টেক্সটাইলীয় ঈদ :
[ টেক্সটাইল প্রডাকশন ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য উৎসর্গ করলাম ]
১. ঈদে সবাই খুশি কিন্ত ফেক্টরির এক জন খুশি না আর সে হয় কোম্পানির মালিক কারন ঈদের সময় দেড় মাসের বেতন বোনাস, ছুটির টাকা, ওভার টাইমের টাকা দিতে হয়। ঈদ মানে তাদের মাথায় হাত।
২. ফেক্টরির গুলির মাঝে একমাত্র স্পিনিং মিল গুলি ঈদে চালু থাকে। তাতে অসুবিধা নেই থাকলে ডাবল হাজিরা, খাওয়া মালিক দেয়। পরে ঈদের ছুটি দেয়া হয় একজন একজন করে। স্পিনিং মেশিন গুলি হাই স্পিড মেশিন এগুলি বন্ধ করলে বা বন্ধ হলে এর বেয়ারিং স্পিন্ডাল গুলি জেম হয়ে যায় তাই এটা অফ রাখা যায় না চললে চালু রাখতে হবে।
৩. ঈদের সরকারি ছুটির ৩ দিন, মালিক এর ছুটি ২ দিন আর ৪ দিন অফডে খেটে নিজেদের ৯ দিন ছুটি মিলাতে হয়।
৪. সব সময় গার্মেন্টস টেক্সটাইল এর চেয়ে এক দিন ছুটি বেশি পায়।
৫. ঈদের সিজন টেক্সটাইল এর জন্য গেঞ্জাম এর সিজন। বেতন বোনাস নিয়ে এই সমস্যা তৈরি হয়।
৬. ঈদের সামনে এক সাথে বেতন বোনাস এর জব ছাড়ে না এই কারনে ঈদের আগে জব এর ক্রাইসিস হয়। দুই ঈদের পর অনেক জব থাকে।
৭. ঈদের ৯-১০ ছুটি থাকার দরুন মেশিন গুলি অনেক দিন অফ থাকে এই কারনে মেশিন গুলি চালু করলে নানা রকম ম্যাকানিকাল ইলেক্ট্রিক্যাল ফল্ট হয় তা ২-৩ ধরে মেইন্টেইনেন্স করতে হয় তাই গার্মেন্টস এর আগে আমাদের টেক্সটাইল খোলে।
৮. ছুটিতে যাওয়ার আগে বড় বড় মেশিন গুলির ফাক ফোকোরে, ইনভার্টার, প্যানেল বক্সে ইঁদুর এর ঔষধ দিতে ভুলবেন না আমাদের মেশিন এর তার গুলি প্রতি বছর ইঁদুর কাটে :p
৯. মনে করে মেশিন এর মটর, ইনভর্টার, মুল্যবান পার্টাস গুলি পলি দিয়ে রেপিং করে যাবেন।
১০. মেশিন এর ড্রেইন এর ভালভ গুলি যেনো খোলা থাকে এ ব্যাপারে লক্ষ রাখুন।
১১. মেশিন এর কন্ডিশন সিকিউরিটির লোক জনকে রিপোর্ট করে যাবেন।
১২. চাইলে বিয়ে সাদী করে আসতে পারেন কারন পরের ঈদ ছাড়া এমন বড় ছুটি আর পাবেন না।
টেক্সটাইল কর্মরত সিনিয়র জুনিয়র কিংবা যারা আছেন এইবার ঈদেরছুটিতে একটি কাজ করতে পারেন আপনার গ্রাম, ইউনিয়ন, উপজেলা কিংবা জেলায় কারা টেক্সটাইল গার্মেন্টসে জব করছে তাদের খুজে বের করতে পারেন এর জন্য বন্ধু বান্ধব সিনিয়র দের সহযোগীতা নিতে পারেন। মনে রাখবে টেক্সটাইল সেক্টর হচ্ছে রিলেশন নেটওয়ার্ক এর সেক্টর এখানে পরিচিতি রেফারেন্স এর অনেক ডিমান্ড। টেক্সটাইল গার্মেন্টস এর দুই ধরনের সিন্ডিকেট কাজ করে এক জেলা ভিত্তিক দুই ইন্সটিটিউশন ভিত্তিক এর মাঝে জেলা ভিত্তিক সিন্ডিকেট এর খুবি দাপট আছে। একই জেলার লোকজন একে অপরকে খুব হেল্প করে এবং তাদের অবস্থান পোক্ত করে এরি উদাহরণ নোয়াখালী, কুমিল্লা, বরিশাল,জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাংগাইল ইত্যাদি জেলার লোকজন। টেক্সটাইল গার্মেন্টস জবে সবার ব্যাস্ত থাকে তাই চাইলে আপনি একে অপরের সাথে দেখা করতে পারবেন না কিংবা সময় দিতে পারবেন না তাই ঈদের ছুটিতে মোটামুটি ৭-৮ দিনের ফ্রি সময় গুলিতে আপরনারা একে অপরকে খুজে বের করে পরিচিত হয়ে নিতে পারেন । দেশে হাট বাজারে সবাই সবাইকে পাবেন। একজন খুজে বের করলে বাকিরা এমনি বেরিয়ে যাবে । তবে টেক্সটাইল এর ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে এটা ফরজ নয় সে হতে পারে মালিক টু হেল্পার কারন সবার কম বেশ পরিচিতি আছে সুপারিশ করার ক্ষমতা আছে । আর জব যে দেখা করলে পেয়ে যাবেন এটা ভাববেন না এটা আপনার ফিউচার ইনভেস্টমেন্ট। এই পরিচিতি জব, ব্যাবসা, স্টাডি সকল কিছুতেই কাজে দিবে । হতে পারে আপনার পাশের বাড়িতে এক গ্রুপ ফেক্টরির GM এর বাড়ি, ম্যানাজার এর বাড়ি । ভয়ের কারন নেই তারা ফেক্টরির GM এলাকার নয় তাই আপনি দেখা করতে গেটের সিকিউরিটি পাস এর প্রয়োজন নেই । দেশের পরিচিতি এর ভেতরে ইন্সটিটিউশন এর গোঁড়ামি থাকে না, থাকে নাড়ির টান। প্রয়োজনে এলাকাভিত্তিক এসোসিয়েশন করে ফেলুন GM বা মালিক থাকলে তাদের উপদেস্টা করে।
শুভকামনা সাবার জন্য
শুনানুধ্যায়ী
মাজেদুল হাসান শিশির
mazadulhasan@yahoo.com
সবার ঈদ শুভ হোক
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন