যমুনা গ্রুপ | যমুনা ডেনিমস | Hoorain HTF Ltd | যমুনা স্পিনিং
নুরুল ইসলামের মেধা ও সাহসিকতার সমন্বয়ে ২০হাজার কোটি টাকার যমুনা গ্রুপ প্রতিষ্ঠার গল্প!
নুরুল ইসলাম বাবুল- একজন সফল উদ্যোক্তা। বাংলাদেশের শিল্পোন্নয়নে এক অনবদ্য ‘আইকন’। দেশের শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান, দৈনিক যুগান্তর, যমুনা টিভি ও যমুনা ফিউচার পার্কের স্বপ্নদ্রষ্টা। ৪১টি বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার। দেশের আমদানি-রফতানি শিল্পের অগ্রদূত। একটি সুখী ও সমৃদ্ধিশালী নতুন স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনের ভিশন ও মিশন নিয়ে ১৯৭৪ সালে প্রাইভেট শিল্প খাতে যমুনার উপস্থিতি ঘোষণা করেন তিনি।
যমুনা ইলেকট্রনিক ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়ে শুরু হয় নুরুল ইসলামের প্রথম পথচলা। পরের বছর ১৯৭৫ সাল থেকেই এর আওতায় বাংলাদেশে বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ উৎপাদন শুরু হয়। পরবর্তীকালে যমুনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ একটি জায়ান্ট গোষ্ঠী হিসেবে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। একটি সমৃদ্ধ জাতি নির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু করেন নুরুল ইসলাম। তার নেতৃত্বে চার দশক ধরে জাতীয় অর্থনীতিতে একটা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে যমুনা গ্রুপ। এর মাধ্যমে অর্ধলক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
যমুনা গ্রুপ বহুমাত্রিক পণ্য পরিসীমার জন্য বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে উন্নীত হয়েছে। টেক্সটাইল থেকে আবাসন-যমুনা গ্রুপের রয়েছে বৈচিত্র্যিক ব্যবসায়িক চিন্তা। গত ৪৬ বছরে যমুনা গ্রুপ বৈদ্যুতিক, ইঞ্জিনিয়ারিং, রাসায়নিক, চামড়া, গার্মেন্টস ও টেক্সটাইলসহ স্পিনিং, উইভিং ও ডাইং, কসমেটিকস, বেভারিজ, আবাসন, হাউসিং, প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া খাতে অর্থ লগ্নি করেছে। স্থানীয় ও বৈশ্বিক- উভয় বাজারে যমুনা গ্রুপের পণ্যের সুনাম রয়েছে।
জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত, ইতালি থেকে প্রযুক্তি ও যন্ত্রাংশ আমদানির মাধ্যমে বৈশ্বিক বাজারে সেরা কোয়ালিটির পণ্য উৎপাদন করে ‘টেক্সটাইলের নতুন বিশ্ব’ গড়ে তুলেছে যমুনা গ্রুপ। উৎপাদন শিল্প থেকে শুরু করে মিডিয়া খাত- বৈচিত্র্যময় ব্যবসায়িক ক্ষেত্র যমুনা গ্রুপ। গ্রুপের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান দৈনিক যুগান্তর ও যমুনা টিভি। এ দুটি গণমাধ্যম জাতির মানবাধিকার সুরক্ষার অভিপ্রায় নিয়ে সত্য ও স্বাধীন খবর প্রকাশ করে যাচ্ছে।
মানবসম্পদ উন্নয়ন ও কর্পোরেট পরিচালনা:
যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবে নুরুল ইসলাম তার স্টাফ ও কর্মীদের প্রকৃত ও সত্যিকার হিউম্যান রিসোর্স তথা মানবসম্পদ হিসেবে বিবেচনা করতেন। তিনি মনে করতেন, এই মানবসম্পদই কোম্পানির অব্যাহত উন্নতি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করে। ব্যবসায় উদ্যোগের প্রতিটি স্তরের কর্মীদের প্রাধান্য দিয়ে একটি শক্তিশালী দল গড়ে তোলার ব্যাপারে দৃঢ়প্রত্যয়ী ছিলেন তিনি।
তার বিশ্বাস ছিল, একমাত্র দক্ষ শ্রমিকরাই কোম্পানি ও শিল্পের আসল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য উপলব্ধি করতে পারেন। শিল্প খাত নিয়ে তাদের যথেষ্ট অভিজ্ঞতা আছে। একমাত্র কর্মীরাই জানেন, বাজারের অসংখ্য প্রতিযোগীর মধ্যে কীভাবে টিকে থাকতে হয়। কোম্পানির কাস্টমার বা সেবাগ্রহীতাদের প্রতিও তারা যথেষ্ট অনুগত। প্রতিষ্ঠানের কর্মীরাই ব্যবসার ‘পরশপাথর’- এটাই ছিল তার মূল দর্শন।
পরিবেশের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: যমুনা গ্রুপে সমৃদ্ধি ও উন্নতি মানে পরিবেশ, সমাজ ও অর্থনীতির মধ্যে একটি ভারসাম্য গড়ে তোলা। এই মনোভাব নিয়েই কোম্পানি গড়ে তোলেন তিনি। পরিবেশ ও প্রকৃতির প্রতি দায়বদ্ধ থেকেই সব কার্যক্রম পরিচালনা করতেন নুরুল ইসলাম।
✅ যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের যেসব প্রতিষ্ঠান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে:
২০০০-২০০১ সালে শামীম কম্পোজিট মিলস লিমিটেড জাতীয় রফতানি স্বর্ণপদক, ১৯৯৮-১৯৯৯ সালে শামীম স্পিনিং মিলস লিমিটেড জাতীয় রফতানি রৌপ্যপদক, ১৯৯৮-১৯৯৯ সালে যমুনা নিটিং অ্যান্ড ডায়িং লিমিটেড জাতীয় রফতানি ব্রোঞ্জপদক লাভ করে। এছাড়া ১৯৯৮-১৯৯৯ স্ক্যান সিমেন্টের (হাইডেলবার্গ সিমেন্ট গ্রুপ) ‘বেটার বিল্ডিং বেটার উইনিং কম্পিটিশন ২০০২ জিতে নেয় যমুনা বিল্ডার্স লিডিটেড।
একই বছর জার্মানির মাইলস হ্যান্ডেল গিসেলশ্যাপ্ট ইন্টারন্যাশনাল এমবিএইচ অ্যান্ড কোম্পানি পুরস্কার লাভ করে যমুনা নিটিং অ্যান্ড ডায়িং লিমিটেড।
✅ যমুনা গ্রুপের যত প্রতিষ্ঠান:
১. যুগান্তর, একটি স্বনামধন্য জাতীয় দৈনিক।
২. যমুনা ফিউচার পার্ক, বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ শপিংমল।
৩. যমুনা টিভি।
৪. যমুনা হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেড।
৫. ক্রাউন বেভারেজ লিমিটেড।
৬. যমুনা নিটিং অ্যান্ড ডায়িং লিমিটেড।
৭. যমুনা ডেনিমস লিমিটেড।
৮. যমুনা স্পিনিং মিলস লিমিটেড।
৯. শামীম স্পিনিং মিলস লিমিটেড ।
১০. শামীম কম্পোজিট মিলস লিমিটেড।
১১. শামীম রোটোর স্পিনিং লিমিটেড।
১২. শামীম গার্মেন্টস।
১৩. যমুনা ডেনিমস গার্মেন্টস।
১৪. যমুনা ডেনিমস ওয়েভিং লিমিটেড।
১৫. প্যাগাসাস লেদারস লিমিটেড।
১৬. যমুনা ডিস্ট্রিলারি লিমিটেড।
১৭. যমুনা ওয়েল্ডিং ইলেক্ট্রোড লিমিটেড।
১৮. যমুনা ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড অটোমোবাইলস।
১৯. যমুনা টায়ার অ্যান্ড রাবারস ইন্ডাস্ট্রিজ।
২০. যমুনা পেপারস মিলস।
২১. যমুনা আয়রন অ্যান্ড স্টিল মিলস লিমিটেড।
২২. যমুনা গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ।
২৩. যমুনা পাওয়ার লিমিটেড।
২৪. যমুনা প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিশিং লিমিটেড।
২৫. যমুনা ফ্যান অ্যান্ড ক্যাবলস লিমিটেড।
২৫. যমুনা পলি সিল্ক লিমিটেড।
২৬. যমুনা লজিস্টিক অ্যান্ড শিপিং লিমিটেড।
২৭. যমুনা বিল্ডার্স লিমিটেড।
২৮. যমুনা গ্যাস লিমিটেড।
২৯. হোলসেল ক্লাব লিমিটেড।
৩০. যমুনা ওয়াশিং।
৩১. হুরিয়ান এইচটিএফ লিমিটেড।
৩২. যমুনা মিডিয়া লিমিটেড।
৩৩. লন প্রসেসিং লিমিটেড।
৩৪. যমুনা ইলেকট্রিক ম্যানুফ্যাচারিং।
৩৫. যমুনা ফুডস লিমিটেড।
৩৬. হোরক্যাচার লিমিটেড।
৩৭. যমুনা ব্রেয়ারি অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড।
৩৮. যমুনা ডেনিমস টেকনোলজি লিমিটেড।
তথ্যসূত্র: ডেইলি যুগান্তর।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন