Fachion Brand | Christian Dior | ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর - Textile Lab | Textile Learning Blog



চলচ্চিত্র আমাদের বিনোদনের অন্যতম খোড়াক। নেটফ্লিক্স,অ্যামাজন প্রাইম ইত্যাদি এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। আপনি যদি সিনেমাপ্রেমী হন তবে আপনি হয়তো "The Crazy Rich Asians" সিনেমাটি দেখেছেন অথবা নাম শুনেছেন। বইপ্রেমী হলে উপন্যাসটি হয়তো পড়েও থাকতে পারেন। মূলত লেখক বইটিতে যারা কিনা বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির তালিকায় পড়েন তাদের লাইফস্টাইল, ফ্যাশন ইত্যাদি নিয়ে লিখেছেন। আধুনিক বিশ্বের ধনী নারী-পুরুষদের কাছে অতি পরিচিত একটি শব্দ "Haute-Couture"। শব্দটির আক্ষরিক কোনো অর্থ হয়তো নেই তবে ফ্যাশন জগতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ। "Haute-Couture" দ্বারা খুব সুনিপণভাবে তৈরিকৃত পোশাককে বুঝায়। এধরনের পোশাক সম্পূর্ণভাবে হাতে তৈরি করা হয়, এতে ব্যবহার করা হয় উন্নতমানের ফেব্রিক্স ও বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন-প্যাটার্ণ।

 খুবই দক্ষ কারিগরদের দ্বারা এসব পোশাক তৈরি করা হয়। ফলে এসব পোশাকের মূল্য ১০,০০০ মার্কিন ডলার থেকে শুরু হয়ে মিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত পৌছায় যা কেনার ক্ষমতা বিশ্বের মাত্র ২০০০ সংখ্যক মানুষের রয়েছে। যদিও পুরো ব্যাপারটি কাল্পনিক অথবা অতিরঞ্জিত মনে হলেও পৃথিবীর ফ্যাশন জগত টিকেই রয়েছে "Haute-Couture" এর উপর ভিত্তি করে।পৃথিবীতে মাত্র ১৫টি এর মতো "Haute-Couture" ডিজাইনার হাউস রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে "ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর"।


১৯৪৬ সালে প্যারিসে নতুন "Haute-Couture" ডিজাইনার হাউস হিসেবে "ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর" এর যাত্রা শুরু হয়। প্রথম থেকেই তাদের চিন্তা ছিলো চিরাচরিত নিয়ম থেকে একটু আলাদা ধরনের। তাই ১৯৪৭ সালে "ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর" তাদের প্রথম "Haute-Couture" ডিজাইনার লাইন "দ্য নিউ লুক" নিয়ে সকলের সামনে আসে। ফলাফল হিসেবে রাতারাতি তারা ফ্যাশন জগতে নিজেদের শক্ত আসন গড়ে তোলে।



নারীদের জন্য লম্বা স্কার্ট, চাপা কোমড় ও বিভিন্ন ধরনের কাধের ডিজাইন নিয়ে ফ্যাশন জগতে তারা যুগান্তকারি পরিবর্তন আনেন। "দ্য নিউ লুক"-কে আজো ফ্যাশন জগতের সবচেয়ে যুগান্তকারি "Haute-Couture" কালেকশান বলা হয়। ধীরে ধীরে "ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর" এর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে এবং তাদের ক্লায়েন্টের তালিকায় যুক্ত হয় "প্রিন্সেস মার্গারেট"-এর মতো নাম।


পোশাকের পর " ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর" এর পরবর্তী টার্গেট ছিলো নারীদের প্রসাধন সামগ্রী। ১৯৪৯ সালে তারা "মিস ডি'ওর" নামের পারফিউমটি বাজারজাত করেন এবং বরাবরের মতো এবারো তাদের পারফিউমটি সমাদৃত হয় সকলের কাছে।


এই খ্যাতির উপর ভিত্তি করেই "ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর" বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে "মিস ডি'ওর" পারফিউমকে নতুন ভাবে বাজারজাত করে। পরবর্তীতে তারা ছেলেদের পোশাক ও প্রসাধন-সামগ্রী বাজারজাত করেন। হংকং, কান, নিউ ইয়র্কের মতো জায়গাগুলোতে "ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর" তাদের শোরুম খোলেন।


২০০০ সালের দিকে "ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর" মেয়েদের গহনার দিকে মনোযোগ দেয়। তাদের বাকি সব কালেকশানের মতো গহনাও ব্যবসা সফল হয়। এতো খ্যাতির ভিড়েও "ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর"-কে " অ্যান্টি-স্যামিটিজম" এর মতো অপবাদ শুনতে হয়েছে।


২০১১ সালের তৎকালীন ব্র‍্যান্ডটির ডিজাইনার "জন গ্যালিয়ানো" এর বিরুদ্ধে "অ্যান্টি-স্যামিটিক" চিহ্ন ব্যবহার করার অভিযোগ আনা হয়। শেষ পর্যন্ত "ডি'ওর" এর পক্ষ থেকে তাকে বরখাস্ত করা হয় এবং জনসম্মুখে ক্ষমাও চাওয়া হয়। যদিও এই ক্ষতির রেশ খুব দ্রুতই তারা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে। বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় ২১০টি শোরুম রয়েছে "ডি'ওর" এর। ২০১৮ সালের "ডি'ওর" এর সমীক্ষা অনুযায়ী তাদের নেট আয় প্রায় ২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং সম্পূর্ণ ফ্যাশন হাউসটির মূল্য প্রায় ৭৭.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।


হলিউড অভিনেত্রী "জেনিফার লরেন্স" ও গায়িকা "রিয়ান্না"-এর মতো ব্যক্তিত্ত্বকে "ডি'ওর"-এর ব্র‍্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে দেখা গিয়েছে। "Haute-Couture" শব্দটি হয়তো আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশের কাছে বেমানান তবে পৃথিবীর ধনী ব্যক্তিত্ত্বদের কাছে এটি প্রিয় একটি শব্দ।



তাইতো "ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর" এর মতো "Haute-Couture" ডিজাইনার হাউস গুলো ফ্যাশন দুনিয়াকে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ভবিষ্যতেও যে "ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর" "Haute-Couture"কে এগিয়ে নিয়ে যাবে এব্যাপারে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। বিংশ শতাব্দীতে "ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর" যেমন নিজেদের গৌরব ধরে রেখেছে তেমনিভাবে সামনের সময় গুলোতেও তাদের গৌরব বেড়ে চলুক এই প্রত্যাশাই রইলো।



Fachion Brand | Christian Dior | ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর




চলচ্চিত্র আমাদের বিনোদনের অন্যতম খোড়াক। নেটফ্লিক্স,অ্যামাজন প্রাইম ইত্যাদি এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। আপনি যদি সিনেমাপ্রেমী হন তবে আপনি হয়তো "The Crazy Rich Asians" সিনেমাটি দেখেছেন অথবা নাম শুনেছেন। বইপ্রেমী হলে উপন্যাসটি হয়তো পড়েও থাকতে পারেন। মূলত লেখক বইটিতে যারা কিনা বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির তালিকায় পড়েন তাদের লাইফস্টাইল, ফ্যাশন ইত্যাদি নিয়ে লিখেছেন। আধুনিক বিশ্বের ধনী নারী-পুরুষদের কাছে অতি পরিচিত একটি শব্দ "Haute-Couture"। শব্দটির আক্ষরিক কোনো অর্থ হয়তো নেই তবে ফ্যাশন জগতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ। "Haute-Couture" দ্বারা খুব সুনিপণভাবে তৈরিকৃত পোশাককে বুঝায়। এধরনের পোশাক সম্পূর্ণভাবে হাতে তৈরি করা হয়, এতে ব্যবহার করা হয় উন্নতমানের ফেব্রিক্স ও বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন-প্যাটার্ণ।

 খুবই দক্ষ কারিগরদের দ্বারা এসব পোশাক তৈরি করা হয়। ফলে এসব পোশাকের মূল্য ১০,০০০ মার্কিন ডলার থেকে শুরু হয়ে মিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত পৌছায় যা কেনার ক্ষমতা বিশ্বের মাত্র ২০০০ সংখ্যক মানুষের রয়েছে। যদিও পুরো ব্যাপারটি কাল্পনিক অথবা অতিরঞ্জিত মনে হলেও পৃথিবীর ফ্যাশন জগত টিকেই রয়েছে "Haute-Couture" এর উপর ভিত্তি করে।পৃথিবীতে মাত্র ১৫টি এর মতো "Haute-Couture" ডিজাইনার হাউস রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে "ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর"।


১৯৪৬ সালে প্যারিসে নতুন "Haute-Couture" ডিজাইনার হাউস হিসেবে "ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর" এর যাত্রা শুরু হয়। প্রথম থেকেই তাদের চিন্তা ছিলো চিরাচরিত নিয়ম থেকে একটু আলাদা ধরনের। তাই ১৯৪৭ সালে "ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর" তাদের প্রথম "Haute-Couture" ডিজাইনার লাইন "দ্য নিউ লুক" নিয়ে সকলের সামনে আসে। ফলাফল হিসেবে রাতারাতি তারা ফ্যাশন জগতে নিজেদের শক্ত আসন গড়ে তোলে।



নারীদের জন্য লম্বা স্কার্ট, চাপা কোমড় ও বিভিন্ন ধরনের কাধের ডিজাইন নিয়ে ফ্যাশন জগতে তারা যুগান্তকারি পরিবর্তন আনেন। "দ্য নিউ লুক"-কে আজো ফ্যাশন জগতের সবচেয়ে যুগান্তকারি "Haute-Couture" কালেকশান বলা হয়। ধীরে ধীরে "ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর" এর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে এবং তাদের ক্লায়েন্টের তালিকায় যুক্ত হয় "প্রিন্সেস মার্গারেট"-এর মতো নাম।


পোশাকের পর " ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর" এর পরবর্তী টার্গেট ছিলো নারীদের প্রসাধন সামগ্রী। ১৯৪৯ সালে তারা "মিস ডি'ওর" নামের পারফিউমটি বাজারজাত করেন এবং বরাবরের মতো এবারো তাদের পারফিউমটি সমাদৃত হয় সকলের কাছে।


এই খ্যাতির উপর ভিত্তি করেই "ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর" বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে "মিস ডি'ওর" পারফিউমকে নতুন ভাবে বাজারজাত করে। পরবর্তীতে তারা ছেলেদের পোশাক ও প্রসাধন-সামগ্রী বাজারজাত করেন। হংকং, কান, নিউ ইয়র্কের মতো জায়গাগুলোতে "ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর" তাদের শোরুম খোলেন।


২০০০ সালের দিকে "ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর" মেয়েদের গহনার দিকে মনোযোগ দেয়। তাদের বাকি সব কালেকশানের মতো গহনাও ব্যবসা সফল হয়। এতো খ্যাতির ভিড়েও "ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর"-কে " অ্যান্টি-স্যামিটিজম" এর মতো অপবাদ শুনতে হয়েছে।


২০১১ সালের তৎকালীন ব্র‍্যান্ডটির ডিজাইনার "জন গ্যালিয়ানো" এর বিরুদ্ধে "অ্যান্টি-স্যামিটিক" চিহ্ন ব্যবহার করার অভিযোগ আনা হয়। শেষ পর্যন্ত "ডি'ওর" এর পক্ষ থেকে তাকে বরখাস্ত করা হয় এবং জনসম্মুখে ক্ষমাও চাওয়া হয়। যদিও এই ক্ষতির রেশ খুব দ্রুতই তারা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে। বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় ২১০টি শোরুম রয়েছে "ডি'ওর" এর। ২০১৮ সালের "ডি'ওর" এর সমীক্ষা অনুযায়ী তাদের নেট আয় প্রায় ২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং সম্পূর্ণ ফ্যাশন হাউসটির মূল্য প্রায় ৭৭.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।


হলিউড অভিনেত্রী "জেনিফার লরেন্স" ও গায়িকা "রিয়ান্না"-এর মতো ব্যক্তিত্ত্বকে "ডি'ওর"-এর ব্র‍্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে দেখা গিয়েছে। "Haute-Couture" শব্দটি হয়তো আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশের কাছে বেমানান তবে পৃথিবীর ধনী ব্যক্তিত্ত্বদের কাছে এটি প্রিয় একটি শব্দ।



তাইতো "ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর" এর মতো "Haute-Couture" ডিজাইনার হাউস গুলো ফ্যাশন দুনিয়াকে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ভবিষ্যতেও যে "ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর" "Haute-Couture"কে এগিয়ে নিয়ে যাবে এব্যাপারে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। বিংশ শতাব্দীতে "ক্রিশ্চিয়ান ডি'ওর" যেমন নিজেদের গৌরব ধরে রেখেছে তেমনিভাবে সামনের সময় গুলোতেও তাদের গৌরব বেড়ে চলুক এই প্রত্যাশাই রইলো।



কোন মন্তব্য নেই: