পোশাক শিল্পের HR Admin দের জন্য কিছু পরামর্শ - Textile Lab | Textile Learning Blog
পোশাক শিল্পের HR Admin দের জন্য কিছু পরামর্শ


অনেকেই যোগাযোগ করেন যে স্যার আমি কিভাবে পদোন্নতি পাব? অনেক বছর ধরে জব করছি। এই সমস্যা / ওই সমস্যাঃ

এই সব বিষয় নিয়ে আমার নিজের কিছু কথা।

1. অনেকেই মনে করেন যে এইচ আর এডিমিন এ কাজ করা মানে হচেছ শুধু সেলারী শিট তৈরি করা। হাজিরা নিয়ন্ত্রন করা।আর কিছু নতুন কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া । মাঝে মাঝে গেইট পাসে সাইন করা।
মনে রাখবেন একজন দায়িত্ববান মানব সম্পদ কর্মীর দায়িত্ব ফ্যাক্টরির উপর মহল থেকে শুরু করে একেবারে নীচের মহল পর্যন্ত। এমনকি বাথরুমে পানির ট্যাপ নাই এটাও আপনার দায়িত্বের ভিতর পরবে।

2. আপনার ফ্যাক্টরি তে কত লাইন আছে / লে আউট কি / কোন কোন বায়ার এর কাজ চলছে । বর্তমানে কোন কোন লাইন কি চলছে এগুলো সম্মন্ধে সহজ ধারনা থাকবে। আর এগুলো বুঝার জন্য আপনাকে প্রোডাকশন বিশেষজ্ঞ হতে হবে না।

3. দুপুরে লানচ টাইমে দেখা যায় বেশির ভাগ সময়ই একজনই কলুর বলদ এর মত ডিউটি করছেন। এই বিষয় গুলো কিন্ত মালিক পক্ষ ঠিকই খোজ খবর রাখেন।

সে জন্য এই বিষয় টা তে সবাই উদারতার পরিচয় দিন। এক একজন এক এক দিন এই ভাবে অভ্যাস করুন। অনেকেই বলবেন লান্চ টাইম তো সবার জন্য তাহলে এটা করতে হবে। আপনাদের জন্য বলছি- নিয়ম অনুযায়ী ফ্যাক্টরির দরজা যতক্ষন খোলা থাকবে ততক্ষন একজন হলেও এইচ আর -এডমিন -কমপ্লায়েন্স বিভাগের কাউকে উপস্থিত থাকতে হবে।

4. আর একটি বিষয় হচেছ অনেক কর্মকতা রুম থেকে বের ই হতে চাননা। এটা আপনার জন্য একটি বড় মাইনাস পয়েন্ট। আপনি যদি এ ট্রেডে বড় হতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্্যই শ্রমিক বান্ধব হতে হবে। আবার এটা বলছিনা যে আপনি তাদের সাথে ঘুরে বেড়ান। নিজের অবস্থান ঠিক রেখে অনেক কিছুেই সম্ভব।

5. অনেক সময় দেখা যায় আপনার লাইনের লাইন চিফ / সুপারভাইজার / পি এম / এ পিএম এদের সাথেও অনেকের স্বাভাবিক যোগাযোগ নেই । এই যোগাযোগ নিয়মের ভিতর আপনাকে অনেক বাড়াতে হবে।

6. একজন শ্রমিক আসল আপনার কাছে কোন অভিযোগ নিয়ে , আপনি তার সাথে ব্যস্ততা দেখিয়ে পরে আসতে বললেন। অথচ আপনার কি ধারনা আছে এই যে সে 10 মিনিট সময় নষ্ট করলো এতে উৎপাদনের কত ক্ষতি হল। আপনি চাইলেই তার কাজ টা করে দিতে পারেন। না সে যার কাছে আসছে সে হয়ত ওই সময় রুমে ছিল না। এই সব বিষয় অনেক বেশি মনোযোগী হতে হবে।

7. প্রোডাকশন এর লোক জন সব সময়ই এইচ আর, এডমিন থেকে সুবিধা আদায় করার চেষ্টা করবে। যেমন একটা ওভেন ফ্যাক্টরির লে আউট এ নরমাল স্টাইল এ হয়ত 8 জন হেলপার দরকার। কিন্তু সে আপনাকে 12 জনের কথা বলল। আপনিও 12 জন নিয়োগ দিলেন্ । একবারও কি খবর নিছেন আসলেই কি 12 জন দরকার কি না্ ?

আমরা যে সব বিভাগে কাজ করছি আমাদের অনেক কিছু বুঝে শুনে করতে হবে। মালিক পক্ষ ও অতিরিক্ত ব্যয় থেকে বাচতে হবে আবার প্রোডাকশন এর লোকজন ও যাতে নুন্যতম চাহিদা পূরন করতে পারে তাহলেই আপনিই একজন সফল মানব সম্পদ কমী।

8. আর একটি বিষয় হচেছ পুরো ফ্যাক্টরি তে কোথায় কোন বিভাগ আছে , এই সব স্বাভাবিক ধারনা থাকতে হবে। অনেকে তো আবার মনে করেন আমার ডিউটি 2য় তলায় তো আমি কেন 4 তলায় যাব কেন। আপনি ডিউটি যেখানে খুশি সেখানে করুন কিন্তু পুরো ফ্যাক্টরি সম্মন্ধে সহজ ধারনা না থাকলে পদোন্নতি দিন দিন আপনার জন্য আকাশের চাঁদ হতে থাকবে।

9. এটি একটি জরুরী বিষয় । আপনার সহকর্মী বা আপনার কোন জুনিয়র কাজে কোন ভূল হইছে । খুবই স্বাভাবিক । ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখুন। সব বিষয় নিয়ে আপনি ম্যানেজার / জি এম এর কাছে অভিযোগ করবেন এটা কোন ভাল অভ্যাস না। আপনি সমস্যা সমাধান করুন। পরে কোন এক সময় বিষয়টি ম্যানেজার এর কাছে ধারনা দিলেন। এই অভ্যাস করুন। কারন যে কোন কাজের জন্য প্রথম এ আগে উপর মহল আগে ম্যানেজার কেই জবাবদিহি করবেন। তাই ম্যানেজার এর কাছে বিষয়গুলো জানা থাকলে উনি উনার মতে করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করবেন।

10. ফ্যাক্টরি তে সকল ছেলে শ্রমিক কে ভাই এবং মেয়ে দের কে আপু ডাকার অভ্যাস করুন । দেখবেন আপনার অবস্থান কোথা থেকে কোথায় চলে গেছে।

11. ফ্যাক্টরির ভিতর উচ্চস্বরে চিৎকার করা্ / শ্রমিকদের কে বকা ঝকা করা কোন ভাল অভ্যাস না। অনেক কঠিন কথাও শান্ত ভাবে বলা যায়।তাই ধীর স্থির হওয়ার জন্য চেষ্টা করুন।

12. অনুপস্থিতির সংখ্যা যদি বেশি হয়। সবার সংগে যোগাযোগ করার চেষ্টা করুন । হয়ত দেখবেন প্রোডাকশন এর কারো খারাপ ব্যব্হার এর কারনে আপনি একজন দক্ষ কমী হারাতে বসেছেন। এই বিষয় গুলো তে আপনাকে অনেক অনেক বেশি মনোযোগী হতে হবে।

13. অনেকেই মাঝে মাঝে বলেন যে আমার ম্যানেজার আমাকে একটু বেশি বকা ঝকা করেন্। আপনি হয়ত বুঝছেন না যে উনি আপনাকে দিয়ে বাকি সব কর্মকর্তাদের কে শাসন করছেন। এই বিষয় গুলোতে অনেক বুদ্ধিত্তার পরিচয় দিতে হবে।

14. জরুরী প্রয়োজনে যে কোন কাজে সাহায্্য করার মন মানসিকতা থাকতে হবে। যেমন আমাদের একবার হঠাৎ অডিট আসে, সেদিন দুই জন ক্নিনার একজন ছুটিতে ছিল । আর একজন 1 জন গেট পাস নিয়ে কিছু সময়ের জন্য বাই রে যায়। এই মূহুর্তে আমি আর আমার ওয়েলফেয়ার এবং 2 জন এডমিন পুরো ওয়াসরুম আমাদের দ্বারা যতটুকু সম্ভব পরিষ্কার করি।(ওই দিনটার কথা আমি কখনও ভূলবোনা ) এগুলো তখনই সম্ভব যখন আপনার সহকর্মী এবং অধীনস্তদের আপনার আন্তরিকতা দিয়ে তাদের মনে স্থান করে নিবেন। অনেকের তো আবার এগুলো তে ইগো হার্ট হয়। আপনার কাজের স্থানকে আপনার পরিবার ভাবুন অনেক কিছু সহজ হয়ে যাবে।

15। অনেকে মনে করেন যে আপনি কি করছেন যে তা উপর মহল কোন কিছু জানেনা । এট ভূল। আপনি সারাদিন কি করছেন তা ঠিকই আপনার উপর মহল এর কাছে রিপোর্ট আছে। তাই সজাগ হোন।

16। মাসের শেষে স্যালারী শীট / ওভার টাইম / এগুলো নিয়ে যে ব্যস্ততা দেখানা তা যদি 20 তারিখের পর থেকে ফরম্যাট গুলো রেডি করা শুরু করেন দেখবেন আপনার পরিশ্রম অনেক কমে যাবে। 30/31 তারিখ আসলে শুধু ফিগার গুলো ঠিক করে দিলেন। আপনারা তো আবার অপেক্ষা করেন যে এগুলো পে রোল বিভাগ এর দায়িত্ব। উনারা চাইলে তারপর সব নিয়ে হাজির হবেন। এই সব মন মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আমরা যারা এই সেক্টর এ জব করি আমাদের পরিবার এ সময় দেয়া খুবই ভাগ্যের ব্যাপার। তাই আপনার কাজের স্থান কে আপনার নিজের মনে করুন্। দেখবেন অনেক কিছু সহজ হয়ে গেছে। আপনার ব্্যক্তিগত কোন বড় সমস্যায় পড়ছেন। আপনার ম্যানেজার এর সাথে উনার অফ সময় অনুমতি নিয়ে শেয়ার করুন। দেখবেন অনেক ভাল কিছু পেতে পারেন। তাই সমস্্যা চেপে না রেখে শেয়ার করুন্। আপনাকে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে কোন কারনেই যেন আপনার স্বাভাবিক কাজের ব্যাঘাত না ঘটে।

17. একটা কোম্পানী কখনও চায়না বারবার একই যায়গায় লোক নিয়োগ দিতে। কারন এই বিভাগে একজন কর্মকর্তার অনেক টা সময় লেগে যায় কাজ বুঝতে বুঝতে । তাই শুধু আপনার ম্যানেজার বা উপর মহল কে দোষ দিবেন না। আপনি নিজেকে একজন দক্ষ কমী হিসেবে প্রমান করুন। দেখবেন আপনার পদোন্নতি কেউ ঠেকাতে পারবেন না।

18. সবচেয়ে বড় বিষয় হলো সবার প্রতি আন্তরিক হোন। গোটা ফ্যাক্টরিতে একটি ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তৈরি করুন। আপনার জন্য একটি সুন্দর এবং সৃজনশীল পদ অপেক্ষা করছে।

19. আরো একটি চোখে পড়ার মত বিষয় হচেছ আপনি এই বিভাগে কাজ করেন কিন্তু আপনি ইংরেজি বলতে পারেন না। কম্পিউটার চালাতে পারেন না। তাই কষ্ট হলেও এগুলো না জানলে সপ্তাহে একদিন হলেও ক্লাশ করে ধীরে ধীরে নিজেকে তৈরি করুন।

20. আর একটি বিষয় হচেছ অফিস টাইমিং । যারা এই বিভাগে কাজ করেন আপনি যদি এই বিষয়টা তে উদার হন। দেখবেন আপনি সবাইর কাছে সমাদৃত হবেন। অনেকে মনে করেন যে আমার ডিউটি আটটা থেকে আমি ঢুকবো 5 মিনিট আগে। কিন্তু ফ্্যাক্টরিতে ওয়ার্কার ঢুকা শুরু হয় 7.30 থেকে। তখন আপনাদের উপস্থিতি একান্তভাবে কাম্য। এটা নিজেদের ভিতর পালাবদল করে নিলে সমস্যা হবেনা। রাতে ফ্্যাক্টরি ওয়ার্কার ছুটি হওয়া মানেই আপনি ও বের হয়ে যাবেন তা না। আপনার দায়িত্ব হচেছ পুরো ফ্যাক্টরি ঠিক পর্যবেক্ষন করে সব কিছু ঠিক আছে কি না। লাইট / ফ্যান সব অফ করলো কিনা / এসি চলছে কিনা । সব কিছু যদি সিকিউরিটির উপর ভরসা করেন তাহলে বিপদে পড়তে সময় লাগবে না।



বি : দ্র : উপরে যা লিখেছি আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে লেখা। কাউকে আঘাত বা ছোট করার জন্য এই লেখা না । তারপরেও যদি কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

Nasir Mahmud Parvez
HR Professional &
Entrepreneur

পোশাক শিল্পের HR Admin দের জন্য কিছু পরামর্শ

পোশাক শিল্পের HR Admin দের জন্য কিছু পরামর্শ


অনেকেই যোগাযোগ করেন যে স্যার আমি কিভাবে পদোন্নতি পাব? অনেক বছর ধরে জব করছি। এই সমস্যা / ওই সমস্যাঃ

এই সব বিষয় নিয়ে আমার নিজের কিছু কথা।

1. অনেকেই মনে করেন যে এইচ আর এডিমিন এ কাজ করা মানে হচেছ শুধু সেলারী শিট তৈরি করা। হাজিরা নিয়ন্ত্রন করা।আর কিছু নতুন কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া । মাঝে মাঝে গেইট পাসে সাইন করা।
মনে রাখবেন একজন দায়িত্ববান মানব সম্পদ কর্মীর দায়িত্ব ফ্যাক্টরির উপর মহল থেকে শুরু করে একেবারে নীচের মহল পর্যন্ত। এমনকি বাথরুমে পানির ট্যাপ নাই এটাও আপনার দায়িত্বের ভিতর পরবে।

2. আপনার ফ্যাক্টরি তে কত লাইন আছে / লে আউট কি / কোন কোন বায়ার এর কাজ চলছে । বর্তমানে কোন কোন লাইন কি চলছে এগুলো সম্মন্ধে সহজ ধারনা থাকবে। আর এগুলো বুঝার জন্য আপনাকে প্রোডাকশন বিশেষজ্ঞ হতে হবে না।

3. দুপুরে লানচ টাইমে দেখা যায় বেশির ভাগ সময়ই একজনই কলুর বলদ এর মত ডিউটি করছেন। এই বিষয় গুলো কিন্ত মালিক পক্ষ ঠিকই খোজ খবর রাখেন।

সে জন্য এই বিষয় টা তে সবাই উদারতার পরিচয় দিন। এক একজন এক এক দিন এই ভাবে অভ্যাস করুন। অনেকেই বলবেন লান্চ টাইম তো সবার জন্য তাহলে এটা করতে হবে। আপনাদের জন্য বলছি- নিয়ম অনুযায়ী ফ্যাক্টরির দরজা যতক্ষন খোলা থাকবে ততক্ষন একজন হলেও এইচ আর -এডমিন -কমপ্লায়েন্স বিভাগের কাউকে উপস্থিত থাকতে হবে।

4. আর একটি বিষয় হচেছ অনেক কর্মকতা রুম থেকে বের ই হতে চাননা। এটা আপনার জন্য একটি বড় মাইনাস পয়েন্ট। আপনি যদি এ ট্রেডে বড় হতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্্যই শ্রমিক বান্ধব হতে হবে। আবার এটা বলছিনা যে আপনি তাদের সাথে ঘুরে বেড়ান। নিজের অবস্থান ঠিক রেখে অনেক কিছুেই সম্ভব।

5. অনেক সময় দেখা যায় আপনার লাইনের লাইন চিফ / সুপারভাইজার / পি এম / এ পিএম এদের সাথেও অনেকের স্বাভাবিক যোগাযোগ নেই । এই যোগাযোগ নিয়মের ভিতর আপনাকে অনেক বাড়াতে হবে।

6. একজন শ্রমিক আসল আপনার কাছে কোন অভিযোগ নিয়ে , আপনি তার সাথে ব্যস্ততা দেখিয়ে পরে আসতে বললেন। অথচ আপনার কি ধারনা আছে এই যে সে 10 মিনিট সময় নষ্ট করলো এতে উৎপাদনের কত ক্ষতি হল। আপনি চাইলেই তার কাজ টা করে দিতে পারেন। না সে যার কাছে আসছে সে হয়ত ওই সময় রুমে ছিল না। এই সব বিষয় অনেক বেশি মনোযোগী হতে হবে।

7. প্রোডাকশন এর লোক জন সব সময়ই এইচ আর, এডমিন থেকে সুবিধা আদায় করার চেষ্টা করবে। যেমন একটা ওভেন ফ্যাক্টরির লে আউট এ নরমাল স্টাইল এ হয়ত 8 জন হেলপার দরকার। কিন্তু সে আপনাকে 12 জনের কথা বলল। আপনিও 12 জন নিয়োগ দিলেন্ । একবারও কি খবর নিছেন আসলেই কি 12 জন দরকার কি না্ ?

আমরা যে সব বিভাগে কাজ করছি আমাদের অনেক কিছু বুঝে শুনে করতে হবে। মালিক পক্ষ ও অতিরিক্ত ব্যয় থেকে বাচতে হবে আবার প্রোডাকশন এর লোকজন ও যাতে নুন্যতম চাহিদা পূরন করতে পারে তাহলেই আপনিই একজন সফল মানব সম্পদ কমী।

8. আর একটি বিষয় হচেছ পুরো ফ্যাক্টরি তে কোথায় কোন বিভাগ আছে , এই সব স্বাভাবিক ধারনা থাকতে হবে। অনেকে তো আবার মনে করেন আমার ডিউটি 2য় তলায় তো আমি কেন 4 তলায় যাব কেন। আপনি ডিউটি যেখানে খুশি সেখানে করুন কিন্তু পুরো ফ্যাক্টরি সম্মন্ধে সহজ ধারনা না থাকলে পদোন্নতি দিন দিন আপনার জন্য আকাশের চাঁদ হতে থাকবে।

9. এটি একটি জরুরী বিষয় । আপনার সহকর্মী বা আপনার কোন জুনিয়র কাজে কোন ভূল হইছে । খুবই স্বাভাবিক । ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখুন। সব বিষয় নিয়ে আপনি ম্যানেজার / জি এম এর কাছে অভিযোগ করবেন এটা কোন ভাল অভ্যাস না। আপনি সমস্যা সমাধান করুন। পরে কোন এক সময় বিষয়টি ম্যানেজার এর কাছে ধারনা দিলেন। এই অভ্যাস করুন। কারন যে কোন কাজের জন্য প্রথম এ আগে উপর মহল আগে ম্যানেজার কেই জবাবদিহি করবেন। তাই ম্যানেজার এর কাছে বিষয়গুলো জানা থাকলে উনি উনার মতে করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করবেন।

10. ফ্যাক্টরি তে সকল ছেলে শ্রমিক কে ভাই এবং মেয়ে দের কে আপু ডাকার অভ্যাস করুন । দেখবেন আপনার অবস্থান কোথা থেকে কোথায় চলে গেছে।

11. ফ্যাক্টরির ভিতর উচ্চস্বরে চিৎকার করা্ / শ্রমিকদের কে বকা ঝকা করা কোন ভাল অভ্যাস না। অনেক কঠিন কথাও শান্ত ভাবে বলা যায়।তাই ধীর স্থির হওয়ার জন্য চেষ্টা করুন।

12. অনুপস্থিতির সংখ্যা যদি বেশি হয়। সবার সংগে যোগাযোগ করার চেষ্টা করুন । হয়ত দেখবেন প্রোডাকশন এর কারো খারাপ ব্যব্হার এর কারনে আপনি একজন দক্ষ কমী হারাতে বসেছেন। এই বিষয় গুলো তে আপনাকে অনেক অনেক বেশি মনোযোগী হতে হবে।

13. অনেকেই মাঝে মাঝে বলেন যে আমার ম্যানেজার আমাকে একটু বেশি বকা ঝকা করেন্। আপনি হয়ত বুঝছেন না যে উনি আপনাকে দিয়ে বাকি সব কর্মকর্তাদের কে শাসন করছেন। এই বিষয় গুলোতে অনেক বুদ্ধিত্তার পরিচয় দিতে হবে।

14. জরুরী প্রয়োজনে যে কোন কাজে সাহায্্য করার মন মানসিকতা থাকতে হবে। যেমন আমাদের একবার হঠাৎ অডিট আসে, সেদিন দুই জন ক্নিনার একজন ছুটিতে ছিল । আর একজন 1 জন গেট পাস নিয়ে কিছু সময়ের জন্য বাই রে যায়। এই মূহুর্তে আমি আর আমার ওয়েলফেয়ার এবং 2 জন এডমিন পুরো ওয়াসরুম আমাদের দ্বারা যতটুকু সম্ভব পরিষ্কার করি।(ওই দিনটার কথা আমি কখনও ভূলবোনা ) এগুলো তখনই সম্ভব যখন আপনার সহকর্মী এবং অধীনস্তদের আপনার আন্তরিকতা দিয়ে তাদের মনে স্থান করে নিবেন। অনেকের তো আবার এগুলো তে ইগো হার্ট হয়। আপনার কাজের স্থানকে আপনার পরিবার ভাবুন অনেক কিছু সহজ হয়ে যাবে।

15। অনেকে মনে করেন যে আপনি কি করছেন যে তা উপর মহল কোন কিছু জানেনা । এট ভূল। আপনি সারাদিন কি করছেন তা ঠিকই আপনার উপর মহল এর কাছে রিপোর্ট আছে। তাই সজাগ হোন।

16। মাসের শেষে স্যালারী শীট / ওভার টাইম / এগুলো নিয়ে যে ব্যস্ততা দেখানা তা যদি 20 তারিখের পর থেকে ফরম্যাট গুলো রেডি করা শুরু করেন দেখবেন আপনার পরিশ্রম অনেক কমে যাবে। 30/31 তারিখ আসলে শুধু ফিগার গুলো ঠিক করে দিলেন। আপনারা তো আবার অপেক্ষা করেন যে এগুলো পে রোল বিভাগ এর দায়িত্ব। উনারা চাইলে তারপর সব নিয়ে হাজির হবেন। এই সব মন মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আমরা যারা এই সেক্টর এ জব করি আমাদের পরিবার এ সময় দেয়া খুবই ভাগ্যের ব্যাপার। তাই আপনার কাজের স্থান কে আপনার নিজের মনে করুন্। দেখবেন অনেক কিছু সহজ হয়ে গেছে। আপনার ব্্যক্তিগত কোন বড় সমস্যায় পড়ছেন। আপনার ম্যানেজার এর সাথে উনার অফ সময় অনুমতি নিয়ে শেয়ার করুন। দেখবেন অনেক ভাল কিছু পেতে পারেন। তাই সমস্্যা চেপে না রেখে শেয়ার করুন্। আপনাকে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে কোন কারনেই যেন আপনার স্বাভাবিক কাজের ব্যাঘাত না ঘটে।

17. একটা কোম্পানী কখনও চায়না বারবার একই যায়গায় লোক নিয়োগ দিতে। কারন এই বিভাগে একজন কর্মকর্তার অনেক টা সময় লেগে যায় কাজ বুঝতে বুঝতে । তাই শুধু আপনার ম্যানেজার বা উপর মহল কে দোষ দিবেন না। আপনি নিজেকে একজন দক্ষ কমী হিসেবে প্রমান করুন। দেখবেন আপনার পদোন্নতি কেউ ঠেকাতে পারবেন না।

18. সবচেয়ে বড় বিষয় হলো সবার প্রতি আন্তরিক হোন। গোটা ফ্যাক্টরিতে একটি ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তৈরি করুন। আপনার জন্য একটি সুন্দর এবং সৃজনশীল পদ অপেক্ষা করছে।

19. আরো একটি চোখে পড়ার মত বিষয় হচেছ আপনি এই বিভাগে কাজ করেন কিন্তু আপনি ইংরেজি বলতে পারেন না। কম্পিউটার চালাতে পারেন না। তাই কষ্ট হলেও এগুলো না জানলে সপ্তাহে একদিন হলেও ক্লাশ করে ধীরে ধীরে নিজেকে তৈরি করুন।

20. আর একটি বিষয় হচেছ অফিস টাইমিং । যারা এই বিভাগে কাজ করেন আপনি যদি এই বিষয়টা তে উদার হন। দেখবেন আপনি সবাইর কাছে সমাদৃত হবেন। অনেকে মনে করেন যে আমার ডিউটি আটটা থেকে আমি ঢুকবো 5 মিনিট আগে। কিন্তু ফ্্যাক্টরিতে ওয়ার্কার ঢুকা শুরু হয় 7.30 থেকে। তখন আপনাদের উপস্থিতি একান্তভাবে কাম্য। এটা নিজেদের ভিতর পালাবদল করে নিলে সমস্যা হবেনা। রাতে ফ্্যাক্টরি ওয়ার্কার ছুটি হওয়া মানেই আপনি ও বের হয়ে যাবেন তা না। আপনার দায়িত্ব হচেছ পুরো ফ্যাক্টরি ঠিক পর্যবেক্ষন করে সব কিছু ঠিক আছে কি না। লাইট / ফ্যান সব অফ করলো কিনা / এসি চলছে কিনা । সব কিছু যদি সিকিউরিটির উপর ভরসা করেন তাহলে বিপদে পড়তে সময় লাগবে না।



বি : দ্র : উপরে যা লিখেছি আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে লেখা। কাউকে আঘাত বা ছোট করার জন্য এই লেখা না । তারপরেও যদি কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

Nasir Mahmud Parvez
HR Professional &
Entrepreneur

1 টি মন্তব্য:

নামহীন বলেছেন...

ভালো লিখেছেন।ধন্যবাদ