মেডিক্যাল টেক্সটাইল অথবা চিকিৎসাশাস্ত্রে টেক্সটাইলের ব্যবহার
টেক্সটাইলের ব্যবহার আজকাল শুধু একই বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই । দিন দিন বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর প্রয়োগ বাড়ছে । যেমনটি আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে লজ্জা নিবারণের জন্য এই টেক্সটাইল ব্যবহার করে থাকি । কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞান , আজকে এই চিকিৎসা শাস্ত্রে টেক্সটাইলের ব্যবহার আলোচনা করব ।
মেডিক্যাল টেক্সটাইলের পরিচিতি
প্রথমেই একটি বিষয়ের আলোচনা করা দরকার । মেডিক্যাল টেক্সটাইলটা আসলে কি কেনই বা এর দরকার । হ্যাঁ, আমি শুরুতেই এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করছি ।মেডিকেল টেক্সটাইলগুলি সবচেয়ে প্রয়োজনীয় এবং প্রযুক্তিগত টেক্সটাইলের ক্রমবর্ধমান অংশ যা স্বাস্থ্যসেবা টেক্সটাইল হিসাবেও পরিচিত । টেক্সটাইল প্রযুক্তি অর্থাৎ টেকনিক্যাল টেক্সটাইল এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের সমন্বয়ে একটি নতুন ক্ষেত্রের সৃষ্টি হয় যেটা আজকের দিনের মেডিক্যাল টেক্সটাইল হিসেবে অধিক পরিচিত ।
বর্তমান সমাজের বড় জনসংখ্যার আকারের পরিবর্তন, প্রতিটি মানুষের জীবনযাত্রার বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা, মানবিক ক্রিয়াকলাপের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে এবং বিপদ, পরিবহন দুর্ঘটনা, রাসায়নিক পদার্থ, অগ্নি, ঠাণ্ডা, রোগ এবং ক্রীড়াসহ সভ্যতার পরিবর্তন ঘটছে। এই ধরনের কারণগুলি মেডিক্যাল টেক্সটাইলের চাহিদা বাড়ায় । এর পরবর্তী পয়েন্টগুলো থেকে আমরা মেডিক্যাল টেক্সটাইল সম্পর্কে একটা মোটামুটি ধারনা পাব ।
এখন আসি আমরা মেডিক্যাল শাস্ত্রের কোন কোন ক্ষেত্রে আমরা টেক্সটাইলের ব্যবহার দেখতে পাই ।ন্যানো প্রযুক্তির বিকাশ গত দশকে এক অভাবনীয় বিপ্লবের সূচনা করেছে । ন্যানো ফাইবার থেকে তৈরি পোশাকগুলো মেডিক্যাল সেক্টরে আজকাল খুব বেশি পরিমাণে ব্যবহৃত হচ্ছে । যার ফলে চিকিৎসা শাস্ত্রে টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের প্রয়োগ ব্যপকহারে লক্ষ্য করা যাচ্ছে ।
ঔষধ শিল্পে টেক্সটাইলের ইতিহাস
চিকিৎসা ক্ষেত্রে টেক্সটাইলের ব্যবহার শুরু আজকে থেকে নয় । এর ইতিহাস বেশ পুরনো দিনের ইতিহাস ঘাঁটলে লক্ষ্য করা যায় । খ্রিস্টপূর্ব ২১০০ অব্দে সুমেরিয়ান সভ্যতা তাদের চিকিৎসা শাস্ত্রে এর উল্লেখ করেছে । তারা বিভিন্ন ব্যান্ডেজ , প্লাস্টার তৈরিতে এর ব্যবহার করত বলে জানা যায়।
চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা পণ্যের জন্য টেক্সটাইল সামগ্রী ব্যবহার মূলত নিম্নলিখিত ক্ষেত্রগুলিতে শ্রেণীবদ্ধ করা যায়-
১. ক্ষত ড্রেসিং, প্লাস্টার, ব্যান্ডেজ, গেজ ইত্যাদি দ্রব্যাদি তৈরিতে ।
২. কৃত্রিম লিগামেন্ট তৈরিতে , কৃত্রিম কিডনি, কৃত্রিম যকৃত, কৃত্রিম ফুসফুস প্রভৃতি তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ।
৩. অপারেটিং গাউন, অপারেটিং ড্রেস, স্টারলাইজেশন প্যাকগুলি, ড্রেসিং, সিউচার এবং অস্থিরোপকারী প্যাড।
৪. ননওভেন গাউন , মেডিক্যাল গ্লাভস, গাউন , মাস্ক, শিশুর ডায়াপার, স্যানিটারি ন্যাপকিন, সারজিকাল ক্যাপ, প্লাস্টার ।
মেডিকেল টেক্সটাইল জন্য যেসব প্রয়োজনীয় বৈশিষ্ট্যাবলী প্রয়োজন –
১ এটি অ-বিষাক্ত হতে হবে অর্থাৎ এতে কোন বিষাক্ত উপাদান থাকবেনা ।
২ এটি রাসায়নিকভাবে নিষ্ক্রিয় হওয়া উচিত।
৩ স্থায়ীকতা , নমনীয়তা ও কোন আঘাত অথবা বল সহ্য করার ক্ষমতা থাকতে হবে ।
৪ আদ্রতা শোষণ ক্ষমতা থাকতে হবে ।
৫ ক্ষার, এসিড, মাইক্রো-অর্গানিজম জাতীয় পদার্থের ভাল প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকতে হবে মেডিক্যাল টেক্সটাইলগুলোর ।
মেডিক্যাল টেক্সটাইলে ব্যবহৃত ফাইবার গুলো নিম্নলিখিত উপায়ে শ্রেণীবিভাগ করা যেতে পারে –
১ প্রাকৃতিক ফাইবার – তুলো বা কটন , সিল্ক ফাইবার প্রভৃতি ।
২ সিনথেটিক ফাইবার- পলি-এস্টার , ভিসকোস, পলিঅ্যামাইড, পলি-প্রপাইলিন, কার্বন, গ্লাস প্রভৃতি ফাইবার ।
মূলত টেকনিক্যাল টেক্সটাইল নিয়ে আমাদের দেশে কোন কাজ হয় না বললেই চলে , যেহেতু মেডিক্যাল টেক্সটাইল টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের একটি অংশ তাই দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের দেশে এগুলো নিয়ে তেমন একটা কাজ হচ্ছে না । যদিও উন্নত দেশগুলো এই ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি করছে । মেডিক্যাল টেক্সটাইলের আরও অনেক অজানা ব্যবহার রয়েছে, যেটা নিয়ে আমাদের এখনো গবেষণা করার সুযোগ রয়েছে ।
মেডিক্যাল টেক্সটাইলের সাম্প্রতিক উন্নতি সব ক্ষেত্রেই উন্নয়নের দরকার রয়েছে । যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য এবং যথেষ্ট বিকাশ লাভের জন্য মেডিক্যাল সেক্টরেও টেক্সটাইলের যথেষ্ট বিকাশ ঘটেছে । ফাইবারের (absorbency) অথবা শোষণ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কিছু ( super absorbent) অধিক শোষণক্ষম জাতীয় পলিমারের উদ্ভব করা হয়েছে ।এর পাশাপাশি কৃত্রিম কিডনি, যান্ত্রিক ফুসফুস এবং কৃত্রিম যকৃতের মতো অতিরিক্ত কার্বন যন্ত্রগুলি পরিবর্তন করা হয়েছে যার ফলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে কৃত্রিম অঙ্গগুলোর প্রতিস্থাপনের ঘটনা ব্যপকহারে বৃদ্ধিপাচ্ছে ।
মেডিক্যাল টেক্সটাইলের সাম্প্রতিক উন্নতি সব ক্ষেত্রেই উন্নয়নের দরকার রয়েছে । যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য এবং যথেষ্ট বিকাশ লাভের জন্য মেডিক্যাল সেক্টরেও টেক্সটাইলের যথেষ্ট বিকাশ ঘটেছে । ফাইবারের (absorbency) অথবা শোষণ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কিছু ( super absorbent) অধিক শোষণক্ষম জাতীয় পলিমারের উদ্ভব করা হয়েছে ।এর পাশাপাশি কৃত্রিম কিডনি, যান্ত্রিক ফুসফুস এবং কৃত্রিম যকৃতের মতো অতিরিক্ত কার্বন যন্ত্রগুলি পরিবর্তন করা হয়েছে যার ফলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে কৃত্রিম অঙ্গগুলোর প্রতিস্থাপনের ঘটনা ব্যপকহারে বৃদ্ধিপাচ্ছে ।
কন্টেন্ট লেখা -
তন্ময় দেবনাথ
বস্ত্র প্রকৌশল, ২ য় বর্ষ।
তন্ময় দেবনাথ
বস্ত্র প্রকৌশল, ২ য় বর্ষ।
আরাফাত হোসাইন ,
বস্ত্র প্রকৌশল ,২য় বর্ষ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন