প্যাসিফিক জিন্স - বাংলাদেশের লিডিং জিনস ম্যানুফেকচারার | Pacific Jeans Ltd - Textile Lab | Textile Learning Blog
প্যাসিফিক জিন্স | Pacific Jeans Ltd
১৯৮৪ সাল। এনজেডএন ফ্যাশনওয়্যার নামের বাংলাদেশের একটি ছোট গার্মেন্ট কারখানার তখন কর্মীসংখ্যা কেবল ৫০০ জন। তারপরও সাহস করে কারখানাটি ১২ হাজার মার্কিন ডলারের একটি ইতালিয়ান রপ্তানি-আদেশ গ্রহণ করে ফেলে। দেশে তখনও কোনো ওয়াশিং (ধৌতকরণ) প্ল্যান্ট ছিল না। ওই রপ্তানিপণ্যগুলোর ওয়াশিং-এর কাজ করা হয় ইতালিতে। এক বছর পরে এনজেডএন ফ্যাশনওয়্যার ইতালিয়ান এক বায়ারের কাছ থেকে প্রাযুক্তিক সাহায্য নিয়ে দেশেই একটি ওয়াশিং প্ল্যান্ট স্থাপন করে ফেলে।

এই কারখানাটি এখন প্যাসিফিক জিনস গ্রুপের অংশ। এ গ্রুপের ১২টি গার্মেন্ট কারখানা ও প্ল্যান্ট রয়েছে। ২০২১ সালে তিনটি নতুন কারখানা কিনে নেয় এ গ্রুপটি। বর্তমানে আরও একটি কারখানা নির্মাণাধীন রয়েছে। এ গ্রুপের অধীনে ৩৫ হাজার মানুষ কাজ করেন।
এ বছর প্যাসিফিক জিনস গ্রুপ ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ডেনিম জিনস রপ্তানিলক্ষ্য স্থির করেছে। আগামী পাঁচ বছরে বিলিয়ন ডলারের মাইলফলকে পৌঁছানোরও প্রত্যাশা করছে এটি। প্রতি মাসে এ গ্রুপ ৪০ লাখ জিনস তৈরি করে, আগামী ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ তা ৬০ লাখে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রতি মাসে ২০ লাখ নিট অ্যাপারেল তৈরি করার সক্ষমতাও রয়েছে প্যাসিফিক জিনস গ্রুপের।

তবে গল্পের শেষ এখানেই নয়:

একদম শুরু থেকেই প্রিমিয়াম জিনস তৈরির জন্য দক্ষতা অর্জন ও বিনিয়োগ করেছে প্যাসিফিক জিনস। এর ফলে হাই স্ট্রিট ক্রেতাদেরকে প্রিমিয়াম মাসের জিনস সাশ্রয়ী দামে সরবরাহ করতে পারত প্রতিষ্ঠানটি।

টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থার ওপর প্যাসিফিক জিনস এত বিনিয়োগ করেছে যে এখন এটি ক্রেতাদের কেবল এক লিটার পানি বা কোনো পানি ছাড়াই ওয়াশ করা জিনস সরবরাহ করতে পারে। এমনিতে সাধারণত এক জোড়া জিনস ওয়াশ করতে ৫৫ লিটারের মতো পানি খরচ হয়। গবেষণা ও উন্নয়ন খাতেও বিনিয়োগের কারণে প্রতিষ্ঠানটির স্টেট-অভ-দ্য-আর্ট ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট সেন্টার তৈরি হয়েছে। এটির কল্যাণে প্যাসিফিক জিনস তার ক্রেতাদের সাধারণ নমুনার বাইরে কাস্টম ডিজাইন করা পণ্য সরবরাহ করতে পারে।

'প্যাসিফিক জিনস-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান প্রয়াত এম নাসির উদ্দিনের দূরদর্শী নেতৃত্বে আমরা একটি ইতালিয়ান ব্র্যান্ডের প্রিমিয়াম সেগমেন্ট দিয়ে যাত্রা শুরু করি। তারা আমাদেরকে প্রায়োগিক প্রযুক্তি দিয়ে সহায়তা করে,' চট্টগ্রাম ইপিজেড-এ নিজের অফিসে বসে এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন প্যাসিফিক জিনস লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর।

'সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ধারাবাহিক বিনিয়োগ ও পণ্যের বৈচিত্র্যময়তার কারণে প্যাসিফিক জিনস গত কয়েক বছর ধরে স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। এর ফলে বৈশ্বিক লাইফওয়্যার সমস্যার সমাধানদাতা হিসেবে ভিশন ঠিক করার ক্ষেত্রে আমরা এগিয়ে গেছি,' বলেন তানভীর। তিনি চিটাগং চেম্বার অভ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি'র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

'আমরা সবার জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে প্রিমিয়াম কোয়ালিটির পোশাক তৈরি করতে চাই,' যোগ করেন তিনি।

প্রথম শিপমেন্টের ১০ বছর পরে জনাব  নাসির চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (সিইপিজেড)-এ তার মনোযোগ স্থানান্তর করেন। সেখানে তিনি প্যাসিফিক জিনস লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন, এটিতে ১,৫০০ মানুষের কর্মসংস্থান হয়। বর্তমানে এ গ্রুপটি ইপিজেডে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চাকরিদাতা ও রপ্তানিকারক গ্রুপ। দেশের অর্থনীতিতে চমৎকার অবদানের জন্য ইতোমধ্যে ২৪ বার বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া জাতীয় রপ্তানি ট্রফি জিতে নিয়েছে গ্রুপটি।

ডেনিম শিল্পে প্রযুক্তির মানদণ্ডের পথিকৃৎ হিসেবেও আসন গেড়ে নিয়েছে প্যাসিফিক জিনস। প্রায়ই বিশ্বের প্রখ্যাত ডেনিম প্রযুক্তিদাতাদের বিভিন্ন সর্বশেষ প্রোটোটাইপ ব্যবহারের সুযোগ পায় প্যাসিফিক জিনস।
তানভির জানান, বিভিন্ন সময়ে তাদের ফিডব্যাকের মাধ্যমে ওসব প্রযুক্তিগুলোকে আপডেট করে তারপর বাণিজ্যিকভাবে বাজারে ছাড়া হয়েছে।

সূচনা: উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে যাত্রা

সব প্রতিষ্ঠান যেখানে ডিসকাউন্ট রিটেইলারদের সাথে কাজ শুরু করে, সেখানে প্যাসিফিক জিনস-এর ক্ষেত্রে উল্টোটি ঘটেছে। ওই সময় এখানকার ডেনিম মার্কেট প্রিমিয়াম রিটেইলারদের জন্য যে জিনস তৈরি করতো, সেগুলোর রিটেইল (খুচরা) মূল্য ১৫০ মার্কিন ডলারের বেশি ছিল।

'শুরুটা আশীর্বাদের মতো ছিল প্যাসিফিক জিনস-এর জন্য। এর ফলে আমরা হাই স্ট্রিট রিটেইলারদের কাছে প্রিমিয়াম সেগমেন্ট কোয়ালিটির পণ্য বিক্রির লক্ষ্য স্থাপন করতে পেরেছিলাম,' বলেন তানভীর।

এ আইডিয়া কীভাবে তৈরি হলো এমন প্রশ্নের জবাবে তানভীর বলেন, এটি শীর্ষ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকাদের মাথা থেকে এসেছিল। সেটিই এক পর্যায়ে ব্যবস্থাপনার মধ্যবর্তী স্তরে ছড়ায়। এটি ছিল প্রযুক্তি, টেকসই ক্ষমতা, যন্ত্রপাতি, ও মানুষের একটি সমন্বয়।

'আমরা প্রযুক্তির ব্যাপারে কখনো ছাড় দেইনি। সেজন্য এ শিল্পের সম্ভাব্য সবচেয়ে সেরা প্রযুক্তিগুলোর পেছনেই আমরা ছুটেছি। এখন আমাদের কাছে সবচেয়ে সেরা ওয়াশিং, ড্রাইয়িং, লেজার ইত্যাদি প্রযুক্তি রয়েছে। একই কথা সত্য প্রতিটি বিভাগের কাটিং, স্টিচিং, ফিনিশিং ইত্যাদি প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও,' বলেন তানভীর।

হাই স্ট্রিট রিটেইল দামে প্রিমিয়াম মানের পণ্য উৎপাদন করা; এটাই ছিল প্যাসিফিক জিনস-এর লক্ষ্য। তানভীর বলেন, 'আমরা প্রিমিয়াম রিটেইলারদের কাছ থেকে ফ্যাশনের নান্দনিকতা, কৌশল, ও দক্ষতা আয়ত্ত করেছি।'

এরপর যখন বৃহৎ পরিসরে পণ্য উৎপাদন করা শুরু হলো তখন উৎপাদন খরচও কমে গেল। তানভীর বলেন, 'প্রতিটি প্রিমিয়াম জিনস যেন এক একটি শৈল্পিক নির্মাণ, কিন্তু আমাদের চিন্তাধারা ছিল বেশি করে প্রিমিয়াম জিনস তৈরি করা যাতে উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনা যায়।'

বেশ কয়েক বছর ধরে এ কৌশলকে সফলভাবে কাজে লাগাচ্ছে প্যাসিফিক জিনস। 'যদি আপনি একই মানের একটি ডেনিম প্রিমিয়াম রিটেইলারদের কাছ থেকে কিনতে যান, তাহলে তারা ২৫০ থেকে ২৬০ মার্কিন ডলারে সেটি আপনার কাছে বিক্রি করবে। কিন্তু আমাদের হাই স্ট্রিট ক্রেতারা একই জিনস ৫০ থেকে ৬০ ডলারে বিক্রি করতে পারেন,' জানান এ ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

কিন্তু এ প্রক্রিয়ায় নতুন প্রাযুক্তির জন্য বেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন পড়ে। 'হাই স্ট্রিট রিটেইলারদের জন্য আমাদের পণ্যকে মূল্য-সাশ্রয়ী করার উদ্দেশ্যে আমাদেরকে অনেক প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং ও কস্ট ইঞ্জিনিয়ারিং করতে হয়েছিল,' বলেন তানভীর।

টেকসই ওয়াশিং-এর পথিকৃৎঃ

টেক্সটাইল শিল্প, বিশেষ করে ডেনিম শিল্প প্রচুর পরিমাণ পানি, শক্তি, ও প্রাকৃতিক সম্পদ খরচ করার জন্য পরিচিত। তাই বর্তমানে টেকসই ওয়াশিং একটি সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।


ডেনিম ওয়াশিং-এর ক্ষেত্রে পথিকৃৎ প্যাসিফিক জিনস একইসাথে ওয়াশিং ও ফিনিশিং-এর জন্য টেকসই প্রযুক্তি ব্যবহার করে। বর্তমানে এ গ্রুপের পানি খরচ না করেই ওয়াশিং-এর সক্ষমতা রয়েছে।
'আমরা এক জোড়া জিনস এক লিটার পানি দিয়েই ওয়াশ করতে পারি। একই কাজ কোনো পানি ছাড়া করারও সক্ষমতা রয়েছে আমাদের। এটি নির্ভর করে ক্রেতার চাহিদার ওপর,' যোগ করেন তানভীর।

সাধারণত এক জোড়া জিনস ওয়াশ করতে কমপক্ষে ৫৫ লিটার পানির প্রয়োজন হয়।

'আমাদের এ বিষয়ে তিনটি দৃষ্টিকোণ রয়েছে - পানি, এনার্জি, ও রাসায়নিকের ব্যবহার কমিয়ে শিল্পটিকে আরও বেশি পরিবেশবান্ধব করে তোলা,' বলেন তানভীর, 'এর সাথে মিল রেখে আমরা ২০২৫ সালের মধ্যে আমাদের কারখানাগুলোতে পানির ব্যবহার ৫০ শতাংশ ও এনার্জির ব্যবহার ৬০ শতাংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্য স্থাপন করেছি।'

২০৩০ সালের মধ্যে প্যাসিফিক জিনস তাদের মোট ব্যবহৃত এনার্জির ক্ষেত্রে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর লক্ষ্য হাতে নিয়েছে। একই সময়ের মধ্যে পানির ব্যবহার ৭০ শতাংশ কমানোরও পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে এ গ্রুপের মোট ব্যবহার করা এনার্জির ১০ শতাংশ আসে সৌরশক্তি থেকে। এর পরিমাণ দৈনিক পাঁচ মেগাওয়াট।

এগুলো প্যাসিফিক জিনস-এর পরিবেশগত টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, কর্মপরিবেশ উন্নয়ন, আর্থিক ও কর্পোরেট গভর্নেন্স-এর উন্নয়ন ইত্যাদি প্রচেষ্টার অংশ।

এর ফলে বাংলাদেশের প্রথম কোম্পানি হিসেবে প্রায় সাত বছর আগেই সিটুসি গোল্ড সার্টিফিকেট অর্জন করেছে প্যাসিফিক জিনস।

প্যাসিফিক জিনস-এর মূল্য সংযোজন
টেকসই হওয়ার পাশাপাশি আরও বিভিন্ন উপায়ে মূল্য সংযোজন (ভ্যালু অ্যাডিশন) তৈরি করে প্যাসিফিক জিনস।

'তিনটি বিভাগসমৃদ্ধ আমাদের একটি শক্তিশালী নকশা ও উন্নয়ন কেন্দ্র (ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার) রয়েছে। বিভাগগুলো হচ্ছে ফ্যাব্রিক, ডিজাইন, ও ওয়াশিং। এ সেন্টারের মাধ্যমে আমরা প্রতিটি ক্রেতাকে সাধারণ নমুনার বাইরে গিয়ে একটি কাস্টম কালেকশন দেখাতে পারি। এ সমন্বয় আমাদের আরও বেশি মূল্য সংযোজনে সাহায্য করে,' বলেন তানভীর।

প্যাসিফিক জিনস-এর প্রতিষ্ঠাতা নাসির উদ্দিন তার ভিশন, কার্যপদ্ধতি, ও ব্যবসায়র প্রতি প্যাশন টিমের অন্যদের মধ্যেও সফলভাবে স্থানান্তর করতে সক্ষম হয়েছেন।

'আমরা সবাই তার শিষ্য। যদিও তিনি এখন আর আমাদের সঙ্গে নেই, তার স্বপ্নকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তার কর্মশক্তি আমাদেরকে তার লিগেসি এগিয়ে নিতে ও কোম্পানিকে বিভিন্ন মাইলফলক অর্জনে সাহায্য করেছে,' বলেন তানভীর। একইসাথে কোম্পানির স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির পেছনে সার্বিক ব্যবস্থাপনার ক্রমাগত উন্নতিকেও কৃতিত্ব দেন তিনি।

গত কয়েক বছরে প্যাসিফিক গ্রুপ পণ্যের উন্নয়ন, উৎপাদন দক্ষতা উন্নয়ন, মানবসম্পদ উন্নয়ন, মধ্যবর্তী স্তরের ব্যবস্থাপকদের দক্ষতা উন্নয়ন, ও সম্পদের সর্বোত্তম সদ্ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে।

সার্বিকভাবে প্যাসিফিক জিনস বর্তমানে একটি বৃহৎ প্রবৃদ্ধি দশার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ গ্রুপের বড় বাজার হলো জাপান, ইউরোপ, ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি অন্যান্য অনেক বাজারসহ উদীয়মান এশিয়ান বাজার যেমন চীন ও জাপানের বাজারের দিকেও নজর রয়েছে গ্রুপটির।

চট্টগ্রামে একটি পাঁচতারা বিলাসবহুল ব্যবসায়িক হোটেল নির্মাণে ম্যারিয়ট ইন্টারন্যাশনাল-এর সাথে একটি চুক্তিও করেছে প্যাসিফিক জিনস। এ বছরের শেষে এটির কাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
'নাসির উদ্দিন এমন একটা সময়ে ডেনিম ওয়াশিং প্ল্যান্টে বিনিয়োগ করেছিলেন যখন বাংলাদেশে একটি ওয়াশিং প্ল্যান্ট স্থাপন করার ধারণাটি কেউ কল্পনাও করতে পারতো না,' দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-কে বলেন বিজিএমইএ-এর প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান। 'যখন কোনো কারখানার নিজস্ব রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগ থাকে, তখন ক্রেতারা পণ্যের আদেশ দিতে আত্মবিশ্বাস পান।'

হাসান আরও বলেন, 'শক্তিশালী মার্কেটিং নীতি ও উচ্চমানের ডেনিম উৎপাদনকারী হওয়ার কারণে প্যাসিফিক জিনস ভালো দাম পায়। এর ফলে দক্ষতার ওপর আরও বেশি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হয়। উদ্যোক্তাদের উচিত উৎকর্ষ লাভের জন্য প্যাসিফিক জিনস-এর মডেল অনুসরণ করা।'

প্যাসিফিক জিন্স - বাংলাদেশের লিডিং জিনস ম্যানুফেকচারার | Pacific Jeans Ltd

প্যাসিফিক জিন্স | Pacific Jeans Ltd
১৯৮৪ সাল। এনজেডএন ফ্যাশনওয়্যার নামের বাংলাদেশের একটি ছোট গার্মেন্ট কারখানার তখন কর্মীসংখ্যা কেবল ৫০০ জন। তারপরও সাহস করে কারখানাটি ১২ হাজার মার্কিন ডলারের একটি ইতালিয়ান রপ্তানি-আদেশ গ্রহণ করে ফেলে। দেশে তখনও কোনো ওয়াশিং (ধৌতকরণ) প্ল্যান্ট ছিল না। ওই রপ্তানিপণ্যগুলোর ওয়াশিং-এর কাজ করা হয় ইতালিতে। এক বছর পরে এনজেডএন ফ্যাশনওয়্যার ইতালিয়ান এক বায়ারের কাছ থেকে প্রাযুক্তিক সাহায্য নিয়ে দেশেই একটি ওয়াশিং প্ল্যান্ট স্থাপন করে ফেলে।

এই কারখানাটি এখন প্যাসিফিক জিনস গ্রুপের অংশ। এ গ্রুপের ১২টি গার্মেন্ট কারখানা ও প্ল্যান্ট রয়েছে। ২০২১ সালে তিনটি নতুন কারখানা কিনে নেয় এ গ্রুপটি। বর্তমানে আরও একটি কারখানা নির্মাণাধীন রয়েছে। এ গ্রুপের অধীনে ৩৫ হাজার মানুষ কাজ করেন।
এ বছর প্যাসিফিক জিনস গ্রুপ ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ডেনিম জিনস রপ্তানিলক্ষ্য স্থির করেছে। আগামী পাঁচ বছরে বিলিয়ন ডলারের মাইলফলকে পৌঁছানোরও প্রত্যাশা করছে এটি। প্রতি মাসে এ গ্রুপ ৪০ লাখ জিনস তৈরি করে, আগামী ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ তা ৬০ লাখে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রতি মাসে ২০ লাখ নিট অ্যাপারেল তৈরি করার সক্ষমতাও রয়েছে প্যাসিফিক জিনস গ্রুপের।

তবে গল্পের শেষ এখানেই নয়:

একদম শুরু থেকেই প্রিমিয়াম জিনস তৈরির জন্য দক্ষতা অর্জন ও বিনিয়োগ করেছে প্যাসিফিক জিনস। এর ফলে হাই স্ট্রিট ক্রেতাদেরকে প্রিমিয়াম মাসের জিনস সাশ্রয়ী দামে সরবরাহ করতে পারত প্রতিষ্ঠানটি।

টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থার ওপর প্যাসিফিক জিনস এত বিনিয়োগ করেছে যে এখন এটি ক্রেতাদের কেবল এক লিটার পানি বা কোনো পানি ছাড়াই ওয়াশ করা জিনস সরবরাহ করতে পারে। এমনিতে সাধারণত এক জোড়া জিনস ওয়াশ করতে ৫৫ লিটারের মতো পানি খরচ হয়। গবেষণা ও উন্নয়ন খাতেও বিনিয়োগের কারণে প্রতিষ্ঠানটির স্টেট-অভ-দ্য-আর্ট ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট সেন্টার তৈরি হয়েছে। এটির কল্যাণে প্যাসিফিক জিনস তার ক্রেতাদের সাধারণ নমুনার বাইরে কাস্টম ডিজাইন করা পণ্য সরবরাহ করতে পারে।

'প্যাসিফিক জিনস-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান প্রয়াত এম নাসির উদ্দিনের দূরদর্শী নেতৃত্বে আমরা একটি ইতালিয়ান ব্র্যান্ডের প্রিমিয়াম সেগমেন্ট দিয়ে যাত্রা শুরু করি। তারা আমাদেরকে প্রায়োগিক প্রযুক্তি দিয়ে সহায়তা করে,' চট্টগ্রাম ইপিজেড-এ নিজের অফিসে বসে এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন প্যাসিফিক জিনস লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর।

'সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ধারাবাহিক বিনিয়োগ ও পণ্যের বৈচিত্র্যময়তার কারণে প্যাসিফিক জিনস গত কয়েক বছর ধরে স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। এর ফলে বৈশ্বিক লাইফওয়্যার সমস্যার সমাধানদাতা হিসেবে ভিশন ঠিক করার ক্ষেত্রে আমরা এগিয়ে গেছি,' বলেন তানভীর। তিনি চিটাগং চেম্বার অভ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি'র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

'আমরা সবার জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে প্রিমিয়াম কোয়ালিটির পোশাক তৈরি করতে চাই,' যোগ করেন তিনি।

প্রথম শিপমেন্টের ১০ বছর পরে জনাব  নাসির চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (সিইপিজেড)-এ তার মনোযোগ স্থানান্তর করেন। সেখানে তিনি প্যাসিফিক জিনস লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন, এটিতে ১,৫০০ মানুষের কর্মসংস্থান হয়। বর্তমানে এ গ্রুপটি ইপিজেডে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চাকরিদাতা ও রপ্তানিকারক গ্রুপ। দেশের অর্থনীতিতে চমৎকার অবদানের জন্য ইতোমধ্যে ২৪ বার বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া জাতীয় রপ্তানি ট্রফি জিতে নিয়েছে গ্রুপটি।

ডেনিম শিল্পে প্রযুক্তির মানদণ্ডের পথিকৃৎ হিসেবেও আসন গেড়ে নিয়েছে প্যাসিফিক জিনস। প্রায়ই বিশ্বের প্রখ্যাত ডেনিম প্রযুক্তিদাতাদের বিভিন্ন সর্বশেষ প্রোটোটাইপ ব্যবহারের সুযোগ পায় প্যাসিফিক জিনস।
তানভির জানান, বিভিন্ন সময়ে তাদের ফিডব্যাকের মাধ্যমে ওসব প্রযুক্তিগুলোকে আপডেট করে তারপর বাণিজ্যিকভাবে বাজারে ছাড়া হয়েছে।

সূচনা: উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে যাত্রা

সব প্রতিষ্ঠান যেখানে ডিসকাউন্ট রিটেইলারদের সাথে কাজ শুরু করে, সেখানে প্যাসিফিক জিনস-এর ক্ষেত্রে উল্টোটি ঘটেছে। ওই সময় এখানকার ডেনিম মার্কেট প্রিমিয়াম রিটেইলারদের জন্য যে জিনস তৈরি করতো, সেগুলোর রিটেইল (খুচরা) মূল্য ১৫০ মার্কিন ডলারের বেশি ছিল।

'শুরুটা আশীর্বাদের মতো ছিল প্যাসিফিক জিনস-এর জন্য। এর ফলে আমরা হাই স্ট্রিট রিটেইলারদের কাছে প্রিমিয়াম সেগমেন্ট কোয়ালিটির পণ্য বিক্রির লক্ষ্য স্থাপন করতে পেরেছিলাম,' বলেন তানভীর।

এ আইডিয়া কীভাবে তৈরি হলো এমন প্রশ্নের জবাবে তানভীর বলেন, এটি শীর্ষ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকাদের মাথা থেকে এসেছিল। সেটিই এক পর্যায়ে ব্যবস্থাপনার মধ্যবর্তী স্তরে ছড়ায়। এটি ছিল প্রযুক্তি, টেকসই ক্ষমতা, যন্ত্রপাতি, ও মানুষের একটি সমন্বয়।

'আমরা প্রযুক্তির ব্যাপারে কখনো ছাড় দেইনি। সেজন্য এ শিল্পের সম্ভাব্য সবচেয়ে সেরা প্রযুক্তিগুলোর পেছনেই আমরা ছুটেছি। এখন আমাদের কাছে সবচেয়ে সেরা ওয়াশিং, ড্রাইয়িং, লেজার ইত্যাদি প্রযুক্তি রয়েছে। একই কথা সত্য প্রতিটি বিভাগের কাটিং, স্টিচিং, ফিনিশিং ইত্যাদি প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও,' বলেন তানভীর।

হাই স্ট্রিট রিটেইল দামে প্রিমিয়াম মানের পণ্য উৎপাদন করা; এটাই ছিল প্যাসিফিক জিনস-এর লক্ষ্য। তানভীর বলেন, 'আমরা প্রিমিয়াম রিটেইলারদের কাছ থেকে ফ্যাশনের নান্দনিকতা, কৌশল, ও দক্ষতা আয়ত্ত করেছি।'

এরপর যখন বৃহৎ পরিসরে পণ্য উৎপাদন করা শুরু হলো তখন উৎপাদন খরচও কমে গেল। তানভীর বলেন, 'প্রতিটি প্রিমিয়াম জিনস যেন এক একটি শৈল্পিক নির্মাণ, কিন্তু আমাদের চিন্তাধারা ছিল বেশি করে প্রিমিয়াম জিনস তৈরি করা যাতে উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনা যায়।'

বেশ কয়েক বছর ধরে এ কৌশলকে সফলভাবে কাজে লাগাচ্ছে প্যাসিফিক জিনস। 'যদি আপনি একই মানের একটি ডেনিম প্রিমিয়াম রিটেইলারদের কাছ থেকে কিনতে যান, তাহলে তারা ২৫০ থেকে ২৬০ মার্কিন ডলারে সেটি আপনার কাছে বিক্রি করবে। কিন্তু আমাদের হাই স্ট্রিট ক্রেতারা একই জিনস ৫০ থেকে ৬০ ডলারে বিক্রি করতে পারেন,' জানান এ ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

কিন্তু এ প্রক্রিয়ায় নতুন প্রাযুক্তির জন্য বেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন পড়ে। 'হাই স্ট্রিট রিটেইলারদের জন্য আমাদের পণ্যকে মূল্য-সাশ্রয়ী করার উদ্দেশ্যে আমাদেরকে অনেক প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং ও কস্ট ইঞ্জিনিয়ারিং করতে হয়েছিল,' বলেন তানভীর।

টেকসই ওয়াশিং-এর পথিকৃৎঃ

টেক্সটাইল শিল্প, বিশেষ করে ডেনিম শিল্প প্রচুর পরিমাণ পানি, শক্তি, ও প্রাকৃতিক সম্পদ খরচ করার জন্য পরিচিত। তাই বর্তমানে টেকসই ওয়াশিং একটি সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।


ডেনিম ওয়াশিং-এর ক্ষেত্রে পথিকৃৎ প্যাসিফিক জিনস একইসাথে ওয়াশিং ও ফিনিশিং-এর জন্য টেকসই প্রযুক্তি ব্যবহার করে। বর্তমানে এ গ্রুপের পানি খরচ না করেই ওয়াশিং-এর সক্ষমতা রয়েছে।
'আমরা এক জোড়া জিনস এক লিটার পানি দিয়েই ওয়াশ করতে পারি। একই কাজ কোনো পানি ছাড়া করারও সক্ষমতা রয়েছে আমাদের। এটি নির্ভর করে ক্রেতার চাহিদার ওপর,' যোগ করেন তানভীর।

সাধারণত এক জোড়া জিনস ওয়াশ করতে কমপক্ষে ৫৫ লিটার পানির প্রয়োজন হয়।

'আমাদের এ বিষয়ে তিনটি দৃষ্টিকোণ রয়েছে - পানি, এনার্জি, ও রাসায়নিকের ব্যবহার কমিয়ে শিল্পটিকে আরও বেশি পরিবেশবান্ধব করে তোলা,' বলেন তানভীর, 'এর সাথে মিল রেখে আমরা ২০২৫ সালের মধ্যে আমাদের কারখানাগুলোতে পানির ব্যবহার ৫০ শতাংশ ও এনার্জির ব্যবহার ৬০ শতাংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্য স্থাপন করেছি।'

২০৩০ সালের মধ্যে প্যাসিফিক জিনস তাদের মোট ব্যবহৃত এনার্জির ক্ষেত্রে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর লক্ষ্য হাতে নিয়েছে। একই সময়ের মধ্যে পানির ব্যবহার ৭০ শতাংশ কমানোরও পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে এ গ্রুপের মোট ব্যবহার করা এনার্জির ১০ শতাংশ আসে সৌরশক্তি থেকে। এর পরিমাণ দৈনিক পাঁচ মেগাওয়াট।

এগুলো প্যাসিফিক জিনস-এর পরিবেশগত টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, কর্মপরিবেশ উন্নয়ন, আর্থিক ও কর্পোরেট গভর্নেন্স-এর উন্নয়ন ইত্যাদি প্রচেষ্টার অংশ।

এর ফলে বাংলাদেশের প্রথম কোম্পানি হিসেবে প্রায় সাত বছর আগেই সিটুসি গোল্ড সার্টিফিকেট অর্জন করেছে প্যাসিফিক জিনস।

প্যাসিফিক জিনস-এর মূল্য সংযোজন
টেকসই হওয়ার পাশাপাশি আরও বিভিন্ন উপায়ে মূল্য সংযোজন (ভ্যালু অ্যাডিশন) তৈরি করে প্যাসিফিক জিনস।

'তিনটি বিভাগসমৃদ্ধ আমাদের একটি শক্তিশালী নকশা ও উন্নয়ন কেন্দ্র (ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার) রয়েছে। বিভাগগুলো হচ্ছে ফ্যাব্রিক, ডিজাইন, ও ওয়াশিং। এ সেন্টারের মাধ্যমে আমরা প্রতিটি ক্রেতাকে সাধারণ নমুনার বাইরে গিয়ে একটি কাস্টম কালেকশন দেখাতে পারি। এ সমন্বয় আমাদের আরও বেশি মূল্য সংযোজনে সাহায্য করে,' বলেন তানভীর।

প্যাসিফিক জিনস-এর প্রতিষ্ঠাতা নাসির উদ্দিন তার ভিশন, কার্যপদ্ধতি, ও ব্যবসায়র প্রতি প্যাশন টিমের অন্যদের মধ্যেও সফলভাবে স্থানান্তর করতে সক্ষম হয়েছেন।

'আমরা সবাই তার শিষ্য। যদিও তিনি এখন আর আমাদের সঙ্গে নেই, তার স্বপ্নকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তার কর্মশক্তি আমাদেরকে তার লিগেসি এগিয়ে নিতে ও কোম্পানিকে বিভিন্ন মাইলফলক অর্জনে সাহায্য করেছে,' বলেন তানভীর। একইসাথে কোম্পানির স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির পেছনে সার্বিক ব্যবস্থাপনার ক্রমাগত উন্নতিকেও কৃতিত্ব দেন তিনি।

গত কয়েক বছরে প্যাসিফিক গ্রুপ পণ্যের উন্নয়ন, উৎপাদন দক্ষতা উন্নয়ন, মানবসম্পদ উন্নয়ন, মধ্যবর্তী স্তরের ব্যবস্থাপকদের দক্ষতা উন্নয়ন, ও সম্পদের সর্বোত্তম সদ্ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে।

সার্বিকভাবে প্যাসিফিক জিনস বর্তমানে একটি বৃহৎ প্রবৃদ্ধি দশার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ গ্রুপের বড় বাজার হলো জাপান, ইউরোপ, ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি অন্যান্য অনেক বাজারসহ উদীয়মান এশিয়ান বাজার যেমন চীন ও জাপানের বাজারের দিকেও নজর রয়েছে গ্রুপটির।

চট্টগ্রামে একটি পাঁচতারা বিলাসবহুল ব্যবসায়িক হোটেল নির্মাণে ম্যারিয়ট ইন্টারন্যাশনাল-এর সাথে একটি চুক্তিও করেছে প্যাসিফিক জিনস। এ বছরের শেষে এটির কাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
'নাসির উদ্দিন এমন একটা সময়ে ডেনিম ওয়াশিং প্ল্যান্টে বিনিয়োগ করেছিলেন যখন বাংলাদেশে একটি ওয়াশিং প্ল্যান্ট স্থাপন করার ধারণাটি কেউ কল্পনাও করতে পারতো না,' দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-কে বলেন বিজিএমইএ-এর প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান। 'যখন কোনো কারখানার নিজস্ব রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগ থাকে, তখন ক্রেতারা পণ্যের আদেশ দিতে আত্মবিশ্বাস পান।'

হাসান আরও বলেন, 'শক্তিশালী মার্কেটিং নীতি ও উচ্চমানের ডেনিম উৎপাদনকারী হওয়ার কারণে প্যাসিফিক জিনস ভালো দাম পায়। এর ফলে দক্ষতার ওপর আরও বেশি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হয়। উদ্যোক্তাদের উচিত উৎকর্ষ লাভের জন্য প্যাসিফিক জিনস-এর মডেল অনুসরণ করা।'

কোন মন্তব্য নেই: