একজন মার্চেন্ডাইজার এর জীবনী | Life of a Merchandiser - Textile Lab | Textile Learning Blog
মানুষ মনে করে মার্চেন্ডাইজিং চাকরিতে কত্ত মজা !!!

লেখক : সাইফুল রোমেন ভাই


কিন্তু যারা এই চাকরি করে তারাই বোঝে এর ঠেলা কত। দূর থেকে দেখা যায় এরা এসি রুমে বসে সারাদিন কম্পিউটারের সামনে বসে কী কী যেন করছে। অথচ সেই মার্চেন্ডাইজারের মুখের দিকে তাকালে বোঝা যায় সে কত টেনশনে আছেন। একটা বাস্তব উদাহরন দিচ্ছি-

আযিমের বাচ্চা আজ তিন দিন ধরে অসুস্থ, ডাক্তার একবার দেখানো হয়েছে, ঔষধও খাওয়ানো হচ্ছে কিন্তু অসুখ সারছে না। দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানো দরকার। এদিকে অফিসে আজ বায়ার আসবে। তাদের জন্য ফ্যাক্টরি থেকে যেসব স্যাম্পল আসার কথা তার অর্ধেকও আসেনি। অগত্যা আযিম নিজেই বিভিন্ন ফ্যাক্তরি ফ্যাক্টরি ঘুরে স্যাম্পল কালেকশন করছে। এদিকে বাসা থেকে বার বার ফোন আসছে- দ্রুত চলে আস, বাচ্চাটার অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আযিম ছাড়া আর কেউ ফ্যাক্টরি থেকে স্যাম্পল কালেকশন করতে পারবে না কারণ এই বায়ারের টেস্ট সেই একমাত্র জানে। আযিম জানে সে আজ ছুটি পাবে না। তবুও ভয়ে ভয়ে বায়িং হাউজের মালিককে ফোন দিল "স্যার, এই পর্যন্ত দুইটা ফ্যাক্তরিতে যেতে পেরেছি, রাস্তায় প্রচন্ড জ্যাম....

আযিমকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে স্যার বললেন "বাকী স্যাম্পল গুলো নিয়ে বিকাল পাঁচটার মধ্যে যেভাবেই হোক হাজির হতে হবে। এই বায়ার হারালে তোমাদের রাখা আর না রাখা সমান"

চাকরির হুমকী পেয়ে আযিম কিছুক্ষণ থ মেরে রইল। এমনিতেই চাকরির বাজার মন্দা যাচ্ছে তার উপরে এই মুহুর্তে চাকরি গেলে বিপদ হবে। আযিম বাসায় ফোন করে বলল "ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করে দেও, আমি সন্ধ্যার মধ্যে আসছি"

ফ্যাক্টরি থেকে স্যাম্পল কালেকশন করতে করতে সন্ধ্যা ছয়টা বেজে গেল। গাজীপুর থেকে সোজা হোটেল রেডিসনে পৌঁছুতে পৌঁছুতে রাত সাড়ে আটটা বেজে গেল। এমডি স্যার হোটেলের লবিতেই বসে আছেন। বায়ার এখন ব্যস্ত অন্য পার্টির সাথে। রাত দশটায় ওরা সুযোগ পেলে, রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত মিটিং চলল। এদিকে সারাদিন আযিমের নাওয়া খাওয়া হয় নি। হোটেল রেডিস র আশে পাশে কোন টং দোকান নেই যে কলা রুটি চা খাবে। রেডিসনের মত ফাইভ স্টারে নাস্তা করার মত ক্যাপাসিটি আযিমের নেই।
এই যে আযিম সারাদিন না খেয়ে আছে, তার বাচ্চা হাসপাতালে অথচ তার মুখে হাসির কমতি নেই। না হাসলে যে চাকরি থাকবে না। এই হাসির নাম 'ভেটকি'।

এর মধ্যে ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়ে গিয়েছে। পাশের বাসার ভদ্র মহিলা খুব সাহায্য করলেন। তা নাহলে দুই বছরের বাচ্চা নিয়ে আযিমের স্ত্রী খুব বিপদে পড়তেন।

আযিম যখন রাত একটায় শিশু হাসপাতালে পৌঁছে তখন বস ফোন দিলেন "আযিম, আগামীকাল খুব আর্লি অফিসে আসতে হবে। বায়ার সকাল দশটার মধ্যে অফিসে ঢুকবে।"

মার্চেন্ডাইজারের মডেল Abdullah Al Mamun Rasel

একজন মার্চেন্ডাইজার এর জীবনী | Life of a Merchandiser

মানুষ মনে করে মার্চেন্ডাইজিং চাকরিতে কত্ত মজা !!!

লেখক : সাইফুল রোমেন ভাই


কিন্তু যারা এই চাকরি করে তারাই বোঝে এর ঠেলা কত। দূর থেকে দেখা যায় এরা এসি রুমে বসে সারাদিন কম্পিউটারের সামনে বসে কী কী যেন করছে। অথচ সেই মার্চেন্ডাইজারের মুখের দিকে তাকালে বোঝা যায় সে কত টেনশনে আছেন। একটা বাস্তব উদাহরন দিচ্ছি-

আযিমের বাচ্চা আজ তিন দিন ধরে অসুস্থ, ডাক্তার একবার দেখানো হয়েছে, ঔষধও খাওয়ানো হচ্ছে কিন্তু অসুখ সারছে না। দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানো দরকার। এদিকে অফিসে আজ বায়ার আসবে। তাদের জন্য ফ্যাক্টরি থেকে যেসব স্যাম্পল আসার কথা তার অর্ধেকও আসেনি। অগত্যা আযিম নিজেই বিভিন্ন ফ্যাক্তরি ফ্যাক্টরি ঘুরে স্যাম্পল কালেকশন করছে। এদিকে বাসা থেকে বার বার ফোন আসছে- দ্রুত চলে আস, বাচ্চাটার অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আযিম ছাড়া আর কেউ ফ্যাক্টরি থেকে স্যাম্পল কালেকশন করতে পারবে না কারণ এই বায়ারের টেস্ট সেই একমাত্র জানে। আযিম জানে সে আজ ছুটি পাবে না। তবুও ভয়ে ভয়ে বায়িং হাউজের মালিককে ফোন দিল "স্যার, এই পর্যন্ত দুইটা ফ্যাক্তরিতে যেতে পেরেছি, রাস্তায় প্রচন্ড জ্যাম....

আযিমকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে স্যার বললেন "বাকী স্যাম্পল গুলো নিয়ে বিকাল পাঁচটার মধ্যে যেভাবেই হোক হাজির হতে হবে। এই বায়ার হারালে তোমাদের রাখা আর না রাখা সমান"

চাকরির হুমকী পেয়ে আযিম কিছুক্ষণ থ মেরে রইল। এমনিতেই চাকরির বাজার মন্দা যাচ্ছে তার উপরে এই মুহুর্তে চাকরি গেলে বিপদ হবে। আযিম বাসায় ফোন করে বলল "ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করে দেও, আমি সন্ধ্যার মধ্যে আসছি"

ফ্যাক্টরি থেকে স্যাম্পল কালেকশন করতে করতে সন্ধ্যা ছয়টা বেজে গেল। গাজীপুর থেকে সোজা হোটেল রেডিসনে পৌঁছুতে পৌঁছুতে রাত সাড়ে আটটা বেজে গেল। এমডি স্যার হোটেলের লবিতেই বসে আছেন। বায়ার এখন ব্যস্ত অন্য পার্টির সাথে। রাত দশটায় ওরা সুযোগ পেলে, রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত মিটিং চলল। এদিকে সারাদিন আযিমের নাওয়া খাওয়া হয় নি। হোটেল রেডিস র আশে পাশে কোন টং দোকান নেই যে কলা রুটি চা খাবে। রেডিসনের মত ফাইভ স্টারে নাস্তা করার মত ক্যাপাসিটি আযিমের নেই।
এই যে আযিম সারাদিন না খেয়ে আছে, তার বাচ্চা হাসপাতালে অথচ তার মুখে হাসির কমতি নেই। না হাসলে যে চাকরি থাকবে না। এই হাসির নাম 'ভেটকি'।

এর মধ্যে ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়ে গিয়েছে। পাশের বাসার ভদ্র মহিলা খুব সাহায্য করলেন। তা নাহলে দুই বছরের বাচ্চা নিয়ে আযিমের স্ত্রী খুব বিপদে পড়তেন।

আযিম যখন রাত একটায় শিশু হাসপাতালে পৌঁছে তখন বস ফোন দিলেন "আযিম, আগামীকাল খুব আর্লি অফিসে আসতে হবে। বায়ার সকাল দশটার মধ্যে অফিসে ঢুকবে।"

মার্চেন্ডাইজারের মডেল Abdullah Al Mamun Rasel

কোন মন্তব্য নেই: