বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়(বুটেক্স) এ পড়ার সুবিধা ও কারন
বর্তমানে বাংলাদেশে পাব্লিক ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটির সংখ্যা ৫টি। যেমনঃ১)বুয়েট,২)বুটেক্স,৩)কুয়েট,৪)রুয়েট,৫)চুয়েট.
এদের মাঝে বুটেক্স শুধু টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর জন্য দক্ষিন এশিয়ার ভিতর একমাত্র টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর জন্য পাব্লিক ইউনিভার্সিটি। ইন্ডিয়া সহ পাশের দেশগুলো এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর জন্য আলাদা ডিপার্টমেন্ট থাকলেও বুটেক্সই একমাত্র ভার্সিটি যা শুধুমাত্র টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর জন্য বি.এসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী প্রদান করে থাকে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ-সুবিধাগুলো নিয়েই আজকের পোস্ট মেইনলি। অনেকেই হয়ত ভাবতে পারেন, এত এত ইঞ্জিনিয়ারিং সাব্জেক্ট এর মাঝে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কেন? এখানে বলে রাখা ভাল, বুটেক্স এ প্রতি ব্যাচে যেই ছেলেরা ঢুকে তাদের বেশির ভাগই অনেক ভাল ভাল জায়গার ইঞ্জিনিয়ারিং+এপ্লাইড সাব্জেক্ট ছেড়েই এখানে ভর্তি হয়। বুয়েটের লাস্টের দিকের সাব্জেক্ট ছেড়ে বুটেক্সে ভর্তি হয় এমন শিক্ষার্থীও আছে। সবাই বুটেক্সে মেইনলি জব সিকিউরিটির কথা বিবেচনা করেই আসে। প্রতি বছর বুটেক্সের যেই ব্যাচগুলো বের হয়ে যায়, তাদের মাঝে বেশির ভাগ ছাত্র-ছাত্রীই পাশ করার আগেই জবে জয়েন করে। ফাইনাল এক্সামের রেজাল্টের আগে ৯০% শিক্ষার্থীর ক্যাম্পাস রিক্রুটমেন্টের মাধ্যমে জব হয়ে যায় বিভিন্ন দেশী ইন্ডাস্ট্রি এবং মাল্টিন্যাশনাল কম্পানীতে। বাকি ১০% শিক্ষার্থী Higher study বিসিএস, আইবিএ এর জন্য নিজের ইচ্ছার কারনে প্রিপারেশন নিতে থাকে। বাংলাদেশে আইবিএ বাদে অন্য কোন জায়গায় এত জব সিকিউরিটি নেই। কারন টেক্সটাইল হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেক্টর। ৮২% বৈদেশিক মুদ্রা প্রতি বছর আয় হয় এই সেক্টর থেকে যার বাজার মুল্য প্রায় ২৭ বিলিয়ন ডলার। এইদেশের Economy পুরোপুরি এই সেক্টরের উপর নির্ভরশীল, এই সেক্টর থেকে অর্জিত টাকা দিয়েই দেশের নানা উন্নয়নমুলক কাজগুলো সম্পাদিত হয়। Textile is the 'Silent Operator' of the economy of Bangladesh. দেশে প্রায় ৫০০০+ টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি আছে, যাদের মাঝে যদি ৫ জন করেও ইঞ্জিনিয়ার লাগে তাহলে দেশে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার দরকার প্রায় ২৫০০০+. কিন্তু বুটেক্সের প্রতি ব্যাচ থেকে মাত্র 600 জন ইঞ্জিনিয়ার বের হচ্ছে বর্তমানে। আর যেকোন ইন্ডাস্ট্রিরই ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রথম চয়েস থাকে বুটেক্স। সুতরাং এটা থেকেই সহজে বুঝা যায় বুটেক্সে পড়ার পর জব সিকিউরিটি কতটুকু। অন্যান্য যেকোন সেক্টর থেকে বার হবার পর যেখানে এক্সপেরিয়েন্স অর্জনের জন্যও ন্যুনতম স্যালারির একটা জবে ঢুকতে রীতিমতো মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয় সিভি নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে করতে সেখানে বুটেক্সের বেশির শিক্ষার্থীই ফাইনাল এক্সামের রেজাল্ট প্রকাশিত হবার আগেই কয়েক মাসের স্যালারি+প্রমোশন অর্জন করে ফেলে। আর এই সেক্টর থেকে ১০ বছর পর একজন মানুষ যেই জায়গায় পৌছাতে পারে সেটা অন্য খুব কম সেক্টরের মানুষই দেশে থেকে পৌছাতে পারে।
দেশের বেশির ভাগ টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিরই টপ পজিশনগুলোতে বুটেক্সিয়ানরাই অত্যন্ত সাফল্যের সাথে নিজেদের দায়িত্ব পালন করে। বুটেক্স থেকে প্রতি বছরই অনেক শিক্ষার্থী USA, UK, CANADA তে উচ্চশিক্ষার জন্য যায়। অনেকেই বিদেশে খুব ভাল ভাল জায়গায় নিয়োজিত আছেন যেমনঃ নাসায় অনেক বুটেক্সের ইঞ্জিনিয়ার আছেন, নোবেল বিজয়ী পার্টিকল গ্রাফিনের গবেষকের গবেষনা টিমে আছেন বুটেক্সের ছাত্র নাজমুল করিম, মাইক্রোসফটের ক্লাউড আর্কিটেক্ট এর মত জবে নিয়োজিত ছিলেন বুটেক্সের ছাত্র খন্দকারুল হক। ৩৭তম বিসিএস এ বুটেক্স থেকে ৬জন ক্যাডার চান্স পেয়েছেন যাদের মাঝে ফরেন ক্যাডারে তৃতীয় পজিশনও রয়েছে। এমন আরো অসংখ্য মেধাবীদের Alma mater হচ্ছে এই BUTEX. যদি কারোর নিজের ভবিষ্যতে খুব সুন্দর একটি লাইফস্টাইল পাবার চিন্তা-ভাবনা থাকে তাদের জন্য অন্যতম Best choice হতে পারে এই BUTEX. ঢাকার ভিতরে এই ছোট ক্যাম্পাসটি থেকে জীবনে কত দূর যাওয়া সম্ভব সেটা এইখানে ভর্তি হবার পরেই শুধু জানা যায়।
Credit:
BUTEX family😍😍😍😍
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন