোগ খাতে তাদের ভূমিকা ঈর্ষণীয়।

৫. অ্যাম্বার লাইফস্টাইলঃ

পাশ্চাত্যের সঙ্গে দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের মিশেলে নতুন ধারায় উন্নত পোশাক-পরিচ্ছদ সরবরাহ করে থাকে অ্যাম্বার লাইফস্টাইল। ২০১৪ সালের অক্টোবরে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কে এর প্রথম আউটলেট চালু করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির পণ্যগুলো আরামদায়ক ও আকর্ষণীয়। সব ঋতুতে স্বস্তিদায়ক। বাংলাদেশের জনসাধারণের শপিংয়ের অভিজ্ঞতা সুবিধাজনক করে তুলতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। সংগত কারণে ক্রেতাদের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সাড়া পাচ্ছে অ্যাম্বার লাইফস্টাইল।

৬. অ্যাম্বার ইন্টারন্যাশনালঃ 

কটন: কারগিল কমোডিটিস, লিউস ড্রেফুস কমোডিটিস, ডুনাভ্যান্ট প্রভৃতি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের সঙ্গে ব্যবসা রয়েছে অ্যাম্বার ইন্টারন্যাশনালের।
জ্বালানি: দুটি পাওয়ার প্লান্ট রয়েছে তাদের।
কয়লা: প্রতিষ্ঠানটি সূত্রে জানা যায়,
দেশের শীর্ষস্থানীয় কয়লা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এটি।

চিনি পরিশোধক: ইপিসি চুক্তির আওতায় দিনে প্রায় ৩৮০০ টন চিনি পরিশোধন করে অ্যাম্বার ইন্টারন্যাশনাল।

৭. ভাওয়াল রিসোর্ট

নকশা, আধুনিকতা, নান্দনিকতা ও সবুজের মিশেলে তৈরি করা হয়েছে ভাওয়াল রিসোর্ট। এর নকশায় আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখা হয়েছে। আধুনিক সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এখানে। গাজীপুরের ভাওয়াল গড় ও মধুপুরের বন ঘেঁষে রিসোর্টটি নির্মাণ করা হয়েছে। 

গাজীপুরের মির্জাপুর ইউনিয়নের নলজানি গ্রামে এর অবস্থান। প্রকৃতির কোনো ক্ষতি না করে গড়ে তোলা হয়েছে এটি। এখানে রয়েছে সাইক্লিং সুবিধাসহ লন টেনিস, ব্যাডমিন্টন, পুল খেলার সুযোগ। রয়েছে সুইমিংপুল, জিমনেসিয়াম, স্পা সুবিধা। 
পাঁচটি জোনসহ ৬১টি কটেজ রয়েছে ভাওয়াল রিসোর্টে। হানিমুন, ফ্যামিলি ট্যুরসহ বিয়ে, কনফারেন্স, সেমিনার, ওয়ার্কশপ প্রভৃতি আয়োজনের সুবিধা রয়েছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রিসোর্টটিতে। অতিথিদের নিরাপত্তার জন্য আনসার বাহিনীর রয়েছে, সার্বিক দেখভাল করছেন প্রায় দেড়শ কর্মকর্তা-কর্মচারী।

৮. বিডি হাব
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) ও প্রযুক্তি খাতের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে অ্যাম্বার গ্রুপের বিডি হাব।




পরিবেশবান্ধব মসজিদ নির্মাণে সেরা পুরস্কার

ব্যতিক্রমী মসজিদ ও শাটল লুম শেডের বৈশিষ্ট্য হলো প্রাকৃতিকভাবে ভিতরে বায়ুপ্রবাহের ব্যবস্থা ও আলোর খেলা। এনেছে নতুন এক বৈচিত্র্য

 

ওয়াটারস্কেপ ও ল্যান্ডস্কেপের সমন্বয়ে সম্পূর্ণ নতুন চিন্তায় প্রাকৃতিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ব্যতিক্রমী মসজিদ ও শাটল লুম শেড বানিয়ে আলোচনার ঝড় তুলেছেন উদীয়মান একদল প্রকৌশলী। এই ব্যতিক্রমী মসজিদ ও শাটল লুম শেডের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো প্রাকৃতিকভাবে ভিতরে বায়ুপ্রবাহের ব্যবস্থা ও আলোর খেলা। ব্যতিক্রমী এই মসজিদ ও শাটল লুম শেড দেশের শিল্প-কারখানায় এনেছে নতুন এক বৈচিত্র্য। গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকার অ্যাম্বার ডেনিম কারখানায় পরিবেশবান্ধব মসজিদ ও শাটল লুম শেড নির্মাণ করে আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন ওই প্রকৌশলীরা।

মূলত ওয়াটারস্কেপ ও ল্যান্ডস্কেপের সমন্বিত একটি রূপ দিয়ে বানানো হয়েছে মসজিদটি। শিল্প এলাকায় নির্মাণ করা এই মসজিদে প্রাকৃতিকভাবে বায়ুপ্রবাহের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এখানে ব্যবহার করা হয়েছে পার্ফোরেটেড কংক্রিট ব্লক। বাইরের আলো-বাতাসের সঙ্গে স্থাপনার ভিতরও আলো-বাতাসের খেলা চলবে এটিই ছিল এই নকশার মূল বিষয়।

শাটল লুম শেড চত্বর ঘিরে আছে জলাধার, যার ওপর দিয়ে বাতাস প্রবাহিত হয়ে চত্বরে প্রবেশ করছে। এতে কারখানার ভিতরের তাপমাত্রা  কিছুটা কম থাকছে। এই বাতাস প্রবাহের জন্য প্রচলিত ইটের দেয়ালের পরিবর্তে দেওয়া হয়েছে বাঁশের তৈরি এক ধরনের বিশেষ দেয়াল, যা একই সঙ্গে সৌন্দর্য বাড়ানোর পাশাপাশি পর্যাপ্ত আলোর নিশ্চয়তা দিচ্ছে। কার্বন নিঃসরণ ও বিদ্যুৎ খরচও কম। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, অ্যাম্বার ডেনিম কারখানার ভিতরে পূর্ব পাশে খোলা জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে শাটল লুম শেড। শেডের পূর্ব-পশ্চিম পাশে রয়েছে জলাধার, যা থেকে ঠাণ্ডা বায়ু শেডের ভিতরে প্রবেশ করছে। শাটল লুম শেডটি দেখতেও নান্দনিক। একটু উত্তরেই ব্যতিক্রমী ওই মসজিদ। মসজিদের দেয়াল এমনভাবে নির্মিত যে বাইরের বাতাস ভিতরে যাচ্ছে। আবার অন্যদিক দিয়ে বেরিয়েও যাচ্ছে। এমনকি মসজিদের ওপর দিয়েও বাতাস ও আলো সরাসরি ভিতরে প্রবেশ করছে। মসজিদের চারপাশে রয়েছে

জলাধার। এই জলাধারের স্বচ্ছ পানিতে বিদেশি নানা জাতের মাছ খেলা করতে দেখা যায়। এশিয়ার সেরা সব স্থাপত্যশৈলীকে প্রশংসিত করার আয়োজন করে থাকে আর্কেশিয়া কাউন্সিল। এশীয় সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়নমূলক টেকসই সব স্থাপত্যকর্ম আর পরিকল্পনা নিয়ে এশিয়ার সব দেশের সেরা স্থপতিরা একত্র হন আর্কেশিয়া কাউন্সিলে। স্থাপত্যকর্মের ওপর সংস্থাটি আর্কেশিয়া অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার পুরস্কার দিয়ে থাকে। এবার ২১ থেকে ২৬ মে ভারতের জয়পুরে হয়ে গেল ১৯তম আর্কেশিয়া ফোরাম। আর সেই ফোরামে পাবলিক অ্যামেনিটি ও শিল্প স্থাপনা এই দুটি বিভাগে সম্মানসূচক পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাদেশের একদল প্রকৌশলী। পরিবেশবান্ধব মসজিদ ও শাটল লুম শেড নির্মাণ করে এই পুরস্কার জয় করেছেন স্থপতি লুত্ফুল্লাহিল মজিদ, মো. জোবায়ের হাসান, নবী নেওয়াজ খানসহ বাংলাদেশি প্রকৌশলী দলের সদস্যরা। গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকার অ্যাম্বার ডেনিম কারখানার চত্বরে নির্মিত হয়েছে এই পরিবেশবান্ধব মসজিদ। মূলত ওয়াটারস্কেপ ও ল্যান্ডস্কেপ সমন্বিত একটি রূপ দিয়ে বানানো হয়েছে এই মসজিদ। বাইরের আলো-বাতাসের সঙ্গে স্থাপনার ভিতরেও আলোর খেলা চলবে এটিই ছিল এ নকশার মূল বিষয়। পাশাপাশি শাটল লুম শেড প্রকল্পের জন্য এসেছে শিল্প স্থাপনা বিভাগে আর্কেশিয়ার বিশেষ পুরস্কার। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতি ও উপাদান ব্যবহার করে নির্মিত এই স্থাপনাগুলো পরিবেশের সঙ্গে যেমন মানানসই, তেমনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের জন্য নিয়ে এসেছে সম্মাননা। তিন বন্ধু জুবায়ের হাসান, লুত্ফুল্লাহিল মজিদ ও নবী নেওয়াজ খান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থাপত্যে স্নাতক শেষ করে গড়ে তোলেন আর্কিটেকচার ফার্ম আর্কিগ্রাউন্ড। একদিন তিন বন্ধু বুয়েট প্রাঙ্গণে এসে ব্যতিক্রমী কিছু করার চিন্তা করেন। তখন তিন বন্ধু বলেন, চারপাশে জলাধার, যার ওপর দিয়ে বাতাস প্রবাহিত হয়ে ভিতরে প্রবেশ করবে, বাতাস চলাচলের সুবিধার পাশাপাশি থাকবে বাঁশ দিয়ে তৈরি এক ধরনের বিশেষ দেয়াল, যা সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি পর্যাপ্ত আলোর নিশ্চয়তা দেবে, বিদ্যুৎ খরচও কমবে— এমন একটি স্থাপনা গড়ে তোলা দরকার। যে কথা সেই কাজ। গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকার অ্যাম্বার ডেনিম কারখানা চত্বরে মসজিদ নির্মাণের সুযোগ এলো। হাতছাড়া করলেন না তারা এ সুযোগ। পরিবেশবান্ধব এ মসজিদের ছাদে ইন্ডাস্ট্রিয়াল শিটের পরিবর্তে একই খরচে লাগানো হলো সিমেন্ট-কংক্রিটের ব্লক। সব মিলিয়ে শ্রমিকদের জন্য আরামদায়ক পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই পুরো পরিকল্পনা করা হলো। এখানেই শেষ নয়, রাখা হলো শ্রমিকদের অবসরে হস্তশিল্পের কাজ করার সুযোগ; তাদের ছেলেমেয়ের জন্য তৈরি হবে পাঠশালা। স্বল্প পরিসরে দেশীয় সরঞ্জাম ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে চমৎকার এই নকশা। প্রকৌশলী জুবায়ের হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘তাঁত দিয়ে কাপড় বোনা বাংলাদেশের বহু প্রাচীন ঐতিহ্যের একটি। তাঁতি সম্প্রদায়ের জন্য আরামদায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমরা একটি প্রকল্পের কথা ভাবছিলাম। স্বল্প খরচে দেশীয় সামগ্রী ব্যবহার করে এই পরিবেশ তৈরি করার চ্যালেঞ্জটাও আমরা নিতে চেয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘প্রকল্পে আমার সঙ্গে সঙ্গ দিয়েছেন দুই বন্ধু লুত্ফুল্লাহিল মজিদ ও নবী নেওয়াজ খান।’


আম্বার ডেনিম মসজিদ

জঙ্গলবাড়ি,রাজেন্দ্রপুর,গাজীপুর 
⚫নির্মাণঃ ২০১৬ সাল
🟤প্রতিষ্ঠানঃ আর্কিগ্রাউন্ড  
🔵স্থপতিঃ লুত্ফুল্লাহিল মাজিদ
🟠অ্যাওয়ার্ডঃ ইয়াং আর্কিটেক্টস ক্যাটাগরিতে ২০১৭ সালে ৮ম বার্জার অ্যাওয়ার্ড ফর এক্সেলেন্স ইন আর্কিটেকচার (বি. এ. ই. এ)-এর পুরস্কার পান মসজিদটির জন্য   

বিশেষ আকর্ষণঃ 
মসজিদে কোন দরজা জানালা নেই তবুও প্রচুর আলো বাতাস তার নির্মাণ কৌশলের জন্য।
মসজিদটির দেয়ালগুলো কংক্রিট ব্লকের তৈরি, চারপাশে গাছ ও পানি দিয়ে ঘেরা মসজিদটি, মসজিদের ভিতরের ডিজাইন গাছের মত,
আবার বর্ষার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ১৮ ফুট উপরে ছাদে একধরণের বিশেষ ছাতা রয়েছে, যেটা বর্ষা শুরু হলে আপনা-আপনিই খুলে যায়। 


ফেক্টরির কিছু ছবি যা আপনাকে ভালো লাগতে বাধ্য করবেঃ

লেখঃ 
রতন কুমার দাস

কোন মন্তব্য নেই: