“টাইম এন্ড একশন ক্যালেন্ডার” এর কথকতা
Habibur Rahman
পোশাক রপ্তানিতে আমাদের দৃঢ় অবস্থান নিশ্চিত করতে ৩৫টি বছর কেটে গেছে। সারা বিশ্বে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করা এই শিল্পটিতে বিগত দুই দশক হল গুনে মানে সেরা কারখানাগুলো কম্পিউটারের দৈনন্দিন ব্যবহার নিশ্চিত করেছে । মাঝারী মানের কারখানাগুলোতে একাউন্টস, কমার্শিয়াল, অ্যাটেনডেন্স, প্রোডাকশন এর কাজ গুলো ইদানিং কম্পিউটারে করছি। গত ১০ বছর হলো গুটি কয়েক নামকরা কারখানাতে আমরা কম্পিউটারে প্রোডাকশন প্ল্যানিং করা শুরু করেছি।আমরা সচরাচর এখন ৬০ দিনের এলসি পাচ্ছি , এর মধ্যে ৪৫ থেকে ৫০ দিন আমরা মার্চেন্ডাইজিং এর সকল কাজ , প্রাক উৎপাদন কার্যক্রম ( প্রি-প্রোডাকশন এক্টিভিটিজ) করে থাকি আর বাকি ১০/১৫ দিন মূলত গার্মেন্টস তৈরী করা বা সেলাইয়ের কাজ, কিউসি চেক ও শিপমেন্ট করি। ক্যালেন্ডারের দিনক্ষণ গুনেগুনে পুরো প্রক্রিয়াটাকে ভাগাভাগি করে কাজ গুলো সঠিক সময়ের মধ্যে সম্পাদন করাটাকেই “টাইম এন্ড একশন ক্যালেন্ডার”, টিএন্ডএ, ক্রিটিকাল পাথ ইভেন্ট , ক্রিটিকাল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট বলে আখ্যায়িত করা হয়।
একটা আশ্চর্যের বিষয় হলো আমরা গত তিন দশক ধরে শুধু মাত্র ১০/১৫ দিনের প্রোডাকশন প্ল্যানিং নিয়ে ব্যতিব্যস্ত, কিন্তু সিংহভাগ সময় যে কাজটায় ব্যস্ত থাকছি তার কোন সুনিদৃষ্ট কাঠামো নেই, যথাযথ প্ল্যানিং নেই। আজকের আমাদের আলোচনায় আমরা সেই বিষয়টার পরিপূর্ণ বর্ণনা, কর্মপদ্ধতি, প্রতিনিয়ত ধাপে ধাপে কিভাবে কাজ গুলোকে সাজিয়ে নিতে হয়, এই কাজ গুলো পুরোপুরি বাঁধাধরা নিয়মে না করলে কি কি সমস্যা হচ্ছে, এই সমস্যা গুলো উত্তরণের জন্য আমরা কি কি করবো ইত্যাদি সকল বিষয়ের বিশদ ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করবো।
আমাদের প্রাত্যাহিক জীবনে যে কাজ গুলি আমরা অবশ্যই করে থাকি ( অগোছালো এলোমেলো ভাবে ) তার মোটামুটি একটা তালিকা নিম্নরূপ :
১. আমাদের সমস্ত ফ্যাব্রিক, একসেসরিজ, ট্রিমস অর্ডার করি এবং সমস্ত কিছু ইনহাউস করার ব্যবস্থা করি,
২. এরই মধ্যে বায়ারের কাছ থেকে সমস্ত এপ্রুভাল (ল্যাবডিপ, ফ্যাব্রিক শেড, ট্রিমস) নিয়ে নিতে হয়।
৩. কবে থেকে কাটিং শুরু হবে সেই তারিখ টা মাথায় রেখে সমস্ত ইম্পোর্টের ঝামেলা শেষ করতে হয়,
৪. এরই ভিতর বায়ারের পিও, কান্ট্রি , ডেলিভারি ডেট পরিবর্তন এর ঝক্কি তো লেগেই থাকে। সেগুলো আপডেট করে সংশ্লিষ্ট সকলকে জানিয়ে দিতে হয়
৫. সমস্ত কিছু যথাসময়ে ব্যবস্থাপনা করে স্যাম্পল রেডি করা এবং ফাইনাল এপ্রুভাল নিয়ে নেয়া,
৬. পিপি মিটিং করা ,
৭. বায়ারের নতুন কোনো প্রয়োজনীয়তা, পরিবর্তন, সংযোজন, বিয়োজন আছে কিনা তা যাচাই বাছাই করা,
৮. সমস্ত কিছু ইনহাউস হয়েছে কিনা ফাইনাল চেক করা,
৯. আবার সেগুলো সব কোয়ালিটি ওকে আছে কিনা তা যাচাই করিয়ে নেয়া ,
১০.সঠিক সময়ে প্রোডাকশন শুরু করতে পারছি কিনা , লাইন এলোকেশন আমার এই অর্ডারের জন্য ঠিকঠাক আছে কিনা , কত তারিখে শুরু করবো কত তারিখে শেষ করবো
১১. কত তারিখে বায়ার কিউসি সে গুলো চেক করতে আসবে, সেই কিউসির সাথে কোর্ডিনেট করা।
১২. শেষমেশ প্রোডাকশন যখন শুরু হলো তখন প্রথম আউটপুট টা চেক করা,
১৩. সব কিছু ঠিকঠাক মতো আছে কিনা , ওয়াস টেস্ট যদি থাকে তাহলে তা দ্রুত করিয়ে নেয়া,
১৪.বায়ারের কাছ থেকে সেই স্যাম্পল এপ্রোভাল নিয়ে নেয়া,
১৫. প্রতিদিন প্রোডাকশন আউটপুট চেক করা, যত পিছ করে দেয়ার কথা ঠিক ততো পিছ করে পাচ্ছি কি না , না পেলে কেন পাচ্ছিনা ,
১৬. প্রোডাকশন কোয়ালিটি টিম এর সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ , ঝগড়াঝাঁটি , খাতির করে কাজটা সুচারু রূপে সম্পাদন করে নেয়া।
১৭.প্রোডাকশন প্রায়শই বন্ধ হয়ে যায় , দ্রুত সেই সমস্যার সমাধান করে আবার প্রোডাকশন শুরু করিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করা।
১৮. প্রোডাকশন শেষ হলে কিউসি চেকের ব্যবস্থা করা।
১৯. রিচেক, রিপেয়ার , আসোর্টমেন্ট রিএরেঞ্জ করা।
২০. বায়ারের ইন্সট্রাকশন অনুযায়ী কান্ট্রি , পিও, অর্ডার অনুযায়ী আসোর্টমেন্ট মিলিয়ে প্যাকিং এর ব্যবস্থা করা।
২১. যত রাত্রই হোক শিপমেন্ট দিয়ে বাড়ি ফেরা ,
২২. পরদিন বায়ারকে শিপিং কনফার্মেশন , প্যাকিং লিস্ট , অন্যান্য কাগজ পত্রাদি পাঠানো,
২৩. শিপমেন্ট ট্র্যাকিং করে বায়ারের ওয়ারহাউস পর্যন্ত পৌছালো কি না তা নিশ্চিত হওয়া।
২৪. কোনো ধরণের দুঃসংবাদ না থাকলে পেমেন্ট এর জন্য বায়ার কে জেন্টেল রিমাইন্ডার দেয়া ।
এই সকল কিছু আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় “টাইম এন্ড অ্যাকশন ক্যালেন্ডার “ এর আওতা ভুক্ত। এই সকল কিছু আমরা ম্যানেজ করে চলছি কিছু কিছু টাস্ক এক্সেল ওয়ার্কশীট দিয়ে , বাকি পুরোটাই আমাদের উর্বর মস্তিক দিয়ে, আর বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের চাপে পড়ে , টপ ম্যানেজমেন্ট টিম এর সাথে মিটিংয়ে বসার আগে আগে। আসলে কোনো প্রকার সঠিক কর্মপদ্ধতি , নিদৃষ্ট ছক, যথা সময়ে মনে করিয়ে দেয়ার কোনো কলাকৌশল ছাড়াই আমরা গত ৩৫ বছর এই কাজ টা করে আসছি এবং আমাদের সঠিক সময়ে শিপমেন্ট পারফরমেন্স ৯০% এর কাছাকাছি, এখানেই মূল সমস্যা, যেহেতু আমরা বিগত তিন দশক ধরে কোন প্রকার টুলস ছাড়াই যে কোন ভাবেই হোক এই কাজ টা করে যাচ্ছি, তাই আমাদের কারখানার স্বত্বাধিকারীগণ, পরিচালকবৃন্দ, পদস্থ কর্মকর্তাগণ এই ব্যাপারটা নিয়ে মাথা ব্যথায় ভুগছেন কিন্তু যেহেতু শেষ পর্যন্ত সম্পাদন হয়েই যাচ্ছে তাই আর কোন সঠিক পদক্ষেপ নিচ্ছেননা। কালক্রমে আমরা আমাদের মার্কেট শেয়ার হারাচ্ছি , আমাদের সুদূর প্রসারী অনেক বড় একটা ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। আমাদের সিংহ ভাগ সময় আমরা নষ্ট হতে দিচ্ছি শুধু মাত্র সঠিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের অভাবে। ইদানিং কিছু কিছু ইআরপি (এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং) সল্যুশন এই সমস্যার সমাধানে কিছু টেম্পলেট রেডি করে বাজারজাত করণের চেষ্টা করছে , কিন্তু আমাদের মার্চেন্ডাইজার ভাইয়েরা সারাদিন তো ব্যস্ত! তাই তাদের হাতে সময় নেই এই নতুন সিস্টেম এ ডাটা এন্ট্রি করার , এটাকে অহেতুক কর্ম বলেই আমরা দূরে সরিয়ে দিচ্ছি।
আমাদের ভাববার সময় পার হয়ে গেছে, এখন সময় হলো একশনে যাবার।
নিম্নোক্ত সমস্যা গুলো আমাদের দৈনন্দিন কাজের মান , কর্মদক্ষতা , সমস্ত পরিকল্পনাকে অগোছালো করে দেয়।
১. আমরা সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারিনা কোন কাজ টা আগে করবো , সব গুলো তো আর একদিনে করা সম্ভব না , তাই অগোছালো এলোমেলো ভাবে শুরু করি।
২. সবচেয়ে মূল্যবান , সবচেয়ে কঠিন , এবং সবচেয়ে দূরের মেটেরিয়াল গুলো অর্ডার করে ফেলি , যেহেতু সব গুলোই অর্ডার করতেই হবে !
৩. অনেক অর্ডার করতেই পারিনা বায়ার এর কাছ থেকে এপ্রোভাল দেরিতে আসে , আমরা যেভাবে দিন ক্ষণ সাজিয়ে কাজ গুলো করতে চাই ঠিক সেভাবে কোনো কাজেই করা সম্ভব হয়ে উঠেনা , দেরি হওয়া শুরু হয়ে যায়।
৪. আমাদের অনেক বড় একটা কাজ হলো স্টক চেক করা , কিন্তু অর্ডার দেয়ার সময় স্টক এর সঠিক হিসাব নিকাশ পাওয়া বড়ই দুরূহ ব্যাপার , কিছু কিছু তথ্য পেলেও প্রোডাক্শনের সময় দেখা যায় ওই মেটেরিয়াল গুলো তে কোনো সমস্যা ছিল অথবা প্যাকিং লিস্টে যে পরিমান লিখা ছিল চাহিদার তুলনায় তা অপ্রতুল। বিপদ কিন্তু আরো বেড়ে গেলো , দ্বিতীয় বার অর্ডার দেয়ার সময় স্টক ইনভেন্টরির উপর আস্থা রাখতে সাহস করিনা , মেটেরিয়াল স্টক অনবরত বেড়ে যেতে শুরু করে যা ব্যাংকের টাকায় উচ্চ সুদে কিনে রাখা হয়েছিল।
৫. এলোমেলো ভাবে এই সকল কাজ গুলো করতে যাওয়ায় , কোনো না কোনো একটা অর্ডারিং, ইমপোর্টিং, এপ্রভাল এর জন্য পাঠানো, মিটিং করতে গিয়ে সবচেয়ে জরুরি কমেন্টটা ভুলে যাওয়া।
৬. প্রতিদিন বায়ার কে তার কাজ টা যে সঠিক ভাবে হচ্ছেনা এবং তিনি কি পাঠাতে ভুলে গেছেন তা অতিবিনয়ের সাথে তাকে মনে করিয়ে দেয়া।
৬. আর একটা কঠিন কাজ হলো সকল ডিপার্টমেন্টের সাথে সঠিক সমন্বয় সাধন করে একটা ছক এর ভিতর কাজগুলো করা।
৭.ক্রেতা এবং সাপ্লাইরদের সাথে এই সমন্বয় সাধন প্রচন্ড কষ্টসাধ্য। তাদের উভয়েরই কাছ থেকে সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য, এপ্রুভাল, ডেলিভারি সব সময়ই দেরি হবেই।
৮. সকল কিছু যখন জোগাড় করে আনা হলো তখন দেখা যাবে কাটিং শুরু করতে পারছিনা , আমার কাজের দেরি দেখে কাটিং ম্যানেজার অন্য অর্ডার কাটিং শুরু করে দিয়েছেন। আমার অর্ডারের লিড টাইম হুমকির মুখে পড়তে থাকলো !
৯. তারপর কাটিং শুরু হলেও যত পিছ প্ল্যান করেছিলাম তত পিছ করে কাটিং হচ্ছেনা , শুরু হলো ওভারটাইম , অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ , অর্ডারের লভ্যাংশ কমতে শুরু করলো.
১০. কাটিংয়ে যেহেতু এক/দুই দিন দেরি হলো সেহেতু সুইং শুরু করতেও সমস্যা হয়, আমাদের দেরি দেখে এখানেও অন্য স্টাইল শুরু করে দিয়েছে , সুতরাং বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে অপেক্ষাকৃত কম দক্ষতা সম্পন্ন লাইনে প্রোডাকশন শুরু করতে হয় , প্রথম দিন থেকেই কর্ম নৈপুণ্য অবশ্যই ডেলিভারি ডেট কে হুমকির মুখে ফেলতে শুরু করে।
আমরা কিন্তু আমাদের দৈনন্দিন কাজ কর্ম নিয়ে প্রচন্ড ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছি , এই সব ঘটনা চোখের অন্তরালে ঘটেই চলছে। আমরা জানবো , একটু দেরিতে কিন্তু সর্বনাশ যা হওয়ার তা হয়েই যাবে !
১১. এরপর প্রোডাক্টিভিটি এফিসিয়েন্সি নিয়ে আমাদের দুঃখ নিয়ে নতুন করে বলার কিছুই নাই , আমরা ৩০% এফিসিয়েন্সি তে প্রোডাকশন করছি বিগত ২ দশক ধরে , এর মাঝে কোনো কিছু একটা মিসিং থাকার কারণে অথবা প্রসেস বটলনেক এর কারণে প্রোডাকশন টার্গেট আমাদের লক্ষ্য অনুযায়ী হবেনা।
১২. প্রোডাকশন লাইনের সবচেয়ে অপরিহার্য অপারেটরের অনুপস্থিতি পুরো প্রোডাকশন কে কখনো কখনো থামিয়ে দিচ্ছে।
১৩. বায়ারের কিউসি স্যাম্পল অনুযায়ী অবিকল প্রোডাকশন না হলে পুরো লাইনকে থামিয়ে আবার নতুন করে শিখিয়ে পড়িয়ে সমস্যা ঠিকঠাক করে আবার প্রোডাকশন চালু করছি। আমাদের শিপমেন্টের তারিখ কিন্তু মোটামুটি ঘনিয়ে আসছে।
১৪. এর মাঝে লাইন চিফের হঠাৎ আগমন ঘটে রাতে আপনি যখন বাসায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন , আগামী কাল সকাল থেকে আরো দুইটা অমুক মেশিনের ব্যবস্থা না করতে পারি তাহলে শিপমেন্ট এর বারোটা বেজে যাবে !
১৫. রাতের মধ্যেই যে কোনো উপায়ে মেশিন ব্যবস্থা আপনাকেই কিন্তু করতে হয় যাতে দুপুরের ভিতর মেশিন গুলো ফ্যাক্টরিতে ঢুকে, মেশিন ছিলোনা বলে ঐদিন কিন্তু প্রোডাকশন আরো কমে গেছে।
১৬. এখন দৌড়াদৌড়ি করে যে কোনো মূল্যে ম্যানেজ করার অপচেষ্টা শুরু করতে হবেই , আবার ওভারটাইম , ফায়ারফাইটিং , পুরো ম্যানেজমেন্ট টীম এর সবচেয়ে দামী সময়ের এর অপচয়।
১৭. বায়ারের কিউসি চলে আসে তার নির্ধারিত সময় অনুযায়ী , পুরো এসর্ট অনুযায়ী প্রোডাকশন বা প্যাকিং কিন্তু তখনও শেষ হয়নি , এরই মাঝে দৌড়ঝাঁপ করে যে কোনো ভাবে ম্যানেজ করে এই যাত্রায় বেঁচে যাওয়া , নিজেকে ধিক্কার দেয়া , পরের বার থেকে কোনো ভাবে এই সমস্যা গুলো হতে দেবোনা বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া।
আমরা এটাকে বলছি “সঠিক সময়ে সঠিক কাজ না করার একটা অসভ্য প্রভাব ” এই অসভ্য প্রভাবের ফলশ্রুতিতে আমাদের সুদূরপ্রসারী অনেকগুলো ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।
১. আমাদের কর্ম দক্ষতার মান একটা নিদৃষ্ট স্থানে এসে দিনের পর দিন আটকে আছে।
২. আমাদের একটা ধারণা বদ্ধমূল হয়ে গেছে যে গত তিন দশক ধরে চেষ্টা করে আমরা এতটুকু পথ পাড়ি দিয়েছি , এর চেয়ে বেশি আর কিইবা করা সম্ভব।
৩. আমরা আমাদের কর্ম দক্ষতা কোথায় কোথায় নষ্ট হচ্ছে তার মূল কারন এখন পর্যন্ত আমরা নির্ধারণ না করে , অনিয়ন্ত্রিত, অপরিকল্পিত, অনুৎপাদনশীল ভাবে কাজ করেই যাচ্ছি।
৪. সর্বশেষ যে কুপ্রভাব আমাদের পুরো জাতির উপরে পড়েছে তা হলো, প্রতিযোগীরা আমাদের পিছনে ফেলে দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা তৈরিই হতে পারিনি তাদের মোকাবিলা করার জন্য।
এর থেকে সমাধানের উপায় কি ?
১. আমাদের জাতিগতভাবে প্রথমত সচেতন হতে হবে।
২. আমরা ৮০% সময় নষ্ট করছি অসচেতন ভাবে , এই সময়টাকে কি ভাবে পরিপূর্ণ অর্থবহ করতে পারি তার একটা স্বচ্ছ পরিকল্পনা থাকতে হবে।
৩. ৬০ দিনের কাজের পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা কার্যাদেশ পাওয়ার (PO Sheet) দিন থেকেই তৈরী করে নিয়ে , প্রথম দিন থেকে কাজে নেমে পড়তে হবে। আমরা প্রথম কয়েকদিন গাফিলতি করেই কাটিয়ে দিতে দিতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি।
৪. কাজের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগের সমন্বয় সাধনের জন্য একটা জবাবদিহি মূলক, স্বচ্ছ, পরিপূরক ও স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. সকলে মিলে একটা প্লাটফর্ম গড়ে তুলতে হবে, যেখানে সবাই মিলে দিনপঞ্জি নির্ধারণ করবো , কে কোন কাজটা কত তারিখে করবো , কোন একটা কাজ বাদ পড়লে তা কিভাবে সবাই তাড়াতাড়ি জানিয়ে দেব এবং সকলে মিলে তাকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেব দ্রুত ওই সমস্যার সমাধান করবো।
৬. আগামী সাত দিন কি কি কাজ কাকে কখন করতে হবে তার তার স্বয়ংক্রিয় রিপোর্ট সবার মেইলে এবং মুঠোফোনে সকাল সাতটায় পাঠিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। কেউ যাতে বলতে না পারে আমার মনে ছিলোনা , আমি তো জানিনা , আমি দেখছি !
৭. কিভাবে আমরা ৬০ দিনের কাজ ভবিষ্যতে ৩০ দিনে করবো তার একটা কর্মপন্থার সূচক নির্ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে।
৮. এই সকল কাজ করার জন্য পরীক্ষিত, সারা বিশ্বে সমাদৃত স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম ক্রয় করতে হবে।
আদ্ভেরতিসেমেন্তস
লেখাঃ
Habibur Rahman ( Linked In)
Country Head - Quantity Improvement Solutions
Website:
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন