বিভিন্ন ধরণের গার্মেন্টস ওয়াশিং সম্পর্কে আলোচনা | Garment Wash - Textile Lab | Textile Learning Blog
বিভিন্ন ধরণের ওয়াশিং সম্পর্কে আলোচনা
  
জিন্স ছাড়া এখনকার সময়ের ফ্যাশন অসম্পুর্ন। নানা ধরণের ওয়াশিং প্রসেস থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন লুকের জিন্স খুব সহজে সব ধরণের পোশাকের সাথে মানিয়ে যায়। জিন্সকে এখনকার ফ্যাশন আইকন বল্লে ভুল হবে না। বিশ্বাস করতে কঠিন লাগে একসময় জিন্স প্যান্ট ছিল শুধু খনিতে কাজ করা শ্রমিকদের পোশাক। স্পিনিং পদ্ধতির ব্যাপক উন্নতি,ওয়াশিং ম্যাশিন এবং নান্দনিক ফিনিশিং সিস্টেম ডেনিম জিন্স কে এ যুগের ফ্যাশন আইকনে পরিণত করেছে । আজকে কথা বলব জিন্সের বিভিন্ন ধরণের ওয়াশিং সম্পর্কে ।

স্টোন ওয়াশ

ডেনিমের সবচেয়ে পরিচিত ওয়াশ স্টোন ওয়াশ । স্টোন ওয়াশ ফেব্রিককে পুরাতন চেহারা দান করে । স্টোন ওয়াশের জন্য হালকা ওজোনের পিউমিচ পাথর দরকার হয় । পাথর ফেব্রিকের উপড়ের অংশকে ঘষে তাতে রঙের বৈপরীত্য তৈরি করে, একই সঙ্গে স্মুথনেস বৃদ্ধি করে ।
পাথর দিয়ে ঘষার ফলে ফেব্রিকের উপরিতলের ফাইবার ভেঙে পরে এবং ভেতরের ওয়ার্প সূতার সাদা ফাইবার গুলো  সামনে ভেসে ওঠে । প্যান্টের বিভিন্ন অংশ পাথরের ঘর্ষন খেয়ে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে একটা আলাদা ধরণের অবয়ব পায় ।

ব্লিচ ওয়াশ

ব্লিচ ওয়াশ করতে কোন পাথরের প্রয়োজন পরে না। বাহক হিসেবে এখানে অক্সিডেটিভ ব্লিচিং এজেন্ট ব্যাবহার করা হয় । ব্লিচিং এজেন্ট যেমন ব্লিচিং পাউডার (সোডিয়াম ক্লোরো হাইপোক্লোরাইড) ব্যাবহার করা যেতে পারে ।

আরও অনেক এজেন্ট রয়েছে তার মধ্যে সোডিয়াম বাইকার্বনেট অন্যতম । সম্প্রতি ডেনিব্লিচ টেকনিক নামের নতুন একটি বায়ো ব্লিচিং টেকনিক  আবিষ্কৃত হয়েছে ।

এনজাইম ওয়াশ
জৈব অণুঘটক দিয়ে ওয়াস করার পদ্ধতিকে এনজাইম ওয়াস বলে । এনজাইম ওয়াস করলে ফেব্রিক অনেক বেশি মসৃণতা অর্জন করে । এনজাইম ওয়াশ অনেকটা পানি বিকর্শী বিক্রিয়ার মতই যা ঘটে এনজাইমের সাহায্যে এবং এটি ফেব্রিকের উপরিতলের স্মুথনেস ও সফটনেস বৃদ্ধি করতে সহায়ক ভুমিকা পালন করে ।

আইস বা স্নো ওয়াশ

ফেব্রিক কে পাথরের সাথে ভিজিয়ে রেখে পরে তাকে ব্লিচিং এজন্টের সাহায্যে শুষ্ক করার মধ্য দিয়ে স্নো বা আইচ ওয়াসিং সম্পন্ন হয় । এ ওয়াশ স্নো প্যাটার্নের মতই প্রভাব নিয়ে আসে ডেনিম ফেব্রিকের উপড় ।

স্টোন ওয়াসিং এর মত এখানে পাথর ব্যাবহার করা হলেও, রং চটা স্ট্রাইপ তৈরির জন্য ফেব্রিকের গাঁয়ে রসায়নকে অসমভাবে জমা করাই এখানে পাথর ব্যাবহারের উদ্দেশ্য । রসায়নগুলো ফেব্রিকের উপড় থেকে শুধু রং গুলোকে উঠিয়ে ফেলে এবং তুষার কনা জমে গেলে যেমন লাগে ফেব্রিক ঠিক তেমনই চিত্র ধারণ করে । একে এসিড ওয়াসও বলা হয়ে থাকে।

স্যান্ড ব্লাস্টিং ওয়াশ
এ পদ্ধতিতে এলুমিনিয়াম অক্সাইড গ্রানুলাস কে দ্রুতগতিতে ফেব্রিকের উপড়ে ব্লাস্ট করা হয় । এলুমিনিয়াম অক্সাইড গ্রানুলাস একটি বালি জাতীয় পদার্থ । এতে যে ঘর্ষন বল উৎপন্ন হয় তা ফেব্রিকের ভেতরের ইন্ডিগো দিয়ে ডাই করা ফাইবার গুলোর রংকে মুছে ফেলে ।

আটারি ওয়াশ
জাপানী শব্দ আটারি বলতে বোঝায় প্যান্টের বিভিন্ন কুঁচকানো অংশের ঢালে ঢালে রং ফেড করা। আটারি করা হয় এমন অংশের মধ্যে রয়েছে সিম লাইনের দু পাশ, হাটুর সামনে ও পেছনে, বেল্ট লুপে , পকেটের সিম লাইনে ইত্যাদি।

রিভার ওয়াশ
পিউমিচ স্টোন ও সেলুলোজ এনজাইমের সমন্বয়ে যে ওয়াশিং ডেনিমকে বহুবছরের পুরাতন চেহারা দান করে তাকেই রিভার ওয়াশিং বলে। রিভার ওয়াশিং এর জন্য ওয়াসারকে প্রথমে পাথর ও ফেব্রিকের পুর্ন করা হয় এবং পরে তাতে এনজাইম দেয়া হয় । এরপর শুকানোর প্রক্রিয়া শুরু হয় যতক্ষণ না তা প্রাকৃতিক পুরাতন লুক লাভ করে ।

লেখাঃ 
Md Mizanur Rahman

বিভিন্ন ধরণের গার্মেন্টস ওয়াশিং সম্পর্কে আলোচনা | Garment Wash

বিভিন্ন ধরণের ওয়াশিং সম্পর্কে আলোচনা
  
জিন্স ছাড়া এখনকার সময়ের ফ্যাশন অসম্পুর্ন। নানা ধরণের ওয়াশিং প্রসেস থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন লুকের জিন্স খুব সহজে সব ধরণের পোশাকের সাথে মানিয়ে যায়। জিন্সকে এখনকার ফ্যাশন আইকন বল্লে ভুল হবে না। বিশ্বাস করতে কঠিন লাগে একসময় জিন্স প্যান্ট ছিল শুধু খনিতে কাজ করা শ্রমিকদের পোশাক। স্পিনিং পদ্ধতির ব্যাপক উন্নতি,ওয়াশিং ম্যাশিন এবং নান্দনিক ফিনিশিং সিস্টেম ডেনিম জিন্স কে এ যুগের ফ্যাশন আইকনে পরিণত করেছে । আজকে কথা বলব জিন্সের বিভিন্ন ধরণের ওয়াশিং সম্পর্কে ।

স্টোন ওয়াশ

ডেনিমের সবচেয়ে পরিচিত ওয়াশ স্টোন ওয়াশ । স্টোন ওয়াশ ফেব্রিককে পুরাতন চেহারা দান করে । স্টোন ওয়াশের জন্য হালকা ওজোনের পিউমিচ পাথর দরকার হয় । পাথর ফেব্রিকের উপড়ের অংশকে ঘষে তাতে রঙের বৈপরীত্য তৈরি করে, একই সঙ্গে স্মুথনেস বৃদ্ধি করে ।
পাথর দিয়ে ঘষার ফলে ফেব্রিকের উপরিতলের ফাইবার ভেঙে পরে এবং ভেতরের ওয়ার্প সূতার সাদা ফাইবার গুলো  সামনে ভেসে ওঠে । প্যান্টের বিভিন্ন অংশ পাথরের ঘর্ষন খেয়ে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে একটা আলাদা ধরণের অবয়ব পায় ।

ব্লিচ ওয়াশ

ব্লিচ ওয়াশ করতে কোন পাথরের প্রয়োজন পরে না। বাহক হিসেবে এখানে অক্সিডেটিভ ব্লিচিং এজেন্ট ব্যাবহার করা হয় । ব্লিচিং এজেন্ট যেমন ব্লিচিং পাউডার (সোডিয়াম ক্লোরো হাইপোক্লোরাইড) ব্যাবহার করা যেতে পারে ।

আরও অনেক এজেন্ট রয়েছে তার মধ্যে সোডিয়াম বাইকার্বনেট অন্যতম । সম্প্রতি ডেনিব্লিচ টেকনিক নামের নতুন একটি বায়ো ব্লিচিং টেকনিক  আবিষ্কৃত হয়েছে ।

এনজাইম ওয়াশ
জৈব অণুঘটক দিয়ে ওয়াস করার পদ্ধতিকে এনজাইম ওয়াস বলে । এনজাইম ওয়াস করলে ফেব্রিক অনেক বেশি মসৃণতা অর্জন করে । এনজাইম ওয়াশ অনেকটা পানি বিকর্শী বিক্রিয়ার মতই যা ঘটে এনজাইমের সাহায্যে এবং এটি ফেব্রিকের উপরিতলের স্মুথনেস ও সফটনেস বৃদ্ধি করতে সহায়ক ভুমিকা পালন করে ।

আইস বা স্নো ওয়াশ

ফেব্রিক কে পাথরের সাথে ভিজিয়ে রেখে পরে তাকে ব্লিচিং এজন্টের সাহায্যে শুষ্ক করার মধ্য দিয়ে স্নো বা আইচ ওয়াসিং সম্পন্ন হয় । এ ওয়াশ স্নো প্যাটার্নের মতই প্রভাব নিয়ে আসে ডেনিম ফেব্রিকের উপড় ।

স্টোন ওয়াসিং এর মত এখানে পাথর ব্যাবহার করা হলেও, রং চটা স্ট্রাইপ তৈরির জন্য ফেব্রিকের গাঁয়ে রসায়নকে অসমভাবে জমা করাই এখানে পাথর ব্যাবহারের উদ্দেশ্য । রসায়নগুলো ফেব্রিকের উপড় থেকে শুধু রং গুলোকে উঠিয়ে ফেলে এবং তুষার কনা জমে গেলে যেমন লাগে ফেব্রিক ঠিক তেমনই চিত্র ধারণ করে । একে এসিড ওয়াসও বলা হয়ে থাকে।

স্যান্ড ব্লাস্টিং ওয়াশ
এ পদ্ধতিতে এলুমিনিয়াম অক্সাইড গ্রানুলাস কে দ্রুতগতিতে ফেব্রিকের উপড়ে ব্লাস্ট করা হয় । এলুমিনিয়াম অক্সাইড গ্রানুলাস একটি বালি জাতীয় পদার্থ । এতে যে ঘর্ষন বল উৎপন্ন হয় তা ফেব্রিকের ভেতরের ইন্ডিগো দিয়ে ডাই করা ফাইবার গুলোর রংকে মুছে ফেলে ।

আটারি ওয়াশ
জাপানী শব্দ আটারি বলতে বোঝায় প্যান্টের বিভিন্ন কুঁচকানো অংশের ঢালে ঢালে রং ফেড করা। আটারি করা হয় এমন অংশের মধ্যে রয়েছে সিম লাইনের দু পাশ, হাটুর সামনে ও পেছনে, বেল্ট লুপে , পকেটের সিম লাইনে ইত্যাদি।

রিভার ওয়াশ
পিউমিচ স্টোন ও সেলুলোজ এনজাইমের সমন্বয়ে যে ওয়াশিং ডেনিমকে বহুবছরের পুরাতন চেহারা দান করে তাকেই রিভার ওয়াশিং বলে। রিভার ওয়াশিং এর জন্য ওয়াসারকে প্রথমে পাথর ও ফেব্রিকের পুর্ন করা হয় এবং পরে তাতে এনজাইম দেয়া হয় । এরপর শুকানোর প্রক্রিয়া শুরু হয় যতক্ষণ না তা প্রাকৃতিক পুরাতন লুক লাভ করে ।

লেখাঃ 
Md Mizanur Rahman

কোন মন্তব্য নেই: