তৈরি পোশাকশিল্প: যাদের প্রশংসনীয় উদাহরণ সবার অনুসরণ করা দরকার - Textile Lab | Textile Learning Blog
তৈরি পোশাকশিল্প: যে প্রশংসনীয় উদাহরণ অনুসরণ করা দরকার


তিনটি তৈরি পোশাক কারখানা জানিয়েছে, তারা কারখানা না খুললেও শ্রমিকদের এপ্রিল মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস যথা সময়ে দেবে। কোনো শ্রমিকই ছাটাই করা হবে না বলেও অঙ্গীকার করেছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।

তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকরা যেখানে মার্চ মাসের বেতনের দাবিতে আন্দোলন করছেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেই তিনটি পোশাক ইন্ডাস্ট্রি সেখানে শ্রমিকদের এপ্রিল মাসের বেতন ও ঈদ বোনাসের এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে।

এই তিনটি তৈরি পোশাক শিল্প কারখানার মধ্যে নারায়ণগঞ্জভিত্তিক এসপি গ্রুপ ইতোমধ্যেই শ্রমিকদের এপ্রিল মাসের বেতন দিয়েছে। দিয়েছে ঈদ বোনাসের প্রতিশ্রুতিও। অন্যদিকে, অন্য দুটি কারখানা চট্টগ্রামভিত্তিক ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেড ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা অ্যাপারেলস লিমিটেড শ্রমিকদের ঈদ বোনাসসহ পুরো বেতন পরিশোধের কথা দিয়েছে।

ভাইরাসের এই দুর্যোগকালে একজন শ্রমিককেও ছাটাই না করার ঘোষণাও দিয়েছে কারখানা তিনটি।

শ্রমিকদের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে এই প্রতিষ্ঠানগুলো বর্তমান পরিস্থিতিতে কারখানা খোলেনি। এক টাকাও উপার্জন না হওয়া সত্ত্বেও তারা সামনের মাসগুলোর পুরো বেতন পরিশোধ করার ব্যাপারে শ্রমিকদের আশ্বস্ত করেছে।

শ্রমিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষাই অগ্রাধিকার

নারায়ণগঞ্জভিত্তিক এসপি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুবল চন্দ্র সাহা বলেছেন, শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিকে তারা সবার আগে বিবেচনা করেন।

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি মেনে ২৫ মার্চ উৎপাদন বন্ধ করে দেয় এই প্রতিষ্ঠান।

এর এক মাস পরও বাংলাদেশে কোভিড-১৯-এর বিস্তার ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে, এই বিবেচনায় উৎপাদন পুনরায় শুরু করেননি তিনি।

এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানালেন, পোশাকশ্রমিকরা অন্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে ছোট ছোট রুমে জীবনযাপন করেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একই টয়লেট তাদের অনেককে ব্যবহার করতে হয়।

তিনি বলেন, গার্মেন্ট সংলগ্ন এলাকাগুলোতেই শ্রমিকরা বসবাস করেন, সেখানে ভাইরাসটি ব্যাপক মাত্রায় ছড়ানোর আশংকা থেকেই যায়।

সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, 'করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলে আমরা পহেলা জুন থেকে কার্যক্রম আবার শুরু করার পরিকল্পনা করছি। অন্যথায় পহেলা জুলাই শুরু করব।' তার কারখানায় ৩ হাজার ৩০০ শ্রমিক কাজ করেন। তাদের প্রতি মাসের বেতন প্রায় ৫ কোটি টাকা।

সরকার এ সপ্তাহে পোশাক কারখানার মালিকদের তাদের কারখানা সীমিত পরিসরে খোলার অনুমতি দিয়েছে। তবে ঢাকার বাইরের শ্রমিকদের এই পরিস্থিতিতে কাজে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে কোনো রকম চাপ না দেওয়ার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রায় সারা মাস উৎপাদন বন্ধ ছিল বলে পোশাক কারখানার মালিকরা শ্রমিকদের এপ্রিল মাসের বেতন ৬০ শতাংশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তবে সুবল বলেছেন, কারখানা আবারও চালু হওয়ার আগ পর্যন্ত, তিনি নিজে এক টাকাও উপার্জন করতে না পারলেও, তার শ্রমিকরা পুরো বেতন পাবেন।

তিনি বলেন, 'এসপি গ্রুপ তার সব শ্রমিকের মার্চ মাসের পুরো বেতন ইতোমধ্যেই দিয়েছে। শ্রমিকরা যেন ঈদের উৎসব আনন্দ নিয়ে উপযাপন করতে পারেন, এখন সে লক্ষ্যে তাদের ঈদ বোনাস প্রস্তুতের কাজ করছে মানবসম্পদ বিভাগ।'

এসপি গ্রুপের মতো, চট্টগ্রামের ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেড ও নারায়ণগঞ্জভিত্তিক ফতুল্লা অ্যাপারেলস লিমিটেডও জানিয়েছে, তারা শ্রমিকদের এপ্রিল মাসের পুরো বেতন এবং ঈদ বোনাস যথাসময়ে পরিশোধ করবে। উভয় কোম্পানিই করোনাভাইরাস পরিস্থিতি খুব তীক্ষ্ণভাবে নজরদারি করছে। পরিস্থিতি বুঝে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে কারখানা খোলার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

শুধুই মহত্ব দেখাতে এ কাজ ?

অনেক কারখানা যেখানে শ্রমিক ছাটাই করছে, কোনো কোনো কারখানা যেখানে শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন দেয়নি এখনো, সেখানে এই তিনটি কারখানা তাদের কোনো শ্রমিকই ছাটাই করেনি।

এ রকম সৌজন্যতা কী করে দেখাল ?

ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, 'শ্রমিকরা আমার পরিবারের সদস্যের মতোই। আমি আমার কর্মীদের বড় কোনো বিপদের মুখে ফেলে দেওয়ার কথা কোনোদিনই ভাবিনি।'

তিনি আরও বলেন, 'এই দুর্যোগে আমরা আমাদের কর্মীদের সত্যিকারের খেয়াল রাখছি।'

বাকি দুটি কারখানার কর্তৃপক্ষের কণ্ঠেও ছিল অভিন্ন সুর। এই তিন উৎপাদনকারীর ব্যবসা মূলত ইউরোপিয়ান ক্রেতাদের সঙ্গে।

বৈশ্বিক এই মহামারির কালে কারখানা মালিকরা প্রোডাকশন কমাতে এবং তাদের অর্ডার বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু ক্রেতাদের পক্ষ থেকে বড় ধরনের কোনো আঘাত তাদের ওপর আসেনি।

এসপি গ্রুপের দুটি বড় ক্লায়েন্ট- বেলজিয়ামের বায়ার 'বিএলসি' এবং সুইডিশ বায়ার 'কটন গ্রুপ'।

সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, 'বিএলসির সঙ্গে আমরা ২৬ বছর ধরে ব্যবসা করছি। তারা কোনো অর্ডার কিংবা শিপমেন্ট ক্যানসেল করেনি।' অবশ্য, চট্টগ্রাম ও ইউরোপের বন্দরগুলোতে তার প্রায় ২৫০ কোটি টাকা মূল্যের প্রোডাকশন আটকা পড়ে রয়েছে।

চট্টগ্রামের ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের কর্মীসংখ্যা ২ হাজার। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে পণ্য পাঠিয়ে বছরে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার উপার্জন করে এটি। প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ১ কোটি মার্কিন ডলার অর্থমূল্যের অর্ডার বাতিল করে হয়ে গেছে এবং ভবিষ্যতের অর্ডারগুলোও হয়ে গেছে স্থগিত।

কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, তাদের আনুষঙ্গিক খরচ ও ব্যাংক ঋণের বোঝা দিন দিন বাড়ছে।

অবশ্য তাদের মোট উৎপাদনের প্রায় ৬০ শতাংশের ক্রেতা 'ইনডেক্স'-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তিনি। মোস্তাফিজ জানান, ইনডেক্স কোনো অর্ডার বাতিল করেনি কিংবা কোনো পেমেন্ট স্থগিত রাখেনি।

নারায়ণগঞ্জভিত্তিক ফতুল্লা অ্যাপারেলস লিমিটেডের কর্মীসংখ্যা ১ হাজার ১০০ জন। ইউরোপে পোশাক রপ্তানি করে বছরে ১ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার উপার্জন করে প্রতিষ্ঠানটি।

নিট কম্পোজিটরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে শামীম এহসান জানান, বৈশ্বিক এই মহামারির কারণে উৎপাদন যথেষ্ট বিঘ্নিত হলেও তাদের কোনো বায়ারই কোনো অর্ডার বাতিল করেনি।

নিজেদের দুই বিশ্বস্ত ইউরোপিয়ান বায়ার 'হ্যাপি চিক' ও 'ফোপেম'-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। এক দশকেরও বেশিকাল ধরে এ দুটি বায়ারের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠানটির।

এহসান বলেন, 'এই বায়ারেরা এখনো আমার কারখানায় ছোট ছোট অর্ডার দিচ্ছে।'


বাঁ থেকে- সুবল চন্দ্র সাহা, মোস্তাফিজ উদ্দিন ও ফজলে শামীম এহসান

তৈরি পোশাকশিল্প: যাদের প্রশংসনীয় উদাহরণ সবার অনুসরণ করা দরকার

তৈরি পোশাকশিল্প: যে প্রশংসনীয় উদাহরণ অনুসরণ করা দরকার


তিনটি তৈরি পোশাক কারখানা জানিয়েছে, তারা কারখানা না খুললেও শ্রমিকদের এপ্রিল মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস যথা সময়ে দেবে। কোনো শ্রমিকই ছাটাই করা হবে না বলেও অঙ্গীকার করেছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।

তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকরা যেখানে মার্চ মাসের বেতনের দাবিতে আন্দোলন করছেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেই তিনটি পোশাক ইন্ডাস্ট্রি সেখানে শ্রমিকদের এপ্রিল মাসের বেতন ও ঈদ বোনাসের এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে।

এই তিনটি তৈরি পোশাক শিল্প কারখানার মধ্যে নারায়ণগঞ্জভিত্তিক এসপি গ্রুপ ইতোমধ্যেই শ্রমিকদের এপ্রিল মাসের বেতন দিয়েছে। দিয়েছে ঈদ বোনাসের প্রতিশ্রুতিও। অন্যদিকে, অন্য দুটি কারখানা চট্টগ্রামভিত্তিক ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেড ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা অ্যাপারেলস লিমিটেড শ্রমিকদের ঈদ বোনাসসহ পুরো বেতন পরিশোধের কথা দিয়েছে।

ভাইরাসের এই দুর্যোগকালে একজন শ্রমিককেও ছাটাই না করার ঘোষণাও দিয়েছে কারখানা তিনটি।

শ্রমিকদের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে এই প্রতিষ্ঠানগুলো বর্তমান পরিস্থিতিতে কারখানা খোলেনি। এক টাকাও উপার্জন না হওয়া সত্ত্বেও তারা সামনের মাসগুলোর পুরো বেতন পরিশোধ করার ব্যাপারে শ্রমিকদের আশ্বস্ত করেছে।

শ্রমিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষাই অগ্রাধিকার

নারায়ণগঞ্জভিত্তিক এসপি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুবল চন্দ্র সাহা বলেছেন, শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিকে তারা সবার আগে বিবেচনা করেন।

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি মেনে ২৫ মার্চ উৎপাদন বন্ধ করে দেয় এই প্রতিষ্ঠান।

এর এক মাস পরও বাংলাদেশে কোভিড-১৯-এর বিস্তার ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে, এই বিবেচনায় উৎপাদন পুনরায় শুরু করেননি তিনি।

এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানালেন, পোশাকশ্রমিকরা অন্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে ছোট ছোট রুমে জীবনযাপন করেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একই টয়লেট তাদের অনেককে ব্যবহার করতে হয়।

তিনি বলেন, গার্মেন্ট সংলগ্ন এলাকাগুলোতেই শ্রমিকরা বসবাস করেন, সেখানে ভাইরাসটি ব্যাপক মাত্রায় ছড়ানোর আশংকা থেকেই যায়।

সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, 'করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলে আমরা পহেলা জুন থেকে কার্যক্রম আবার শুরু করার পরিকল্পনা করছি। অন্যথায় পহেলা জুলাই শুরু করব।' তার কারখানায় ৩ হাজার ৩০০ শ্রমিক কাজ করেন। তাদের প্রতি মাসের বেতন প্রায় ৫ কোটি টাকা।

সরকার এ সপ্তাহে পোশাক কারখানার মালিকদের তাদের কারখানা সীমিত পরিসরে খোলার অনুমতি দিয়েছে। তবে ঢাকার বাইরের শ্রমিকদের এই পরিস্থিতিতে কাজে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে কোনো রকম চাপ না দেওয়ার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রায় সারা মাস উৎপাদন বন্ধ ছিল বলে পোশাক কারখানার মালিকরা শ্রমিকদের এপ্রিল মাসের বেতন ৬০ শতাংশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তবে সুবল বলেছেন, কারখানা আবারও চালু হওয়ার আগ পর্যন্ত, তিনি নিজে এক টাকাও উপার্জন করতে না পারলেও, তার শ্রমিকরা পুরো বেতন পাবেন।

তিনি বলেন, 'এসপি গ্রুপ তার সব শ্রমিকের মার্চ মাসের পুরো বেতন ইতোমধ্যেই দিয়েছে। শ্রমিকরা যেন ঈদের উৎসব আনন্দ নিয়ে উপযাপন করতে পারেন, এখন সে লক্ষ্যে তাদের ঈদ বোনাস প্রস্তুতের কাজ করছে মানবসম্পদ বিভাগ।'

এসপি গ্রুপের মতো, চট্টগ্রামের ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেড ও নারায়ণগঞ্জভিত্তিক ফতুল্লা অ্যাপারেলস লিমিটেডও জানিয়েছে, তারা শ্রমিকদের এপ্রিল মাসের পুরো বেতন এবং ঈদ বোনাস যথাসময়ে পরিশোধ করবে। উভয় কোম্পানিই করোনাভাইরাস পরিস্থিতি খুব তীক্ষ্ণভাবে নজরদারি করছে। পরিস্থিতি বুঝে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে কারখানা খোলার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

শুধুই মহত্ব দেখাতে এ কাজ ?

অনেক কারখানা যেখানে শ্রমিক ছাটাই করছে, কোনো কোনো কারখানা যেখানে শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন দেয়নি এখনো, সেখানে এই তিনটি কারখানা তাদের কোনো শ্রমিকই ছাটাই করেনি।

এ রকম সৌজন্যতা কী করে দেখাল ?

ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, 'শ্রমিকরা আমার পরিবারের সদস্যের মতোই। আমি আমার কর্মীদের বড় কোনো বিপদের মুখে ফেলে দেওয়ার কথা কোনোদিনই ভাবিনি।'

তিনি আরও বলেন, 'এই দুর্যোগে আমরা আমাদের কর্মীদের সত্যিকারের খেয়াল রাখছি।'

বাকি দুটি কারখানার কর্তৃপক্ষের কণ্ঠেও ছিল অভিন্ন সুর। এই তিন উৎপাদনকারীর ব্যবসা মূলত ইউরোপিয়ান ক্রেতাদের সঙ্গে।

বৈশ্বিক এই মহামারির কালে কারখানা মালিকরা প্রোডাকশন কমাতে এবং তাদের অর্ডার বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু ক্রেতাদের পক্ষ থেকে বড় ধরনের কোনো আঘাত তাদের ওপর আসেনি।

এসপি গ্রুপের দুটি বড় ক্লায়েন্ট- বেলজিয়ামের বায়ার 'বিএলসি' এবং সুইডিশ বায়ার 'কটন গ্রুপ'।

সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, 'বিএলসির সঙ্গে আমরা ২৬ বছর ধরে ব্যবসা করছি। তারা কোনো অর্ডার কিংবা শিপমেন্ট ক্যানসেল করেনি।' অবশ্য, চট্টগ্রাম ও ইউরোপের বন্দরগুলোতে তার প্রায় ২৫০ কোটি টাকা মূল্যের প্রোডাকশন আটকা পড়ে রয়েছে।

চট্টগ্রামের ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের কর্মীসংখ্যা ২ হাজার। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে পণ্য পাঠিয়ে বছরে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার উপার্জন করে এটি। প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ১ কোটি মার্কিন ডলার অর্থমূল্যের অর্ডার বাতিল করে হয়ে গেছে এবং ভবিষ্যতের অর্ডারগুলোও হয়ে গেছে স্থগিত।

কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, তাদের আনুষঙ্গিক খরচ ও ব্যাংক ঋণের বোঝা দিন দিন বাড়ছে।

অবশ্য তাদের মোট উৎপাদনের প্রায় ৬০ শতাংশের ক্রেতা 'ইনডেক্স'-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তিনি। মোস্তাফিজ জানান, ইনডেক্স কোনো অর্ডার বাতিল করেনি কিংবা কোনো পেমেন্ট স্থগিত রাখেনি।

নারায়ণগঞ্জভিত্তিক ফতুল্লা অ্যাপারেলস লিমিটেডের কর্মীসংখ্যা ১ হাজার ১০০ জন। ইউরোপে পোশাক রপ্তানি করে বছরে ১ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার উপার্জন করে প্রতিষ্ঠানটি।

নিট কম্পোজিটরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে শামীম এহসান জানান, বৈশ্বিক এই মহামারির কারণে উৎপাদন যথেষ্ট বিঘ্নিত হলেও তাদের কোনো বায়ারই কোনো অর্ডার বাতিল করেনি।

নিজেদের দুই বিশ্বস্ত ইউরোপিয়ান বায়ার 'হ্যাপি চিক' ও 'ফোপেম'-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। এক দশকেরও বেশিকাল ধরে এ দুটি বায়ারের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠানটির।

এহসান বলেন, 'এই বায়ারেরা এখনো আমার কারখানায় ছোট ছোট অর্ডার দিচ্ছে।'


বাঁ থেকে- সুবল চন্দ্র সাহা, মোস্তাফিজ উদ্দিন ও ফজলে শামীম এহসান

৩টি মন্তব্য:

Unknown বলেছেন...

মানবতা আজ আছে জলন্ত প্রমান।।

Unknown বলেছেন...

মানবতা আজ আছে জলন্ত প্রমান।।

Unknown বলেছেন...

Hazaro salam amon mohan baktiborgoder