গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ | Badsha Textile | Pioneer Knitwear | Pioneer Denim - Textile Lab | Textile Learning Blog
শূন্য থেকে টেক্সটাইলের বাদশাহ


নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিককার কথা। নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে সুতা বাণিজ্যের গদি সামলাতেন বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এম সোলায়মান। একদিন খুব ভোরে টানবাজারে গিয়ে দেখেন গদিতে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছেন একজন সুতার এজেন্ট। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সুতা সরবরাহের কাজ করতে করতে অনেক রাত হয়ে গেলে প্রায়ই এভাবে ঘুমাতেন তিনি। সেই ব্যক্তি এখন দেশের সর্ববৃহৎ সুতা উৎপাদনকারী কারখানার প্রধান কর্ণধার।

শূন্য থেকে বড় উত্থানের এ গল্প বাদশা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. বাদশা মিয়ার।  টানবাজারে সুতার গদি থেকেই ব্যবসার শুরু তার। ছিলেন স্পিনিং মিলের এজেন্ট। সাধারণত স্পিনিং মিলের সঙ্গে বার্ষিক, দ্বিবার্ষিক বা ত্রিবার্ষিক চুক্তি করতেন। চুক্তি মোতাবেক স্পিনিং মিলের উৎপাদিত সুতা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সুতার ব্যবসায়ীদের সরবরাহ করতেন। সেই সুতার গদি থেকেই এখন তিনি টেক্সটাইল খাতের ‘বাদশাহ’। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) হিসাব মতে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি সুতা রফতানি করেছে এমন শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রথম অবস্থানে আছে বাদশা টেক্সটাইলস লিমিটেড। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে স্কয়ার টেক্সটাইলস লিমিটেড। তৃতীয় অবস্থানে থাকা প্রতিষ্ঠানটি হলো কামাল ইয়ার্ন লিমিটেড। এ প্রতিষ্ঠানও বাদশা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের। ২০২০ সালেও শীর্ষত্ব ধরে রেখেছে বাদশা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ। ওই বছর সুতার রফতানিতে এক নম্বর অবস্থানে ছিল বাদশা টেক্সটাইল। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল কামাল ইয়ার্ন আর তৃতীয় অবস্থানে ছিল স্কয়ার টেক্সটাইল।

মাদারীপুর জেলার শিবচরের পাঁচচর ইউনিয়নে জন্ম মো. বাদশা মিয়ার। শিবচরে বসবাস করা জনগোষ্ঠীর মধ্যে অনেকেই তাঁত ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। সেই সূত্রে ১৯৭৬ সালের দিকে জীবিকার তাগিদে নারায়ণগঞ্জে আসেন বাদশা মিয়া। ১৯৭৭ সালে সুতার পাইকারি বাণিজ্য শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে ঐতিহ্যগত সুতার গদির মালিক হন। সুতার বাণিজ্য দিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও শিল্প গড়ে তুলতে গিয়ে প্রথমে স্থাপন করেন রফতানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানা। ২০০০ সালে গড়ে তোলেন পাইওনিয়ার সোয়েটার লিমিটেড। এরপর ২০০৪ সালে ময়মনসিংহের ভালুকায় একে একে স্থাপন করেন বাদশা টেক্সটাইলস লিমিটেড এবং কামাল ইয়ার্ন লিমিটেড। দেশে সুতা উৎপাদনে সবচেয়ে বড় সামর্থ্য রয়েছে এ দুই কারখানারই। এ কারখানাগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা দৈনিক প্রায় ২৬৫ টন। বর্তমানে বাদশা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের বার্ষিক টার্নওভার ৩০ থেকে ৪০ কোটি ডলার।  

নব্বইয়ের দশকের শেষভাগে পোশাক শিল্পের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পে বিনিয়োগ করে দেশের অন্যতম বড় একটি শিল্প গ্রুপ। তাদের টেক্সটাইল কারখানায় উৎপাদন থেকে শুরু করে প্রতিটি ধাপে উপদেষ্টার ভূমিকায় ছিলেন বাদশা মিয়া। একাডেমিক শিক্ষা-দীক্ষায় অতটা এগোতে না পারলেও দেশের বস্ত্র খাত থেকে শুরু করে ব্যবসার হিসাবনিকাশে তার প্রজ্ঞা ও জ্ঞান অনেক পেশাদারের চেয়েও বেশি।

এত বড় প্রতিষ্ঠানের মালিক হওয়ার পরও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রতি নিষ্ঠা ও একাগ্রতা এখনো ধরে রেখেছেন বাদশা মিয়া। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সাধারণ ছুটির সময় প্রায় এক মাস বন্ধ ছিল শিল্প গ্রুপ বাদশা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ। পরে উৎপাদন চালু হলে মো. বাদশা মিয়া ওই সময় টানা ২০-২২ দিন কারখানাতেই পড়ে ছিলেন। লক্ষ্য ছিল বৈশ্বিক মহামারীতে সংকটে পড়া শিল্পোৎপাদনের গতি পুনরুদ্ধার।

কর্মী ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন মসৃণ রাখার স্বার্থে বাদশা মিয়ার কারখানায় পড়ে থাকার এ ঘটনা শুধু কভিডকালে নয়। এর আগেও আরো অনেকবার এমনটি ঘটিয়েছেন তিনি। বাদশা গ্রুপসংশ্লিষ্টরা বলছেন, কাজের প্রতি একাগ্রতা থেকেই নানা সময়ে প্রয়োজন অনুযায়ী কারখানায় অবস্থান করেন বাদশা মিয়া। আর ব্যবসা-বাণিজ্যের শুরু থেকেই এ চর্চা অব্যাহত রেখে চলেছেন তিনি। আর সে কারণেই টানবাজারের সুতার গদির ব্যবসায়ী থেকে এখন দেশের শীর্ষ সুতা উৎপাদনকারী কারখানার মালিক তিনি।

দেশের অন্যতম বৃহৎ কারখানার কর্ণধার হিসেবে কভিড সংকট কীভাবে মোকাবেলা করছেন জানতে চাইলে মো. বাদশা মিয়া বণিক বার্তাকে বলেন, কভিডকালীন সাত-আট মাসে অনেক লোকসান হয়েছে। তুলার দাম পড়ে যায় মার্চ-এপ্রিলে। তখন আমরা হতাশ হয়ে গিয়েছিলাম। এরপর পোশাকের ক্রয়াদেশ ফিরতে শুরু করলে পরিস্থিতি ঘুরে দাঁড়াতে থাকে। অবশ্য দাম পাওয়া যাচ্ছিল না তখনো। পর্যায়ক্রমে কারখানার সব মজুদ পণ্য শেষ হয়ে যায়। এ কারণে পূর্ণ সক্ষমতায় কারখানা সচল রাখা গেছে। আমাদের স্পিনিংয়ে স্পিন্ডল তিন লাখের ওপরে।

পাইওনিয়ার ডেনিম বাংলাদেশে বৃহত্তম ডেনিম উৎপাদনকারী কারখানা এমন তথ্য জানিয়ে বাদশা মিয়া বলেন, আমি কামলা মানুষ, এখনো ক্ষেতে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের স্পিন্ডলপ্রতি উৎপাদন শুধু বাংলাদেশ না সমগ্র ভারতের চেয়েও বেশি। স্কয়ার টেক্সটাইল গড়ে উঠেছে আমার হাতে। ধারাবাহিকভাবে গত পাঁচ বছর প্রথম ও দ্বিতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানটিও আমাদের। বাদশা টেক্সটাইলের উৎপাদন সক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করা হচ্ছে। আমাদের কর্মী সংখ্যা বর্তমানে ২৮ হাজার।

দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ হিসেবে পরিচিত প্রাইমারি টেক্সটাইল খাতে সুতা ও কাপড়ের উৎপাদক প্রতিষ্ঠান আছে ১ হাজার ২৩২টি। এছাড়া কাপড় প্রক্রিয়াজাত করার ডায়িং-প্রিন্টিং-ফিনিশিং মিল আছে আরো ২৪৪টি। এ মিলগুলো দেশের রফতানিমুখী নিট পোশাক কারখানাগুলোর প্রয়োজনীয় সুতার ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ সরবরাহ করে। আর রফতানিমুখী ওভেন পোশাক পণ্যের চাহিদার প্রায় ৪০ শতাংশ সরবরাহ করার সক্ষমতা রাখে। এ শিল্পে মোট বিনিয়োগ ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি। এই বিনিয়োগের বড় অংশে অবদান রেখেছে বাদশা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ।



বাদশা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের কারখানা গড়ে তুলতে ব্যাংকের অর্থায়ন নেয়া হয়েছে। আর তা নেয়া হয়েছে শুধু কারখানার মূলধনি যন্ত্র স্থাপনে। এছাড়া ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের জোগানও নিশ্চিত করা হয় ব্যাংকের সহায়তায়। প্রতিষ্ঠানটিতে বড় বিনিয়োগ করেছে এমন ব্যাংকগুলোর মধ্যে আছে বহুজাতিক হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন (এইচএসবিসি) বাংলাদেশ, ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক এবং আল-আরাফাহ্ ব্যাংক। শুরুর সময়টা বাণিজ্যের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যবসা করা হলেও শিল্প গড়ে তুলতে মূলত সহযোগিতা নেয়া হয়েছে ব্যক্তি খাতের ব্যাংক থেকে।

বাদশা টেক্সটাইলের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেন, আমার জানা মতে সুতা উৎপাদনে দেশে আমাদের চেয়ে বড় উৎপাদন সক্ষমতার কোনো প্রতিষ্ঠান আর নেই। বাদশা মিয়ার অন্যতম গুণ হলো সততা। আর ব্যক্তি হিসেবে এই বৈশিষ্ট্য বজায় রাখতে গিয়েই ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনায় তিনি একজন অকপট মানুষ। চারিত্রিক এ দৃঢ়তার কারণেই তিনি টানবাজারে সুতার বাণিজ্যের গদি থেকে এখন দেশের শীর্ষ সুতা উৎপাদনকারী শিল্পের কর্ণধার। গত তিন দশকে গড়ে ওঠা দেশের বড় স্পিনিং মিলগুলো স্থাপনেও ভূমিকা রেখেছেন তিনি।

বাদশা মিয়া বর্তমানে তার চার সন্তানের মধ্যে দুই সন্তানকে সক্রিয়ভাবে ব্যবসায় পাশে পেয়েছেন। এর একজন বড় ছেলে কামাল উদ্দিন আহমেদ ও আরেকজন ছোট ছেলে মহিউদ্দিন আহমেদ।  

বাদশা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, বাবার আদর্শে আমরা প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় সহযোগিতা করছি। বাবার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখছি। এর মধ্যে অন্যতম হলো কোনো কাজে লেগে থাকা আর পরিশ্রম। আশা করছি, সামনের দিনগুলোতেও আমাদের অবস্থান ধরে রাখতে পারব।


প্রতিবেদনঃ বনিকবার্তা 


BADSHA GROUP:

A world class Yarn manufacturer of grey fabrics which has state-of-the-art production facilities to meet the modern and most challenging demands of today's discerning customers.

Mission
Badsha Textiles Ltd. is a leading textile conglomerate in Bangladesh having a turnover of $258 million. Committed to philanthropy and socio-economic development, we are providing an array of products and services for textile and apparel industries. In more than a decade of its establishment, the Group has created several benchmarks and established milestones for the forthcoming generations.

Mr. Md. Badsha Mia, Managing Director of Badsha Textiles Ltd., is a well-reputed industrialist who was elected as President of Yarn Merchants Association for two consecutive terms. He started with whole selling of yarn back in year 1977. Within a short span of time he emerged as one of the largest yarn trader in Narayanganj. His venture commenced with a 100% export-oriented sweater factory under the name and style Pioneer Sweaters Limited in 2000. By virtue of his relentless efforts and dynamic leadership, subsequently he established two Spinning Mills in the name of Badsha Textiles Ltd. and Kamal Yarn Limited. The latest addition of BGI is the largest and most modern sweater factory in Bangladesh named Pioneer Knitwears (BD) Limited.
To cope with the pace in harmony of modern textile world, our industries are outfitted with 'state of the art' machinery and technology. Our machines have been imported from Switzerland, Germany, Italy and Japan under the brand names of Seema-saki, Rieter, Savio Polar, Texparts, Uster and so on, which allow us to produce high quality cotton yarns with a capacity of 160 tons per day.

1) Main Product
-Karded Yarn (Knitted)
-Combed Yarn
-Slub/Fancy Yarn
-Combed Compact Yarn
-Core Yarn/Lycra Yarn
-Super Combed Yarn
- Ring Denim Yarn and Open End Yarn,

2) Installed Capacity:
Badsha Textiles Ltd- Spindles-162000, Rotor-6400, Autoconer-55
Kamal Yarn Limited- Spindles-108864, Autoconer-38

3) Actual Yarn Production:
Badsha Textiles Ltd- 66000 M.TON Per Year
Kamal Yarn Limited- 29000 M.TON Per Year

4) Raw Material Requirement:
Badsha Textiles Ltd- 76000 M.TON Per Year
Kamal Yarn Limited-35000M.TON Per Year

5) Manpower:
Badsha Textiles Ltd- All Together: 4000
Kamal Yarn Limited- All Together: 2600


গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ | Badsha Textile | Pioneer Knitwear | Pioneer Denim

শূন্য থেকে টেক্সটাইলের বাদশাহ


নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিককার কথা। নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে সুতা বাণিজ্যের গদি সামলাতেন বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এম সোলায়মান। একদিন খুব ভোরে টানবাজারে গিয়ে দেখেন গদিতে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছেন একজন সুতার এজেন্ট। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সুতা সরবরাহের কাজ করতে করতে অনেক রাত হয়ে গেলে প্রায়ই এভাবে ঘুমাতেন তিনি। সেই ব্যক্তি এখন দেশের সর্ববৃহৎ সুতা উৎপাদনকারী কারখানার প্রধান কর্ণধার।

শূন্য থেকে বড় উত্থানের এ গল্প বাদশা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. বাদশা মিয়ার।  টানবাজারে সুতার গদি থেকেই ব্যবসার শুরু তার। ছিলেন স্পিনিং মিলের এজেন্ট। সাধারণত স্পিনিং মিলের সঙ্গে বার্ষিক, দ্বিবার্ষিক বা ত্রিবার্ষিক চুক্তি করতেন। চুক্তি মোতাবেক স্পিনিং মিলের উৎপাদিত সুতা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সুতার ব্যবসায়ীদের সরবরাহ করতেন। সেই সুতার গদি থেকেই এখন তিনি টেক্সটাইল খাতের ‘বাদশাহ’। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) হিসাব মতে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি সুতা রফতানি করেছে এমন শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রথম অবস্থানে আছে বাদশা টেক্সটাইলস লিমিটেড। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে স্কয়ার টেক্সটাইলস লিমিটেড। তৃতীয় অবস্থানে থাকা প্রতিষ্ঠানটি হলো কামাল ইয়ার্ন লিমিটেড। এ প্রতিষ্ঠানও বাদশা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের। ২০২০ সালেও শীর্ষত্ব ধরে রেখেছে বাদশা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ। ওই বছর সুতার রফতানিতে এক নম্বর অবস্থানে ছিল বাদশা টেক্সটাইল। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল কামাল ইয়ার্ন আর তৃতীয় অবস্থানে ছিল স্কয়ার টেক্সটাইল।

মাদারীপুর জেলার শিবচরের পাঁচচর ইউনিয়নে জন্ম মো. বাদশা মিয়ার। শিবচরে বসবাস করা জনগোষ্ঠীর মধ্যে অনেকেই তাঁত ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। সেই সূত্রে ১৯৭৬ সালের দিকে জীবিকার তাগিদে নারায়ণগঞ্জে আসেন বাদশা মিয়া। ১৯৭৭ সালে সুতার পাইকারি বাণিজ্য শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে ঐতিহ্যগত সুতার গদির মালিক হন। সুতার বাণিজ্য দিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও শিল্প গড়ে তুলতে গিয়ে প্রথমে স্থাপন করেন রফতানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানা। ২০০০ সালে গড়ে তোলেন পাইওনিয়ার সোয়েটার লিমিটেড। এরপর ২০০৪ সালে ময়মনসিংহের ভালুকায় একে একে স্থাপন করেন বাদশা টেক্সটাইলস লিমিটেড এবং কামাল ইয়ার্ন লিমিটেড। দেশে সুতা উৎপাদনে সবচেয়ে বড় সামর্থ্য রয়েছে এ দুই কারখানারই। এ কারখানাগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা দৈনিক প্রায় ২৬৫ টন। বর্তমানে বাদশা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের বার্ষিক টার্নওভার ৩০ থেকে ৪০ কোটি ডলার।  

নব্বইয়ের দশকের শেষভাগে পোশাক শিল্পের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পে বিনিয়োগ করে দেশের অন্যতম বড় একটি শিল্প গ্রুপ। তাদের টেক্সটাইল কারখানায় উৎপাদন থেকে শুরু করে প্রতিটি ধাপে উপদেষ্টার ভূমিকায় ছিলেন বাদশা মিয়া। একাডেমিক শিক্ষা-দীক্ষায় অতটা এগোতে না পারলেও দেশের বস্ত্র খাত থেকে শুরু করে ব্যবসার হিসাবনিকাশে তার প্রজ্ঞা ও জ্ঞান অনেক পেশাদারের চেয়েও বেশি।

এত বড় প্রতিষ্ঠানের মালিক হওয়ার পরও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রতি নিষ্ঠা ও একাগ্রতা এখনো ধরে রেখেছেন বাদশা মিয়া। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সাধারণ ছুটির সময় প্রায় এক মাস বন্ধ ছিল শিল্প গ্রুপ বাদশা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ। পরে উৎপাদন চালু হলে মো. বাদশা মিয়া ওই সময় টানা ২০-২২ দিন কারখানাতেই পড়ে ছিলেন। লক্ষ্য ছিল বৈশ্বিক মহামারীতে সংকটে পড়া শিল্পোৎপাদনের গতি পুনরুদ্ধার।

কর্মী ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন মসৃণ রাখার স্বার্থে বাদশা মিয়ার কারখানায় পড়ে থাকার এ ঘটনা শুধু কভিডকালে নয়। এর আগেও আরো অনেকবার এমনটি ঘটিয়েছেন তিনি। বাদশা গ্রুপসংশ্লিষ্টরা বলছেন, কাজের প্রতি একাগ্রতা থেকেই নানা সময়ে প্রয়োজন অনুযায়ী কারখানায় অবস্থান করেন বাদশা মিয়া। আর ব্যবসা-বাণিজ্যের শুরু থেকেই এ চর্চা অব্যাহত রেখে চলেছেন তিনি। আর সে কারণেই টানবাজারের সুতার গদির ব্যবসায়ী থেকে এখন দেশের শীর্ষ সুতা উৎপাদনকারী কারখানার মালিক তিনি।

দেশের অন্যতম বৃহৎ কারখানার কর্ণধার হিসেবে কভিড সংকট কীভাবে মোকাবেলা করছেন জানতে চাইলে মো. বাদশা মিয়া বণিক বার্তাকে বলেন, কভিডকালীন সাত-আট মাসে অনেক লোকসান হয়েছে। তুলার দাম পড়ে যায় মার্চ-এপ্রিলে। তখন আমরা হতাশ হয়ে গিয়েছিলাম। এরপর পোশাকের ক্রয়াদেশ ফিরতে শুরু করলে পরিস্থিতি ঘুরে দাঁড়াতে থাকে। অবশ্য দাম পাওয়া যাচ্ছিল না তখনো। পর্যায়ক্রমে কারখানার সব মজুদ পণ্য শেষ হয়ে যায়। এ কারণে পূর্ণ সক্ষমতায় কারখানা সচল রাখা গেছে। আমাদের স্পিনিংয়ে স্পিন্ডল তিন লাখের ওপরে।

পাইওনিয়ার ডেনিম বাংলাদেশে বৃহত্তম ডেনিম উৎপাদনকারী কারখানা এমন তথ্য জানিয়ে বাদশা মিয়া বলেন, আমি কামলা মানুষ, এখনো ক্ষেতে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের স্পিন্ডলপ্রতি উৎপাদন শুধু বাংলাদেশ না সমগ্র ভারতের চেয়েও বেশি। স্কয়ার টেক্সটাইল গড়ে উঠেছে আমার হাতে। ধারাবাহিকভাবে গত পাঁচ বছর প্রথম ও দ্বিতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানটিও আমাদের। বাদশা টেক্সটাইলের উৎপাদন সক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করা হচ্ছে। আমাদের কর্মী সংখ্যা বর্তমানে ২৮ হাজার।

দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ হিসেবে পরিচিত প্রাইমারি টেক্সটাইল খাতে সুতা ও কাপড়ের উৎপাদক প্রতিষ্ঠান আছে ১ হাজার ২৩২টি। এছাড়া কাপড় প্রক্রিয়াজাত করার ডায়িং-প্রিন্টিং-ফিনিশিং মিল আছে আরো ২৪৪টি। এ মিলগুলো দেশের রফতানিমুখী নিট পোশাক কারখানাগুলোর প্রয়োজনীয় সুতার ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ সরবরাহ করে। আর রফতানিমুখী ওভেন পোশাক পণ্যের চাহিদার প্রায় ৪০ শতাংশ সরবরাহ করার সক্ষমতা রাখে। এ শিল্পে মোট বিনিয়োগ ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি। এই বিনিয়োগের বড় অংশে অবদান রেখেছে বাদশা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ।



বাদশা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের কারখানা গড়ে তুলতে ব্যাংকের অর্থায়ন নেয়া হয়েছে। আর তা নেয়া হয়েছে শুধু কারখানার মূলধনি যন্ত্র স্থাপনে। এছাড়া ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের জোগানও নিশ্চিত করা হয় ব্যাংকের সহায়তায়। প্রতিষ্ঠানটিতে বড় বিনিয়োগ করেছে এমন ব্যাংকগুলোর মধ্যে আছে বহুজাতিক হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন (এইচএসবিসি) বাংলাদেশ, ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক এবং আল-আরাফাহ্ ব্যাংক। শুরুর সময়টা বাণিজ্যের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যবসা করা হলেও শিল্প গড়ে তুলতে মূলত সহযোগিতা নেয়া হয়েছে ব্যক্তি খাতের ব্যাংক থেকে।

বাদশা টেক্সটাইলের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেন, আমার জানা মতে সুতা উৎপাদনে দেশে আমাদের চেয়ে বড় উৎপাদন সক্ষমতার কোনো প্রতিষ্ঠান আর নেই। বাদশা মিয়ার অন্যতম গুণ হলো সততা। আর ব্যক্তি হিসেবে এই বৈশিষ্ট্য বজায় রাখতে গিয়েই ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনায় তিনি একজন অকপট মানুষ। চারিত্রিক এ দৃঢ়তার কারণেই তিনি টানবাজারে সুতার বাণিজ্যের গদি থেকে এখন দেশের শীর্ষ সুতা উৎপাদনকারী শিল্পের কর্ণধার। গত তিন দশকে গড়ে ওঠা দেশের বড় স্পিনিং মিলগুলো স্থাপনেও ভূমিকা রেখেছেন তিনি।

বাদশা মিয়া বর্তমানে তার চার সন্তানের মধ্যে দুই সন্তানকে সক্রিয়ভাবে ব্যবসায় পাশে পেয়েছেন। এর একজন বড় ছেলে কামাল উদ্দিন আহমেদ ও আরেকজন ছোট ছেলে মহিউদ্দিন আহমেদ।  

বাদশা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, বাবার আদর্শে আমরা প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় সহযোগিতা করছি। বাবার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখছি। এর মধ্যে অন্যতম হলো কোনো কাজে লেগে থাকা আর পরিশ্রম। আশা করছি, সামনের দিনগুলোতেও আমাদের অবস্থান ধরে রাখতে পারব।


প্রতিবেদনঃ বনিকবার্তা 


BADSHA GROUP:

A world class Yarn manufacturer of grey fabrics which has state-of-the-art production facilities to meet the modern and most challenging demands of today's discerning customers.

Mission
Badsha Textiles Ltd. is a leading textile conglomerate in Bangladesh having a turnover of $258 million. Committed to philanthropy and socio-economic development, we are providing an array of products and services for textile and apparel industries. In more than a decade of its establishment, the Group has created several benchmarks and established milestones for the forthcoming generations.

Mr. Md. Badsha Mia, Managing Director of Badsha Textiles Ltd., is a well-reputed industrialist who was elected as President of Yarn Merchants Association for two consecutive terms. He started with whole selling of yarn back in year 1977. Within a short span of time he emerged as one of the largest yarn trader in Narayanganj. His venture commenced with a 100% export-oriented sweater factory under the name and style Pioneer Sweaters Limited in 2000. By virtue of his relentless efforts and dynamic leadership, subsequently he established two Spinning Mills in the name of Badsha Textiles Ltd. and Kamal Yarn Limited. The latest addition of BGI is the largest and most modern sweater factory in Bangladesh named Pioneer Knitwears (BD) Limited.
To cope with the pace in harmony of modern textile world, our industries are outfitted with 'state of the art' machinery and technology. Our machines have been imported from Switzerland, Germany, Italy and Japan under the brand names of Seema-saki, Rieter, Savio Polar, Texparts, Uster and so on, which allow us to produce high quality cotton yarns with a capacity of 160 tons per day.

1) Main Product
-Karded Yarn (Knitted)
-Combed Yarn
-Slub/Fancy Yarn
-Combed Compact Yarn
-Core Yarn/Lycra Yarn
-Super Combed Yarn
- Ring Denim Yarn and Open End Yarn,

2) Installed Capacity:
Badsha Textiles Ltd- Spindles-162000, Rotor-6400, Autoconer-55
Kamal Yarn Limited- Spindles-108864, Autoconer-38

3) Actual Yarn Production:
Badsha Textiles Ltd- 66000 M.TON Per Year
Kamal Yarn Limited- 29000 M.TON Per Year

4) Raw Material Requirement:
Badsha Textiles Ltd- 76000 M.TON Per Year
Kamal Yarn Limited-35000M.TON Per Year

5) Manpower:
Badsha Textiles Ltd- All Together: 4000
Kamal Yarn Limited- All Together: 2600


কোন মন্তব্য নেই: