নিচের প্রশ্ন ও উত্তর গুলো নিচের আয়ত্ত করতে পারলে মোটামুটি ইন্টারভিউ তে সহজ হবে বলে আশা করি।
১) বাংলাদেশ শ্রম আইনে কতটি ধারা আছে?
উত্তরঃ ২০০৬ শ্রম আইনে ৩৫৪ টি ধারা আছে ।
২) কত জন শ্রমিক কাজ করলে একটি প্রতিষ্ঠানকে কারখানা বলে?
উত্তরঃ বছরে ৫ জন বা ততোধিক । ধারা-২(৭)
৩) কিশোর শ্রমিকের বয়স কত বছর পর্যন্ত?
উত্তরঃ ১৪ এর উর্দ্ধে-১৮ নিচে । ধারা-২(৮)
৪) গ্রাচুইটি অর্থ কি?
উত্তরঃ
কোন শ্রমিকের প্রতি পুর্ন বৎসর চাকুরী অথবা ছয় মাসের অতিরিক্ত সময়ের চাকুরীর জন্য তাহার সর্বশেষ প্রাপ্ত মজুরী হারে নূন্যতম ৩০ দিনের মজুরী অথবা ১০ বৎসরের অধিককাল চাকুরীর ক্ষেত্রে তাহার সর্বশেষ প্রাপ্ত মজুরী হারে ৪৫ দিনের মজুরী যাহা উক্ত শ্রমিককে তাহার চাকুরীর অবসানে প্রদেয় । ধারা-২(১০),সংশোধন-৩(গ)-দফা ১০
৫) ছাঁটাই অর্থ কি?
উত্তরঃ অপ্রয়োজনীয়তার কারনে মালিক কর্তৃক শ্রমিকের চাকুরীর অবসান । ধারা-২(১১)
৬) ডিসচার্জ কি?
উত্তরঃ শারিরীক অথবা মানষিক অক্ষমতার কারনে অথবা অব্যাহত ভগ্ন স্বাস্থ্যের কারনে মালিক কর্তৃক শ্রমিকের চাকুরীর অবসান । ধারা-২(১৭)
৭) দিন অর্থ কি?
উত্তরঃ ভোর ছয় ঘটিকা হইতে শুরু করিয়া কোন চব্বিশ ঘন্টা সময় । ধারা-২(১৯)
৮) বরখাস্ত অর্থ কি?
উত্তরঃ অসদাচরনের কারনে মালিক কর্তৃক শ্রমিকের চাকুরীর অবসান । ধারা-২(৩৯)
৯) শিশু শ্রমিকের বয়স কত বছর পর্যন্ত ?
উত্তরঃ ১-১৪ বছর । ধারা-২(৬৩)
১০) শ্রমিক কত প্রকার?
উত্তরঃ শ্রমিক ৭ প্রকার (অতিরিক্ত বেড়েছে মৌসুমি শ্রমিক) । ধারা-৪,সংশোধনী-৬(ক)-উপধারা ১
১১) শ্রমিকের শিক্ষনবিসকাল কত হইবে ?
উত্তরঃ
কেরানী সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত শ্রমিক ৬ মাস ও অন্যান্য শ্রমিক ৩ মাস, শর্ত থাকে যে কাজের মান নির্নয়ের ক্ষেত্রে আরও ৩ মাস বৃদ্বি করা যাবে ।
১২) কনফারমেশন পত্র না পেলে কিভাবে স্থায়ী হবে?
উত্তরঃ শিক্ষানবিসকাল শেষে বা তিন মাস মেয়াদ বৃদ্বি শেষে কনফরমেশন লেটার দেওয়া না হইলেও উপ-ধারা (৭) এর বিধান অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট শ্রমিক স্থায়ী বলিয়া গন্য হইবে । ধারা-৬(গ)-উপধারা ৮
১৩) কেমন পরিচয়পত্র দিতে হবে এবং পরিচয় পত্র হারিয়ে গেলে কত টাকা ফি দিয়ে নকল কপি পাওয়া যাবে?
উত্তরঃ ছবি সহ পরিচয়পত্র এবং ফি ৫০ টাকা । ধারা-৫,বিধি-১৯(৬)
১৪) নিয়োগপত্র,পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রধান তথ্য প্রদান রেজিস্টারে কত নং ফরম অনূযায়ী সংরক্ষন করতে হবে?
উত্তরঃ ফরম ৬(ক)
১৫) সার্ভিস বই কে তৈরি খরচ বহন করবে এবং কার হেফাজতে থাকবে ?
উত্তরঃ মালিক নিজ খরচে তৈরি করবে এবং প্রত্যেক সার্ভিস বই মালিকের হেফাজতে থাকবে ।ধারা-৬(১),৬(২)
১৬) সার্ভিস বইটি কিরূপ ও কোন ফরম অনুযায়ী হইবে?
উত্তরঃ ১৬ পৃষ্ঠার এবং ফরম ৭ । বিধি-২০(১)
১৭) শ্রমিকের সার্ভিস বই কতদিনের মধ্যে খুলিবার ব্যবস্থা করিতে হইবে?
উত্তরঃ শ্রমিক নিয়োগ ও শিক্ষানবিশকাল সমাপ্ত হইবার ১৫ দিনের মধ্যে। বিধি-২২(১)
১৮) সার্ভিস বুকের নকল কপি পেতে হলে কত টাকা ফি লাগবে ?
উত্তরঃ ২০ টাকা । ধারা-২২(৩)
১৯) ছুটির রেজিস্টার ডিজিটাল ভাবে সংরক্ষন করা যাবে কি না?
উত্তরঃ
ফরম ৯,ডিজিটাল ভাবে সংরক্ষন করা যাবে তবে তার মুদ্রন কপি ব্যক্তিগত নথিতে রাখতে হবে । বিধি-২৪(১)
২০) কত দিন কাজ করলে ১ বছর এবং ৬ মাস গণনা করা হয় ?
উত্তরঃ
কোন শ্রমিক কোন প্রতিষ্ঠান পূর্বর্তী বার পঞ্জিকা মাসে বাস্তবে অন্তত ২৪০ দিন বা ১২০ দিন কাজ করে থাকেন,তাহলে তিনি যথাক্রমে ০১ বৎসর বা ৬ মাস প্রতিষ্ঠানে অবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করেছেন বলে গন্য হবে । তবে সে ক্ষেত্রে কোন শ্রমিকের বাস্তবে কাজ করার দিন গননার ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত দিনগুলো গননার অংশ হবেঃ ১. তার পে অফ এর দিন গুলো । ২. অসুস্থতা বা দূর্ঘটনার কারনে মজুরীসহ বা বিনা মজুরীতে ছুটির দিনগুলো । ৩. বৈধ ধর্মঘট বা অবৈধ লক-আউটের কারনে কর্মহীন দিনগুলো । ৪. মহিলা শ্রমিকগনের ক্ষেত্রে অনধিক ১৬ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রসুতি ছুটি। ধারা-১৪
২১) কতদিন মেয়াদ হলে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপুরন পাওয়া যাবে এবং কি পাবে?
উত্তরঃ
শ্রমিক অবিচ্ছিন্নভাবে অন্তত -০২ (দুই) বৎসরের অধিকাল চাকুরীরত থাকা অবস্থায় মৃত্যবরন করেন, প্রত্যেক পূর্ণ বৎসর বা উহার ০৬ মাসের অধিক সময় চাকুরীর জন্য ক্ষতিপুরন হিসাবে ৩০(ত্রিশ) দিনের এবং প্রতিষষ্ঠানে কর্মরত অবস্থায় অথবা কর্মকালীন দূর্ঘটনার কারনে পরবর্তীতে মৃত্যুর ক্ষেত্রে ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের মজুরী অথবা গ্র্যাচুইটি, যাহা অধিক হইবে প্রদান করিবেন এবং এই অর্থ মৃত শ্রমিক চাকুরী হইতে অবসর গ্রহন করিলে যে অবসর জনিত সুবিধা প্রাপ্ত হইতেন, তাহার অতিরিক্ত হিসাবে প্রদেয় হইবে। ধারা-১৯,১০-১৯ এর সংশোধন
২২) কি কারনে চাকুরী থেকে শ্রমিক ছাটাই করা যাবে ?
উত্তরঃ
কোন শ্রমিককে প্রয়োজন অতিরিক্ততার কারনে কোন প্রতিষ্ঠান হতে ছাটাই করা যাবে Team Leader
২৩) চাকুরী হতে কোন শ্রমিককে ডিসর্চাজ করা যাবে?
উত্তরঃ
রেজিষ্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক শারীরিক, মানসিক অক্ষমতার বা অব্যহত ভগ্ন স্বাস্থ্যের কারনে চাকুরী হইতে ডিসচার্জ করা যাইবে । শ্রমিক অথবা মালিক সন্তষ্ট না হইলে প্রাপ্তির ১০ (দশ) দিনের মধ্যে পুনরায় করা যাবে ।ধারা-২২,বিধি-২৮(২)
২৪)ডিসচার্জ কৃত শ্রমিক কি ক্ষতিপুরন পাবে?
উত্তরঃ
অনূন্য ১ বছর চাকুরী সম্পন্ন করিলে প্রত্যেক পছর চাকুরীর জন্য ৩০ দিনের মজুরী অথবা গ্রাচুইটি যেটি অধিক হয় তাহা প্রদেয় হইবে । ধারা-২২(২)
২৫) অসদাচরন এর জন্য বরখাস্ত হলে কি ক্ষতিপুরন পাওয়া যাবে?
উত্তরঃ
অসদাচরন ( মালিকের ব্যবসা বা সম্পত্তি সম্পর্কে চুরি, আত্নসাৎ, প্রতরনা বা অসাধুতা, প্রতিষ্ঠানে উচ্ছৃংখল, দাংগাহাঙ্গামা, অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর মুলক আচরন অথবা শৃংঙ্খলা হানিকর কোন কর্ম) এর জন্য বরখাস্ত করা হলে তিনি কোন ক্ষতিপুরন পাবেনা । ধারা-২৩(৪)খ,১১-২৩ এর সংশোধন-ক
৩২) মালিক কর্তৃক বিনা নোটিশে টার্মিনেট/চাকুরীর অবসান কিভাবে করা যাবে?
উত্তরঃ
মালিক বিনা নোটিশে কোন শ্রমিকের চাকুরী অবসান করতে চাইলে সে ক্ষেত্রে প্রদেয় নোটিশ মেয়াদের পরিবর্তে মজুরী প্রদান করে ইহা করতে পারবে: ১. স্থায়ী: মাসিক মজুরীর ভিত্তিতে নিয়োজিত শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৬০ দিনের নোটিশ প্রদান করিয়া অবসান । ২. অস্থায়ী: মাসিক মজুরীর ভিত্তিতে নিয়োজিত শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৬০ দিনের নোটিশ, অন্য শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৩০ দিনের নোটিশ প্রদান করিয়া অনসান । ধারা- ২৬(১), ২৬(২), ২৬(৩)
৩৩) শ্রমিক সেচ্ছায় চাকুরী থেকে অব্যহিত নিতে চাইলে কত দিন পুর্বে জানাতে হবে?
উত্তরঃ
স্থায়ী শ্রমিক: সেচ্ছায় চাকুরী থেকে অব্যহিত নিতে চাইলে ৬০ দিন পুর্বে কর্তৃপক্ষকে লিখিত নোটিশ দিতে হবে । অস্থায়ী শ্রমিক : মাসিক মজুরীর ভিত্তির ক্ষেত্রে ৩০ দিন এবং অন্যদের ক্ষেত্রে ১৪ দিন । বিধি-২৭(১), ২৭ (২)
৩৪) বিনা নোটিশে শ্রমিক চাকুরী অব্যহিত নিতে করনীয় কি?
উত্তরঃ
যদি কোন শ্রমিক বিনা নোটিশে চাকুরী থেকে অব্যহতি নেন নোটিশ মেয়াদের সমপরিমান মজুরীর টাকা মালিককে প্রদান করতে হবে । ধারা-২৭(৩)
৩৫) বিনা নোটিশে শ্রমিকের কর্মস্থলে ১০ দিনের বেশী অনুপস্থিতি থাকলে মালিকের কি করনীয়?
উত্তরঃ
১. ১০ দিনের সময় প্রদান করিয়া অনুপস্থিতির ব্যাখ্যা প্রদান এবং চাকুরীতে পুনরায় যোগদানের জন্য নোটিশ প্রদান ২. অনুপস্থিতির ব্যাখা প্রদান এবং পুনরায় যোগদান না করিলে আত্নপক্ষ সমর্থনের জন্য ০৭ দিনের সময় প্রদান ৩. চাকুরীতে যোগদান বা আত্নপক্ষ সমর্থন না করিলে শ্রমিক অনুপস্থিতির দিন হইতে চাকুরী হইতে অব্যহতি গ্রহন করিয়াছে বলে গণ্য হইবে । ধারা-১৩ থেকে ২৭ এর সংশোধন
৩৬) কত দিন কাজ করলে সার্ভিস বেনিফিট পাওয়া যাবে এবং তার পরিমান কত হবে?
উত্তরঃ
পাঁচ বছর বা তদুর্ধ্ব কিন্ত দশ বছরের কম হলে ১৪ দিন এবং দশ বছর বা তদুর্ধ্ব হলে ৩০ দিনের মজুরী অথবা গ্রাচুইটি যাহা বেশি হইবে তা প্রদান করিবেন । ধারা-২৭(৪)08:39 AM
৩৭) কত বছর বয়স হলে চাকুরী থেকে স্বাভাবিক অবসর নেওয়া যাবে?
উত্তরঃ
শ্রমিকের বয়স ৫৭ বছর পুর্ন হলে স্বাভাবিক অবসরগ গ্রহন করবে । শ্রমিককে ইচ্ছা করলে পরবর্তীতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া যাইবে । ধারা-২৮(১,৪)
৩৮) অবসর, ডিসচার্জ , ছাটাই, বরখাস্ত এবং চাকুরীর অবসানের টাকা কত দিনের মধ্যে প্রদান করতে হবে?
উত্তরঃ
শ্রমিকের চাকুরীর ছেদ ঘটার সর্বোচ্চ পরবর্তী ৩০ কর্ম দিবসের মধ্যে তার সকল প্রাপ্য পাওনা পরিশোধ করতে হবে। ধারা-৩০
৩৯) চাকুরীর অবসান যে প্রকারেই হোক না কেন বাসস্থান হইতে কত দিনের মধ্যে উচ্ছেদ হবে?
উত্তরঃ
চাকুরীর অবসানের ৬০ দিনের মধ্যে বরাদ্দকৃত বাসস্থান ছেড়ে দিতে হবে। তবে শর্ত থাকে যে, শ্রমিকের সকল পাওনা পরিশোধ না করিয়া কোনভাবেই বাসস্থান হইতে উচ্ছেদ করা যাবে না । বিধি-৩২(১), ১৫-৩২ এর সংশোধন
৪০) চাকুরী ফেরত পেতে প্রতিকার পেতে হলে কত দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে?
উত্তরঃ
কোন কারনে লেঅফ,ছাটাই ইত্যাদি হলে এবং এর কারনে কোন প্রতিকার পাইতে ইচ্ছুক হলে অভিযোগের কারন অবহ্যিত হওয়ার তারিখ হইতে ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগটি লিখিতকারে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে মালিকের নিকট পেশ করবেন । তবে শর্ত থাকে যে, যদি নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অভিযোগটি সরাসরি গ্রহন করে লিখিতভাবে প্রাপ্তি স্বীকার করেন,সেই ক্ষেত্রে উক্ত অভিযোগটি রেজিস্ট্রি ডাকযোগে না পাঠাইলেও চলবে । ধারা-৩৩
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন