বেগমঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, নোয়াখালী
নীতিবাক্য - টেক্সটাইল অর্থ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি
ধরন - সরকারি কলেজ
স্থাপিত - ২০০৬
বৃত্তিদান - বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়
অধ্যক্ষ - ইঞ্জিনিয়ার মোবু নাসের মো: শামিম
প্রশাসনিক কর্মকর্তা - ৪০
শিক্ষার্থী - ৩২০
স্নাতক - ৩২০
অবস্থান - নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
ওয়েবসাইট - https://tecn.ac.bd/
ক্যাম্পাস রিভিউ
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ,
বেগমগঞ্জ, নোয়াখালী।।।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বস্ত্রশিল্পের ভূমিকা অপরিহার্য। দেশের অর্থনীতির প্রায় সিংহভাগ আসে রেডিমেইড গার্মেন্টস সেক্টর থেকে। তাই সরকার বস্ত্রশিল্পের উপর নজর দিয়েছেন। তাই বর্তমানে বস্ত্রপ্রকৌশলী/টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদাও বাড়ছে ব্যাপক হারে।
আর এই টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়টি নিয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে বুটেক্স, কুয়েট, এমবিএসটিইউ এবং বুটেক্স অধিভুক্ত ৬টি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। এছাড়াও বেসরকারিভাবে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ থাকলেও সরকারিভাবে কেবল বুটেক্স, কুয়েট, এমবিএসটিইউ এবং ৬টি টেক্সটাইল কলেজগুলোতেই অধ্যয়নের সুযোগ আছে।
এই ৬টি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ-ই পারে ১জন শিক্ষানবিসের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে যার মধ্যে এক অনন্য স্থান দখল করে আছে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, নোয়াখালী(TECN).
নোয়াখালি জেলার বেগমগঞ্জ থানার চৌরাস্তা মোড়ে অবস্থিত আমাদের ক্যাম্পাস। এই ক্যাম্পাসটির যাত্রা শুরু হয় ১৯১৮ সালে। ধীরে ধীরে ডিপ্লোমা কোর্স চালু হয় এবং ২০০৭ সালে বি এস সি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের শুভ সূচনা ঘটে। ক্যাম্পাসের সকল কার্যক্রম বুটেক্সের আওতাধীন এবং সার্টিফিকেটসও বুটেক্স প্রদত্ত। বর্তমানে ৫টি ব্যাচ এখানে অধ্যয়নরত আছে এবং ৬টি ব্যাচ বের হয়েছে।
ক্যাম্পাসে ছাত্রদের জন্য ১টি হল, ছাত্রীদের জন্য ১টি হল এবং আরো ১টি হল প্রস্তাবিত অবস্থায় রয়েছে। সবুজে ঘেরা এই ক্যাম্পাসের চারপাশে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দয্যের সমারোহ। রয়েছেন অভিঞ্জ শিক্ষকমন্ডলী। এই ক্যাম্পাসে রয়েছে হাতে কলমে শেখার যথেষ্ট সুব্যবস্থা। রয়েছে ডাইয়িং ল্যাব, জুট স্পিন শেড, কটন স্পিনিং শেড, ফ্যাব্রিক শেড, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ, কম্পিউটার ল্যাবসহ আরো নানা ধরনের ল্যাব ফ্যাসিলিটিস।
এই ক্যাম্পাসে আরো আছে সুসজ্জিত গ্রন্থাগার যেখানে রয়েছে টেক্সটাইল বিষয়ক নানান রকম বই, সায়েন্স ফিকশন, ধর্মীয় ও শিক্ষণীয় নানা ধরনের গ্রন্থ। এছাড়াও লাইব্রেরিতে রয়েছে দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক নানা ধরনের পত্র পত্রিকা পড়ার সুবিধা।
ক্যাম্পাসে রয়েছে একটি খেলার মাঠ যা শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার চাহিদা পূরণ করে। এছাড়া ক্যাম্পাসের সকল শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছে ভ্রাতৃত্ববোধের এক অপূর্ব নিদর্শন।।।
এখানে আছে ক্লাব ফেসিলিটিস।।
নিজেকে বিকশিত করার সব রকম সুযোগ।। যেমন সাংস্কৃতিক সংগঠন অক্ষর, ব্লাড ডোনেটিং ক্লাব ও সেবামূলক সংগঠন মৃত্যুঞ্জয়, ক্যারিয়ার ক্লাব, সায়েন্স ক্লাব, আর্টস & ফটোগ্রাফিক সোসাইটি, ডিবেটিং সোসাইটি, কম্পিউটার ক্লাবসহ আরো অনেক প্রতিষ্ঠান যা একজন ছাত্রকে করে তুলতে পারে যোগ্যতম।।
ঢাকা, চট্টগ্রামসহ যেকোনো স্থানের সাথেই রয়েছে যোগাযোগের সুব্যবস্থা। ঢাকা/চট্টগ্রাম থেকে নোয়াখালীগামী যেকোনো বাসে উঠে চৌরাস্তা নেমে দক্ষিণে ২০০ গজ হাটলেই দেখা মিলবে ক্যাম্পাসটির।।
ক্যাম্পাসের বি এস সি কোর্সে ৪ টি বিভাগ চালু রয়েছে। প্রতি বিভাগে ৩০ জন করে মোট ১২০ জন অধ্যয়ন করার সুযোগ রয়েছে। বিভাগ ৪টি হল :-
১; ওয়েট প্রসেসিং ইঞ্জিনিয়ারিং
২; এপ্যারেল ইঞ্জিনিয়ারিং
৩; ইয়ার্ণ ইঞ্জিনিয়ারিং
৪; ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং
আবেদনের যোগ্যতা:
পদার্থ+রয়ায়ন+গণিত+ইংরেজী তে ১৫ থাকতে হবে
সেকেন্ড টাইমাররা অংশগ্রহণ করতে পারবে
আবেদনের সময়সীমা: ১ লা অক্টোবর থেকে ৩০ নভেম্বর
পরীক্ষার তারিখ: ৮-ই ডিসেম্বর (সকাল ১০টা থেকে ১১টা ২০)
*ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না
মানবন্টন:
পরীক্ষা হয় ২০০ নম্বরে(১০০টা এম.সি.কিউ,প্রতিটাতে ২ নম্বর করে, প্রতিটা ভুল উত্তরের জন্য ০.৫০ নম্বর কাটা যাবে। )
পদার্থ-৩০
রসায়ন-৩০
গণিত-৩০
ইংরেজী-১০
জিপিএ-এর উপর ১০০
মোট:- ৩০০ নম্বর
প্রশ্ন করা হবে বুটেক্স থেকে। প্রশ্ন খুববেশি সহজও হয় না, আবার খুববেশি কঠিনও না। তাই ভালোভাবে প্রস্তুতি নিলে ভর্তিপরীক্ষায় সাফল্য অবধারিত। প্রশ্নে গাণিতিক সমস্যা বেশি থাকে। সেক্ষেত্রে বুটেক্স প্রশ্নব্যাঙ্ক, টেক্সটাইল বিচিত্রা এবং পূর্ববর্তী বছরের প্রশ্ন দেখলে ধারণা পাওয়া যায়।।
আসন সংখাঃ
1.Wet Processing Engineering(30)
2. Apparel Engineering(30)
3.Fabric Engineering(30)
4.Yarn Engineering(30)
ক্যাম্পাস পরিচিতিঃ
এখানে সকল ডিপার্টমেন্টের রয়েছে প্রসিদ্ধ ল্যাব।যে সকল ভবন রয়েছেঃ
১.জুট স্পিনিং শেড।
২.কটন স্পিনিং শেড।
৩.উইভিং শেড।
৪.প্রশাসনিক ভবন।
৫.অফিসার্স ডর্মেটরি।
৬.গেস্ট হাউস।
৭.স্টাফ কোয়ার্টার।
৮.ছাত্রী হল।
৯.ছাত্র হল।
১০.অডিটোরিয়াম।
১১.মসজিদ।
১২.লাইব্রেরী।
১৩.ওয়েট ল্যাব।
১৪.এপারেল ল্যাব।
১৫.কম্পিউটার ল্যাব।
১৬.ম্যাকানিকাল মেশিনারিজ ল্যাব।
যেটির কথা বিশেষভাবে না বললেই নয়, আমাদের ক্যাম্পাসে সম্প্রতি ৭ তলা একটি নতুন ভবন নির্মিত হয়েছে যার ৪টি ফ্লোরে প্রতিটিতে রয়েছে ৪টি করে ক্লাসরুম।
এছাড়াও আমাদের রয়েছে সুদক্ষ শিক্ষক এবং ল্যাব ডেমোন্সট্রেটর।আমােদর টেক্সটাইল শুধু পড়ালেখা বা রেজাল্ট নয়,সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক কার্যক্রমের দিক থেকেও এগিয়ে আছে।বাংলাদেশের গুটিকয়েক ভার্সিটির রয়েছে নিজস্ব রেডিও,যার মধ্যে আমাদের ক্যাম্পাস একটি।এছাড়া রয়েছে সাংস্কৃতিক, সামাজিক,ক্যারিয়ার বিষয়ক এবং অন্যান্য ক্লাব,যেগুলোর কার্যক্রমে সবসময় মুখর থাকে ক্যাম্পাস।
এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সংগঠন হলো:
১.মৃত্যুঞ্জয়:মানবসেবা ও রক্তদানের ক্ষেত্রে নিঃস্বার্থভাবে নিয়োজিত সংগঠন।
২.অক্ষর:সাংস্কৃতিক সংগঠন।
৩.ক্যারিয়ার ক্লাব।
৪.আর্ট এন্ড ফটোগ্রাফি সোসাইটি।
৫.ডিবেট ক্লাব।
৬.সায়েন্স ক্লাব।
৭.কম্পিউটার ক্লাব।
তাছাড়া ক্রীড়া প্রেমীদের জন্য এখানে রয়েছে অনেক সুযোগ।
মূলত নিজের সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার ক্ষেত্রে আমাদের ক্যাম্পাস উপযুক্ত স্থান।
পরিশেষে এ কথায় বলতে চাই, ৪বছরের ভার্সিটি লাইফকে রঙিন করার জন্য যথেষ্ট উপাদান আছে আমাদের ক্যাম্পাসে।নোয়াখালী টেক্সটাইলের রঙিন ক্যাম্পাসে সবাইকে স্বাগতম।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন