১০০% রপ্তানিমূখী শিল্প প্রতিষ্ঠান (গার্মেন্টস) তার আমদানি রপ্তানি কিভাবে করে?
(১) মাস্টার এলসি / এক্সপোর্ট এলসি কী?
উত্তরঃ
একজন বিদেশি বায়ার/ক্রেতা এদেশ থেকে রেডিমেড গার্মেন্টস পণ্য ক্রয়ে প্রফর্মা ইনভয়েস-এর বিপরীতে যে মুল এলসি, এ দেশের পণ্য সরবরাহকারীকে, সরবরাহকারীর লিয়েন ব্যাংকে যে এলসি প্রেরণ করেন সেটি হলো মাস্টার এলসি।
(২) মাস্টার এলসি/এক্সপোর্ট এলসি কে প্রদান করে?
উত্তরঃ
বিদেশি বায়ার/ক্রেতা প্রদান করে থাকেন।
(৩) বিদেশি বায়ার/ক্রেতা মাস্টার এলসি কয় ভাবে দিতে পারে?
উত্তরঃ দুই ভাবে দিতে পারে;
(ক) এদেশে অবস্থিত বায়িং হাউজের মাধ্যমে;
(খ) পণ্য উৎপাদনকারী গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানকে সরাসরিও দিতে পারে।
এতদ্ব্যতিত সেলস কন্ট্রাক্ট/নিশ্চিত ক্রয় আদেশের মাধ্যমে ও বায়ার এদেশে থেকে পণ্য সরবরাহ নিয়ে থাকেন।
(৪) মাস্টার এলসি পাওয়ার পর বায়িং হাউজ/গার্মেন্টস কীভাবে পন্য উৎপাদন করে?
উত্তরঃ
মাস্টার্স/এক্সপোর্ট এলসি পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, মাস্টার্স এলসি এর বিপরীতে পণ্য উৎপাদনে প্রয়োজন এমন সকল উপকরণ ও এক্সোসরিজ ব্যাক টু ব্যাক এলসি এর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়ে দেশি অথবা বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে সংগ্রহ করে।
এই উপকরণ ও এক্সোসরিজ সর্বমোট মুল মাস্টার /এক্সপোর্ট এলসি এর ৮০% পর্যন্ত সংগ্রহ করতে পারবেন। কোন ভাবেই তার অধিক নয়, কারণ তার অধিক হলে তা আমদানি নীতি আদেশ অনুঃ ২৪ (৯) (রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পণ্যাদি আমদানি) অনুযায়ী তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে নুন্যতম মূল্য সংযোজন হার হওয়ার যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে তা কাভার করবে না। আমদানি নীতি আদেশ অনুযায়ী পোশাক শিল্পের ক্ষেত্রে নুন্যতম ভ্যালু এডিশন হবে নিম্নরুপঃ
(ক) নীট পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে ২০%;
(খ) ওভেন পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে ২০%;
(গ) সকল স্যুয়েটার রপ্তানির ক্ষেত্রে ২০%;
(ঘ) সকল প্রকার শিশুর পোশাক রপ্তানিতে ১৫%;
(ঙ) মূল্য ৫ মাঃডঃ/পিস এর ক্ষেত্রে ১৫% ;
উদাহরণস্বরুপঃ
মেসার্স রহমান গার্মন্টস ১,০০,০০০ মাঃডঃ এর একটি মাস্টার এলসি বা এক্সপোর্ট এলসি বা মাস্টার এলসি/এক্সপোর্ট এলসি ছাড়া ক্রেতা কর্তৃক নিশ্চিত চুক্তির বিপরীতে সর্বমোট ৮০% মানে ৮০,০০০ মাঃডঃ উপকরণ ও এক্সোসরিজ + উৎপাদন খরচ (CM cost and manufacturing) করতে পারবেন কোন অবস্থায় এর বেশি নয়, কারণ এর বেশি হয়ে গেলে তখন আর আমদানি নীতি আদেশ অনুযায়ী ন্যুনতম ভ্যালু এডিশন হারের মধ্যে তা থাকে না।
উদাহরণ অনুযায়ী রহমান গার্মেন্টস মাস্টার এলসি পাওয়ার পর এবার উপকরণ সংগ্রহ করবেন অতপর এস,আর,নং ১৫৩-আইন/৯৩/১৫২০/শুল্ক, তাং- ৩রা আগষ্ট ১৯৯৩ খ্রিঃ "সম্পূর্ন রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান (সাময়িক আমদানি) বিধিমালা ১৯৯৩ এর " তফসিল -১" অনুযায়ী ইউডি (বিজিএমইএ/বিকেএমইএ) অনুমোদন করিয়ে নেবেন। উক্ত ইউ,ডি- এর কপি বিভিন্ন দপ্তরে অনুলিপি দিবেন, অতপর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য উৎপাদন করবেন, রপ্তানি করবেন। ১০০% রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান ব্যাক টু ব্যাক, অথবা মাস্টার এলসি বা ব্যাক টু ব্যাক, মাস্টার এলসি ছাড়া ক্রেতা কর্তৃক নিশ্চিত চুক্তির বিপরীতে ৪ মাসের কাচামাল ও মোড়ক সামগ্রী রিভলভিং পদ্ধতিতে আমদানি করতে পারবেন।
এখানে উল্লেখ্য কোন কোন ক্ষেত্রে রপ্তানিকারক কর্তৃক নিশ্চিত চুক্তির বিপরীতে রপ্তানি আদেশ সম্পাদনের লক্ষ্যে বিনামূল্যে বা FOC Free of Cost বা (অন নো কস্ট বেসিস) শর্তে পণ্য (উপকরণ ও এক্সোসরিজ) আমদানি করতে পারবেন সেক্ষেত্রে শর্ত গুলো নিম্নরুপঃ
(ক) প্রথমে বিদেশী ক্রেতা ও এদেশে আমদানীকারক তথা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান উভয়ে পণ্য উঠপাদনে নিশ্চিত চুক্তিনামা করবেন;
(খ) বায়ার বা ক্রেতা কাচামাল প্রেরণ করবেন, এ কাচামালের জন্য বাংলাদেশ হতে কোন বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণ করা যাইবে না;
(গ) আমদানীকারক চুক্তিনামা অনুযায়ী আমদানী পণ্য খালাসের জন্য ব্যাংক থেকে আমদানী ডকুমেন্ট তিনি সংগ্রহ করবেন;
(ঘ) ব্যাংক থেকে অনাপত্তি পত্র সংগ্রহ করবেন। অতঃপর;
(ঙ) প্রতি কনসাইনমেন্ট ভিত্তিতে বিজিএমইএ/বিকেএমইএ হতে এস,আর,ও নং-১৫৩/আইন/৯৩/১৫২০/শুল্ক, তাং-৩/৮/৯৩ ইং অনুযায়ী ইউ,ডি (ইউটিলাইজেশন ডিক্লারেশন) সংগ্রহ করবেন;
(চ) বিজিএমইএ/বিকেএমইএ হতে এ প্রত্যায়ন পত্র সংগ্রহ করবেন;
(ছ) তবে এমন আমদানির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান তার সংশ্লিষ্ট বছরের অব্যবহিত পূর্ববতী বছরের রপ্তানিকৃত পণ্যের এক-তৃতীয়াংশ পণ্য উৎপাদনে যে পরিমাণ কাচামাল প্রয়োজন হয়েছিল সে পরিমাণ কাচামাল আমদানি করিতে পারবেন।
অতপর পণ্য উৎপাদন হলো, ব্যাংক থেকে EXP Export Permit সংগ্রহ করা হলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য রপ্তানি হয়ে গেল, রপ্তানির স্বপক্ষে PRC এসে গেছে উক্ত রহমান গার্মেন্টস সকল দায়-দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেয়ে যাবে।
সৌজন্যে: ইব্রাহীম হোসেন
রাজস্ব কর্মকর্তা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন