Textile Lab | Textile Learning Blog
বাংলাদেশের সেরা ১০ গার্মেন্টস ইন্ড্রাস্ট্রি | Top Ten Garments Exporter in Bangladesh 
বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানির শীর্ষ স্থানটি বিদেশি উদ্যোক্তার দখলেই আছে। শীর্ষ রপ্তানিকারকের তালিকায় এবারও শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার কিহাক সাংয়ের  ইয়াংওয়ান করপোরেশনের। দ্বিতীয় স্থানে আছে দেশীয় মালিকানাধীন কোম্পানি হা-মীম গ্রুপ। দুই বছর ধরে এই দুই গ্রুপের রপ্তানি কমলেও তারা শীর্ষ স্থান দুটি ধরে রেখেছে।

বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে সেরা দশে জায়গা করে নেওয়া বাকি আট শিল্পগোষ্ঠী হলো মণ্ডল গ্রুপ, অনন্ত গ্রুপ, ডিবিএল গ্রুপ, প্যাসিফিক গ্রুপ, পলমল গ্রুপ, স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ, বেক্সিমকো ও স্কয়ার গ্রুপ। এই আট অবস্থানে এক-দুই বছরের ব্যবধানে কেউ এগিয়েছে, কেউ পিছিয়েছে, কেউবা আবার ছিটকে পড়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রপ্তানির তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রথম আলো তৈরি পোশাক শিল্পের শীর্ষ ১০ শিল্পগোষ্ঠীর এই তালিকা তৈরি করেছে। এনবিআরের হিসাব থেকে স্থানীয় রপ্তানি ও নমুনা রপ্তানি বাদ দিয়ে প্রকৃত রপ্তানির হিসাব নেওয়া হয়েছে।

এনবিআর থেকে প্রাপ্ত গত তিন অর্থবছরের রপ্তানির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এক বা দুই বছরের ব্যবধানে সেরা দশে স্থান পাওয়া ১০ গ্রুপের সম্মিলিত রপ্তানি কমেছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে সেরা দশের সম্মিলিত রপ্তানি ছিল প্রায় ৪৮৬ কোটি ডলারের, পরের বছর তা কমে ৪৬৮ কোটি ডলারে দাঁড়ায়। আর সর্বশেষ গত অর্থবছরে এই ১০ প্রতিষ্ঠানের সম্মিলিত রপ্তানির পরিমাণ ছিল প্রায় ৪৫৯ কোটি ডলার।
শীর্ষ গ্রুপগুলোর রপ্তানি কমার প্রভাব সামগ্রিকভাবে তৈরি পোশাক রপ্তানিতেও পড়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরকে দেশের পোশাক রপ্তানিতে সোনালি সময় বলা যায়। ওই অর্থবছর রপ্তানি হয় ৪ হাজার ৩৪ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। পরের বছর রপ্তানি ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ কমে যায়। বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি আরও সোয়া ১ শতাংশ কমে ৩ হাজার ৬৮৮ কোটি ডলারে দাঁড়ায়।

১.  ইয়াংওয়ান গ্রুপ
২. হা-মীমের গ্রুপ
৩. মণ্ডলের গ্রুপ
৪. অনন্ত গ্রুপ
৫.  ডিবিএল গ্রুপ
৬.প্যাসিফিক গ্রুপ
৭. পলমল গ্রুপ
৮. স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ
৯. বেক্সিমকো গ্রুপ
১০. স্কয়ার গ্রুপ

রপ্তানি চালান শুল্কায়নের পর মাশুল আদায় হলে এনবিআরের হিসাবে ওঠে। এনবিআরের রপ্তানির তথ্যে আগের অর্থবছরের চালানও রয়েছে, যেগুলোর রপ্তানি মাশুল পরিশোধ হয়েছে গত অর্থবছরে। প্রতিবছর কমবেশি দেড় শ কোটি ডলারের পুরোনো রপ্তানির তথ্য থাকে, যেগুলোও হিসাবে নেওয়া হয়েছে। কারণ, গত অর্থবছরে রপ্তানি হওয়া কিছুসংখ্যক চালানের মাশুল পরিশোধ না হওয়ায় তা চলতি অর্থবছরের হিসাবে আসবে।

১.  ইয়াংওয়ান গ্রুপ

বাংলাদেশে একক প্রতিষ্ঠান হিসেবে রপ্তানিতে প্রথম বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছিল দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়াংওয়ান গ্রুপ। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি প্রচ্ছন্ন রপ্তানি ছাড়া ৯৮ কোটি ৫৩ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানি করে। বিদায়ী অর্থবছরে তাদের রপ্তানি ১৮ শতাংশ কমলেও শীর্ষ অবস্থানেই রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার এই গ্রুপ।
গত অর্থবছর ইয়াংওয়ান ৮০ কোটি ৬৪ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। তৈরি পোশাকের বাইরে ব্যাগ, জুতা ও পোশাকশিল্পের কাঁচামালসহ নানা পণ্য রপ্তানি করে ইয়াংওয়ান। গত অর্থবছরে তৈরি পোশাকের বাইরে প্রায় ১৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে প্রতিষ্ঠানটি, যেখানে প্রচ্ছন্ন রপ্তানিও রয়েছে।

গত অর্থবছরে বিশ্বের ৫২টি দেশে রপ্তানি হয় ইয়াংওয়ানের তৈরি পোশাক। গত অর্থবছর ইয়াংওয়ান ৩ কোটি ৪৩ লাখ পিস তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। বাংলাদেশ থেকে উচ্চমূল্যের পোশাক রপ্তানি করে তারা। বিশ্বখ্যাত জার্মান ব্র্যান্ড অ্যাডিডাসকে ধরে রেখেছে ইয়াংওয়ানই।

বাংলাদেশে প্রথম বেসরকারি রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের সূচনাও হয় ইয়াংওয়ানের হাত ধরে। এই রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে ইয়াংওয়ানের কারখানার সংখ্যা বাড়ছে। গ্রুপটি শতভাগ পুনঃপ্রক্রিয়াজাত পলিয়েস্টার সুতা থেকে বিভিন্ন ধরনের পোশাক তৈরি করে রপ্তানি করছে। অ্যাডিডাস, রালফ লরেনের মতো বিশ্বখ্যাত ক্রেতারা নিচ্ছে এসব পোশাক।

২. হা-মীমের গ্রুপ

দেশীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শীর্ষ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক হা-মীম গ্রুপ। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে গ্রুপটি ৬৬ কোটি ৬৬ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে সামগ্রিকভাবে দ্বিতীয় শীর্ষ স্থান দখল করেছিল। দুই বছরের ব্যবধানে তাদের রপ্তানি কমেছে ১২ শতাংশ। বিদায়ী অর্থবছরে গ্রুপটি রপ্তানি করেছে ৫৮ কোটি ৬৭ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক। রপ্তানি কমলেও দ্বিতীয় শীর্ষ স্থানেই রয়েছে হা-মীম।
বিশ্বের ৬৩টি দেশে পোশাক রপ্তানি করে হা-মীম। তবে তাদের বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। গত অর্থবছর গ্রুপটি ৪৩ কোটি ৬০ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে যুক্তরাষ্ট্রে, যা তাদের মোট রপ্তানির ৭৪ শতাংশ। তাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য প্যান্ট।
হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের তৈরি পোশাকের মূল বাজার যুক্তরাষ্ট্র। গত অর্থবছর সেখানে তৈরি পোশাকের বিক্রির পাশাপাশি মূল্যও কমে যায়। সে কারণে আমাদেরও রপ্তানির পরিমাণ কমে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজার ঘুরে দাঁড়ালে আমাদের গ্রুপের রপ্তানি আবার বাড়বে বলে আশা রাখি।’

৩. মণ্ডলের গ্রুপ

মণ্ডল গ্রুপের তৈরি পোশাকের রপ্তানির তালিকায় নতুন নতুন দেশ যুক্ত হচ্ছে। দুই বছর আগে ৬৭টি দেশে পোশাক রপ্তানি করেছিল গ্রুপটি। এখন তা ৭১টি দেশে উন্নীত হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে রপ্তানি বাড়ছে মণ্ডল গ্রুপের। গত অর্থবছরে গ্রুপটির রপ্তানি ৫ শতাংশ বেড়ে ৫০ কোটি ৫০ লাখ ডলারে উন্নীত হয়েছে। দুই বছর আগে তা ছিল ৪৭ কোটি ৮৮ লাখ ডলার।
মণ্ডলের রপ্তানি তালিকায় টি-শার্টই বেশি। মোট রপ্তানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ টি-শার্ট। গত অর্থবছরে গ্রুপটি ২৩ কোটি ৬৯ লাখ পিস পোশাক রপ্তানি করেছে। রপ্তানির প্রধান গন্তব্য ইউরোপের দেশগুলো।

মণ্ডল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল মজিদ মণ্ডল। বর্তমানে তাঁর ছেলে আবদুল মমিন মণ্ডল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

৪. অনন্ত গ্রুপ

বিদায়ী অর্থবছরে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে চমক দেখিয়েছে অনন্ত গ্রুপ। প্রথমবারের মতো রপ্তানির শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে গ্রুপটি। প্রথমবারই একলাফে চতুর্থ স্থান দখলে নিয়েছে তারা। অনন্তের ছয়টি তৈরি পোশাক কারখানা গত অর্থবছরে রপ্তানি করেছে ৪৬ কোটি ৫৭ লাখ ডলার। এই রপ্তানি তার আগের বছরের তুলনায় ৯৬ শতাংশ বেশি।


গত অর্থবছরে বিশ্বের ৬৩টি দেশে প্রায় সাড়ে আট কোটি তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে অনন্ত গ্রুপ। তাদের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে গ্যাপ, মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার, লেভি স্ট্রস, ওল্ড নেভি, পিভিএইচ, এইচঅ্যান্ডএমের মতো বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড। গ্রুপটি স্যুট, সোয়েটার, নারীদের অন্তর্বাসের পাশাপাশি সাধারণ পোশাকও রপ্তানি করছে।
১৯৯১ সালে শিল্পপতি হুমায়ুন জহীরের হাত ধরে ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডের নিজস্ব ভবনে যাত্রা শুরু হয়েছিল অনন্ত অ্যাপারেলসের। ১৯৯৩ সালে আততায়ীর হাতে হুমায়ুন জহীর নিহত হওয়ার পর প্রতিষ্ঠানের হাল ধরেন তাঁর স্ত্রী কামরুন নাহার জহীর। বর্তমানে তিনি গ্রুপের চেয়ারম্যান। বড় ছেলে শরীফ জহীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ছোট ছেলে আসিফ জহীর উপব্যবস্থাপনা পরিচালক।

বর্তমানে আদমজী ইপিজেড, গাজীপুর, কাঁচপুর ও চট্টগ্রাম ইপিজেডে মোট সাতটি কারখানা রয়েছে অনন্ত গ্রুপের। তাদের কর্মিসংখ্যা এখন ২৬ হাজার।

জানতে চাইলে অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ জহীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘করোনার পরে ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ায় পোশাকশিল্পে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। সে সময় কৌশল হিসেবে আমরা নতুন নতুন ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান যুক্ত করেছি। বৈচিত্র্যময় পণ্য রপ্তানি ও উচ্চ দামের পোশাকে নজর দিয়েছি। এ কারণে রপ্তানি বেড়েছে। আমাদের সামনে লক্ষ্য হলো, পোশাকের কাঁচামাল দেশে উৎপাদন করা। এ জন্য নরসিংদীতে আমরা দেশে প্রথম শতভাগ সিনথেটিক কাপড় তৈরির কারখানায় বিনিয়োগ করেছি। এক বছরের মধ্যে কারখানাটি তৈরি হলে রপ্তানিতে মূল্য সংযোজনও বাড়বে।’

৫.  ডিবিএল গ্রুপ

দুই বছর আগে ডিবিএল গ্রুপের রপ্তানি ছিল অর্ধবিলিয়ন ডলার। সেবার তৃতীয় শীর্ষ অবস্থানে ছিল শিল্পগোষ্ঠীটি। গত অর্থবছর তারা ৪৬ কোটি ১৭ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে পঞ্চম অবস্থানে জায়গা করে নেয়।
ইউরোপ-আমেরিকা থেকে শুরু করে এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার ৫৮টি দেশে পোশাক রপ্তানি করছে গ্রুপটি। গত অর্থবছরে ১৮ কোটি ৭৯ লাখ পিস পোশাক রপ্তানি করেছে গ্রুপটি। সেই হিসাবে প্রতিদিন ডিবিএলের কারখানায় তৈরি হচ্ছে পাঁচ লাখ পিসের বেশি পোশাক। ডিবিএলের বড় দুই ক্রেতা সিঅ্যান্ডএ ও এইচঅ্যান্ডএম।

১৯৯১ সালে ঢাকার ১০২ গ্রিন রোডে ছোট কারখানা দিয়ে দুলাল ব্রাদার্স লিমিটেড বা ডিবিএল গ্রুপের যাত্রা শুরু। ডিবিএল গ্রুপ গড়ে তুলেছেন চার ভাই—আবদুল ওয়াহেদ, এম এ জব্বার, এম এ রহিম ও এম এ কাদের। পোশাক দিয়ে শুরু হলেও সিরামিক টাইলস, তথ্যপ্রযুক্তি, টেলিযোগাযোগ ও ড্রেজিং ব্যবসায় নাম লিখিয়েছে ডিবিএল।

জানতে চাইলে ডিবিএল গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান এম এ রহিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আগামী এক-দুই বছর নতুন কোনো বিনিয়োগে যাব না। বর্তমানে যেসব প্রতিষ্ঠান আছে, সেগুলোকে শক্তিশালী করার দিকেই বেশি নজর দেব। বিশেষ করে অপচয় হ্রাস, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও তদারকি ব্যবস্থা শক্ত করাই মূল লক্ষ্য।’

৬.প্যাসিফিক গ্রুপ

প্যাসিফিকের পোশাকের গড় মূল্য ৯.৩৬ ডলার
রপ্তানিতে ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা চট্টগ্রামের প্যাসিফিক জিনস গ্রুপের রপ্তানি সামান্য বেড়েছে। গত অর্থবছর গ্রুপটি ৪০ কোটি ৫০ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে, যা এক বছর আগের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি। এ সময়ে গ্রুপটি ৪৭ দেশে ৪ কোটি ৩১ লাখ পিস পোশাক রপ্তানি করেছে। প্যাসিফিকের পোশাকের বড় ক্রেতা জাপানের বহুজাতিক খুচরা বিক্রয় প্রতিষ্ঠান ইউনিক্লো। তাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য ডেনিম পোশাক।
চার দশক আগে এনজেডএন ফ্যাশন দিয়ে তৈরি পোশাকশিল্পে যাত্রা শুরু করেছিলেন প্যাসিফিক জিনস গ্রুপের প্রয়াত উদ্যোক্তা মো. নাসির উদ্দিন। তাঁর হাত ধরেই বাংলাদেশে জিনস রপ্তানি শুরু হয়। বর্তমানে তাঁদের কারখানার সংখ্যা ৯।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ওভেন পোশাক রপ্তানি করে আসছিল প্যাসিফিক জিনস গ্রুপ। তারপর তাদের রপ্তানি তালিকায় যুক্ত হয় নিট পোশাক। যদিও গ্রুপটির রপ্তানি পোশাকের সিংহভাগই ডেনিম। বাংলাদেশের বেশির ভাগ কারখানা সস্তা পোশাক উৎপাদন করলেও প্যাসিফিকের পোশাকের গড় রপ্তানি মূল্য বেশি। গত অর্থবছরে গ্রুপটির প্রতিটি পোশাক গড়ে ৯ ডলার ৩৬ সেন্টে রপ্তানি হয়েছে।

জানতে চাইলে প্যাসিফিক জিনস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ডেনিম পোশাকের পাশাপাশি বৈচিত্র্যময় পোশাক তৈরিতে ঝুঁকছি। আবার পোশাকের পরিমাণ বাড়ানোর চেয়ে উচ্চমান ও উচ্চমূল্যের পোশাকের দিকে নজর দিচ্ছি। এতে পোশাকের পরিমাণ খুব বেশি না বাড়লেও মূল্য সংযোজন বাড়বে।’

৭. পলমল গ্রুপ:

পলমলের পোশাক রপ্তানি ৬৭ দেশে
সপ্তম অবস্থানে থাকা পলমল গ্রুপের রপ্তানি দুই বছর ধরে কমছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে গ্রুপটি ৪৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। ধারাবাহিকভাবে কমে গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা ৩৭ কোটি ৮৩ লাখ ডলারে নেমে আসে।
গত অর্থবছরে গ্রুপটি ১৪ কোটি পিস পোশাক রপ্তানি করেছে বিশ্বের ৬৭ দেশে। গ্রুপটি মূলত নিট পোশাক রপ্তানি করে। নিট পোশাকের মধ্যে রয়েছে টি-শার্ট, পোলো, শর্টস ইত্যাদি। গ্রুপটির পোশাকের শীর্ষ দুই ক্রেতা ওল্ড নেভি ও ওয়াল-মার্ট।

চার দশক আগে উদ্যোক্তা নূরুল হক সিকদারের হাতে যাত্রা শুরু হয় পলমল গ্রুপের। বর্তমানে তাঁর ছেলে নাফিস সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

৮. স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ

দুই বছর আগে ৪৮ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করে পঞ্চম শীর্ষ অবস্থানে ছিল স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ। তবে দুই বছর ধরে রপ্তানি কমে গ্রুপটি অষ্টম অবস্থানে নেমেছে। গত অর্থবছরে গ্রুপটি রপ্তানি করেছে ৩৬ কোটি ২৮ লাখ ডলার।
স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ মূলত ওভেন পোশাক রপ্তানি করে। ওভেনে তাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য ট্রাউজার প্যান্ট। গত অর্থবছরে ৩২টি দেশে সোয়া পাঁচ কোটি পিস তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে গ্রুপটি। তাদের পোশাকের প্রধান ক্রেতার তালিকায় রয়েছে মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার, গ্যাপ, আমেরিকান ইগল ইত্যাদি।

চার দশক আগে দুই প্রকৌশলী বন্ধু মোশাররফ হোসেন ও আতিকুর রহমানের হাত ধরে পোশাক খাতে স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের যাত্রা শুরু হয়েছিল। এখন দ্বিতীয় প্রজন্মও যুক্ত হয়েছে গ্রুপটির নেতৃত্বে।

জানতে চাইলে স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘জাপানের একটি ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে চলে যাওয়ার কারণে আমাদের রপ্তানি কমে গেছে। তবে আমরা নতুন ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান খুঁজছি। সেই সঙ্গে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ানোর চেষ্টা করছি।’

৯. বেক্সিমকো গ্রুপ

বেক্সিমকো গ্রুপের রপ্তানি গত তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম ছিল গত অর্থবছরে। গ্রুপটি গত অর্থবছর রপ্তানি করেছে ৩১ কোটি ৪৯ লাখ ডলারের পোশাক। রপ্তানি কমায় অষ্টম থেকে নবম স্থানে নেমে গেছে গ্রুপটি।
গ্রুপটির ১১টি প্রতিষ্ঠান গত অর্থবছরে ৩৯ দেশে সাড়ে ৭ কোটি পোশাক রপ্তানি করেছে। তাদের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ইন্ডিটেক্স। বেক্সিমকোর বৈচিত্র্যময় পোশাকের তালিকায় রয়েছে আইসোলেশন গাউন ও কাভার গাউন। গত অর্থবছর যুক্তরাষ্ট্রে ২ কোটি ১২ লাখ আইসোলেশন গাউন রপ্তানি করেছে।

বেক্সিমকোর মালিকানায় রয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। সরকার পতনের পর তিনি এখন কারাগারে।

১০. স্কয়ার গ্রুপ

তৈরি পোশাক খাতে কচ্ছপ গতিতে এগোচ্ছে স্কয়ার গ্রুপ। গত পাঁচ বছরে সব সময়ই প্রবৃদ্ধিতে থেকেছে গ্রুপটি। সর্বশেষ এক বছরের ব্যবধানে গ্রুপটির রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ২ শতাংশ। গত অর্থবছরে গ্রুপটি রপ্তানি করেছে ৩০ কোটি ৫৬ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক। এর ফলে শীর্ষ দশে জায়গা করে নিয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় এই শিল্পগোষ্ঠী।

১৯৫৮ সালে চার বন্ধুর হাত ধরে স্কয়ারের যাত্রা শুরু হয়। মূল কান্ডারি ছিলেন স্যামসন এইচ চৌধুরী। তাঁর প্রয়াণের পর সন্তানেরাই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন দেশের অন্যতম পুরোনো এই শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে। যুক্ত হয়েছেন নাতি-নাতনিরা। ওষুধ দিয়ে শুরু করলেও স্কয়ার গ্রুপের ব্যবসা বর্তমানে স্বাস্থ্যসেবা, ভোগ্যপণ্য, বস্ত্র ও তৈরি পোশাক, মিডিয়া, টিভি ও তথ্যপ্রযুক্তি, নিরাপত্তাসেবা, ব্যাংক ও ইনস্যুরেন্স, হেলিকপ্টার ও কৃষিপণ্যে বিস্তৃত।

বর্তমানে স্কয়ার গ্রুপের তৈরি পোশাক ৫৫ দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এই তালিকায় আছে হুগো বস, রালফ লরেন, মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার, পুমার মতো বিশ্বখ্যাত ক্রেতারাও।

জানতে চাইলে স্কয়ার টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান তপন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘তৈরি পোশাকে আমাদের আরও বিনিয়োগের পরিকল্পনা আছে। কারণ, চাহিদা অনেক। তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও তারপরের ঘটনার প্রভাব তৈরি পোশাক খাতের জন্য বড় ধাক্কা। শ্রমিকদের নিরাপত্তা, কারখানার সুরক্ষা ও ক্রয়াদেশের পণ্য সময়মতো পাওয়া নিয়ে বিদেশি ক্রেতাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে আগামী মৌসুমের ২৫ শতাংশ ক্রয়াদেশ অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়ে গেছে। সাম্প্রতিক সময়ের কারখানায় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ভালো লক্ষণ নয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আমাদের দেশের বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।’

বাংলাদেশের সেরা ১০ গার্মেন্টস ইন্ড্রাস্ট্রি | Top Ten Garments Exporter in Bangladesh

ফিনিশিং কার্যপ্রনালীঃ
১. প্রথমে ব্যাচ কার্ড দেখবে, রীব, কলার কার্প ও আনুষাঙ্গিক কি কি আছে এবং প্রসেস কি তা, নিশ্চিত করতে হবে।

২. কোন স্পেশাল ফিনিসিং প্রসেস আছে কি না, (ব্রাশ / সুইডিং, ক্যামিকেল ফিনিশ)।

৩. আন-লোড সেড দেখে ফিনিশিং প্যারামিটার সেট করতে হবে। প্রয়োজনে সেড রোল দিতে হবে।

৪. প্রস্থ, জিএসএম, কম বেশি হলে, সাথে সাথে জানাতে হবে, তা না হলে, প্রসেস বন্ধ থাকবে।

৫. সিলিটিং এর পরে যদি কোন এসোচরিজ রীব, কলার কাপ হারানো যায়, তাহলে ফিনিসিং দ্বায়ি থাকবে।

৬. সেড এবং কোয়ালিটি ঠিক আছে কি না, দেখতে হবে এবং কোয়ালিটি/ ফিনিশিং ডিপাটমেন্ট এই নিশ্চিত হতে হবে, অন লাইন কিউসির মাধ্যমে। ৭. সেড যদি এডজাষ্ট করতে হয়, তাহলে স্ট্যান্টার মেশিনে, প্যাডার প্রেসার এবং স্ফটনার % কম বেশি করে সেড ঠিক করতে হবে।

৮. প্রস্থ (ডায়া), +২ ইঞ্ছি এবং জিএসএম ৭ থেকে ৫% কম রাখতে হবে, যাহাতে কোম্পেক্ট এর পরে ঠিক থাকে।

৯. ফেব্রিকস সফ্ট হয়েছে কি না, কাষ্টমারের গ্রহনযোগ্যতা অনুযায়ী।

১০. রীব বোডি ম্যাচিং আছে কি না এবং কোন মাপ (রিপিট) থাকলে দেখে নিতে হবে।

১১. সিংকেজ দেখে কোম্পেক্টরের সেটিং দিতে হবে, ১ ইঞ্চি এবং জিএসএম ২ থেকে ৩% কম থাকতে পারবে।

১২. কোম্পেক্টরের পরে সিংকেজ ফেল গ্রহন যোগ্য নয়।

১৩. ল্যাকরা ফ্রেবিক্স প্রতি ব্যাচ এর থেকে ২/৩ রোল থেকে ডান, বাম এবং মিডেল সাইডে জিএসএম চেক করে দেখতে হবে, সব জায়গায় সমান আছে কি না, সর্বচ্চ ৫-৬ গ্রাম পর্যন্ত ডিপারেন্স হলে চলবে।

১৪. সিংগেল জার্সি ১৬০ জিএসএম থেকে উপরের জিএসএম এর এবং রীব, ইন্টারলক, ফ্রিলিস এবং পিকে কাপড়ের স্ট্যান্টার মেশিনে চালানোর সময় কোন প্রকার এনগেল করা যাবে না, স্পারাইলেটি কোন্ট্রল করার জন্য, এমন কাপড়ে সাধারনত স্পারাইলেটির সমস্যা হয় না।

১৫. ব্রাশ / সুইডিং কাপড়ে প্রথম রোল প্রসেস করে, চেক করে দেখে নিতে হবে, সিংকার মার্ক দেখা যায় কি না, থাকলে নিটিং ডিপার্টমেন্ট কে জানাতে হবে।

১৬. ফিনিশিং এর সমস্যার জন্য কোন কাপড়, অতি অল্পসময়ের মধ্যে সমাধান করতে হবে, (২৪ ঘন্টার মধ্যে ঠিক করতে হবে)। 

১৭. কোন প্রসেস শুরু করার পূর্বে, কাপড়ের কোয়ালিটি ঠিক আছে কি না, নিশ্চিত হতে হবে।

১৮. কোন কাপড়ে সমস্যা (সিংকেজ, জিএসএম, ডায়া) খাকলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে সমাধান করতে হবে।

১৯. যখন কাপড় শুকানো হবে, একই সময়ে রীব, কলার কাফ ও শুকাতে হবে।

২০. কোন ডিপাটম্যান্টের (ডাইং নীটিং) সমস্যা হলে, ২৪ ঘন্টার মধ্যে ফেরত দেওয়া হবে, ঠিক করার জন্য।

২১. প্রথম বারেই ৯৫% এর মতো ডেলিভারি দেওয়ার উপযুক্ত করতে হবে। 

২২. সিংগেল প্রসেস তিন দিন এবং ডাবল প্রসেস (
ব্রাশ সূইডিং) কাপড় পাচ দিনের মধ্যে ডেলিবারি দিতে হবে। 

২৩. শিপ্ট ইনচার্জ, প্রথম রোল থেকে তিন রোল পর্যন্ত, মেশিনের সামনে থেকে, শত ভাগ কোয়ালিটি নিশ্চিত করেত হবে।

২৪. স্ট্যান্টার ও কম্প্যাক্ট মেশিন হঠাৎ বন্ধ করা কমাতে হবে।

২৫. কোন ফেব্রিকস গিট্টা দিয়ে প্যাডার পার করা যাবে না, (বি কেয়ার ফুল)

২৬. মেশিনের যেই কোন সমস্যা হলে, অবশ্যই মেইন্টেন্যাস বিভাগকে জানাতে হবে, কোন কিছু লুকানো যাবে না।

২৭. মেশিনের সাথে লাগিয়ে কোন ফেব্রিকস রাখা যাবে না।

২৮. চলাচলের রাস্তা ফ্রি রাখতে হবে।

২৯. ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ ইচ্ছে করে ভুল করলে।

ROBINTEX GROUP
Robintex Bangladesh Ltd
Fabrics Finishing Section
Working Procedure (SOP)

টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির ফিনিশিং স্টেন্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর - Finishing SOP

জার্মানিতে টেক্সটাইল নিয়ে উচ্চশিক্ষা, যা যা করতে হবে

টেক্সটাইল বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানিপ্রধান একটি খাত। হাজারো শিক্ষার্থী প্রতিবছরের স্নাতক শেষে এ খাতে ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে চান। ক্যারিয়ার গঠনের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও আবদান রাখেন তাঁরা। এ বিষয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থী বিদেশে পাড়ি দেন। ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আছে এ বিষয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ। বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় জার্মানি টেক্সটাইল উচ্চশিক্ষায় এগিয়ে। টেক্সটাইল বিষয়ে জার্মানিতে সরকারি বা বেসরকারিভাবে গবেষণাও হয়। তাই পড়াশোনা শেষে জার্মানিতে এ খাতে কাজ করার ও ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ রয়েছে। এখন জার্মানিতে টেক্সটাইল উচ্চশিক্ষা বিষয়ে খুঁটিনাটি জেনে নেওয়া যাক।

টেক্সটাইলে মাস্টার্স: 

টিউশন ফি ছাড়া আন্তর্জাতিক মানের পড়াশোনার জন্য চাইলে আপনিও জার্মানিকে বেছে নিতে পারেন। অন্য বিষয়ের মতো জার্মানিতে টেক্সটাইলে মাস্টার্স করার করার মতো খুব বেশি অপশন না থাকলেও বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে খুব কম খরচে মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ আছে।

বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য জার্মানির বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য ইউনিএসিস্ট নামের একটা প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নেয়, যারা আবেদনপ্রক্রিয়ার সব বিষয় যাচাই-বাছাই করে বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা সম্পর্কে প্রতিবেদনে দাখিল করে। বিশ্ববিদ্যালয় সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের অফার লেটার দেয়।

1.Hochschule Niederrhein University of applied science: 

এটি জার্মানির মুনশেনগ্লাডবাগ শহরে অবস্থিত।
বিষয়: ম্যানেজমেন্ট অব টেক্সটাইল ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজি।

আইইএলটিএসে ৭/এমওআই (MOI-মিডিয়াম অব ইন্সট্র্যাকশন) প্রয়োজন। যাঁরা ৪ বছরমেয়াদি স্নাতকে ইংরেজি মাধ্যমে পড়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে প্রমাণ হিসেবে এমওআই দিলেও চলবে।

এগুলোর সঙ্গে মোটিভিশন লেটার, সিভি, রিকমেন্ডেশন লেটার, চাকরির অভিজ্ঞতা (অপশনাল)।

প্রতি সেমিস্টারের শুরুতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ৫টি বিষয় দেওয়া থাকবে, সেখান থেকে যেকোনো একটি বিষয়ে ২ পৃষ্ঠার Research and development (R&D) লিখতে হবে। এখানে মূলত R&D আর ভালো ফলাফলের ওপর অফার লেটার পাওয়া নির্ভর করে।

আবেদনের সময়: 
এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সামার সেমিস্টারের জন্য ১৫ জুন এবং উইন্টার সেমিস্টারের জন্য ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইউনিএসিস্টের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।



2.Hof University of applied science: 

যাঁরা টেক্সটাইলে স্নাতক করেছেন এবং জার্মান এআই সার্টিফিকেট আছে, তাঁরা এখানে আবেদন করতে পারবেন।
বিষয়: Sustainable Textile (M.Eng)।

ভাষা: আইইএলটিএসে ৬ দশমিক ৫/এমওআই/টোয়েফেল-৯০ (মিনিমাম) প্রয়োজন।

এগুলোর সঙ্গে মোটিভেশন লেটার, চাকরির অভিজ্ঞতা, রিকমেন্ডেশন লেটার, সিভি।
আবেদনের সময়: Sustainable Textile (M.Eng) এ সামার সেমিস্টারে ভর্তির জন্য ৫-৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আবেদন করা যায়। উইন্টার সেমিস্টারের জন্য ১৫ এপ্রিল থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ইউনিএসিস্টের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।



3.TU Dresden: 

জার্মান ভাষা বি টু (B2) পর্যন্ত করা থাকলে এখানে আবেদন করা যাবে। এ বিষয়ে স্কলারশিপ পাওয়া যায়।
বিষয়: Textile Machinery and High Performance Material Technology।

মোটিভেশন লেটার, চাকরি অভিজ্ঞতা, রিকমেন্ডেশন লেটার ও সিভি লাগবে।

প্রতিবছর ৩১ মে পর্যন্ত ইউনিএসিস্টের মাধ্যমে এই বিষয়ে আবেদন করা যাবে।

আবেদনের সময়: স্কলারশিপের জন্য প্রতিবছর ১ অক্টোবর থেকে আবেদন করা যাবে।

4.RWTH Aachen University: 
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাইলে টিউশন ফি লাগবে। প্রতি সেমিস্টার ৫ হাজার ৫০০ ইউরো লাগবে টিউশন ফি। তবে যাঁরা রিসার্চ করতে চান, তাঁদের জন্য ভালো অপশন আছে এখানে। প্রতিবছর ২ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ১ মার্চ পর্যন্ত সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করা যাবে। মোটিভেশন লেটার, রিকমেন্ডেশন লেটার ও সিভি লাগবে।

5.Martin Luther university:

 টেক্সটাইলে পড়াশোনা করে যাঁরা পলিমার নিয়ে আরও পড়তে চান, তাঁরা এখানে আবেদন করতে পারেন।


বিষয়: Polymer Material Science.

ভাষা: আইইএলটিএসে ৬/টোয়েফেল ২১৩ (কম্পিউটার বেজড, ৫৫০ পেপার বেজড) প্রয়োজন।


মোটিভেশন লেটার, রিকমেন্ডেশন লেটার ও সিভি লাগবে।

প্রতিবছর ১৫ জুন পর্যন্ত উইন্টার সেমিস্টারের জন্য ইউনিএসিস্টের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।

6.Kaiserslautern University of applied Science, Pirmasens.

বিষয়: Refinement of Polymer and composite products
ভাষা: আইইএলটিএসে ৬ দশমিক ৫/জার্মান ল্যাঙ্গুয়েজ বিওয়ান (German language B1)

মোটিভেশন লেটার, রিকমেন্ডেশন লেটার ও সিভিও লাগবে।

আবেদনের সময়: সামার সেমিস্টারে জন্য ১৫ নভেম্বর এবং উইন্টার সেমিস্টারের জন্য ৩১ মে থেকে ইউনিএসিস্টের (Uniassist) মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।

7.Hochschule Fresenius University of applied science, Berlin.
বিষয়: Master’s of Arts in Sustainability in Fashion and creative Industries.

ভাষা: আইইএলটিএসে ৬ দশমিক ৫

যাঁরা ফ্যাশন নিয়ে পড়তে চান, তাঁরা এখানে আবেদন করতে পারেন। আইইএলটিএসে ৬ দশমিক ৫ এর সঙ্গে মোটিভেশন লেটার, রিকমেন্ডেশন লেটার, সিভি থাকলে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের সময়: প্রতিবছর ৩১ মে থেকে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে আবেদন করা যাবে।

এর বাইরে আরও কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য আবেদন করা যায়।



লেখক: 
শরীয়ত উল্লাহ টিটু, শিক্ষার্থী, ম্যানেজমেন্ট অব টেক্সটাইল ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজি, Hochschule Niederrhein University of Applied Science, জার্মানি

জার্মানিতে টেক্সটাইল হায়ার স্টাডির জন্য কিছু ইউনিভার্সিটি | Textile Higher study in Germany

Lycra  % বের করার নিয়ম -
মনেকরি,
মেশিন ডায়া  = ৩০
মেশিন গেজ  =২৪
সুতার কাউন্ট=৩৪/s + ২০ D.ly
মেশিন S.L    =২.৮৫
Lycra C.M   =২০৫ cm

তাহলে, প্রথমে নিডেল সংখ্যা বের করতে হবে
নিডেল= মেশিন ডায়াxমেশিন গেজx৩.১৪১৬
 =৩০x২৪x৩.১৪১৬
= ২২৬৪ pcs


*** Lycra ডেনিয়ার থেকে কাউন্ট করতে হবে
Lyc কাউন্ট= ৫৩১৫÷ ডেনিয়ার
                  =৫৩১৫÷২০
                  =২৬৫ /s

সুতা
 = কাপড়ের S.L÷ সুতার কাউন্ট
 =২.৮৫÷৩৪
 =০.০৮৩৮২

Lycra S.L
=Lycra সে.মি. x ১০÷ নিডেল সংখ্যা
 =২০৫ x ১০ ÷ ২২৬৪
 =০.৯০৫৪
আবার,
Lycra 
      = ০.৯০৫৪÷Lycra কাউন্ট
      =০.৯০৫৪÷২৬৫
      =০.০০৩৪
মোট     =  সুতা+Lycra 
             =০.০৮৩৮২+০.০০৩৪
            =০.০৮৭২২
এখন,
Lycra %
   =lycra x১০০ ÷মোট যোগফল
   =০.০০৩৪ x ১০০÷ ০.০৮৭২২
   =৩.৮৭% 

সুতরাং এই কাপড়ে ৩.৮৭% Lycra আছে। এবং ৯৬.১৩% সুতা আছে।

ইলাস্টিক ফেব্রিকের Lycra % বের করার নিয়ম

Colour fastness to washing


Colour fastness to washing হল কোন ফেব্রিক ডিটারজেন্ট দিয়ে ওয়াস করার পর তার কালার আগের মত থাকে কিনা বা Actual Fabric এর সাথে Tested Fabric এর কতটুকু কালার চেন্জ হয়েছে এবং মাল্টিফাইবারে কতটুকু কালার স্টেইনিং হয়েছে তা নির্নয় করার একটি পদ্ধতি।

 


এই টেস্ট করার ২ টি Method আছে।

1.ISO(International Organisation For Standardization)

2.AATCC(Americal Association Of Textile Chemists and Colorist)

 
এখন কোন Method এ টেস্ট টি করতে হবে সেটা সম্পর্ন ভাবে Buyer Requirement এর উপর নির্ভর করবে।

বুঝার সুবিধার জন্য আমরা ISO 105 CO6 method অনুযায়ী কিভাবে colorfastness to washing test করা যায় তা দেখব। এই মেথডে A2S(40°C) B2S(50°C) C2s(60°C) টেস্ট গুলো উক্ত তাপমাত্রায় করতে হয়।

✅প্রথমে Colour Fastness To Washing এর জন্য আমাদের Solution তৈরি করে নিতে হবে।
1L পানিতে নিচের কেমিক্যাল দিয়ে সলিউশন তৈরি করতে হবে।

ECE Detergent      - 4g/L
Sodium Perborate-1g/L


✅ তারপর আমাদের নিতে হবে Specimen/Sample Fabric।টেস্টের জন্য, স্ট্যান্ডার্ড সাইজ হচ্ছে(10*4 cm) fabric+multi fiber(10*4 cm) নিতে হবে।

( Multi fiber হচ্ছে যে ফাইবার অনেক গুলো ফাইবার দিয়ে তৈরি করা হয়।এই ফাইবারের মধ্যে ৬ ধরনের ফাইবার থাকে Acetate, Cotton, Nylon, Polyster, Acrylic, Wool)
তারপর Fabric+Multi Fiber একসাথে পিন আপ করে নিতে হবে।

✅এখন মাল্টিফাইবার সহ ফেব্রিককে Gyro Wash machine এর যে পট রয়েছে সেখানে রাখতে হবে। তারপর পটগুলার মধ্যে Stell Ball+ Solution দিতে হবে।

A2S:10 steel Ball+150 ml solution(ECE+Na Perborate)+Tem(40°c)+Time 30 min.

B2S:25 Steel Ball+150 ml solution(ECE+Na perborate)+Tem(50°c)+Time 30 min

C2S:25 Stell Ball +50 ml solution+Tem(60°c)+Time 30 min.
Buyer Requirement অনুয়ায়ী আমাদের A2S/B2S/C2S সিলেক্ট করতে হবে।

✅পটগুলাকে Gyro Wash Machine এ Setup করতে হবে এবং Gyro wash Machine এ প্রোগ্রাম সেট করে দিতে হবে(A2S/B2S/C2S).

✅ তারপর নির্দিষ্ট সময় শেষে প্রসেসিং করা ফেব্রিকে Gyro washing machine থেকে বের করে ভালো ভাবে Wash করতে হবে এবং তারপর ড্রাই মেশিনে(60°c এর নিচে) শুকিয়ে নেয়া হয় যাতে কোণ পানি না থাকে।



✅এরপর দেখা হয় যে ফেব্রিক থেকে মাল্টি ফাইবারে কালার কতটুকু ব্লিড করেছে তা গ্রেডিং স্কেলের মাধ্যমে গ্রেডিং করা হয়। তারপর  Data Sheet-এর মধ্যে ফেব্রিকের পূর্বের অবস্থা ও এখনকার অবস্থা নমুনা sheet এ লাগাতে হয় এবং মাল্টি ফাইবার ও Sheet-এ লাগাতে হয়।

 

    









Colour fastness to washing | কালার ফাস্টনেস টু ওয়াস

PHTest


PH কি?


PH  হলো কোনো জলীয় দ্রবণ অম্লীয় , ক্ষারীয় নাকি নিরপেক্ষ তা জানার একক। সহজে বুঝতে গেলে pH হলো কোনো দ্রবণে উপস্থিত হাইড্রোজেন আয়নের (H+) ঘনমাত্রার ঋণাত্মক লগারিদম।



💠ফেব্রিকের Ph টেস্ট কেন করতে হয়?


এসিড/ক্ষার শরীরের জন্য খুব মারাত্মক উপাদান।ফেব্রিকে এর মাত্রা ঠিক আছে কি না তা জানতে এই টেস্ট করা হয়। এসিডিক/ক্ষারীয়  মিডিয়া চামড়ার ক্ষতি করে আর ফেব্রিক এর সেড নষ্ট করে তাই ফেব্রিক নিউট্রাল কিনা তার জন্য pH চেক করতে হয়।

সারা বিশ্বে দিন দিন ডেনিম এবং টুইল, নীট ফ্রেবিকের তৈরি পোশাকের চাহিদা দিন দিন বেড়ে চলছে।। এই সমস্ত গার্মেন্টস ওয়াশিং / ডাইং করার সময় বিভিন্ন প্রসেসে আমরা ব্লিচিং,কাস্টিক, সোডা সহ বিভিন্ন ক্ষতিকারক কেমিক্যাল ব্যবহার করে থাকি।।
এই প্রসেস গুলার শেষে যদি ph সঠিক ভাবে কন্ট্রোল না করা হয় তাহলে উক্ত কাপড় পরিধানের ফলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে।কাপড় ঘামে ভিজে শরীরে চুলকানি সহ স্কিনে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা  হতে পারে।। তাই ওয়াশিং অথবা ডাইং এর সর্বশেষ প্রসেসে ph কন্ট্রোল করা জরুরি।


এই টেস্ট করার ২ টি Method আছে।

1.ISO(International Organisation For Standardization)

2.AATCC(Americal Association Of Textile Chemists and Colorist)
এখন কোন Method এ টেস্ট টি করতে হবে সেটা সম্পর্ন ভাবে Buyer Requirement এর উপর নির্ভর করবে।

বুঝার সুবিধার জন্য আমরা ISO method কিভাবে ফেব্রিকের Ph টেস্ট করা যায় তা উপস্থাপন করা হল।

💠Sample preparation

✅প্রথমে আমাদের যে ফেব্রিকের Ph টেস্ট করতে হবে সেই ফেব্রিক থেকে (2.00 ± 0.05)gm ফেব্রিক কেটে নিতে হবে।পরে 2 gm ফেব্রিকটিকে কেটে ছোট ছোট টুকরা করে নিতে হবে এবং প্রত্যেক টুকরোর সাইজ হবে  (5mm*5mm).



✅একইভাবে আমাদের আরও ২ টা নমুনা পস্তুত করতে হবে।


💠Solution preparation

Solution তৈরির জন্য আমাদের KCl এর 0.1 mole Solution তৈরি করে নিতে হবে।
KCl এর আনবিক ভর=74.55gm/mole
তাহলে 1 mole KCL=74.55 gm
            0.1 mole KCL=7.455gm
সুতরাং 1 L পানিতে 7.45gm KCL নিয়ে আমাদের Solution তৈরি করে নিতে হবে।





Solution তৈরি করা হলে একটি কনিক্যাল ফ্লাস্কে

100 ml KCL Solution নিয়ে তাতে ফেব্রিকের টুকরোগুলা দিয়ে দিয়ে দিতে হবে।


✅এখন কনিক্যাল ফ্লাস্কটিকে Automatic shaker machine Adjust করে 60 rpm এ 2 hrs Shaking করতে হবে যাতে Solution এর সাথে ফেব্রিকের টুকরোগুলা ভালে ভাবে মিশে যায়।



✅Ph মিটার দিয়ে Ph মাপার আগে অবশ্যই মেশিনটি Calibration করে নিতে হবে।


✅তারপর কনিক্যাল ফ্লাস্ক থেকে একটি বিকারে সামান্য mixing Solution নিয়ে তার মধ্যে ph মিটারে Electrod টি ডুবাতে হবে এবং মিটারে স্কিনে কত Ph সেটা দেখা যাবে।এভাবে আর ২ টা কনিক্যাল ফ্লাস্কের Ph মাপতে হবে।পরে লাস্টে পাওয়া ২ টা Ph এর Average করলেই আমরা Actual Ph পেয়ে যাব।



Priyal Debnath  
Textile Engineer

ফেব্রিক pH টেস্ট প্রসেস এবং টেস্টিং প্রসিডিওর