গার্মেন্টস এর কিছু বিজনেস প্লানঃ
আমাদের ইয়াং প্রফেশনালদের মধ্যে এক ধরনের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায় প্রতিদিন অন্যের কাজ করার পরিবর্তে নিজের জন্য কিছু করার। এই ইন্ডাস্ট্রিতে অভিজ্ঞতা থাকলে, প্রথমেই অনুসন্ধান করে বিজন্যাস অপোরচুনিটির। কী কী অপোর্চুনিটি রয়েছে, ওয়েব রিসার্চ করে কতোগুলো পন্থা খুজে পাওয়া গেল। এগুলোর সবই টেক্সটাইল/আরএমজি প্রোডাক্টস অথবা সেবার সাথে সম্পৃক্ত। যে কোন ব্যবসায়ই ছোট পরিধি নিয়ে শুরু করা যায়। ছোট ব্যবসায় আইডিয়াগুলো আরএমজি ইন্ডাস্ট্রি প্রফেশনালদের আগ্রহী করতে পারে। নিচে উল্লেখ করা হলো:
ছোট ফ্যাক্টরি সেটাপ:
টেইলরিং বা ম্যানুফ্যাকচারিং বা মার্চেন্ডাইজিং অভিজ্ঞতা নিয়ে ছোট ফ্যক্টরি সেটাপ করা যেতে পারে। কিছু টেইলর নিয়োগ দিতে হবে। পোশাক তৈরি করে শহরে খুচরা কিংবা পাইকারী বিক্রেতার নিকট বিক্রি করা যেতে পারে। পন্য হিসেবে বেছে নেয়া যেতে পারে স্কুল ইউনিফর্ম, লেডিস কুর্তি, ছেলেদের শার্ট।
সাব-কন্ট্রাক্টিং বিজন্যাস:
ছোট ফ্যাক্টরি সেটাপ দিয়ে রপ্তানিকারক বা ডমেস্টিক ব্রান্ড এর জন্য কাজ করা যেতে পারে। পিক সিজনে বড় ফ্যাক্টরি ও বায়িং হাউজগুলোতে উৎপাদন ক্ষমতার অধিক পরিমান অর্ডার আসে। নির্ধারিত সময়ে শিপমেন্ট নিমিত্তে সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ করায়। এক্ষেত্রে বায়ার হ্যান্ডল করতে হবে না। মাল ম্যাটারিয়ালস কিনতে হবে না। রপ্তানিকারকের কাছ থেকে কাটিং করা ফেব্রিক আসবে ব্যবসায়ের কাজ হবে শুধু সেলাই করা।
গার্মেন্টস পাইকারি ব্যবসায়:
কাজের অতিরিক্ত সময়কে ফলপ্রসু করতে চাইলে করা যেতে পারে পাইকারি ব্যবসায়। উৎপাদনকারী ফ্যাক্টরি থেকে তৈরি পোশাক সোর্সিং করে এবং শহরের ছোট দোকানগুলোতে সরবরাহ করা যেতে পারে। বড় পরিসরে কিনে বিক্রি করতে পারলে মুনাফার পরিমানও বেশি হবে।
রপ্তানি পরবর্তী উদ্বৃত্ত পণ্যের দোকান: বর্তমানে বিশ্ববিখ্যাত ব্র্যান্ডগুলোর রপ্তানিযোগ্য পণ্যের চাহিদা প্রচুর। সবাই চায় অতিরিক্ত টাকা খরচ না করে বিখ্যাত ব্যান্ডগুলোর ট্রেন্ডি পোশাক গায়ে জড়াতে। তাই তারা রপ্তানি পরবর্তী অতিরিক্ত পোশাক খোজে। রিজেক্টেড ও সারপ্লাস পণ্য বিক্রির দোকান খোলা হবে একটি লাভজনক ব্যবসায়। যারা এই শিল্পে কাজ করেন বা করেছেন তারা জানেন যে, প্রস্তুতকারক অর্ডারকৃত পণ্যের চেয়ে বেশি পণ্য প্রস্তুত রাখেন। আবার অনেক সময় সম্পূর্ণ শিপমেন্টই বাতিল হয়ে যায় কোওয়ালিটি ইস্যু বা দেড়িতে শিপমেন্ট এর জন্য। ফ্যাক্টরি থেকে এসব পন্য কিনে আকর্য়নীয় মূল্যে বিক্রি করা যেতে পারে।
প্রিন্টিং এবং এ্যামব্রয়ডারি ইউনিট:
গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে প্রিন্টিং এবং এ্যামব্রয়ডারি হলো ভ্যালু এ্যডিং প্রসেস। বর্তমান ফ্যাশন আমলে, পোশাককে ট্রেন্ডি করতে ডিজাইনাররা কালার ও প্যাচ যুক্ত করে। কিছু পন্য ছাড়া প্রায় সব ধরনের পণ্যেই প্রিন্ট অথবা এ্যামব্রয়ডারি অথবা দুটোই আশা করেন ক্রেতারা। প্রিন্টিং ও এ্যামব্রয়ডারির জন্য বিনিয়োগ করতে হবে মেশিনে। এজন্য ছোট রপ্তানিকারকগন এই ভ্যালু এ্যাডিং প্রসেসিংটা অন্যদের থেকে করিয়ে নেন। তো, তাদেরকে সুবিধা দেয়ার মাধ্যমে ব্যবসায় করতে চাইলে, মুনাফাধর্মী হওয়া যাবে।
ওয়াশিং প্ল্যান্ট:
গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারিং এ বিভিন্ন ধাপে কাপড় ওয়াশ করতে হয়। আবার দেখা যায়, বায়ার ওয়াশ করা পন্য চায় এবং সাথে কিছু ফিচারও। যেমন- ওয়াশ এর পর কিছু কিছু লুক ও হ্যান্ড ফিল। ছোট প্রস্তুতকারকদের সাধারনত ওয়াশিং প্ল্যান্ট থাকে না। এই অপশনটিকে ব্যবসায়ের সুযোগ হিসেবে দেখা যায়।
গার্মেন্টস বায়িং এজেন্সি:
যদি কোন এক্সপোর্ট হাউজ বা কোন বায়িং হাউজে কিছু বছর মার্চেন্ডাইজার হিসেবে কাজ করে থাকেন, তাহলে বায়ারদের সাথে আপনার ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে। তাদের সাথে কন্টাক্ট করে অর্ডার নেয়ার ভালো সুযোগ থাকে। অর্ডার নিতে পারলে উৎপাদনকারী ফ্যাক্টরি থেকে অর্ডারকৃত পণ্য সরবরাহ করতে পারেন। প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট ও স্যাম্পল রুম রাখতে হবে। এর জন্য প্রাথমিক ভাবেই কিছু মানবসম্পদ নিয়ে টিম করে কাজ করতে হবে।
ইনফরমেশন টেকনোলজি সার্ভিসেস:
আরএমজি ইন্ডাস্টি এখন আইটি বেইজড হয়ে যাচেছ। ইআরপি সিস্টেম এবং অন্যান্য প্রযুক্তি সমাধান। যদি আইটি নলেজ ভালো থাকে এবং রপ্তানিকারকের সমস্যা সমাধানের জন্য প্রযোজনিয় টুল আবিষ্কার করতে পারে, তাহলে ভবিষ্যৎ উজ্জল। প্যাটার্ন মেকিং সলিউশন, প্রোডাকশন প্ল্যানিং, কাচামাল ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি সুবিধা দিতে পারলে ব্যবসায় ভালো করতে পারবে।
উপরোল্লিখিত আইডিয়াগুলো প্রাথমিক দৃষ্টিতে ছোট মনে হচ্ছে। তবে শুরু করতে পারলে একদিন এত ছোট থাকবে না। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কোন ফ্যাক্টরি বা কোম্পানিই বড় ও প্রতিষ্ঠিত ছিলো না। শুরুতেই কেউ বড় পরিসরে শুরু করতে পারেন না। ছোট আকারে শুরু করে উন্নত সেবা ও পন্য সরবরাহ করে ধীরে ধীরে বড় আকার ধারন করছে।
Collected
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন