⛔ কেন সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটির দেয়া যাবে না:
সবাই আমার কথা শুনে একটু অবাক হয়েছিলেন যে কেন সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি দেয়া যাবে না।
শ্রম আইনের ১০৩ ধারাতে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে প্রত্যেক বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে দেড় দিন এবং কারখানাকে একদিন সাপ্তাহিক ছুটি দিতে হবে।
এবার আপনি খুব জ্ঞানী মানুষের মত করে যে কাজটি করেন তা হল সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি দিয়ে দেন।খুবই ভাল আপনি শ্রমিকে ভালবেসে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি দিলেন।
এবার বলেন দাদা শ্রমিকে আপনি ঘোষনা করে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি দিলেন তাহলে শ্রমিক উক্ত সপ্তাহে কোন সাপ্তাহিক ছুটি পায়নি কারন আপনিই শ্রমিকে উক্ত সপ্তাহে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উৎসব ছুটি দিয়েছেন এবং হাজিরা খাতায় উৎসব ছুটি লিখেছেন কিন্তু সাপ্তাহিক ছুটি লিখেন নাই।
শ্রম আইনের ১০৪ ধারাতে এবং বিধিমালার ১০১ বিধিতে বলা আছে যদি কোন শ্রমিকে সাপ্তাহিক ছুটি দেয়া না হয় বা যায় তবে পরর্বতী ৩ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান করতে হবে।
আমার যুক্তি খুব সাধারণ আপনি সাপ্তাহিক ছুটি দিনকে উৎসব ছুটি দিয়ে রিপপ্লেস (replace) করতে পারবেন কোথাও বলা নাই তাই আপনি শ্রমিকে যে সাপ্তাহিক ছুটি দেননি সেটি দিয়ে দেন।
তাহলে আর সমস্যা নেই কারন আপনি শুক্রবার ছাড়া উৎসব ছুটি দিতে পারে না তাহলে সাপ্তাহিক ছুটির ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেন।
অনেকে বলার চেষ্টা করবেন যে আমি শ্রমিকে শুক্রবারে বন্ধ দিয়েছে তাহলে আবার ক্ষতিপূরণ কি জন্য। দাদা শুক্রবারে বন্ধ দিয়েছে এবং হাজিরা খাতায় কিন্তু উৎসব ছুটি লিখিছেন সেখানে কিন্তু সাপ্তাহিক/উৎসব লেখা যায় না কারন একদিনে দুটি ছুটি দেয়া যাবে তা কিন্তু বলা নাই শ্রম আইনে।তবে সাপ্তাহিক ছুটি না দিলে ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি দিতেই হবে তা শ্রম আইনে বলা আছে।
সরকারী প্রতিষ্ঠানের কথা টেনে লাভ নাই কারন সরকারী কর্মীরা নিজস্ব চাকুরী বিধিমালাতে চলে।
আশা করি এরপরে আর কেউ ব্যাখ্যা চেয়ে লজ্জা দিবেন না।
⛔ শ্রম আইনে অসদাচরণঃ কারণ দর্শানোর নোটিশ নিয়ে কথা
কোন শ্রমিক (বা কর্মচারী) অসদাচরণ করলে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তি প্রদানের বিধান দিয়েছে। শ্রম আইনের ২৩ ধারা অসদাচরণের উপাদান এবং ২৪ ধারা তদন্ত ও শাস্তির প্রক্রিয়া বিধৃত করেছে। এর ব্যত্যয় হলে সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়া এবং প্রদত্ত শাস্তি চ্যালেঞ্জযোগ্য হতে পারে। মাননীয় শ্রম আদালতে এবং ক্ষেত্র বিশেষে মাননীয় হাই কোর্ট বিভাগে তা করা যেতে পারে।
এবার একটি কারণ-দর্শানো বা শো-কোজ নোটিশের অংশ বিশেষ আপনাদের দেখাচ্ছিঃ
“আপনার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ এই যে, আপনি নিয়মিত ভাবে কারখানার সুইং মেশিনের পার্টস চুরি করে বাহিরে নিয়ে বিক্রি করেন। যাহার একাধিক প্রমাণ কর্তৃপক্ষের কাছে রয়েছে। আপনার উক্ত আচরণ বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী “অসদাচরণের” আওতায় পড়ে। যাহা শাস্তি যোগ্য অপরাধ ...”।
দেখার বিষয় এই কারণ-দর্শানো নোটিশে সমস্যা কি?
প্রথমতঃ
কবে-কোথায় কথিত চুরি সংগঠিত হয়েছে তা নোটিশে উল্লেখ নেই। কি কি পার্টস চুরি হয়েছে তা নেই। কোন মেশিনের পার্টস তাও উল্লেখ নেই।
কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে হলে তা সুনির্দিষ্ট ও স্পষ্ট হতে হবে; যাতে করে অভিযুক্ত ব্যক্তি অভিযোগ কি তা বুঝে তার উপযুক্ত ব্যাখ্যা দিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পান। অভিযোগ যে সুনির্দিষ্ট ও স্পষ্ট হতে হবে- সে বিষয়ে আমাদের মাননীয় উচ্চ আদালত থেকে একাধিক মামলায় সিদ্ধান্ত রয়েছে।
অভিযোগ সুনির্দিষ্ট ও স্পষ্ট না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি স্বীকারোক্তি দিলেও পরে তা চ্যালেঞ্জ করতে পারেন যে জোর করে ও তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে উক্ত স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে।
আরেকটি বিষয়, কর্তৃপক্ষের কাছে কোন “প্রমাণ” থাকলে তারা তা তদন্ত কমিটির কাছে দাখিল করবেন। কারণ-দর্শানোর নোটিশে তার উল্লেখ অভিযুক্তের প্রতি এক প্রকার হুমকি এবং অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের আগেই ঘটনার বিষয়ে পক্ষপাতদুস্টভাবে দোষী সাব্যস্ত করার এবং একতরফা সিদ্ধান্তে পৌঁছার দায়ে অভিযুক্ত হতে পারে।
⛔ মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধার বিশ্লেষণ:
বাংলাদেশ শ্রম আইনে মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধাকে চারটি ভাগে ভাগ করেছে।
১। মাতৃত্বকালীন ছুটি ও সুবিধা।
২। মাতৃত্বকালীন সুবিধাবিহীন ছুটি।
৩। নোটিশের পূর্বে সন্তান জন্ম পরবর্তী মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধা।
৪। গর্ভপাত জন্য ছুটি।
১। মাতৃত্বকালীন ছুটি ও সুবিধা:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-৪৫ অনুযায়ী যদি কোন নারী কর্মী প্রতিষ্ঠানে সন্তান জন্মের পূর্বে ৬ মাস কাজ করেন এবং তার ২টি সন্তান জীবিত নেই।
সেক্ষেত্রে তিনি ১১২ দিনের মজুরীসহ ছুটি এবং ধারা-৪৮ অনুযায়ী ১১২ দিনের সুবিধা পাবেন।
২। মাতৃত্বকালীন সুবিধাবিহীন ছুটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-৪৫ অনুযায়ী যদি কোন নারী কর্মী প্রতিষ্ঠানে সন্তান জন্মের পূর্বে ৬ মাস কাজ না করে থাকেন অথবা তার ২টি সন্তান জীবিত থাকে।
তবে তিনি মাতৃত্বকালীন সুবিধা পাবেন না কিন্তু এক্ষেত্রে তিনি কোন ছুটি পাইবার অধিকারী হইলে তাহা পাইবেন।
এক্ষেত্রে তার বৎসরিক ছুটি এবং অসুস্থতা ছুটি প্রথমে ভোগ করার পরে আর ছুটি প্রয়োজন হলে মজুরীবিহীন ছুটি পাবে।
৩। নোটিশের পূর্বে সন্তান জন্ম পরবর্তী মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধা:
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে নারী কর্মীরা মাতৃত্বকালীন ছুটির জন্য আবেদন করার পূর্বেই সন্তান জন্ম দান করেন।
উক্ত ক্ষেত্রে নারী কর্মী শুধুমাত্র ৫৬ দিনের ছুটি পাবেন এবং ১১২ দিনের মাতৃত্বকালীন সুবিধা পাবেন।
৪। গর্ভপাত জন্য ছুটি:
২০১৮ সালের সংশোধনীর পূর্বে কোন নারীর গর্ভপাতের জন্য কোন ছুটি বা সুবিধা পাইবার সুযোগ ছিল না কিন্তু ২০১৮ এর সংশোধনী অনুযায়ী কোন নারী কর্মীর গর্ভপাত হলে।
তিনি কোন মাতৃত্বকালীন সুবিধা পাবেন না কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার জন্য ছুটি ভোগ করতে পারবেন
⛔ অংশগ্রহণ কমিটি:
৬ জনের কম এবং ৩০ জনের অধিক হবেনা।
সাধারণ শ্রমিক সংখ্যা, কমিটির সদস্য সংখ্যা
১-১০০ জন = ৬ জন
১০১-৪০০ জন = ১০ জন
৪০১-৮০০ জন। = ১২ জন
৮০১-১৫০০ জন। = ১৪ জন
১৫০১-৩০০০ জন = ১৮ জন
৩০০১-৫০০০ জন। = ২২ জন
৫০০১-৭৫০০ জন = ২৪ জন
৭৫০১-ততোধিক = ৩০ জন
⛔ শ্রম আইন অনুসারে কিছু ছুটির হিসাব
শ্রম আইন অনুসারে কিছু ছুটির বিবরণঃ
১। মাতৃত্বকালীন ছুটি।
২। সাপ্তাহিক ছুটি।
৩। নৈমেত্তিক ছুটি।
৪। অসুস্থতা ছুটি।
৫। বাৎসরিক ছুটি।
৬। উৎসব ছুটি।
৭। ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি।
৮। অস্থায়ী অক্ষমতা ছুটি।
১। মাতৃত্বকালীন ছুটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের প্রথমে মাতৃত্বকালীন ছুটির কথা বলা আছে।
শ্রম আইনের ধারা-৪৬ অনুযায়ী একজন নারী কর্মী মোট ১৬ সপ্তাহ মাতৃত্বকালীন ছুটি পাইবেন।
২। সাপ্তাহিক ছুটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১০৩ ধারাতে সাপ্তাহিক ছুটি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
কারখানা এবং সড়ক পরিবহনের কর্মীরা এক দিন এবং দোকান,বাণিজ্যিক এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা দেড় দিন করে সাপ্তাহিক ছুটি পাবে।
৩। নৈমেত্তিক ছুটি:
ধারা-১১৫ অনুযায়ী একজন কর্মী ১০ দিন নৈমেত্তিক ছুটি পাইবার অধিকারী হইবেন।
তবে কোন কর্মী বছরের মাঝামাঝি সময়ে যোগদান করলে তিনি আনুপাতিক হারে নৈমেত্তিক ছুটি পাইবেন।
৪। অসুস্থতা ছুটি:
একজন কর্মী শ্রম আইনের ১১৬ ধারা অনুযায়ী ১৪ দিন অসুস্থতা ছুটি পাইবেন।
উক্ত ছুটি পেতে হলে একজন কর্মীকে ডাক্তারের প্রত্যয়নপএ প্রদর্শন করতে হবে।
৫। বাৎসরিক ছুটি:
কোন প্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিক প্রতি ১৮ দিন কাজের জন্য একদিন বাৎসরিক ছুটি পাইবেন।
শ্রম আইনে একটি মাএ ছুটি যা নগদায়ন করা যায়।
৬। উৎসব ছুটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১১৮ ধারা অনুযায়ী একজন কর্মী ১১ দিন উৎসব ছুটি পাইবেন।
প্রতি বছর ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে উক্ত ছুটির দিনগুলো নির্ধারন করতে হবে।
৭। ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি:
শ্রম আইনের দুটি ধারাতে ক্ষতিপূরন ছুটি দেয়ার কথা বলা আছে।
সাপ্তাহিক ছুটি এবং উৎসব ছুটির ক্ষেএে ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি প্রদান করতে হবে।
৮। অস্থায়ী অক্ষমতা ছুটি:
শ্রম আইনের ৫ম তফসিলে উক্ত ছুটির বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
১ বছরের বেশি কেউ উক্ত ছুটি পাইবেন না এবং পেশাগত ব্যাধির জন্য উক্ত ছুটি ২ বছরের বেশি কেউ পাবেন না।
⛔ সেফটি কমিটি গঠনের সময়সীমা:
*বিদ্যমান কারখানাসমুহের খেত্রে এ বিধিমালা কর্যকর হবার তারিখ হতে ৬(ছয়) মাসের মধ্যে
এবং
*বিধিমালা কার্যকরী হওয়ার পর স্থাপিত কারখানাসমুহের খেত্রে উৎপাদন চালু হওয়ার ৯(নয়) মাসের মধ্যে সেফটি কমিটি গঠণ করতে হবে।
সেফটি কমিটির সদস্য সংখ্যা:
*সেফটি কমিটিতে মোট সদস্য সংখ্যা ৬(ছয়) এর কম এবং ১২(বার) এর অধিক হবেনা।
মালিক এবং শ্রমিক সমসংখ্যক প্রতিনিধি থাকবে।
সাধারণ শ্রমিক সংখ্যা, কমিটির সদস্য সংখ্যা
৫০-৫০০ জন। = ৬ জন
৫০১-১০০০ জন। = ৮ জন
১০০১-৩০০০ জন। = ১০ জন
৩০০১-ততোধিক। = ১২ জন
(শ্রম বিধি-৮১)
⛔ পদত্যাগ (Resignation) বেপজার জন্য:
বেপজা নির্দেশনা অনুযায়ী শুধুমাএ স্থায়ী কর্মীদেরকে চাকুরী হতে পদত্যাগ করার জন্য নোটিশ প্রদান করতে হবে।
কোন স্থায়ী কর্মীকে চাকুরী হতে পদত্যাগের ৩০ দিনের আগাম নোটিশ অথবা ৩০ দিনের মূল মজুরী প্রদান করতে হবে।
কোন অস্থায়ী কর্মীকে পদত্যাগের জন্য কোন নোটিশ বা টাকা প্রদান করতে হবে না।
শ্রম আইনের মত বেপজা নির্দেশনায় কোন সার্ভিস বেনিফিটের ব্যবস্থা নেই স্থায়ী কর্মীদের জন্য।
এছাড়াও কোন কর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চালু থাকাকালীন ৬০ দিন অতিক্রম না করলে চাকুরী হতে পদত্যাগ করতে পারবে না,যদি না মালিকের শর্ত মানে।
⛔ চুক্তিভিত্তিক(Contractual) কর্মী নিয়োগঃ
দেশের Corporate Office গুলোতে খুব বেশি জন প্রিয় শব্দ হল Contractual Employee.
সবাই প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ প্রদানে বেশ আগ্রহী থাকে কিন্তু শ্রম আইন কি বলে।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-২৮ অনুযায়ী চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ দানের বিধান আছে।
তবে ২৮ ধারাতে সুকৌশলে একটা শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে।২৮ ধারা অনুযায়ী কোন কর্মীকে চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসাবে নিয়োগ প্রদান করতে পারবেন তবে সেটা উক্ত কর্মীর অবসর গ্রহন করার পরে যদি তিনি উক্ত কাজের জন্য উপযুক্ত হন।
অথাৎ ৬০ বছরের পরে কোন কর্মীকে চুক্তিভিত্তিক হিসাবে নিয়োগ প্রদান করতে পারবেন।
আমি শ্রম আইনের ২৮ ধারা মানবো না,চুক্তি করে কর্মী নিয়োগ দিলে তা বৈধ হবে কি না?
বাংলাদেশের চুক্তি আইনটি ১৮৭২ সালের আইন।
উক্ত আইনের ২৩ ধারাতে বলা আছে:
The consideration or object of agreement is lawful; unless it is forbidden by law.
মূল বক্তব্য হল:-
আপনি কোন চুক্তি করেন তা আইনত বৈধ হতে হবে অন্যথায় উক্ত চুক্তি আইনে নিষিদ্ধ।
বিষয়টা কেমন হয়ে গেল না।
শ্রম আইনের ধারা-৫ অনুযায়ী একজন কর্মীকে নিয়োগ দিতে হলে নিয়োগপএ এবং পরিচয়পএ দেয়ার কথা বলা আছে।
কিন্তু আপনি নিয়োগপএ প্রদান না করে দিলেন চুক্তিপত্র,
কি সেই চুক্তিপএ বৈধ, না অবৈধ।
এটা বুঝতে আপনাকে আইনবিদ হতে হবে না নিশ্চয়ই।
"Contractual Employment" শব্দটা ভুলে যেতে পারেন কারন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ অবৈধ ৬০ বছরের পূর্বে।
⛔বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারাঃ ০৪
শ্রমিকের শ্রেনীবিভাগ ও শিক্ষানবিশকাল
(কোন প্রতিষ্ঠানে সাধারনত ৭ ধরনের শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়)
১. শিক্ষাধীনঃ(Apprentice) প্রশিক্ষনার্থী হিসেবে নিয়োগ করা হবে এবং প্রশিক্ষন কালে ভাতা প্রদান করা হবে।
২. বদলীঃ(Substitiute) প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী কোন শ্রমিকের সাময়িক অনুপস্থিত সময়ে নিয়োগ করা হয়।
৩. সাময়িকঃ(Casual) প্রতিষ্ঠানের সাময়িক কোন কাজে কিছুদিনের জন্য নিয়োগ করা হবে।
৪. অস্থায়ীঃ(Temporary) এধরনের শ্রমিক কে নিয়োগ করা হয় একান্তভাবে অস্থায়ী কোন কাজের জন্য এবং কাজটি সীমিত সময়ের মধ্যে শেষ হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
৫. শিক্ষানবিশঃ(Probationer) কোন স্থায়ী পদে তাকে নিয়োগ করা হয়,এবং শিক্ষানবিশ বলা হয় শিক্ষানবিশকাল সমাপ্ত না হওয়ার আগ পর্যন্ত।
৬. স্থায়ীঃ(Permanent) শিক্ষানবিশকাল সফলভাবে সমাপ্ত হওয়ার পর স্থায়ী ভাবে নিয়োগ করা হয়।
* কেরানী সংক্রান্ত কাজে শিক্ষানবিসকাল হবে ৬ মাস আর অন্যান্য ক্ষেত্রে হবে ৩ মাস।
*দক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে তার কাজের মান যাচাইয়ের জন্য শিক্ষানবিসকাল ৩ মাসের পরিবর্তে আরো ৩ মাস বাড়ানো যেতে পারে।তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই বিষয়টি চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দিতে হবে।
* অদক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৩ মাস পরে কনফারমেশন লেটার না দেওয়া হলেও তাকে স্থায়ী বলে গন্য করা হবে।
*যদি কোন শ্রমিক শিক্ষানবিসকালে চাকুরী থেকে চলে যায়,এবং পরবর্তী ৩ বছরের মধ্যে একই মালিকের অধীনে চাকুরীতে আসে তাহলে পূর্ববর্তী শিক্ষানবিসকালের দিন সংখ্যা বর্তমান দিনের সাথে যোগ করতে হবে।
৭. মৌসুমীঃ(Seasonal) মৌসুমকালে কোন শ্রমিককে মৌসুম কাজে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং মৌসুম চলা কালীন সময়ে কর্মরত থাকেন।
⛔ধারাঃ১২ কাজ বন্ধ রাখা( Stoppage of work)
১. অগ্নিকান্ড,আকস্মিক বিপত্তি,যন্ত্রপাতি বিকল,বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ,মহামারী,ব্যাপক দাঙ্গা-হাঙ্গামা বা মালিকের নিয়ন্ত্রন বহির্ভুত অন্য কোন কারনে প্রয়োজন হলে মালিক যেকোন সময় তার প্রতিষ্ঠানের কোন শাখা বা শাখা সমুহ আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে পারবেন।এবং যে কারনে উক্তরুপ বন্ধের আদেশ দেওয়া হবে তা বিদ্যমান থাকা পর্যন্ত এই আদেশ বহাল রাখতে পারবেন।
২. যদি উক্তরুপ বন্ধের আদেশ কর্মসময়ের পরে দেওয়া হয়,তা হলে পরবর্তী কর্মসময় শুরু হওয়ার আগে মালিক প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ঠ শাখার নোটিশ বোর্ড বা প্রকাশ্য কোন স্থানে লটকাইয়া দিয়ে বিষয়টি শ্রমিককে অবহিত করবেন।
৩. উল্লেখিত নোটিশে বন্ধ পরবর্তী কাজ কখন শুরু হবে ও কাজ পুনরায় শুরু হওয়ার কোন সময় তাকে কর্মস্থলে অবস্থান করতে হবে সে সম্পর্কে নির্দেশ থাকবে।
৪. যদি উক্তরুপ বন্ধ কর্মসময়ের মধ্যে সংঘটিত হয় তা হলে মালিক উপধারা ২ এর পন্থায় শ্রমিকগনকে যথাশিঘ্র অবহিত করবেন এবং নোটিশে বন্ধ পরবর্তী কাজ কখন শুরু হবে ও কাজ পুনরায় শুরু হওয়ার কোন সময় তাকে কর্মস্থলে অবস্থান করতে হবে সে সম্পর্কে নির্দেশ থাকবে।
৫. উক্তরুপ কাজ বন্ধের পর যে সমস্ত শ্রমিককে কর্মস্থলে অবস্থানের নির্দেশ দেওয়া হবে,তাদের অবস্থানের সময় ১ ঘন্টার কম হলে তারা মজুরী নাও পেতে পারে এবং অবস্থানের সময় এর অধিক হলে অবস্থান কালীন সম্পূর্ণ সময়ের জন্য মজুরী পাবেন।
৬. যদি কাজ বন্ধ এর মেয়াদ এক কর্মদিবসের চেয়ে বেশি না হয় তা হলে সংশ্লিষ্ঠ কোন শ্রমিক, উপধারা ৫ এর ক্ষেত্র ব্যতীত,কোন শ্রমিক মজুরী নাও পেতে পারে।
৭. যদি কাজ বন্ধের মেয়াদ ১ কর্মদিবসের বেশি হয় তাহলে সাময়িক বা বদলী শ্রমিক ব্যতীত সংশ্লিষ্ঠ শ্রমিককে ১ দিনের অতিরিক্ত সকল বন্ধ কর্মদিবসের জন্য মজুরী প্রদান করতে হবে।
৮. যদি কাজ বন্ধের মেয়াদ ৩ কর্মদিবশের বেশি হয় তাহলে শ্রমিকগনকে ধারাঃ১৬ (**** শীঘ্র আলোচনা করা হবে) অনুযায়ী লে অফ করা হবে।
৯. এই লে অফ কাজ বন্ধ হওয়ার ১ম দিন হতে বলবত হবে।এবং ১ম তিন দিনের জন্য প্রদত্ব কোন মজুরী সংশ্লিষ্ঠ শ্রমিককে প্রদেয় লে-অফ কালীন ক্ষতিপূরণ এর সাথে সমন্বয় করা হবে।
১০. কাজ বন্ধের কারনে যদি কোন ঠিকা হারের শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাহলে উপধারা ৯ এর প্রয়োজনে তার পূর্ববর্তী এক মাসের গড় দৈনিক আয়কে দৈনিক মজুরী বলে গন্য করা হবে।
তথ্য সূত্রঃ বাংলাদেশ শ্রম ও শিল্প আইন এবং বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫
⛔ধারাঃ২৪ শাস্তির পদ্ধতি(Procedure for punishment)
১. ধারা ২৩ এর অধীনে কোন শ্রমিকের বিরুদ্ধে শাস্তির আদেশ প্রদান কিরা যাবে না,যদি
ক) তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করা হয়।
খ) অভিযোগের একটি কপি তাকে দেওয়া হয় এবং ইহার জবাব দেওয়ার জন্য অন্তত ৭ দিন সময় দেওয়া হয়।
গ)তাকে শুনানীর সময় দেওয়া হয়।
ঘ) মালিক ও শ্রমিকের সম সংখ্যক প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্তের পর তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
- তবে শর্ত থাকে যে,উক্ত তদন্ত ৬০ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে।
ঙ) মালিক বা ব্যবস্থাপক বরখাস্তের আদেশ অনুমোদন করেন।
২. অসদাচরনের অভিযোগে অভিযুক্ত কোন শ্রমিককে তদন্ত সাপেক্ষে সাময়িক বরখাস্ত করা যাবে,এবং যদি না বিষয়টা আদালতে বিচারাধীন থাকে,এই সময়িক বরখাস্তের মোট মেয়াদ ৬০ দিনের অধিক হবে না।
-তবে শর্ত থাকে যে,উক্তরুপ সাময়িক বরখাস্ত কালে মালিক তাকে খোরাকী ভাতা প্রদান করবেন এবং অন্যান্য ভাতা পূর্ণ ভাবে প্রাপ্য হবেন।
৩. সাময়িক বরখাস্তের কোন আদেশ লিখিতভাবে হবে এবং ইহা শ্রমিককে প্রদানের সাথে সাথে কার্যকর হবে।
৪. কোন তদন্তে অভিযুক্ত শ্রমিককে,তার প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কোন ব্যক্তি সহায়তা করতে পারবেন।
৫. যদি কোন তদন্তে কোন পক্ষ মৌখিক সাক্ষ্য প্রদান করেন তাহলে যার বিরুদ্ধে এই সাক্ষ্য প্রদান করা হবে তিনি সাক্ষীকে জেরা করতে পারবেন।
৬. যদি তদন্তে কোন শ্রমিককে দোষী পাওয়া যায়,এবং তাকে ধারা ২৩(১) এর অধীনে শাস্তি প্রদান করা হয়,তাহলে তিনি তার সাময়িক বখাস্তকালীন সময়ের জন্য কোন মজুরী পাবেন না।তবে উক্ত সময়ের জন্য তার খোরাকী ভাতা প্রাপ্য থাকবেন।
৭. যদি তদন্তেবকোন শ্রমিকের অপরাধ প্রমানিত না হয় তাহলে তিনি সাময়িক বরখাস্তকালীন সময়ে কর্মরত ছিলেন বলে গন্য হবেন এবং ঐ সময়ের জন্য তার খোরাকী ভাতা সমন্বয় সহ মজুরী প্রদেয় হবে।
৮. শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে, শাস্তি অদেশের একটি কপি সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে দিতে হবে।
৯. যদি কোন শ্রমিক মালিক কর্তৃক প্রেরিত কোন নোটিশ,চিঠি, অভিযোগনামা,আদেশ বা অন্য কোন কাগজপত্র গ্রহন করতে অস্বীকার করেন,তাহলে উহা তাকে প্রদান করা হয়েছে বলে বুঝতে হবে যদি উহার একটি কপি নোটিশবোর্ডে প্রদর্শিত হয় এবং এরেকটি কপি মালিকের নথিপত্র হতে প্রাপ্ত শ্রমিকের ঠিকানায় রেজিষ্ট্রি ডাক যোগে প্রেরন করা হয়।
১০. কোন শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে মালিক সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের পূর্বতন নবি পত্র, অপরাধের [গুরুত্ব, চাকুরীকালীন কৃতিত্ব ও অবদান] এবং বিদ্যমান অন্য কোন বিশেষ অবস্থা বিবেচনায় আনবেন।
⛔ মজুরীসহ বাৎসরিক ছুটি শ্রমিক চাওয়ার পর মালিক প্রদান না করিলে মালিকের শাস্তি:
১১৭(৭) ধারা মূলত মালিকে শ্রমিকের বাৎসরিক মজুরীসহ ছুটি ভোগ করতে বাধা দান থেকে বিরত রাখার জন্য কারা হয়েছে।
এবার একটা ছোট গল্প দিয়ে ধারা ১১৭(৭) সম্পর্কে পরিস্কার হওয়া যাক। রাফি মামা লুঙ্গি নামক একটি কারখানায় চাকরি করেন।সে এই প্রতিষ্ঠানে ৩ বছর কাজ করে এবং ধারা ১১৭(৫) অনুযায়ী তার ৪০ দিন ছুটি বকেয়া পাওনা আছে,রাফির বন্ধুরা সবাই ঠিক করল সবাই ঈদের পরে কুয়াকাটা ঘুরতে যাবে।
যেই কথা সেই কাজ,রাফি মালিকের কাছে ১০ দিনের বাৎসরিক ছুটির জন্য আবেদন করল,মালিক তাকে জানালেন ঈদের পরে আমেরিকাতে লুঙ্গির শিপমেন্ট আছে।তাই ঈদের পারে তাকে কোন ছুটি দেয়া যাবে না।
অতএব, মালিকের ব্যবসায়িক প্রয়োজনে রাফির ছুটির আবেদন না মঞ্জুর করা হল।
এবার আসেন দেখি মালিকে ১১৭(৭) ধারায় কি শাস্তি দেয়া হবে। সকলের সুবিধার জন্য আমি ধারাটি উল্লেখ করে দিয়ে পরে বিশ্লেষণ করলে সকলের জন্য বুঝতে সুবিধা হবে।
"১১৭(৭) কোন শ্রমিক অর্জিত ছুটির জন্য দরখাস্ত করিলে যদি মালিক কোন কারনে উহা না-মঞ্জুর করেন,তাহা হইলে উক্ত না- মঞ্জুরকৃত ছুটি সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের হিসাবে উপধারা (৫) অথবা (৬) এ উল্লেখিত সীমার অতিরিক্ত পাওনা হিসাবে যুক্ত হইবে।"
★ প্রথম বিষয়ে হল, মালিক রাফির যে ১০ দিন ছুটি না মঞ্জুর করেছেন তা তার মোট বকেয়া সীমার ৫০ দিন ছুটির সাথে যোগ হবে।এটাই হল মালিকের শাস্তি ১১৭(৭) ধারা অনুযায়ী।
অথাৎ রাফি এখন মোট ৫০ টি ছুটি জমা রাখতে পারবে।
★এখন কথা হল বছরে কতবার মালিককৃত না-মঞ্জুরীকৃত বাৎসরিক ছুটি শ্রমিকের ছুটি হিসাবের সাথে যোগ হবে?
উত্তরটা হল মালিক যতবার বাৎসরিক ছুটি না-মঞ্জুর করবেন ততবার ধারা ১১৭(৫)অথবা(৬) ধারাতে বকেয়া ছুটি হিসাবে যোগ হবে।
★ এই ছুটি নগদায়ন করা যাবে কি না?
নগদায়ন করতে কোন বাধা নেই কারন শ্রম আইনের ধারা ১১ ও বিধি-১০৭ তে বলা আছে।
⛔ সাপ্তাহিক ছুটির আগে ও পরে কর্মী অনুপস্থিত থাকলে সাপ্তাহিক ছুটি পাবে কি না?
উত্তরটা হল ১০০% পাবে।
কারনটা কি?
প্রথমে বুঝতে হবে অনুপস্থিতি কি?
শর্ত হল প্রতিষ্ঠান খোলা থাকতে হবে,প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে অনুপস্থির প্রশ্ন কিভাবে আসে।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-১২৬ এ বলা আছে নিয়োগের শর্ত অনুযায়ী কোন ব্যক্তি কাজে উপস্থিত থাকার কথা কিন্তু তিনি উক্ত সময়ে কাজে না থাকলে,
তাকে বলা হবে অনুপস্থিতি।
আপনারা যখন কোন কর্মীকে নিয়োগপএ প্রদান করেন তখন তার নিয়োগপএে লিখে দেন তার অফিস কোন সময়ে থেকে কোন সময় পর্যন্ত।
তিনি সাপ্তাহিক ছুটি কোন দিন ভোগ করবেন তাও লেখা থাকে।
এবার আসেন ধারা-১১১ তে যেখানে কোন মালিক শ্রম পরিদর্শকের কাছ থেকে কাজের সময়ের অনুমোদন নিয়ে আসেন সেখানে নিদিষ্ট ভাবে বলা থাকে কোন দিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে।
এখন দেখেন,
যেখানে মালিক নিজে দুটি জায়গাতে ঘোষনা দিয়ে রাখছে যে কোন দিনটি সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে।
ঠিক তার আগে ও পরের দিনটি অনুপস্থিত থাকলে কিভাবে সাপ্তাহিক ছুটির দিনটি অনুপস্থিত দেখান যায়।
তাহলে যে দিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে,তার আগের দিন যারা অনুপস্থিত থাকবে তারা সাপ্তাহিক ছুটি পেতে হলে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আফিসে এসে দারোয়ানের সাথে কোলাকুলি করে যাবে।
আর রবিবারে এসে বলবে স্যার আমি বৃহ:পতি বার আসি নাই।
শুক্রবার কোলাকুলি করেছি দারোয়ানের সাথে।
শনিবার আসি নাই।
আজকে রবিবার আসছি।
আমি সাপ্তাহিক ছুটি পাব।
এক শ্রেনির লোক আছে যারা বিধি-১০৬ এর কথা বলেন।
বিধি-১০৬ অনুযায়ী আগে ও পরে ছুটির কথা বলা আছে অনুপস্থির জন্য কিছু বলা নাই।
যে দিন একটা প্রতিষ্ঠানের কর্ম দিবস থাকে না, সেই দিনটিকে কিভাবে অনুপস্থিত হিসাবে গন্য করেন।
ভেবেছেন কখন?
আগে নিজেদের ঠিক করেন পরে অন্যের দোষ দেন।
⛔ চাকুরীর বয়স গননার নিয়ম:
কোন কর্মীকে বাংলাদেশ শ্রম আইনের ২য় অধ্যায় অনুযায়ী কোন ক্ষতিপূরণ বা সুবিধা প্রদানের ক্ষেএে উক্ত কর্মীর চাকুরীর বয়স গননা করা একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়।
চাকুরীর বয়স গননার ক্ষেএে কিছু ভুল ধারনা আছে।
অনেকের ভুল ধারনা বাস্তবে ২৪০ দিন উপস্থিত থাকলেই তা ১ বছর হিসাবে গননা করা হবে।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-১৪(১) এ বলা আছে
"কোন শ্রমিক কোন প্রতিষ্ঠানে পূর্ববর্তী (১২) বার পজ্ঞিকা মাসে বাস্তবে অন্তত ২৪০ দিন বা ১২০ দিন কাজ করিয়া থাকেন,তা হলে তিনি যথাক্রমে ১ বছর বা ৬ মাস প্রতিষ্ঠানে অবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করিয়াছেন বলিয়া গন্য হবে"
এখানে দুটি শর্ত লক্ষ্য করতে হবে,
১। পূর্ববর্তী ১২ পজ্ঞিকা মাসে।
২। বাস্তবে অন্তত ২৪০ দিন কাজ করিয়া থাকেন।
দিপ্তি XYZ কোম্পানিতে ৪ বছর ১১ মাস ২৫ দিন কাজ করেন।তারপরে তিনি ব্যক্তিগত কারন দেখিয়ে চাকুরী থেকে পদত্যাগ করে।
এখন প্রশ্ন হল ধারা ১৪ অনুযায়ী দিপ্তির চাকুরীর বয়স ৫ বছর হবে কি না?
উত্তর হল না।
কারন ধারা-১৪(১) অনুযায়ী দুটি শর্ত পূরন হতে হবে।
১। পূর্ববর্তী ১২ পজ্ঞিকা মাসে।
২। বাস্তবে অন্তত ২৪০ দিন কাজ করিয়া থাকেন।
দিপ্তির ক্ষেএে লক্ষ্যনীয় বিষয় হল।তিনি ২য় শর্তটি পূরন করেছে ২৪০ দিনে উপস্থিত ছিলেন কিন্তু যে দিনে চাকুরী ছাড়ছেন।
তার ১২ পজ্ঞিকা মাস পূর্ন হয়নি।
অনেকে ভুল ধরতে চেষ্টা করবেন কিন্তু লক্ষ্য করুন যোগদানের তারিখ থেকে যোগদানের তারিখ ১২ পজ্ঞিকা মাস হিসাব করে তার মধ্যে ২৪০ দিন কাজের দিন হিসাব করুন।
তবে আর আমার কথাগুলো ভুল মনে হবে না।
অনেকের কাছে মনে হবে ৬ মাসের বেশি কাজ করলে এক বছর বিবেচনা করতে হবে, আইনে বলা আছে।
হ্যা,শুধুমাএ তা ধারা-১৯ এবং ২(১০) এর ক্ষেএে অন্য কোন ক্ষেএে না।
আর বাস্তবিক কাজের দিনের জন্য ধারা-১৪(২) এ উল্লেখিত দিনগুলোকে গননায় আনতে হবে।
⛔ ধারাঃ ০৪ - শ্রমিকের শ্রেনীবিভাগ ও শিক্ষানবিশকাল
(কোন প্রতিষ্ঠানে সাধারনত ৭ ধরনের শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়)
১. শিক্ষাধীনঃ(Apprentice) প্রশিক্ষনার্থী হিসেবে নিয়োগ করা হবে এবং প্রশিক্ষন কালে ভাতা প্রদান করা হবে।
২. বদলীঃ(Substitiute) প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী কোন শ্রমিকের সাময়িক অনুপস্থিত সময়ে নিয়োগ করা হয়।
৩. সাময়িকঃ(Casual) প্রতিষ্ঠানের সাময়িক কোন কাজে কিছুদিনের জন্য নিয়োগ করা হবে।
৪. অস্থায়ীঃ(Temporary) এধরনের শ্রমিক কে নিয়োগ করা হয় একান্তভাবে অস্থায়ী কোন কাজের জন্য এবং কাজটি সীমিত সময়ের মধ্যে শেষ হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
৫. শিক্ষানবিশঃ(Probationer) কোন স্থায়ী পদে তাকে নিয়োগ করা হয়,এবং শিক্ষানবিশ বলা হয় শিক্ষানবিশকাল সমাপ্ত না হওয়ার আগ পর্যন্ত।
৬. স্থায়ীঃ(Permanent) শিক্ষানবিশকাল সফলভাবে সমাপ্ত হওয়ার পর স্থায়ী ভাবে নিয়োগ করা হয়।
* কেরানী সংক্রান্ত কাজে শিক্ষানবিসকাল হবে ৬ মাস আর অন্যান্য ক্ষেত্রে হবে ৩ মাস।
*দক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে তার কাজের মান যাচাইয়ের জন্য শিক্ষানবিসকাল ৩ মাসের পরিবর্তে আরো ৩ মাস বাড়ানো যেতে পারে।তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই বিষয়টি চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দিতে হবে।
* অদক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৩ মাস পরে কনফারমেশন লেটার না দেওয়া হলেও তাকে স্থায়ী বলে গন্য করা হবে।
*যদি কোন শ্রমিক শিক্ষানবিসকালে চাকুরী থেকে চলে যায়,এবং পরবর্তী ৩ বছরের মধ্যে একই মালিকের অধীনে চাকুরীতে আসে তাহলে পূর্ববর্তী শিক্ষানবিসকালের দিন সংখ্যা বর্তমান দিনের সাথে যোগ করতে হবে।
৭. মৌসুমীঃ(Seasonal) মৌসুমকালে কোন শ্রমিককে মৌসুম কাজে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং মৌসুম চলা কালীন সময়ে কর্মরত থাকেন।
⛔ কোন কর্মী কি তদন্ত কমিটিতে তার সহায়তার জন্য আইনজীবিকে নিয়ে আসতে পারবে কি না :
আমি নিশ্চিত যে ৯৯.৯৯% বলবেন যে পারবে না কিন্তু আসল কথা হল পারবে।
কিভাবে এবং কোন ধারা বলে পারবে এটা হল প্রশ্ন।
পারবেন ধারা ২৪(৪) অনুযায়ী, এবার আসেন ধারাটাতে কি লেখা আছে
"২৪(৪) কোন তদন্তে অভিযুক্ত শ্রমিককে, তাহার প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত (কোন ব্যক্তি সাহায্য করিতে পারিবেন) এবং (কোন তদন্তে অভিযুক্ত শ্রমিককে)তৎকতৃক মনোনীত কোন ব্যক্তি সাহায্য করিতে পারিবেন।
আপনারা লক্ষ্য করেন যে আমি ধারা ২৪(৪) কে একটু আলাদাভাবে লিখেছি আমার ব্যাখ্যা করার সুবিধার জন্য। যারা সাধারনভাবে ধারাটি পড়বেন তারা লক্ষ্য করেন।
এই ধারাতে " এবং " একটা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
ধারা ২৪(৪) এ দুটি বাক্য আছে যা "এবং" দিয়ে কৌশালে বলা হয়েছে যাতে আম জনতা বুঝতে না পারে। আমি যেভাবে লিখেছি আশা করি আপনারা বুঝতে পারবেন।
এছাড়াও কতজন লোককে কর্মী নিয়ে আসতে পারবে তদন্ত কমিটিতে সেটার কোন সংখ্যা বলা নাই তাই যত ইচ্ছা তত।
অনেকে এই লেখা পাড়ার পরে তদন্ত কমিটির সদস্যের সাথে সাহায্যকারীকে মিলাবেন না যেন কারন দুটি দুই জিনিস।
আর যারা English এর Compound Sentence এবং বাংলায় মিশ্র বাক্য ভাল ভাবে জানেন তারা "এবং" এর ব্যবহারটা ভাল ভাবে বুঝতে পারবেন।জেনে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন