প্রসংঙ্গঃ বন্ডেড ওয়্যার হাউস লাইসেন্স কেন ও কিভাবে নিতে হয় ?
একশত ভাগ রপ্তানিমুখী হলে আপনি শুল্ক বিভাগ হতে বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্স সুবিধা নিয়ে শুল্কমুক্ত কাঁচামাল আমদানি করে খরচ কমাতে পারেন। অবশ্যই এক্ষেত্রে আপনাকে পণ্য ১০০ ভাগ রপ্তানি করতে হবে। নতুবা শুল্কমুক্ত কাঁচামাল আমদানি না করে আপনি শুল্ক, কর ইত্যাদি প্রদান করে কাঁচামাল আমদানি বা স্থানীয়ভাবে ক্রয় করে পণ্য উৎপাদন করতে পারেন। সেই ক্ষেত্রে বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্সের প্রয়োজন হবে না। রপ্তানির পর আপনি ডিউটি ড্রব্যাক বা বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী ২৫ শতাংশ ক্যাশ বেনিফিট পেতে পারেন। ডিউটি ড্র ব্যাক DEDO অফিস থেকে নিয়ম অনুযায়ী দাবি করতে হবে। আর ক্যাশ বেনিফিট ২৫ শতাংশ আপনার ব্যাংক -এর মাধ্যমে আবেদন করে সংগ্রহ করতে হবে।
শুল্ক কর্তৃপক্ষের নিকট হতে বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্স -এর আবেদনের সঙ্গে প্রয়োজনীয় দলিলাদি পেশ করতে হবে।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
১. নির্ধারিত ফরমে আবেদনপত্র।
২. ১০০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে তিন কোটি টাকার বন্ড।
৩. ট্রেড লাইসেন্স।
৪. আমদানি নিবন্ধন প্রত্যয়নপত্র (আইআরসি) শিল্পখাতভূক্ত।
৫. রপ্তানি নিবন্ধন প্রত্যয়নপত্র (ইআরসি)।
৬. লিমিটেড কোম্পানি হলে মেমোরেন্ডাম ও আর্টিক্যালস অব এসোসিয়েশন এবং সার্টিফিকেট অব ইনকর্পোরেশন।
৭. টিআইএন (টিন)।
৮. ভ্যাট নিবন্ধনপত্র।
৯. ব্যাংক সচ্ছলতার সনদপত্র।
১০. বিজিএমইএ/বিএনটিএমইএ/বিসিসিএমএ/বিটিএমএ বা সংশ্লিষ্ট সমিতি -এর সদস্য সনদপত্র।
১১. বাড়ি ভাড়ার চুক্তি অথবা মালিকানার দলিল।
১২. পরিবেশ অধিদপ্তরের অনাপত্তিপত্র।
১৩. পিডিবি -এর ছাড়পত্র।
১৪. বিনিয়োগ বোর্ড কর্তৃক নিবন্ধনপত্র।
১৫. বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্স জারির জন্য বিনিয়োগ বোর্ডের সুপারিশপত্র।
১৬. লাইসেন্স ফি ১০০০ টাকার ট্রেজারি চালান।
১৭. জাতীয়তার সনদপত্র।
১৮. পরিচালকবৃন্দ/মালিকের পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি সত্যায়িত ছবি।
১৯. মেশিনারিজ আমদানির দলিলাদি।
২০. কারখানার নীল-নকশা ২ সেট।
২১. ফায়ার সার্ভিসের সনদপত্র।
২২. ১০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ঘোষণাপত্র।
Bonded warehouse | বন্ডেড ওয়্যার হাউস লাইসেন্স কেন ও কিভাবে নিতে হয় ?
১০০% রপ্তানিমূখী শিল্প প্রতিষ্ঠান (গার্মেন্টস) তার আমদানি রপ্তানি কিভাবে করে?
(১) মাস্টার এলসি / এক্সপোর্ট এলসি কী ?
উত্তরঃ একজন বিদেশি বায়ার/ক্রেতা এদেশ থেকে রেডিমেড গার্মেন্টস পণ্য ক্রয়ে প্রফর্মা ইনভয়েস-এর বিপরীতে যে মুল এলসি, এ দেশের পণ্য সরবরাহকারীকে, সরবরাহকারীর লিয়েন ব্যাংকে যে এলসি প্রেরণ করেন সেটি হলো মাস্টার এলসি।
(২) মাস্টার এলসি/এক্সপোর্ট এলসি কে প্রদান করে?
উত্তরঃ বিদেশি বায়ার/ক্রেতা প্রদান করে থাকেন।
(৩) বিদেশি বায়ার/ক্রেতা মাস্টার এলসি কয় ভাবে দিতে পারে?
উত্তরঃ দুই ভাবে দিতে পারে;
(ক) এদেশে অবস্থিত বায়িং হাউজের মাধ্যমে;
(খ) পণ্য উৎপাদনকারী গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানকে সরাসরিও দিতে পারে।
এতদ্ব্যতিত সেলস কন্ট্রাক্ট/নিশ্চিত ক্রয় আদেশের মাধ্যমে ও বায়ার এদেশে থেকে পণ্য সরবরাহ নিয়ে থাকেন।
(৪) মাস্টার এলসি পাওয়ার পর বায়িং হাউজ/গার্মেন্টস কীভাবে পন্য উৎপাদন করে?
উত্তরঃ মাস্টার্স/এক্সপোর্ট এলসি পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, মাস্টার্স এলসি এর বিপরীতে পণ্য উৎপাদনে প্রয়োজন এমন সকল উপকরণ ও এক্সোসরিজ ব্যাক টু ব্যাক এলসি এর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়ে দেশি অথবা বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে সংগ্রহ করে।
এই উপকরণ ও এক্সোসরিজ সর্বমোট মুল মাস্টার /এক্সপোর্ট এলসি এর ৮০% পর্যন্ত সংগ্রহ করতে পারবেন। কোন ভাবেই তার অধিক নয়, কারণ তার অধিক হলে তা আমদানি নীতি আদেশ অনুঃ ২৪ (৯) (রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পণ্যাদি আমদানি) অনুযায়ী তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে নুন্যতম মূল্য সংযোজন হার হওয়ার যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে তা কাভার করবে না।
আমদানি নীতি আদেশ অনুযায়ী পোশাক শিল্পের ক্ষেত্রে নুন্যতম ভ্যালু এডিশন হবে নিম্নরুপঃ
(ক) নীট পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে ২০%;
(খ) ওভেন পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে ২০%;
(গ) সকল স্যুয়েটার রপ্তানির ক্ষেত্রে ২০%;
(ঘ) সকল প্রকার শিশুর পোশাক রপ্তানিতে ১৫%;
(ঙ) মূল্য ৫ মাঃডঃ/পিস এর ক্ষেত্রে ১৫% ;
উদাহরণস্বরুপঃ মেসার্স রহমান গার্মন্টস ১,০০,০০০ মাঃডঃ এর একটি মাস্টার এলসি বা এক্সপোর্ট এলসি বা মাস্টার এলসি/এক্সপোর্ট এলসি ছাড়া ক্রেতা কর্তৃক নিশ্চিত চুক্তির বিপরীতে সর্বমোট ৮০% মানে ৮০,০০০ মাঃডঃ উপকরণ ও এক্সোসরিজ + উৎপাদন খরচ (CM cost and manufacturing) করতে পারবেন কোন অবস্থায় এর বেশি নয়, কারণ এর বেশি হয়ে গেলে তখন আর আমদানি নীতি আদেশ অনুযায়ী ন্যুনতম ভ্যালু এডিশন হারের মধ্যে তা থাকে না।
উদাহরণ অনুযায়ী রহমান গার্মেন্টস মাস্টার এলসি পাওয়ার পর এবার উপকরণ সংগ্রহ করবেন অতপর এস,আর,নং ১৫৩-আইন/৯৩/১৫২০/শুল্ক, তাং- ৩রা আগষ্ট ১৯৯৩ খ্রিঃ "সম্পূর্ন রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান (সাময়িক আমদানি) বিধিমালা ১৯৯৩ এর " তফসিল -১" অনুযায়ী ইউডি (বিজিএমইএ/বিকেএমইএ) অনুমোদন করিয়ে নেবেন। উক্ত ইউ,ডি- এর কপি বিভিন্ন দপ্তরে অনুলিপি দিবেন, অতপর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য উৎপাদন করবেন, রপ্তানি করবেন। ১০০% রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান ব্যাক টু ব্যাক, অথবা মাস্টার এলসি বা ব্যাক টু ব্যাক, মাস্টার এলসি ছাড়া ক্রেতা কর্তৃক নিশ্চিত চুক্তির বিপরীতে ৪ মাসের কাচামাল ও মোড়ক সামগ্রী রিভলভিং পদ্ধতিতে আমদানি করতে পারবেন।
১০০% রপ্তানিমূখী শিল্প প্রতিষ্ঠান (গার্মেন্টস) তার আমদানি রপ্তানি কিভাবে করে | Garment Export
১০০% রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের(গার্মেন্টস + অন্যান্য) রপ্তানি সংশ্লিষ্ট আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ড জেনে রাখুন কাজে লাগবে।
(১) EXP Form কী? এটি কে জারী করেন?
উত্তরঃ পণ্য রপ্তানির সময় পণ্যের রপ্তানি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য সম্বলিত ফর্ম হলো EXP Form, EXP (Export Permission ) Form লিয়েন ব্যাংক জারী করে থাকেন, এটি লিয়েন ব্যাংক জারী করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ড্যাস বোর্ড / ই- সার্ভিস পোস্ট দিয়ে রাখে। EXP Form যে সকল তথ্য থাকে;
(ক) লিয়েন ব্যাংক নাম, ঠিকানা ;
(খ) ক্রেতার নাম, ঠিকানা ;
(গ) রপ্তানিকারকের নাম, ঠিকানা ;
(ঘ) রপ্তানি পণ্যের বর্ননা;
(ঙ) পরিমাণ ;
(চ) পণ্য মূল্য ;
(ছ) পণ্যের এইচ,এস,কোড;
(জ) পণ্যের ডেস্টিনেশন;
উল্লেখ্য একটি মাস্টার এলসি-এর বিপরীতে একাধিক EXP হতে পারে। অর্থাৎ মুল মাস্টার এলসি-এর বিপরীতে ঐ এলসি-এর যত পণ্য যেই পরিমাণ পণ্য, যে মুল্যের পণ্য, যে চালানে যতটুকু রপ্তানি হবে সেই পরিমাণ পণ্যের জন্য একটি ই,এক্স,পি হবে।
EXP শুধুমাত্র সরাসরি রপ্তানিকারক ও ইপিজেড এর ক্ষেত্রে জারী করে থাকেন। তবে Deemed Exporter এর ক্ষেত্রে EXP Form হয় না। Deemed Exporter এর ক্ষেত্রে ইউ,পি এবং ব্যাক টু ব্যাক এলসি এর মাধ্যমে রপ্তানি হয়ে থাকে ম
(২) PRC (Proceed Realization Certificate)যাচাই কিভাবে করতে হয়?
উত্তরঃ EXP Form - এ যে তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ই-সার্ভিসের ড্যাস বোর্ড থাকে সেটিই পরবর্তীতে যখন ফরেন কারেন্সি রিয়েলাইজ হয়ে যায় তখন PRC তে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায় বা রপ্তান্তরিত হয়ে যায় । সরাসরি রপ্তানিকারকের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের ড্যাস বোর্ড গিয়ে PRC যাচাই করা যায় তবে প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারকের ক্ষেত্রে লিয়েন ব্যাংকে গিয়ে PRC তথ্য যাচাই করতে হয়। সে ক্ষেত্রে বিল গুলো ভালো করে যাচাই করতে হয়। খালি রেজিস্ট্রারে তথ্য থাকলে হবে না, বিল গুলোর পেমেন্ট কোন মুদ্রায় এসেছে সেই চেক/ড্রাফট /আনুষঙ্গিক দলিলাদি দেখে বা যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হতে হয়।
(৩) পণ্য রপ্তানির পর রপ্তানিমূল্যের কী পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা এলে তা গ্রহণযোগ্য হবে?
উত্তরঃ মোট মাস্টার এলসি-এর ৫% কমবেশি বৈদেশিক মুদ্রা এলে তা গ্রহণযোগ্য হবে। উদাহরণস্বরুপ রহমান গার্মেন্টস যে ১,০০,০০০ মাঃডঃ এর মাস্টার এলসি পেয়েছিল সে মাস্টার এলসি বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংকে সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা প্রত্যাবাসন হবে তবে তার বিভিন্ন কমিশন, ফি ইত্যাদি কর্তন করে বাকি অর্থ বাংলাদেশ টাকায় রুপান্তর করে আমদানিকারকের ( রহমান গার্মেন্টস) লিয়েন ব্যাংকে পরিশোধ করবেন। সাধারণত এই কমবেশি অবশ্যই ৫% বা তার কম হতে হবে।
গার্মেন্টস রপ্তানি সংশ্লিষ্ট আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ড জেনে রাখুন
কমার্শিয়াল মানে কি ?
প্রত্যাকটি প্রতিষ্টানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ হচ্ছে কমার্শিয়াল বা বানিজ্যিক বিভাগ । বানিজ্যিক বিভাগ ব্যতিতো কোন প্রতিষ্টান কল্পনাই করা যায় না। অর্থাৎ একটি উৎপাদনশীল প্রতিষ্টানে Letter of Credit (LC) বা Sales Contact (SC) বা Proforma Invoice (PI) হওয়ার পর ঐ LC/SC/PI এর মধ্যে উল্লেখিত পণ্য শিপমেন্ট করে পেমেন্ট পাওয়া পর্যন্ত যে সকল কার্যাবলী করা হয় সেগুলোই হচ্ছে কমার্শিয়াল বা বানিজ্যিক বিভাগের কার্যাবলী ।
কমার্শিয়ালের ২টি পার্ট বা অংশ থাকে । একটি হচ্ছে Export (রপ্তানী) অন্যটি হচ্ছে Import (আমদানি)। আজ আমরা কমার্শিয়ালের Export (রপ্তানী) নিয়ে আলোচনা করবো ।
তাহলে শুরু করা যাক:
মাল তৈরী হওয়ার ৫/৭ দিন আগে আপনাকে অবশ্যই একটি Invoice (ইনভয়েছ) তৈরী করে নিতে হবে । Invoice (ইনভয়েছ) তৈরী করবেন LC/SC/PI অনুসরন করে । Invoice (ইনভয়েছ) এ যে সব বিষয় গুলো থাকতে হবে তা হচ্ছে:
ক. আপনার কোম্পনির নাম, পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা (LC/SC/PI এর মধ্যে যেভাবে উল্লেখ আছে)
খ. Buyer এর কোম্পনির নাম, পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা (LC/SC/PI এর মধ্যে যেভাবে উল্লেখ আছে)
গ. আপনার কোম্পানির নির্ধারিত ব্যাংক এর নাম,পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা (LC/SC/PI এর মধ্যে যেভাবে উল্লেখ আছে)
ঘ. Buyer এর নির্ধারিত ব্যাংক এর নাম,পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা (LC/SC/PI এর মধ্যে যেভাবে উল্লেখ আছে)
ঙ. Invoice (ইনভয়েছ) নাম্বার এবং তারিখ ( Invoice (ইনভয়েছ) নাম্বারটি আপনি তৈরী করবেন)
চ. EXP নাম্বার এবং তারিখ (EXP নাম্বারটি আপনাকে ব্যাংক থেকে দিবে)
ছ. LC/SC/PI নাম্বার এবং তারিখ
জ. যে পোর্ট থেকে আপনার পণ্য রপ্তানী হবে এবং যে পোর্ট থেকে আপনার বায়ার পণ্য রিসিভ করবে (LC/SC/PI এর মধ্যে যেভাবে উল্লেখ আছে)
ঝ. রপ্তানীর মাধ্যম কি ? জাহাজ নাকি বিমান
ঞ. রপ্তানীকৃত পণ্যের HS Code
ট. পণ্যের বিবরণ, পণ্যের পরিমান (CBM),
তারপর আপনার শিডিউল অনুসারে আপনার পণ্য Chittagong পাঠিয়ে দিন । মনে রাখবেন যখন আপনি শিপিং লাইনে বুকিং দিবেন তখন আপনি অবশ্যই জাহাজের একটি শিডিউল নিবেন । এবং এই শিডিউল আপনি 3টি তারিখ অনুসরণ করুন। Cutt Off Date এর আগে আপনাকে কন্টেইনার এবং ডকুমেন্ট শিপিং লাইনকে বুঝিয়ে দিতে হবে ,
Bill Of Leading (BL) এর মধ্যে যে সব তথ্য গুলো অবশ্যই থাকতে হবে তা হচ্ছে:
ক. Bill Of Leading (BL) নম্বর
ক. আপনার কোম্পনির নাম, পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা (LC/SC/PI এর মধ্যে যেভাবে উল্লেখ আছে)
খ. Buyer এর কোম্পনির নাম, পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা (LC/SC/PI এর মধ্যে যেভাবে উল্লেখ আছে)
গ. আপনার কোম্পানির নির্ধারিত ব্যাংক এর নাম,পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা (LC/SC/PI এর মধ্যে যেভাবে উল্লেখ আছে)
ঘ. ETD (Estimated Time Departure) Date
ঙ. Invoice (ইনভয়েছ) নাম্বার এবং তারিখ
চ. EXP নাম্বার এবং তারিখ
ছ. LC/SC/PI নাম্বার এবং তারিখ
জ. যে পোর্ট থেকে আপনার পণ্য রপ্তানী হবে
ঝ. Container No, Seal No, CTN Quantity,
ঞ. রপ্তানীকৃত পণ্যের HS Code
ট. পণ্যের বিবরণ, পণ্যের পরিমান (CBM),
এখন আপনি আপনার LC/SC/PI তে বায়ারের রিকয়ারমেন্ট ডকুমেন্ট কি কি লাগবে চেক করুন । যদি C/O (Certificate Of Origin) চায় তাহলে আপনাকে DCCI মিতিঝিল অফিস থেকে C/O ইস্সু করতে হবে।
বাস শিপমেন্ট সম্পন্ন হয়ে গেলো ।
এখন আপনি LC/SC/PI এর লেনদেন এর শর্ত অনুসারে সঠিক সময়ে টাকা পেয়ে যাবেন । যদি আপনার সঠিক সময়ে টাকা পেত দেরি হয় তাহলে ব্যাংকের মাধ্যমে বায়ার ব্যাংকে রিমইন্ডার পাঠান । আশা করি এরি মধ্যে পেমেন্ট পেয়ে যাবেন ।
Collected
গার্মেন্টসের কমার্শিয়াল ডিপার্টমেন্টের কাজ কি | Garments Commercial Department
INCOTERMS এর মাধ্যমে উল্লেখিত রেস্পন্সিবিলিটি সম্পর্কে বিস্তারিত -
০১. Export Packaging (এক্সপোর্ট প্যাকেজিং): যেকোনো পণ্য এক্সপোর্ট বা রপ্তানি করতে হলে সেটার জন্য স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং এর প্রয়োজন পড়ে যেন শিপিং এর সময় পন্য নষ্ট না হয়। এই প্যাকেজিং কেই বলা হয় এক্সপোর্ট প্যাকেজিং।
০২. Export Formalities (এক্সপোর্ট ফর্মালিটিস): যেকোনো পণ্য যখন এক্সপোর্ট বা রপ্তানি হয় তখন সেটার কিছু ফর্মালিটিস থাকে (পারমিশন এর ব্যাপার থাকে, অনেক ডকুমেন্টস প্রিপারেশন এর ব্যাপার থাকে)। এই কাজগুলোকেই Export Formalities বলা হয়।
০৩. Loading at Point of Origin (লোডিং অ্যাট পয়েন্ট অফ অরিজিন): এক্সপোর্টারের ফ্যাসিলিটি থেকে পণ্য এক্সপোর্ট কান্ট্রির পোর্টে পৌঁছানোর জন্য যেকোনো ট্রান্সপোর্টের মাধ্যমে পণ্য নেয়ার জন্য পণ্য লোডিং করতে হয়।
০৪. Origin Inland Freight (অরিজিন ইন-ল্যান্ড ফ্রেইট): পণ্য এক্সপোর্ট করার জন্য যে পোর্টের মাধ্যমে পাঠানো হবে সেই পোর্টে এক্সপোর্টারের ফ্যাসিলিটি থেকে পণ্য আনতে যে চার্জ বা খরচ হয় সেটাকেই Origin Inland Freight বলা হয়। (একটি অভ্যন্তরীণ মালবাহী চার্জ, দেশের এক অংশ থেকে অন্য অংশে পণ্য সরবরাহের জন্য চার্জ করা পরিমাণ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়)।
০৫. Origin Port Charges (অরিজিন পোর্ট চার্জ): যে পোর্টের মাধ্যমে পণ্য এক্সপোর্ট হবে সেই পোর্টের চার্জকে বলা হয় Origin Port Charges.
০৬. Forwarder Fees: এক্সপোর্টার কান্ট্রি থেকে পন্য Importer এর কান্ট্রিতে পৌঁছানোর জন্য একজন Freight Forwarder যে কাজগুলো করে থাকে (কাগজপত্র প্রক্রিয়াকরণ, নথি অনুলিপি করা এবং এয়ার ওয়েবিল/ বিল অফ লেডিং প্রস্তুত) সেটার জন্য তারা একটা চার্জ নিয়ে থাকে এটাকেই বলা হয় Forwarder Fees.
০৭. Ocean / Air Freight (ওসেন বা এয়ার ফ্রেইট): সহজ ভাষায় আমদানিকৃত পণ্য রপ্তানিকারকের দেশ থেকে আনতে ট্রান্সপোর্টের জন্য যে খরচ হয় সেটাকেই আমরা Ocean / Air Freight বলতে পারি। পণ্য সমুদ্র পথে আসলে Ocean Freight এবং আকাশপথে আসলে Air Freight.
০৮. Destination Port Charges (আমদানিকারকের পোর্ট): আমদানিকারকের পোর্টকে বলা হচ্ছে 'ডেসটিনেশন পোর্ট'। আমদানিকারকের পোর্টের যে চার্জ দিতে হয় সেটাকেই Destination Port Charges বলা হয়।
০৯. Customs Clearance: আমদানিকৃত পণ্য যখন ডেসটিনেশন পোর্টে চলে আসে তখন সেটা কাস্টমস থেকে খালাস বা রিলিজ করতে হয়। এটাকেই বলা হয় কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স।
১০. Import Duties & Taxes: যেকোনো পণ্য বানিজ্যিক উদ্যেশ্যে আমদানি করলে সেটার জন্য Import Duties & Tax পে করতে হয়। প্রতিটা পণ্যের জন্য এটা আলাদা হয়ে থাকে।
এবং, Delivery Charges To Final Destination.
INCOTERMS এর মাধ্যমে উল্লেখিত রেস্পন্সিবিলিটি
কিভাবে বন্ডের অপব্যবহার কিভাবে স্থানীয় পোশাক শিল্পের ক্ষতি করে
বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে তৈরী পোশাক শিল্প। দেশের মোট প্রবৃদ্ধির ছয়-আট শতাংশ আসে এই সেক্টর থেকে। পোশাক শিল্পের প্রধান কাঁচামাল হচ্ছে কাপড় (ফেব্রিক্স)। যখন দেশীয় টেক্সটাইল শিল্প ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাপড় সরবরাহ করতে পারে না, তখন প্রতিবেশী দেশগুলো (যেমন: ভারত, পাকিস্থান, চীন, শ্রীলঙ্কা ইত্যাদি) থেকে আমদানী করতে হয়। সরকারের আইন অনুযায়ী কোন পণ্য বিদেশ থেকে আমদানী করতে হলে সেই পন্যের উপর নির্ধারিত শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু তৈরী পোশাক শিল্পকে আরও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান করার জন্য কাস্টমস বন্ডের মাধ্যমে শুল্কবিহীন পণ্য আমদানীর সুযোগ প্রদান করেছে। কিছু সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী এই সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে শুল্ক ফ্রি আমদানীকৃত পণ্য স্থানীয় বাজারে স্বল্প মূল্যে ছেড়ে দিচ্ছে। এক দিকে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে অন্যদিকে স্থানীয় টেক্সটাইল শিল্প অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
আশির দশকে টেক্সটাইল শিল্প দেশীয় শিল্প হিসাবে যাত্রা শুরু করে এবং একটা নির্দিষ্ট সময় পার হবার পরে (নব্বই দশকের শুরুতে), সরকার বিশ্ব বাজারে এই দেশীয় শিল্পের উৎপাদিত পণ্য রপ্তানী করার সিদ্ধান্ত নেন। শুরুতেই রপ্তানীর পরিমানের উপর ভিত্তি করে টেক্সটাইল মালিকদেরকে ২৫ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেওয়া হয়। সরকার এই খাত থেকে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেছিল এবং রপ্তানি শুল্ক ফিরিয়ে আনার সুবিধাগুলি প্রবর্তন করে এবং পরবর্তীতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অধীনে বন্ডের সুবিধা চালু করা হয়। এটা বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় সাফল্য এই; যে ব্যবসা ২৫ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দিয়ে শুরু হয়েছিল এবং এই খাতটি যখন পর্যায়ক্রমে প্রতিষ্ঠিত হয়, নগদ প্রণোদনার হারও ক্রমান্বয়ে কমতে কমতে বর্তমানে ৪ শতাংশে উপনীত হয়েছে। পোশাক শিল্পে সরকারের এই প্রণোদনা দেওয়ার পিছনে যুক্তিযুক্ত কারণও আছে। যখন কোন ব্যবসায়ী প্রতিবেশী দেশগুলি (যেমন ভারত, পাকিস্তান, চীন, থাইল্যান্ড ইত্যাদি) থেকে কোন পণ্য আমদানি করেন তখন পণ্যের মূল্যের সাথে তার কিছু অতিরিক্ত ব্যয়ও (উদাহরণঃ ব্যাংক চার্জ, পণ্যে গাড়ীতে উঠানো ও নামানো ইত্যাদি) হয়ে থাকে। যেহেতু বাংলাদেশের পোশাক শিল্প তার প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা করে, সেহেতু এই সুবিধা প্রদান না করলে উক্ত প্রতিযোগীতায় টিকে থাকা কঠিন হবে। সরকার ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বন্ডের মাধ্যমে প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকার শুল্ক ফ্রি সুবিধা প্রদান করছেন। যেখানে পোশাক শিল্পের কাঁচামাল আমদানীর উপর আনুমানিক ৪০ হাজার কোটি টাকা শুল্ক ফ্রি করে দেওয়া হয়।
এটা অনুমান করা হয় যে, বর্তমানে বাংলাদেশে ছোট বড় প্রায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার গার্মেন্টস আছে কিন্তু বিজিএমইএ অধীনে নিবন্ধনকৃত গার্মেন্টস এর সংখ্যা পঁচিশ শত থেকে তিন হাজার। সুতরাং বাকি গার্মেন্টসের কোন কাগজপত্র না থাকা সত্বেও তারা তাদের কার্যক্রম পরিচলনা করে যাচ্ছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল এই, কিছু বৈধ ও অবৈধ গার্মেন্টস এবং অল্প সংখ্যক টেক্সটাইল মিল আছে, যারা সরকারের প্রদত্ত বন্ড সুবিধাকে অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে মুনাফা উপার্জন করছে এবং দেশীয় শিল্পকে হুমকির মুখে পতিত করছে।
আইন অনুযায়ী বন্ডের লাইসেন্স ব্যবহারের এর প্রধান শর্ত হল বন্ডের পণ্য রপ্তানী ছাড়া দেশের অভ্যন্তরে কোন কাজে ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু আইনে এটাও উল্লেখ আছে, যদি কোন ব্যবসায়ী বন্ডের মালামাল সামগ্রী স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে চায় (সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ), সেক্ষেত্রে বন্ড কমিশনারেট থেকে অনুমতি পত্র সংগ্রহ এবং বাণিজ্যিক শুল্ক প্রদান করতে হবে। এই আইন লংঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের যথাযথ আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করার এখতিয়ার রয়েছে। বর্তমানে কিছু সংখ্যক গার্মেন্টস ব্যবসায়ী আইনকে তোয়াক্কা না করেই তাদের আমদানীকৃত বন্ডের কাপড় খোলা বাজারে ছেড়ে দিচ্ছে এবং একটি মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। পক্ষান্তরে, দেশীয় টেক্সটাইল শিল্প ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, কারণ বন্ডের কাপড় শুল্কমুক্ত হওয়ায় এর বাজারদর তুলনামূলক কম। এজন্য স্থানীয় টেক্সটাইল শিল্প তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না এবং প্রতিযোগীতামূলক বাজারে ক্রমান্বয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে।
ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অফ্ গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি), ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এবং সোয়াজ বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডন যৌথভাবে ডিপার্টমেন্ট অফ্ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ডিফিড) এর অর্থায়নে বাংলাদেশের কাস্টমস বন্ডের অপব্যবহার শীর্ষক গবেষণাকর্মটি পরিচলনা করছে। বন্ডের মালামাল স্থানীয় বাজারে প্রবেশের ফলে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনি স্থানীয় টেক্সটাইল শিল্প অস্তিত্বহীনতার সম্মুখীন হচ্ছে। এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হল কাস্টমস শুল্কের হার কমিয়ে বন্ডের অপব্যবহার হ্রাস করা এবং সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি স্থানীয় টেক্সটাইল শিল্পকে রক্ষা করা। গবেষণায় দেখা যায় যে, বন্ডের অপব্যবহার এমন একটি জটিল প্রক্রিয়া যা ক্রেতার অর্ডার থেকে শুরু করে পণ্য বিপণনের আগমুহূর্ত পর্যন্ত হইতে পারে। বন্ডের এই অপব্যবহার মূলত দুইভাবে হয়ে থাকে যথা: বৈধ পথে এবং অবৈধ পথে। বৈধ পথ বলতে গার্মেন্টস মালিক ক্রেতার অর্ডারের উপর ভিত্তি করে সকল অফিসিয়াল কার্যক্রম সম্পন্ন করবে কিন্তু তার মধ্যে কোন এক জায়গায় অর্থের লোভে আকৃষ্ট হয়ে এই সূক্ষ্ম অপকর্মটি করে থাকে।
এক, বিদেশী ক্রেতার অর্ডারের উপর ভিত্তি করে বিজিএমইএ ইউটিলাইজেশন ডিক্লিয়ারেশন (ইউডি) ইস্যু করে এবং ঐ ইউডির বিপরীতে কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট ইউটিলাইজেশন পারমিশন (ইউপি) দিয়ে থাকেন। এই ইউপি ব্যবসায়ীকে বিদেশ থেকে শুল্কমুক্ত কাঁচামাল আনতে সাহায্য করে। বিজিএমইএ ইউডি ইস্যু করার সময় ঐসকল অসৎ ব্যবসায়ীরা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কাপড় আনার জন্য চাহিদা পত্র দিয়ে থাকে। উদাহরন: একটি শার্টের জন্য ১ মিটার কাপড় প্রয়োজন কিন্তু তিনি তার চাহিদা পত্রে ১.২০ মিটার কাপড় প্রয়োজন উল্লেখ করেন। যদি তার অর্ডার এক লক্ষ শার্টের জন্য হয়ে থাকে তাহলে বিশ হাজার শার্টের কাপড় অতিরিক্ত নিয়ে আসবে। বিশ হাজার শার্টের কাপড় যেহেতু শুল্কমুক্ত এবং স্থানীয় বাজারে এর চাহিদা থাকার কারণে উক্ত কাপড় ইসলামপুরের ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বাজারে ছেড়ে দেওয়া হবে।
দুই, গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানী করে হরমোনাইজড সিস্টেম (এইচএস) কোডের মাধ্যমে। অনেকসময় ইউডিতে ইস্যুকৃত এইচএস কোডের কাপড়ের পরিবর্তে অন্য এইচএস কোডের কাপড় নিয়ে আসে। যেমন, ইউডিতে ৫০ কাউন্ট সুতার কাপড় নিয়ে আসার কথা উল্লেখ থাকা স্বত্বেও ৮০ কাউন্ট সুতার কাপড় নিয়ে আসে। সাধারণত সুতার কাউন্ট যত বেশী কাপড়ের মূল্য তত বেশী হবে। সেই হিসাবে ৮০ কাউন্ট সুতার মূল্য ৫০ কাউন্ট সুতার তুলনায় বহুগুণ।
তিন, বিদেশ থেকে আমদানীকৃত কাপড়গুলো পরিমাপ করা হয় কেজিতে। সেক্ষেত্রে কাপড় যত মিহি (চিকন সুতা) হবে ওজনও তত কম হবে। উদাহরণঃ যদি এক কেজিতে দুইটি প্যান্টের কাপড় হয়, সেখানে সমপরিমাণ ওজনে ১০টি থ্রি-পিসের কাপড় পাওয়া যায়। বর্তমান বাজার মূল্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, প্যান্টের কাপড়ের তুলনায় থ্রি-পিসের মূল্য অনেক বেশী।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল এসোসিয়েশন (বিটিএমএ) এর মতে ১৩০টি গার্মেন্টস মালিকেরা এই কাজে সম্পর্কিত। বিটিএমএ এর সদস্যরা দেশের প্রাইমারী টেক্সটাইল সেক্টরে প্রায় ৭০ হাজার কোটি বিনিয়োগ করেছে এবং দেশের পোষাক শিল্পের প্রয়োজনীয় ইয়ার্ণ ও ফেব্রিকের সিংহভাগ যোগান দেওয়া ছাড়াও দেশের মানুষের ব্যবহারের জন্য কাপড় সমানভাবে যোগান দিয়ে যাচ্ছে। বিটিএমএ এর মতে দেশের স্থানীয় টেক্সটাইলের বাজারটি প্রায় ৩০-৩৫ হাজার কোটি টাকার। কিন্তু এই বাজারটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বন্ডেড ওয়্যার হাউজের মাধ্যমে নিয়ে আসা অবৈধ বিদেশী কাপড়ে। তাদের মতে, বছরে প্রায় আট-দশ লাখের বেশী থ্রী-পিস, বিপুল পরিমান শাড়ী, শার্ট-প্যান্টের কাপড়সহ অনান্য বস্ত্র সামগ্রী বিভিন্ন পথে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। বিশেষ করে ভ্রমণ ভিসা (নিউ মার্কেটের দোকানদাররা, অনলাইন শপিং পেজ, ঈদের শপিং), সীমান্ত হাট এবং আন্ত:সীমান্ত চোরাকারবারীর মাধ্যমেই বেশি ফেব্রিক্স আসে।
পোশাক শিল্পের মালিকরা বন্ড লাইসেন্স এর মাধ্যমে যে কাপড় আমদানী করে তা দুই বছরের জন্য তাদের নিজস্ব কারখানায় সঞ্চয় করে রাখতে পারে। বন্ড কমিশনারেট প্রতি বছর নিরীক্ষণের মাধ্যমে উক্ত পোশাক শিল্পের ক্রেতার অর্ডারের সাথে মজুতকৃত কাঁচামালের হিসাব মিলিয়ে থাকেন। যদি অর্ডার এবং সঞ্চয়ের মধ্যে কোন ব্যত্যয় ঘটলে সাথে সাথেই আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। উল্লেখ্য যে, কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট ৭৬টি গার্মেন্টস কে চিহ্নিত করেছে, যারা এই অসৎ কাজে জড়িত এবং তাদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া, অনেক পোশাক শিল্পকে চিহ্নিত করা হয়েছে যাদের অবকাঠামোগত কোন অস্তিত্ব নেই কিন্তু কাগজ-কলমে তা সক্রিয়। এক্ষেত্রে তাদের বন্ড লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।
বাংলাদেশের বড় পাইকারি কাপড়ের বাজারগুলোর মধ্যে ঢাকার ইসলামপুর, নরসিংদীর মাধবদী, এবং নারায়ণগঞ্জের টান বাজার অন্যতম। কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট পোশাক শিল্পের পাশাপাশি এই সকল বাজারেও বিভিন্ন সময়ে অভিযান পরিচালনা করেন। সাম্প্রতিক অভিযানসমূহ কিছুটা হলেও দেশীয় টেক্সটাইল শিল্পের জন্য স্বস্তিদায়ক পরিবেশ তৈরী করছে। পুলিশের সহায়তায় বন্ড কমিশনারেট প্রতিনিয়ত ইসলামপুরে অভিযান পরিচলনা করছে এবং বন্ডে আসা কাপড়ের ট্রাক জব্দ করে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। কাপড় ব্যবসায়ী সমিতিও তাদের মাসিক মিটিং এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে যে কোন ব্যবসায়ী বন্ডের অবৈধ মালামাল বিক্রি করতে পারবেনা। আর ইহার ব্যত্যয় ঘটলে মালিক সমিতি তার কোন দায়িত্ব নিবে না।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উচিত বাণিজ্যিকভাবে আমদানীকৃত পণ্যের শুল্কহার কমিয়ে দেওয়া, যাতে বন্ডের অপব্যবহার কমে। কারণ আমদানীকৃত পণ্যের শুল্ক তুলনামূলক কম হলে কাপড় ব্যবসায়ীরা বন্ডের কাপড় বিক্রয় করবে না, এতে তাদের ব্যবসায়িক মূলধন হারানোর ঝুঁকি অনেক বেশী। তাই সরকারের উচিত গবেষণার মাধ্যমে এই শুল্ক নীতিমালা পুনরায় প্রনায়ন করা। তাহলে, সরকার একদিকে যেমন এই সেক্টর থেকে বেশি রাজস্ব আদায় করতে পারবে, অন্য দিকে দেশীয় শিল্পকেও রক্ষা করা সম্ভব হবে।
মুল লেখকঃ
রায়হান আহমেদ
ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অফ্ গভর্ন্যান্স এন্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি), ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা সহযোগী হিসেবে কর্মরত। নিবন্ধে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব, প্রতিষ্ঠানের নয়।
গবেষণাটি করা হয়েছে এন্টি করাপশন এভিডেন্স (এইস) সমষ্টির অংশ হিসেবে, সওয়াস-এইস-এর অর্থায়নে।
কিভাবে বন্ডের অপব্যবহার লোকাল টেক্সটাইল এবং গার্মেন্টস শিল্পের ক্ষতি করে
শাহজাদপুর: যে হাটে দেশের ক্রেতাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আসেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর কাপড়ের হাটে সপ্তাহে দু'দিন হাট বসে। প্রতি হাটে লেনদেন হয় ১৫০-২০০ কোটি টাকার।
লেনদেনের বিশাল অঙ্কের কারণে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের কাপড়ের হাটকে বলা হয় দেশের ‘সবচেয়ে বড়’ কাপড়ের হাট।
বিশাল আড়তের ভেতর ছোট ছোট দোকান, অগুনতি পাইকার-খদ্দেরের আনাগোনা, দরদামের হাঁকাহাকি, চারদিকে কাপড়ের বান্ডিল আর গাঁটের ছড়াছড়ি – হাটবারগুলোয় শাহজাদপুর কাপড়ের হাটের চিত্র এটি। সপ্তাহের রবি ও বুধ- এ দু'দিন রবীন্দ্র কাছাড়ি বাড়ির গা ঘেঁষে বসে এ হাট। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সীমান্তের ওপার থেকেও আসেন ক্রেতারা। পাইকার-খদ্দেরের হাঁকডাক আর কোলাহলে তিল ধারণের জায়গা থাকে না সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের এই কাপড়ের হাটে।
একসময় শাহজাদপুরে হাট বসত সোম ও বৃহস্পতিবার। কাপড়ের বাজারের পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুধু কাপড়ের বিক্রি-বাট্টার জন্য আলাদা করে নির্ধারণ করা হয় দুটো হাটবার। রবিবার ও বুধবার। হাট শুরু হয় মূলত শনিবার ও মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই। রবি ও বুধবারে হাটের বিক্রি-বাট্টা থাকে মধ্যগগনে।
বিক্রেতারা জানান, হাটবারগুলোয় এখানে খুচরা-পাইকারি বিভিন্ন দরে কয়েকশ কোটি টাকার বিক্রি-বাট্টা হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকারি খরিদ্দাররা, যাদের 'পাইকার' নামেও পরিচিত, এসে পাইকারি দরে কাপড় কিনে নিয়ে যান। দেশের বাইরে থেকেও খদ্দের আসে। এ হাটের শতকরা ৩০ থেকে ৪০ ভাগ কাপড় ভারতীয় পাইকাররা কিনে নিয়ে যায়।
গত আট বছর ধরে এই হাটে ভারতীয় পাইকারদের সঙ্গে ব্যবসা করছেন 'সোনালি শাড়ি হাউস'-এর মালিক সিরাজুল ইসলাম। হাটের বিক্রি-বাট্টার বিষয়ে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে তিনি বলেন, 'ইন্ডিয়ান পাইকাররাই আমার দোকানের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। আগে পাকিস্তান থেকেও খরিদ্দার আসত। এখন আর তারা আসে না। দেশের মধ্যে চিটাগাঙের ব্যবসায়ীরা বেশি আসে। একটা সময় ছিল যখন লেনদেন হইতো ক্যাশে। এখন ট্যাকার অঙ্ক হাজার বা লাখ যাই হোক সব অনলাইন ব্যাংকিংয়েই হয়'।
শাড়ি বা লুঙ্গির দোকানগুলোয় খোঁজ নিয়ে দেখা যায় প্রায় প্রতিটি দোকানের পাইকারি খরিদ্দার বাঁধা। ক্রেতা-বিক্রেতার এমন বিশ্বস্ততার সম্পর্ক নির্মিত হতে অনেকদিন সময় লাগে। এমনও দোকান পাওয়া গেছে যেখানে ক্রেতা-বিক্রেতার সম্পর্ক কয়েক প্রজন্মের।
গৌড় বসাক নামক একজন ভারতীয় পাইকার জানান, তিনি প্রায় প্রতি মাসেই পাইকারি দরে শাড়ি কিনতে শাহজাদপুর হাটে আসেন। পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমানে 'গৌড় এন্ড সন্স' নামে তার একটি শাড়ির দোকান আছে। কথায় কথায় তিনি বলেন, 'তাঁতের শাড়ি ভারতেও উৎপাদিত হয়। গুণে-মানে মোটামুটি ভালোই। কিন্তু দামে বেশি। বাংলাদেশের কাপড়ের হাটগুলোয় ভারতের বাজারের চেয়ে বেশ কম দামে তাঁতের কাপড় পাওয়া যায়। তাই এদিকে আসি আমরা।'
গৌড় বসাকের মতো চিত্তরঞ্জন বসাক, সুকুমার ঘোষ, কাশী নন্দীও নিয়মিত বাংলাদেশের হাটগুলোয় যাতায়াত করেন। শাহজাদপুর হাটে মোটামুটি তাদের দোকান বাধা।
চট্টগ্রাম থেকে আগত একজন পাইকার বলেন, চট্টগ্রামে শাহজাদপুরের শাড়ি-লুঙ্গির ব্যাপক চাহিদা। এখান থেকে কাপড় নিয়ে আমরা নিজেদের দোকানের ব্র্যান্ডের মার্কা লাগিয়ে শো-রুমে খুচরা দরে সেগুলো বিক্রি করি। কাপড়ের বিক্রি কমে যাওয়ায় অনেকসময় পুরো টাকা পরিশোধ করতে পারি না। তখন বাকিতে মাল নিয়ে সেগুলো বিক্রি করে তারপর দেনা পরিশোধ করতে হয়। বাকিতে কাপড় দেওয়ার বিষয়টি নির্ধারিত হয় বিশ্বস্ততার জায়গা থেকে। খরিদ্দার বিশ্বস্ত হলে বিক্রেতারা কোটি টাকার উপরেও বাকি দেয়। কাপড়ের বাজারে ধস নামলে বা বিক্রি-বাট্টা কমে গেলে অনেক ব্যবসায়ীর মূলধন বা পুঁজি আটকা পড়ে যায়।
ছবি: মেহেদি হাসান/ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের কাপড়ের হাটকে বলা হয় দেশের 'সবচেয়ে বড়' কাপড়ের হাট। এছাড়া, পাবনার 'আতাইকুলার হাট', সিরাজগঞ্জের 'সোহাগপুরের হাট', 'এনায়েতপুরের হাট' ও টাঙ্গাইলের 'করটিয়ার হাট' প্রসিদ্ধ ও বিখ্যাত। তবে এ হাটগুলোর তুলনায় শাহজাদপুর হাটের বিশেষত্ব হল এখানে গ্রে কাপড়ের চেয়ে প্রক্রিয়াকৃত কাপড়ের বাজার ভালো।
গ্রে-কাপড় মানে তাঁত থেকে সদ্য নামানো কাপড়। এ ধরনের কাপড় সরাসরি পরিধানের উপযুক্ত নয়। এ কাপড়ের অসুবিধা হল এটিকে ক্যালেন্ডারিং করে খুচরা বাজারে ছাড়তে হয়। তাই, বিদেশি বা বহিরাগত খরিদ্দাররা একদম রেডিমেড কাপড় কিনতে বেশি আগ্রহী হয়। আর শাহজাদপুর কাপড়ের হাট রেডিমেড কাপড়ের জন্য প্রসিদ্ধ। তবে, সিরাজগঞ্জের অন্য দুই বড় হাট, সোহাগপুর ও এনায়েতপুর হাটে গ্রে কাপড় বেশি চলে। শাহজাদপুরের অনেক পাইকার সেখান থেকে গ্রে কাপড় নিয়ে এসে প্রক্রিয়াজাত করে কাপড়ের গায়ে নিজেদের ব্র্যান্ডের লোগো লাগিয়ে বাজারে ছাড়ে।
শাহজাদপুর কাপড়ের হাট এক বিস্তৃত মহাযজ্ঞ। প্রতিবছর এ হাটের ইজারা ডাকে শাহজাদপুর পৌরসভা। হাটটি পৌরসভার দ্বারিয়াপুর গ্রামের অন্তর্গত হওয়ায় পৌরসভা হাট ডাকার এখতিয়ার লাভ করেছে।
ফেব্রিক মার্কেট - শাহজাদপুর কাপড়ের হাট | Bangladeshi Fabric Market
পোশাক বিক্রেতাদের কিছু কমন মার্কেটিং টিপস যা আপনার জানা উচিৎ
পোশাকের দোকানে গিয়ে সেলসম্যানের মিষ্টি ব্যবহার আর কথায় আমরা মুগ্ধ হই। আবার সেখানে এমন কিছু বিষয় থাকে, যা আপনাকে পোশাক কিনতে আকৃষ্ট করে। অথচ আপনি জানেনই না, এইসব কিছুর আড়ালে রয়েছে আসলে কিছু কৌশল, যা অনেক ক্ষেত্রেই সত্য গোপন করে।। আর এ সমস্ত কৌশলই ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে। কিন্তু একজন ক্রেতা হিসেবে আপনি যদি তাদের কৌশলগুলো জানেন, তবে অযথা ঠকে যাবার ভয় থাকে না।
চলুন জেনে নিইে সেরকম ১০টি বিষয়, যা আমরা জানি না।
১ ‘ডিসকাউন্ট’ এর নামে বোকা বানানো
‘ওয়াও, ৭০% পর্যন্ত ডিসকাউন্ট! এখনই কিনতে হবে।’ এমনটিই ভাবছেন তো? একটু থামুন! আমরা অনেক সময় ‘ডিসকাউন্ট’ ধাঁধাঁয় পরে যাই। মনে হয়, কম টাকায় অনেক কিছু কেনা যাবে। আসল ব্যাপার হলো, ডিসকাউন্ট দেওয়ার আগেই পোশাকগুলোর দাম অনেক বাড়ানো হয়। আবার হাতে গোনা দুই-একটি পোশাক ৭০% পর্যন্ত ডিসকাউন্টে বিক্রি করে। বাকিগুলো ১০% বা তার কাছাকাছি। তাই পোশাক কিনে জিতেছেন কিনা সেই অংকটা নিজেই একটু মিলিয়ে নিন।
২ একেক ব্রান্ডের পোশাকের মাপ একেক রকম
ব্রান্ডের ধরণভেদে পোশাকের সাইজেও তারতম্য হয়ে থাকে। আপনি যে সাইজের পোশাকটি খুঁজছেন সেটি হয়তো অন্য ব্রান্ডের ক্ষেত্রে আলাদা। কিন্তু একথা বিক্রেতা আপনাকে নাও জানাতে পারে। ফলে সঠিক সাইজের কাপড় নির্বাচনে আপনাকে একটু মুশকিলে পরতে হয় বৈকি!
৩ বিখ্যাত ডিজাইনারের তৈরি পোশাক মানেই ‘মানসম্মত’ নয়
অনেক সময় নামি দামি ফ্যাশন হাউজগুলো বিখ্যাত ডিজাইনারদের নামে পোশাক বের করে। এগুলোর মূল্য সাধারণ পোশাকের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি হয়ে থাকে। এদের উদ্দেশ্য- ক্রেতাদের কাছ থেকে আরও বেশি টাকা হাতিয়ে নেওয়া। যদিও ফ্যাশন হাউজগুলোর অল্প কিছু পোশাকই কেবল নামকরা ডিজাইনাররা তৈরি করেন, সবগুলো নয়।
৪ উদ্দেশ্যমূলকভাবে পোশাকের এলোমেলো প্রদর্শনী
পোশাক কিনতে গিয়ে সাধারণ একটি ভুল অনেকেই করেন। অনেক সময় দোকানে কিছু কাপড় অগোছালো ও গাদাগাদি করে রাখা থাকে। সেগুলো দেখে ভাবেন, তুলনামূলক সস্তায় বুঝি কাপড়গুলো পাওয়া যাবে! সেক্ষেত্রে অবশ্যই মনে রাখা দরকার যে, ফ্যাশন হাউজগুলো যথেষ্ট লাভ রেখেই কাপড়ের দাম নির্ধারণ করে। ফলে ওই কাপড়গুলোকে সস্তা ভাবলে নিজেই পরবেন শুভঙ্করের ফাঁকিতে।
৫ রং উজ্জ্বল করতে ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার
‘১০০% প্রাকৃতিক’ লেবেল দেখে কি ভাবছেন পোশাকগুলো আপনার স্বাস্থ্যের জন্য শতভাগ নিরাপদ? না, সবসময় কথাটি সত্য নয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পোশাকের রং উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয় করতে রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয় যা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়া দোকানের কোন পোশাকে রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়েছে তা সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা কঠিন। ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা না হলে ধরতে পারা যায় না। এ জন্য নতুন কাপড় সবসময় ধুয়ে পরতে হয়। তাতে কিছুটা হলেও ত্বকের ক্ষতি এড়ানো যায়।
৬ সিনথেটিক ও সুতি কাপড়ের মূল্য একই
অনেকেই মনে করেন, সিনথেটিক কাপড়ের দাম সুতি ও উলের চেয়ে বেশি। তাই সিনথেটিক কাপড় কেনার আশা ছেড়ে দেন। ব্যাপারটি মোটেও সঠিক না। বাস্তবে সিনথেটিক, সুতি ও উলের কাপড় একই উপাদানে তৈরি। ফলে দামটাও সমান।
৭ একই ডিজাইন, কিন্তু ‘মানে’ পার্থক্য
অনেক সময় একই কোম্পানি শো-রুম ও খোলা মার্কেটের জন্য একই ডিজাইনের কাপড় তৈরি করে। কিন্তু এই দুই রকমের কাপড়ে মানে আকাশ পাতাল ব্যবধান থাকে। স্বল্প আয়ের মানুষকে টার্গেট করে খোলা মার্কেটে বিক্রির উদ্দেশ্যে কিছু নিম্নমানের কাপড় তৈরি করা হয়। অন্যদিকে শো-রুমের পোশাকগুলো হয় বেশি আরামদায়ক।
৮ চকচক করলেই সোনা হয় না
কাপড়ের আসল সৌন্দর্য এর রঙে। ঝলমলে রং, সুন্দর প্রতিচ্ছবি বা জরির কাজ দেখে পোশাক কেনে সবাই। কিন্তু একবার ধোয়ার পরেই রং উঠে যায়। এর কারণ- নিম্নমানের কাপড়ের ওপর জমকালো কাজ করে চড়া দামে সেই কাপড় বিক্রি করা হয়। ফলে ভালভাবে রং করা হলেও কাপড়ে রং বসে না।
৯ ফ্যাশনে নিত্য নতুন পরিবর্তন
প্রায় প্রত্যেক সপ্তাহে পোশাক শিল্পে আসছে পরিবর্তন। যার ফলে ফ্যাশন হাউজগুলোর নিত্য নতুন পোশাক আমাদের নজর কাড়তে বাধ্য। তাই সাধ্যের মধ্যে থাকলে কেউ তার পছন্দের পোশাকটি ছেড়ে আসতে চায় না! অনেক সময় সাধ্যের বাইরেও যায় মানুষ। কারন, পরিবর্তিত ফ্যাশনের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে হবে তো! এজন্য চড়া দামে চলতি ফ্যাশনের নতুন পোশাকটি কিনতে বাধ্য করে ফ্যাশন হাউজগুলো।
১০ যা পছন্দ করছেন সেটিই সেরা!
আপনার পছন্দের মধ্যে যে পোশাকটির দাম বেশি সেই পোশাক আপনাকে বেশি মানাবে বলে বিক্রেতা আশ্বাস দেয়। একটু পর আপনি আরও দামি পোশাক পছন্দ করলেন, তখন আগের কথার সুর পাল্টিয়ে বিক্রেতা বলে, দ্বিতীয় পোশাকে আপনাকে আরও আকর্ষণীয় লাগবে। শুধু তাই নয়, আপনার পছন্দের পোশাক নাকি দোকানের সবথেকে সেরা পণ্য! এভাবে কথার ফুলঝুড়ি চলতেই থাকে। বিক্রেতার প্রলোভনে ডুবে না গিয়ে নিজের পছন্দ ও প্রয়োজনীয় পোশাক কিনতে পারাই আসল কথা।
সংগ্রীহিত পোস্ট
পোশাক বিক্রেতাদের কিছু কমন মার্কেটিং টিপস যা আপনার জানা উচিৎ | Fabric Marketing
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)