কাশ্মীরী শাল বা সোয়েটারের কথা নিশ্চয় অনেক শুনেছেন । জানেন কি কাশ্মীরী বলতে আসলে কি বোঝানো হয় ? - Textile Lab | Textile Learning Blog
কাশ্মীরী শাল বা সোয়েটারের কথা নিশ্চয় অনেক শুনেছেন । জানেন কি কাশ্মীরী বলতে আসলে কি বোঝানো হয় ?
=================================





কাশ্মীরী শাল বা সোয়েটারের প্রতি অনেক মানুষের খুব আকর্ষণ লক্ষ্য করেছি ছোটবেলা থেকে , আমাদের পরিবারেও দেখেছি। এক সময় আমিও কিনার চেষ্টা করেছি , ভারতীয়দের মাধ্যমে ভারত থেকে আনিয়েছি , সবই বৃথা , নকল!

মার্কেটের সব বিক্রেতাই বলতো এটাই আসল , কিন্তু মন ভরতো না। তাই একদিন জানার চেষ্টা করলাম , বেশ কিছু পড়াশোনা করলাম , তথ্য সংগ্রহ করলাম , ডকুমেন্টারি দেখলাম , এক বিদেশি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারের সাথে কথা বললাম.....শিখলাম , জানলাম এবং তারপর আমার ধারণাই পাল্টে গেল!

পাঠক , আমি আজকে আপনাদের বলবো কিভাবে আপনি খাঁটি কাশ্মীরী শাল/চাদর/সোয়েটার/ পুলওভার কোট/মাফলার বা অন্য কোন কাপড় চিনবেন। সেটা বলার আগে আপনাকে একটা "কারেন্ট শক্" খেতে হবে!

সেটা হল - কাশ্মীরী শাল মানে ভারত-পাকিস্তানের "দখলকৃত" কাশ্মীরের তৈরি কোন শাল না! অর্থাৎ কাশ্মীরী শাল বা অন্য পোশাক পৃথিবীর অন্য দেশেরও তৈরি হতে পারে! এবং বাস্তবেও তাই!


কাশ্মীরী পোশাক ইংল্যান্ডের ইটালির বা চীনের তৈরিও হতে পারে। তাহলে আপনি নিশ্চয়ই এখন প্রশ্ন করছেন- তাহলে নাম কেন কাশ্মীরী হল? আসুন একটু জেনে নেই! এতো অধৈর্য্য হবেন না , সারা জীবন জেনে আসা ভুলটা শুধরিয়ে নিন !!

হিমালয়ের পাশ্ববর্তী অঞ্চল , ইনার মঙ্গোলিয়া , ইটালির উত্তরের পাহাড়ি অঞ্চল , ইংল্যান্ডের পাহাড়ি অঞ্চল এবং অষ্ট্রেলিয়ান পাহাড়ি অঞ্চল গুলোতে এক জাতের লম্বা পশম বিশিষ্ট ছাগল পাওয়া যায় , যেগুলোকে বলে ক্যাপরা হিরকাস ( Capra Hircus )।

এই ছাগল গুলোর কতোগুলো বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে যেগুলো অন্য সকল পাহাড়ি ছাগল থেকে আলাদা। যেমন - এদের গায়ের পশম খুবই চিকন এবং সিল্কি। বন্য পরিবেশে মাইনাস 40'C তাপমাত্রায়ও এরা দিব্যি বেঁচে থাকে যেখানে অন্যান্য অনেক ছাগল (ভেড়া নয়) মাইনাস 10/15 তে বন্য পরিবেশে মারা যায়। এবং সমুদ্র সমতল থেকে চার হাজার মিটার উচ্চতায় পাথুরে পরিবেশেও এদের বিচরণ করতে দেখা যায়।


১৩'শ শতকে বিখ্যাত পর্যটক মার্কো পলো মঙ্গোলিয়ায় অনেক উচুতে পাহাড়ের গুহায় এসব ছাগলের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছিলেন।
এই ক্যাপরা হিরকাস ছাগল গুলো এখন অনেক দেশেই বাণিজ্যিক ভাবে খামারে পালন করা হয় অর্থাৎ উনিশ শতকের মাঝামাঝি থেকেই এগুলোকে গৃহপালিত (domesticated) করা হয়েছে।

ফলে প্রাকৃতিক ভাবে ছাড়াও অনেক দেশে এসব ছাগল পাওয়া যায়। দুই ভাবে এসব ছাগল থেকে পশম সংগ্রহ করা হয়। ১) মেশিন দিয়ে গায়ের সকল লোম ছেঁটে ( shearing) মান অনুযায়ী বাছাই করা হয় , তারপর পশমকে ধুয়ে , গরম পানিতে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সিদ্ধ করে , রং মিশিয়ে এবং শুকিয়ে সুতা তৈরি করা হয়★।

২) খামারে পালিত তবে উন্মুক্ত পরিবেশে পালিত এসব ছাগলের লোম মানুষের চুল আঁচড়ানোর মতো ধীরে ধীরে আঁচড়ালে মূল পশমের নিচে আরেক ধরনের খুব সুক্ষ্ম কিছু লোম/পশম পাওয়া যায় এবং এগুলো সংগ্রহ করে সেগুলো থেকে সুতা তৈরি করা হয়★★।

এভাবে একটি প্রাপ্ত বয়ষ্ক ছাগল থেকে সারা বছরে সর্বোচ্চ দেড়'শ গ্রাম পশম সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। আমেরিকান স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী কেশমির পশমের থিকনেস হতে হবে ৯০ মাইক্রনের কম।


এই দুই প্রকার সুতাকে বলা হয় কেশমির (Cashmere) !


খেয়াল করুন , অন্যান্য ছাগল ভেড়া উট খচ্চর লামা গুয়ানাকো আলপেকা ইয়াক ইত্যাদি পশু গুলো থেকে সংগৃহীত পশমের সুতাকে উল (Wool) বলা হলে বলেও ক্যাপরা হিরকাস থেকে সংগৃহীত গুলোকে বলা হয় কেশমির! যদিও এগুলো উল। সুতরাং কেশমির পাওয়া যায় এমন জাতের ছাগলকে বলা হয় কেশমিরি ছাগল (Cashmere goat)!


কাশ্মীর অঞ্চলে এসব ছাগলকে "পশমিনা" ছাগলও ডাকা হয়। এই ছাগলের জাতের কাছাকাছি আরেকটি জাত হলো আঙ্গুরা ছাগল। এগুলোর লোম খসখসে হয়।
কেশমির (Cashmere) যাকে অনেকে উচ্চারণ করে কাশমিরি বা কাশ্মীরী- এখান থেকেই মূলত ছড়িয়েছে "কাশ্মীরী শাল"!

যার ফলে মেইড ইন ইংল্যান্ড কোন সোয়েটার দেখলেও অনেকে হেসে বলে - ইংল্যান্ডে তৈরি হলে আবার কাশ্মীরী হল কিভাবে!! (যদিও অনেকেই মনে করেন যে কাশ্মীর নাম থেকেই কেশমির নামটি এসেছে , যুক্তিসঙ্গতও বটে।)

২০০০ সালে আমি ঢাকা বাইতুল মােকাররামের ফুটপাত থেকে তিনশ টাকায় একটি ব্যবহৃত সোয়েটার কিনেছিলাম। লেখা ছিল মেইড ইন ইংল্যান্ড , 100% CASHMERE.


যাহোক উপরে এক তারকা (★) চিহ্নিত সুতা থেকে তৈরি কাপড় চোপড় - হলো সাধারণ মানের কেশমিরি শাল (কাপড়) , যা তৈরী হয় অভিজাত শ্রেণীর জন্য।

দুই তারকা - অতি অভিজাত বা বিশ্বখ্যাত ধনি ব্যাক্তিদের জন্য স্কার্ফ/মাফলার , কোট , পুল ওভার , সোয়েটার , সার্ট , হাত মোজা ইত্যাদি তৈরি হয়। আসলে অনেক দামী কাপড় চোপড় তারাই তো কিনবে!

বর্তমানে পৃথিবীর উৎকৃষ্ট মানের অর্থাৎ কম্বিং কেশমিরের মোট উৎপাদনের ৭০ ভাগ চীন , ১৮ ভাগ মঙ্গোলিয়া এবং বাকী ১২ ভাগ সারা বিশ্বে উৎপাদিত হয়।

আমার দেখা একটি ইটালিয়ান কেশমিরি মাফলারের দাম প্রায় ৮৭ হাজার টাকা (৩৭৫০ দিরহাম) এবং মহিলাদের একটি পুল ওভার কোটের দাম দশ লাখ টাকা প্রায় (৪৩ হাজার দিরহাম+৫% টেক্স)


অনেক হয়েছে , আসুন এবার আসল কেশমিরি শাল বা কাপড় চেনার কিছু কৌশল জেনে নেই-

*স্টিকারে ইংরেজিতে লিখা থাকবে 100% CASHMERE.

* শাল/ চাদর/ মাফলার গুলো সাধারণত এক বা সর্বোচ্চ দুই পাকের (Ply) সুতার তৈরি হবে।

* অন্যান্য উলের কাপড়ের চেয়ে খুবই নরম কোমল এবং সিল্কি।

* সুতার তন্তু গুলো খুবই চিকন (thick) যা ৩০ মাইক্রনের কম হয়।

* কাপড় থেকে পশম খুলে আসবেনা বা খসে পড়বেনা।

* অনেকটুকু কাপড় মুষ্টিবদ্ধ করে চাপ দিয়ে ছেড়ে দিন, কোন ভাঁজ পড়বেনা।

* হাতের তালুর উল্টা পিঠে কাপড়টি লাগিয়ে আস্তে করে আরেক হাতে টানতে থাকুন, খুব মিহি শীতল অনুভূত হবে, খসখসে নয়।

* দুই পরত কাপড় একসাথে ঘষা দিন, তুলনামূলক বেশি পিচ্ছিল হবে।

* তুলনামূলক ওজনে হালকা এবং পাতলা কাপড় হলেও অধিক গরম ( more heat resistant)

* একেবারে খালি গায়ে পরিধান করলে কোন প্রকার চুলকানি বা অস্বস্তি হয়না!

* ঠোঁটের সাথে আস্তে করে ঘষা দিন, মকমলের মতো অনুভূত হবে! (লিপস্টিক লাগানো থাকলে দোকানে এই চেষ্টা করবেন না)

* গরম পানিতে ভিজালে মৃদু গন্ধ ছড়াবে।

* কখনোই খুব উজ্জ্বল চকচকে রংয়ের হবেনা।

সর্তকতা - শুধুমাত্র বেবী শ্যাম্পু দিয়ে ধুইবেন, সম্ভব না হলে সাধারণ শ্যাম্পু দিয়ে, হাতে ধুইবেন মেশিনে নয়, চিপবেন না শুধু ঝুলিয়ে রেখে শুকাতে দিন।

আশা করি এরপর কেউ আর আপনাকে বোকা বানাতে পারবে না। ।



লিখেছেনঃ 
মাসুদ আলম , ইউএই

কাশ্মীরী শাল বা সোয়েটারের কথা নিশ্চয় অনেক শুনেছেন । জানেন কি কাশ্মীরী বলতে আসলে কি বোঝানো হয় ?

কাশ্মীরী শাল বা সোয়েটারের কথা নিশ্চয় অনেক শুনেছেন । জানেন কি কাশ্মীরী বলতে আসলে কি বোঝানো হয় ?
=================================





কাশ্মীরী শাল বা সোয়েটারের প্রতি অনেক মানুষের খুব আকর্ষণ লক্ষ্য করেছি ছোটবেলা থেকে , আমাদের পরিবারেও দেখেছি। এক সময় আমিও কিনার চেষ্টা করেছি , ভারতীয়দের মাধ্যমে ভারত থেকে আনিয়েছি , সবই বৃথা , নকল!

মার্কেটের সব বিক্রেতাই বলতো এটাই আসল , কিন্তু মন ভরতো না। তাই একদিন জানার চেষ্টা করলাম , বেশ কিছু পড়াশোনা করলাম , তথ্য সংগ্রহ করলাম , ডকুমেন্টারি দেখলাম , এক বিদেশি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারের সাথে কথা বললাম.....শিখলাম , জানলাম এবং তারপর আমার ধারণাই পাল্টে গেল!

পাঠক , আমি আজকে আপনাদের বলবো কিভাবে আপনি খাঁটি কাশ্মীরী শাল/চাদর/সোয়েটার/ পুলওভার কোট/মাফলার বা অন্য কোন কাপড় চিনবেন। সেটা বলার আগে আপনাকে একটা "কারেন্ট শক্" খেতে হবে!

সেটা হল - কাশ্মীরী শাল মানে ভারত-পাকিস্তানের "দখলকৃত" কাশ্মীরের তৈরি কোন শাল না! অর্থাৎ কাশ্মীরী শাল বা অন্য পোশাক পৃথিবীর অন্য দেশেরও তৈরি হতে পারে! এবং বাস্তবেও তাই!


কাশ্মীরী পোশাক ইংল্যান্ডের ইটালির বা চীনের তৈরিও হতে পারে। তাহলে আপনি নিশ্চয়ই এখন প্রশ্ন করছেন- তাহলে নাম কেন কাশ্মীরী হল? আসুন একটু জেনে নেই! এতো অধৈর্য্য হবেন না , সারা জীবন জেনে আসা ভুলটা শুধরিয়ে নিন !!

হিমালয়ের পাশ্ববর্তী অঞ্চল , ইনার মঙ্গোলিয়া , ইটালির উত্তরের পাহাড়ি অঞ্চল , ইংল্যান্ডের পাহাড়ি অঞ্চল এবং অষ্ট্রেলিয়ান পাহাড়ি অঞ্চল গুলোতে এক জাতের লম্বা পশম বিশিষ্ট ছাগল পাওয়া যায় , যেগুলোকে বলে ক্যাপরা হিরকাস ( Capra Hircus )।

এই ছাগল গুলোর কতোগুলো বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে যেগুলো অন্য সকল পাহাড়ি ছাগল থেকে আলাদা। যেমন - এদের গায়ের পশম খুবই চিকন এবং সিল্কি। বন্য পরিবেশে মাইনাস 40'C তাপমাত্রায়ও এরা দিব্যি বেঁচে থাকে যেখানে অন্যান্য অনেক ছাগল (ভেড়া নয়) মাইনাস 10/15 তে বন্য পরিবেশে মারা যায়। এবং সমুদ্র সমতল থেকে চার হাজার মিটার উচ্চতায় পাথুরে পরিবেশেও এদের বিচরণ করতে দেখা যায়।


১৩'শ শতকে বিখ্যাত পর্যটক মার্কো পলো মঙ্গোলিয়ায় অনেক উচুতে পাহাড়ের গুহায় এসব ছাগলের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছিলেন।
এই ক্যাপরা হিরকাস ছাগল গুলো এখন অনেক দেশেই বাণিজ্যিক ভাবে খামারে পালন করা হয় অর্থাৎ উনিশ শতকের মাঝামাঝি থেকেই এগুলোকে গৃহপালিত (domesticated) করা হয়েছে।

ফলে প্রাকৃতিক ভাবে ছাড়াও অনেক দেশে এসব ছাগল পাওয়া যায়। দুই ভাবে এসব ছাগল থেকে পশম সংগ্রহ করা হয়। ১) মেশিন দিয়ে গায়ের সকল লোম ছেঁটে ( shearing) মান অনুযায়ী বাছাই করা হয় , তারপর পশমকে ধুয়ে , গরম পানিতে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সিদ্ধ করে , রং মিশিয়ে এবং শুকিয়ে সুতা তৈরি করা হয়★।

২) খামারে পালিত তবে উন্মুক্ত পরিবেশে পালিত এসব ছাগলের লোম মানুষের চুল আঁচড়ানোর মতো ধীরে ধীরে আঁচড়ালে মূল পশমের নিচে আরেক ধরনের খুব সুক্ষ্ম কিছু লোম/পশম পাওয়া যায় এবং এগুলো সংগ্রহ করে সেগুলো থেকে সুতা তৈরি করা হয়★★।

এভাবে একটি প্রাপ্ত বয়ষ্ক ছাগল থেকে সারা বছরে সর্বোচ্চ দেড়'শ গ্রাম পশম সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। আমেরিকান স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী কেশমির পশমের থিকনেস হতে হবে ৯০ মাইক্রনের কম।


এই দুই প্রকার সুতাকে বলা হয় কেশমির (Cashmere) !


খেয়াল করুন , অন্যান্য ছাগল ভেড়া উট খচ্চর লামা গুয়ানাকো আলপেকা ইয়াক ইত্যাদি পশু গুলো থেকে সংগৃহীত পশমের সুতাকে উল (Wool) বলা হলে বলেও ক্যাপরা হিরকাস থেকে সংগৃহীত গুলোকে বলা হয় কেশমির! যদিও এগুলো উল। সুতরাং কেশমির পাওয়া যায় এমন জাতের ছাগলকে বলা হয় কেশমিরি ছাগল (Cashmere goat)!


কাশ্মীর অঞ্চলে এসব ছাগলকে "পশমিনা" ছাগলও ডাকা হয়। এই ছাগলের জাতের কাছাকাছি আরেকটি জাত হলো আঙ্গুরা ছাগল। এগুলোর লোম খসখসে হয়।
কেশমির (Cashmere) যাকে অনেকে উচ্চারণ করে কাশমিরি বা কাশ্মীরী- এখান থেকেই মূলত ছড়িয়েছে "কাশ্মীরী শাল"!

যার ফলে মেইড ইন ইংল্যান্ড কোন সোয়েটার দেখলেও অনেকে হেসে বলে - ইংল্যান্ডে তৈরি হলে আবার কাশ্মীরী হল কিভাবে!! (যদিও অনেকেই মনে করেন যে কাশ্মীর নাম থেকেই কেশমির নামটি এসেছে , যুক্তিসঙ্গতও বটে।)

২০০০ সালে আমি ঢাকা বাইতুল মােকাররামের ফুটপাত থেকে তিনশ টাকায় একটি ব্যবহৃত সোয়েটার কিনেছিলাম। লেখা ছিল মেইড ইন ইংল্যান্ড , 100% CASHMERE.


যাহোক উপরে এক তারকা (★) চিহ্নিত সুতা থেকে তৈরি কাপড় চোপড় - হলো সাধারণ মানের কেশমিরি শাল (কাপড়) , যা তৈরী হয় অভিজাত শ্রেণীর জন্য।

দুই তারকা - অতি অভিজাত বা বিশ্বখ্যাত ধনি ব্যাক্তিদের জন্য স্কার্ফ/মাফলার , কোট , পুল ওভার , সোয়েটার , সার্ট , হাত মোজা ইত্যাদি তৈরি হয়। আসলে অনেক দামী কাপড় চোপড় তারাই তো কিনবে!

বর্তমানে পৃথিবীর উৎকৃষ্ট মানের অর্থাৎ কম্বিং কেশমিরের মোট উৎপাদনের ৭০ ভাগ চীন , ১৮ ভাগ মঙ্গোলিয়া এবং বাকী ১২ ভাগ সারা বিশ্বে উৎপাদিত হয়।

আমার দেখা একটি ইটালিয়ান কেশমিরি মাফলারের দাম প্রায় ৮৭ হাজার টাকা (৩৭৫০ দিরহাম) এবং মহিলাদের একটি পুল ওভার কোটের দাম দশ লাখ টাকা প্রায় (৪৩ হাজার দিরহাম+৫% টেক্স)


অনেক হয়েছে , আসুন এবার আসল কেশমিরি শাল বা কাপড় চেনার কিছু কৌশল জেনে নেই-

*স্টিকারে ইংরেজিতে লিখা থাকবে 100% CASHMERE.

* শাল/ চাদর/ মাফলার গুলো সাধারণত এক বা সর্বোচ্চ দুই পাকের (Ply) সুতার তৈরি হবে।

* অন্যান্য উলের কাপড়ের চেয়ে খুবই নরম কোমল এবং সিল্কি।

* সুতার তন্তু গুলো খুবই চিকন (thick) যা ৩০ মাইক্রনের কম হয়।

* কাপড় থেকে পশম খুলে আসবেনা বা খসে পড়বেনা।

* অনেকটুকু কাপড় মুষ্টিবদ্ধ করে চাপ দিয়ে ছেড়ে দিন, কোন ভাঁজ পড়বেনা।

* হাতের তালুর উল্টা পিঠে কাপড়টি লাগিয়ে আস্তে করে আরেক হাতে টানতে থাকুন, খুব মিহি শীতল অনুভূত হবে, খসখসে নয়।

* দুই পরত কাপড় একসাথে ঘষা দিন, তুলনামূলক বেশি পিচ্ছিল হবে।

* তুলনামূলক ওজনে হালকা এবং পাতলা কাপড় হলেও অধিক গরম ( more heat resistant)

* একেবারে খালি গায়ে পরিধান করলে কোন প্রকার চুলকানি বা অস্বস্তি হয়না!

* ঠোঁটের সাথে আস্তে করে ঘষা দিন, মকমলের মতো অনুভূত হবে! (লিপস্টিক লাগানো থাকলে দোকানে এই চেষ্টা করবেন না)

* গরম পানিতে ভিজালে মৃদু গন্ধ ছড়াবে।

* কখনোই খুব উজ্জ্বল চকচকে রংয়ের হবেনা।

সর্তকতা - শুধুমাত্র বেবী শ্যাম্পু দিয়ে ধুইবেন, সম্ভব না হলে সাধারণ শ্যাম্পু দিয়ে, হাতে ধুইবেন মেশিনে নয়, চিপবেন না শুধু ঝুলিয়ে রেখে শুকাতে দিন।

আশা করি এরপর কেউ আর আপনাকে বোকা বানাতে পারবে না। ।



লিখেছেনঃ 
মাসুদ আলম , ইউএই

কোন মন্তব্য নেই: