লেখাটি গার্মেন্টস বিশেষজ্ঞদের জন্যে, সম্পুর্ন পড়ুন অনেক ভুল ধারনা দুর হয়ে যাবে - Textile Lab | Textile Learning Blog
লেখাটি গার্মেন্টস বিশেষ-অজ্ঞদের জন্যে : বাংলাদেশে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী ও এর মালিকদের নিয়ে অন্য সেক্টরের লোকজনের মধ্যে কিছু ভ্রান্তধারনা রয়েছে, আশাকরি আমার এ লেখাটি তাদের ভুল ধারনাকে পাল্টাতে সাহায্য করবে।




ভুল ধারনাগুলো হলো:

১)বেতন সংক্রন্ত : মালিকরা শ্রমিকের বেতন সময় মতন দেয় না, বেতন কম দেয়, ওভার টাইমের টাকা দেয় না, শ্রমিককে ঠকায়, মালিকেরা রক্তচোষা, ইত্যাদি ।

২) শিল্প সংক্রান্ত : গার্মেন্টস ব্যাবসায় তো শুধু ডলার আর ডলার, গার্মেন্টস মালিক মানেই টাকা-পয়শার অভাব নাই, মালিকেরা চোর, হঠাৎ করে অঢেল টাকা-পয়শার মালিক হয়ে গেছে।লাভ হলেও শুধু লসের কথা শুনায়, বেতন দেয় না, কিন্তু ফ্যাক্টরী বাড়ায়, শ্রমিকের টাকায় একটা ফ্যাক্টরী থেকে দুই-তিনটা ফ্যাক্টরী করে ফেলে।

৩) মালিকেরা দামি গাড়িতে ঘুরে বেড়ায়, ঘন ঘন বিদেশ যায়, বিদেশে ও এদের বাড়ি -গাড়ি আছে, ব্যাংকের টাকা মেরে দেয়, ব্যাংক থেকে যে টাকা লোন নেয়, তা আর মালিকদের পরিশোধ করতে হয় না।


এবার এই ব্যাবসা সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত কিছু জানবো:- Garments শিল্প একটি অত্যন্ত ঋুঁকিপুর্ন ব্যাবসা।ঝুঁকিপূর্ন এই জন্যে যে, ব্যাবসায়টি সম্পুর্ণই বিদেশী ক্রেতা/বায়ার নির্ভর।মালিককে প্রথমেই অনেক টাকা (জায়গা/বিল্ডিং/ভাড়া/মেশিনারীজ/গ্যাস/বিদ্যুৎ লাইন/১০-১২টা লাইসেন্স, কমপ্লায়েন্স সার্টিফিকেট ইত্যাদি) বিনিয়োগ করতে হয়।অনেক স্টাফ ও শ্রমিককে নিয়োগ দিতে হয়।কিন্তু বায়ার যদি কাজ না দেয়, বা মূল্য কম হওয়ার কারনে মালিক যদি কাজ না নেয় বা কাজ কম নেয়, তাহলে বসিয়ে বসিয়ে শত শত/হাজার হাজার শ্রমিককে, লক্ষ লক্ষ/কোটি কোটি টাকা বেতন দিতে হয়। ফ্যাক্টরী দিলেই আপনি বায়ারের কাছথেকে কাজ পাবেন এর কোন নিশ্চয়তা নেই।

গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীর মালিকগুলো যেন একেকজন অর্থনৈতিক মুক্তিযাদ্ধা ! বছরে exports 35 billion Dollars!
মোট রপ্তানীর ৮৪% আসে এই একটি খাত থেকে।সরাসরি উত্পাদনে ৪০ লক্ষ শ্রমিকের কর্মসংস্হান, Accessorise, নিটিং, উইভিং, ডাইং, spinning, printing, embroidery, পরিবহন, ব্যাংক, বিমা সবকিছু মিলিয়ে দেশের দুই কোটি লোক/পরিবার benefitted.


গার্মেন্টস ব্যাবসা বন্ধ হলে বা এই ব্যবসার ক্ষতি হলে কি হবে ??

1. প্রথমেই ৫০ লক্ষ লোক চাকুরী হারাবে

2. ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ সহ এই খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট আরো ১.৫০কোটি লোক ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

3. ব্যাংক, বীমা, CnF agent, freight forwarder, পরিবহন, কৃষি সহ অন্য ব্যাবসায় ধস নামবে। আরো লোক বেকার হবে।

4. দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট হবে, দেশের উন্নয়ন, মেট্রোরেল ও পদ্মাব্রীজের মত বড় প্রকল্পগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।

5. আমদানীকৃত পন্য যেমন এসি, ফ্রিজ, TV, কম্পিউটার, কৃষি যন্ত্র -পাতি, নির্মান সামগ্রী, ঔষধ, মটর গাড়ি ইত্যাদির দাম আরো বাড়বে।

6. রিয়েল এস্টেট ব্যাবসায় ধস নামবে, নির্মান শ্রমিকরা বেকার হবে! জমির দাম পরে যাবে।বাড়ি ভাড়া হবে না, বাড়ি ওয়ালারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

7. মটর-গাড়ি ব্যাবসা বন্ধ হবে, গ্যারেজ শ্রমিক বেকার হবে।

8. দেশের হোটেল ও পর্যটন ব্যাবসা বন্ধ হবে।

9. অলিতে-গলিতে বেশ্যাবৃত্তি বেড়ে যাবে, নারী পাচার সহ ছিনতাই, চুরি-ডাকাতি বাড়বে।

10. সরকারের রাজস্ব আয়ে ঘাটতি দেখা দিবে, সরকার ব্যায় কমাতে বাধ্য হবে।

11. লাইসেন্স প্রদানকারী বিভিন্ন সরকারী অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের ঘুষ ইনকাম কমে যাবে।

12. গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীর সম্মুখে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে ওঠা দোকান পাঠ, বাজারগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।

13. এলাকায় চাঁদাবাজি বাড়বে, ঝুট ও স্টকলট ব্যাবসা বন্ধ হওয়ার কারনে, রাজনৈতিক দলের লেজুরগুলো চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও ডাকাতির সাথে জড়িয়ে পরবে।

14. চাকুরী না থাকায়, যুব সমাজ চরম হতাশায় নিমজ্জিত হবে, নেশাসক্ত হবে লক্ষ লক্ষ মানুষ।

15. সমাজে দেখা দিবে চরম অস্থিরতা।অনিশ্চিয়তা, নিরাপত্তাহীনতা।




এবার ফিরেদেখা যাক, বেতন নিয়ে কি হয়।
ছোট-বড় সব মিলিয়ে গার্মেন্টস এর সংখ্যা ৪০০০ (কম/বেশি), এর মধ্যে BGMEA ও BKMEA এর সদস্য ও সচল ফ্যাক্টরীর সংখ্যা ২৭৫০(অনেক ফ্যাক্টরী উভয় এসোসিয়েশনের মেম্বার)। এরা সবাই কমপ্লায়েন্স ও এক্সপোর্টার! এই ফ্যাক্টরীগুলোর ৮০-৯০% যত কষ্টই হোক না কেন মাসের ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে চায় বা করে থাকে।




বাকি ১০-২০% পারে না। কারন :
সব ফ্যাক্টরীর অর্থনৈতিক সক্ষমতা এক নয়।

সব ফ্যাক্টরীতে সব সময় কাজ থাকে না। বড়জোর ২৫% ফ্যাক্টরীতে সারাবছর কাজ থাকে, বাকি ৭৫% ফ্যাক্টরীর- কারো ৬ মাস, কারো ৯ মাস কাজের চাপ থাকে। অথচ বেতন দিতে হয় ১৩ মাসের!

সবার বায়ার এক নয়।সব বায়ারের price level ও এক নয়।

বায়ার অনেক সময় পেমেন্ট দিতে দেরি করে। এই জন্যে বেতন দিতে দেরি হতে পারে।


বায়ার অনেক সময় রেডি অর্ডার বাতিল করে! এক্ষেত্রে মালিকের লস হয় ৪০০%।

বায়ার অনেক সময় ডিসকাউন্ট করে কম পেমেন্ট দেয়। এক্ষেত্রে শ্রমিকের মজুরী মালিকের পকেট থেকে দিতে হয়।

কিছু খারাপ বায়ার মাল নিয়ে পেমেন্ট করেই না। সেক্ষেত্রে ৫০০% লস।

নানা কারনে দেরিতে শিপমেন্ট হলে, মালিককে এয়ার এ মাল শিপমেন্ট করতে হয় । এ ক্ষেত্রে ২০০-২৫০% loss.


ব্যাংক সুদের হার অনেক বেশি(১২-১৪%)। যাদের বেশি টাকা লোন আছে, তারা মুলত গাধার খাটুনি খেটে মরে ব্যাংকগুলোকে ধনী বানাবার জন্যে! বর্তমান অবস্থায়, একজন গার্মেন্টস মালিকের ৫% মুনাফা করাই কঠিন, সেক্ষেত্রে আপনার profit এর টাকা ব্যাংক সব শুষে নিবে, লোন পরিশোধ তো দুরের কথা, চক্রবৃদ্ধি সূদের জালে আপনার দেনা আরও বাড়তেই থাকবে।


আপনাদের বোঝার সুবিধার্থে একটি হিসাব দিচ্ছি- ১০০ টাকা মুল্যের একটি অর্ডার নিলে, এটার CM (মজুরী, ইউটিলিটি বিল, profit margin etc incl.) টেকে ২০ টাকা বা তারও কম। ৮০ টাকা খরচ পরে যায় সূতা/কাপড় ও আনুসজ্ঞিক মাল-সামানা যোগার করতে। এখন মাল তৈরি হবার পর, কোন ফ্যাক্টরীর কোন বায়ার যদি goods cancelled করে, বা discounts চায়, অথবা মাল এয়ার শিপমেন্ট হয়ে যায়, তখন ঐ ফ্যাক্টরীর আর সঠিক সময়ে বেতন দেওয়ার সামর্থ্য থাকে না। আর এ ধরনের ব্যাবসায় এ সব নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা। জুয়া খেলার চাইতেও রিস্কি ব্যাবসা, গার্মেন্টস মালিকরা মুলত ২ টাকার জন্যে ৯৮টাকা বিনিয়োগ করে থাকে। orders যখন cancelled হয় তখন আম-ছালা দুটোই যায়।


আমাদের প্রতিযোগী (Vietnam, Pakistan, Myanmar, india, Cambodia, Turkey, Srilanka etc) দেশের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায়, এবং অনেক বড় বড় বায়ারের দেউলিয়া/পতন হয়ে যাওয়ার জন্য এমনিতেই পোষাক ব্যাবসার দুর্দিন যাচ্ছিলো। অর্ডার কমে গেছে।আগের তুলনায় প্রাইস অনেক পরে গেছে! কাজ না থাকলে শত শত শ্রমিককে বসিয়ে বসিয়ে বেতন দিতে হয়! তাই কাজ চাই, যে যেমনে পারো কাজ চাই, বায়াররা সুযোগ সন্ধানী, প্রাইস আরো কমিয়ে দিলো, কারখানাগুলো কাজ পাওয়ার জন্য যেন অসম প্রতিযোগিতায় লিপ্ত।


এদিকে শিল্পের অভিজ্ঞতা না থাকা চাটুকার ও মিডিয়ার দৌরাত্বে, সরকার কিছু না বুঝেই শ্রমিকদের মজুরী দিলো বাড়িয়ে। বেজে গেলো পোষাক শিল্পের মরণ ঘন্টা। যা হওয়ার তাই হলো, একে একে ঝড়ে পরছে পোষাক শিল্প। কেউ বা ঋণ নিয়ে কোন রকম বেঁচে আছে, কেউ বা মরি মরি অবস্থা.......
লাভ তো দুরের কথা, বেতনের টাকাই যোগার হয় না! Bank instalment বাকি, এ হলো ৭৫% পোষাক কারখানার অবস্থা!

এই সব কারনেই অনেক মালিক চাইলেও সময় মতন বেতন দিতে পারে না। গার্মেন্টস মালিক হইলেই সবার অঢেল টাকা পয়শা থাকে না। অনেকেই ৬ মাসে বা ৯ মাসে যা আয় করে, পরবর্তি দু-তিন মাস যখন কাজ থাকে না, সব টাকা চলে যায় বসে থাকা শ্রমিকের বেতনের পেছনে।


বাজারে অর্ডার কম থাকায়, অনেক সময় বাধ্য হয়ে কম প্রাইসের অর্ডার নিতে হয়, সে ক্ষেত্রে শ্রমিকের বেতনের জন্যে Bank এর কাছে হাত পাততে হয়।

Cancelled অর্ডারের টাকা Bank কে সময় মতো পরিশোধ করতে না পারলে পুরাটাই ফোর্স লোনে রুপান্তরিত হয়!
এই ভাবেই ফ্যাক্টরীগুলো Bank এর কাছে ঋনের বোঝায় নিমজ্জিত হতে থাকে।

প্রত্যেক শ্রমিককে নিয়োগ দেওয়ার সময়, নিয়োগপত্র দেওয়া হয়! নিয়োগপত্রে বেতনের পরিমান ও শ্রমিক কি কি কাজ করতে পারে তা পরিস্কারভাবে উল্লেখ থাকে। বর্তমান প্রেক্ষপটে কোন শ্রমিককে ১০ টাকা কম দিয়েও পার পাবেন না। প্রতি ঘন্টার ওভার টাইমের হিসাব শ্রমিক রাখে। শ্রম আইন অনুসারে তারা earn leave সহ সব পাওনাই আদায় করে নেয়। অন্যথায় কাজ বন্ধ করে বসে থাকে। so বেতন কম দেওয়া বা না দেওয়া কিম্বা ঠকানোর তো কোন প্রশ্নই আসে না।

যারা বেতন দিতে ২ দিন দেরি হলেই কাজ বন্ধ করে বসে থাকে, ৫দিন দেরি হলে রাস্তা অবরোধ করে ভাংচুর শুরুকরে দেয়, তাদের দেড়মাসের বেতনও বাকি রাখতে পারবেন না। অথচ বলে বেড়ায় ৩-৪ মাসের বাকি??




লিখাটি সুমনবড়ুয়া স্যারের ওয়াল থেকে সংগ্রীহিত   

লেখাটি গার্মেন্টস বিশেষজ্ঞদের জন্যে, সম্পুর্ন পড়ুন অনেক ভুল ধারনা দুর হয়ে যাবে

লেখাটি গার্মেন্টস বিশেষ-অজ্ঞদের জন্যে : বাংলাদেশে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী ও এর মালিকদের নিয়ে অন্য সেক্টরের লোকজনের মধ্যে কিছু ভ্রান্তধারনা রয়েছে, আশাকরি আমার এ লেখাটি তাদের ভুল ধারনাকে পাল্টাতে সাহায্য করবে।




ভুল ধারনাগুলো হলো:

১)বেতন সংক্রন্ত : মালিকরা শ্রমিকের বেতন সময় মতন দেয় না, বেতন কম দেয়, ওভার টাইমের টাকা দেয় না, শ্রমিককে ঠকায়, মালিকেরা রক্তচোষা, ইত্যাদি ।

২) শিল্প সংক্রান্ত : গার্মেন্টস ব্যাবসায় তো শুধু ডলার আর ডলার, গার্মেন্টস মালিক মানেই টাকা-পয়শার অভাব নাই, মালিকেরা চোর, হঠাৎ করে অঢেল টাকা-পয়শার মালিক হয়ে গেছে।লাভ হলেও শুধু লসের কথা শুনায়, বেতন দেয় না, কিন্তু ফ্যাক্টরী বাড়ায়, শ্রমিকের টাকায় একটা ফ্যাক্টরী থেকে দুই-তিনটা ফ্যাক্টরী করে ফেলে।

৩) মালিকেরা দামি গাড়িতে ঘুরে বেড়ায়, ঘন ঘন বিদেশ যায়, বিদেশে ও এদের বাড়ি -গাড়ি আছে, ব্যাংকের টাকা মেরে দেয়, ব্যাংক থেকে যে টাকা লোন নেয়, তা আর মালিকদের পরিশোধ করতে হয় না।


এবার এই ব্যাবসা সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত কিছু জানবো:- Garments শিল্প একটি অত্যন্ত ঋুঁকিপুর্ন ব্যাবসা।ঝুঁকিপূর্ন এই জন্যে যে, ব্যাবসায়টি সম্পুর্ণই বিদেশী ক্রেতা/বায়ার নির্ভর।মালিককে প্রথমেই অনেক টাকা (জায়গা/বিল্ডিং/ভাড়া/মেশিনারীজ/গ্যাস/বিদ্যুৎ লাইন/১০-১২টা লাইসেন্স, কমপ্লায়েন্স সার্টিফিকেট ইত্যাদি) বিনিয়োগ করতে হয়।অনেক স্টাফ ও শ্রমিককে নিয়োগ দিতে হয়।কিন্তু বায়ার যদি কাজ না দেয়, বা মূল্য কম হওয়ার কারনে মালিক যদি কাজ না নেয় বা কাজ কম নেয়, তাহলে বসিয়ে বসিয়ে শত শত/হাজার হাজার শ্রমিককে, লক্ষ লক্ষ/কোটি কোটি টাকা বেতন দিতে হয়। ফ্যাক্টরী দিলেই আপনি বায়ারের কাছথেকে কাজ পাবেন এর কোন নিশ্চয়তা নেই।

গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীর মালিকগুলো যেন একেকজন অর্থনৈতিক মুক্তিযাদ্ধা ! বছরে exports 35 billion Dollars!
মোট রপ্তানীর ৮৪% আসে এই একটি খাত থেকে।সরাসরি উত্পাদনে ৪০ লক্ষ শ্রমিকের কর্মসংস্হান, Accessorise, নিটিং, উইভিং, ডাইং, spinning, printing, embroidery, পরিবহন, ব্যাংক, বিমা সবকিছু মিলিয়ে দেশের দুই কোটি লোক/পরিবার benefitted.


গার্মেন্টস ব্যাবসা বন্ধ হলে বা এই ব্যবসার ক্ষতি হলে কি হবে ??

1. প্রথমেই ৫০ লক্ষ লোক চাকুরী হারাবে

2. ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ সহ এই খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট আরো ১.৫০কোটি লোক ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

3. ব্যাংক, বীমা, CnF agent, freight forwarder, পরিবহন, কৃষি সহ অন্য ব্যাবসায় ধস নামবে। আরো লোক বেকার হবে।

4. দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট হবে, দেশের উন্নয়ন, মেট্রোরেল ও পদ্মাব্রীজের মত বড় প্রকল্পগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।

5. আমদানীকৃত পন্য যেমন এসি, ফ্রিজ, TV, কম্পিউটার, কৃষি যন্ত্র -পাতি, নির্মান সামগ্রী, ঔষধ, মটর গাড়ি ইত্যাদির দাম আরো বাড়বে।

6. রিয়েল এস্টেট ব্যাবসায় ধস নামবে, নির্মান শ্রমিকরা বেকার হবে! জমির দাম পরে যাবে।বাড়ি ভাড়া হবে না, বাড়ি ওয়ালারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

7. মটর-গাড়ি ব্যাবসা বন্ধ হবে, গ্যারেজ শ্রমিক বেকার হবে।

8. দেশের হোটেল ও পর্যটন ব্যাবসা বন্ধ হবে।

9. অলিতে-গলিতে বেশ্যাবৃত্তি বেড়ে যাবে, নারী পাচার সহ ছিনতাই, চুরি-ডাকাতি বাড়বে।

10. সরকারের রাজস্ব আয়ে ঘাটতি দেখা দিবে, সরকার ব্যায় কমাতে বাধ্য হবে।

11. লাইসেন্স প্রদানকারী বিভিন্ন সরকারী অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের ঘুষ ইনকাম কমে যাবে।

12. গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীর সম্মুখে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে ওঠা দোকান পাঠ, বাজারগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।

13. এলাকায় চাঁদাবাজি বাড়বে, ঝুট ও স্টকলট ব্যাবসা বন্ধ হওয়ার কারনে, রাজনৈতিক দলের লেজুরগুলো চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও ডাকাতির সাথে জড়িয়ে পরবে।

14. চাকুরী না থাকায়, যুব সমাজ চরম হতাশায় নিমজ্জিত হবে, নেশাসক্ত হবে লক্ষ লক্ষ মানুষ।

15. সমাজে দেখা দিবে চরম অস্থিরতা।অনিশ্চিয়তা, নিরাপত্তাহীনতা।




এবার ফিরেদেখা যাক, বেতন নিয়ে কি হয়।
ছোট-বড় সব মিলিয়ে গার্মেন্টস এর সংখ্যা ৪০০০ (কম/বেশি), এর মধ্যে BGMEA ও BKMEA এর সদস্য ও সচল ফ্যাক্টরীর সংখ্যা ২৭৫০(অনেক ফ্যাক্টরী উভয় এসোসিয়েশনের মেম্বার)। এরা সবাই কমপ্লায়েন্স ও এক্সপোর্টার! এই ফ্যাক্টরীগুলোর ৮০-৯০% যত কষ্টই হোক না কেন মাসের ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে চায় বা করে থাকে।




বাকি ১০-২০% পারে না। কারন :
সব ফ্যাক্টরীর অর্থনৈতিক সক্ষমতা এক নয়।

সব ফ্যাক্টরীতে সব সময় কাজ থাকে না। বড়জোর ২৫% ফ্যাক্টরীতে সারাবছর কাজ থাকে, বাকি ৭৫% ফ্যাক্টরীর- কারো ৬ মাস, কারো ৯ মাস কাজের চাপ থাকে। অথচ বেতন দিতে হয় ১৩ মাসের!

সবার বায়ার এক নয়।সব বায়ারের price level ও এক নয়।

বায়ার অনেক সময় পেমেন্ট দিতে দেরি করে। এই জন্যে বেতন দিতে দেরি হতে পারে।


বায়ার অনেক সময় রেডি অর্ডার বাতিল করে! এক্ষেত্রে মালিকের লস হয় ৪০০%।

বায়ার অনেক সময় ডিসকাউন্ট করে কম পেমেন্ট দেয়। এক্ষেত্রে শ্রমিকের মজুরী মালিকের পকেট থেকে দিতে হয়।

কিছু খারাপ বায়ার মাল নিয়ে পেমেন্ট করেই না। সেক্ষেত্রে ৫০০% লস।

নানা কারনে দেরিতে শিপমেন্ট হলে, মালিককে এয়ার এ মাল শিপমেন্ট করতে হয় । এ ক্ষেত্রে ২০০-২৫০% loss.


ব্যাংক সুদের হার অনেক বেশি(১২-১৪%)। যাদের বেশি টাকা লোন আছে, তারা মুলত গাধার খাটুনি খেটে মরে ব্যাংকগুলোকে ধনী বানাবার জন্যে! বর্তমান অবস্থায়, একজন গার্মেন্টস মালিকের ৫% মুনাফা করাই কঠিন, সেক্ষেত্রে আপনার profit এর টাকা ব্যাংক সব শুষে নিবে, লোন পরিশোধ তো দুরের কথা, চক্রবৃদ্ধি সূদের জালে আপনার দেনা আরও বাড়তেই থাকবে।


আপনাদের বোঝার সুবিধার্থে একটি হিসাব দিচ্ছি- ১০০ টাকা মুল্যের একটি অর্ডার নিলে, এটার CM (মজুরী, ইউটিলিটি বিল, profit margin etc incl.) টেকে ২০ টাকা বা তারও কম। ৮০ টাকা খরচ পরে যায় সূতা/কাপড় ও আনুসজ্ঞিক মাল-সামানা যোগার করতে। এখন মাল তৈরি হবার পর, কোন ফ্যাক্টরীর কোন বায়ার যদি goods cancelled করে, বা discounts চায়, অথবা মাল এয়ার শিপমেন্ট হয়ে যায়, তখন ঐ ফ্যাক্টরীর আর সঠিক সময়ে বেতন দেওয়ার সামর্থ্য থাকে না। আর এ ধরনের ব্যাবসায় এ সব নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা। জুয়া খেলার চাইতেও রিস্কি ব্যাবসা, গার্মেন্টস মালিকরা মুলত ২ টাকার জন্যে ৯৮টাকা বিনিয়োগ করে থাকে। orders যখন cancelled হয় তখন আম-ছালা দুটোই যায়।


আমাদের প্রতিযোগী (Vietnam, Pakistan, Myanmar, india, Cambodia, Turkey, Srilanka etc) দেশের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায়, এবং অনেক বড় বড় বায়ারের দেউলিয়া/পতন হয়ে যাওয়ার জন্য এমনিতেই পোষাক ব্যাবসার দুর্দিন যাচ্ছিলো। অর্ডার কমে গেছে।আগের তুলনায় প্রাইস অনেক পরে গেছে! কাজ না থাকলে শত শত শ্রমিককে বসিয়ে বসিয়ে বেতন দিতে হয়! তাই কাজ চাই, যে যেমনে পারো কাজ চাই, বায়াররা সুযোগ সন্ধানী, প্রাইস আরো কমিয়ে দিলো, কারখানাগুলো কাজ পাওয়ার জন্য যেন অসম প্রতিযোগিতায় লিপ্ত।


এদিকে শিল্পের অভিজ্ঞতা না থাকা চাটুকার ও মিডিয়ার দৌরাত্বে, সরকার কিছু না বুঝেই শ্রমিকদের মজুরী দিলো বাড়িয়ে। বেজে গেলো পোষাক শিল্পের মরণ ঘন্টা। যা হওয়ার তাই হলো, একে একে ঝড়ে পরছে পোষাক শিল্প। কেউ বা ঋণ নিয়ে কোন রকম বেঁচে আছে, কেউ বা মরি মরি অবস্থা.......
লাভ তো দুরের কথা, বেতনের টাকাই যোগার হয় না! Bank instalment বাকি, এ হলো ৭৫% পোষাক কারখানার অবস্থা!

এই সব কারনেই অনেক মালিক চাইলেও সময় মতন বেতন দিতে পারে না। গার্মেন্টস মালিক হইলেই সবার অঢেল টাকা পয়শা থাকে না। অনেকেই ৬ মাসে বা ৯ মাসে যা আয় করে, পরবর্তি দু-তিন মাস যখন কাজ থাকে না, সব টাকা চলে যায় বসে থাকা শ্রমিকের বেতনের পেছনে।


বাজারে অর্ডার কম থাকায়, অনেক সময় বাধ্য হয়ে কম প্রাইসের অর্ডার নিতে হয়, সে ক্ষেত্রে শ্রমিকের বেতনের জন্যে Bank এর কাছে হাত পাততে হয়।

Cancelled অর্ডারের টাকা Bank কে সময় মতো পরিশোধ করতে না পারলে পুরাটাই ফোর্স লোনে রুপান্তরিত হয়!
এই ভাবেই ফ্যাক্টরীগুলো Bank এর কাছে ঋনের বোঝায় নিমজ্জিত হতে থাকে।

প্রত্যেক শ্রমিককে নিয়োগ দেওয়ার সময়, নিয়োগপত্র দেওয়া হয়! নিয়োগপত্রে বেতনের পরিমান ও শ্রমিক কি কি কাজ করতে পারে তা পরিস্কারভাবে উল্লেখ থাকে। বর্তমান প্রেক্ষপটে কোন শ্রমিককে ১০ টাকা কম দিয়েও পার পাবেন না। প্রতি ঘন্টার ওভার টাইমের হিসাব শ্রমিক রাখে। শ্রম আইন অনুসারে তারা earn leave সহ সব পাওনাই আদায় করে নেয়। অন্যথায় কাজ বন্ধ করে বসে থাকে। so বেতন কম দেওয়া বা না দেওয়া কিম্বা ঠকানোর তো কোন প্রশ্নই আসে না।

যারা বেতন দিতে ২ দিন দেরি হলেই কাজ বন্ধ করে বসে থাকে, ৫দিন দেরি হলে রাস্তা অবরোধ করে ভাংচুর শুরুকরে দেয়, তাদের দেড়মাসের বেতনও বাকি রাখতে পারবেন না। অথচ বলে বেড়ায় ৩-৪ মাসের বাকি??




লিখাটি সুমনবড়ুয়া স্যারের ওয়াল থেকে সংগ্রীহিত   

৪টি মন্তব্য:

নামহীন বলেছেন...

আপনারা পারেনো বটে, এতো যদি লস হয় তাহলে কারখানা বন্ধ করে দেন, বিপরিত আয়ের উৎস আপনি আপনি তৈরী হবে, একটা কথা না বলে পারলাম না, কেউ লসের আসায় ব্যবসা কবে না লাভের আসায় কের

নামহীন বলেছেন...

ভালো আই ও ব্রেইন ওয়াশ করেছেন।
আমরাও কম বুঝিনা। যা কিছুই করেন মরার পর এ হিসাব চলবেনা।

Unknown বলেছেন...

Ekta normal product make Korte jei cost ta hoye eita tk kotha thekey joggan deowa hoye thakey bank or factory owner. Garments r marketing and merchandiser thik hole shob kicu thik hoye jabe because ekhaneh commission and over value deowa hoye thakey.

নামহীন বলেছেন...

শ্রমিক কে ভাঁওতাবাজি ঙ্গান দেয়ার কৌশল ভালোই আপনাদে। আর কতো দালালি করবেন মালিকদের হয়ে শ্রমিক কে ঠকানোর জন। আপনাদের বিচার মরার আগে হবে না। মরার পরে হবে। এখনো সময় আছে ভালোহয়ে যান।