আমাজন.কম এখন বিশ্বের সব চেয়ে বড় বায়ার, বাংলাদেশ কি প্রস্তুত ! - Textile Lab | Textile Learning Blog
আমাজন.কম এখন বিশ্বের সব চেয়ে বড় বায়ার, বাংলাদেশ কি প্রস্তুত !
আমাজন ইতোমধ্যেই অনলাইনে বিশে^র বৃহত্তম পোশাক বিক্রেতা। খুব শিগগিরই প্রতিষ্ঠানটি ফ্যাশন বিক্রয়েও অধিকাংশ প্রতিদ্বন্দ্বীকে ছাড়িয়ে যাবে।
গত সপ্তাহের নিউইয়র্ক ফ্যাশন সপ্তাহে আমাজন ক্যাটওয়াকে কোনো রানওয়ে মডেল ছিল না। তবে ফ্যাশন শিল্পে কনুই দিয়ে গুঁতিয়ে নিজেদের পথ করে নিতে পর্যবেক্ষণকারী খুচরা নির্বাহীদের মনে ই-কমার্স জায়ান্ট বড় রকমভাবেই জুড়ে বসেছিল।

ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো গত দশকে আমাজনকে শত্রু হিসেবে দেখেছে। ব্র্যান্ডগুলো আমাজনে পণ্য বিক্রয় না করার শপথ করেছে এবং এর তালগোল পাকানো ওয়েবসাইট ও নকল পণ্যের ঝুঁকির ব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। অনেকে অনীহার সাথে নিজেদের ওয়েবসাইট চালু করেছে, কিন্তু তাদের বিক্রির বৃহৎ অংশের জন্য ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলোর উপর নির্ভরশীলতা অব্যাহত রেখেছে।

সুতরাং আমাজন তাদের নিজস্ব লেবেলযুক্ত পোশাক তৈরি করতে শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটি ২০০৯ সালে টার্বো-চার্জিং শু সেলস জাপ্পোস ক্রয় করে। তারা টি-শার্ট, টাইটস এবং জিন্স-এর মতো মৌলিক জিনিস বিক্রির দিকে মনোযোগ দেয় যেগুলো লোকজন অনলাইনে কিনতে স্বস্তিবোধ করে এবং নিয়মিত কেনে।

ক্রেতারা আমাজনে পোশাক কিনতে অধিকতর আস্থাবান হয়ে ওঠায় ডিপার্টমেন্ট স্টোরগুলো একদা মৌলিক জিনিসপত্রের স্থিতিশীল বিক্রির যে সুবিধা ভোগ করত তা হ্রাস পেয়েছে।

বাণিজ্যবিষয়ক প্রকাশনা ইন্টারনেট রিটেইলার মতে, আমাজন গত বছর তার ওয়েবসাইটে পোশাক ও অ্যাকসেসরি সামগ্রীর সংখ্যা আগের বছরের চেয়ে ৮৭ শতাংশ বৃদ্ধি করে। তার পোশাক বিক্রি ১৬.৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে। এ বিক্রির পরিমাণ তার ৫ বৃহত্তম প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যাসি’জ, নর্ডস্ট্রম, কোহলস, গ্যাপ ও ভিক্টোরিয়ার গোপন জনক এল ব্র্যান্ডস-এর সম্মিলিত অনলাইন বিক্রির চেয়েও বেশি।

আমাজনের পোশাক বিক্রির পরিস্থিতি এখনো আমেকিার বৃহত্তম পোশাক বিক্রেতা ওয়ালমার্ট-এর ২৪ বিলিয়ন ডলার মার্কিন পোশাক বিক্রির চেয়ে কম। তবে তা ম্যাসি’জ-এর ২১ বিলিয়ন ডলার ও টিজিএক্স কোং-এর ১৭ বিলিয়ন ডলার বার্ষিক বিক্রির পরিমাণ থেকে বেশি দূরে নয়। আমাজন ২০১৫ সালে পোশাক বিক্রিতে গ্যাপ, কোহলস, টার্গেট, জে.সি. পেনি এবং নর্ডসট্রমকে ছাড়িয়ে গেছে।

আমাজন ও তার বাজার স্থলের বিক্রেতারা ডিপার্টমেন্ট স্টোরগুলোর লাভের পরিমাণ কমিয়ে ফেলার এক সুচতুর পন্থা বের করেছে। একটি জনপ্রিয় পণ্য নিনÑ যেমন তা পার্স বা জ্যাকেট হতে পারে, সেগুলোর সীমিত মজুদ (৫ অথবা ১০টি আইটেম হতে পারে) শুধু আমাজন বিক্রেতাদের কাছেই আছে। এখন বিপুল মূল্যহ্রাসের তালিকায় সেগুলো দিন। রিটেইলাররা, যাদের ওয়েবসাইটগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে আমাজনের মূল্যের সাথে ম্যাচ করে অথবা যাদের মূল্য-সাযুজ্য নিশ্চয়তা আছে, শেষ পর্যন্ত তারা মুনাফা কম পাবে।

ডিপার্টমেন্ট স্টোরগুলো এ যন্ত্রণা উপলব্ধি করছে। মরগান স্ট্যানলি বিশেষজ্ঞ কিমবারলি গ্রীনবার্গার বলেন, আগের বছরের তুলনায় এ বছরের দ্বিতীয় চতুর্মাসিকে যুক্তরাষ্ট্রর ৬টি বৃহত্তম ডিপার্টমেন্ট স্টোরে সম্মিলিত বিক্রয় ৬৬ কোটি ডলার পড়ে গেছে। এ সব বিক্রির একটা বড় অংশই চলে গেছে আমাজনে যাদের পোশাক বিক্রি এক বছর আগের চেয়ে এ বছরের প্রথম চতুর্মাসিকে ১.১ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে।
এপ্রিলে মরগান স্ট্যানলি জরিপ মতে, মার্কিন ভোক্তাদের প্রতি ৫ জনের একজন প্রায়ই আমাজন থেকে পোশাক কেনেন। আমাজনের প্রাইম মেম্বারদের জন্য তা ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

জরিপের সবচেয়ে কৌতূহলোদ্দীপক দিক হচ্ছে আমাজনে কেনাকাটার জন্য ক্রেতারা প্রধান যে কারণ দেখাচ্ছেন তা হচ্ছে সহজ ও সুবিধাজনক। অন্য কথায়, আমাজনে বিক্রি বৃদ্ধির কারণ তার সাইটের পোশাক নয়, তার লজিস্টিকস।

এখনো ৬০ শতাংশ ভোক্তা বলছেন যে, তারা আমাজন থেকে আরো পোশাক কিনবেন যদি তারা সুপরিচিত, ফ্যাশনেবল পোশাক ব্র্যান্ডের পছন্দসই ব্যাপক উপস্থিতি ঘটায়।
ব্র্যান্ডগুলোকে উপস্থিত করার জন্য আমাজন ফ্যাশন শিল্পের রিং চুম্বন করছে। তারা নিউইয়র্ক ও ইন্ডিয়া ফ্যাশন সপ্তাহে পুরুষদের ফ্যাশন সপ্তাহ স্পন্সর করেছে। শিগগিরই টোকিও ফ্যাশন সপ্তাহ আমাজন ফ্যাশন সপ্তাহ টোকিও নামে পুনঃনামকরণ হবে। তাদের রয়েছে একটি লাইভ ফ্যাশন ওয়েব শো এবং ফ্যাশন আরবিটার আন্না উইনটুর ও ডায়ানে ভন ফ্রাস্টেনবার্গ-এর সমর্থনে কাউন্সিল অব ফ্যাশন ডিজাইনারস অব আমেরিকা/ভোগ ফ্যাশন ফান্ড বিষয়ে একটি ওয়েব সিরিজ স্পন্সর করছে।
ফ্যাশন তোষামুদি আমাজনের প্রতি আকৃষ্ট হতে ব্র্যান্ডগুলোকে সাহায্য করছে। ইতোমধ্যেই কেট স্পেড, ফেঞ্চ কানেকশন, সেভেন ফর অল ম্যানকাইন্ড এবং ভিন্স এই ই-কমার্স জায়ান্টের ওয়েবসাইটে ব্যাপকভাবে তাদের পণ্য প্রদর্শন করছে।

তবে আমাজনের জন্য বৃহত্তম সাফল্য এখনো উন্মোচিত হয়নি। বহু ব্র্যান্ডই যেখান থেকে তাদের রাজস্বের বৃহত্তম অংশটি পেয়ে থাকে সেই ডিপার্টমেন্ট স্টোরগুলোতে বিক্রি হ্রাস পাওয়ার সাথে পোশাক খাতে আমাজনের প্রাধান্য আগের চেয়ে আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে।

লিখেছেনঃ
হাবিবুর রহমান 
লিংকড ইন 

আমাজন.কম এখন বিশ্বের সব চেয়ে বড় বায়ার, বাংলাদেশ কি প্রস্তুত !

আমাজন.কম এখন বিশ্বের সব চেয়ে বড় বায়ার, বাংলাদেশ কি প্রস্তুত !
আমাজন ইতোমধ্যেই অনলাইনে বিশে^র বৃহত্তম পোশাক বিক্রেতা। খুব শিগগিরই প্রতিষ্ঠানটি ফ্যাশন বিক্রয়েও অধিকাংশ প্রতিদ্বন্দ্বীকে ছাড়িয়ে যাবে।
গত সপ্তাহের নিউইয়র্ক ফ্যাশন সপ্তাহে আমাজন ক্যাটওয়াকে কোনো রানওয়ে মডেল ছিল না। তবে ফ্যাশন শিল্পে কনুই দিয়ে গুঁতিয়ে নিজেদের পথ করে নিতে পর্যবেক্ষণকারী খুচরা নির্বাহীদের মনে ই-কমার্স জায়ান্ট বড় রকমভাবেই জুড়ে বসেছিল।

ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো গত দশকে আমাজনকে শত্রু হিসেবে দেখেছে। ব্র্যান্ডগুলো আমাজনে পণ্য বিক্রয় না করার শপথ করেছে এবং এর তালগোল পাকানো ওয়েবসাইট ও নকল পণ্যের ঝুঁকির ব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। অনেকে অনীহার সাথে নিজেদের ওয়েবসাইট চালু করেছে, কিন্তু তাদের বিক্রির বৃহৎ অংশের জন্য ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলোর উপর নির্ভরশীলতা অব্যাহত রেখেছে।

সুতরাং আমাজন তাদের নিজস্ব লেবেলযুক্ত পোশাক তৈরি করতে শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটি ২০০৯ সালে টার্বো-চার্জিং শু সেলস জাপ্পোস ক্রয় করে। তারা টি-শার্ট, টাইটস এবং জিন্স-এর মতো মৌলিক জিনিস বিক্রির দিকে মনোযোগ দেয় যেগুলো লোকজন অনলাইনে কিনতে স্বস্তিবোধ করে এবং নিয়মিত কেনে।

ক্রেতারা আমাজনে পোশাক কিনতে অধিকতর আস্থাবান হয়ে ওঠায় ডিপার্টমেন্ট স্টোরগুলো একদা মৌলিক জিনিসপত্রের স্থিতিশীল বিক্রির যে সুবিধা ভোগ করত তা হ্রাস পেয়েছে।

বাণিজ্যবিষয়ক প্রকাশনা ইন্টারনেট রিটেইলার মতে, আমাজন গত বছর তার ওয়েবসাইটে পোশাক ও অ্যাকসেসরি সামগ্রীর সংখ্যা আগের বছরের চেয়ে ৮৭ শতাংশ বৃদ্ধি করে। তার পোশাক বিক্রি ১৬.৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে। এ বিক্রির পরিমাণ তার ৫ বৃহত্তম প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যাসি’জ, নর্ডস্ট্রম, কোহলস, গ্যাপ ও ভিক্টোরিয়ার গোপন জনক এল ব্র্যান্ডস-এর সম্মিলিত অনলাইন বিক্রির চেয়েও বেশি।

আমাজনের পোশাক বিক্রির পরিস্থিতি এখনো আমেকিার বৃহত্তম পোশাক বিক্রেতা ওয়ালমার্ট-এর ২৪ বিলিয়ন ডলার মার্কিন পোশাক বিক্রির চেয়ে কম। তবে তা ম্যাসি’জ-এর ২১ বিলিয়ন ডলার ও টিজিএক্স কোং-এর ১৭ বিলিয়ন ডলার বার্ষিক বিক্রির পরিমাণ থেকে বেশি দূরে নয়। আমাজন ২০১৫ সালে পোশাক বিক্রিতে গ্যাপ, কোহলস, টার্গেট, জে.সি. পেনি এবং নর্ডসট্রমকে ছাড়িয়ে গেছে।

আমাজন ও তার বাজার স্থলের বিক্রেতারা ডিপার্টমেন্ট স্টোরগুলোর লাভের পরিমাণ কমিয়ে ফেলার এক সুচতুর পন্থা বের করেছে। একটি জনপ্রিয় পণ্য নিনÑ যেমন তা পার্স বা জ্যাকেট হতে পারে, সেগুলোর সীমিত মজুদ (৫ অথবা ১০টি আইটেম হতে পারে) শুধু আমাজন বিক্রেতাদের কাছেই আছে। এখন বিপুল মূল্যহ্রাসের তালিকায় সেগুলো দিন। রিটেইলাররা, যাদের ওয়েবসাইটগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে আমাজনের মূল্যের সাথে ম্যাচ করে অথবা যাদের মূল্য-সাযুজ্য নিশ্চয়তা আছে, শেষ পর্যন্ত তারা মুনাফা কম পাবে।

ডিপার্টমেন্ট স্টোরগুলো এ যন্ত্রণা উপলব্ধি করছে। মরগান স্ট্যানলি বিশেষজ্ঞ কিমবারলি গ্রীনবার্গার বলেন, আগের বছরের তুলনায় এ বছরের দ্বিতীয় চতুর্মাসিকে যুক্তরাষ্ট্রর ৬টি বৃহত্তম ডিপার্টমেন্ট স্টোরে সম্মিলিত বিক্রয় ৬৬ কোটি ডলার পড়ে গেছে। এ সব বিক্রির একটা বড় অংশই চলে গেছে আমাজনে যাদের পোশাক বিক্রি এক বছর আগের চেয়ে এ বছরের প্রথম চতুর্মাসিকে ১.১ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে।
এপ্রিলে মরগান স্ট্যানলি জরিপ মতে, মার্কিন ভোক্তাদের প্রতি ৫ জনের একজন প্রায়ই আমাজন থেকে পোশাক কেনেন। আমাজনের প্রাইম মেম্বারদের জন্য তা ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

জরিপের সবচেয়ে কৌতূহলোদ্দীপক দিক হচ্ছে আমাজনে কেনাকাটার জন্য ক্রেতারা প্রধান যে কারণ দেখাচ্ছেন তা হচ্ছে সহজ ও সুবিধাজনক। অন্য কথায়, আমাজনে বিক্রি বৃদ্ধির কারণ তার সাইটের পোশাক নয়, তার লজিস্টিকস।

এখনো ৬০ শতাংশ ভোক্তা বলছেন যে, তারা আমাজন থেকে আরো পোশাক কিনবেন যদি তারা সুপরিচিত, ফ্যাশনেবল পোশাক ব্র্যান্ডের পছন্দসই ব্যাপক উপস্থিতি ঘটায়।
ব্র্যান্ডগুলোকে উপস্থিত করার জন্য আমাজন ফ্যাশন শিল্পের রিং চুম্বন করছে। তারা নিউইয়র্ক ও ইন্ডিয়া ফ্যাশন সপ্তাহে পুরুষদের ফ্যাশন সপ্তাহ স্পন্সর করেছে। শিগগিরই টোকিও ফ্যাশন সপ্তাহ আমাজন ফ্যাশন সপ্তাহ টোকিও নামে পুনঃনামকরণ হবে। তাদের রয়েছে একটি লাইভ ফ্যাশন ওয়েব শো এবং ফ্যাশন আরবিটার আন্না উইনটুর ও ডায়ানে ভন ফ্রাস্টেনবার্গ-এর সমর্থনে কাউন্সিল অব ফ্যাশন ডিজাইনারস অব আমেরিকা/ভোগ ফ্যাশন ফান্ড বিষয়ে একটি ওয়েব সিরিজ স্পন্সর করছে।
ফ্যাশন তোষামুদি আমাজনের প্রতি আকৃষ্ট হতে ব্র্যান্ডগুলোকে সাহায্য করছে। ইতোমধ্যেই কেট স্পেড, ফেঞ্চ কানেকশন, সেভেন ফর অল ম্যানকাইন্ড এবং ভিন্স এই ই-কমার্স জায়ান্টের ওয়েবসাইটে ব্যাপকভাবে তাদের পণ্য প্রদর্শন করছে।

তবে আমাজনের জন্য বৃহত্তম সাফল্য এখনো উন্মোচিত হয়নি। বহু ব্র্যান্ডই যেখান থেকে তাদের রাজস্বের বৃহত্তম অংশটি পেয়ে থাকে সেই ডিপার্টমেন্ট স্টোরগুলোতে বিক্রি হ্রাস পাওয়ার সাথে পোশাক খাতে আমাজনের প্রাধান্য আগের চেয়ে আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে।

লিখেছেনঃ
হাবিবুর রহমান 
লিংকড ইন 

কোন মন্তব্য নেই: