রপ্তানীমুখী গার্মেন্টস শিল্পের জনক নুরুল কাদের | Garments Export History of Bangladesh - Textile Lab | Textile Learning Blog
রপ্তানীমুখী গার্মেন্টস শিল্পের জনক

আমি ভাবছি চিন্তাটাকে খোলাসা করা জন্য বিভিন্ন ইনোভেশনের গল্পগুলো জানা হোক। সেটা আইটি এবং আইটির বাইরেও। এবং সেটা শুরু হতে পারে আমাদের শতভাগ রপ্তানীমুখী গার্মেন্টস শিল্পের জনক, মুক্তিযোদ্ধা নুরুল কাদেরের উদ্ভাবন ব্যাক টু ব্যাক এলসি দিয়ে।

নুরুল কাদের দেশ গার্মেন্টসের মালিক হিসাবে পরিচিত। তাঁর সম্পর্কে দুইটি কথা বলে রাখা ভাল তাহলে ব্যাপারটা হয়তো ধরতে সুবিধা হবে। ৬ ভাইবোনের মধ্যে নুরুল কাদের সবার ছোট। ১৯৭০ সালে তিনি পাবনার জেলা প্রশাসক ছিলেন। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর কয়েকদিন পাবনাকে মুক্ত রেখেছিলেন এবং চালু করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রশাসন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে সরকারের সচিব এবং যুদ্ধের পর প্রথম সংস্থাপন সচিব হোন। তাঁর হাত দিয়ে সৃষ্টি হয় বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন।

পরে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে নিভৃতে চলে যান। সেই সময়ের অনেকখানি দেশের বাইরে কাটিয়েছেন। ১৯৭৫ সালে স্বেচ্ছা নির্বাসন থেকে দেশে ফিরে আসেন।

১৯৭৬ সালের বাংলাদেশটাকে আমরা প্রথমে দেখি। স্বাধীনতার স্থপতিকে মেরে ফেলা হয়েছে। জনমুখী কর্মকাণ্ডের বারোটা বাজিয়ে নানান ধরণের প্যাচ ট্যাচ শুরু হয়েছে দেশে। শিল্পায়নের কোন খবর নাই। থাকার কোন কারণও নাই।

স্বাধীনতার আগে আমাদের শিল্পায়ন বলতে পাটকলগুলো। আদমজী তখন এশিয়ার সবচেয়ে বড় পাটকল। এছাড়া পশ্চিম পাকিস্তানে কয়েকটি ছোট ছোট বস্ত্রকল গড়ে উঠেছে। যুদ্ধের পর আমাদের পাটকলগুলো জাতীয়করণ করা হয়েছে। তবে, বিপ্লবের পর অন্যান্য দেশে যা করেছে সেই কাজটা না করে মানে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে দেশটাকে না দিয়ে পাকিস্তান ফেরৎ লোকজনের হাতে এগুলো চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে অচিরেই এগুলো লোকসানী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। এই পরিণতি দেখে কেও তেমন একটা কিছু করার কথা ভাবেনি। ব্যবসা বলতে ইন্ডেন্টিং আর ট্রেডিং।

১৯৭৬ সালে নুরুল কাদেরও তাই শুরু করলেন। আমেরিকার ইউনিয়ন ওয়েল কোম্পানি, সুইজারল্যান্ডের ভাললার এজি, জেনারেল মোটর, ক্যাম্পোটেক্সের ইন্ডেন্ট দেওয়া শুরু করলেন। আর ভাবতে শুরু করলেন নতুন কিছু করা যায় কি না। তার চিন্তার একটা অংশ জুড়ে থাকতো মেয়েদের কথা, নারীর কাজ।
কেন?

নুরুল কাদের নিজেই ব্যাখ্যা করেছেন। ৬ ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট কাদেরের বড় তিন বোন ছিল। ছোট বেলায় কাদের আপাদের পেছনে ঘুরে ঘুরে সময় কাটাতো। তারা সবাই শিক্ষিত, বুদ্ধিমতী ও স্বাধীন। এদের মধ্যে ছোটজনের কাছে কাদের শিখেছে কেমন করে রান্না করতে হয়, সেলাই করতে হয় কিংবা বাঁজাতে হয় সেতার। মায়ের সঙ্গে বোনদের নিয়ে কাদের তাঁর পরিবারের মেয়েদের কথা বলতো -“ফুল অব উইজডম”। কাজে মহিলাদের ব্যাপারে কাদেরের খুব গভীর শ্রদ্ধা ছিল। সেলাই ফোঁড়াই-এর ব্যাপারটাও মাথায় ছিল।
সে সময় কোরিয়ান দাইয়ু কোম্পানির চেয়ারম্যান কিম উ চং-এর সঙ্গে তার দেখা, পরিচয় এবং আলাপ হয়। কোরিয়ানদের তখন মাথায় বাড়ি। মার্কিন মুলুকের সেই সময়কার বিধাতা পুরুষ রিচার্ড নিক্সন এমএফএ নামে একটা জিনিস করেছেন। যার ফলে কোরিয়ার মত দেশগুলো আমেরিকাতে গার্মেন্টস পন্য রপ্তানীতে কোটার সম্মুখীন হয়। দাইয়ুর চেয়ারম্যান তাই খুঁজছিলেন এমন কোন দেশ যেখানে এখনো শার্ট তৈরি একটা শিল্প হয়ে ওঠেনি।

১৮৭৮ সালে বাংলাদেশে রপ্তানী করে এমন মোট নয়টি গার্মেন্টস ইউনিট ছিল। এগুলোর মিলিত রপ্তানীর পরিমাণ ছিল বছরে ১০ লক্ষ ডলারেরও কম। এগুলোর বেশিরভাগই খুব ছোট এবং তারা দেশের জন্যও গার্মেন্টস বানাতো। সেই রকমই একটা হল ৬০-এর দশকে প্রতিষ্ঠিত রিয়াজ গার্মেন্টস। রিয়াজ স্টোরের টেইলারিং শাখা হিসাবেই সেটির জন্ম। ১৫ বছর ধরে এই কাজ করার পর, স্বাধীনতার পর, এটি স্বতন্ত্র ইউনিট হিসাবে যাত্রা শুরু করে । নাম দেওয়া হয় রিয়াজ গার্মেন্টস লিমিটেড। ১৯৭৮ সালে রিয়াজ গার্মেন্টস পুরুষদের ১০ হাজার পিস শার্ট রপ্তানি করে প্যারিসের একটি প্রতিষ্ঠানে। আয় হল ১ কোটি ৩০ লক্ষ ফ্র্যান্ক।
এরকম পরিস্থিতিতে কিম উয়ু চঙ্গের প্রস্তাব বিবেচনা করে নুরুল কাদের একটি জয়েন্ট ভেঞ্চার করার কথা ভাবলেন। ঠিক হল শতভাগ রপ্তানীমুখী গার্মেন্টস গড়া হবে। ১৯৭৮ সালের ৪ জুলাই নুরুল কাদেরের সঙ্গে দাইয়ু কর্পোরেশনের ঐতিহাসিক চুক্তিটি স্বাক্ষর হয়। ঠিক হল নুরুল কাদের করবেন সকল আর্থিক বিনিয়োগ আর দাইয়ু দেবে জ্ঞান-সহায়তা।

চুক্তি স্বাক্ষর করলে কী হবে? লোক পাবে কই?

১৯৭৮ সালের অক্টোবর মাসের দুই তারিখ। সকাল থেকেই মধুর কেন্টিনে ব্যপক উত্তেজনা। কারণ স্বাধীনতার পর আর কোন রিক্রুটমেন্ট কাজে এত বড় বিজ্ঞাপন ছাপা হয়নি। আধাপৃষ্ঠা জুড়ে ছাপা হয়েছে এমন এক চাকরির খবর যা আগে কেও কখনো ভাবেনি। তরুনদের বেশিরভাগই আনন্দিত, কিছুটা দ্বিধাগ্রস্তও বটে। তবে, অনেকেই হামলে পড়ে সব নোট নিতে শুরু করেছে নতুন এক সম্ভাবনার। বিজ্ঞাপন ছাপা হয়েছে দেশ গার্মেন্টেসের। চাহিদা ১৩০ জন তরুন-তরুনী যারা ছয় মাসের জন্য চলে যাবেন দক্ষিণ কোরিয়ার পুষন শহরে। সেখানে দাইয়ুর কারখানায় শিখতে হবে শার্ট বানানোর কাজ।
ঐ ১৩০ জন ছয়মাস পরে ফিরল দেশে। চট্টগ্রামের কালুরঘাটে গড়ে উঠলো দেশ গার্মেন্টস। ৬ লাইন, ৬০০ কর্মী আর বছরে ৫০ লক্ষ পিস শার্ট তৈরির সক্ষমতা। তের লক্ষ ডলারোর মোট বিনিয়োগ। এক লক্ষ ২০ হাজার পিস শার্ট জার্মানীর এমএনআর কোম্পানির কাছে রপ্তানী করে দেশ শুরু করলো তার শার্ট রপ্তানীর ব্যবসা।

রপ্তানীমুখী গার্মেন্টস শিল্পের জনক নুরুল কাদের | Garments Export History of Bangladesh

রপ্তানীমুখী গার্মেন্টস শিল্পের জনক

আমি ভাবছি চিন্তাটাকে খোলাসা করা জন্য বিভিন্ন ইনোভেশনের গল্পগুলো জানা হোক। সেটা আইটি এবং আইটির বাইরেও। এবং সেটা শুরু হতে পারে আমাদের শতভাগ রপ্তানীমুখী গার্মেন্টস শিল্পের জনক, মুক্তিযোদ্ধা নুরুল কাদেরের উদ্ভাবন ব্যাক টু ব্যাক এলসি দিয়ে।

নুরুল কাদের দেশ গার্মেন্টসের মালিক হিসাবে পরিচিত। তাঁর সম্পর্কে দুইটি কথা বলে রাখা ভাল তাহলে ব্যাপারটা হয়তো ধরতে সুবিধা হবে। ৬ ভাইবোনের মধ্যে নুরুল কাদের সবার ছোট। ১৯৭০ সালে তিনি পাবনার জেলা প্রশাসক ছিলেন। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর কয়েকদিন পাবনাকে মুক্ত রেখেছিলেন এবং চালু করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রশাসন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে সরকারের সচিব এবং যুদ্ধের পর প্রথম সংস্থাপন সচিব হোন। তাঁর হাত দিয়ে সৃষ্টি হয় বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন।

পরে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে নিভৃতে চলে যান। সেই সময়ের অনেকখানি দেশের বাইরে কাটিয়েছেন। ১৯৭৫ সালে স্বেচ্ছা নির্বাসন থেকে দেশে ফিরে আসেন।

১৯৭৬ সালের বাংলাদেশটাকে আমরা প্রথমে দেখি। স্বাধীনতার স্থপতিকে মেরে ফেলা হয়েছে। জনমুখী কর্মকাণ্ডের বারোটা বাজিয়ে নানান ধরণের প্যাচ ট্যাচ শুরু হয়েছে দেশে। শিল্পায়নের কোন খবর নাই। থাকার কোন কারণও নাই।

স্বাধীনতার আগে আমাদের শিল্পায়ন বলতে পাটকলগুলো। আদমজী তখন এশিয়ার সবচেয়ে বড় পাটকল। এছাড়া পশ্চিম পাকিস্তানে কয়েকটি ছোট ছোট বস্ত্রকল গড়ে উঠেছে। যুদ্ধের পর আমাদের পাটকলগুলো জাতীয়করণ করা হয়েছে। তবে, বিপ্লবের পর অন্যান্য দেশে যা করেছে সেই কাজটা না করে মানে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে দেশটাকে না দিয়ে পাকিস্তান ফেরৎ লোকজনের হাতে এগুলো চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে অচিরেই এগুলো লোকসানী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। এই পরিণতি দেখে কেও তেমন একটা কিছু করার কথা ভাবেনি। ব্যবসা বলতে ইন্ডেন্টিং আর ট্রেডিং।

১৯৭৬ সালে নুরুল কাদেরও তাই শুরু করলেন। আমেরিকার ইউনিয়ন ওয়েল কোম্পানি, সুইজারল্যান্ডের ভাললার এজি, জেনারেল মোটর, ক্যাম্পোটেক্সের ইন্ডেন্ট দেওয়া শুরু করলেন। আর ভাবতে শুরু করলেন নতুন কিছু করা যায় কি না। তার চিন্তার একটা অংশ জুড়ে থাকতো মেয়েদের কথা, নারীর কাজ।
কেন?

নুরুল কাদের নিজেই ব্যাখ্যা করেছেন। ৬ ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট কাদেরের বড় তিন বোন ছিল। ছোট বেলায় কাদের আপাদের পেছনে ঘুরে ঘুরে সময় কাটাতো। তারা সবাই শিক্ষিত, বুদ্ধিমতী ও স্বাধীন। এদের মধ্যে ছোটজনের কাছে কাদের শিখেছে কেমন করে রান্না করতে হয়, সেলাই করতে হয় কিংবা বাঁজাতে হয় সেতার। মায়ের সঙ্গে বোনদের নিয়ে কাদের তাঁর পরিবারের মেয়েদের কথা বলতো -“ফুল অব উইজডম”। কাজে মহিলাদের ব্যাপারে কাদেরের খুব গভীর শ্রদ্ধা ছিল। সেলাই ফোঁড়াই-এর ব্যাপারটাও মাথায় ছিল।
সে সময় কোরিয়ান দাইয়ু কোম্পানির চেয়ারম্যান কিম উ চং-এর সঙ্গে তার দেখা, পরিচয় এবং আলাপ হয়। কোরিয়ানদের তখন মাথায় বাড়ি। মার্কিন মুলুকের সেই সময়কার বিধাতা পুরুষ রিচার্ড নিক্সন এমএফএ নামে একটা জিনিস করেছেন। যার ফলে কোরিয়ার মত দেশগুলো আমেরিকাতে গার্মেন্টস পন্য রপ্তানীতে কোটার সম্মুখীন হয়। দাইয়ুর চেয়ারম্যান তাই খুঁজছিলেন এমন কোন দেশ যেখানে এখনো শার্ট তৈরি একটা শিল্প হয়ে ওঠেনি।

১৮৭৮ সালে বাংলাদেশে রপ্তানী করে এমন মোট নয়টি গার্মেন্টস ইউনিট ছিল। এগুলোর মিলিত রপ্তানীর পরিমাণ ছিল বছরে ১০ লক্ষ ডলারেরও কম। এগুলোর বেশিরভাগই খুব ছোট এবং তারা দেশের জন্যও গার্মেন্টস বানাতো। সেই রকমই একটা হল ৬০-এর দশকে প্রতিষ্ঠিত রিয়াজ গার্মেন্টস। রিয়াজ স্টোরের টেইলারিং শাখা হিসাবেই সেটির জন্ম। ১৫ বছর ধরে এই কাজ করার পর, স্বাধীনতার পর, এটি স্বতন্ত্র ইউনিট হিসাবে যাত্রা শুরু করে । নাম দেওয়া হয় রিয়াজ গার্মেন্টস লিমিটেড। ১৯৭৮ সালে রিয়াজ গার্মেন্টস পুরুষদের ১০ হাজার পিস শার্ট রপ্তানি করে প্যারিসের একটি প্রতিষ্ঠানে। আয় হল ১ কোটি ৩০ লক্ষ ফ্র্যান্ক।
এরকম পরিস্থিতিতে কিম উয়ু চঙ্গের প্রস্তাব বিবেচনা করে নুরুল কাদের একটি জয়েন্ট ভেঞ্চার করার কথা ভাবলেন। ঠিক হল শতভাগ রপ্তানীমুখী গার্মেন্টস গড়া হবে। ১৯৭৮ সালের ৪ জুলাই নুরুল কাদেরের সঙ্গে দাইয়ু কর্পোরেশনের ঐতিহাসিক চুক্তিটি স্বাক্ষর হয়। ঠিক হল নুরুল কাদের করবেন সকল আর্থিক বিনিয়োগ আর দাইয়ু দেবে জ্ঞান-সহায়তা।

চুক্তি স্বাক্ষর করলে কী হবে? লোক পাবে কই?

১৯৭৮ সালের অক্টোবর মাসের দুই তারিখ। সকাল থেকেই মধুর কেন্টিনে ব্যপক উত্তেজনা। কারণ স্বাধীনতার পর আর কোন রিক্রুটমেন্ট কাজে এত বড় বিজ্ঞাপন ছাপা হয়নি। আধাপৃষ্ঠা জুড়ে ছাপা হয়েছে এমন এক চাকরির খবর যা আগে কেও কখনো ভাবেনি। তরুনদের বেশিরভাগই আনন্দিত, কিছুটা দ্বিধাগ্রস্তও বটে। তবে, অনেকেই হামলে পড়ে সব নোট নিতে শুরু করেছে নতুন এক সম্ভাবনার। বিজ্ঞাপন ছাপা হয়েছে দেশ গার্মেন্টেসের। চাহিদা ১৩০ জন তরুন-তরুনী যারা ছয় মাসের জন্য চলে যাবেন দক্ষিণ কোরিয়ার পুষন শহরে। সেখানে দাইয়ুর কারখানায় শিখতে হবে শার্ট বানানোর কাজ।
ঐ ১৩০ জন ছয়মাস পরে ফিরল দেশে। চট্টগ্রামের কালুরঘাটে গড়ে উঠলো দেশ গার্মেন্টস। ৬ লাইন, ৬০০ কর্মী আর বছরে ৫০ লক্ষ পিস শার্ট তৈরির সক্ষমতা। তের লক্ষ ডলারোর মোট বিনিয়োগ। এক লক্ষ ২০ হাজার পিস শার্ট জার্মানীর এমএনআর কোম্পানির কাছে রপ্তানী করে দেশ শুরু করলো তার শার্ট রপ্তানীর ব্যবসা।

কোন মন্তব্য নেই: