জিন্স এর ইতিকথা | History Of Jeans - Textile Lab | Textile Learning Blog
প্রশ্ন :-
সারা দুনিয়াতে 'জিন্স' একটি অত্যন্ত পপুলার পোশাকI 'জিন্স' এর ইতিহাস কি?
আপনার দৃষ্টিতে এটি কি শুধুই ফ্যাশন, নাকি এটির ব্যবহারিক সুবিধা থেকেই এর জনপ্রিয়তা?

উত্তর :-
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অষ্টাদশ শতাব্দীতেজিন্স বা ডেনিম কাপড়ের প্রথম বানিজ্যিক উত্পাদন শুরু হয়. ডেনিম এর কাছাকাছি ধরনের একটি কাপড় তার আগে ইউরপে প্রচলিত ছিল. স্লেভ শ্রমের
ফলে আমেরিকায় তখন প্রচুর তুলা উত্পাদন হত আর আমেরিকার ইউরোপিয়ান ইমিগ্র্যান্ট পোশাকশিল্পের মালিকরা সম্পূর্ণ কটন ব্যাবহার করে টেকসই একটি কাপড়ের কথা ভেবে জিন্স এর উত্পাদন শুরু করে. আমরা অনেকেই জানি না শুরুর দিকের জিন্স এর সাথে আমাদের দেশের নীল চাষের গভীর সম্পর্ক আছে. ভারত থেকে আমদানি করা নীল দিয়ে এই কাপড়
ইন্ডিগো রং করা হত. ১৮ শতকে ক্যালিফর্নিয়া গোল্ড রাশ এর সময় খনি শ্রমিক রা শক্তিশালী এই কাপড় ব্যাপক হারে বেবহার শুরু করে এবং সহজে বিছিন্ন করা যায় না এমন কাপড় ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে. এই জনপ্রিয়তার সাথে তাল মিলিয়ে লেভি স্ট্রাউস নাম এ একজন জিন্স এর ফ্যাশন নিয়ে চিন্তা শুরু করেন এবং জিন্স কে কাজের পাশাপাশি ফ্যাশন এ রূপান্তর করেন. লেভি স্ট্রাউস কোম্পানি এখনো বর্তমান এবং এখন পর্যন্ত একটি
জনপ্রিয় জিন্স.

ডেনিম শব্দটি প্রথম এসেছে একটি কাপরের নাম হিসেবে এবং এই কাপড় সর্ব প্রথম তৈরি হয় ফ্রান্সের নেইমস(Nimes) শহরে আর এটা তৈরি করেছিল এন্ডরে (Andre) নামের একটি পরিবার। তাদের তৈরি করা কাপরের প্রকৃত নাম ছিল " সারজি ডে নিমেস"(serge de Nîmes) কিন্তু খুবই তাড়াতাড়ি এই নাম সংক্ষিপ্ত হয়ে " ডেনিম " ( denim) নামে পরিচিতি লাভ করে।
ডেনিম কাপড় বলতে সাধারন ভাবে নিল রঙয়ের কাপড়কেই বুঝায় যা ইন্ডিগো ডাইংয়ের মাধ্যমে নীল রঙে পরিবর্তন হয়। তবে বর্তমানে জিন্সের ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও ব্যবহারের বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বিভিন্ন কালারে হয়ে থাকে,যদিও জিন্স বলতে বুঝায় একটি আলাদা ,হালকা এবং সুতির কাপড়কে। সমসাময়িক কালে ব্যবহৃত জিন্স শব্দটির উৎপত্তি ফ্রেঞ্চ শব্দ Genoa, Italy (Gênes) যেখানে সর্ব প্রথম জিন্সের প্যান্ট তৈরি হয়েছিল।

ডেনিম বা জিন্স কাপড় তৈরিতে দুই ধরনের সুতা ব্যবহার হয়ে থাকে। সে সুতা লম্বাভাবে ব্যবহার করা হয় তাকে বলা হয় ওয়ারপিং(warping yarn) আর যে সুতা আড়াআড়ি ব্যবহার হয় তাকে বলা হয় ওয়েফট (weft yarn)।একটি ডেনিম ফ্যাক্টরিতে দুইটি ফ্লোর থাকে যথা ডাইয়িং ও উইভিং।

প্রথমে সুতা ওয়ারপিং করে বীম তৈরি করে ডাইয়িং এবং সাইজিং মেশিনের উপযোগী করে তোলা হয়। এরপরের সুতা ডাইয়িং ও সাইজিং হয়ে যায় উইভিং ফ্লোরে। সেখানে স্বয়ংক্রিয় তাঁতের মাধ্যমে ওয়েফট( বর্তমানে ওয়েফট সুতা কটন এবং পলেস্টার দুইটাই ব্যাবহার হয়) সুতার প্রবেশ করিয়ে কাপড় বোনা হয়। এরপরে সেই কাপড় চলে যায় ফিনিসিং সেকশনে সেখান থেকে ফিনিসড হয়ে
কাপড় চলে যায় ইন্সপেকশন বিভাগে এবং এখানে চূড়ান্ত মান পরীক্ষা করে রোল আকারে প্যাক হয়ে ডেনিম কাপড় মার্কেটে চলে যায়। আমেরিকানদের সাফল্যে হচ্ছে তারা এই কাপড়ের বহুমাত্রিক ব্যবহার সফলভাবে উপহার দিয়েছি পৃথিবী জুড়ে।কিন্তু এই কাপড়ের আবিস্কারের মূল অবদান ফ্রান্সের। বর্তমানে বাংলাদেশে ৩৫ টি ডেনিম ফ্যাক্টরি আছে।







জিন্স এর ইতিকথা | History Of Jeans

প্রশ্ন :-
সারা দুনিয়াতে 'জিন্স' একটি অত্যন্ত পপুলার পোশাকI 'জিন্স' এর ইতিহাস কি?
আপনার দৃষ্টিতে এটি কি শুধুই ফ্যাশন, নাকি এটির ব্যবহারিক সুবিধা থেকেই এর জনপ্রিয়তা?

উত্তর :-
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অষ্টাদশ শতাব্দীতেজিন্স বা ডেনিম কাপড়ের প্রথম বানিজ্যিক উত্পাদন শুরু হয়. ডেনিম এর কাছাকাছি ধরনের একটি কাপড় তার আগে ইউরপে প্রচলিত ছিল. স্লেভ শ্রমের
ফলে আমেরিকায় তখন প্রচুর তুলা উত্পাদন হত আর আমেরিকার ইউরোপিয়ান ইমিগ্র্যান্ট পোশাকশিল্পের মালিকরা সম্পূর্ণ কটন ব্যাবহার করে টেকসই একটি কাপড়ের কথা ভেবে জিন্স এর উত্পাদন শুরু করে. আমরা অনেকেই জানি না শুরুর দিকের জিন্স এর সাথে আমাদের দেশের নীল চাষের গভীর সম্পর্ক আছে. ভারত থেকে আমদানি করা নীল দিয়ে এই কাপড়
ইন্ডিগো রং করা হত. ১৮ শতকে ক্যালিফর্নিয়া গোল্ড রাশ এর সময় খনি শ্রমিক রা শক্তিশালী এই কাপড় ব্যাপক হারে বেবহার শুরু করে এবং সহজে বিছিন্ন করা যায় না এমন কাপড় ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে. এই জনপ্রিয়তার সাথে তাল মিলিয়ে লেভি স্ট্রাউস নাম এ একজন জিন্স এর ফ্যাশন নিয়ে চিন্তা শুরু করেন এবং জিন্স কে কাজের পাশাপাশি ফ্যাশন এ রূপান্তর করেন. লেভি স্ট্রাউস কোম্পানি এখনো বর্তমান এবং এখন পর্যন্ত একটি
জনপ্রিয় জিন্স.

ডেনিম শব্দটি প্রথম এসেছে একটি কাপরের নাম হিসেবে এবং এই কাপড় সর্ব প্রথম তৈরি হয় ফ্রান্সের নেইমস(Nimes) শহরে আর এটা তৈরি করেছিল এন্ডরে (Andre) নামের একটি পরিবার। তাদের তৈরি করা কাপরের প্রকৃত নাম ছিল " সারজি ডে নিমেস"(serge de Nîmes) কিন্তু খুবই তাড়াতাড়ি এই নাম সংক্ষিপ্ত হয়ে " ডেনিম " ( denim) নামে পরিচিতি লাভ করে।
ডেনিম কাপড় বলতে সাধারন ভাবে নিল রঙয়ের কাপড়কেই বুঝায় যা ইন্ডিগো ডাইংয়ের মাধ্যমে নীল রঙে পরিবর্তন হয়। তবে বর্তমানে জিন্সের ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও ব্যবহারের বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বিভিন্ন কালারে হয়ে থাকে,যদিও জিন্স বলতে বুঝায় একটি আলাদা ,হালকা এবং সুতির কাপড়কে। সমসাময়িক কালে ব্যবহৃত জিন্স শব্দটির উৎপত্তি ফ্রেঞ্চ শব্দ Genoa, Italy (Gênes) যেখানে সর্ব প্রথম জিন্সের প্যান্ট তৈরি হয়েছিল।

ডেনিম বা জিন্স কাপড় তৈরিতে দুই ধরনের সুতা ব্যবহার হয়ে থাকে। সে সুতা লম্বাভাবে ব্যবহার করা হয় তাকে বলা হয় ওয়ারপিং(warping yarn) আর যে সুতা আড়াআড়ি ব্যবহার হয় তাকে বলা হয় ওয়েফট (weft yarn)।একটি ডেনিম ফ্যাক্টরিতে দুইটি ফ্লোর থাকে যথা ডাইয়িং ও উইভিং।

প্রথমে সুতা ওয়ারপিং করে বীম তৈরি করে ডাইয়িং এবং সাইজিং মেশিনের উপযোগী করে তোলা হয়। এরপরের সুতা ডাইয়িং ও সাইজিং হয়ে যায় উইভিং ফ্লোরে। সেখানে স্বয়ংক্রিয় তাঁতের মাধ্যমে ওয়েফট( বর্তমানে ওয়েফট সুতা কটন এবং পলেস্টার দুইটাই ব্যাবহার হয়) সুতার প্রবেশ করিয়ে কাপড় বোনা হয়। এরপরে সেই কাপড় চলে যায় ফিনিসিং সেকশনে সেখান থেকে ফিনিসড হয়ে
কাপড় চলে যায় ইন্সপেকশন বিভাগে এবং এখানে চূড়ান্ত মান পরীক্ষা করে রোল আকারে প্যাক হয়ে ডেনিম কাপড় মার্কেটে চলে যায়। আমেরিকানদের সাফল্যে হচ্ছে তারা এই কাপড়ের বহুমাত্রিক ব্যবহার সফলভাবে উপহার দিয়েছি পৃথিবী জুড়ে।কিন্তু এই কাপড়ের আবিস্কারের মূল অবদান ফ্রান্সের। বর্তমানে বাংলাদেশে ৩৫ টি ডেনিম ফ্যাক্টরি আছে।







কোন মন্তব্য নেই: