কার্বন ফাইবার | Carbon Fibre - Textile Lab | Textile Learning Blog

কার্বন ফাইবার | Carbon Fibre

কার্বন ফাইবার

১৯৬৩ সালে ব্রিটিশ রয়্যাল এয়ারক্রাফট এ কর্মরত একদল বিজ্ঞানী ডাব্লিউ ওয়েল,জনসন এবং এল এন ফিলিপ এক বিশেষ ধরনের ফাইবার আবিষ্কার করেন যার কয়েকটি  বিশেষ ধর্মের মধ্যে যেমন অত্যন্ত শক্তিশালী, হালকা, উচ্চ তাপ ও চাপ সহ্যক্ষম, প্রসারনশীল ও অন্যান্য পদার্থের সাথে নিষ্ক্রিয় । একে কার্বন ফাইবা র বলা হয়। ১৯৬৮ সালে যার বানিজ্যিকিকরণ শুরু হয় ।

কার্বনের সাথে অন্যান্য পদার্থের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে প্লাস্টিক রেজিনের সাথে একত্রিত করা হয় একে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ।এই নতুন ধরনের যৌগিক পদার্থকেই কার্বন ফাইবার বলা হয় ।

বর্তমানে ব্যাবহৃত বেশিরভাগ ফাইবারের উৎস অর্গানিক পলিমার,  সেক্ষেত্রে পলিমারের আনুবিক গঠনের মুল কাঠামো কার্বন কেন্দ্রিক ।  কার্বনের ক্যাটইনেসশান ধর্মের জন্য কার্বন হাইড্রোজেন ,অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন সাথে যুক্ত থাকে ।

এরূপ অর্গানিক ফাইবার যেমন রেয়ন কে তাপীয়বিশ্লেষণ করলে পার্শ্ববর্তী অণুগুলো কার্বন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে। তবে যেহেতু কার্বনের বন্ধন শক্তি অনেক বেশি তাই কার্বন পরমাণু গুলোর পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ার কথা নয় । কিন্তু এসব অর্গানিক ফাইবারের বেশিরভাগ সাধারণত স্ফটিকাকারের হয়ে থাকে এবং এদের মধ্যকার কার্বন অল্পবিস্তর বিশৃঙ্খলভাভবে বিন্যস্ত থাকে যা তন্তুময় অবস্থায় একে দুর্বল করে। অধিকতর দৃঢ়তার জন্য এমনভাবে ফাইবার তৈরি করতে হবে যেখানে কার্বন সুবিন্ন্যস্ত থাকবে এবং  স্ফটিক অনুর আধিক্য থাকতে হবে ।

কার্বন ফাইবার প্রস্তুতির শুরুতে সাধারনত এক্রিলিক ফাইবার কে বেছে নেয়া হয় যার মুল কাঠামোতে কার্বনের সাথে হাইড্রোজেন ও সায়ানাইড গ্রুপ যুক্ত থাকে । প্রথমে অক্সিজেনের উপস্থিতিতে এই এক্রিলিক ফাইবার কে ২০০-৩০০ ডিগ্রি সেন্তিগ্রেট তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করা হয় । পরের ধাপে এই ফাইবারকে বদ্ধ পরিবেশে ১০০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট তাপমাত্রায় আবারো উত্তপ্ত করা হয় ।যাতে হাইড্রজেন ও নাইট্রজেন অণুগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে এবং কার্বন অনু ষড়ভুজাকৃতি ধারন করবে ।

পুনরায় বদ্ধ পরিবেশে ৩০০০ ডিগ্রি সেন্তিগ্রেটে উত্তপ্ত করলে কার্বন অনুর গঠন সুগঠিত হবে এবং গ্রাফাইটের মত স্ফটিকে পরিনত হবে । এই স্ফটিকের লেয়ার গুলো পরস্পরের সাথে সমান্তরালে অবস্থান করবে এবং ফাইবারের অক্ষের দিকের সাথে খুব সুন্দর ভাবে বিন্যস্ত থাকবে ।এই সুবিন্যস্ততাই দৃঢ় ফাইবার গঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন দিক । তাই ফাইবার অক্ষের সাথে এই বিন্যাসের তারতম্য এনে ভিন্নরকমের দৃঢ়তাসম্পন্ন ফাইবার পাওয়া সম্ভব ।

কার্বন ফাইবার নির্মিত কার সাধারণ কারের তুলনায় হালকা সাধারণ কারের তুলনায় হালকা
কার্বন কালো বর্ণের মসৃণ ফাইবার ।


প্রস্থ বরাবর একে ভাঙতে প্রতি বর্গ মিটারে প্রায় ২০০০ নিউটন বল প্রয়োগ করতে হবে ।

এর ঘনত্ব প্রতি বর্গসেন্টিমিটারে ১.৫৭ গ্রাম ,স্টীল ও অ্যালুমিয়ামের তুলনায় অনেকটাই হালকা ।
রোদে বা স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে বা যেকোন মাইক্রো অর্গানিজমের মধ্যে অনায়সে বছরের পর বছর এটি অপরিবর্তিত অবস্থায় থাকতে পারে ।



স্টিফনেস প্রতি বর্গ মিটারে ৩৫০০০০ থেকে ৪১০০০০ নিউটন যা ষ্টীলের চার গুন ।


উৎপাদন ব্যায় ষ্টীলের কাছাকাছি হওয়ায় এই ফাইবারকে  ষ্টীল ও ফাইবার গ্লাসের পরিবর্তে বাবহার হচ্ছে। উড়োজাহাজের শক্ত দেহ  ও ইঞ্জিনে ,কার নির্মাণ শিল্পে ,গলফ দন্দ,বরশির হাতল,নৌকা ,সাবমেরিনে তৈরিতেও ব্যবহৃত হচ্ছে ।


কোন মন্তব্য নেই: