বুটেক্স রত্ন ড. তারান্নুম আফরিন | Dr. Tarannum Afrin Material Scientist BUTEX - 24th Batch - Textile Lab | Textile Learning Blog



বুটেক্স তথা বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় যখন বুটেক্স হয়ে ওঠেনি, তখন তাদের পদচারণায় মুখরিত ছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। প্রকৌশলবিদ্যায় পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা ও সহশিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে নিজেকে করে তুলেছেন যোগ্য, হয়েছেন দেশের অমূল্য সম্পদ।

অনেকে আবার উচ্চশিক্ষা অর্জন করে আত্মনিয়োগ করেছেন বস্ত্রশিল্পের বিভিন্ন খাতের গবেষণায়, এ শিল্পের উন্নয়নের অংশীদার হতে। তবে, বস্ত্র প্রকৌশলী হয়েও কেউ কেউ আত্মনিয়োগ করেছিলেন ভিন্ন গবেষণায়, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সাধনে। তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন বুটেক্সের ২৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ড. তারান্নুম আফরিন। বর্তমানে তিনি বসবাস করছেন অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহরে এবং ব্যবস্থাপক পদে দায়িত্বরত আছেন চার্লস পারসন্স নামক অস্ট্রেলিয়ার নামকরা টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে।


বস্ত্র প্রকৌশলে স্নাতক শেষে ২০০৫ সালে কমনওয়েলথ বৃত্তি পেয়ে তিনি পাড়ি জমান সুদূর ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে। ম্যানচেস্টার মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন তিনি। অতঃপর অস্ট্রেলিয়ান পোস্ট গ্রাজুয়েট অ্যাওয়ার্ড স্কলারশিপ পেয়ে পিএইচডি করেন ম্যাটেরিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিং বা বস্তু প্রকৌশলে অস্ট্রেলিয়ার ডিকিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলফ্রেড ডিকিন মেডেল পেয়ে। বস্ত্র প্রকৌশলে স্নাতক সম্পন্ন করে বস্তু প্রকৌশলে পিএইচডি করার বিষয়টা একটু অবাক করার মতোই। তবে এর কারণটাও তিনি জানালেন অত্যন্ত সাবলীল ভাষায়।


বললেন, ‘বুটেক্সে আমাদের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স ছিল। আমি কোর্সটা ভালোভাবেই সম্পন্ন করেছি। তাই সুযোগ পাওয়ায় ম্যাটেরিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডি করেছি। ম্যাটেরিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ একটা বিষয়।’

‘একটু পেছনে ফিরে তাকালে ভেসে ওঠে বুটেক্সে কাটানো তার অতীতের সুখস্মৃতিকর সোনালি দিনগুলো। নিজেকে ও বুটেক্সকে জাতির সামনে তুলে ধরতে বুটেক্সের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন বিভিন্ন জাতীয় প্রতিযোগিতায় এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে আদতে তুলে ধরেছেন বুটেক্সকেই।’

তার ভাষায়, ‘বুটেক্সে কাটানো দিনগুলো ছিল অসাধারণ। আমাদের ব্যাচে আমি প্রথম স্থান অধিকার করেছি। পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও অংশগ্রহণ করেছি এবং জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছি। ১৬-তম জাতীয় টিভি বিতর্কে আমি প্রথম স্থান অর্জন করেছি। আলহামদুলিল্লাহ্‌! এটা ছিল আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া। এছাড়াও বুটেক্সে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতাম আমার উদ্দোগে।’

আত্মসমৃদ্ধি অর্জন ও বুটেক্সকে গৌরবময় করে তুলতে সেই দিনগুলোতে তিনি উজাড় করে দিয়েছেন নিজেকে। তখন যেমন ক্যাম্পাসের ছোট ভাই বোনদের আত্মোন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন, তাদের খোঁজ-খবর নিয়েছেন। ঠিক তেমনভাবেই সুদূর অস্ট্রেলিয়াতে বসে শত কর্মব্যস্ততার মাঝে এখনো ক্যাম্পাসের ছোট ভাইবোনদের ব্যাপারে খোঁজ খবর রাখেন, উৎসাহ দেন বিভিন্ন ইতিবাচক কাজে, বিভিন্ন অর্জনে। তার জলন্ত প্রমাণ গত বছর ফেসবুকে দেওয়া তার একটি পোস্ট। পোস্টটি দিয়েছেন তৎকালীন ১ম বর্ষ ও ২য় বর্ষে অধ্যয়নরত বুটেক্সের তিনজন ছাত্রকে নিয়ে।



তার দেওয়া পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘এই আনন্দ রাখি কোথায়! বুটেক্সের জুনিয়র মো. ফজলে রাব্বী, আইইউটি মেকসিলারেশন ২০১৭ এ ইঞ্জিনিয়ারিং অলিম্পিয়াডে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে! ছেলেটিকে দেখিনি কোনোদিন.. আমার বন্ধু তালিকায়ও নেই তারপরও চোখ ভিজে যাচ্ছে আনন্দে! ওদিকে ইমদাদুল হক এবং এসআই তুষার পোস্টার প্রেজেন্টেশনে রানার আপ হয়েছে! পুরো বুটেক্স গর্বিত তোমাদের জন্য!’ 

দূর দেশে বসে শত কর্ম ব্যস্ততার মাঝেও বুটেক্সের প্রতি এত ভালোবাসা প্রদানকারী মানুষটি সময় পেলে পছন্দ করেন গান গাইতে, কবিতা লিখতে, সুর করতে। এমনকি ইউটিউবে তার একাধিক গানের ভিডিও রয়েছে। যেগুলো খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।

তার ব্যক্তিত্ব, কর্মকাণ্ড, সফলতা ও বুটেক্সের জুনিয়রদের প্রতি তার আন্তরিকতার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ করা ভাবনাতীত। বুটেক্সিয়ানদের জন্য তিনি হয়ে থাকবেন অনুসরণীয় ও অনুকরণীয়। এমন শিক্ষার্থী যেমন বুটেক্সের গর্ব, তেমনি বুটেক্সের জুনিয়রদের জন্যও এমন সিনিয়র পাওয়া সৌভাগ্যই বটে।



বুটেক্স রত্ন ড. তারান্নুম আফরিন | Dr. Tarannum Afrin Material Scientist BUTEX - 24th Batch




বুটেক্স তথা বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় যখন বুটেক্স হয়ে ওঠেনি, তখন তাদের পদচারণায় মুখরিত ছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। প্রকৌশলবিদ্যায় পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা ও সহশিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে নিজেকে করে তুলেছেন যোগ্য, হয়েছেন দেশের অমূল্য সম্পদ।

অনেকে আবার উচ্চশিক্ষা অর্জন করে আত্মনিয়োগ করেছেন বস্ত্রশিল্পের বিভিন্ন খাতের গবেষণায়, এ শিল্পের উন্নয়নের অংশীদার হতে। তবে, বস্ত্র প্রকৌশলী হয়েও কেউ কেউ আত্মনিয়োগ করেছিলেন ভিন্ন গবেষণায়, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সাধনে। তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন বুটেক্সের ২৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ড. তারান্নুম আফরিন। বর্তমানে তিনি বসবাস করছেন অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহরে এবং ব্যবস্থাপক পদে দায়িত্বরত আছেন চার্লস পারসন্স নামক অস্ট্রেলিয়ার নামকরা টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে।


বস্ত্র প্রকৌশলে স্নাতক শেষে ২০০৫ সালে কমনওয়েলথ বৃত্তি পেয়ে তিনি পাড়ি জমান সুদূর ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে। ম্যানচেস্টার মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন তিনি। অতঃপর অস্ট্রেলিয়ান পোস্ট গ্রাজুয়েট অ্যাওয়ার্ড স্কলারশিপ পেয়ে পিএইচডি করেন ম্যাটেরিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিং বা বস্তু প্রকৌশলে অস্ট্রেলিয়ার ডিকিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলফ্রেড ডিকিন মেডেল পেয়ে। বস্ত্র প্রকৌশলে স্নাতক সম্পন্ন করে বস্তু প্রকৌশলে পিএইচডি করার বিষয়টা একটু অবাক করার মতোই। তবে এর কারণটাও তিনি জানালেন অত্যন্ত সাবলীল ভাষায়।


বললেন, ‘বুটেক্সে আমাদের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স ছিল। আমি কোর্সটা ভালোভাবেই সম্পন্ন করেছি। তাই সুযোগ পাওয়ায় ম্যাটেরিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডি করেছি। ম্যাটেরিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ একটা বিষয়।’

‘একটু পেছনে ফিরে তাকালে ভেসে ওঠে বুটেক্সে কাটানো তার অতীতের সুখস্মৃতিকর সোনালি দিনগুলো। নিজেকে ও বুটেক্সকে জাতির সামনে তুলে ধরতে বুটেক্সের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন বিভিন্ন জাতীয় প্রতিযোগিতায় এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে আদতে তুলে ধরেছেন বুটেক্সকেই।’

তার ভাষায়, ‘বুটেক্সে কাটানো দিনগুলো ছিল অসাধারণ। আমাদের ব্যাচে আমি প্রথম স্থান অধিকার করেছি। পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও অংশগ্রহণ করেছি এবং জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছি। ১৬-তম জাতীয় টিভি বিতর্কে আমি প্রথম স্থান অর্জন করেছি। আলহামদুলিল্লাহ্‌! এটা ছিল আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া। এছাড়াও বুটেক্সে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতাম আমার উদ্দোগে।’

আত্মসমৃদ্ধি অর্জন ও বুটেক্সকে গৌরবময় করে তুলতে সেই দিনগুলোতে তিনি উজাড় করে দিয়েছেন নিজেকে। তখন যেমন ক্যাম্পাসের ছোট ভাই বোনদের আত্মোন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন, তাদের খোঁজ-খবর নিয়েছেন। ঠিক তেমনভাবেই সুদূর অস্ট্রেলিয়াতে বসে শত কর্মব্যস্ততার মাঝে এখনো ক্যাম্পাসের ছোট ভাইবোনদের ব্যাপারে খোঁজ খবর রাখেন, উৎসাহ দেন বিভিন্ন ইতিবাচক কাজে, বিভিন্ন অর্জনে। তার জলন্ত প্রমাণ গত বছর ফেসবুকে দেওয়া তার একটি পোস্ট। পোস্টটি দিয়েছেন তৎকালীন ১ম বর্ষ ও ২য় বর্ষে অধ্যয়নরত বুটেক্সের তিনজন ছাত্রকে নিয়ে।



তার দেওয়া পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘এই আনন্দ রাখি কোথায়! বুটেক্সের জুনিয়র মো. ফজলে রাব্বী, আইইউটি মেকসিলারেশন ২০১৭ এ ইঞ্জিনিয়ারিং অলিম্পিয়াডে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে! ছেলেটিকে দেখিনি কোনোদিন.. আমার বন্ধু তালিকায়ও নেই তারপরও চোখ ভিজে যাচ্ছে আনন্দে! ওদিকে ইমদাদুল হক এবং এসআই তুষার পোস্টার প্রেজেন্টেশনে রানার আপ হয়েছে! পুরো বুটেক্স গর্বিত তোমাদের জন্য!’ 

দূর দেশে বসে শত কর্ম ব্যস্ততার মাঝেও বুটেক্সের প্রতি এত ভালোবাসা প্রদানকারী মানুষটি সময় পেলে পছন্দ করেন গান গাইতে, কবিতা লিখতে, সুর করতে। এমনকি ইউটিউবে তার একাধিক গানের ভিডিও রয়েছে। যেগুলো খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।

তার ব্যক্তিত্ব, কর্মকাণ্ড, সফলতা ও বুটেক্সের জুনিয়রদের প্রতি তার আন্তরিকতার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ করা ভাবনাতীত। বুটেক্সিয়ানদের জন্য তিনি হয়ে থাকবেন অনুসরণীয় ও অনুকরণীয়। এমন শিক্ষার্থী যেমন বুটেক্সের গর্ব, তেমনি বুটেক্সের জুনিয়রদের জন্যও এমন সিনিয়র পাওয়া সৌভাগ্যই বটে।



কোন মন্তব্য নেই: