গজ কাপড়
অনেকেই আছেন যারা গজ কাপড়ের বর্তমান দর-দাম এবং প্রাপ্যতা নিয়ে অজ্ঞাত রয়েছেন। তাদের জন্যই আজকের এই আয়োজন,এই লেখাটিতে কম-বেশি সব রকম গজ কাপড়ের দাম দেওয়ার চেষ্টা করা হলো,চলুন এবার জেনে নেই।
বেক্সি ভয়েলঃ
যুগ যুগ ধরে বেক্সি ভয়েল সবার কাছেই সমাদৃত। এর স্থায়ীত্ব ও রঙের গুণাগুণ ভাল বলে এর কদরও বেশি। আজকাল ইয়োক,এমব্রয়ডারী,এপ্লিক,লেস/পুঁতির কাজ ব্যপক জনপ্রিয় ;আর এ কাজ গুলো বেক্সি ভয়েল দিয়ে অনায়াসে করা যায়। আর আমাদের দেশের বর্তমান আবহাওয়ার প্রেক্ষিতে বেক্সি ভয়েলের জুড়ি মেলা ভার। প্রতি গজ এক রঙা বেক্সি ভয়েলের দাম ১১০ টাকা এবং ছাপা বেক্সি ভয়েল একেক গজ ১৩০ টাকা।
লিলেনঃ
খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে গজ কাপড়ের ব্যবসায়ে বিপুল পরিবর্তন নিয়ে এসেছে লিলেন কাপড়। অনেক আগে থেকেই এর আবির্ভাব থাকলেও কিছুদিন ধরেই হঠাৎ করে এর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে উঠে যায়। বাজারে কয়েক প্রকারের লিলেন কাপড় দেখতে পাওয়া যায়। এ কাপড় গুলোও এক রঙা ও ছাপা দুটোই হয়ে থাকে। গুণগত মান ভেদে দামের তারতম্য পরিলক্ষিত হয়। এক রঙা লিলেনের দাম জায়গা ও কাপড়ের মানের উপর ভিত্তি করে ২০০-৩০০ টাকা গজ এবং ছাপার ক্ষেত্রে এর দাম প্রতি গজে ৫০-১৫০ টাকা বেশি হতে দেখা যায়। এ কাপড়ের আরো একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এগুলো সাড়ে তিন হাত পানা। তাই অল্প কাপড়েই নকশা আনতে পারবেন ভালভাবে।
সিনথেটিকঃ
দোকান গুলোতে হরেক রকম সিনথেটিক দেখা যায়। তন্মধ্যে রয়েছে জর্জেট, শিফন, সিল্ক, মসলিন, নেট, ভেলভেট এবং আরো অনেক রকম। উৎসবের দিনগুলোতে এ কাপড়গুলো নিয়ে আসে ভিন্ন মাত্রা। তাছাড়া এখন চলছে বর্ষা কাল। সিনথেটিক কাপড় বর্ষায় আদর্শ।
জর্জেটঃ
বাজারে অনেক রকম জর্জেট পাওয়া যায়। তার মধ্যে ওয়েটলেস,মাখন,চিনন,লেজার,৬০ গ্রাম অন্যতম। এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক প্রত্যেকটার সম্পর্কে আলাদাভাবে- ওয়েটলেস জর্জ়েট- এর স্বচ্ছতা তথা ট্রান্সপারেন্সি মোটামুটি ধরণের। এটি ব্যবহার করলে আপনাকে আলাদা করে আরো একটি আস্তর সেলাই করতে হবে জামার নিচে অথবা বানিয়ে নিতে হবে সেমিজ। মান ভেদে ওয়েটলেস জর্জ়েটের দাম গজ প্রতি ১০০-১৫০ টাকার মধ্যে। মাখন জর্জেট- অনেকে একে মাখন সিল্ক ও বলে থাকে। এটি মোটে ও স্বচ্ছ্ব নয়, তাই এর জন্য আলাদা কোন কিছু সংযোজনের ও প্রয়োজন পড়ে না। মার্কেট ভেদে এর দাম প্রতি গজ ১৪০-২০০ এর মধ্য পাবেন।
লেজার জর্জেটঃ-
লেজার কাপড় বেশ নরম ও মোলায়েম হয়। যদিও এর স্বচ্ছ্বতা ওয়েটলেসের মতই এটি বেশি আরামদায়ক। এর সহজলভ্যতা একটু কম এবং দাম ১৫০-১৮০ টাকা প্রতি গজ। ৬০ গ্রাম- অন্য সব জর্জেটের তুলনায় এর মসৃণতা একটু কম এবং শাড়ি বানানোর জন্য বেশি উপযুক্ত। এতে এম্ব্রয়ডারী বা অন্য্যন্য হাতের কাজ করাতে সুবিধা হয়। এর গজ ১২০-১৫০ টাকার মধ্যে।
শিফনঃ-
বাজারে সাধারণত দুই রকম শিফন পাওয়া যায়,এক রঙা এবং কয়েক রঙা। কাপড়ের গুণগত মান ভেদে শিফনের দাম গজ প্রতি ১৫০থেকে শুরু করে কয়েক হাজার ও হয়ে থাকে। তবে আমাদের দেশে যেগুলো পাওয়া যায় সেগুলোর দাম ১০০-২০০ এর মধ্যে ।
সিল্কঃ
- ঈদ বা যেকোন উৎসবেই সিল্কের কদর বরাবরই বেশি। কয়েক রকম সিল্কের প্রাপ্যতা বেশি; সপুরা, দোয়েল, ধুপিয়ান ইত্যাদি। সপুরা সিল্ক এর নিজস্ব দোকান রয়েছে সাইন্স ল্যাবের কাছাকাছিতে। এর গজ ২৬০ টাকা করে। আর দোয়েল সিল্ক পাওয়া যায় ফ্যশন হাউস গুলোর আনস্টীচড কর্ণারে। দোকান ভেদে এর দামের ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। আর ধুপিয়ানের মান ভেদে এর দাম রয়েছে প্রতি গজ ১০০-২০০ টাকার মধ্যে। কিছু কিছু দোকানে অনেক সময় ভাল দামের মধ্যে হাফ সিল্ক ও পেয়ে যেতে পারেন।
নেটঃ
আজকাল নেটের কাপড় ও বেশ জনপ্রিয়। শাড়ি কিংবা কামিজের হাতায় বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে এ নেট। নেট ও দুই ধরণের হয়। পাতলা ও মোটা। শাড়ির জন্য পাতলা কিন্তু ভাল মানের হওয়া জরুরী। আপনি যদি পারদর্শী না হোন তবে নেট কিনে ঠকার আশংকা রয়েছে। তাই চেষ্টা করবেন অভিজ্ঞ কাউকে সাথে নিয়ে যেতে। এর গজ ২৫০ থেকে শুরু করে ৫৫০ পর্যন্ত।
ভেলভেটঃ
- কিছুদিন ধরে ভেলভেটের জনপ্রিয়তার পালেও ঢেঊ খেলছে। ভেলভেট দিয়ে সম্পুর্ন ড্রেস তৈরীর প্রচলন তেমন না থাকলেও জামা/কামিজের অংশ বিশেষে এর ব্যবহার লক্ষণীয় হারে বেড়েছে। বর্ডার,হাতা/মুহুরী,পাইপিং,ঘের,কলার এবং অর্ধেক গলায় এর ব্যবহার হচ্ছে বেশি। ভেলভেটের কোয়ালিটি ভেদে এর দাম গজ প্রতি ২৫০-৫৫০ পর্যন্ত হতে পারে। সব ধরণের গজ কাপড়ের বিশাল সমাহার হচ্ছে ইসলামপুর। এখান থেকে আপনি কিনতে পারেন পাইকারী মূল্যে যে কোন কাপড়। এছাড়া ঢাকার চাদনী চক,মৌচাক,আনারকলি সুপার মার্কেট,ইস্টার্ন প্লাজা,রাজধানী সুপার মার্কেট,হারেম প্লাজা,রাজলক্ষী শপিং মল থেকে সংগ্রহ করতে পারেন আপনার পছন্দের গজ কাপড়টি। তবে আর দেরি কেন? আজই বেড়িয়ে পড়ুন গজ কাপড়ের খোঁজে এবং তৈরী করিয়ে নিন বিশেষ দিনের বিশেষ পোশাকটি ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন