যেভাবে চলছে দেশীয় কোম্পানিগুলো | Bangladeshi Factory - Textile Lab | Textile Learning Blog
যেভাবে চলছে দেশীয় কোম্পানিগুলো
আমরা যেসব কোম্পানির চাকরি পেলে নিজেকে ধন্য মনে করি, সেই বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর (MNC) যাত্রা কিন্তু শুরু হয় কোনো না কোনো ব্যক্তি মালিকানাধীন কোম্পানি হিসেবেই। ব্যবসা যখন ক্রমশ সম্প্রসারিত হয়, সময়ের প্রযোজনে, বাস্তবতার নিরিখে এক পর্যায়ে মালিকপক্ষ কোম্পানির ভার/দায়-দায়িত্ব দক্ষ পেশাজীবীদের (corporate body) হাতে ন্যস্ত করেন। তারা তখন পূর্ণ পেশাদারিত্বের সঙ্গে কোম্পানিকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান। এভাবেই পৃথিবীর প্রত্যেকটি বহুজাতিক কোম্পানির জন্ম ও পথ চলা।

এক পর্যায়ে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর একক মালিকানা বলে আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না বললেই চলে, তারপরও কোম্পানিগুলো বেশ ভালোভাবেই চলতে থাকে; এমনকি দীর্ঘকাল সগৌরবে টিকেও থাকে। কারণ সেখানে কোনো মালিক না থাকলেও সিস্টেম আছে, আছে সুনির্দিষ্ট process। লাখ লাখ তরুণ তাই MNC-তে ঢোকার জন্য তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বীতায় অবতীর্ণ হন এবং যোগ্যতমেরা সেখানে বছরের পর বছর সদর্পে চাকরি করেন। কেউ কেউ নিজ দক্ষতা ও যোগ্যতায় শীর্ষ পর্যন্ত পৌঁছেও যান।

প্রশ্ন হলো- বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া কোনো কোম্পানি কেন আজ অবধি বহুজাতিক (MNC) রূপ লাভ করল না? কারণটা খুবই স্পষ্ট- কোনো মালিকের বুকের পাটা এতোটা বড় নয় যে, নিজের মাতব্বরি কমিয়ে যোগ্য পেশাদার নেতৃত্বের হাতে কোম্পানির পুরো দায়-দায়িত্ব তুলে দেওয়ার সাহস রাখেন! দিন শেষে তারা বহু মানুষের শ্রমে-ঘামে তিল তিল করে গড়ে ওঠা কোম্পানিকে ব্যক্তিগত সম্পত্তিই মনে করেন! অনেক ক্ষেত্রে quality-এর চেয়ে তাঁরা loyalty-কেই বেশি প্রাধান্য ও গুরুত্ব দেন!

ইদানীং কোনো কোনো মালিক পেশাদার CEO নিয়োগ দিলেও চেক-এর পাতায় স্বাক্ষরের ক্ষমতা কিন্তু নিজের কাছেই রেখে দেন!! বহুজাতিক কোম্পানিগুলোতে বাজেট অনুযায়ী যে যার বিভাগের অর্থ ব্যয় করার সুযোগ পান। তাই বলে কি সেখানে সব টাকা লোপাট হয়ে যায়? যায় না। কারণ খরচেরও যথাযথ সিস্টেম ও process আছে। আর এদিকে আমাদের দেশীয় কোম্পানির কর্মীরা revenue-এর top line-টা (যেহেতু তারাই সেটা আয় করে আনেন) জানতে পারলেও bottom line-টা (Net profit) চিরকাল গোপন রাখা হয়। হায়, কর্মীদের সমন্বিত মেধা ও নিরলস পরিশ্রমে কোম্পানি প্রকৃতপক্ষে কত টাকা লাভ করল, কর্মীরা সে খবরটুকু কোনোদিন জানতেও পারেন না!

এর পাশাপাশি চলে ভ্যাট, ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা আর প্রত্যেক মাসে নিয়ম করে হুন্ডির মাধ্যমে সিঙ্গাপুর বা মালয়েশিয়ায় টাকা পাচার করে তথাকথিত ‘সেকেন্ড হোম’ (তত্ত্বাবধায়ক সরকার-এর আমলে সপরিবারে পালানোর জায়গা) গড়ে তোলার প্রবণতা!

মালিকপক্ষ কোম্পানিকে লাভজনক করার জন্য যত ফাঁক-ফোকড় খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন, যোগ্যতমদের সমন্বয়ে কোম্পানি চালালে নিয়মতান্ত্রিক উপায়েই তারচেয়ে বেশি লাভজনক করা সম্ভব। Process develop করে পর্যায়ক্রমে ownership বিভিন্ন স্তর-এ বণ্টন করে দেওয়া উচিত, কিন্তু তা না করে সব ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখলে এক পর্যায়ে কোম্পানির গতি মন্থর হয়ে পড়তে বাধ্য।

কোম্পানিকে লাভজনক রাখার জন্য যতটা ভাবতে হবে, তারচেয়ে বেশি ভাবা উচিত কোম্পানির দীর্ঘস্থায়ীত্ব নিয়ে। সুদূরপ্রসারী চিন্তা-ভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গি থেকে শুধুমাত্র যোগ্য লোক নিয়োগ করলে বাকি সবকিছু ঠিকঠাক মতো চলবে।

এক শ্রেণীর মালিক আবার কোম্পানির ভেতরে `Sunset Reporter' নিয়োগ করেন! এরা নিম্ন পদে (পিওন, ড্রাইভার, ক্লিনার ইত্যাদি) চাকরি করলেও তলে তলে বিশাল ক্ষমতার অধিকারী। মালিক এদেরকে GM, HOS-এর চাইতেও বেশি বিশ্বাস করেন এবং সরাসরি access দেন! এদের কাজ হলো মালিকের অনুপস্থিতিতে কে কী বলল, কী করছে সবকিছু মালিককে টেলিফোনে অবহিত করা। এরা যা-ই বলুক, মালিক সব বিশ্বাস করেন এবং সেই অনুযায়ী action-এ চলে যান। মালিকপক্ষ মনে করেন, কোম্পানির ভেতরে এ রকম বিক্ষিপ্ত কিছু নিজস্ব সোর্স থাকা মানে কোম্পানির সর্বত্র নিজের প্রভাব ধরে রাখা। এই সুযোগে অযোগ্য কিছু কর্মী মালিকের`Sunset Reporter'-দের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষা করে পিঠ বাঁচিয়ে চলেন, কিন্তু যোগ্য পেশাজীবীরা কখনোই এসব নোংরামিকে প্রশ্রয় দেন না। পরিস্থিতি সহ্যের বাইরে চলে গেলে তারা নিজেদেরকেই বরং গুটিয়ে নেন (মানে চাকরি ছেড়ে অন্যত্র চলে যান আচ্ছা বলুন তো, ভালো লোকদের বেশিদিন ধরে রাখতে না পারলে কোম্পানি কি কখনোই শক্ত ভিত-এর ওপরে দাঁড়াতে পারবে?!?

যাদের কাছ থেকে মালামাল না পেলে ফ্যাক্টরির চাকাই ঘুরবে না, সেই কাঁচামাল সরবরাহকারীদের নায্য পাওনা সময়মতো পরিশোধ করতে বললে হিসাব বিভাগ মুখের উপর বলে দেয়- ফান্ডে টাকা নেই, কয়েকটা দিন (আসলে কয়েকটা মাস) অপেক্ষা করেন; তাজ্জব ব্যাপার- মালিক বললে সেই হিসাব বিভাগই মুহূর্তের মধ্যে টাকার বস্তা এনে হাজির করে (তখন আর তহবিলে ঘাটতি হয় না)! বলি- টাকা কি তখন ভুতে যোগায় নাকি?!?

এতোকিছুর পরেও নানা চাপাচাপিতে এবং বিক্রয়শিল্পীদের অসামান্য পারদর্শীতায় কোম্পানিগুলোর revenue তথা বাইরের দিকে শাখা-প্রশাখা হয়ত বাড়ে, কিন্তু সেই অনুপাতে মাটির নিচের শেকড় সমানতালে ছড়ায় না। নিশ্চিত করে বলতে পারি- এভাবে চলতে থাকা কোনো কোম্পানিই শেষ পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকবে না; অল্প ঝড়ে উপড়ে পড়া গাছের মতোই তাদের অনিবার্য ধ্বংস খুব বেশি দুরে নয়।

পৃনশ্চ:- সন্তান জন্ম দেওয়ার অধিকার আছে বলেই কোনো বাবা-মা কিন্তু সন্তানকে হত্যা করার অধিকারপ্রাপ্ত হন না!

Collected, thanks to Mr.Razib Ahamed for his nice speech.

যেভাবে চলছে দেশীয় কোম্পানিগুলো | Bangladeshi Factory

যেভাবে চলছে দেশীয় কোম্পানিগুলো
আমরা যেসব কোম্পানির চাকরি পেলে নিজেকে ধন্য মনে করি, সেই বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর (MNC) যাত্রা কিন্তু শুরু হয় কোনো না কোনো ব্যক্তি মালিকানাধীন কোম্পানি হিসেবেই। ব্যবসা যখন ক্রমশ সম্প্রসারিত হয়, সময়ের প্রযোজনে, বাস্তবতার নিরিখে এক পর্যায়ে মালিকপক্ষ কোম্পানির ভার/দায়-দায়িত্ব দক্ষ পেশাজীবীদের (corporate body) হাতে ন্যস্ত করেন। তারা তখন পূর্ণ পেশাদারিত্বের সঙ্গে কোম্পানিকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান। এভাবেই পৃথিবীর প্রত্যেকটি বহুজাতিক কোম্পানির জন্ম ও পথ চলা।

এক পর্যায়ে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর একক মালিকানা বলে আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না বললেই চলে, তারপরও কোম্পানিগুলো বেশ ভালোভাবেই চলতে থাকে; এমনকি দীর্ঘকাল সগৌরবে টিকেও থাকে। কারণ সেখানে কোনো মালিক না থাকলেও সিস্টেম আছে, আছে সুনির্দিষ্ট process। লাখ লাখ তরুণ তাই MNC-তে ঢোকার জন্য তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বীতায় অবতীর্ণ হন এবং যোগ্যতমেরা সেখানে বছরের পর বছর সদর্পে চাকরি করেন। কেউ কেউ নিজ দক্ষতা ও যোগ্যতায় শীর্ষ পর্যন্ত পৌঁছেও যান।

প্রশ্ন হলো- বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া কোনো কোম্পানি কেন আজ অবধি বহুজাতিক (MNC) রূপ লাভ করল না? কারণটা খুবই স্পষ্ট- কোনো মালিকের বুকের পাটা এতোটা বড় নয় যে, নিজের মাতব্বরি কমিয়ে যোগ্য পেশাদার নেতৃত্বের হাতে কোম্পানির পুরো দায়-দায়িত্ব তুলে দেওয়ার সাহস রাখেন! দিন শেষে তারা বহু মানুষের শ্রমে-ঘামে তিল তিল করে গড়ে ওঠা কোম্পানিকে ব্যক্তিগত সম্পত্তিই মনে করেন! অনেক ক্ষেত্রে quality-এর চেয়ে তাঁরা loyalty-কেই বেশি প্রাধান্য ও গুরুত্ব দেন!

ইদানীং কোনো কোনো মালিক পেশাদার CEO নিয়োগ দিলেও চেক-এর পাতায় স্বাক্ষরের ক্ষমতা কিন্তু নিজের কাছেই রেখে দেন!! বহুজাতিক কোম্পানিগুলোতে বাজেট অনুযায়ী যে যার বিভাগের অর্থ ব্যয় করার সুযোগ পান। তাই বলে কি সেখানে সব টাকা লোপাট হয়ে যায়? যায় না। কারণ খরচেরও যথাযথ সিস্টেম ও process আছে। আর এদিকে আমাদের দেশীয় কোম্পানির কর্মীরা revenue-এর top line-টা (যেহেতু তারাই সেটা আয় করে আনেন) জানতে পারলেও bottom line-টা (Net profit) চিরকাল গোপন রাখা হয়। হায়, কর্মীদের সমন্বিত মেধা ও নিরলস পরিশ্রমে কোম্পানি প্রকৃতপক্ষে কত টাকা লাভ করল, কর্মীরা সে খবরটুকু কোনোদিন জানতেও পারেন না!

এর পাশাপাশি চলে ভ্যাট, ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা আর প্রত্যেক মাসে নিয়ম করে হুন্ডির মাধ্যমে সিঙ্গাপুর বা মালয়েশিয়ায় টাকা পাচার করে তথাকথিত ‘সেকেন্ড হোম’ (তত্ত্বাবধায়ক সরকার-এর আমলে সপরিবারে পালানোর জায়গা) গড়ে তোলার প্রবণতা!

মালিকপক্ষ কোম্পানিকে লাভজনক করার জন্য যত ফাঁক-ফোকড় খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন, যোগ্যতমদের সমন্বয়ে কোম্পানি চালালে নিয়মতান্ত্রিক উপায়েই তারচেয়ে বেশি লাভজনক করা সম্ভব। Process develop করে পর্যায়ক্রমে ownership বিভিন্ন স্তর-এ বণ্টন করে দেওয়া উচিত, কিন্তু তা না করে সব ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখলে এক পর্যায়ে কোম্পানির গতি মন্থর হয়ে পড়তে বাধ্য।

কোম্পানিকে লাভজনক রাখার জন্য যতটা ভাবতে হবে, তারচেয়ে বেশি ভাবা উচিত কোম্পানির দীর্ঘস্থায়ীত্ব নিয়ে। সুদূরপ্রসারী চিন্তা-ভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গি থেকে শুধুমাত্র যোগ্য লোক নিয়োগ করলে বাকি সবকিছু ঠিকঠাক মতো চলবে।

এক শ্রেণীর মালিক আবার কোম্পানির ভেতরে `Sunset Reporter' নিয়োগ করেন! এরা নিম্ন পদে (পিওন, ড্রাইভার, ক্লিনার ইত্যাদি) চাকরি করলেও তলে তলে বিশাল ক্ষমতার অধিকারী। মালিক এদেরকে GM, HOS-এর চাইতেও বেশি বিশ্বাস করেন এবং সরাসরি access দেন! এদের কাজ হলো মালিকের অনুপস্থিতিতে কে কী বলল, কী করছে সবকিছু মালিককে টেলিফোনে অবহিত করা। এরা যা-ই বলুক, মালিক সব বিশ্বাস করেন এবং সেই অনুযায়ী action-এ চলে যান। মালিকপক্ষ মনে করেন, কোম্পানির ভেতরে এ রকম বিক্ষিপ্ত কিছু নিজস্ব সোর্স থাকা মানে কোম্পানির সর্বত্র নিজের প্রভাব ধরে রাখা। এই সুযোগে অযোগ্য কিছু কর্মী মালিকের`Sunset Reporter'-দের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষা করে পিঠ বাঁচিয়ে চলেন, কিন্তু যোগ্য পেশাজীবীরা কখনোই এসব নোংরামিকে প্রশ্রয় দেন না। পরিস্থিতি সহ্যের বাইরে চলে গেলে তারা নিজেদেরকেই বরং গুটিয়ে নেন (মানে চাকরি ছেড়ে অন্যত্র চলে যান আচ্ছা বলুন তো, ভালো লোকদের বেশিদিন ধরে রাখতে না পারলে কোম্পানি কি কখনোই শক্ত ভিত-এর ওপরে দাঁড়াতে পারবে?!?

যাদের কাছ থেকে মালামাল না পেলে ফ্যাক্টরির চাকাই ঘুরবে না, সেই কাঁচামাল সরবরাহকারীদের নায্য পাওনা সময়মতো পরিশোধ করতে বললে হিসাব বিভাগ মুখের উপর বলে দেয়- ফান্ডে টাকা নেই, কয়েকটা দিন (আসলে কয়েকটা মাস) অপেক্ষা করেন; তাজ্জব ব্যাপার- মালিক বললে সেই হিসাব বিভাগই মুহূর্তের মধ্যে টাকার বস্তা এনে হাজির করে (তখন আর তহবিলে ঘাটতি হয় না)! বলি- টাকা কি তখন ভুতে যোগায় নাকি?!?

এতোকিছুর পরেও নানা চাপাচাপিতে এবং বিক্রয়শিল্পীদের অসামান্য পারদর্শীতায় কোম্পানিগুলোর revenue তথা বাইরের দিকে শাখা-প্রশাখা হয়ত বাড়ে, কিন্তু সেই অনুপাতে মাটির নিচের শেকড় সমানতালে ছড়ায় না। নিশ্চিত করে বলতে পারি- এভাবে চলতে থাকা কোনো কোম্পানিই শেষ পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকবে না; অল্প ঝড়ে উপড়ে পড়া গাছের মতোই তাদের অনিবার্য ধ্বংস খুব বেশি দুরে নয়।

পৃনশ্চ:- সন্তান জন্ম দেওয়ার অধিকার আছে বলেই কোনো বাবা-মা কিন্তু সন্তানকে হত্যা করার অধিকারপ্রাপ্ত হন না!

Collected, thanks to Mr.Razib Ahamed for his nice speech.

কোন মন্তব্য নেই: