গার্মেন্টস কি পরিমান লাভ করে !!!
একটা ফাইভ পকেট জিন্স এর একটা অর্ডার করতে একটা আট লাইনের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির প্রফিট ক্যালকুলেশন
(ছেলেরা যে জিন্স প্যান্টগুলো পরি -তাই গার্মেন্টস এর পরিভাষায় ফাইভ পকেট জিন্স)
হিসাব টা অনেক টা এই রকম...
কাটিং এন্ড মেকিং চার্জ সর্ব নিম্ন ১ ডলার বা ৭৭ টাকা
নেট প্রফিট ১৫% অফ সি এম ১১.৫৫ টাকা
একটা ৬৫ মেশিন স্ট্যান্ডার্ড লাইন এর দৈনিক প্রোডাক্টিভিটি ১০০০ পিস
একটা স্ট্যান্ডার্ড লাইন এর দৈনিক লাভ ১০০০ পিস x ১১.৫৫টাকা =১১৫৫০ টাকা
ছোট একটা ৮ লাইনের ফ্যাক্টরির দৈনিক লাভ ১১৫৫০ টাকা x ৮ লাইন = ৯২,৪০০ টাকা
মাসিক লাভ ২,৪০২,৪০০টাকা বা, ২৪ লক্ষ টাকা
বছরে যা হবে, ৩ কোটি টাকার কাছাকাছি।
লাইন বাড়লে প্রফিট আরো বেশী হবে । এবং আমাদের দেশের হিসেবে ৮ লাইন আর ফ্যাক্টরিকে ছোট ফ্যাক্টরি হিসেবে ধরে হয়।
এই হিসাব টা অনেক কঞ্জার্ভেটিভ হিসেব করছি। ঐ লাভ টা আরও অনেক দিক দিয়ে বারে এবং ক্ষেত্র বিশেষে ডবলও হতে পারে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে কমতেও পারে, কিন্তু সেইটা এক্সেপ্সান । ঐ প্রফিট টাকে ধরে রাখার জন্যে জন্যে,প্রতি টা ফ্যাক্টরি ভয়াবহ রকম ওভার বুকিং করে থাকে। একজন বায়ার এর কাছে তার ঠিক টাইম এ শিপমেন্ট খুব ক্রিটিকাল একটা ইস্যু। ফলে হরতাল হোক, আগুন হোক, বিল্ডিং এর পিলার ধ্বসে পরুক -ফ্যাক্টরি মালিক এর প্রতি দিন ফ্যাক্টরি চালু রাখার বাধ্যবাধকতা থাকে। ঐ খানে মানবিকতা,হেলথ এন্ড সেফটি কোন ইস্যু থাকেনা । একটা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির একমাত্র কন্সিদারেশান থাকে –বায়ারের শিপমেন্ট।
বাংলাদেশের মতো দুর্যোগ পূর্ণ দেশে, সারা বছর এই ধরনের অপ্টিমাল লেভেল এ ফ্যাক্টরি চালানোর এই প্রবনতার মধ্যে শ্রমিকের প্রতি সামান্য মানবিকতা দেখানোর সুযোগ থাকেনা । তাই ঘুরে ফিরে দেখবেন, অদক্ষতা তো আছেই কিন্তু লোভ ই হয়ে পরে ঐ দুর্ঘটনা গুলোর মূল নিয়ামক। একটা গার্মেন্টস এ আগুনে পুড়ে , ১২০ জন মানুষ মরে যাওয়ার পরেও একজন মালিক এর চিন্তা থাকে তার শিপমেন্ট কয়টা মিস হইলো। তার কয়টা এল সি মিস গেল। একটা শ্রমিক মরলে, ১০টা আসবে। কিন্তূ একটা বায়ার এর শিপমেন্ট মাইর গেলে, সেই বায়ার আর না ও আসতে পারে।
ফলে একটা অমানবিক এবং অসম্ভব সিস্টেম আর উপর পুরো ইন্ডাস্ট্রিটা দাঁড়ানো।
এবং এই প্রফিট এর উপর গার্মেন্টস মালিকরা এক টাকাও কর্পোরেট ট্যাক্স দেয় না।
পোশাক শিল্প এক্সপোর্ট অরিয়েন্টেড হওয়ার কারনে, পাঁচ বছর পর্যন্ত ট্যাক্স সুবিধা পায়। (ঐ বছর এর হিসেব টায় একটু ভুল হতো পারে) মালিকেরা যেইটা করা, তা হইলো, ঐ ফ্যাক্টরি টারে,ট্যাক্স হলিডে এক্স্পায়ারী পর্যন্ত প্রফিটেবল দেখায়। তারপর যখন ট্যাক্স হলিডে শেষ হয়, ওই সেম জায়গায় সেম ফেক্টরিকে তারা নাম পাল্টায় এবং আরেকটা নামে এনলিস্ট করে।এবং পুরান ফ্যাক্টরি কে লুজিং হিসেবে দেখায়। এবং এক টাকাও দেশ কে কর্পোরেট ট্যাক্স দেয় না তারা।
--- সংগ্রহিত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন