অনলাইনে কাপড়ের বিজনেস করার ৫টি আইডিয়া | অনলাইন ক্লোদিং বিজনেস
অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা, বহুল প্রচারিত একটি শব্দ। ফেসবুক লাইভের যুগে কম বেশি সবাই এখন ব্যবসায়ী। বিশেষ করে কাপড়ের ব্যবসায়ী। এখন, এত ব্যবসায়ী দেখে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।
বাংলাদেশের জনসংখ্যা যদি ১৬ কোটি হয়, আর প্রত্যেকে যদি ১টি করে কাপড়ও কিনে তবুও ১৬ কোটি। যদিও, ১৬ কোটি কাস্টমার জীবনেও হবে না। কিন্তু, যদি মাসিক ১৬০০ কাস্টমারও হয় আপনার, তাহলে আপনাকে সফল অনলাইন উদ্যোক্তা বলা যাবে।
এখন কথা হলো সফল ব্যবসায়ী কিভাবে হবেন?
অনলাইনে ব্যবসা করার নিয়ম কি ?
এসব বিষয়তো জানা থাকা দরকার !
তো আপনি যদি অনলাইন ভিত্তিক একটি কাপড়ের ব্যবসা শুরু করতে চান? তাহলে আপনি ভাগ্যবান! কারণ, এখনই শুরু করার সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। সফলতার জন্য আপনার নিজেকে কাজ করে যেতে হবে। যদি আপনার সত্যিকারের আগ্রহ এবং প্রেরণা থাকে তবে, আমরা বলব আপনি অবশ্যই আপনার কাপড়ের ব্যবসা শুরু করুন।
অনলাইন কাপড় ব্যবসার ৫টি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ: পণ্যের উপযুক্ত ধরন নির্বাচন, ব্যবসার জন্য সবকিছু করার অঙ্গিকার, অনলাইন স্টোর সেটআপ, পণ্য ডিজাইন, পণ্যের প্রচার।
১. কাপড়ের টাইপ নির্ধারণ করাঃ
প্রত্যেকটি পণ্যেরই কিছু টার্গেট-কৃত ক্রেতা থাকে। সেটাকে মাথায় রেখে উপযুক্ত কাপড় নির্বাচন করুন। আপনি যতটা আপনার কাস্টমার এবং কাস্টমারের পছন্দকে জানবেন, আপনি তত তাদের পছন্দের পণ্যগুলো তৈরি করতে পারবেন। আপনি যেহেতু এটাতে অনেক সময় দিবেন ,সেহেতু আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে আপনার কাস্টমারের পছন্দের পণ্য দিতে পারছেন কিনা।
আপনি যাই করেন না কেন, পণ্য থেকে প্রেরণা সবকিছুই হতে হবে খাঁটি এবং সুসংগঠিত। আপনি যদি উপযুক্ত ধরণ নির্ণয় এর ব্যাপারে নিশ্চিত হতে না পারেন তবে সফলতার ব্যাপারে নিশ্চিত হবেন কিভাবে! তাই আপনাকে প্রথমেই পণ্যের উপযুক্ত ধরন নির্ণয় করতে হবে। যেমন:
মেয়েদের কাপড় নিয়ে ব্যবসা করতে চাইলে মেয়েরা কিধরণের কাপড় বেশি কিনে সে বিষয় যাচাই-বাছাই করতে হবে। আবার, ঋতু, স্থান ভেদে কাপড়ের পছন্দের ভিন্নতা থাকে সেটাও খেয়াল করতে হবে।
ছেলেদের ক্ষেত্রেও একই বিষয়। ট্রেন্ড এবং বর্তমানের চাহিদা মোতাবেক কাপড় নির্বাচন করতে হবে। আর যদি শিশু, বাচ্চা কিংবা বয়স্কদের জন্য হয়, সেক্ষেত্রে মার্কেট যাচাই বাছাই করতে হবে।
পণ্য নির্বাচন করার পর অবশ্যই পণ্যের মানের ব্যাপারে, কোন ধরণের গড়িমসি করা যাবে না। কেননা, আপনি যদি ভাল মানের কাপড় দিতে পারেন তাহলে, কাস্টমার রি-টেনশন থাকবে। অর্থাৎ, পুরাতন কাস্টমার বারবার ফিরে আসবে, যা কিনা আপনার ব্যান্ড ভ্যালু এবং ব্যবসায়ের সফলতার প্রতীক।
২. ব্যবসার কমিটমেন্টঃ
আপনার ব্যবসায় সফল হতে হলে কিছু বিষয়ে ইম্প্রুভ করা প্রয়োজন, আপনাকে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। আপনি যদি ব্যবসার ব্যাপারে নিজের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ থাকেন, সফলতার রস আপনি আস্বাদন করবেনই।
আপনাকে মনে রাখতে হবে, কাপড়ের ব্যবসা করতে গিয়ে আপনি শুধুমাত্র কাপড়ের সুতা কিংবা কাপড়ের আউট-লেট নিয়ে নাড়াচাড়া করছেন না, সেই সাথে আপনি ঝুঁকি এবং পুরষ্কারের মুখোমুখি হচ্ছেন।
সফল কাপড়ের ব্যবসায়ী হতে যেসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে: আপনাকে রুটিন মাফিক কিছু কাজ করে যেতে হবে, সময় এবং ট্রেন্ড অনুযায়ী নতুন কাপড় বেছে নেয়া, নতুন ডিজাইন তৈরি, সোশাল মিডিয়ায় পণ্যের নিয়মিত আপডেট, ক্রেতাদের মেসেজের দ্রুত রেসপন্স এর মাধ্যমে বিশ্বাস অর্জন প্ল্যান বি রেডি রাখা, ব্যবসার প্রচার ও প্রসার বাড়ানো। এই বিষয় গুলো মাথায় থাকলে ব্যবসা করতে গিয়ে কখনোই ঘাবড়াবেন না। ব্যবসা সম্পর্কে সব সময় আপনার নিজের চিন্তাকে ইতিবাচক রাখুন। কারণ, সঠিক দৃষ্টি ভঙ্গি সফলতার সুযোগকে বাড়িয়ে দেয়।
৩. অনলাইন ক্লোথ স্টোর সেট-আপ
যদিও অনলাইন এবং অফলাইন ব্যবসার মধ্যে একটি যুদ্ধ চলছে। তবে, অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা আগামীতে আরও বৃদ্ধি পাবে। অনলাইন মার্কেট হয়ে পড়েছে প্রতিযোগিতা-পূর্ণ সেজন্য স্টোর সেট-আপ গুরুত্বপূর্ণ।
আগে অনলাইনে যে কোন ব্যবসার জন্য কম্পিউটার থাকাটা অপরিহার্য ছিল কিন্তু এখন আপনি মোবাইলেই আপনার ব্যবসার সকল কিছু কন্ট্রোল করতে পারছেন। বর্তমানে ফেসবুকের মাধ্যমে অনলাইন ব্যবসা করা সহজ এবং কার্যকরী। আর এটাকে বলা হয় F-Commerce।
কিন্তু, অনলাইনে আপনার কাপড় ব্যবসাকে প্রসারিত করতে, কাস্টমারদের নিকট আস্থা ও ব্রান্ড ভ্যালু তৈরি করতে আপনার কিছু প্রয়োজনীয় খরচ করতে হবে।
প্রথম বিষয়টি হবে আপনার কাপড়ের ব্যবসাটি যে নামে থাকবে সে নামের ডোমেইন কেনা, হোস্টিং এর জন্য প্রয়োজনীয় খরচ করা, আপনার ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট করা, পণ্যের প্রচারে বুস্টিং কষ্ট (অপশনাল), আপনার সোশাল মিডিয়ার স্টোর সাইটটিতে পণ্য মূল্য সহ উপস্থাপন।
৪. ফেব্রিক ডিজাইন ডেভেলপমেন্ট
একটি কথা প্রচলিত আছে, “প্রথমে দর্শনধারি পরে গুণ বিচারি”। মানুষ প্রথমে যেটা দেখে পছন্দ করবে সেটার প্রতিই তার সর্বোচ্চ আকর্ষণ থাকবে, তারপর মনোযোগী হবে গুণাগুণে।
তাই প্রথম ইম্প্রেশনটা গুরুত্বপূর্ণ। একজন অনলাইন ক্রেতা মাত্রই জানে উপযুক্ত ডিজাইন এবং মানানসই রঙ্গের পণ্য পছন্দ করাটা কতটা ঝামেলার। তাই নিজেকে ক্রেতার আসনে বসিয়ে পণ্যের ডিজাইন করতে হবে।
ক্রেতা হিসেবে যদি আপনি আপনার ডিজানইকৃত পণ্য পছন্দ করেন তবে, আসল ক্রেতাও পণ্য পছন্দ করবে সেটা ধরে নেয়া যায়।
আপনি যদি বুঝতে না পারেন কোন ডিজাইনটি উপযুক্ত হবে তবে আপনার বন্ধুকে কিংবা এই ব্যাপারে জ্ঞান রাখে এমন কাউকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে যদি আপনি একজন ডিজাইনারকে আপনার ব্যবসা সহযোগী হিসেবে হায়ার করতে পারেন আপনার কাপড়ের ব্যবসা দ্রুত প্রসার হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।
আপনি আপনার কাপড়ের ডিজাইন পছন্দের জন্য বিভিন্ন সাইটের সাহায্য নিতে পারেন। ডিজাইনের ব্যাপারে আপনি নিজেকে ক্রেতার আসনে বসাবেন ভাল কিন্তু আপনার টার্গেটেড ক্রেতাদের ব্যাপারটি মাথায় রাখতে হবে। তাদের পছন্দের ব্যাপারগুলোকে প্রাধান্য দিন। আপনার কাপড়ের বৈশিষ্ট্য, কাপড়ের ডিজাইনে ফুটিয়ে তুলতে পারেন। কাপড়ে রঙ্গের ব্যাবহার, কাপড়ের বৈশিষ্ট্য ফুটে ওঠা, কাপড়ের আউটলুক সর্বোপরি আপনার পণ্যের আদর্শ ডিজাইন পণ্য কাটতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
৫.ক্লোথ প্রোডাক্ট এর প্রচার
অনলাইনে একটি কাপড়ের ব্যবসা শুরু করলেই আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন না যে, আপনার পণ্য বিক্রি হবে। মানুষ ততক্ষণ আপনার কাপড়ের ব্যবসার কথা জানবে না যতক্ষণ না আপনি তাদের জানাচ্ছেন। আপনার পণ্যের প্রতি কাস্টমারদের আকর্ষণ করতে আপনাকে অবশ্যই আপনার পণ্যের প্রচার করতে হবে।
সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানান দিতে হবে আপনার পণ্যের ব্যাপারে। এই ক্ষেত্রে আপনার পণ্যের গুণাগুণ ও বৈশিষ্ট্যের ব্যাপারে ডিটেইলস লিখা আপনাকে আপনার পণ্যের সাথে যুক্ত করতে হবে। পণ্যের সুন্দর ছবি উপস্থাপন করতে হবে। এই ক্ষেত্রে প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার এরও সাহায্য নিতে পারেন। কিংবা নিজেই মোবাইলে তোলা ছবি ব্যাবহার করতে পারেন।
আপনার পণ্যের প্রচারে পরিচিত অভিনয় শিল্পীদের হায়ার করতে পারেন। কিংবা নিজেই পণ্যের মডেল হয়ে পণ্য প্রচার করতে পারেন।
আপনার কাপড়ের ব্যবসার কাটতি নির্ভর করে আপনার প্রচারের উপর তাই এই ক্ষেত্রে মনোযোগী হতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন