টেক্সটাইল ফাইবার
কাপড় তৈরীর জন্য সূতা প্রয়োজন। সূতা তৈরীতে কাঁচামাল হিসেবে যে সব তন্তু বা আশঁ ব্যবহৃত হয় সেগুলোকে টেক্সটাইল ফাইবার বলা হয়।টেক্সটাইল ফাইবারের কতগুলো বিশেষ গুণাবলি থাকা প্রয়োজন যেমন-পাকানোর জন্য ন্যূনতম দৈর্ঘ্য, শক্তি, কমনীয়তা,নমনীয়তা, সমতা,আদ্রতা ধারণ ক্ষমতা ইত্যাদি অন্যতম।তবে একই ফাইবারে সব গুণাবলী থাকে না।ইদানিং এ সব উন্নততর পদ্ধতিতে ফাইবারকে স্পিনিং ছাড়াই পাশাপাশি সাজিয়ে কিংবা রাসায়নিক বা তাপীয় পরিবর্তনের মাধ্যমে টেক্সটাইল সামগ্রী তৈরী করা হচ্ছে। সে কারণেই একই ফাইবার সকল গুণাবলীও সর্বক্ষেত্রে অপরিহার্য নয়।
টেক্সটাইল ফাইবার সাধারণত ২ প্রকার। প্রাকৃতিক ফাইবার ও কৃত্রিম ফাইবার।নিম্মে কয়েকটি প্রাকৃতিক প্রোটিন ফাইবার তুলে ধরা হলো।
তার আগে জানতে হবে প্রাকৃতিক ফাইবার আসলে কি?
প্রাকৃতিক ফাইবার।
প্রকৃতিতে জন্মে এমন সব গাছ, ফুল প্রাণী খনি ইত্যাদি থেকে আহরণ করা হয় বলে এসব কে প্রাকৃতিক ফাইবার বলা হয়। প্রাকৃতিক ফাইবার এর মধ্যেও শ্রেণীভেদ আছে। যেমন উদ্ভিজ্জ, প্রাণীজ ও খনিজ।
কয়েকটি প্রাকৃতিক প্রোটিন ফাইবার। যেমন-মোহেয়ার,কাশ্মীরি,আলপাকা,ভিকুনা, লামা,ইত্যাদি।
মোহেয়ার
তুরস্কের এঙ্গোরা প্রদেশের এঙ্গোরা নামক ছাগলের লোমকে মোহেয়ার ফাইবার বলে। মোহেয়ার ফাইবারের দৈর্ঘ্য 230 থেকে 300 মিলিমিটার। মোহেয়ার ফাইবার স্থিতিস্থাপক মসৃণ এবং মজবুত। মোহেয়ার ফাইবারে ধুলাবালি জড়ায় না। রং ধারণ ক্ষমতা ভালো এবং রং পাকা হয়। মোহেয়ার দিয়ে উৎকৃষ্ট স্যুটিং কাপড় তৈরি হয়।
কাশ্মীরি
চায়না মঙ্গোলিয়া ও বিশেষ করে ভারত পাকিস্তানের কাশ্মীর অঞ্চলের ছাগল থেকে সংগৃহীত লোমকে কাশ্মীরি ফাইবার বলে। কাশ্মীরি ফাইবার দিয়ে সাধারণত সোয়েটার স্পোর্টস জ্যাকেট ও ওভারকোট ইত্যাদি গরম কাপড় তৈরি হয়। এ ফাইবার তেমন টেকসই নয়।
আলপাকা
পেরু দেশীয় একপ্রকার প্রাণী। এরা সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে প্রায় চৌদ্দশ ফুট উচ্চতায় বসবাস করে এদের গাঁ থেকে যে লোম সংগৃহীত হয় তাকে আলপাকা ফাইবার বলে। এ প্রাণীর ফাইবার বেশ মজবুত ও রেশমি। আলপাকা ফাইবার পানি ধারণ করে না। আঁশ বেশ বড় প্রায় ৬ থেকে ১১ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়।
ভিকুনা
আন্দিজ পর্বত শ্রেণীর ১৬০০০ থেকে ১৯০০০ ফুট উচ্চতায় বাস করে এমন এক দুর্লভ শ্রেণীর প্রাণী ভিকুনা। যাদের লোম দিয়ে তৈরি বস্ত্র পৃথিবীর সেরা ও দামি হিসেবে বিবেচিত। একটি ভিকুনা থেকে মাত্র এক পাউন্ড এর এক-চতুর্থাংশ লোম পাওয়া যায়। ভিকুনা ফাইবার খুবই নরম এবং অন্যান্য প্রাণীর পশমের চাইতে অভিজাত্যময়। ফাইবার বেশ মজবুত ও পানি ধরে না এবং স্থিতিস্থাপক। এটা দিয়ে সাধারণত দামী স্যুটিং ও ওভারকোর্ট তৈরি হয়।
লামা
লামা দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ পর্বত শ্রেণীর পাদদেশের দেশ বলিভিয়া ও পেরুতে জন্মে। এ প্রাণীর লোম মোটা এবং রং বাদামী হয়। লামা ফাইবার আলপাকা ফাইবারের সাথে মিশ্রিত করে বস্ত্র তৈরি করা হয়। ফাইবারের ভাঁজ প্রতিরোধক ক্ষমতা ভালো এবং রং পাকা ও রং বেশ টেকসই হয়।।
কে.এম.ওলিউল্লাহ মনির।
মেইল kmom1900@gmail.com
শেখ কামাল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ।
1 টি মন্তব্য:
অনেক সুন্দর হইছে ভাইয়া।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন