জিন্সের পকেটের ওপর রিভেট ব্যাবহারের রহস্য কী ? - Textile Lab | Textile Learning Blog
জিন্সের পকেটের ওপর ধাতব চাকতি ব্যবহারের রহস্য কী ?


সাধারণত জিন্সের পকেটের চার কোণায় এই গোলাকার ধাতব চাকতিগুলো পাওয়া যায়; এগুলো 'রিভেট' নামে পরিচিত।

ফ্যাশন জগতে জিন্স অতি পরিচিত ও পুরনো নাম। যুগ পাল্টালেও জিন্স অপ্রচলিত হয়ে যায়নি, বরং সময়ের সাথে সাথে জিন্সের নকশায় এসেছে নানা পরিবর্তন এবং আরও জনপ্রিয় হয়েছে এই পোশাক। জিন্সের নকশায় খুবই পরিচিত একটি বৈশিষ্ট্য হলো, এর মধ্যে থাকা ছোট ছোট ধাতব চাকতি। কিন্তু আপনি কি জানেন এই ধাতব চাকতিগুলো আসলে কেন রাখা হয় জিন্সে? কিংবা এখন এগুলোর ব্যবহার কমে আসলেও, আগে কেন রাখা হতো ?

সাধারণত জিন্সের পকেটের চার কোণায় এই গোলাকার ধাতব চাকতিগুলো পাওয়া যায়; এগুলো 'রিভেট' নামে পরিচিত। ১৮৭০'র দশক থেকে এই ধাতব চাকতির ডিজাইন লিভাইস জিন্সের অতি পরিচিত বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়ায়। ব্র্যান্ডটির টেকসই ও টপ-নচ মানের জন্য সুখ্যাতি পাওয়ার পেছনেও এটিও একটি কারণ।  

আমেরিকান দর্জি জ্যাকব ডেভিস সর্বপ্রথম ট্রাউজারের মধ্যে 'রিভেট' যুক্ত করেন। কাপড়ের মধ্যে ছিদ্র করে এই ধাতব চাকতিগুলো বসিয়ে দেওয়া হতো। ১৮৭৩ সালে লিভাই স্ট্রস অ্যান্ড কোম্পানি এই ডিজাইনের পেটেন্ট নেয় এবং ধাতব রিভেট লিভাইসের বিখ্যাত নীলরঙা জিন্সের এক অত্যাবশ্যকীয় অংশ হয়ে দাঁড়ায়।

জিন্সের মধ্যে রিভেট থাকার কার্যকারিতা কী তা নিয়ে আগেপরে অনেকেই মাথা ঘামিয়েছেন। তবে এবার একজন কৌতূহলী রেডইট ব্যবহারকারী এর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জানার পণ করেছিলেন। নিজের জিন্সে থাকা ধাতব চাকতিগুলোর ছবি শেয়ার করে ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন- "সব জিন্সের মধ্যেই এই জিনিসগুলো (রিভেট) আছে। এগুলো রাখার পেছনে উদ্দেশ্য কী? এগুলোর কোনো কার্যকারিতা আছে কী? আর যদি না থাকে, তাহলে কেনই বা জিন্সের মধ্যে এগুলো রাখা হয়েছে?"

যারা এই প্রশ্নের উত্তর সঠিক জানতেন না, তারাও অনুমানের ওপর ভিত্তি করে উত্তর দিয়েছেন। একজন মজা করে লিখেছেন, "ড্রায়ার থেকে দ্রুত কাপড় বের করে ফেলার সাজা হিসেবে"; আবার আরেকজন লিখেছেন- জিন্সের পকেটে মোবাইল ফোন রাখার পর ফোনের স্ক্রিনে আঁচড়ের দাগ ফেলে দেওয়াই এদের উদ্দেশ্য!"

তৃতীয় আরেক ব্যক্তি অবশ্য আরও ভালো আইডিয়া নিয়ে হাজির হয়েছেন। তিনি মন্তব্য করেছেন, "শুরুর দিকে যখন ডেনিম প্যান্ট শ্রমিকদের পোশাক ছিল, তখন এগুলোকে টেকসই করে তুলতে রিভেট ব্যবহার করা হতো। সময়ের সাথে সাথে রিভেটের প্রয়োজন শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু এর আবেদন এখনো রয়েই গেছে।"

আর এখানেই রয়েছে আসল উত্তর

১৮৭০'র দশকে শ্রমজীবী মানুষেরা জিন্স পরিধানের সময় যে সমস্যার মুখোমুখি হতেন তা হলো, জিন্সের পকেটের কোণা দ্রুত ছিঁড়ে যেত বা খুলে আসতো। তখনই দর্জি জ্যাকব ডেভিস এগিয়ে আসেন 'রিভেট' ব্যবহারের আইডিয়া নিয়ে। জিন্সের পকেটের কোণা এবং জিপার বরাবর মূল জায়গায়, এগুলো ধাতব চাকতি দিয়ে আটকে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি।

বর্তমান যুগে জিন্স ছিঁড়ে যাওয়া ঠেকাতে রিভেটের দরকার পড়ে না বললেই চলে, কারণ আজকাল আর কেউ জিন্স পরে দিনরাত খনিতে কাজ করেন না!

কিন্তু তবুও এখনো প্রায়ই জিন্সের মধ্যে ধাতব চাকতিগুলো দেখা যায়- আর সেটা নিছকই সুন্দর নকশার জন্য। জিন্সের সামনে যেমন অনেক সময় ছোট্ট পকেট থাকে সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্য, ঠিক তেমনই। আর হ্যাঁ, এই পকেটও কিন্তু লিভাইসের আরেকটি আদি বৈশিষ্ট্য যা 'ওয়াচ পকেট' নামে পরিচিত ছিল।

এই ওয়াচ পকেটের প্রয়োজনীয়তাও এখন ফুরিয়েছে, কারণ ঘড়ি এখন সবাই হাতেই পরে কিংবা মোবাইলে সময় দেখে নেয়। কিন্তু রিভেটের মতোই, এখনও অনেক জিন্সে ওয়াচ পকেট রাখা হয় সেই পুরনো দিনের জিন্সের ফ্যাশনের আবেদন ধরে রাখতে।

সূত্র: ল্যাড বাইবেল

জিন্সের পকেটের ওপর রিভেট ব্যাবহারের রহস্য কী ?

জিন্সের পকেটের ওপর ধাতব চাকতি ব্যবহারের রহস্য কী ?


সাধারণত জিন্সের পকেটের চার কোণায় এই গোলাকার ধাতব চাকতিগুলো পাওয়া যায়; এগুলো 'রিভেট' নামে পরিচিত।

ফ্যাশন জগতে জিন্স অতি পরিচিত ও পুরনো নাম। যুগ পাল্টালেও জিন্স অপ্রচলিত হয়ে যায়নি, বরং সময়ের সাথে সাথে জিন্সের নকশায় এসেছে নানা পরিবর্তন এবং আরও জনপ্রিয় হয়েছে এই পোশাক। জিন্সের নকশায় খুবই পরিচিত একটি বৈশিষ্ট্য হলো, এর মধ্যে থাকা ছোট ছোট ধাতব চাকতি। কিন্তু আপনি কি জানেন এই ধাতব চাকতিগুলো আসলে কেন রাখা হয় জিন্সে? কিংবা এখন এগুলোর ব্যবহার কমে আসলেও, আগে কেন রাখা হতো ?

সাধারণত জিন্সের পকেটের চার কোণায় এই গোলাকার ধাতব চাকতিগুলো পাওয়া যায়; এগুলো 'রিভেট' নামে পরিচিত। ১৮৭০'র দশক থেকে এই ধাতব চাকতির ডিজাইন লিভাইস জিন্সের অতি পরিচিত বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়ায়। ব্র্যান্ডটির টেকসই ও টপ-নচ মানের জন্য সুখ্যাতি পাওয়ার পেছনেও এটিও একটি কারণ।  

আমেরিকান দর্জি জ্যাকব ডেভিস সর্বপ্রথম ট্রাউজারের মধ্যে 'রিভেট' যুক্ত করেন। কাপড়ের মধ্যে ছিদ্র করে এই ধাতব চাকতিগুলো বসিয়ে দেওয়া হতো। ১৮৭৩ সালে লিভাই স্ট্রস অ্যান্ড কোম্পানি এই ডিজাইনের পেটেন্ট নেয় এবং ধাতব রিভেট লিভাইসের বিখ্যাত নীলরঙা জিন্সের এক অত্যাবশ্যকীয় অংশ হয়ে দাঁড়ায়।

জিন্সের মধ্যে রিভেট থাকার কার্যকারিতা কী তা নিয়ে আগেপরে অনেকেই মাথা ঘামিয়েছেন। তবে এবার একজন কৌতূহলী রেডইট ব্যবহারকারী এর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জানার পণ করেছিলেন। নিজের জিন্সে থাকা ধাতব চাকতিগুলোর ছবি শেয়ার করে ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন- "সব জিন্সের মধ্যেই এই জিনিসগুলো (রিভেট) আছে। এগুলো রাখার পেছনে উদ্দেশ্য কী? এগুলোর কোনো কার্যকারিতা আছে কী? আর যদি না থাকে, তাহলে কেনই বা জিন্সের মধ্যে এগুলো রাখা হয়েছে?"

যারা এই প্রশ্নের উত্তর সঠিক জানতেন না, তারাও অনুমানের ওপর ভিত্তি করে উত্তর দিয়েছেন। একজন মজা করে লিখেছেন, "ড্রায়ার থেকে দ্রুত কাপড় বের করে ফেলার সাজা হিসেবে"; আবার আরেকজন লিখেছেন- জিন্সের পকেটে মোবাইল ফোন রাখার পর ফোনের স্ক্রিনে আঁচড়ের দাগ ফেলে দেওয়াই এদের উদ্দেশ্য!"

তৃতীয় আরেক ব্যক্তি অবশ্য আরও ভালো আইডিয়া নিয়ে হাজির হয়েছেন। তিনি মন্তব্য করেছেন, "শুরুর দিকে যখন ডেনিম প্যান্ট শ্রমিকদের পোশাক ছিল, তখন এগুলোকে টেকসই করে তুলতে রিভেট ব্যবহার করা হতো। সময়ের সাথে সাথে রিভেটের প্রয়োজন শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু এর আবেদন এখনো রয়েই গেছে।"

আর এখানেই রয়েছে আসল উত্তর

১৮৭০'র দশকে শ্রমজীবী মানুষেরা জিন্স পরিধানের সময় যে সমস্যার মুখোমুখি হতেন তা হলো, জিন্সের পকেটের কোণা দ্রুত ছিঁড়ে যেত বা খুলে আসতো। তখনই দর্জি জ্যাকব ডেভিস এগিয়ে আসেন 'রিভেট' ব্যবহারের আইডিয়া নিয়ে। জিন্সের পকেটের কোণা এবং জিপার বরাবর মূল জায়গায়, এগুলো ধাতব চাকতি দিয়ে আটকে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি।

বর্তমান যুগে জিন্স ছিঁড়ে যাওয়া ঠেকাতে রিভেটের দরকার পড়ে না বললেই চলে, কারণ আজকাল আর কেউ জিন্স পরে দিনরাত খনিতে কাজ করেন না!

কিন্তু তবুও এখনো প্রায়ই জিন্সের মধ্যে ধাতব চাকতিগুলো দেখা যায়- আর সেটা নিছকই সুন্দর নকশার জন্য। জিন্সের সামনে যেমন অনেক সময় ছোট্ট পকেট থাকে সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্য, ঠিক তেমনই। আর হ্যাঁ, এই পকেটও কিন্তু লিভাইসের আরেকটি আদি বৈশিষ্ট্য যা 'ওয়াচ পকেট' নামে পরিচিত ছিল।

এই ওয়াচ পকেটের প্রয়োজনীয়তাও এখন ফুরিয়েছে, কারণ ঘড়ি এখন সবাই হাতেই পরে কিংবা মোবাইলে সময় দেখে নেয়। কিন্তু রিভেটের মতোই, এখনও অনেক জিন্সে ওয়াচ পকেট রাখা হয় সেই পুরনো দিনের জিন্সের ফ্যাশনের আবেদন ধরে রাখতে।

সূত্র: ল্যাড বাইবেল

কোন মন্তব্য নেই: