- নোমান গ্রুপ প্রতিষ্ঠার ইতিবৃত্ত
১৯৮১ সালে ব্যবসা থেকে পা রাখেন শিল্পের জগতে। শুরু করেন টঙ্গী বিসিকের একটি ওয়্যার্প নিটিং মেশিন নিয়ে।অগ্রণী ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে কেনা সেই মেশিনের সাথে আরো কিছু মেশিন নিয়ে শুরু করেন আরটেক্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান।সেই থেকে শুরু।আজ নোমান গ্রুপের ফ্যাকটরির সংখ্যা ৩২ টির মত।২০০৬ সাল পর্যন্ত ছিলেন সি আই পি পদমর্যাদার অধিকারী।শুণ্য হাতে শুরু করে আজ তার হাজার কোটি টাকার ব্যবসা। ২০১২ সালে নোমান গ্রুপ রপ্তানি করেছে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য। বর্তমানে নোমান গ্রুপে ৫০-৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ চাকুরি করে।বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের ভিত্তিতে ৩য় বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান।৬০টির মত দেশে তারা বিশ্বের প্রথম সারির ব্র্যান্ডের টেক্সটাইল পণ্য সরবরাহ করে আসছে তারা।বলছিলাম নোমান গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম এর কথা।যার নামে এই প্রতিষ্ঠান সেই নোমান তার বড় ছেলের নাম।আরটেক্স তৈরির পর একে একে গড়ে তুলেছেন ফেব্রিকস, স্পিনিং, উইভিং, কলোরেশন অ্যান্ড ফিনিশিং, স্টিচিং অ্যান্ড গার্মেন্টস, টেরি টাওয়াল, ডেনিম টেক্সটাইল ও টেক্সটাইল এক্সেসরিজ মিলসহ নানা শিল্পকারখানা।
১৯৬৮ সালে আধুনগর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক পাস করেন তিনি।মেট্রিক পরীক্ষা দিয়েই চলে আসেন ঢাকায়। টেক্সটাইল মিলে একটি চাকরিও পেয়ে যান । হুট করে একদিন সিদ্ধান্ত নিলেন আর চাকরি করবেন না।শুরু হলো নতুন পথচলা। ফ্যাক্টরি থেকে কাপড় কিনে বিক্রি করতে লাগলেন ইসলামপুরের খোলাবাজারে। ছোটাছুটি করতে লাগলেন টঙ্গী-তেজগাঁওয়ের বিসিক এলাকা আর ইসলামপুর কিংবা নারায়ণগঞ্জের কাপড়ের বাজারে। মিলগুলোতে সুতো সাপ্লাই দিয়ে নিজেই শুরু করলেন কাপড় তৈরি। বিভিন্ন মিলে সোল এজেন্ট হিসেবে কাপড় বাজারজাতের পাশাপাশি বিদেশ থেকে আমদানি শুরু করলেন ডাইস কেমিক্যাল, নাইলন সুতা। মুক্তিযুদ্ধ এর সময় ভাটা পড়ে ব্যবসায়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর নতুন উদ্যোমে শুরু করলেন কাপড়ের ব্যবসা।
১৯৮১ সালে টঙ্গীতে প্রতিষ্ঠিত হয় আরটেক্স।আরটেক্সেই থেমে যায়নি নূরুল ইসলামের যাত্রা। ১৯৮৩ সালে স্থাপন করন মরিয়ম নামে নতুন মিল। বিদেশ থেকে আমদানি করেন ওয়্যার্প নিটিং মেশিন। বর্তমানে এই গ্রুপের রয়েছে ৩০৮টি ওয়্যাপ নিটিং মেশিন। ১৯৮৭ সালে স্থাপন করেন ডায়িং ফিনিশিং মিল নোমান ফেব্রিকস। ১৯৯২ নরসিংদীর পাঁচদোনায় তালহা এবং ১৯৯৬ সালে টঙ্গিতে স্থাপন করেন ইসমাইল স্পিনিং মিল l
১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ স্বনির্ভর হোম টেক্সটাইল জাবের অ্যান্ড জুবাইর ফেব্রিকস লিমিটেড। ২০১২ সাল পর্যন্ত ময়মনসিংহের ভালুকা, গাজীপুরের টঙ্গী, শ্রীপুর, নরসিংদীর বাবুরহাট, পাঁচদোনায় নোমান টেরি টাওয়েল মিলস, জাবের অ্যান্ড জুবাইর ফেব্রিকস লিমিটেড, নাইস ডেনিম মিলস, সাদ সান অ্যাপারেলস, ইসমাইল স্পিনিং, নোমান স্পিনিং, তালহা স্পিনিং, ইয়াসমিন স্পিনিং, জাবের স্পিনিং, জুবাইর স্পিনিং, সুফিয়া কটন, সাদ সান টেক্সটাইল, নোমান টেক্সটাইল, নোমান কম্পোজিট টেক্সটাইল, ইসমাইল টেক্সটাইল, মরিয়ম টেক্সটাইল, জারবা টেক্সটাইল, নোমান হোম টেক্সটাইল, তালহা ফেব্রিকস, আরটেক্স ফেব্রিকস, সুফিয়া ফেব্রিকস, নোমান ফ্যাশন ফেব্রিকস, ইসমাইল-আঞ্জুমান আরা ফেব্রিকস, তালহা টেক্সপো, নোমান উইভিং, নোমান ফ্যাশন, জাবের অ্যান্ড জুবাইর এক্সেসরিজ মিল স্থাপন করে নোমান গ্রুপ।
নোমান গ্রুপের ক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে-
H&M,আইকি,আমেরিকান ঈগল, ওয়ালমার্ট, কেজিএস সোর্সিং, গ্লোবাল টেক্স, জাসা,একেলবুম, আলডি মার্ট, কে মার্ট, লেভিস, টার্গেট অস্ট্রেলিয়া , হরিজন্টি, ডুভেটকো, কিউটেক্স, লি অ্যান্ড ফাং, টম টেইলর সহ আরো অনেক প্রতিষ্ঠান।
সংগৃহীত
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন