একটি ফেক্টরির শ্রমিক আন্দোলন ইনভেস্টিগেশন করতে গিয়ে কিছু সমস্য পেলামঃ
এখন আন্দোলনে কি হয় সে কমন বিষয় গুলি তুলে ধরছি যাতে করে নতুন যারা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার তাদের সমস্যা গুলি ফেইস করতে সুবিধা হয়। পেয়েন্ট গুলি ব্যাক্তি বিশেষ কাওকে মেনশন করে লেখা হয় নি।
১. আমাদের টেক্সটাইল গার্মেন্টসের বেশিরভাগ আন্দোলনের কারন হচ্ছে বেতন না দেয়া, ওভার টাইম কেটে দেয়া হাজিরা বোনাসে সমস্যা অর্থাৎ পেমেন্ট । স্যালারি ডিউয়ের জন্য বেশিরভাগ ফেক্টরিতে আন্দোলননের সুযোগ হয়।
২. আমাদের দেশের টেক্সটাইল ম্যানেজমেন্ট এর লোক ফিনেন্স এডভাইজার গন তাদের প্লান অনুযায়ী স্যালারীর পেমেন্ট শিডিউল বিপর্যস্ত করে ফেলে যার ফলে স্যালারী ডিউ হয়ে পড়ে, মালিকদের কাছে শুরুতে ভালোই লাগে কারন অনেক টাকা সেইভ কিন্ত একটা বার আন্দোলন হলে এর ১০ গুনের উপর দিয়ে যায় । এর জন্য মিডেল ম্যানেজমেন্ট দায়ী ।
৩. মেজরিটি আন্দোলন শুরু করে গার্মেন্টসের শ্রমিকরা , টেক্সটাইল এর লোকজন কম থাকায় তারা তুলনামূলক জোরালো আন্দোলন করতে পারেন না । গার্মেন্টসের লোকজন বেশি ফেডারেশন থাকার কারনে এদের ইউনিটি বেশি৷। টেক্সটাইল মিল গুলিতে এর রেকর্ড কম এখানো লোক কম এদের সহজে আইডিনটিফাই করা যায় যার ফলে এরা সহজে আন্দোলন করে না।
৪. গার্মেন্টসের প্রথম স্টেইযের আন্দোলন হচ্ছে তারা কাজ স্লো করে দেয়া আউটপুট কমিয়ে দেয়, দ্বিতীয় স্টেইজ হচ্ছে এটা কাজ অফ করে মেশিনে বসে থাকে। তৃতীয় স্টেইজে পরিস্থিতি খারাপ হলে এরা নীচে নেমে যায়।
৫. এদের প্রথমে শান্তনা দেয় জি এম, ইডি এরা না দিতে পারলে ডিরেক্টর আসে। সর্বশেষ মালিকেকের সাথে হয় পেমেন্ট ডেইট দিতে ততো দিনে টাইম কিল হয় পরিস্থিতি জটিল হয় । দিন শেষে মালিকই সমাধান করতে পারেন।
৬. বেশির ভাগ আন্দোলন থামানো যেতো যদি মালিকদের ব্যাবহার ভালো হতো, কিন্ত বড় লোক নাকি মাথানত করে না এটা সমস্যা । এরা সহজে ভালো কথা বলে না আর এরা নিচু হতে চায়না ।
৭. গার্মেন্টস লোকজন আর মালিকের মধ্যে যতো ভায়া হবে তত ঝামেলার পসিবিলিটি বেশি এরা নিজেরা ভালো থাকার জন্য ইনফরমেশন গুলি মালিককে দেয়া না নিজের ফাও আশ্বাস দেয় বেশিরভাগ সময়। মিডেলম্যানেজমেন্ট জানাচ্ছি জানাচ্ছি বলে টাইম কিল করে।
৮. টেক্সটাইলে ভেজাল কম হয় যদি গার্মেন্টস এর চেয়ে এটা দূরে থাকে ।
৯. মারামারির পর লুটপাট হয় এতে গার্মেন্টসের টেক্সটাইলের নিডেল সুই কম্পিউটার ইত্যাদি চুরি হয় বেশি। কম্পিউটার এর র্যাম হার্ডডিক্স বেশি চুরি হয়।
১০. গার্মেন্টসের শ্রমিক টেক্সটাইল ভাংচুর করে টেক্সটাইলের গুলি করে গার্মেন্টস শ্রমিকেরা , যদিও এর কোন নির্দিস্ট কারন নেই এমন টাই।
১১. ওই দিন যাদের উপর ক্ষোভ থাকে তাদের রাম ধোলাই নিশ্চিত । ধোলাই মানে এই নয় মেরে ফেলা অপদস্থ করা । এতে ভয়ের কিছু নেই এটা নির্ভর করবে ফ্লোরের আপনার আচরনের উপর । অনেক সময় শ্রমিক তাদের অফিসার দের সেইভ করে।
১২. ভেজালের সময় অন্তত মোবাইল বের করা থেকে বিরত থাকুন ভিডিও করা তগেকে বিরত থাকুন। এতে সবার ক্ষোভ আপনার উপর ঝাড়বে। এখনকার দিনে আন্দোলনের সময় কেও মোবাইল বের করে না।
১৩. কাওকে হুমকি বা ফোর্স করা থেকে বিরত থাকুন আপনার পজিশন অনুয়ায়ী আপনি সিনিয়রদের নির্দেশনা পালন করুন । তাদের পরিস্থিতি জানান। ফেক্টরির ইন্সুরেন্স আছে আপনার কিন্তু ইন্সসুরেন্স নেই আপনার ক্ষতি হলে চিকিৎসা কেও করাবে না। অনেকে নিজ আগ্রহে মার খায় পরে মালিকরাই বলে ওরে কে যাইতে বলছে, এটা তারা সমর্থন করে না ।
১৪. মোটেই এমন কিছু বলবেন না যেতে আপনি ফেসে যান এ সময় শ্রমিকেরা নিজেরা বাচার উপায় না পেয়ে অফিসারদের ফাসাইয়া দেয় । এমনকি অফিস খুললেও এসব বিষয়ে কোন মন্তব্য ফ্লোরে করবেন না ।
১৫. টেক্সটাইলের সহিংসতার ফলে মালিক শ্রমিকের কারো তেমন লাভ হয় কতিপয় কিছু লোকের যেমনঃ সাবেক সাস্পেন্ড কৃত কিছু লোক, এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালীর, ঝুট ব্যাবসায়ীর, সাপ্লাইয়ারের, শ্রমিক নেতার, এলাকার মাওয়ালীদের ।
১৬. বেশিরভাগ সময় আন্দোলনে মুল হতা থাকে ছাটাই কৃত এক্স এম্পলয়ী ওয়ার্কাররা। এই দিন বাইরের লোক ফেক্টরির লোকের সাথে ঢুকে পড়ে তারা ভেজাল করে।
১৭. ভাংচুর করলে কিছুই হয় না শ্রমিকদের চাকুরী যায় কারো কিন্ত এদের চাকুরীর ভয় নেই এতোটা । তাদের ভয় না দেখিয়ে কি করে কাজ করা ফেক্টরি চালিয়ে নেয়া যায় তাই ভাববেন ।
১৮. বেশিরভাগ ক্ষত্রে শ্রকিক ফেডারেশনের নেতারা ডাবল এজেন্টের ভুলিকা পালন করে এটা মালিকদের কাছ থেকে সুবিধা নেয় । এদের ১০০% বিশ্বাস করতে যাবে না। দিন শেষে আপনাদের মালিক দিবে আপনারা পাবেন তাই সরাসরি মালিকের সাথে বসে কথা বলে সমাধান করুন । সময় লাগলে আপনারা বসেই মিট করুন তৃতীয় পক্ষ আসলে উভয়ের লস হবার সম্ভাবনা আছে ৷
১৯. দিন শেষে মেশিন ভাংচুর, ফ্লোর ভাংচুর এর লস , এলাকার নেতাদের টাকা, পুলিশের টাকা, শ্রমিক নেতার টাকা এতো কিছুর পেছনে ফাও টাকা গুলি না দিয়ে মালিকরা সেটা টাকা দিয়ে অনেক শ্রমিকের টাকা দিতেই পারেন , মালিকের টাকা দেয়াই লাগে মাঝ খানে সিন ক্রিয়েট করে টাকায় টাকা লস আরো বেশি দেয়া লাগে । শিপমেন্ট এয়ার হলে লাভের গুড় পিপীলিকা খায়। আর সাব কন্ট্রাক্ট এর বায়ার রা কাজ দিতে চায় না কারন বিপদে পড়লে তাদের শিপমেন্ট এয়ার হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি, তাই এরা ভেজালমুক্ত ফেক্টরি খোজে ।
আর যে কোন গেঞ্জামে এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালীর, ঝুট ব্যাবসায়ীর, সাপ্লাইয়ারের, শ্রমিক নেতার, এলাকার মাওয়ালীদের সেটেলমেন্ট এর জন্য বিপুল টাকা দিতে হয় অথচ এটাকা দিয়ে দেখা গিয়েছে ৫০০ শ্রমিকের বেতন দেয়া যায় । এরা মালিক শ্রমিক উভয় পক্ষ থেকে খায়। অন্তত আমাদের দেশের ওয়ার্কআর টা চিলার যুক্ত ফ্লোর, বা ফুড ফ্যাসিলিটি, ট্রান্সপোর্ট চায় না বেশির ভাগ সময় মত শুধু বেতন চায়। গ্রুপ ফেক্টরির উচিৎ তাদের শ্রমিকদের জন্য ২-৩ মাসের স্যালারির ফান্ড তাদের লাখা যেনো বিপদে সে ফান্ড ব্যাবহার করা যায়।
২০. ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি এতো পাগল না যে আপনার দোষের জন্য তারা ডেমারেজ দিবে। বেতন ভাতা মানব সৃষ্ট সমস্যা প্রকৃতিক দুর্যোগ না।
২১. আশেপাশের গার্মেন্টস থাকলে সবার একদিনে পেমেন্ট করা উচিৎ তা না হলে যে এলাকায় থাকে বাড়িওয়ালা দোকানদার এদের চাপ দিতে থাকে তখন তা না দিতে পেরে এদের ভেতরে ক্ষভ জমতে থাকে ।
২২. আশেপাশে ফেক্টরিতে গেঞ্জাম হলে হয় দেরিতে বা তাড়াতাড়ি ওয়ার্কারদের ছেড়ে দেয়া উচিৎ । এতে যারা আছে কোন ভেজাল করতে চায় না এরা ফাকে ফাকে চলে যাবে ফেক্টরি থেকে এতে লোক সংকটে ভেজালের সম্ভাবনা কমে যাবে ।
২৩. মালিকদের উচিৎ ম্যানেজমেন্ট এর উপর তার নজরদারি করা !!!! করন তারা এসব সমস্যা চেপে চেপে এক সময় আগ্নেয়গিরি হয় , মালিক যখন জানে তখন শেষ অবস্থায় থাকে । ম্যানেজমেন্ট এর উপর মালিকের ১০০% আস্থা করা সম্পুর্ন ভুল । মাঝে মাঝে শ্রমিকদের মাঝে কারো কারো কাছে ম্যানেজমেন্ট পারফরমেন্স নিয়ে ক্রস চেক করা উচিৎ ।
২৪. ফেক্টরিতে নির্দিস্ট বেতন ডেইট দেয়া উচিৎ আর ওয়ার্কার স্টাফ এক দিনে দেয়া উচিৎ যখনি দিক মালিক । বেতন আগে পরে দিলে স্টাফ ওয়ার্কার মুখ চাওয়া চাওয়াইয়ি হয়, কাজের অমনযোগীতা হয়।
২৫. আগের বেতনি মালিকের সময় মত দিয়ে দেয়া উচিৎ অনেক মালিক LC এর দোহাই দিয়ে আটকে রাখে বেতন। মুলত বেতন LC নির্ভর না হয়ে বেতনেএ জন্য আলাদা ফান্ড থাকা উচিৎ ।
২৬. মালিকের এটা বোঝা উচিৎ এখন বায়ার এমনিতে থাকে না তার উপর বিজিএমইএ এমনি ফাফড়ে আছে তারা সুবিধা দিবে বলে মনে হয় না ।
২৭. এসব গেনজামের পর রিউমর ছড়ায় বেশি এটা কমন সমস্যা , এই মুহুর্তে সকলকে বোঝাতে হবে আর নিজেদের লোকজনের সাথে যোগাযোগ করে সিউর হতে হবে । উস্কানিমূলক বক্তব্যে কান দেয়া যাবে সবাইকে বুঝাতে হবে । এটা আমাদের সেক্টরের জন্য ভালো।
২৮. প্রতি বারের আন্দোলনের পর মালিক কারেন্ট সেটাপ চেইঞ্জ করে , এতে আপনি নিজেও পড়ে গেলে আপনার অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না । আন্দোলনের পর দেখবেন অনেককেই তাদের ডিপার্টমেন্ট থেকে অন্য ডিপার্টমেন্টে ট্রান্সফার করা হয়, আর ডিপার্টমেন্ট চেইঞ্জ করলে অনেকে নিজ থেকে জব ছেড়ে দেয়। এটা হলো কোম্পানির পলিসি।
২৯. বেশিরভাগ ক্ষত্রে টেক্সটাইল মিডেল ম্যানেজমেন্ট এর সমস্যার কারনে বা ব্যার্থতার কারনে মালিক শ্রমিক কমিউনিকেশন গ্যাপ হয় যার ফলে আশাহত হয় এরা বিপদ গামী হয় । মালিক শ্রমিক সামনাসামনি কথা বলে সমাধান হয়নি এমন % খুবি কম ।
৩০. আমরা যারা শ্রমিক কথায় কথায় ভাংচুর করি বা বিপদগামী হই আমাদের এটা বোঝা উচিৎ আমাদের অই মেশিনে এই ফ্লোরে পরে এসে আমাদের কাজ করতে হবে আমরা কিভাবে পারি আমাদের মুছে যত্ন করে রাখা মেশিন আমারা ভাংতে বা রাস্তায় নেমে যেতে ????
৩১. বর্তমানে সমাধানের অনেক উপায় আছে যা আমরা কখনোই অবলম্বন করি না যেমন এলায়েন্স, বিজিএমই এ, শ্রম মন্ত্রনালয়, ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল পুলিশ, বায়ার এর পর কাজ না হলে স্লো প্রডাকশন ।
৩২. আমাদের মালিকদের যারা এডভাইজারী কমিটিতে থাকেন তাদের বেশির ভাগ নন প্রডাক্টিভ এরা স্যালারি ডিউটাইমে না দেয়ার অনেক পায়াতাড়া করে ফলশ্রুতিতে যদি কোন বিপর্যয় হয় অবে মালিকেদের লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি হয়, টাইম ওভার হলে শ্রমিকেরা কাজ মন দিতে পারে না আর স্টাফ রা আউপুট বের করতে পারেন না ফলে শিডিউল জটিলতায় মালিকদের শিপমেন্ট হয় এয়ার সাময়িক লাভের ফল মালিক পরে ১০ গুন বেশি টের পায়।
৩৩. আন্দোলনের পরে মামলা হয় মালিকের পক্ষ থেকে এই আন্দোলনে মালিক পক্ষের লোকজনের করা ভিডিও থেকে লোকজন ট্রেস করা হয় হোতা কারা পরে এদের পুলিশ দিয়ে ধরিয়া দেয়া হয় । আর ডিটেইলস এডমিনের কাছে থাকে । ইনফরমেশন দেয় ওইদিন ফ্লোরের লোকজন যারা যারা উদ্যোক্তা তাদের নামে ইনফরমেশন দিয়ে দেন ।
৩৪. আন্দোলনে সম্পৃক্ত অনেককেই শিক্ষা দেয়ার জন্য ভুল করলে কাপড় মেশিন নস্ট করার ক্লেইম দেয়া হয় আর এতো পরিমাণ বড় ক্লেইম দেয়া হয় যে এরা দিতে না পেরে চাকুরী ছেড়ে যায় ।
৩৫. তবে আন্দোলনের নামে রাস্ট্রীয় সম্পদ নস্ট রাস্তা আটক অবরোধ নৈতিক ভাবে ঠিক নয়।
করনীয়ঃ
এ কথার সত্যতা যাচাইয়ে যেকোন ফেক্টরি এলাকায় কিছু দিন থাকলে রাজনীতি গুলিটের পাওয়া পাবেন ।
মালিকদের উচিৎ কমিউনিকেশন গ্যাপ গুলি কমিয়ে আনা এতে অনেক সমস্যা মিনিমাইজ হয়ে যায়, মালিকের জন্য শ্রমিকের দরকার আছে আর শ্রমিকের জন্য মালিকের তাই উভয়ের উচিৎ এমন কিছু না করা যাতে এর ক্ষতির স্বিকার আমাদের না হতে হয়। শ্রমিকের ক্ষতির ভেতর হয়তো চাকুরী যায় কিন্ত মালিকেদের আরো বেশি যাদি শিপমেন্ট এয়ার হয়, মেশিন ডেমেজ হয় যা ঋন খেলাপি হয় ভুগতে হয়। কিছু সময় স্থানীয় রা এমন পরিস্থিতি তৈরি করে যাতে তাদের উপার্জনের সুযোগ হয়।
তাই শ্রমিকদের বলছি আপনারা ঘটনার শোনার পর আগে ভাবুন কোথায় হয়েছে কেনো হয়েছে, যে কোন একজন কথা বলুন সবার কথাবলার জন্য সবাই মিললে সমাধান হবে না। মালিকদের বলি আজে বাজে লোকদের টাকা নিয়ে নিজের শ্রমিকদের দিন আপনাদের উপকার হবে ।
ডিসক্লেইমারঃ
উপরস্থ ইনভেস্টিগেশন গুলি সম্পুর্ন পার্সোনাল ভিউ এর জন্য সুনির্দিষ্ট ব্যাক্তি বা গোস্টীকে মেনশন করে কিছু উল্লেখ করা বা দোষ দেয়া হয়নি। এটা যারা নতুন টেক্সটাইল জবে জনেন করবের তাদের জন্য প্রিলিমিনারি কিছু ধারনা ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন