অল ওভার প্রিন্টিং প্রসেস A To Z | All Over Printing AOP - Textile Lab | Textile Learning Blog
AOP টেক্সটাইল সেক্টরের এক অনন্য শাখা। এটা ফেব্রিকে আলাদা একটা ভ্যালু সৃষ্টি করে। । একজন নবীন AOP এর ছাত্র হিসাবে আমি আমার কিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই।


প্রিন্টিং এর পুরো বিষয়টাকে আমরা ৪ টা ভাগে ভাগ করতে পারি।

১. ডিজাইন এন্ড এনগ্রেভিং

২. রেসিপি ফরমুলেশন এন্ড কালার মেকিং

৩. প্রিন্টিং এবং

৪ ফিনিশিং ( লুপ টু কমপ্যাকশন)

আমরা যদি স্টেপ বাই স্টেপ আলোচনা করি তবে আমাদের সবার জন্যই বুঝতে ও প্রশ্ন করতে সুবিধা হবে। তাই আমি আমার নলেজ থেকে যতটুকু পারি লেখার চেষ্টা করব। আমি সব সময়ই সঠিক বলব এমনটা নয়। আমার মূল উদ্দ্যেশ্য নলেজ শেয়ারিং। আশাকরি, সকলের সহযোগীতা পাব।





১. ডিজাইন মেকিং কে বলা হয় হার্ট অব প্রিন্টিং। যদি ডিজাইন কনসেপ্ট সঠিক না হয় তাহলে আপনি মেশিনে, কালারে যতই ক্যারিকাচারি করেন না কেন ডিজাইন মোটিফ ভালো হবে না। ডিজাইন মেকিং এর সময় যে বিষয়গুলা সাধারণত খেয়াল রাখতে হয় সেগুলি হল:

১. প্রিন্ট টেকনিক

২. নাম্বার অব কালার

৩. অবজেক্ট সার্পনেস

৪. টাইপ অব প্রিন্টিং মেশিন। ( রোটারী/ ফ্লাট)

একধাপে ডিজাইন সাধারণত ওকে হয় না। তাই কাগজ প্রিন্টিং করে মিলিয়ে দেখা কিংবা হ্যান্ড স্ক্রিন করে একটা ব্লক প্রিন্ট করে দেখার পদ্ধতি মোটামুটি সব জায়গাতেই বিদ্যমান। তবে এক্সপার্ট ডিজাইনাররা পূর্বের অভিজ্ঞতা সব সময়ই কাজে লাগান এবং তারা এর মাধ্যমে ওয়ার্কলোড অনেকটা কমিয়ে আনেন।


ডিজাইনের পরের ধাপে রয়েছে এনগ্রেভিং। এখানে স্ক্রিন মেস সিলেকশনের সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে।

১. প্রিন্ট টাইপ

২. ডিজাইন আউটপুট

৩. মেশিন টাইপ।

সাধারণত দুই প্রকারের মেস ব্যবহার হয়।

১. নিকেল মেস ( রোটারী স্ক্রীন)

২. পলিস্টার মেস ( ফ্লাট/ হ্যান্ড স্ক্রীন)

নিকেল মেস ২৫ থেকে ২২৫ হোল/ স্কয়ার ইঞ্চি হয়ে থাকে। এটা মূলত স্ক্রীনের ওপেন এরিয়া নির্দেশ করে। নাম্বার যত কম ওপেন এরিয়া তত বেশী। তাই বেশী কাভারেজ এর জন্য কম মেস ব্যবহার করা হয় এবং হাই ডিটেইলস এর জন্য হাই মেস ব্যবহার করা হয়। এখন কত কম কিংবা কত বেশী মেস ব্যবহার করব এটা নির্ভর করে কি প্রকারের প্রিন্ট করব তার উপর। কেননা প্রিন্ট টেকনিকের সাথে ভিসকোসিটির সম্পর্ক আছে। রোটারী মেসের আবার কয়েকটা ধরন আছে যেমন নরমাল, হেক্সা, পেন্টা, র‍্যানডম, নোভা ইত্যাদি। এগুলি মূলত হোলের / স্ক্রীনের ফাকা স্থানের ধরন বুঝায়। এর ফলে ওপেন এরিয়াতেও পরিবর্তন হয়। যেমন, ১২৫ মেসের র‍্যানডম ও পেন্টা স্ক্রীনের ওপেন এরিয়া একই নয়। নিকেল রিলিজ প্রবলেম রোধের জন্য সাপ্লাইয়ার সাধারণত নোভা স্ক্রীন ব্যবহার করতে বলে।

এখন আসি এনগ্রেভিং এর ধরনে। লেজার এনগ্রেভিং কিংবা এক্সপোজড এনগ্রেভিং সচারচর ব্যবহৃত হয়। এজন্য এ দুই ক্ষেত্রে কোটিং কেমিক্যালের ধরনও আলাদা। এক্সপোজিং সিস্টেমের জন্য যে কোটিং কেমিক্যাল ব্যবহার হয় তার সাথে নির্দিষ্ট পরিমানে ফটো সেনসিটাইজার ব্যবহার করা হয়। ফটো সেনসিটাইজার কেমিক্যালের উপর আলো পড়লে সেটা শক্ত হয়ে যায়। তাই এক্সপোজিং করার আগে স্ক্রীনের যে জায়গাগুলি ওপেন থাকবে সেজায়গাগুলিতে ডিজাইন অনুযায়ী ইংক দেওয়া হয়। এ ধরনের মেশিনের মধ্যে ইংকজেট মেশিন একটা। ইংক থাকার কারনে ওই জায়গাগুলিতে আলো পড়তে পারে না ফলে শক্ত হয় না। পড়ে পানি দিয়ে ওয়াশ করলে প্রলেপটা উঠে যায় এবং ডিজাইন ওপেন হয়। আর এক প্রকারের লেজার মেশিন আছে সেখানে এই এক্সপোজিং এর কাজ করা যায়। অর্থাৎ, ডিজাইনের জায়গাগুলিকে বাদ দিয়ে বাকী জায়গাগুলিতে আলো ফেলে। যার ফলে যেখানে আলো পড়ে কেবল ওই জায়গাগুলি শক্ত হয় এবং ওয়াশ করলে বাকী জায়গাগুলির কোটিং কেমিক্যাল উঠে গিয়ে ডিজাইন ওপেন হয়। এখানে আর আলাদা এক্সপোজিং এর দরকার হয় না।


উপরের দুই পদ্ধতির জন্য আরেকটা কেমিক্যাল ব্যবহার হয় সেটা হল হার্ডেনার। ওয়াশিং শেষ করে স্ক্রীন শুকিয়ে হার্ডেনার দিয়ে লেপে দিলে কোটিং কেমিক্যালের শক্তি আরেকটু বাড়ে। তবে প্রথমবার ব্যবহারের পর পরবর্তীতে যতই ব্যবহার করিনা কেন আর হার্ড করা যায় না। রোটারী মেশিনের জন্য আরেকটা পদ্ধতি হল লেজার কাটিং মেশিন। যেহেতু এটা লেজারের মাধ্যমে কাটিং করে ডিজাইন ওপেন করে তাই এক্ষেত্রে ফটো সেনসিটাইজার কেমিক্যালের দরকার হয় না। এজন্য হিটে কিউরিং হয় এমন কেমিক্যাল দিয়ে কোটিং করা হয়। কিউরিং হাই টেম্পারেচারে করা হয়। সাধারণত ১৮০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে ১.৫ থেকে ৩ ঘন্টা।






আপনাদের ভালো লাগলে পরবর্তীতে রেসিপি ফর্মুলেশন নিয়ে লিখব। আশাকরি সাথে থাকবেন এবং কোন কিছু বেশী বা কম লিখলে ধরিয়ে দিবেন। ধন্যবাদ।

লিখেছেনঃ
সাব্বির আল মাহমুদ রাজিব

অল ওভার প্রিন্টিং প্রসেস A To Z | All Over Printing AOP

AOP টেক্সটাইল সেক্টরের এক অনন্য শাখা। এটা ফেব্রিকে আলাদা একটা ভ্যালু সৃষ্টি করে। । একজন নবীন AOP এর ছাত্র হিসাবে আমি আমার কিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই।


প্রিন্টিং এর পুরো বিষয়টাকে আমরা ৪ টা ভাগে ভাগ করতে পারি।

১. ডিজাইন এন্ড এনগ্রেভিং

২. রেসিপি ফরমুলেশন এন্ড কালার মেকিং

৩. প্রিন্টিং এবং

৪ ফিনিশিং ( লুপ টু কমপ্যাকশন)

আমরা যদি স্টেপ বাই স্টেপ আলোচনা করি তবে আমাদের সবার জন্যই বুঝতে ও প্রশ্ন করতে সুবিধা হবে। তাই আমি আমার নলেজ থেকে যতটুকু পারি লেখার চেষ্টা করব। আমি সব সময়ই সঠিক বলব এমনটা নয়। আমার মূল উদ্দ্যেশ্য নলেজ শেয়ারিং। আশাকরি, সকলের সহযোগীতা পাব।





১. ডিজাইন মেকিং কে বলা হয় হার্ট অব প্রিন্টিং। যদি ডিজাইন কনসেপ্ট সঠিক না হয় তাহলে আপনি মেশিনে, কালারে যতই ক্যারিকাচারি করেন না কেন ডিজাইন মোটিফ ভালো হবে না। ডিজাইন মেকিং এর সময় যে বিষয়গুলা সাধারণত খেয়াল রাখতে হয় সেগুলি হল:

১. প্রিন্ট টেকনিক

২. নাম্বার অব কালার

৩. অবজেক্ট সার্পনেস

৪. টাইপ অব প্রিন্টিং মেশিন। ( রোটারী/ ফ্লাট)

একধাপে ডিজাইন সাধারণত ওকে হয় না। তাই কাগজ প্রিন্টিং করে মিলিয়ে দেখা কিংবা হ্যান্ড স্ক্রিন করে একটা ব্লক প্রিন্ট করে দেখার পদ্ধতি মোটামুটি সব জায়গাতেই বিদ্যমান। তবে এক্সপার্ট ডিজাইনাররা পূর্বের অভিজ্ঞতা সব সময়ই কাজে লাগান এবং তারা এর মাধ্যমে ওয়ার্কলোড অনেকটা কমিয়ে আনেন।


ডিজাইনের পরের ধাপে রয়েছে এনগ্রেভিং। এখানে স্ক্রিন মেস সিলেকশনের সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে।

১. প্রিন্ট টাইপ

২. ডিজাইন আউটপুট

৩. মেশিন টাইপ।

সাধারণত দুই প্রকারের মেস ব্যবহার হয়।

১. নিকেল মেস ( রোটারী স্ক্রীন)

২. পলিস্টার মেস ( ফ্লাট/ হ্যান্ড স্ক্রীন)

নিকেল মেস ২৫ থেকে ২২৫ হোল/ স্কয়ার ইঞ্চি হয়ে থাকে। এটা মূলত স্ক্রীনের ওপেন এরিয়া নির্দেশ করে। নাম্বার যত কম ওপেন এরিয়া তত বেশী। তাই বেশী কাভারেজ এর জন্য কম মেস ব্যবহার করা হয় এবং হাই ডিটেইলস এর জন্য হাই মেস ব্যবহার করা হয়। এখন কত কম কিংবা কত বেশী মেস ব্যবহার করব এটা নির্ভর করে কি প্রকারের প্রিন্ট করব তার উপর। কেননা প্রিন্ট টেকনিকের সাথে ভিসকোসিটির সম্পর্ক আছে। রোটারী মেসের আবার কয়েকটা ধরন আছে যেমন নরমাল, হেক্সা, পেন্টা, র‍্যানডম, নোভা ইত্যাদি। এগুলি মূলত হোলের / স্ক্রীনের ফাকা স্থানের ধরন বুঝায়। এর ফলে ওপেন এরিয়াতেও পরিবর্তন হয়। যেমন, ১২৫ মেসের র‍্যানডম ও পেন্টা স্ক্রীনের ওপেন এরিয়া একই নয়। নিকেল রিলিজ প্রবলেম রোধের জন্য সাপ্লাইয়ার সাধারণত নোভা স্ক্রীন ব্যবহার করতে বলে।

এখন আসি এনগ্রেভিং এর ধরনে। লেজার এনগ্রেভিং কিংবা এক্সপোজড এনগ্রেভিং সচারচর ব্যবহৃত হয়। এজন্য এ দুই ক্ষেত্রে কোটিং কেমিক্যালের ধরনও আলাদা। এক্সপোজিং সিস্টেমের জন্য যে কোটিং কেমিক্যাল ব্যবহার হয় তার সাথে নির্দিষ্ট পরিমানে ফটো সেনসিটাইজার ব্যবহার করা হয়। ফটো সেনসিটাইজার কেমিক্যালের উপর আলো পড়লে সেটা শক্ত হয়ে যায়। তাই এক্সপোজিং করার আগে স্ক্রীনের যে জায়গাগুলি ওপেন থাকবে সেজায়গাগুলিতে ডিজাইন অনুযায়ী ইংক দেওয়া হয়। এ ধরনের মেশিনের মধ্যে ইংকজেট মেশিন একটা। ইংক থাকার কারনে ওই জায়গাগুলিতে আলো পড়তে পারে না ফলে শক্ত হয় না। পড়ে পানি দিয়ে ওয়াশ করলে প্রলেপটা উঠে যায় এবং ডিজাইন ওপেন হয়। আর এক প্রকারের লেজার মেশিন আছে সেখানে এই এক্সপোজিং এর কাজ করা যায়। অর্থাৎ, ডিজাইনের জায়গাগুলিকে বাদ দিয়ে বাকী জায়গাগুলিতে আলো ফেলে। যার ফলে যেখানে আলো পড়ে কেবল ওই জায়গাগুলি শক্ত হয় এবং ওয়াশ করলে বাকী জায়গাগুলির কোটিং কেমিক্যাল উঠে গিয়ে ডিজাইন ওপেন হয়। এখানে আর আলাদা এক্সপোজিং এর দরকার হয় না।


উপরের দুই পদ্ধতির জন্য আরেকটা কেমিক্যাল ব্যবহার হয় সেটা হল হার্ডেনার। ওয়াশিং শেষ করে স্ক্রীন শুকিয়ে হার্ডেনার দিয়ে লেপে দিলে কোটিং কেমিক্যালের শক্তি আরেকটু বাড়ে। তবে প্রথমবার ব্যবহারের পর পরবর্তীতে যতই ব্যবহার করিনা কেন আর হার্ড করা যায় না। রোটারী মেশিনের জন্য আরেকটা পদ্ধতি হল লেজার কাটিং মেশিন। যেহেতু এটা লেজারের মাধ্যমে কাটিং করে ডিজাইন ওপেন করে তাই এক্ষেত্রে ফটো সেনসিটাইজার কেমিক্যালের দরকার হয় না। এজন্য হিটে কিউরিং হয় এমন কেমিক্যাল দিয়ে কোটিং করা হয়। কিউরিং হাই টেম্পারেচারে করা হয়। সাধারণত ১৮০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে ১.৫ থেকে ৩ ঘন্টা।






আপনাদের ভালো লাগলে পরবর্তীতে রেসিপি ফর্মুলেশন নিয়ে লিখব। আশাকরি সাথে থাকবেন এবং কোন কিছু বেশী বা কম লিখলে ধরিয়ে দিবেন। ধন্যবাদ।

লিখেছেনঃ
সাব্বির আল মাহমুদ রাজিব

1 টি মন্তব্য:

Unknown বলেছেন...

খুব সুন্দর হয়েছে, আরোও বিস্তারিত চাই। অনেক উপকৃত হয়েছি বস।