তুলোর ইতিহাস History of Cotton - Textile Lab | Textile Learning Blog
'তুলোর ইতিহাস'

আজ থেকে কত বছর আগে তুলো আবিষ্কার হয়েছিল তার সঠিক ইতিহাস জানা যায় নি তবে প্রত্নতাত্ত্বিকদের পর্যালোচনা থেকে ধারণা করা হয় যে প্রাচীন যুগ থেকে মিশরীয়রা পৃথিবীতে সর্বপ্রথম তুলোকে ঘূর্ণনের সাহায্যে সুতোয় রূপান্তরিত করে কাপড় বুননের কাজ শুরু করেছিল।
বিজ্ঞানীরা তুলোর ইতিহাস অনুসন্ধান করতে গিয়ে মেক্সিকো শহরের এক গুহার নিকটে ৭০০০ হাজার পূর্বে সেখানে তুলোর অস্তিত্বের প্রমাণ খুঁজে পান । ৩০০০ হাজারের ও বছর পূর্বে ভারত এবং পাকিস্তানে তুলো চাষের সঠিক তথ্য প্রমাণও খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রথম শতকের সময়ে ,আরব বণিকেরা ইউরোপে বাণিজ্য করতে তুলোর কাপড় নিয়ে আসত এবং নবম শতকের দিকে মরুভূমির অন্চ্ঞলের লোকেরা স্পেনে তুলো চাষের পদ্ধতি আরম্ভ করেছিল। এভাবে ইউরোপে তুলো চাষের পদ্ধতি আরম্ভ হতে লাগল।

এরপর মধ্যযুগের শেষ পর্যায়ের দিকে, উত্তর ইউরোপে তুলো আমদানিকৃত পণ্য হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে আরম্ভ করেছিল। তখনকার সময়ে ঐ অন্চ্ঞলের লোকেরা কেবল পশুর চামড়া থেকে উৎপন্ন কাপড়ের আঁশের সাথে পরিচিত ছিল। তাই তারা উদ্ভিদজাতক কাপড়ের আঁশের সম্পর্কে না জানায় তারা ভেবে নিয়েছিল যে, তুলোকে ' উদ্ভিদ থেকে জন্ম নেওয়া এক ধরণের ভেড়ার পশম' থেকে প্রস্তুত করা হয়।
এরপর ১৬ শতকের শেষের দিকে , এশিয়া এবং আমেরিকায় উষ্ণতর প্রদেশে তুলো চাষ বিস্তৃতি লাভ করে।
ইংল্যান্ডে শিল্পবিপ্লবের অগ্রগতিকালে ১৭৯৩ সালে ইলি হোয়াইটনিইর তুলো আবিষ্কার তাদের উৎপাদন ক্ষমতা আরও প্রসারিত করেছিল এবং এই ধারাবাহিকতায় তারাই সর্বপ্রথম টেক্সটাইল খাতে শিল্পবিপ্লব ঘটায়।

১৮শ এবং ১৯শ শতকের শেষের দিকে ভারতের তুলো প্রক্রিয়াজাতকরণ খাত আস্তে আস্তে ধ্বসে যেতে লাগলো। ভারতের নবশিল্পায়নের প্রতিশ্রুতিতে তারা তুলো চারাগাছ জন্মানো এবং প্রক্রিয়াজাতকরণ বন্ধে বাধা প্রদান করল এবং তারা এই মর্মে সাব্যস্ত হল যে তারা পোশাকশিল্পের পণ্য ব্রিটেনের কাছ থেকে সরবরাহ করবে এবং তারা এই বিনিময়ে ব্রিটেনদের টেক্সটাইলের কাঁচামাল দিয়ে সহযোগিতা করবে।
১৮৪০ সালের দিকে , ভারত ব্রিটিশদের কলকারখানার বৃহৎ চাহিদা অনুযায়ী টেক্সটাইলের কাঁচামাল যোগান দিতে সক্ষমতা হারিয়ে ফেললো। একই সময়ে আমেরিকান তুলো টেক্সটাইল শিল্পে মাথাচাড়া দিয়ে উঠল। আমেরিকানরা তাদের দাসীদের বিনা মজুরীতে চাষাবাদ এবং উত্তোলনের সুবিধার কারণে ব্রিটিশদের কাছে তুলোর ব্যাবসায় বেশ সুনাম লাভ করতে সক্ষম হয়েছিল।

১৮৬৫ সালে আমেরিকানরা যুদ্ধে মুক্তি লাভ করার পর, তুলো তাদের অর্থনীতিতে 'অর্থকরী ফসল' হিসেবে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। আজ পৃথিবীতে তুলো উৎপাদনে প্রভাবশালী প্রথম পাঁচটি দেশের মধ্যে রয়েছে: আমেরিকা ,চায়না, ভারত , যুক্তরাষ্ট্র, এবং ব্রাজিল।

Written By
খুররম বাহাদুর
বি এস সি ইন টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং
৫ম ব্যাচ , শ্যামলী টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং কলেজ

তুলোর ইতিহাস History of Cotton

'তুলোর ইতিহাস'

আজ থেকে কত বছর আগে তুলো আবিষ্কার হয়েছিল তার সঠিক ইতিহাস জানা যায় নি তবে প্রত্নতাত্ত্বিকদের পর্যালোচনা থেকে ধারণা করা হয় যে প্রাচীন যুগ থেকে মিশরীয়রা পৃথিবীতে সর্বপ্রথম তুলোকে ঘূর্ণনের সাহায্যে সুতোয় রূপান্তরিত করে কাপড় বুননের কাজ শুরু করেছিল।
বিজ্ঞানীরা তুলোর ইতিহাস অনুসন্ধান করতে গিয়ে মেক্সিকো শহরের এক গুহার নিকটে ৭০০০ হাজার পূর্বে সেখানে তুলোর অস্তিত্বের প্রমাণ খুঁজে পান । ৩০০০ হাজারের ও বছর পূর্বে ভারত এবং পাকিস্তানে তুলো চাষের সঠিক তথ্য প্রমাণও খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রথম শতকের সময়ে ,আরব বণিকেরা ইউরোপে বাণিজ্য করতে তুলোর কাপড় নিয়ে আসত এবং নবম শতকের দিকে মরুভূমির অন্চ্ঞলের লোকেরা স্পেনে তুলো চাষের পদ্ধতি আরম্ভ করেছিল। এভাবে ইউরোপে তুলো চাষের পদ্ধতি আরম্ভ হতে লাগল।

এরপর মধ্যযুগের শেষ পর্যায়ের দিকে, উত্তর ইউরোপে তুলো আমদানিকৃত পণ্য হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে আরম্ভ করেছিল। তখনকার সময়ে ঐ অন্চ্ঞলের লোকেরা কেবল পশুর চামড়া থেকে উৎপন্ন কাপড়ের আঁশের সাথে পরিচিত ছিল। তাই তারা উদ্ভিদজাতক কাপড়ের আঁশের সম্পর্কে না জানায় তারা ভেবে নিয়েছিল যে, তুলোকে ' উদ্ভিদ থেকে জন্ম নেওয়া এক ধরণের ভেড়ার পশম' থেকে প্রস্তুত করা হয়।
এরপর ১৬ শতকের শেষের দিকে , এশিয়া এবং আমেরিকায় উষ্ণতর প্রদেশে তুলো চাষ বিস্তৃতি লাভ করে।
ইংল্যান্ডে শিল্পবিপ্লবের অগ্রগতিকালে ১৭৯৩ সালে ইলি হোয়াইটনিইর তুলো আবিষ্কার তাদের উৎপাদন ক্ষমতা আরও প্রসারিত করেছিল এবং এই ধারাবাহিকতায় তারাই সর্বপ্রথম টেক্সটাইল খাতে শিল্পবিপ্লব ঘটায়।

১৮শ এবং ১৯শ শতকের শেষের দিকে ভারতের তুলো প্রক্রিয়াজাতকরণ খাত আস্তে আস্তে ধ্বসে যেতে লাগলো। ভারতের নবশিল্পায়নের প্রতিশ্রুতিতে তারা তুলো চারাগাছ জন্মানো এবং প্রক্রিয়াজাতকরণ বন্ধে বাধা প্রদান করল এবং তারা এই মর্মে সাব্যস্ত হল যে তারা পোশাকশিল্পের পণ্য ব্রিটেনের কাছ থেকে সরবরাহ করবে এবং তারা এই বিনিময়ে ব্রিটেনদের টেক্সটাইলের কাঁচামাল দিয়ে সহযোগিতা করবে।
১৮৪০ সালের দিকে , ভারত ব্রিটিশদের কলকারখানার বৃহৎ চাহিদা অনুযায়ী টেক্সটাইলের কাঁচামাল যোগান দিতে সক্ষমতা হারিয়ে ফেললো। একই সময়ে আমেরিকান তুলো টেক্সটাইল শিল্পে মাথাচাড়া দিয়ে উঠল। আমেরিকানরা তাদের দাসীদের বিনা মজুরীতে চাষাবাদ এবং উত্তোলনের সুবিধার কারণে ব্রিটিশদের কাছে তুলোর ব্যাবসায় বেশ সুনাম লাভ করতে সক্ষম হয়েছিল।

১৮৬৫ সালে আমেরিকানরা যুদ্ধে মুক্তি লাভ করার পর, তুলো তাদের অর্থনীতিতে 'অর্থকরী ফসল' হিসেবে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। আজ পৃথিবীতে তুলো উৎপাদনে প্রভাবশালী প্রথম পাঁচটি দেশের মধ্যে রয়েছে: আমেরিকা ,চায়না, ভারত , যুক্তরাষ্ট্র, এবং ব্রাজিল।

Written By
খুররম বাহাদুর
বি এস সি ইন টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং
৫ম ব্যাচ , শ্যামলী টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং কলেজ

কোন মন্তব্য নেই: