গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিতে রোবোটিক্স | Robotics on Garments Industry - Textile Lab | Textile Learning Blog
গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিতে রোবোটিক্স।



১৯৯৮ সালে ইয়াংওয়ান ঢাকা ইপিজেড ফ্যাক্টরিতে এসিস্টেন্ট ম্যানেজার মার্চেন্ডাইজিং হিসেবে জয়েন করার পর থেকেই একটা মাস্টার্স পাস কেরানী মনে হতে লাগলো নিজেকে। ডিপার্টমেন্ট এ লোকবল এর তুলনায় কম্পিউটার কম ছিল তখন। তারপরেও সারাদিন শুধুই এক্সেল আর ইমেইলের উপরেই জীবনযাপন , একটার পর আরেকটা স্ট্যা
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEggpg4WB_saHHBlSDh7EvdSkpsa1TYajkWJCJJgHyVir6vznda3iM8K9pnKv8Bf8o5O6s3XdjRAr-fd8_UrEY_IkmYiB6r4FHG3EbmiNhhS4nNnGdtsUd96OSPVgqDOv6kS3mzZDT2lsVlc/h118/get_it_google_play.jpg
টাস রেডি করা, 

সাপ্লায়ার দের অনবরত ফোন কল, শিপমেন্টের রাতে, বারোটা পর্যন্ত এসোর্টমেন্ট মিলানো, রুটিন মাফিক নুরুর রহমান ভাইয়ের ঝাড়ি খাওয়া। অঘটনের সংবাদ পেয়ে ফ্লোরে ছুঁটে যাওয়া, জিপার অর্ডার ভুল, সুতা কম আসছে , ফ্যাব্রিক কনসাম্পশন ঠিক মতো দেয়া হয়নি, বায়ারের একটা ইম্পর্টেন্ট মেইলের এনসার করার কথা মনেই নাই, এক্সেল আপডেটে বেশ কয়েকটা ভুল, ৭৬৭ টা মেইল এখনো আনরিড ! এই সকল কিছু মিলিয়ে ত্যাক্তবিরক্ত জীবন। 

তবে একটা বিষয় আমাকে ভীষণ ভাবে চিন্তিত করে রাখতো , এর একটা সমাধান বের করতেই হবে, এইভাবে কাজ করলে আমাদের ইন্ডাস্ট্রির কোনদিন উন্নতি হবেনা, অবশ্যই নতুন কিছু করতেই হবে। যেমন কিভাবে একটা এক্সেল শিট এ সকল ডাটা রাখার ব্যবস্থা রাখা যায়, এত এত এক্সেল শিট তৈরী করতে আর ভালোই লাগেনা , সবার জন্য একটা শিট আপডেটেড রাখার কি ব্যবস্থা করা যায়, এবং একটা এক্সেল শীটের সাথে আরেকটা শিটের কোন কানেকশান নেই , পুরোপুরি ডিসকনেক্টেড একটা সিস্টেম ! এমন কি কোন সল্যুশন পাওয়া যাবে যা আমার জীবন কে একটু স্বস্তি দিবে , নিম্নোক্ত কাজ গুলো করে দিবে :   

১। আমার হয়ে রুটিন মাফিক সাপ্লায়ার কে ফোনে , ইমেইলে রিমাইন্ডার পাঠাবে। মেটেরিয়াল আমার ফ্যাক্টরিতে না পৌঁছানো পর্যন্ত তাকে বিরক্ত করে মারবে।  

২। আমার ২০০ প্রকার টিএন্ডএ এর চেক লিস্ট করে আমাকে রিমাইন্ডার পাঠাবে , কোনটা এখনো করা হয়নি তার লিস্ট আলাদা করে দিবে।   

৩। আমার ইমেলগুলো রাতভর চেক করে ইম্পর্টেন্ট মেইলগুলো আলাদা করে দিবে।  

৪। বায়ারকে আমার হয়ে কার্টেসি উত্তর দিয়ে দিবে। 

৫। ইমেইল চেক করে পিডিএফ গুলো ডাউনলোড করে ইআরপি তে ডাটা এন্ট্রি করে দেবে, এক্সেল ফাইল তৈরী করে প্রোডাকশন, স্যাম্পল , কোয়ালিটি তে আমার হয়ে মেইল করে দেবে। 

৬। অর্ডারশিট রিভাইস হলে নিজে থেকে মেইল চেক করে পিও শিট ডাঊনলোড করবে এবং যে ইফর্মেশন গুলো চেঞ্জ হয়েছে শুধু সেই জায়গাগুলো আপডেট করে , সবাইকে মেইলে পাঠিয়ে দিবে।

 ৭। বাংলাদেশ ব্যাংকের পোর্টালে ঢুকে সবগুলো ইএক্সপি চেক করবে , ইনসেনটিভ চেক করবে আর মিলিয়ে মিলিয়ে বলে দেবে কোনটার পেমেন্ট ম্যাচুরিটি কবে। ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক আকাশ কুসুম কল্পনা করতাম। জীবনটা না কোটি সহজ হতে পারতো , আমি নিজেকে আরো ইফিসিয়েন্ট মার্চেন্ডাইজার হিসেবে গড়ে তুলতে পারতাম , আরো অনেক বেশি অর্ডার হ্যান্ডেল করতে পারতাম !  
দুই দশক পার হয়ে গেলো কোন সমাধান খুঁজে পেলাম না। কিন্তু ২০১৮ সালে এসে একটা আলোর মুখ দেখতে পেলাম। একটা রোবট আমার হয়ে এই সকল কাজ গুলো নির্ভুল হয়ে করে দিতে পারে এমন একটা বিষয় একটা সেমিনার এ আলোচনা হচ্ছিলো। হাসপাতাল, ইন্স্যুরেন্স, ব্যাংকিং, টেলিকম ইত্যাদি সেক্টরে তারা এই জাতীয় সমাধান নিয়ে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে।  শুরু করলাম পড়াশুনা, রিসার্চ, নেট ঘাটা , এই রিলেটেড লিংক খুঁজে তাদের সাথে বন্ধুতা পাতানো , লিংকডিনে অনবরত বিরক্ত করতে থাকা।  

অনেক গুলো সমাধান খুঁজে বের করা সম্ভব হয়েছে। রোবোটিক প্রসেস অটোমেশনের মাধ্যমে এই সকল কাজের সল্যুশন নিয়ে কিছু পাইলট প্রজেক্ট করার দরকার , কিছু অর্থ কড়ি দরকার এই সকল রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্টের জন্য। আমার কানেকশনে থাকা সকলের প্রতি উদাত্ত আহবান আসুন সকলে মিলে এই নতুন দিনের স্বপ্ন দেখি , ইন্ডাস্ট্রিটাকে আরো গতিশীল করে তুলি।  

ইন্ডাস্ট্রিটা বাঁচলে দেশ টা বাঁচবে....

Published on January 15, 2020
Author’s photo
Habibur Rahman
Transformation Consultant for Textile Apparel Industries.

গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিতে রোবোটিক্স | Robotics on Garments Industry

গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিতে রোবোটিক্স।



১৯৯৮ সালে ইয়াংওয়ান ঢাকা ইপিজেড ফ্যাক্টরিতে এসিস্টেন্ট ম্যানেজার মার্চেন্ডাইজিং হিসেবে জয়েন করার পর থেকেই একটা মাস্টার্স পাস কেরানী মনে হতে লাগলো নিজেকে। ডিপার্টমেন্ট এ লোকবল এর তুলনায় কম্পিউটার কম ছিল তখন। তারপরেও সারাদিন শুধুই এক্সেল আর ইমেইলের উপরেই জীবনযাপন , একটার পর আরেকটা স্ট্যা
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEggpg4WB_saHHBlSDh7EvdSkpsa1TYajkWJCJJgHyVir6vznda3iM8K9pnKv8Bf8o5O6s3XdjRAr-fd8_UrEY_IkmYiB6r4FHG3EbmiNhhS4nNnGdtsUd96OSPVgqDOv6kS3mzZDT2lsVlc/h118/get_it_google_play.jpg
টাস রেডি করা, 

সাপ্লায়ার দের অনবরত ফোন কল, শিপমেন্টের রাতে, বারোটা পর্যন্ত এসোর্টমেন্ট মিলানো, রুটিন মাফিক নুরুর রহমান ভাইয়ের ঝাড়ি খাওয়া। অঘটনের সংবাদ পেয়ে ফ্লোরে ছুঁটে যাওয়া, জিপার অর্ডার ভুল, সুতা কম আসছে , ফ্যাব্রিক কনসাম্পশন ঠিক মতো দেয়া হয়নি, বায়ারের একটা ইম্পর্টেন্ট মেইলের এনসার করার কথা মনেই নাই, এক্সেল আপডেটে বেশ কয়েকটা ভুল, ৭৬৭ টা মেইল এখনো আনরিড ! এই সকল কিছু মিলিয়ে ত্যাক্তবিরক্ত জীবন। 

তবে একটা বিষয় আমাকে ভীষণ ভাবে চিন্তিত করে রাখতো , এর একটা সমাধান বের করতেই হবে, এইভাবে কাজ করলে আমাদের ইন্ডাস্ট্রির কোনদিন উন্নতি হবেনা, অবশ্যই নতুন কিছু করতেই হবে। যেমন কিভাবে একটা এক্সেল শিট এ সকল ডাটা রাখার ব্যবস্থা রাখা যায়, এত এত এক্সেল শিট তৈরী করতে আর ভালোই লাগেনা , সবার জন্য একটা শিট আপডেটেড রাখার কি ব্যবস্থা করা যায়, এবং একটা এক্সেল শীটের সাথে আরেকটা শিটের কোন কানেকশান নেই , পুরোপুরি ডিসকনেক্টেড একটা সিস্টেম ! এমন কি কোন সল্যুশন পাওয়া যাবে যা আমার জীবন কে একটু স্বস্তি দিবে , নিম্নোক্ত কাজ গুলো করে দিবে :   

১। আমার হয়ে রুটিন মাফিক সাপ্লায়ার কে ফোনে , ইমেইলে রিমাইন্ডার পাঠাবে। মেটেরিয়াল আমার ফ্যাক্টরিতে না পৌঁছানো পর্যন্ত তাকে বিরক্ত করে মারবে।  

২। আমার ২০০ প্রকার টিএন্ডএ এর চেক লিস্ট করে আমাকে রিমাইন্ডার পাঠাবে , কোনটা এখনো করা হয়নি তার লিস্ট আলাদা করে দিবে।   

৩। আমার ইমেলগুলো রাতভর চেক করে ইম্পর্টেন্ট মেইলগুলো আলাদা করে দিবে।  

৪। বায়ারকে আমার হয়ে কার্টেসি উত্তর দিয়ে দিবে। 

৫। ইমেইল চেক করে পিডিএফ গুলো ডাউনলোড করে ইআরপি তে ডাটা এন্ট্রি করে দেবে, এক্সেল ফাইল তৈরী করে প্রোডাকশন, স্যাম্পল , কোয়ালিটি তে আমার হয়ে মেইল করে দেবে। 

৬। অর্ডারশিট রিভাইস হলে নিজে থেকে মেইল চেক করে পিও শিট ডাঊনলোড করবে এবং যে ইফর্মেশন গুলো চেঞ্জ হয়েছে শুধু সেই জায়গাগুলো আপডেট করে , সবাইকে মেইলে পাঠিয়ে দিবে।

 ৭। বাংলাদেশ ব্যাংকের পোর্টালে ঢুকে সবগুলো ইএক্সপি চেক করবে , ইনসেনটিভ চেক করবে আর মিলিয়ে মিলিয়ে বলে দেবে কোনটার পেমেন্ট ম্যাচুরিটি কবে। ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক আকাশ কুসুম কল্পনা করতাম। জীবনটা না কোটি সহজ হতে পারতো , আমি নিজেকে আরো ইফিসিয়েন্ট মার্চেন্ডাইজার হিসেবে গড়ে তুলতে পারতাম , আরো অনেক বেশি অর্ডার হ্যান্ডেল করতে পারতাম !  
দুই দশক পার হয়ে গেলো কোন সমাধান খুঁজে পেলাম না। কিন্তু ২০১৮ সালে এসে একটা আলোর মুখ দেখতে পেলাম। একটা রোবট আমার হয়ে এই সকল কাজ গুলো নির্ভুল হয়ে করে দিতে পারে এমন একটা বিষয় একটা সেমিনার এ আলোচনা হচ্ছিলো। হাসপাতাল, ইন্স্যুরেন্স, ব্যাংকিং, টেলিকম ইত্যাদি সেক্টরে তারা এই জাতীয় সমাধান নিয়ে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে।  শুরু করলাম পড়াশুনা, রিসার্চ, নেট ঘাটা , এই রিলেটেড লিংক খুঁজে তাদের সাথে বন্ধুতা পাতানো , লিংকডিনে অনবরত বিরক্ত করতে থাকা।  

অনেক গুলো সমাধান খুঁজে বের করা সম্ভব হয়েছে। রোবোটিক প্রসেস অটোমেশনের মাধ্যমে এই সকল কাজের সল্যুশন নিয়ে কিছু পাইলট প্রজেক্ট করার দরকার , কিছু অর্থ কড়ি দরকার এই সকল রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্টের জন্য। আমার কানেকশনে থাকা সকলের প্রতি উদাত্ত আহবান আসুন সকলে মিলে এই নতুন দিনের স্বপ্ন দেখি , ইন্ডাস্ট্রিটাকে আরো গতিশীল করে তুলি।  

ইন্ডাস্ট্রিটা বাঁচলে দেশ টা বাঁচবে....

Published on January 15, 2020
Author’s photo
Habibur Rahman
Transformation Consultant for Textile Apparel Industries.

কোন মন্তব্য নেই: