Textile Lab | Textile Learning Blog
লোগো ডিজাইনারকে প্রথমে মাত্র ৩৫ ডলার দিলেও পরে শেয়ার ও আংটি দিয়েছে নাইকি
এছাড়া, ১৯৮৩ সালে সুশ লোগোর আদলে গড়া একটি আংটি তাঁকে উপহার দেন নাইকির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট বব উডেল। আংটিতে ছিল একটি মূল্যবান হীরা। সঙ্গে কোম্পানির কিছুসংখ্যক শেয়ারও তাঁকে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ক্যারোলিন। 

বিখ্যাত স্পোর্টসওয়্যার ব্র্যান্ড নাইকি তাদের সুপরিচিত 'সুশ' নামক লোগোটির ডিজাইনারকে নাকি মাত্র ৩৫ ডলার পারিশ্রমিক দিয়েছিল– ইন্টারনেটে প্রায়ই এমন দাবি দেখা যায়। তবে এটি সঠিক নয়। 

লোগোটির ডিজাইন করেছিলেন ক্যারোলিন ডেভিডসন, সেসময় তিনি ছিলেন গ্রাফিক্স ডিজাইনের একজন শিক্ষার্থী। তার থেকে ১৯৭১ সালে এটি কিনে নেয় নাইকি। ২০১৬ সালে ক্রীড়া সাংবাদিক ড্যারেন রোভেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্যারোলিন বলেছিলেন, "নাইকি শুধু আমাকে ওইটুকুই (৩৫ ডলার) পারিশ্রমিক দেয়নি।… প্রথমত তাঁরা আমাকে ক্যারিয়ার শুরুর সুযোগ দেয়। (এই কাজের মাধ্যমে) আমি ডিজাইনের দুনিয়া সম্পর্কে জানতে-বুঝতে শিখি। এই কাজের জন্য আমি অনেক সুপারিশ পাই, এবং 'লোগো লেডি' হিসেবে পরিচিত লাভ করেছি।"

এছাড়া, ১৯৮৩ সালে সুশ লোগোর আদলে গড়া একটি আংটি তাঁকে উপহার দেন নাইকির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট বব উডেল। আংটিতে ছিল একটি মূল্যবান হীরা। সঙ্গে কোম্পানির কিছুসংখ্যক শেয়ারও তাঁকে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ক্যারোলিন। 

এই প্রেক্ষাপটে, নাইকির মতো সুপ্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের লোগো ডিজাইন করে ক্যারোলিন মাত্র ৩৫ ডলার পেয়েছেন বলে যেসব অনলাইন পোস্টে দাবি করা হয়েছে– সেগুলো আদতে পুরো বিষয়টি তুলে ধরেনি। 

ক্যারোলিন ডেভিডসনকে লোগো ডিজাইনের কাজ দিয়েছিলেন নাইকির আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা ফিলিপ হ্যাম্পসন নাইট। ফেসবুকের এক পোস্টে নাইটের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে, তিনি ক্যারোলিনকে ঠকিয়েছেন। সামাজিক মাধ্যম 'এক্স' (সাবেক টুইটার) এ-ও পরবর্তীতে এই দাবি করেন অনেকে। 

এসব পোস্টদাতা বিষয়টির সঠিকভাবে না জেনেই মন্তব্য করেছেন। কারণ, ২০২২ সালে অরিগনিয়ান পত্রিকার ইউটিউবে আপলোড করা একটি ভিডিওতে ক্যারোলিন ডেভিডসনকে নাইকির নির্বাহীদের হাত থেকে নানান উপহার নিতে দেখা গেছে। ভিডিওটি ছিল ১৯৮৩ সনের। যখন ক্যারোলিনকে নাইকির শেয়ারও দেওয়া হয়েছিল। তবে প্রদত্ত শেয়ারের সংখ্যা সম্পর্কে সেসময় খোলাসা করা হয়নি। 

ওই বছর নাইকির সদর দপ্তরে ক্যারোলিনের সম্মানে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অরিগনিয়ান পত্রিকার সাংবাদিক অ্যালান ব্রেটম্যান ক্যারোলিনের একটি সাক্ষাৎকারও নেন। এসময় ক্যারোলিনও তাঁকে দেওয়া শেয়ারের সংখ্যা প্রকাশ করেননি। তবে ২০১১ সালে নিজের লেখা প্রতিবেদনে ব্রেটম্যান – নাইকির সহপ্রতিষ্ঠাতা ফিলিপ হ্যাম্পসন নাইটকে উদ্ধৃত করেন, যিনি ২০১০ সালে নাইকির শেয়ারহোল্ডারদের এক সভায় ক্যারোলিনকে ৫০০টি শেয়ার দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। 

অনুবাদ: নূর মাজিদ
The Business Standard

নাইকির লোগো ডিজাইন ইতিহাস | Nike Logo | Carolyn Davidson

কেনো ফ্যাব্রিক GSM টলারেন্স  +/-5% ধরা হয় ?
 ফ্যাব্রিক জিএসএম (গ্রাম প্রতি বর্গ মিটার) হল পরিমাপের একটি একক যা প্রতি ইউনিট এলাকায় ফ্যাব্রিকের ওজন নির্ধারণ করতে ব্যবহৃত হয়, সাধারণত গ্রাম প্রতি বর্গ মিটার (g/m²) বা আউন্স প্রতি বর্গ গজ (oz/yd²) দ্বারা প্রকাশ করা হয়।  এই মান নির্দেশ করে যে একটি ফ্যাব্রিক হালকা বা ভারী কিনা ।  

উদাহরণস্বরূপ, 

যদি একটি ফ্যাব্রিকের  জিএসএম  100 gm (+/-5% টলারেন্স ধরলে ৫%- হলে জিএসএম হবে  95 gm ৫% + হলে  105 gm ) 
 
ধরা যাক অন্য আরেকটা ফেব্রিক আছে যার  জিএসএম 400 gm ( জিএসএম এর এসেপ্টেন্স   টলারেন্স +/-5% হলে ওই ফেব্রিকের জিএসএম আসবে 380 gm থেকে 420 gm এসেপ্ট হবে ), এটি  স্পষ্ট যে দ্বিতীয় ফ্যাব্রিকটি প্রথমটির তুলনায় প্রায় চারগুণ ভারী । সে অনুযায়ী এর ৫% ধরা হবে। 
 
অনেকগুলি  কারণ আছে যা ফ্যাব্রিক জিএসএমকে সরাসরি প্রভাবিত করতে বা কম বেশী করতে পারে  । যার জন্য আপনি কখনো এটা ডাইং ফিনিশিং এর পর ১০০% একুরেট রাখতে পারবেন না ।  ময়েসচার প্রসেস জনিত কারনে তার ভেতর কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে । 

আপনি গ্রে ফেব্রিক ১৪০ জিএসএম বানালে সেটা প্রিট্রিটমেন্ট আফটার ট্রিটমেন্ট এর পর ফিনিশিং এর পর একুরেট জিএসএম ১৪০ হবে এটা বলতে পারবেন না ।  এটা কিছু প্রসেসে ওয়েট লস করবে কিছু প্রসেসে গেইন করবে ।  এর জন্য একে একটা এক্সসেপ্টেড রেঞ্জের মধ্যে রাখা হয়  যা সাধারণত +/- ৫% ধরা হয় । 
আসুন তেমন কিছু কারন দেখে নেয়া যাক যা ফেব্রিক জিএসএম কে প্রভাবিত করে  : 
 
 1. ফ্যাব্রিক কন্সট্রাকশন , ইয়ার্ন টাইপ,  ক্রিম্প % এবং ফেব্রিকের উইভ টাইপ এর কারনে জিএসএম কম বেশী হতে পারে   ।

 2. সেইম ফেব্রিক ফাইবারের টাইপের জন্য জিএসএম  কম বেশী হতে পারে ।   উদাহরণ স্বরুপ  ভিসকস ফাইবার এর ফেব্রিকের জিএসএম  কটনের চেয়ে বেশি হবে, কটন ফাইবারের চেয়ে  লিনেন বা টেনসেল  ফেব্রিকের  GSM বেশী হবে।  স্কাওরিং এবং ব্লিচিংয়ের পর, ফাইবার এবং ফাইবারের কোয়ালিটির উপর ভিত্তি করে ইয়ার্ন কাউন্ট  আরও সূক্ষ্ম হয় এবং কম জিএসএম দেয়।

 3. সুতার প্রকার জিএসএম কম বেশী হবার কারন
যেমন  রিং ইয়ার্ন সর্বদা ওপেন এন্ড OE -Rotor Yarn  সুতার চেয়ে বেশি জিএসএম এর হয় , কারণ ওপেন এন্ড ওপেন যাকে রোটার সুতাও বলা হয়, এতে ইমপিউরিটি থাকে যা স্কাওয়ারিং এবং ব্লিচিংয়ের পর দূর হয়ে যায় যার জন্য রোটর ইয়ার্নের ফেব্রিকের জিএসএম কম হয়।  

 4. ডাইং টাইপ  
 সেইম কন্সট্রাকশনের  ইয়ার্ন ডাইড ফেব্রিকের চেয়ে সলিড ডাইড ফেব্রিকের জিএসএম তুলনামূলক বেশী হয় । সলিড ডাইং এর ক্ষত্রে ডাইজ ক্যামিকেল পিক আপ বেশী হয়। 

 5. ফেব্রিকের শেডের ডেপথ 

শেডের ডেপথ জিএসএম চেইঞ্জের কারন  ( যেমন ফেব্রিকে  ব্ল্যাক বা নেভি টাইপ ডার্ক শেড সবসময় লাইট শেডের চেয়ে বেশি জিএসএম দেয় । ডাইং  ফ্যাব্রিকের জিএসএম সবসময় RFD/PFD বা অপটিক্যাল হোয়াইট  (OBA) ফ্যাব্রিকের চেয়ে বেশি হয় । এটি মুলত কারন ফেব্রিকের ডাইজ পিক আপ  ডাই এবজরভ করে ফেব্রিকের ওয়েট বেড়ে যায় যত ডিপ সেড তত বেশী ওয়েট। 

 6. ফেব্রিকের ফিনিশের টাইপ  

ফিনিশিংয়ের টাইপ ফ্যাব্রিক জিএসএম-এর উপরও প্রভাব ফেলে ।  কিছু স্পেশাল  ফিনিশিংয়ের জন্য 120 gpl -এর বেশি ক্যামিকেলের প্রয়োজন হয়, যা সাধারণ সফট ফিনিশের চেয়ে বেশি জিএসএম  ফেব্রিককে দেয় । যেমন হার্ড ফিনিশের ক্ষেত্রে ওয়েট বেশী হবে সফট ফিনিশিংয়ে তুলনামূলক কম জিএসএম হয়। 

 7. ফ্যাব্রিক স্রিংকেজ  :  
যদি ফ্যাব্রিক স্রিংক হয় তবে জিএসএম কম হবে এবং ফ্যাব্রিক এক্সটেন্ড হয় তবে জিএসএম বেশী হয়। 

 8. ফ্যাব্রিক Width 
যদি ফ্যাব্রিকের Width প্রয়োজনের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে, তাহলে ওই ফেব্রিকের জিএসএম কমে যায় । ফ্যাব্রিকের Width  কমে  ফেলে ওই ফেব্রিক GSM বেড়ে যায় । 

 
 
উপরের উল্লেখিত  নিয়ম গুলির  কারনে  কখনই GSM 100% মেইনটেইন  করা যায় না।  তাই   এইগুলি বিবেচনা করে, ফ্যাব্রিক GSM +/-5% এর জন্য একটি ইন্টারন্যাশনাল টলারেন্স রয়েছে।  কিছু বায়ার তাদের টলারেন্স রেঞ্জ   +/-3% দিয়ে থাকে  ।

কেনো ফ্যাব্রিকের ফিনিশ GSM টলারেন্স +/-5% ধরা হয় ?

বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের শীর্ষ ১০ ক্রেতা 
১. এইচঅ্যান্ডএম H&M (Sweden)
২.  ইন্ডিটেক্স Inditex (Spain)
৩.  প্রাইমার্ক Primark ( Ireland )
৪. বেস্টসেলার Bestseller (Denmark)
5. M&S এমঅ্যান্ডএস (UK)
6. সিঅ্যান্ডএর C&A (Netherlands)
7.  ইউনিক্লো Uniqlo (Japan) 
8. LPP  এলপিপি (Poland)
9. নেক্সট NEXT (UK)
10. পেপকো PEPCO (Poland)

1. H&M এইচঅ্যান্ডএম (সুইডেন)
বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় ক্রেতা এইচঅ্যান্ডএম। গত ২০২৪ অর্থবছরে বিশ্বের ৪৪টি দেশের সহস্রাধিক আউটলেটে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ পোশাক তুলেছে এই কোম্পানি। যদিও অনলাইনে তাদের পোশাক কিনতে পারে ৬০টি দেশের মানুষ। বাংলাদেশে তৈরি এইচঅ্যান্ডএমের পোশাক বেশি বিক্রি হচ্ছে পোল্যান্ড, জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রে। 

গত অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ২৫৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক কিনেছে এইচঅ্যান্ডএম। বাংলাদেশের দুই শতাধিক কারখানা থেকে এই পোশাক কিনেছে তারা। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া প্রতিদিনের চালানে থাকছে এইচঅ্যান্ডএমের পোশাক। গড়ে প্রতিদিন প্রতিষ্ঠানটির ২ হাজার ৪২টি চালান জাহাজ বা উড়োজাহাজে তোলা হচ্ছে। তাতে নবজাতক থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের পোশাক রয়েছে এইচঅ্যান্ডএম এর কালেকশনে। 

১৯৪৭ সালে একটি স্টোর দিয়ে যাত্রা শুরু করা এইচঅ্যান্ডএমের বিক্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা এখন ৪ হাজার ২৯৮টি। গত বছর ২০২৩ সালে কোম্পানিটি ২১ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য বিক্রি করেছে। নাসডাক নর্ডিক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির প্রধান ব্র্যান্ডের মধ্যে রয়েছে এইচঅ্যান্ডএম, কজ, উইকডে, মানকি, চিফ মানডে, এফাউন্ড, অ্যান্ড আদার স্টোরিজ। 

এইচঅ্যান্ডএমের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, বিশ্বের ৪১ দেশের ৯১৬ সাপ্লায়ার  থেকে পোশাক, হোম টেক্সটাইল, জুতা ও কসমেটিক  পণ্য নেয় তারা। বাংলাদেশে থেকে তিন দশক ধরে তৈরি পোশাক নিচ্ছে তারা। এমনকি অনেক দিন ধরে কোম্পানিটি বাংলাদেশি পোশাকের শীর্ষস্থানীয় ক্রেতা। গত ২০২১-২২ অর্থবছর সবচেয়ে বেশি ২৯০ কোটি ডলারের পোশাক কিনেছে। এরপর কিছুটা কমলেও সেরার তালিকায় রয়েছে। 

যোগাযোগ করা হলে এইচঅ্যান্ডএম গ্লোবাল কমিউনিকেশনের প্রেস অফিসার অ্যান্ড কমিউনিকেশনস স্পেশালিস্ট অলবিন নরডিন ই–মেইলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশ আমাদের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পোশাক উৎপাদনকারী দেশ। ১৯৮৩ সাল থেকে বাংলাদেশে নিজস্ব প্রোডাকশন অফিসসহ উপস্থিতি আছে এইচএন্ডএম গ্রুপের। আমাদের শীর্ষস্থানীয় পণ্য উৎপাদনকারী দেশে নিজস্ব টিম থাকা সব সময়ই সুবিধার বিষয়।’ ভবিষ্যতে বাংলাদেশে ব্যবসা বাড়ানো হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সরাসরি উত্তর না দিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বাজার।’

২.  ইন্ডিটেক্স Inditex (Spain)
বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের দ্বিতীয় শীর্ষ ক্রেতা ইন্ডিটেক্স। স্পেনের বহুজাতিক এই কোম্পানি প্রতিবছরই বাংলাদেশ থেকে পোশাক কেনা বাড়াচ্ছে । গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ২১৮ কোটি ডলারের পোশাক কিনেছে ইন্ডিটেক্স। এর আগে তারা বাংলাদেশ থেকে এক অর্থবছরে দুই বিলিয়ন বা ২০০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক কেনেনি। 
বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের ১৩টি দেশের আউটলেটে পোশাক পাঠায় ইন্ডিটেক্স। তবে সবচেয়ে বেশি গেছে স্পেনে—১৮৭ কোটি ডলারের পোশাক। কোম্পানির প্রধান ব্র্যান্ড জারা, পুল অ্যান্ড বিয়ার, বারস্কা, স্ট্র্যাডিভারিয়াস, ওইশো, ম্যাসিমো দত্তি। বাংলাদেশ থেকে কেনা এই কোম্পানির পোশাকের তালিকায় অন্তর্বাস থেকে শুরু করে ওভারকোট—সবই আছে। আর পোশাক সরবরাহ করেছে বাংলাদেশের ২৫০টি কারখানা। 

3.  প্রাইমার্ক Primark ( Ireland )
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের শতকোটি ডলারের ক্রেতার তালিকায় রয়েছে আয়ারল্যান্ডের মাল্টিন্যাশানা রিটেইল  কোম্পানি প্রাইমার্ক। গত ২০২২-২৩ অর্থবছর বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় সর্বোচ্চ ১১২ কোটি ডলারের পোশাক কিনেছে কোম্পানিটি। 

বিশ্বের ১৭টি দেশে প্রাইমার্কের ৪৫১টি আউটলেট  আছে । চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া অর্থবছরে কোম্পানির রেভিনিউ দাঁড়ায় ৯৪৪ কোটি ইউরো। প্রাইমার্কের মূল বাজার ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে। বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক যুক্তরাজ্যের বাজারের জন্য বেশি নিচ্ছে তারা। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রাইমার্ক বাংলাদেশের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে তাঁদের কোম্পানি। 

4. বেস্টসেলার Bestseller (Denmark)
ডেনমার্কের বহুজাতিক কোম্পানি বেস্টসেলার বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের চতুর্থ শীর্ষ ক্রেতা। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৭৯ কোটি ডলারের পোশাক কিনেছে তারা। প্রতি পিস পোশাকের গড় দাম ৪ দশমিক ৬৬ ডলার, যা শীর্ষ ১০ ক্রেতার মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। বাংলাদেশের ৯৫টি কারখানায় তৈরি হওয়ায় পোশাক বেস্টসেলারের ১১ দেশের বিক্রয়কেন্দ্রে যায়। 

5. M&S এমঅ্যান্ডএস (UK)
ব্রিটিশ বহুজাতিক কোম্পানি মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার (এমঅ্যান্ডএস) বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের পঞ্চম শীর্ষ ক্রেতা। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৭৮ কোটি ডলারে ২১ কোটি পিস পোশাক কিনেছে কোম্পানিটি। তাতে প্রতি পিস পোশাকের গড় দাম দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৭৪ ডলার।

কোম্পানিটির প্রধান ব্র্যান্ড এমঅ্যান্ডএস ও অটোগ্রাফ। বাংলাদেশ থেকে কেনা পোশাকের ৯১ শতাংশই তাদের যুক্তরাজ্যের বিক্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছে। বিদায়ী অর্থবছর বাংলাদেশের ৫১টি কারখানা থেকে পোশাক কিনেছে প্রতিষ্ঠানটি। অন্যান্য ব্রিটিশ ব্র্যান্ডের মতো এমঅ্যান্ডএসও বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক কেনা বাড়াচ্ছে বলে জানান ক্রেতা প্রতিষ্ঠানটির একজন কর্মকর্তা। 

6. সিঅ্যান্ডএর C&A (Netherlands)

বাংলাদেশ থেকে পোশাক কেনায় অংশীদারি বাড়িয়েছে সিঅ্যান্ডএ। ২০২০ সালে তাদের মোট তৈরি পোশাকের ৩৬ শতাংশের উৎস ছিল বাংলাদেশ। ২০২২ সালে সেটি বেড়ে ৫১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। কোম্পানির টেকসই প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের পর চীন থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩ শতাংশ তৈরি পোশাক কেনে সিঅ্যান্ডএ। 
১৮৪১ সালে নেদারল্যান্ডসের দুই ভাইয়ের হাত ধরে যাত্রা শুরু হয় সিঅ্যান্ডএর। এই খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের ষষ্ঠ শীর্ষ ক্রেতা। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৭২ কোটি ডলারে ২০ কোটি পিস পোশাক কিনেছে তারা। তাদের কেনা প্রতি পিস পোশাকের গড় মূল্য ৩ দশমিক ৬২ ডলার। বাংলাদেশের অন্তত ৫০ কারখানা থেকে পোশাক কেনে সিঅ্যান্ডএ। 

7.  ইউনিক্লো Uniqlo (Japan) 
জাপানের বহুজাতিক কোম্পানি ইউনিক্লো গত অর্থবছরে প্রায় সাড়ে ৭১ কোটি ডলারের ১৩ কোটি ২১ লাখ পিস পোশাক কিনেছে। তাদের কেনা প্রতি পিস পোশাকের গড় মূল্য ছিল ৫ দশমিক ৪১ ডলার, যা শীর্ষ ১০ ক্রেতার মধ্যে সর্বোচ্চ। 
ইউনিক্লোর মূল গ্রুপ ফাস্ট রিটেইলিং। তাদের ইউনিক্লো ছাড়াও জিইউ, থিওরি, জে ব্র্যান্ডসহ মোট সাতটি ব্র্যান্ডের ৩ হাজার ৫৯৫টি বিক্রয়কেন্দ্র আছে বিভিন্ন দেশে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক বিশ্বের ২৪ দেশের বিক্রয়কেন্দ্রে বিক্রি করে ইউনিক্লো। গত অর্থবছর ২৬টি পোশাক কারখানা তাদের পোশাক সরবরাহ করে। এর মধ্যে ৩২ শতাংশ করেছে প্যাসিফিক জিনস গ্রুপ। 

8. LPP  এলপিপি (Poland)
পোল্যান্ডের বহুজাতিক কোম্পানি এলপিপি বিদায়ী অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ৬৫ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের পোশাক নিয়েছে। বাংলাদেশের প্রায় ২৫০টি কারখানা এই পোশাক সরবরাহ করেছে। ২০১৫ সালে ঢাকায় শাখা অফিস চালু করে বহুজাতিক এই প্রতিষ্ঠান।
এলপিপির ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ৪০টি দেশে বিক্রি হচ্ছে এলপিপির পাঁচ ব্র্যান্ডের পোশাক। ব্র্যান্ডগুলো হচ্ছে রিজার্ভড, ক্রপ, মোহিতো, হাউস, সিনসে। 

9. নেক্সট NEXT (UK)

 ১৬০ বছরের পুরোনো যুক্তরাজ্যের বহুজাতিক কোম্পানি নেক্সট প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে অর্ধবিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক নিচ্ছে। গত অর্থবছরে ৫৩ কোটি ডলারে ১৬ কোটি পিস তৈরি পোশাক কিনেছে। অর্থাৎ নেক্সট গড়ে ৩ দশমিক ২৪ ডলারে প্রতি পিস পোশাক কিনেছে। 

10. পেপকো PEPCO (Poland) 

পোল্যান্ডের বহুজাতিক এই খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান পেপকো বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে কম দামে পোশাক কিনছে। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৪৬ কোটি ডলারে ২৬ কোটি পিস পোশাক নিয়েছে। তাতে প্রতি পিস পোশাকের গড় দাম দাঁড়িয়েছে পৌনে দুই ডলার, যা শীর্ষ ১০ ক্রেতার মধ্যে সর্বনিম্ন।

ইউরোপের ২১ দেশে সাড়ে চার হাজারের বেশি বিক্রয়কেন্দ্র আছে পেপকোর। তাদের পোশাক সংগ্রহের বড় তিনটি উৎস দেশ—বাংলাদেশ, চীন ও ভারত। চারটি ব্র্যান্ড—পেপকো, পাউন্ডল্যান্ড, পিজিএস, ডিলজ নামে পোশাক বাজারজাত করছে পেপকো।

জানতে চাইলে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ ছোটো বড় এক হাজারের বেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের জন্য তৈরি পোশাক উৎপাদন করে। এটিই আমাদের পোশাক খাতকে শক্তিশালী করছে। যেহেতু হাতেগোনা কয়েকটি ছাড়া অধিকাংশ ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে পোশাক কিনে ফলে এটিকে ব্র্যান্ডিং করা যেতে পারে। তৈরি পোশাকের পাশাপাশি এই ক্রেতাদের কাছে বাংলাদেশের অন্যান্য পণ্যও বিক্রি করার বড় সুযোগ রয়েছে।

সুত্রঃ প্রথম আলো

বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের শীর্ষ ১০ বায়ার | Top 10 RMG Buyer Of Bangladesh

বাংলাদেশের সেরা ১০ গার্মেন্টস ইন্ড্রাস্ট্রি | Top Ten Garments Exporter in Bangladesh 
বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানির শীর্ষ স্থানটি বিদেশি উদ্যোক্তার দখলেই আছে। শীর্ষ রপ্তানিকারকের তালিকায় এবারও শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার কিহাক সাংয়ের  ইয়াংওয়ান করপোরেশনের। দ্বিতীয় স্থানে আছে দেশীয় মালিকানাধীন কোম্পানি হা-মীম গ্রুপ। দুই বছর ধরে এই দুই গ্রুপের রপ্তানি কমলেও তারা শীর্ষ স্থান দুটি ধরে রেখেছে।

বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে সেরা দশে জায়গা করে নেওয়া বাকি আট শিল্পগোষ্ঠী হলো মণ্ডল গ্রুপ, অনন্ত গ্রুপ, ডিবিএল গ্রুপ, প্যাসিফিক গ্রুপ, পলমল গ্রুপ, স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ, বেক্সিমকো ও স্কয়ার গ্রুপ। এই আট অবস্থানে এক-দুই বছরের ব্যবধানে কেউ এগিয়েছে, কেউ পিছিয়েছে, কেউবা আবার ছিটকে পড়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রপ্তানির তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রথম আলো তৈরি পোশাক শিল্পের শীর্ষ ১০ শিল্পগোষ্ঠীর এই তালিকা তৈরি করেছে। এনবিআরের হিসাব থেকে স্থানীয় রপ্তানি ও নমুনা রপ্তানি বাদ দিয়ে প্রকৃত রপ্তানির হিসাব নেওয়া হয়েছে।

এনবিআর থেকে প্রাপ্ত গত তিন অর্থবছরের রপ্তানির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এক বা দুই বছরের ব্যবধানে সেরা দশে স্থান পাওয়া ১০ গ্রুপের সম্মিলিত রপ্তানি কমেছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে সেরা দশের সম্মিলিত রপ্তানি ছিল প্রায় ৪৮৬ কোটি ডলারের, পরের বছর তা কমে ৪৬৮ কোটি ডলারে দাঁড়ায়। আর সর্বশেষ গত অর্থবছরে এই ১০ প্রতিষ্ঠানের সম্মিলিত রপ্তানির পরিমাণ ছিল প্রায় ৪৫৯ কোটি ডলার।
শীর্ষ গ্রুপগুলোর রপ্তানি কমার প্রভাব সামগ্রিকভাবে তৈরি পোশাক রপ্তানিতেও পড়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরকে দেশের পোশাক রপ্তানিতে সোনালি সময় বলা যায়। ওই অর্থবছর রপ্তানি হয় ৪ হাজার ৩৪ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। পরের বছর রপ্তানি ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ কমে যায়। বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি আরও সোয়া ১ শতাংশ কমে ৩ হাজার ৬৮৮ কোটি ডলারে দাঁড়ায়।

১.  ইয়াংওয়ান গ্রুপ
২. হা-মীমের গ্রুপ
৩. মণ্ডলের গ্রুপ
৪. অনন্ত গ্রুপ
৫.  ডিবিএল গ্রুপ
৬.প্যাসিফিক গ্রুপ
৭. পলমল গ্রুপ
৮. স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ
৯. বেক্সিমকো গ্রুপ
১০. স্কয়ার গ্রুপ

রপ্তানি চালান শুল্কায়নের পর মাশুল আদায় হলে এনবিআরের হিসাবে ওঠে। এনবিআরের রপ্তানির তথ্যে আগের অর্থবছরের চালানও রয়েছে, যেগুলোর রপ্তানি মাশুল পরিশোধ হয়েছে গত অর্থবছরে। প্রতিবছর কমবেশি দেড় শ কোটি ডলারের পুরোনো রপ্তানির তথ্য থাকে, যেগুলোও হিসাবে নেওয়া হয়েছে। কারণ, গত অর্থবছরে রপ্তানি হওয়া কিছুসংখ্যক চালানের মাশুল পরিশোধ না হওয়ায় তা চলতি অর্থবছরের হিসাবে আসবে।

১.  ইয়াংওয়ান গ্রুপ

বাংলাদেশে একক প্রতিষ্ঠান হিসেবে রপ্তানিতে প্রথম বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছিল দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়াংওয়ান গ্রুপ। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি প্রচ্ছন্ন রপ্তানি ছাড়া ৯৮ কোটি ৫৩ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানি করে। বিদায়ী অর্থবছরে তাদের রপ্তানি ১৮ শতাংশ কমলেও শীর্ষ অবস্থানেই রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার এই গ্রুপ।
গত অর্থবছর ইয়াংওয়ান ৮০ কোটি ৬৪ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। তৈরি পোশাকের বাইরে ব্যাগ, জুতা ও পোশাকশিল্পের কাঁচামালসহ নানা পণ্য রপ্তানি করে ইয়াংওয়ান। গত অর্থবছরে তৈরি পোশাকের বাইরে প্রায় ১৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে প্রতিষ্ঠানটি, যেখানে প্রচ্ছন্ন রপ্তানিও রয়েছে।

গত অর্থবছরে বিশ্বের ৫২টি দেশে রপ্তানি হয় ইয়াংওয়ানের তৈরি পোশাক। গত অর্থবছর ইয়াংওয়ান ৩ কোটি ৪৩ লাখ পিস তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। বাংলাদেশ থেকে উচ্চমূল্যের পোশাক রপ্তানি করে তারা। বিশ্বখ্যাত জার্মান ব্র্যান্ড অ্যাডিডাসকে ধরে রেখেছে ইয়াংওয়ানই।

বাংলাদেশে প্রথম বেসরকারি রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের সূচনাও হয় ইয়াংওয়ানের হাত ধরে। এই রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে ইয়াংওয়ানের কারখানার সংখ্যা বাড়ছে। গ্রুপটি শতভাগ পুনঃপ্রক্রিয়াজাত পলিয়েস্টার সুতা থেকে বিভিন্ন ধরনের পোশাক তৈরি করে রপ্তানি করছে। অ্যাডিডাস, রালফ লরেনের মতো বিশ্বখ্যাত ক্রেতারা নিচ্ছে এসব পোশাক।

২. হা-মীমের গ্রুপ

দেশীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শীর্ষ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক হা-মীম গ্রুপ। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে গ্রুপটি ৬৬ কোটি ৬৬ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে সামগ্রিকভাবে দ্বিতীয় শীর্ষ স্থান দখল করেছিল। দুই বছরের ব্যবধানে তাদের রপ্তানি কমেছে ১২ শতাংশ। বিদায়ী অর্থবছরে গ্রুপটি রপ্তানি করেছে ৫৮ কোটি ৬৭ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক। রপ্তানি কমলেও দ্বিতীয় শীর্ষ স্থানেই রয়েছে হা-মীম।
বিশ্বের ৬৩টি দেশে পোশাক রপ্তানি করে হা-মীম। তবে তাদের বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। গত অর্থবছর গ্রুপটি ৪৩ কোটি ৬০ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে যুক্তরাষ্ট্রে, যা তাদের মোট রপ্তানির ৭৪ শতাংশ। তাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য প্যান্ট।
হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের তৈরি পোশাকের মূল বাজার যুক্তরাষ্ট্র। গত অর্থবছর সেখানে তৈরি পোশাকের বিক্রির পাশাপাশি মূল্যও কমে যায়। সে কারণে আমাদেরও রপ্তানির পরিমাণ কমে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজার ঘুরে দাঁড়ালে আমাদের গ্রুপের রপ্তানি আবার বাড়বে বলে আশা রাখি।’

৩. মণ্ডলের গ্রুপ

মণ্ডল গ্রুপের তৈরি পোশাকের রপ্তানির তালিকায় নতুন নতুন দেশ যুক্ত হচ্ছে। দুই বছর আগে ৬৭টি দেশে পোশাক রপ্তানি করেছিল গ্রুপটি। এখন তা ৭১টি দেশে উন্নীত হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে রপ্তানি বাড়ছে মণ্ডল গ্রুপের। গত অর্থবছরে গ্রুপটির রপ্তানি ৫ শতাংশ বেড়ে ৫০ কোটি ৫০ লাখ ডলারে উন্নীত হয়েছে। দুই বছর আগে তা ছিল ৪৭ কোটি ৮৮ লাখ ডলার।
মণ্ডলের রপ্তানি তালিকায় টি-শার্টই বেশি। মোট রপ্তানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ টি-শার্ট। গত অর্থবছরে গ্রুপটি ২৩ কোটি ৬৯ লাখ পিস পোশাক রপ্তানি করেছে। রপ্তানির প্রধান গন্তব্য ইউরোপের দেশগুলো।

মণ্ডল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল মজিদ মণ্ডল। বর্তমানে তাঁর ছেলে আবদুল মমিন মণ্ডল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

৪. অনন্ত গ্রুপ

বিদায়ী অর্থবছরে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে চমক দেখিয়েছে অনন্ত গ্রুপ। প্রথমবারের মতো রপ্তানির শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে গ্রুপটি। প্রথমবারই একলাফে চতুর্থ স্থান দখলে নিয়েছে তারা। অনন্তের ছয়টি তৈরি পোশাক কারখানা গত অর্থবছরে রপ্তানি করেছে ৪৬ কোটি ৫৭ লাখ ডলার। এই রপ্তানি তার আগের বছরের তুলনায় ৯৬ শতাংশ বেশি।


গত অর্থবছরে বিশ্বের ৬৩টি দেশে প্রায় সাড়ে আট কোটি তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে অনন্ত গ্রুপ। তাদের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে গ্যাপ, মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার, লেভি স্ট্রস, ওল্ড নেভি, পিভিএইচ, এইচঅ্যান্ডএমের মতো বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড। গ্রুপটি স্যুট, সোয়েটার, নারীদের অন্তর্বাসের পাশাপাশি সাধারণ পোশাকও রপ্তানি করছে।
১৯৯১ সালে শিল্পপতি হুমায়ুন জহীরের হাত ধরে ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডের নিজস্ব ভবনে যাত্রা শুরু হয়েছিল অনন্ত অ্যাপারেলসের। ১৯৯৩ সালে আততায়ীর হাতে হুমায়ুন জহীর নিহত হওয়ার পর প্রতিষ্ঠানের হাল ধরেন তাঁর স্ত্রী কামরুন নাহার জহীর। বর্তমানে তিনি গ্রুপের চেয়ারম্যান। বড় ছেলে শরীফ জহীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ছোট ছেলে আসিফ জহীর উপব্যবস্থাপনা পরিচালক।

বর্তমানে আদমজী ইপিজেড, গাজীপুর, কাঁচপুর ও চট্টগ্রাম ইপিজেডে মোট সাতটি কারখানা রয়েছে অনন্ত গ্রুপের। তাদের কর্মিসংখ্যা এখন ২৬ হাজার।

জানতে চাইলে অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ জহীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘করোনার পরে ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ায় পোশাকশিল্পে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। সে সময় কৌশল হিসেবে আমরা নতুন নতুন ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান যুক্ত করেছি। বৈচিত্র্যময় পণ্য রপ্তানি ও উচ্চ দামের পোশাকে নজর দিয়েছি। এ কারণে রপ্তানি বেড়েছে। আমাদের সামনে লক্ষ্য হলো, পোশাকের কাঁচামাল দেশে উৎপাদন করা। এ জন্য নরসিংদীতে আমরা দেশে প্রথম শতভাগ সিনথেটিক কাপড় তৈরির কারখানায় বিনিয়োগ করেছি। এক বছরের মধ্যে কারখানাটি তৈরি হলে রপ্তানিতে মূল্য সংযোজনও বাড়বে।’

৫.  ডিবিএল গ্রুপ

দুই বছর আগে ডিবিএল গ্রুপের রপ্তানি ছিল অর্ধবিলিয়ন ডলার। সেবার তৃতীয় শীর্ষ অবস্থানে ছিল শিল্পগোষ্ঠীটি। গত অর্থবছর তারা ৪৬ কোটি ১৭ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে পঞ্চম অবস্থানে জায়গা করে নেয়।
ইউরোপ-আমেরিকা থেকে শুরু করে এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার ৫৮টি দেশে পোশাক রপ্তানি করছে গ্রুপটি। গত অর্থবছরে ১৮ কোটি ৭৯ লাখ পিস পোশাক রপ্তানি করেছে গ্রুপটি। সেই হিসাবে প্রতিদিন ডিবিএলের কারখানায় তৈরি হচ্ছে পাঁচ লাখ পিসের বেশি পোশাক। ডিবিএলের বড় দুই ক্রেতা সিঅ্যান্ডএ ও এইচঅ্যান্ডএম।

১৯৯১ সালে ঢাকার ১০২ গ্রিন রোডে ছোট কারখানা দিয়ে দুলাল ব্রাদার্স লিমিটেড বা ডিবিএল গ্রুপের যাত্রা শুরু। ডিবিএল গ্রুপ গড়ে তুলেছেন চার ভাই—আবদুল ওয়াহেদ, এম এ জব্বার, এম এ রহিম ও এম এ কাদের। পোশাক দিয়ে শুরু হলেও সিরামিক টাইলস, তথ্যপ্রযুক্তি, টেলিযোগাযোগ ও ড্রেজিং ব্যবসায় নাম লিখিয়েছে ডিবিএল।

জানতে চাইলে ডিবিএল গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান এম এ রহিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আগামী এক-দুই বছর নতুন কোনো বিনিয়োগে যাব না। বর্তমানে যেসব প্রতিষ্ঠান আছে, সেগুলোকে শক্তিশালী করার দিকেই বেশি নজর দেব। বিশেষ করে অপচয় হ্রাস, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও তদারকি ব্যবস্থা শক্ত করাই মূল লক্ষ্য।’

৬.প্যাসিফিক গ্রুপ

প্যাসিফিকের পোশাকের গড় মূল্য ৯.৩৬ ডলার
রপ্তানিতে ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা চট্টগ্রামের প্যাসিফিক জিনস গ্রুপের রপ্তানি সামান্য বেড়েছে। গত অর্থবছর গ্রুপটি ৪০ কোটি ৫০ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে, যা এক বছর আগের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি। এ সময়ে গ্রুপটি ৪৭ দেশে ৪ কোটি ৩১ লাখ পিস পোশাক রপ্তানি করেছে। প্যাসিফিকের পোশাকের বড় ক্রেতা জাপানের বহুজাতিক খুচরা বিক্রয় প্রতিষ্ঠান ইউনিক্লো। তাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য ডেনিম পোশাক।
চার দশক আগে এনজেডএন ফ্যাশন দিয়ে তৈরি পোশাকশিল্পে যাত্রা শুরু করেছিলেন প্যাসিফিক জিনস গ্রুপের প্রয়াত উদ্যোক্তা মো. নাসির উদ্দিন। তাঁর হাত ধরেই বাংলাদেশে জিনস রপ্তানি শুরু হয়। বর্তমানে তাঁদের কারখানার সংখ্যা ৯।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ওভেন পোশাক রপ্তানি করে আসছিল প্যাসিফিক জিনস গ্রুপ। তারপর তাদের রপ্তানি তালিকায় যুক্ত হয় নিট পোশাক। যদিও গ্রুপটির রপ্তানি পোশাকের সিংহভাগই ডেনিম। বাংলাদেশের বেশির ভাগ কারখানা সস্তা পোশাক উৎপাদন করলেও প্যাসিফিকের পোশাকের গড় রপ্তানি মূল্য বেশি। গত অর্থবছরে গ্রুপটির প্রতিটি পোশাক গড়ে ৯ ডলার ৩৬ সেন্টে রপ্তানি হয়েছে।

জানতে চাইলে প্যাসিফিক জিনস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ডেনিম পোশাকের পাশাপাশি বৈচিত্র্যময় পোশাক তৈরিতে ঝুঁকছি। আবার পোশাকের পরিমাণ বাড়ানোর চেয়ে উচ্চমান ও উচ্চমূল্যের পোশাকের দিকে নজর দিচ্ছি। এতে পোশাকের পরিমাণ খুব বেশি না বাড়লেও মূল্য সংযোজন বাড়বে।’

৭. পলমল গ্রুপ:

পলমলের পোশাক রপ্তানি ৬৭ দেশে
সপ্তম অবস্থানে থাকা পলমল গ্রুপের রপ্তানি দুই বছর ধরে কমছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে গ্রুপটি ৪৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। ধারাবাহিকভাবে কমে গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা ৩৭ কোটি ৮৩ লাখ ডলারে নেমে আসে।
গত অর্থবছরে গ্রুপটি ১৪ কোটি পিস পোশাক রপ্তানি করেছে বিশ্বের ৬৭ দেশে। গ্রুপটি মূলত নিট পোশাক রপ্তানি করে। নিট পোশাকের মধ্যে রয়েছে টি-শার্ট, পোলো, শর্টস ইত্যাদি। গ্রুপটির পোশাকের শীর্ষ দুই ক্রেতা ওল্ড নেভি ও ওয়াল-মার্ট।

চার দশক আগে উদ্যোক্তা নূরুল হক সিকদারের হাতে যাত্রা শুরু হয় পলমল গ্রুপের। বর্তমানে তাঁর ছেলে নাফিস সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

৮. স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ

দুই বছর আগে ৪৮ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করে পঞ্চম শীর্ষ অবস্থানে ছিল স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ। তবে দুই বছর ধরে রপ্তানি কমে গ্রুপটি অষ্টম অবস্থানে নেমেছে। গত অর্থবছরে গ্রুপটি রপ্তানি করেছে ৩৬ কোটি ২৮ লাখ ডলার।
স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ মূলত ওভেন পোশাক রপ্তানি করে। ওভেনে তাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য ট্রাউজার প্যান্ট। গত অর্থবছরে ৩২টি দেশে সোয়া পাঁচ কোটি পিস তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে গ্রুপটি। তাদের পোশাকের প্রধান ক্রেতার তালিকায় রয়েছে মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার, গ্যাপ, আমেরিকান ইগল ইত্যাদি।

চার দশক আগে দুই প্রকৌশলী বন্ধু মোশাররফ হোসেন ও আতিকুর রহমানের হাত ধরে পোশাক খাতে স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের যাত্রা শুরু হয়েছিল। এখন দ্বিতীয় প্রজন্মও যুক্ত হয়েছে গ্রুপটির নেতৃত্বে।

জানতে চাইলে স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘জাপানের একটি ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে চলে যাওয়ার কারণে আমাদের রপ্তানি কমে গেছে। তবে আমরা নতুন ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান খুঁজছি। সেই সঙ্গে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ানোর চেষ্টা করছি।’

৯. বেক্সিমকো গ্রুপ

বেক্সিমকো গ্রুপের রপ্তানি গত তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম ছিল গত অর্থবছরে। গ্রুপটি গত অর্থবছর রপ্তানি করেছে ৩১ কোটি ৪৯ লাখ ডলারের পোশাক। রপ্তানি কমায় অষ্টম থেকে নবম স্থানে নেমে গেছে গ্রুপটি।
গ্রুপটির ১১টি প্রতিষ্ঠান গত অর্থবছরে ৩৯ দেশে সাড়ে ৭ কোটি পোশাক রপ্তানি করেছে। তাদের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ইন্ডিটেক্স। বেক্সিমকোর বৈচিত্র্যময় পোশাকের তালিকায় রয়েছে আইসোলেশন গাউন ও কাভার গাউন। গত অর্থবছর যুক্তরাষ্ট্রে ২ কোটি ১২ লাখ আইসোলেশন গাউন রপ্তানি করেছে।

বেক্সিমকোর মালিকানায় রয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। সরকার পতনের পর তিনি এখন কারাগারে।

১০. স্কয়ার গ্রুপ

তৈরি পোশাক খাতে কচ্ছপ গতিতে এগোচ্ছে স্কয়ার গ্রুপ। গত পাঁচ বছরে সব সময়ই প্রবৃদ্ধিতে থেকেছে গ্রুপটি। সর্বশেষ এক বছরের ব্যবধানে গ্রুপটির রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ২ শতাংশ। গত অর্থবছরে গ্রুপটি রপ্তানি করেছে ৩০ কোটি ৫৬ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক। এর ফলে শীর্ষ দশে জায়গা করে নিয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় এই শিল্পগোষ্ঠী।

১৯৫৮ সালে চার বন্ধুর হাত ধরে স্কয়ারের যাত্রা শুরু হয়। মূল কান্ডারি ছিলেন স্যামসন এইচ চৌধুরী। তাঁর প্রয়াণের পর সন্তানেরাই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন দেশের অন্যতম পুরোনো এই শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে। যুক্ত হয়েছেন নাতি-নাতনিরা। ওষুধ দিয়ে শুরু করলেও স্কয়ার গ্রুপের ব্যবসা বর্তমানে স্বাস্থ্যসেবা, ভোগ্যপণ্য, বস্ত্র ও তৈরি পোশাক, মিডিয়া, টিভি ও তথ্যপ্রযুক্তি, নিরাপত্তাসেবা, ব্যাংক ও ইনস্যুরেন্স, হেলিকপ্টার ও কৃষিপণ্যে বিস্তৃত।

বর্তমানে স্কয়ার গ্রুপের তৈরি পোশাক ৫৫ দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এই তালিকায় আছে হুগো বস, রালফ লরেন, মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার, পুমার মতো বিশ্বখ্যাত ক্রেতারাও।

জানতে চাইলে স্কয়ার টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান তপন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘তৈরি পোশাকে আমাদের আরও বিনিয়োগের পরিকল্পনা আছে। কারণ, চাহিদা অনেক। তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও তারপরের ঘটনার প্রভাব তৈরি পোশাক খাতের জন্য বড় ধাক্কা। শ্রমিকদের নিরাপত্তা, কারখানার সুরক্ষা ও ক্রয়াদেশের পণ্য সময়মতো পাওয়া নিয়ে বিদেশি ক্রেতাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে আগামী মৌসুমের ২৫ শতাংশ ক্রয়াদেশ অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়ে গেছে। সাম্প্রতিক সময়ের কারখানায় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ভালো লক্ষণ নয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আমাদের দেশের বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।’

বাংলাদেশের সেরা ১০ গার্মেন্টস ইন্ড্রাস্ট্রি | Top Ten Garments Exporter in Bangladesh

ফিনিশিং কার্যপ্রনালীঃ
১. প্রথমে ব্যাচ কার্ড দেখবে, রীব, কলার কার্প ও আনুষাঙ্গিক কি কি আছে এবং প্রসেস কি তা, নিশ্চিত করতে হবে।

২. কোন স্পেশাল ফিনিসিং প্রসেস আছে কি না, (ব্রাশ / সুইডিং, ক্যামিকেল ফিনিশ)।

৩. আন-লোড সেড দেখে ফিনিশিং প্যারামিটার সেট করতে হবে। প্রয়োজনে সেড রোল দিতে হবে।

৪. প্রস্থ, জিএসএম, কম বেশি হলে, সাথে সাথে জানাতে হবে, তা না হলে, প্রসেস বন্ধ থাকবে।

৫. সিলিটিং এর পরে যদি কোন এসোচরিজ রীব, কলার কাপ হারানো যায়, তাহলে ফিনিসিং দ্বায়ি থাকবে।

৬. সেড এবং কোয়ালিটি ঠিক আছে কি না, দেখতে হবে এবং কোয়ালিটি/ ফিনিশিং ডিপাটমেন্ট এই নিশ্চিত হতে হবে, অন লাইন কিউসির মাধ্যমে। ৭. সেড যদি এডজাষ্ট করতে হয়, তাহলে স্ট্যান্টার মেশিনে, প্যাডার প্রেসার এবং স্ফটনার % কম বেশি করে সেড ঠিক করতে হবে।

৮. প্রস্থ (ডায়া), +২ ইঞ্ছি এবং জিএসএম ৭ থেকে ৫% কম রাখতে হবে, যাহাতে কোম্পেক্ট এর পরে ঠিক থাকে।

৯. ফেব্রিকস সফ্ট হয়েছে কি না, কাষ্টমারের গ্রহনযোগ্যতা অনুযায়ী।

১০. রীব বোডি ম্যাচিং আছে কি না এবং কোন মাপ (রিপিট) থাকলে দেখে নিতে হবে।

১১. সিংকেজ দেখে কোম্পেক্টরের সেটিং দিতে হবে, ১ ইঞ্চি এবং জিএসএম ২ থেকে ৩% কম থাকতে পারবে।

১২. কোম্পেক্টরের পরে সিংকেজ ফেল গ্রহন যোগ্য নয়।

১৩. ল্যাকরা ফ্রেবিক্স প্রতি ব্যাচ এর থেকে ২/৩ রোল থেকে ডান, বাম এবং মিডেল সাইডে জিএসএম চেক করে দেখতে হবে, সব জায়গায় সমান আছে কি না, সর্বচ্চ ৫-৬ গ্রাম পর্যন্ত ডিপারেন্স হলে চলবে।

১৪. সিংগেল জার্সি ১৬০ জিএসএম থেকে উপরের জিএসএম এর এবং রীব, ইন্টারলক, ফ্রিলিস এবং পিকে কাপড়ের স্ট্যান্টার মেশিনে চালানোর সময় কোন প্রকার এনগেল করা যাবে না, স্পারাইলেটি কোন্ট্রল করার জন্য, এমন কাপড়ে সাধারনত স্পারাইলেটির সমস্যা হয় না।

১৫. ব্রাশ / সুইডিং কাপড়ে প্রথম রোল প্রসেস করে, চেক করে দেখে নিতে হবে, সিংকার মার্ক দেখা যায় কি না, থাকলে নিটিং ডিপার্টমেন্ট কে জানাতে হবে।

১৬. ফিনিশিং এর সমস্যার জন্য কোন কাপড়, অতি অল্পসময়ের মধ্যে সমাধান করতে হবে, (২৪ ঘন্টার মধ্যে ঠিক করতে হবে)। 

১৭. কোন প্রসেস শুরু করার পূর্বে, কাপড়ের কোয়ালিটি ঠিক আছে কি না, নিশ্চিত হতে হবে।

১৮. কোন কাপড়ে সমস্যা (সিংকেজ, জিএসএম, ডায়া) খাকলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে সমাধান করতে হবে।

১৯. যখন কাপড় শুকানো হবে, একই সময়ে রীব, কলার কাফ ও শুকাতে হবে।

২০. কোন ডিপাটম্যান্টের (ডাইং নীটিং) সমস্যা হলে, ২৪ ঘন্টার মধ্যে ফেরত দেওয়া হবে, ঠিক করার জন্য।

২১. প্রথম বারেই ৯৫% এর মতো ডেলিভারি দেওয়ার উপযুক্ত করতে হবে। 

২২. সিংগেল প্রসেস তিন দিন এবং ডাবল প্রসেস (
ব্রাশ সূইডিং) কাপড় পাচ দিনের মধ্যে ডেলিবারি দিতে হবে। 

২৩. শিপ্ট ইনচার্জ, প্রথম রোল থেকে তিন রোল পর্যন্ত, মেশিনের সামনে থেকে, শত ভাগ কোয়ালিটি নিশ্চিত করেত হবে।

২৪. স্ট্যান্টার ও কম্প্যাক্ট মেশিন হঠাৎ বন্ধ করা কমাতে হবে।

২৫. কোন ফেব্রিকস গিট্টা দিয়ে প্যাডার পার করা যাবে না, (বি কেয়ার ফুল)

২৬. মেশিনের যেই কোন সমস্যা হলে, অবশ্যই মেইন্টেন্যাস বিভাগকে জানাতে হবে, কোন কিছু লুকানো যাবে না।

২৭. মেশিনের সাথে লাগিয়ে কোন ফেব্রিকস রাখা যাবে না।

২৮. চলাচলের রাস্তা ফ্রি রাখতে হবে।

২৯. ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ ইচ্ছে করে ভুল করলে।

ROBINTEX GROUP
Robintex Bangladesh Ltd
Fabrics Finishing Section
Working Procedure (SOP)

টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির ফিনিশিং স্টেন্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর - Finishing SOP

জার্মানিতে টেক্সটাইল নিয়ে উচ্চশিক্ষা, যা যা করতে হবে

টেক্সটাইল বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানিপ্রধান একটি খাত। হাজারো শিক্ষার্থী প্রতিবছরের স্নাতক শেষে এ খাতে ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে চান। ক্যারিয়ার গঠনের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও আবদান রাখেন তাঁরা। এ বিষয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থী বিদেশে পাড়ি দেন। ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আছে এ বিষয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ। বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় জার্মানি টেক্সটাইল উচ্চশিক্ষায় এগিয়ে। টেক্সটাইল বিষয়ে জার্মানিতে সরকারি বা বেসরকারিভাবে গবেষণাও হয়। তাই পড়াশোনা শেষে জার্মানিতে এ খাতে কাজ করার ও ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ রয়েছে। এখন জার্মানিতে টেক্সটাইল উচ্চশিক্ষা বিষয়ে খুঁটিনাটি জেনে নেওয়া যাক।

টেক্সটাইলে মাস্টার্স: 

টিউশন ফি ছাড়া আন্তর্জাতিক মানের পড়াশোনার জন্য চাইলে আপনিও জার্মানিকে বেছে নিতে পারেন। অন্য বিষয়ের মতো জার্মানিতে টেক্সটাইলে মাস্টার্স করার করার মতো খুব বেশি অপশন না থাকলেও বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে খুব কম খরচে মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ আছে।

বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য জার্মানির বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য ইউনিএসিস্ট নামের একটা প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নেয়, যারা আবেদনপ্রক্রিয়ার সব বিষয় যাচাই-বাছাই করে বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা সম্পর্কে প্রতিবেদনে দাখিল করে। বিশ্ববিদ্যালয় সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের অফার লেটার দেয়।

1.Hochschule Niederrhein University of applied science: 

এটি জার্মানির মুনশেনগ্লাডবাগ শহরে অবস্থিত।
বিষয়: ম্যানেজমেন্ট অব টেক্সটাইল ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজি।

আইইএলটিএসে ৭/এমওআই (MOI-মিডিয়াম অব ইন্সট্র্যাকশন) প্রয়োজন। যাঁরা ৪ বছরমেয়াদি স্নাতকে ইংরেজি মাধ্যমে পড়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে প্রমাণ হিসেবে এমওআই দিলেও চলবে।

এগুলোর সঙ্গে মোটিভিশন লেটার, সিভি, রিকমেন্ডেশন লেটার, চাকরির অভিজ্ঞতা (অপশনাল)।

প্রতি সেমিস্টারের শুরুতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ৫টি বিষয় দেওয়া থাকবে, সেখান থেকে যেকোনো একটি বিষয়ে ২ পৃষ্ঠার Research and development (R&D) লিখতে হবে। এখানে মূলত R&D আর ভালো ফলাফলের ওপর অফার লেটার পাওয়া নির্ভর করে।

আবেদনের সময়: 
এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সামার সেমিস্টারের জন্য ১৫ জুন এবং উইন্টার সেমিস্টারের জন্য ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইউনিএসিস্টের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।



2.Hof University of applied science: 

যাঁরা টেক্সটাইলে স্নাতক করেছেন এবং জার্মান এআই সার্টিফিকেট আছে, তাঁরা এখানে আবেদন করতে পারবেন।
বিষয়: Sustainable Textile (M.Eng)।

ভাষা: আইইএলটিএসে ৬ দশমিক ৫/এমওআই/টোয়েফেল-৯০ (মিনিমাম) প্রয়োজন।

এগুলোর সঙ্গে মোটিভেশন লেটার, চাকরির অভিজ্ঞতা, রিকমেন্ডেশন লেটার, সিভি।
আবেদনের সময়: Sustainable Textile (M.Eng) এ সামার সেমিস্টারে ভর্তির জন্য ৫-৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আবেদন করা যায়। উইন্টার সেমিস্টারের জন্য ১৫ এপ্রিল থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ইউনিএসিস্টের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।



3.TU Dresden: 

জার্মান ভাষা বি টু (B2) পর্যন্ত করা থাকলে এখানে আবেদন করা যাবে। এ বিষয়ে স্কলারশিপ পাওয়া যায়।
বিষয়: Textile Machinery and High Performance Material Technology।

মোটিভেশন লেটার, চাকরি অভিজ্ঞতা, রিকমেন্ডেশন লেটার ও সিভি লাগবে।

প্রতিবছর ৩১ মে পর্যন্ত ইউনিএসিস্টের মাধ্যমে এই বিষয়ে আবেদন করা যাবে।

আবেদনের সময়: স্কলারশিপের জন্য প্রতিবছর ১ অক্টোবর থেকে আবেদন করা যাবে।

4.RWTH Aachen University: 
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাইলে টিউশন ফি লাগবে। প্রতি সেমিস্টার ৫ হাজার ৫০০ ইউরো লাগবে টিউশন ফি। তবে যাঁরা রিসার্চ করতে চান, তাঁদের জন্য ভালো অপশন আছে এখানে। প্রতিবছর ২ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ১ মার্চ পর্যন্ত সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করা যাবে। মোটিভেশন লেটার, রিকমেন্ডেশন লেটার ও সিভি লাগবে।

5.Martin Luther university:

 টেক্সটাইলে পড়াশোনা করে যাঁরা পলিমার নিয়ে আরও পড়তে চান, তাঁরা এখানে আবেদন করতে পারেন।


বিষয়: Polymer Material Science.

ভাষা: আইইএলটিএসে ৬/টোয়েফেল ২১৩ (কম্পিউটার বেজড, ৫৫০ পেপার বেজড) প্রয়োজন।


মোটিভেশন লেটার, রিকমেন্ডেশন লেটার ও সিভি লাগবে।

প্রতিবছর ১৫ জুন পর্যন্ত উইন্টার সেমিস্টারের জন্য ইউনিএসিস্টের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।

6.Kaiserslautern University of applied Science, Pirmasens.

বিষয়: Refinement of Polymer and composite products
ভাষা: আইইএলটিএসে ৬ দশমিক ৫/জার্মান ল্যাঙ্গুয়েজ বিওয়ান (German language B1)

মোটিভেশন লেটার, রিকমেন্ডেশন লেটার ও সিভিও লাগবে।

আবেদনের সময়: সামার সেমিস্টারে জন্য ১৫ নভেম্বর এবং উইন্টার সেমিস্টারের জন্য ৩১ মে থেকে ইউনিএসিস্টের (Uniassist) মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।

7.Hochschule Fresenius University of applied science, Berlin.
বিষয়: Master’s of Arts in Sustainability in Fashion and creative Industries.

ভাষা: আইইএলটিএসে ৬ দশমিক ৫

যাঁরা ফ্যাশন নিয়ে পড়তে চান, তাঁরা এখানে আবেদন করতে পারেন। আইইএলটিএসে ৬ দশমিক ৫ এর সঙ্গে মোটিভেশন লেটার, রিকমেন্ডেশন লেটার, সিভি থাকলে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের সময়: প্রতিবছর ৩১ মে থেকে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে আবেদন করা যাবে।

এর বাইরে আরও কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য আবেদন করা যায়।



লেখক: 
শরীয়ত উল্লাহ টিটু, শিক্ষার্থী, ম্যানেজমেন্ট অব টেক্সটাইল ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজি, Hochschule Niederrhein University of Applied Science, জার্মানি

জার্মানিতে টেক্সটাইল হায়ার স্টাডির জন্য কিছু ইউনিভার্সিটি | Textile Higher study in Germany