⛔বাংলাদেশ শ্রম আইনের সবচেয়ে বহুল ব্যবহারিত ধারা হল ধারা-২৬।
কোন মালিক কোন স্থায়ী বা অস্থায়ী কর্মীকে বিনা কারনে চাকুরী থেকে ধারা-২৬ অনুযায়ী অব্যাহতি প্রদান করতে পারেন।
অনেকের ধারনা বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী খুব সম্ভাবত ৭ শ্রেণির কর্মীদেরকেই টার্মিনেইশন করা যায়।
না, শ্রম আইনের ২৬ ধারা অনুযায়ী শুধুমাত্র স্থায়ী এবং অস্থায়ী এই দুই শ্রেণীর কর্মীদের টার্মিনেইশন করা যায়।
মাসিক ভিত্তিতে মজুরী গ্রহন করেন এমন যেকোন স্থায়ী কর্মীকে টার্মিনেইট করার জন্য ১২০ দিনের নোটিশ প্রদান করতে হবে অথবা ১২০ দিনের মূল মজুরী টাকা প্রদান করতে হবে।
স্থায়ী শ্রমিকের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা সাপ্তাহিক এবং দৈনিক ভিত্তিতে মজুরী গ্রহন করেন।উক্ত স্থায়ী শ্রমিকদেরকে টার্মিনেইট করার জন্য ৬০ দিনের নোটিশ বা ৬০ দিনের মূল মজুরী প্রদান করতে হবে।
অস্থায়ী কর্মীদের মধ্যে যারা মাসিক ভিত্তিতে মজুরী গ্রহন করেন তাদেরকে টার্মিনেইট করার জন্য ৩০ দিনের মূল মজুরী প্রদান করতে হবে অথবা ৩০ দিনের নোটিশ প্রদান করতে হবে।
অস্থায়ী শ্রমিকদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা সাপ্তাহিক এবং দৈনিক ভিত্তিতে মজুরী গ্রহন করেন। তাদেরকে ১৪ দিনের নোটিশ প্রদান করতে হবে অথবা ১৪ দিনের মূল মজুরী প্রদান করতে হবে।
২৬ ধারা অনুযায়ী কোন স্থায়ী কর্মীকে অব্যাহতি প্রদান করলে তাকে ২৬(৪) ধারা অনুযায়ী প্রতি বছর কাজের জন্য এক মাসের মূল মজুরী প্রদান করতে হবে। যা শুধুমাত্র একজন স্থায়ী কর্মী পাবেন এবং ইহা অস্থায়ী কর্মীর জন্য প্রযোজ্য নয়।
শ্রম আইনের ২৬ ধারা অনুযায়ী যদি কোন কর্মীকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।
তবে তিনি শ্রম আদালতে মামলা করতে পারিবেন না।তবে ৩৩(৯) ধারা অনুযায়ী ৩টি কারনে মামলা করা যাবে।
১। ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের কারনে কেউকে টার্মিনেইট করলে।
২। ২৬ ধারা অনুযায়ী পাওনা পরিশোধ না করতে।
৩। উদ্দেশ্যমূলকভাবে কোন কর্মীকে টার্মিনেইট করলে।
⛔চলতি প্রতিষ্ঠান মালিক হঠাৎ বন্ধ করলে কর্মী কোন ধারায় ক্ষতিপূরণ পাবেন
পাঠক আপনার মাথায় প্রথম যে ভাবনা আসবে তা হল ধারা-২০ অনুযায়ী ছাটাই কিন্ত বাস্তবিকভাবে ছাটাই করা যাবে না।
কেন ছাটাই করা যাবে না বিপত্তি কোথায়।
১।প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনের অতিরিক্ত যদি কোন কর্মী থাকে তবে তাকে ছাটাই করা যাবে।
২। প্রতিষ্ঠানে যদি ধারা-১২ অনুযায়ী এমন কোন সমস্যার সৃষ্টি হয় যাতে প্রতিষ্ঠান ৪৫ দিন পর্যন্ত বন্ধ থাকে তবে ধারা- ২০ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান থেকে কর্মী ছাটাই করতে হবে।
৩। একটা বিষয় লক্ষ্য করেন (২) নম্বর ক্ষেএটি ছাড়া এক ভাবে বলাই যায় যে কোন কর্মীকে ছাটাই করতে হলে প্রতিষ্ঠান চালু থাকতে হবে।
তাহলে কি পাবেন উক্ত কর্মীগন,
যেহেতু একটি চালু প্রতিষ্ঠান মালিক কোন কারন ছাড়া বন্ধ করছেন অতএব, মালিকে ধারা-২৬ অনুযায়ী প্রতি বছর কাজের জন্য ১ মাসের মূল মজুরী এবং এছাড়াও ১২০ দিনের পূর্ব নোটিশ অথবা নোটিশের পরিবর্তে ১২০ দিনের সমান মূল মজুরী প্রদান করতে হবে।
⛔বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫ এর ১৯ নং ধারায় শ্রমিকের নিয়োগ পত্র ও পরিচয় পত্র প্রদান এবং গোপনীয়তা রক্ষাকরণ সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে,
১। কোন মালিক নিয়োগপত্র প্রদান না করিয়া কোন শ্রমিককে নিয়োগ করিতে পারিবেন না।
২।কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরিকালীন কোন ব্যক্তিকে কেবল একবার নিয়োগপত্র প্রদান করিতে হইবে।
৩। কোন শ্রমিকের নিয়োগপত্র হারাইয়া গেলে বা নষ্ট হইয়া গেলে শ্রমিকের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাহার ব্যক্তিগত ফাইলে রক্ষিত নিয়োগপত্রের ফটোকপি বা হুবহু নকল সরবরাহ করা যাইবে
৪। ধারা ৫ মোতাবেক প্রদত্ত নিয়োগপত্রে নিম্নবর্ণিত তথ্যের উল্লেখ থাকিবে, যথাঃ-
(ক) শ্রমিকের নাম;
(খ) পিতার নাম;
(গ) মাতার নাম;
(ঘ) স্বামী বা স্ত্রীর নাম (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে);
(ঙ) ঠিকানাঃ
বর্তমান;
স্থায়ী;
(চ) পদবী, কাজের ধরন, যোগদানের তারিখ;
(ছ) শ্রমিকের শ্রেণী;
(জ) মজুরি বা বেতন স্কেল (মজুরি বেতন এবং বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধির হার যদি থাকে);
(ঝ) অন্যান্য প্রদেয় আর্থিক সুবিধা (বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা, শিক্ষা, খাদ্য, যাতায়াত, উৎসব ও হাজিরা ভাতা এবং গ্রাচুইটি (যদি থাকে); এবং
(ঞ) নিয়োগের যাবতীয় শর্ত প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান চাকরি বিধি (যদি থাকে) ও বিদ্যমান শ্রম আইন অনুযায়ী পরিচালিত হইবে মর্মে উল্লেখ।
(৫) প্রত্যেক মালিক তাহার প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত প্রত্যেক শ্রমিককে ফরম-৬ অনুযায়ী মালিকের খরচে ছবিসহ পরিচয় পত্র প্রদান করিবেন।
(৬) শ্রমিক পরিচয়প্ত্র হারাইয়া ফেলিলে ৫০ ফি পরিশোধ সাপেক্ষে নূতন পরিচয়পত্র প্রদান করিতে হইবে।
(৭) নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বহি প্রদান সম্পর্কীত তথ্য রেজিস্টারের ফরম-৬ (ক) অনুযায়ী সংরক্ষন করিতে হইবে।
(৮) এই বিধিমালায় যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কারখানা বা প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কোন শ্রমিক বা প্রশাসনিক বা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালনকালে বা চাকরি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক কৌশলের গোপনীয়তা সংরক্ষন করিবেন।
মন দিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ সবাইকে।
⛔ Job Separation:
১. পদত্যাগ ( Resignation ) ধারা - ২৭
*কোন স্থায়ী শ্রমিক মালিক কে ৬০ দিনের লিখিত নোটিশ দিয়ে চাকুরী হতে ইস্তফা দিতে পারবেন ।
* কোন অস্থায়ী শ্রমিক যারা মাসিক মজুরী ভিত্তিতে নিয়জিত তারা ৩০ দিনের ও অনান্য শ্রমিক ১৪ দিনের লিখিত নোটিশ দিয়ে চাকুরী হতে ইস্তফা দিতে পারবেন ।
যদি কোন শ্রমিক বিনা নোটিশে চাকুরি ছাড়তে চান তাহলে নোটিশ মেয়াদের জন্য সমপরিমান মজুরী মালিক কে প্রদান করে চাকুরী ছাড়তে পারবেন ।
* কোন শ্রমিক বিনা অনুমতিতে ১০ দিনের বেশি অনুপস্থিত থাকলে, মালিক ১০ দিন সময় দিয়ে কারন ব্যাখ্যা করে পুনরায় যোগদানের নোটিশ প্রদান করবেন, উক্ত সময়ের মধ্যে যোগদান না করলে মালিক তাকে আত্নপক্ষ সমর্থনের জন্য আরো ৭ দিন সময় দিয়ে নোটিশ প্রদান করবেন তবুও তিনি না আসলে, তিনি অনুপস্থিতির দিন হতে ইস্তফা দিয়েছেন বলে গন্য হবে ।
* এই ধারার অধিনে কোন স্থায়ী শ্রমিক ইস্তফা দিলে , পাচ বছর বা তার অধিক সময় কিন্তু ১০ বছরের কম সময় চাকুরির জন্য প্রতি বছরের জন্য ১৪ দিনের মজুরী,১০ বছরের অধিক সময়ের জন্য ৩০ দিনের মজুরী অথবা গ্রাচুইটি যেটি বেশি হয় সেটি ক্ষতিপুরন হিসেবে প্রদান করবেন । ক্ষতিপুরন অনান্য সকল সুবিধার অতিরিক্ত বলে বিবেচিত হবে ।
২. বরখাস্ত (Dismissal) ধারা - ২৩ (১)
এই আইনের অধিনে কোন শ্রমিক কে বিনা নোটিশে বরখাস্ত করা যাবে যদি তিনি * ফৌজদারী অপরাধে দন্ড প্রাপ্ত হন অথবা ধারা ২৪ অনুযায়ী অসদাচরনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন ।
৩. অপসারণ (Removal)ধারা ২৩(২)ক
ধারা ২৪ অনুযায়ী , অসদাচরনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত শ্রমিক কে বরখাস্ত না করে অপসারন করা যাবে সেক্ষত্রে উক্ত শ্রমিকের চাকুরির মেয়াদ যদি অবিচ্ছিন্ন ভাবে এক বছর বা তার বেশি সময় হয় তাহলে মালিক তাকে প্রত্যক বছরের জন্য ক্ষতিপুরন বাবদ ১৫ দিনের মজুরী প্রদান করবেন , তবে উক্ত শ্রমিক মালিকের ব্যাবসা বা সম্পত্তি চুরি বা আত্নসাৎ, প্রতাড়ণা ও প্রতিষ্ঠানে দাঙ্গা হাঙ্গামা অগ্নি সংযোগ , ভাঙচুর করলে ক্ষতিপুরন পাবেনা , তবে তার আইনানুগ অনান্য পাওনা পাবে ।
৪ . অবসান ( Termination ) ধারা - ২৬
এই ধারা অনুযায়ী মালিক চাইলে যেকোন শ্রমিক কে টার্মিনেট করতে পারবেন তবে স্থায়ী শ্রমিক যারা মাসিক মজুরী ভিত্তিতে নিয়জিত তাদের ১২০ দিনের নোটিশ দিতে হবে , অনান্যদের ৬০ দিনের , অস্থায়ী শ্রমিক যারা মাসিক মজুরী ভিত্তিতে নিয়জিত আছেন তাদের ক্ষেত্রে ৩০ দিনের নোটিশ অনান্যদের ক্ষত্রে ১৪ দিনের নোটিশ দিতে হবে অথবা নোটিশ মেয়াদের পরিবর্তে মজুরী পরিশোধ করে মালিক এটা করতে পারবেন ।
* এই ধারার অধিনে কোন স্থায়ী শ্রমিকের চাকুরি অবসান করা হলে প্রত্যক পুর্ন বছরের জন্য মালিক ক্ষতিপুরন হিসেবে ৩০ দিনের মজুরী অথবা গ্রাচুইটি যেটি বেশি হয় সেটি প্রদান করবেন ।
ক্ষতিপুরন অনান্য সকল সুবিধার অতিরিক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে ।
৫. ছাটাই (Retrenchment ) ধারা - ২০
প্রয়োজনের অতিরিক্ততার কারনে কোন প্রতিষ্ঠান হতে শ্রমিক ছাটাই করা যাবে , তবে কোন শ্রমিকের চাকুরির মেয়াদ অবিচ্ছিন্ন ভাবে এক বছর বা তার বেশি হয় তাহলে তাকে এক মাসের লিখিত নোটিশ দিতে হবে অথবা মজুরী প্রদান করতে হবে ।
নোটিশের এক কপি প্রধান পরিদর্শক ও এক কপি সিবিএ যদি থাকে , দিতে হবে ।
* উক্ত শ্রমিক কে প্রতি বছর চাকুরীর জন্য ক্ষতিপুরন হিসেবে ৩০ দিনের মজুরী অথবা গ্রাচুইটি যেটা বেশি হবে সেটা প্রদান করতে হবে ।
* তবে নোটিশের প্রয়োজন হবেনা যদি উক্ত শ্রমিক কে ৪৫ দিন লে-অফের পরে আরো ১৫ দিন লে-অফ করাতে হয় তবে সে ক্ষেত্রে তাকে প্রতি বছর চাকুরির জন্য আরো ১৫ দিনের মজুরী প্রদান করতে হবে ।
* মালিক শ্রমিকের মধ্যে ভিন্ন কোন চুক্তি না থাকলে সর্বশেষ নিযুক্ত শ্রমিক কে ছাটাই করবেন ।
৬. ডিসচার্জ (Discharge ) ধারা - ২২
কোন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রত্যায়ন পত্র অনুযায়ী শারীরিক বা মানুষিক অক্ষমতা বা অব্যাহত ভগ্ন স্বাথ্যর কারনে চাকুরী হতে ডিসচার্জ করা যাবে ।
ডিসচার্জ কৃত শ্রমিক কে মালিক তাহার প্রত্যক বছর চাকুরীর জন্য ক্ষতিপুরন হিসেবে ৩০ দিনের মজুরী অথবা গ্রাচুইটি যেটি বেশি হয় সেটি প্রদান করবেন ।
৭. মৃত্যজনিত (Death ) ধারা - ১৯
কোন শ্রমিক দুই বছর অবিছিন্ন ভাবে চাকুরীরত থাকা অবস্থায় মৃত্য বরন করলে মালিক তাহার মনোনিত ব্যাক্তি কে প্রত্যক বছরের জন্য বা উহার ছয় মাসের অধিক সময়ের জন্য ক্ষতিপুরন হিসেবে ৪৫ দিনের মজুরী অথবা গ্রাচুইটি যেটা বেশি হবে সেটা প্রদান করবেন, এই অর্থ মৃত শ্রমিক চাকুরী হতে অবসর গ্রহন করলে যে সুবিধা পেতেন তার অতিরিক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে ।
৮. অবসর (Retirement ) ধারা - ২৮
কোন শ্রমিকের বয়স ৬০ বছর পুর্ন হলে তিনি চাকুরি হতে স্বাভাবিক অবসর গ্রহন করবেন , ধারা ২৬(৪) অনুযায়ী অথবা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব চাকুরী বিধি অনুযায়ী , অবসর প্রাপ্ত শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করতে হবে ।
* এর পরে প্রতিষ্ঠান তাকে উপযুক্ত মনে করলে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ দিতে হবে ।
⛔মজুরীবিহীন ছুটি বা অসাধারণ ছুটি:
মানুষের জীবনের সব দিন গুলো সমান ভাবে যায় না।কখনও ভাল আবার কখনও বা খারাপ, জীবনের খুব খারাপ বা খুব ভাল সময় গুলোকে আমরা অসাধারণ সময় বলে থাকি।আর এই অসাধারন ভাল ও খারাপ সময় গুলোকে মোকাবেলার জন্য এক ধরনের ছুটির খুব প্রচলন আছে জগত জুড়ে।আর সেই ছুটিকে বলা হয় মজুরীবিহীন ছুটি বা অসাধারন ছুটি।
আমি অনেকের কাছ থেকে এই ছুটি নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন শুনেছি যেমন এই ছুটি কেন দেয়া হয়,কতদিন দেয়া হয়,কাকে দেয়া হবে,মজুরীবিহীন ছুটির দিন গুলো কি চাকুরীকালীন সময় হিসাবে গননা করা যাবে কি না. আমি জানি এ রকম ডজন খানেক প্রশ্ন সবার মনেই আছে যাই হোক এবার আসি মূল বিষয়ে।
এই ছুটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার আগে আপনাদেরকে কিছু তথ্য দেই বাংলাদেশ শ্রম আইনে মজুরীবিহীন ছুটি বিষয়ে কিছু বলা নাই,
তবে শ্রম বিধিমালাতে উক্ত বিষয়ে বলা আছে কিন্ত বাংলাদেশ সাভিস রুলসে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে যা থেকে আমি কিছু উদাহরণ আপনাদের কে দিব।
প্রথম বিষয় হল এই ছুটি কেন দেয়া হয়,মূলত যে সময়ে কোন কর্মীর আর কোন ছুটি পাওনা বা ভোগ করা বাকি না থাকে কিন্ত তার ছুটির খুব প্রয়োজন হয় তখন মালিক বিশেষ বিবেচনায় এই ছুটি দিয়ে থাকে।একটা বিষয় মনে রাখবেন কোন কর্মীর ছুটি পাওনা থাকাকালীন সময়ে বা কর্মীর ছুটি অভোগ্য থাকলে তাকে মজুরীবিহীন ছুটি প্রদান করা যাবে না।
মজুরীবিহীন ছুটি কতদিন দেওয়া হবে,ছুটির পরিমানের বিষয়ে বাংলাদেশ সাভিস রুলসে বলা আছে যে অস্থায়ী কর্মীদেরকে চিকিৎসার জন্য ৬ মাস এবং অন্যান্য কারনে ৩ মাস দেয়া যাবে,তবে স্থায়ী কর্মীদের জন্য কোন সময় সীমা উল্লেখ নাই।তবে একজন সরকারি কর্মচারী যে কোন ছুটি ১ বছরের বেশি একবারে নিতে পারেন না কিন্তু চিকিৎসার বেলাতে ২ বছর নিতে পারে।তাই এটা বলা যায় যে সাধারন ভাবে মোট ১ বছর এবং চিকিৎসার বেলাতে ২ বছর পর্যন্ত দেয়া যাবে মজুরীবিহীন ছুটি।
মজুরীবিহীন ছুটি যদি অসুস্থতার জন্য হয় তবে সে দিন গুলো চাকরীকালীন সময় হিসাবে গননা করা হবে বাংলাদেশ শ্রম আইন ধারা ১৪ অনুসারে,তবে যদি অন্য কোন কারনে হয় তাহলে উক্ত দিন গুলো চাকরীকালীন দিন হিসাবে বিবেচিত হবে না।
মজুরীবিহীন ছুটিতে থাকাকালীন কর্মী মূল মজুরী ছাড়া অন্যান্য সুবিধা পাইবেন ধারা-১২৬ অনুযায়ী।
⛔ বিনা নোটিশে কোন শ্রমিক কাজে অনুপস্হিত থাকলে করনিয় কি?
কোন শ্রমিক বিনা নোটিশে অথবা বিনা অনুমতিতে ১০ দিনের বেশি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে মালিক ঐ শ্রমিককে ১০ দিনের সময় প্রদান করে এই সম্পর্কে ব্যাখ্যা প্রদান করতে এবং চাকরিতে যোগদানের জন্য নোটিশ প্রদান করবেন। উক্ত শ্রমিক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদান বা চাকরীতে যোগদান না করলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে তার আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য আরো ৭ দিন সময় প্রদান করবেন। তার পরেও যদি ঐ শ্রমিক চাকরীতে যোগদান অথবা আত্মপক্ষ সমর্থন না করেন তবে, উক্ত শ্রমিক অনুপস্থিতির দিন হতে চাকরি থেকে অব্যহতি গ্রহণ করেছে বলে বিবেচিত হবে।
⛔ শ্রম অাইন ২০০৬ এর ধারা ২৮ নিয়ে অালোচনা
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-২৮ এবং ধারা-২(১) এ অবসর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-২৮ অনুযায়ী কোন শ্রমিকের বয়স ৬০ হলে তিনি স্বাভাবিকভাবে অবসর গ্রহন করবেন।
আর ধারা-২(১) অনুযায়ী যদি কোন কর্মীর চাকুরীর বয়স ২৫ বছর পূর্ন হয় তবে তিনি স্বেচ্ছায় অবসরে যেতে পারবেন।
এখানে দুটি বিষয় মাথায় রাখা ভাল:
১. কর্মীর নিজের বয়স।
২. কর্মীর চাকুরীর বয়স।
চাকুরীর বয়স এবং কর্মীর বয়স নির্ধারণ করার জন্য কর্মীর নিজ সার্ভিস বুকে চুড়ান্ত প্রমান হিসাবে বিবেচনা করা হবে।
কোন কর্মী তার চাকুরী থেকে অবসর গ্রহন করলে বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-২৮ অনুযায়ী প্রতি পূর্ন বছর কাজের জন্য এক মাসের মূল মজুরী পাইবেন।
কোন মালিক যদি মনে করেন অবসরের পরে কোন কর্মীকে নিয়োগ প্রদান করবেন সেক্ষেএে উক্ত কর্মীকে চুক্তিভিত্তিক হিসাবে নিয়োগ করতে পারবেন।
⛔কর্মীর চুড়ান্ত পাওনার নিষ্পত্তি
যেকোন কর্মী চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণের কারনে অথবা মালিক কতৃক ছাঁটাই,ডিসচার্জ,অপসারণ,বরখাস্ত অথবা শ্রমিক কতৃক অব্যাহতি গ্রহনের কারনে বা অন্য কোন কারনে যদি কোন শ্রমিকের চাকুরীর ছেদ ঘটে সেক্ষেএে কর্মীদের চুড়ান্ত পাওনার নিষ্পত্তি করতে হয়।
শ্রম আইনের ধারা-৩০ এবং ১২৩ অনুযায়ী পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে যাবতীয় পাওনাদি পরিশোধ করতে হবে।
কিন্তু শ্রম বিধিমালা-২০১৫ এর বিধি-১১২(৪) অনুযায়ী চাকুরী ছেদ ঘটিবার তারিখ হইতে পরবর্তী ৭ কর্মদিনের মধ্যে প্রাপ্য মজুরী পরিশোধের বিষয়ে বলা হয়েছে।
এছাড়া বিধি-১১২ তে আরও বলা হয়েছে যে ক্ষতিপূরণ ও অন্যান্য পাওনাদি চাকুরী ছেদ হইবার পরবর্তী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।
কিন্তু মজুরী ৭ দিনের মধ্য দেয়ার কথা বলা হলেও বাস্তবে খুব কম প্রতিষ্ঠান আছে যারা মজুরী ৭ কর্মদিবসের পরিশোধ করে থাকে।
⛔ শ্রমিকের জন্য ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সামগ্রী সরবরাহ:
(১) যে সকল উৎপাদন প্রক্রিয়ায় নিয়োজিত শ্রমিকের দৈহিক ক্ষতি অথবা জখমের আশংকা রহিয়াছে এইরুপ স্থানে বা কাজে আইন, এই বিধিমালা বা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্দেশমত পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করিতে হইবে।
( ২) উপ-বিধি (১) এ উল্লিখিত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করিবার পাশাপাশি শ্রমিকের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে যথাযথ নিরাপত্তা উপকরন যেমন - সেইফটি স্যুজ, হেলমেট, গগলস, মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, ইয়ার মাফ, ও ইয়ার প্লাগ, কোমড় বন্দ, এপ্রোন, প্রভৃতিসহ সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য অন্যান্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা উপকরন সরবরাহ ও উক্ত সামগ্রী ব্যবহারের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা এবং ব্যবহার নিশ্চিত করিতে হইবে।
(৩) উপ-বিধি (১) ও (২) এ উল্লিখিত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা ও প্রশিক্ষণ নিশ্চিত না করিয়া কোন শ্রমিককে উক্ত কাজে নিয়োজিত করা যাইবেনা এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তা উপকরন সরবরাহের তথ্য ফরম-২৩ অনুযায়ী সংরক্ষন করিতে হইবে।
⛔ ধারা-১৯। মৃত্যুজনীত ক্ষতিপূরনঃ-
যদি কোন শ্রমিক কোন মালিকের অধীন অবিচ্ছিন্ন ভাবে অন্ততঃ ০২(দুই) বৎসরের অধিক কাল চাকুরীরত থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরন করেন, তাহা হইলে মালিক মৃত শ্রমিকের কোন মনোনীত ব্যক্তি মনোনীত ব্যক্তির অবর্তমানে তাহার কোন পোষ্যকে তাহার প্রত্যেক পূর্ন বৎসর বা উহার ০৬ (ছয়) মাসের অধিক সময় চাকুরীর জন্য ক্ষতিপূরন হিসাবে ৩০ (ত্রিশ) দিনের এবং প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অবস্থায় অথবা কর্মকালীন দুর্ঘটনার কারনে পরবর্তীতে মৃত্যুর ক্ষেত্রে ৪৫ (পয়তাল্লিশ) দিনের মজুরী অথবা গ্রাচুইটি, যাহা অধিক হইবে, প্রদান করিবেন, এবং এই অর্থ মৃত শ্রমিক চাকুরী হইতে অবসর গ্রহন করিলে যে অবসর জনীত সুবিধা প্রাপ্ত হইতেন, তাহার অতিরিক্ত হিসাবে প্রদেয় হইবে।
⛔ ছাঁটাইঃ-
কোন শ্রমিককে প্রয়োজন অতিরিক্ততার কারনে কোন প্রতিষ্ঠান হইতে ছাঁটাই করা যাবে।
১) কোন শ্রমিক যদি কোন মালিকের অধীনে অবিচ্ছিন্নভাবে অনুযায়ী এক বৎসর চাকুরীতে নিয়োজিত থাকেন তাহলে তাহার ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে মালিক কে
ক) তাহার ছাটাইয়ের কারন উল্লেখ করিয়া একমাসের লিখিত নোটিশ দিতে হবে,অথবা নোটিশের মেয়াদের জন্য নোটিশের পরিবর্তে মজুরী প্রদান করিতে হইবে
খ) নোটিশের একটি কপি প্রধান পরিদর্শক অথবা তৎকর্তৃক নির্ধারিত কোন কর্মকর্তার নিকট প্রেরন করিতে হইবে,এবং আরেকটি কপি প্রতিষ্ঠানের যৌথ দর কষাজষি প্রতিনিধিকে,যদি থাকে,দিতে হইবে এবং
গ) তাহাকে ক্ষতিপুরন বাবদ প্রত্যেক বৎসর চাকুরীর জন্য ত্রিশ দিনের মজুরী গ্রাচুয়ইটি যদি প্রদেয় হয়,যাহা অধিক হইবে,প্রদান করতি হইবে
(৩) উপ-ধারায় (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন,ধারা১৬(৭)এর অধীন ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে উপ-ধারা(২)(ক) এর উল্লিখিত কোন নোটিশের প্রয়োজন হইবে না,তবে ছাঁটাইকৃত উপ-ধারা(২) মোতাবেক প্রদেয় ক্ষতিপুরন বা গ্রাচুয়ইটির অতিরিক্ত হিসাবে আরো পনের দিনের মজুরী দিতে হইবে।
⛔ প্রভিডেন্ট ফান্ডে মালিকের অংশ কর্মী কখন নিয়ে যেতে পারেন:
বর্তমানে যে সকল প্রতিষ্ঠানে প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু আছে তাদের তৈরি করা একটা রেওয়াজ আছে।
যে সকল কর্মীরা প্রতিষ্ঠানে ৩ বছর সময় চাকুরী সম্পন্ন না করবেন তারা প্রভিডেন্ট ফান্ডে মালিকের অংশ পাবেন না।
কিন্তু আইন বলছে ভিন্ন বিষয়,
বাংলাদেশ শ্রম আইনের বিধি-২৬৩ অনুযায়ী যদি কোন কর্মীর চাকুরীর বয়স ২ বছর হয় বা প্রভিডেন্ট ফান্ডের সদস্য পদের মেয়াদ ১ বছর হয়।
তবে উক্ত কর্মী মালিকের অংশের সম্পূর্ণ টাকা পাবেন।
কোন কর্মী চাকুরীকালীন সময়ে মৃত্যুবরন করলে তাহার চাকুরীর মেয়াদ যাই হোক না কেন, তাহার পোষ্যগন মালিকের অংশ সম্পূর্ণ পাইবার অধিকারী হইবেন।
⛔ গ্র্যাচুয়িটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের এক মূলার নাম হল গ্র্যাচুয়িটি।
মূলা বলার কারন কি?
১। গ্র্যাচুয়িটি কোন প্রতিষ্ঠানের জন্য বাধ্যতামূলক নয়।
২। গ্র্যাচুয়িটি ফান্ডের সদস্যপদ কত দিনে পাওয়া যাবে তা উল্লেখ্য না থাকা।
৩। ইহা অন্যান্য সুবিধার অতিরিক্ত হবে কিন্তু তা বাস্তবতার সাথে কোন ভাবেই মিলে না।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা ২(১০) অনুযায়ী গ্র্যাচুয়িটির সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে।
যেখানে বলা হয়েছে যে, কোন কর্মী যদি প্রতিষ্ঠানে ১ বছর বা ৬ মাসের বেশি সময় কাজ করেন তবে তিনি প্রতি বছর কাজের জন্য ৩০ দিনের মজুরী পাবেন এবং ১০ বছরের বেশি সময় কাজ করলে প্রতি বছর কাজের জন্য ৪৫ দিনের মজুরী পাবেন।
উপরের লেখাটা পড়ে আপনার মনে হতেই পারে যে ৬ মাসের বেশি কাজ করলেই আমি গ্র্যাচুয়িটি পেয়ে যাব।
বাস্তবিক জিনিটা আপনি যত সহজ ভাবছেন আইন ততটাই কঠিন করেছে বিষয়টিকে।
একটু উদাহরণ দিয়ে পরিস্কার করছি।
আপনি যদি প্রভিডেন্ট ফান্ড বিষয়ে জানেন তবে গোলোক ধাধাটা বুঝতে সহজ হবে।
আপনি যদি আয়কর অধ্যাদেশ এবং বিধিমালা পড়ে থাকেন তবে সেখানে কিছু ফান্ডের কথা বলা আছে।
১। প্রভিডেন্ট ফান্ড।
২। গ্র্যাচুয়িটি ফান্ড।
৩। বার্ধক্য ফান্ড।
প্রভিডেন্ট ফান্ডের মত গ্র্যাচুয়িটি ফান্ডেও সদস্যপদ গ্রহন করতে হয়।
কিন্তু সেটা কত দিনে, শ্রম আইনে প্রভিডেন্ট ফান্ডের সদস্যপদ পাওয়া যাবে চাকুরী বয়স ১ বছর হলে।
গ্র্যাচুয়িটি ফান্ডের সদস্যপদ কত দিনে পাবে তা আইনে নিদিষ্ট করে বলা হয় নি।
তাই অনেক প্রতিষ্ঠান ৩ বছর,কোন কোন প্রতিষ্ঠান ৫ বছর, আবার ১০ বছর সময় দিয়ে থাকে কোন কোন প্রতিষ্ঠান সদস্য পদ প্রাপ্তির জন্য।
কিছুটা বলা যায় খেয়াল খুশি মত যেহেতু আইনি কোন বাধা নাই।
অনেকেই জানতে চান যে, মূল মজুরী না, মোট মজুরী দিতে হবে গ্র্যাচুয়িটিতে।
মূল মজুরী কিভাবে?
শ্রম আইনের ২য় অধ্যায়ের অধীন কোন অর্থ প্রদেয় হলে তা মূল মজুরী অনুযায়ী হবে তা ধারা ১৪ তে বলা আছে।
তবে গ্র্যাচুয়িটির ক্ষেএে সর্বশেষ প্রাপ্ত মূল মজুরী অনুযায়ী দিতে হবে।
⛔ ধারা। ২৮। চাকরি হইতে ডিসচার্জঃ-
১। ধারা ২২ এ বর্ণিত রেজিস্টার্ড চিকিৎসক কর্তৃক শ্রমিকের অক্ষমতার প্রত্যয়ন পত্র ফরম-১১ অনুযায়ী হইতে হইবে এবং উহার একটি কপি সংশ্লিষ্ট শ্রমিককেও সরবরাহ করিতে হইবে।
২। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রদান করা প্রত্যয়নে অথবা মালিক সন্তুষ্ট না হইলে তিনি উহা প্রাপ্তির ১০ (দশ) দিনের মধ্যে পূনরায় পরীক্ষা করিবার জন্য সরকারি মেডিকেল কলেজের অন্যুন সহকারী অধ্যাপকের পদমর্যাদা সম্পন্ন কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিকট পেশ করিতে পারিবেন এবং উক্ত পুনঃপরীক্ষার খরচ আবেদনকারীকে বহন করিতে হইবে।
⛔ ধারাঃ ০৪
শ্রমিকের শ্রেনীবিভাগ ও শিক্ষানবিশকাল
(কোন প্রতিষ্ঠানে সাধারনত ৭ ধরনের শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়)
১. শিক্ষাধীনঃ(Apprentice) প্রশিক্ষনার্থী হিসেবে নিয়োগ করা হবে এবং প্রশিক্ষন কালে ভাতা প্রদান করা হবে।
২. বদলীঃ(Substitute) প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী কোন শ্রমিকের সাময়িক অনুপস্থিত সময়ে নিয়োগ করা হয়।
৩. সাময়িকঃ(Casual) প্রতিষ্ঠানের সাময়িক কোন কাজে কিছুদিনের জন্য নিয়োগ করা হবে।
৪. অস্থায়ীঃ(Temporary) এধরনের শ্রমিক কে নিয়োগ করা হয় একান্তভাবে অস্থায়ী কোন কাজের জন্য এবং কাজটি সীমিত সময়ের মধ্যে শেষ হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
৫. শিক্ষানবিশঃ(Probationer) কোন স্থায়ী পদে তাকে নিয়োগ করা হয়,এবং শিক্ষানবিশ বলা হয় শিক্ষানবিশকাল সমাপ্ত না হওয়ার আগ পর্যন্ত।
৬. স্থায়ীঃ(Permanent) শিক্ষানবিশকাল সফলভাবে সমাপ্ত হওয়ার পর স্থায়ী ভাবে নিয়োগ করা হয়।
* কেরানী সংক্রান্ত কাজে শিক্ষানবিসকাল হবে ৬ মাস আর অন্যান্য ক্ষেত্রে হবে ৩ মাস।
*দক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে তার কাজের মান যাচাইয়ের জন্য শিক্ষানবিসকাল ৩ মাসের পরিবর্তে আরো ৩ মাস বাড়ানো যেতে পারে।তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই বিষয়টি চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দিতে হবে।
* অদক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৩ মাস পরে কনফারমেশন লেটার না দেওয়া হলেও তাকে স্থায়ী বলে গন্য করা হবে।
*যদি কোন শ্রমিক শিক্ষানবিসকালে চাকুরী থেকে চলে যায়,এবং পরবর্তী ৩ বছরের মধ্যে একই মালিকের অধীনে চাকুরীতে আসে তাহলে পূর্ববর্তী শিক্ষানবিসকালের দিন সংখ্যা বর্তমান দিনের সাথে যোগ করতে হবে।
৭. মৌসুমীঃ(Seasonal) মৌসুমকালে কোন শ্রমিককে মৌসুম কাজে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং মৌসুম চলা কালীন সময়ে কর্মরত থাকেন।
⛔ উৎসব ছুটির দিনে কাজ করলে কি ক্ষতিপূরন পাবেন কর্মী
কিছু মানুষ থাকে যারা চাইলেও প্রিয় মানুষের সাথে উৎসব ছুটির আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারেন না।
প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কর্মীরা এমন একটা শ্রেণী যাদেরকে সকলের আনন্দের সময় কর্মস্থালে দায়িত্ব পালন করতে হয়।
একজন কর্মী উৎসব ছুটির দিনে কাজ করলে কি পরিমান ক্ষতিপূরন দিতে হবে। ১ দিন উৎসব ছুটির বিনিময়ে ১ দিনের বিকল্প ছুটি এবং ২ দিনের ক্ষতিপূরণমূলক মজুরী দিতে হবে বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-১১৮ অনুযায়ী।
★ কত দিনের মধ্যে উক্ত ক্ষতিপূরন ছুটি দিতে হবে?
মাএ তিন দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণ ছুটি দিতে হবে।
কেন তিন দিনের মধ্যে দিতে হবে?
শ্রম আইনের ধারা-১১৮ তে বলা আছে যে ধারা-১০৩ অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ ছুটি দিতে হবে। যেহেতু ধারা- ১০৩ অনুযায়ী কোন পাওনা ছুটি শ্রম বিধিমালার বিধি-১০১ অনুযায়ী ছুটি পাওনা হইবার পরবর্তী ৩ দিনের মধ্যে দিতে হবে।
ছুটি না দিয়ে ওভার টাইম দিলে হবে কি না?
কথাটা শুনতে খারাপ লাগলেও বলতে হচ্ছে যে কোন সু্যোগ নাই। আপনাকে অবশ্যই ১ দিনের জন্য ১দিনের বিকল্প ছুটি দিতেই হবে এবং ২ দিনের ক্ষতিপূরণমূলক মজুরী দিতে হবে।
⛔বাৎসরিক অর্জিত ছুটির টাকা নগদায়নের নিয়ম
শ্রম আইনের ধারা-১১ তে বলা আছে যদি কোন শ্রমিকের কোন অর্জিত ছুটি অভোগকৃত থাকে, তবে উক্ত অভোগকৃত ছুটির বিপরীতে মজুরী প্রদান করিতে হবে।
এছাড়াও ২০১৫ সালের শ্রম বিধিমালার বিধি-১০৭ এ বলা আছে কর্মী চাইলে ছুটির বিনিময়ে অর্থ গ্রহন করতে পারবে।
ছুটির টাকা নগদায়নের ক্ষেএে যে সমস্যাটির সম্মুখীন অনেকে হয়ে থাকেন তা হল অভোগকৃত ছুটির মজুরী গননার নিয়ম নিয়ে।
ছুটি নগদায়নের ক্ষেএে মজুরী হিসাবের নিয়ম:
১.যে মাসে ছুটির টাকা নগদায়ন করবেন ঠিক তার আগের মাসের বোনাস ও ওভার টাইমের মজুরী ব্যতীত মোট মজুরীকে ভাগ দিতে হবে, আগের মাসের উপস্থিতির দিনগুলো দিয়ে। এরপরে যে ভাগফল পাওয়া যাবে তাকে আবার গুন করতে হবে, যে ছুটির দিনগুলো নগদায়ন করতে চায় তার মোট সংখ্যা দিয়ে।
২.যে মাসে ছুটির টাকা নগদায়ন করবেন ঠিক তার আগের মাসের বোনাস ও ওভার টাইমের মজুরী ব্যতীত মোট মজুরীকে ভাগ দিতে হবে, ৩০ দিয়ে এবং এরপর যে ভাগফল পাওয়া যাবে তাকে আবার গুন করতে হবে, যে ছুটির দিনগুলো নগদায়ন করতে চায় তার মোট সংখ্যা দিয়ে।
অনেকেই প্রায়শই জানাতে চান যে মূল মজুরী না গড় মজুরী হারে দিতে হবে। একটা বিষয় বলি গড় বা মূল মজুরী কোন বিষয় নয়।
আরও দুটি বিষয় বলি:-
১. মোট বাৎসরিক ছুটির অর্ধেকের বেশি নগদায়ন করা যাবে না।
২. প্রতিবছরে মাএ একবার নগদায়ন করা যাবে।
⛔ মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধার বিশ্লেষন
বাংলাদেশ শ্রম আইনে মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধাকে চারটি ভাগে ভাগ করেছে।
১। মাতৃত্বকালীন ছুটি ও সুবিধা।
২। মাতৃত্বকালীন সুবিধাবিহীন ছুটি।
৩। নোটিশের পূর্বে সন্তান জন্ম পরবর্তী মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধা।
৪। গর্ভপাত জন্য ছুটি।
১। মাতৃত্বকালীন ছুটি ও সুবিধা:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-৪৫ অনুযায়ী যদি কোন নারী কর্মী প্রতিষ্ঠানে সন্তান জন্মের পূর্বে ৬ মাস কাজ করেন এবং তার ২টি সন্তান জীবিত নেই।
সেক্ষেত্রে তিনি ১১২ দিনের ছুটি এবং ধারা-৪৮ অনুযায়ী ১১২ দিনের সুবিধা পাবেন কিন্তু মজুরী পাওয়ার কোন সুযোগ আর থাকছে না।
যেহেতু শ্রম আইনের ২(৩৪) ধারা সংশোধন করা হয়েছে এবং মজুরীসহ শব্দটি বাদ দেয়া হয়েছে।
২। মাতৃত্বকালীন সুবিধাবিহীন ছুটি:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-৪৫ অনুযায়ী যদি কোন নারী কর্মী প্রতিষ্ঠানে সন্তান জন্মের পূর্বে ৬ মাস কাজ না করে থাকেন অথবা তার ২টি সন্তান জীবিত থাকে।
তবে তিনি মাতৃত্বকালীন সুবিধা পাবেন না কিন্তু এক্ষেত্রে তিনি কোন ছুটি পাইবার অধিকারী হইলে তাহা পাইবেন।
এক্ষেত্রে তার বৎসরিক ছুটি এবং অসুস্থতা ছুটি প্রথমে ভোগ করার পরে আর ছুটি প্রয়োজন হলে মজুরীবিহীন ছুটি পাবে।
৩। নোটিশের পূর্বে সন্তান জন্ম পরবর্তী মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং সুবিধা:
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে নারী কর্মীরা মাতৃত্বকালীন ছুটির জন্য আবেদন করার পূর্বেই সন্তান জন্ম দান করেন।
উক্ত ক্ষেত্রে নারী কর্মী শুধুমাত্র ৫৬ দিনের ছুটি পাবেন এবং ১১২ দিনের মাতৃত্বকালীন সুবিধা পাবেন।
৪। গর্ভপাত জন্য ছুটি:
২০১৮ সালের সংশোধনীর পূর্বে কোন নারীর গর্ভপাতের জন্য কোন ছুটি বা সুবিধা পাইবার সুযোগ ছিল না কিন্তু ২০১৮ এর সংশোধনী অনুযায়ী কোন নারী কর্মীর গর্ভপাত হলে।
তিনি কোন মাতৃত্বকালীন সুবিধা পাবেন না কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার জন্য ছুটি ভোগ করতে পারবেন।
⛔ Bangladesh_Labor_Law বাংলাদেশ শ্রম আইন
ধারা_২৪ শাস্তির_পদ্ধতি
অসদাচরণ এবং দন্ড প্রাপ্তির কারণে দোষী সাব্যস্ত কোন শ্রমিককে শাস্তি দিতে হলে _
প্রথমত সেই শ্রমিকের বিরুদ্ধে written allegation বা লিখিত অভিযোগ করতে হবে এবং সেই অভিযোগের একটি কপি শ্রমিককে দিতে হবে। আর অভিযোগের উপযুক্ত জবাব দেয়ার জন্য অন্তত ৭দিন সময় দিতে হবে।
এরপর শ্রমিককে অবশ্যই শুনানীর সু্যোগ দিতে হবে।
পাশাপাশি মালিক পক্ষের এবং শ্রমিক পক্ষের সমান সদস্য দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। তদন্ত কমিটিকে ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে শ্রমিককে দোষী সাব্যস্ত করতে হবে।
সবশেষে মালিক বা মালিক দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যাক্তি বরখাস্তের আদেশ অনুমোদন করবেন।
আরও কিছু নিয়মাবলী আলোচনা হয়েছে এই ধারাটিতে_
অসদাচরণের অভিযোগে অভিযুক্ত শ্রমিককে সর্বোচ্চ ৬০ দিনের জন্য বরখাস্ত করা যাবে যদি তার বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন না থাকে। মনে রাখতে হবে সাময়িক বরখাস্তের যে কোন আদেশ লিখিত হবে এবং তা প্রদানের সাথে সাথেই কার্যকর হবে।
কোন তদন্তে অভিযুক্ত শ্রমিককে তদন্তের সময়ে একই প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত কোন ব্যাক্তি তদন্তের কাজে সাহায্য করতে পারবে। তদন্তে যদি কোন পক্ষ মৌখিক স্বাক্ষী প্রদান করে তাহলে যার বিরুদ্ধে স্বাক্ষ্য দিবে সে স্বাক্ষ্যদাতাকে জেরা করতে পারবেন।
কোন শ্রমিক যদি অসদাচরণের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয় অথবা ফৌজদারী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়, আর দোষী সাব্যস্ত হবার কারণে তাকে যদি বিনা নোটিশে বা নোটিশের পরিবর্তে বিনা মজুরীতে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়, তাহলে তদন্ত চলাকালীন সময়ে তাকে যে সাময়িক বরখাস্ত রাখা হয়েছিল তার জন্য কোন মজুরী পাবেনা, তবে উক্ত সময়ের জন্য খোরাকী ভাতা পাবে। আর যদি কাউকে সাময়িক বরখাস্ত রেখে তদন্ত করার পর দোষী প্রমাণিত না হয় তাহলে সেই সাময়িক বরখাস্তকালীন সময়ে সেই ব্যাক্তি কোম্পানিতে কর্মরত ছিল বলে গণ্য হবে এবং মজুরী পাবে। তবে খোরাকী ভাতা মজুরী থেকে কেটে রাখা হবে।
শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে শাস্তির আদেশের একটি কপি শ্রমিককে দিতে হবে। কোন শ্রমিক মালিক কর্তৃক পাঠানো চিঠি, আদেশ বা অন্য কোন কাগজ গ্রহন করতে অস্বীকার করে তাহলে সেই চিঠি বা আদেশ তাকে দেয়া হয়েছে বলে বিবেচনা করতে হবে। তবে এর জন্য সেই আদেশ বা চিঠির একটি কপি নোটিশ বোর্ডে লাগাতে হবে আর আরেকটি কপি শ্রমিকের ঠিকানায় রেজিষ্ট্রি ডাকযোগে পাঠাতে হবে।
পরিশেষে বলা হচ্ছে যে, কোন শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে মালিক অবশ্যই শ্রমিকের পূর্ববর্তী রেকর্ড, যে কোন অবদান, কৃতিত্ব বিবেচনায় আনবেন।
⛔ ধারা ২৭ (৩ক) উপ-ধারা (৩) যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন শ্রমিক বিনা নোটিশে অথবা বিনা অনুমতিতে ১০ দিনের অধিক কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকিলে মালিক উক্ত শ্রমিক কে ১০ দিনের সময় প্রদান করিয়া এই সম্পর্কে ব্যাখ্যা প্রদান করিতে এবং চাকুরীতে পুনরায় যোগদানের জন্য নোটিশ প্রদান করিবেন। এবং এইরুপ ক্ষেত্রে উক্ত শ্রমিক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদান বা চাকুরীতে যোগদান না করিলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক কে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য আরও ৭ দিন সময় প্রদান করিবেন। তাহাতেও যদি সংশ্লিষ্ট শ্রমিক চাকুরীতে যোগদান অথবা আত্মপক্ষ সমর্থন না করেন তবে, উক্ত শ্রমিক অনুপস্থিতির দিন হইতে চাকুরীতে ইস্তফা দিয়েছেন বলিয়া গণ্য হইবেন ।
⛔কোন কর্মী দীর্ঘ দিন নিখোঁজ থাকলে কি করবেন:
যদি কোন কর্মী ১০ দিনের বেশি সময় নিখোঁজ থাকেন তবে বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-২৭(৩)(ক) অনুযায়ী কর্মীকে প্রথমে ১০ দিনের মধ্যে দীর্ঘ অনুপস্থির কারন ব্যাখ্যাসহ কাজে যোগদানের জন্য সময় প্রদান করে রেজিস্টার ডাক যোগে চিঠি প্রদান করতে হবে।
প্রথম ১০ দিনের মধ্যে যদি কর্মীর কোন উত্তর না পাওয়া যায়, তবে পূনরায় তাকে ৭ দিনের সময় দিয়ে রেজিস্টার ডাক যোগে চিঠি পাঠাতে হবে।
যদি উক্ত ৭ দিন পরেও কোন উত্তর না পাওয়া যায় তবে, কর্মীকে রেজিস্টার ডাক যোগে চুড়ান্ত অব্যাহতি পএ প্রদান করতে হবে।
অনেকে যে বিষয়টি বা সমস্যার কথা বলেন সেটা হল।
আরেকটা সমস্যায় পরতে হয় যেমন কর্মীকে ১ম বা ২য় পএ দেয়ার পরে এসে হাজির হন।
তখন কি করনীয় থাকে,
১। কর্মী যে ব্যাখ্যা নিয়ে হাজির হবে সে ব্যাখ্যা যদি আপনার নিকট সন্তোষজনক হয় তবে কর্মীকে কাজ করতে দিতে পারেন।
২। যদি সন্তোষজনক না হয় তবে আপনি তার বিরুদ্ধে অসদাচরনমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
ইদানীং ভদ্র শ্রমিকগন একটা কাজ করেন যে মালিকের ল্যাপটপ এবং মোবাইল ফোন নিয়ে নিখোঁজ থাকেন। তাদের জন্য যে কাজটি করবেন তা হল ২৭(৩)(ক) এর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরে থানায় গিয়ে একটা জিডি করবেন এবং কোন ভাবেই মামলা করতে যাবেন না কারন মামলা করলে নানান জামেলাই পরবেন। শুধু থানায় গিয়ে বলবেন যে আমার একজন কর্মী নিখোঁজ আমি জিডি করতে চাই।চুরির কথা মুখে আনলেও কিন্ত পুলিশ জিডি নিবে না,তখন আপনাকে মামলা করতে হবে।
⛔ গর্ভবতী মহিলা শ্রমিকের প্রতি মালিক ও অন্যান্য শ্রমিকের দায়ীত্বঃ-
একজন গর্ভবতী মহিলা শ্রমিকের প্রতি মালিক ও অন্যান্য শ্রমিকের দায়ীত্ব হইবে নিম্নরুপ, যথাঃ-
(ক) এমন কোন আচরণ বা মন্তব্য না করা যাহাতে তিনি শারীরিক বা মানসিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হন বা অপমাণিত বোধ করেন;
(খ) সরকার কর্তৃক ঘোষিত ঝুকিপূর্ণ কাজে অথবা তাহার স্বাস্থ্যের প্রতি ঝুকিপূর্ণ হয় এমন কোন কাজে নিয়োজিত না করা;
(গ) ঝুকি বিহীন কাজে স্থানান্তর বা পদায়ন করা;
(ঘ) কর্মকালীন লিফট ব্যবহারে অগ্রাধিকার প্রদান করা;
(ঙ) সন্তান প্রসব উত্তর কালে তাহার শিশুর দুগ্ধপানের সুযোগ ও পরিবেশ নিশ্চিত করা।
⛔খোরাকি ভাতা (Subsistence Allowance) কি:
কোন কর্মীকে বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-২৪ অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত করা হলে উক্ত কর্মী খোরাকি ভাতার পাইবার অধিকারী হবেন।
খোরাকি ভাতার পরিমান কত হবে?
শ্রম আইনের ধারা-২(৯)(ক) অনুযায়ী খোরাকি ভাতা হবে "মূল মজুরী,মহার্ঘ ভাতা এবং এডহক বা অন্তর্বতীকালীন মজুরী এর অর্ধেক।"
তবে বাংলাদেশে শ্রম আইনের ধারা-২৪(২) অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত থাকাকালীন শ্রমিক খোরাকি ভাতা পাইবেন এবং অন্যান্য ভাতা পূর্ন হারে প্রাপ্য হইবেন।
এছাড়াও যদি কোন কর্মী দোষী সাবস্ত হন তবে তিনি সাময়িক বরখাস্ত থাকাকালীন সময়ের জন্য খোরাকি ভাতা ছাড়া অন্য কোন মজুরী পাইবেন না।
তবে উক্ত কর্মী যদি নিদোর্ষ প্রমানিত হন হবে তার খোরাকি ভাতা সমন্বয়সহ মজুরী প্রদেয় হইবে।
⛔ ক্ষতিপূরনমূলক ছুটির পরিবর্তে শুধু অর্থ প্রদান বৈধ কি না:
বাংলাদেশ শ্রম আইনের দুটি ধারাতে ক্ষতিপূরণমূলক ছুটির বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
ধারা-১০৪ এবং বিধি-১০১ অনুযায়ী ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি প্রদানের কথা বলা আছে।
বিধি-১০১ অনুযায়ী একজন কর্মীকে কোন কারনে সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান করা না গেলে ৩ কর্ম দিবসের মধ্যে ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান করতে হবে।
এছাড়াও ধারা-১১৮ অনুযায়ী কোন কর্মীকে উৎসব ছুটির দিনে কাজ করালে দুই দিনের মজুরী এবং একদিনের ক্ষতিপূরণমূলক বিকল্প ছুটি প্রদান করতে হবে।
উপরের দুটি ধারাতেই ছুটির পরিবর্তে ছুটি এবং মজুরী দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
কোথাও ছুটির বিকল্প হিসাবে মজুরীকে বিবেচনা করা হয় নি।
উভয় ক্ষেত্রেই মজুরী এবং ছুটিকে আলাদা ভাবে দিতে বলা হয়েছে।
কিছু প্রতিষ্ঠান ছুটি প্রদান না করে,কর্মীদেরকে অতিরিক্ত মজুরী প্রদান করছে কিন্তু ছুটি প্রদান করছে না।
যাহা শ্রম আইনের ধারা-১০৪ এবং ধারা-১১৮ অনুযায়ী অবৈধ।
তবে কোন কর্মী যদি ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি ভোগ করার পূর্বে তাহার চাকুরীর অবসান হয়, তাহলে তাকে মোট মজুরীর সমান অর্থ প্রদান করলেই হবে।
কিন্তু চাকুরীতে থাকাকালীন সময়ে বিকল্প ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান বাধ্যতামূলক।
⛔ একই পরিবারভূক্ত শ্রমিকদের ছুটি একত্রে প্রদানঃ-
(১) অবস্থানুসারে যতটুকু সম্ভব, একই পরিবারভূক্ত শ্রমিক যেমন স্বামী-স্ত্রী এবং সন্তান-সন্ততিকে ধারা ১১৫ মোতাবেক ছুটি একই দিনে মঞ্জুর করিতে হইবে।
(২) কারখানার ব্যবস্থাপকের অনুমোদন সাপেক্ষে একজন শ্রমিক তাহার ছুটি অন্য শ্রমিকের সহিত বদল করিতে পারিবেন।
(৩) ধারা ১১৫, ১১৬, ও ১১৮ এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বৎসর বলিতে ইংরেজি পঞ্জিকা বৎসর বুঝাইবে।
⛔ শ্রম বিধিমালা - ২০১৫
কোন প্রতিষ্ঠানে ৫০ জন বা উহার চাইতে অধিক লোক নিয়োগ করা হয় এমন প্রতিষ্ঠানের বিভাগ, শাখা,ও তলায় প্রতিটি প্রাথমিক চিকিৎসা বাক্স বা আলমারিতে মহাপরিদর্শক কর্তৃক ভিন্নরুপ নির্দেশ না হওয়া পর্যন্ত নিম্নবর্ণিত সরঞ্জামাদি থাকিবে। যেমন ঃ-
(ক) ১২টি (০.৫ আউন্স) জীবাণুমুক্ত তুলার প্যাকেট;
(খ) ১২ টি মাঝারি আকারের জীবাণুমুক্ত তুলার প্যাকেট;
(গ) ১২ টি বড় আকারের জীবাণুমুক্ত তুলার প্যাকেট;
(ঘ) ২৪ টি ছোট জীবাণুমুক্ত ব্যান্ডেজ;
(ঙ) পোড়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার্য ১২টি বড় আকারের জীবাণুমুক্ত ব্যান্ডেজ;
(চ) ১২টি (৪" চওড়া) রোলার ব্যান্ডেজ;
(ছ) ১২টি (২" চওড়া) রোলার ব্যান্ডেজ;
(জ) ৬ টি ত্রিকোণাকৃতি ব্যান্ডেজ;
(ঝ) টুরনিকেট (রক্তপাত বন্ধ করিবার উপকরণ);
(ঞ) শতকরা ২ ভাগ আয়োডিনের এলকোহলিক দ্রবণ ভর্তি ১ টি বোতল (৪ আউন্স);
(ট) এক জোড়া কাচি;
(ঠ) ১টি (৪আউন্স) রেক্টিফাইড স্পিরিড ভর্তি বোতল;
(ড) ২ প্যাকেট সেইফটি পিন;
(ঢ) হাড়ভাঙ্গার ক্ষেত্রে ব্যবহার্য ১২ টি বাশের/কাঠের চটি;
(ণ) বেদনানাশক ও এণ্টাসিড বড়ি, পোলার ক্ষেত্রে ব্যবহার্য মলম এবং শল্য চিকিৎসার জীবাণুনাশক দ্রব্য;
(ত) খাবার স্যালাইন প্যাকেট ১২ টি; এবং
(থ) ১টি প্রাথমিক চিকিৎসার প্রচারপত্র।।
⛔ মহিলা শ্রমিকের জন্য সীমিত কর্মঘণ্টাঃ-
কোন মহিলা শ্রমিককে তাহার বিনা অনুমতিতে কোন
প্রতিষ্ঠানে রাত দশ ঘটিকা হইতে ভোর ছয় ঘটিকা পর্যন্ত
সময়ের মধ্যে কোন কাজ করিতে দেওয়া হইবেনা।
⛔ অফিসে বিলম্বে উপস্থিতির জন্য মজুরী কর্তন:
বাংলাদেশে একটা রেওয়াজ প্রচলিত আছে যে কোন কর্মী মাসে তিন দিন বিলম্বে অফিসে প্রবেশ করলে উক্ত কর্মীর ১ দিনের হাজিরা কর্তন করা হবে।
আপনি বিশ্বাস করেন বা নাই করেন কথা কিন্ত সত্য, এমনকি অনেক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে এমন রেওয়াজ এখনও চালু আছে।
উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মানব সম্পদ বিভাগের কর্মকতাদের কাছে আইনের ধারা জানতে চাইলে শুধু মৃধু হাসি ছাড়া আর প্রতি উত্তরে কিছুই পাওয়া যায় না।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-১২৬ অনুযায়ী একজন শ্রমিক যেটুকু সময় বিলম্বে কাজে যোগদান করবেন ঠিক উক্ত সময়ের জন্য মজুরী কর্তন করা যাবে।
একটা বিষয় নিয়ে বিব্রতকর সমস্যা সবারই হয় আর তা হল কর্তনের নিয়মটা কি হবেঃ
যেকোন কর্মীর মূল বেতনকে ৩০ দিয়ে ভাগ দিবেন এবং তারপরে অনুপস্থিতির দিন দিয়ে গুন দিবেন অথবা যদি আপনি ঘন্টার মজুরী বের করতে চান তবে ১ দিনের মূল মজুরীকে ৮ দিয়ে ভাগ করলে ১ ঘন্টার মজুরী পাওয়া যাবে।
আর একটু সহজ করার চেষ্টা করছি
দিনের মূল মজুরী (৩০০০ টাকা):-
★ ৩০০০/৩০=১ দিনের মজুরী* অনুপস্থিতির মোট দিনগুলো।
ঘন্টার মূল মজুরীঃ-
৩০০০/৩০=১ দিনের মজুরী/৮ ঘন্টা * অনুপস্থিতির মোট ঘন্টা।
বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালার বিধি-১১৫ অনুযায়ী অনুপস্থিতির জন্য যাবতীয় কর্তনের হিসাব করতে হবে
⛔ শ্রম আইনের কিছু গুরুত্বপূর্ন সংশোধনী যাহা সংবাদ মাধ্যমে পাওয়া:
এই সংশোধনী প্রস্তাবে ২টি ধারা, ৪টি উপধারা, ৮টি দফা সংযোজন করা হয়েছে; ৬টি উপধারা বিলুপ্ত করা হয়েছে এবং ৪১টি ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
১। শিশু শ্রম নিষিদ্ধকরন।
২। ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে ৩০% এর পরিবর্তে ২০% এর সমর্থন।
৩। উৎসব ভাতাকে মূল আইনে অংশ করা যা শুধু বিধিতে ছিল।
৪। উৎসব ছুটির ক্ষতিপূরণ ছুটি কমিয়ে উৎসব ছুটিতে ১ দিন কাজ করালে পূরবর্তী ৩ দিনের ক্ষতিপূরণ ছুটির পরিবর্তে ১ দিন ছুটি প্রদান এবং দুই দিনের মজুরী প্রদান করতে হবে।
৫। কর্ম ঘন্টা আহার ও বিশ্রামের সময় ব্যতীত ১০ ঘন্টার বেশি সম্প্রসারণ করা যাবে না।
৬। মৃত্যুকালীন ক্ষতিপূরণ ১০০০০০ টাকা থেকে ২০০০০০ টাকা করা হয়েছে।
৭। স্থায়ী অক্ষমতার জন্য ১২৫০০০ টাকা থেকে ২৫০০০০টাকা করা হয়েছে।
৮। যেকোন মামলা ৯০ দিন থেকে ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
৯। ধর্ম ঘটের জন্য ৫১% এর সমর্থন থাকলেই চলবে।
১০। নিরাপত্তা কর্মী,গোপন সহকারীগন সহ ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারবে।
১১। কোনও শ্রমিক সংগঠন বিদেশ থেকে অনুদান নিলে তা সরকারকে জানাতে হবে।
১২। শ্রমিক সংগঠনের রেজিস্ট্রেশন ৬০ দিনের পরিবর্তে ৫৫ দিনের মধ্যে করতে হবে।
(collected).
⛔ঈদ বোনাস:
যেকোন ঈদ মানেই চাকুরীজীবীদের জন্য বিশেষ আকর্ষন হল ঈদ বোনাস।
২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ১৫ তারিখের পূর্বে শ্রম আইনে ঈদ বোনাসের বিষয়ে কোন বাধ্যবাধকতা ছিল না।
এছাড়াও ২০১৮ সালের সংশোধনীর মাধ্যমে উৎসব ভাতা মূল আইনের মধ্যে ২(ক) হিসাবে সংজ্ঞায়িত হয়েছে।
কিন্তু ২০১৫ সালে পাস হওয়া শ্রম বিধিমালার বিধি ১১১(৫) অনুযায়ী বোনাস বাধ্যতামূলক করা হয়।
বিধি ১১১(৫) অনুযায়ী কোন কর্মী নিরবিচ্ছিন্নভাবে ১ বছর চাকুরী পূর্ন করিয়াছেন তাহারা বছরে ২টি উৎসব ভাতা পাইবার অধিকারী হইবেন।
উৎসব ভাতার পরিমান মূল বেতনের অধিক হইবে না।
এছাড়া উক্ত উৎসব ভাতা মজুরীর অতিরিক্ত হিসাবে বিবেচিত হবে।
সংবাদপএ,সংবাদ সংস্থা, প্রশাসনিক কর্মচারী এবং প্রেস শ্রমিকের উৎসব ভাতা অন্যদের চেয়ে আলাদা।
উক্ত কর্মীদের জন্য উৎসব ভাতার পরিমান হবে পূর্ববর্তী মাসে উত্তোলনকৃত এক মাসের মূল বেতনের সমান এবং বছরে দুটি উৎসব ভাতা প্রাপ্য হবেন।
⛔ ছাটাই
1.ছাঁটাই(Retrenchment) : ধারা-20
2.কর্মচ্যৃুতি(Discharge) : ধারা-22
3.বরখাস্ত (Dismissal) : ধারা-ধারা-23
4.অপসারন (Removal) : ধারা-23 (2) ক
5.অবসান (Termination) : ধারা-26
6.পদত্যাগ (Resignation) : ধারা-27
7.অবসর গ্রহন (Retirement) : ধারা-28
8.মৃত্যু (Death) : ধারা-19
* ছাঁটাই(Retrenchment)-ধারা-20- কোন কারখানায় কাজের প্রয়োজন অপেক্ষা বেশি শ্রমিক থাকার কারনে মালিক কর্তৃক শ্রমিকের চাকুরী অবসান করাকে ছাঁটাই বলে:
শ্রম আইনে সংজ্ঞা :
অপ্রয়োজনীয়তার কারনে মালিক কর্তৃক শ্রমিকের চাকুরীর অবসান। ধারা: 2(11)
ছাঁটাই করার নিয়ম:
1) একটানা একবছর কাজ করেছেন এমন শ্রমিককে ছাঁটাই করতে হলে ছাঁটাই এর কারন উল্লেখ করে এক মাসের লিখিত নোটিশ দিতে হবে , নোটিশ না দিলে এক মাসের ( নোটিশ সময়ের) মজুরি দিতে হবে।
2) ছাঁটাই নোটিশের একটি কপি প্রধান পরিদর্শক অথবা প্রধান পরিদর্শক কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তাকে দিতে হবে। এবং আরেকটি কপি কারখানায় কোন ইউনিয়ন বা সিবিএ থাকলে দিতে হবে।
ছাঁটাই নোটিশে নিম্নলিখিত তথ্যসমূহ উল্লেখ করতে হবে :- যথা-
ক)প্রতিষ্ঠানের নাম
খ) শ্রমিকের নাম, পদবী ও কার্ড নম্বর।
গ)ছাঁটাই এর কারন।
ঘ) ছাঁটাই কার্যকর হইবার তারিখ।
ঙ)মোট চাকুরীকাল
চ) শ্রমিকের প্রাপ্য: নোটিশ পে( যদি প্রযোজ্য হয়) , ক্ষতিপূরন।
ছ)অভোগকৃত বার্ষিক ছুটির মজুরি।
জ) বকেয় মজুরি, অন্যান্য ভাতা ও অধিকাল ভাতা (যদি পাওনা থাকে)
ঝ) পাওনা পরিশোধের তারিখ:
ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে সুবিধাদি বা পাওনাদি:-
* বকেয়া মজুরি ও ওভারটােইম।
*বর্তমান মাসের মজুরি ও ওভারটাইম
* অর্জিত ছুটি পাওনা থাকলে তার মজুরি।
* প্রত্যেক বৎসর চাকুরীর জন্য 30 দিনের মজুরি বা গ্রাচুইটি যেটি বেশি হবে।
*এক মাস আগে নোটিশ না দিলে( প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) এক মাসের মজুরি।
* প্রভিডেন্ট ফান্ড থাকলে প্রভিডেন্ট ফান্ড এর টাকা।
* কোন শ্রমিককে ধারা 16 (7) এর অধীন ছাঁটাই করিলে ধারা-20 এর (2) এর (ক) অনুযায়ী নোটিশ দিতে হইবে না, তবে ক্ষতিপূরণ বা গ্রাচুইটির অতিরিক্ত হিসাবে আরোও 15 দিনের মজুরী দিতে হইবে।
⛔ বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১০৯ ধারায় মহিলা শ্রমিকের জন্য সীমিত কর্মঘন্টার বিধান বর্ণনা করা হয়েছে।এই ধারা অনুযায়ী কোন মহিলা শ্রমিককে তার বিনা অনুমতিতে কোন প্রতিষ্ঠানে রাত দশ ঘটিকা হতে ভোর ছয় ঘটিকা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কোন কাজ করতে দেয়া যাবে না ।অথাৎ কোনমহিলাকে তার অনুমতি ব্যতিত কোন প্রতিষ্ঠানে নৈশ পালায় কাজ করার জন্য নিয়োজিত করা যাবে না ।
কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় বেশরভাগ কারখানা ই জোরপূর্বক মহিলা শ্রমিকদের দিয়ে দিনের পর দিন নৈশ পালায় কাজ করায়,তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে জানে ই না যে “নাইট ডিউটি” তাদের অনুমতি লাগে ।
⛔বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১০৯ ধারায় মহিলা শ্রমিকের জন্য সীমিত কর্মঘন্টার বিধান বর্ণনা করা হয়েছে।এই ধারা অনুযায়ী কোন মহিলা শ্রমিককে তার বিনা অনুমতিতে কোন প্রতিষ্ঠানে রাত দশ ঘটিকা হতে ভোর ছয় ঘটিকা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কোন কাজ করতে দেয়া যাবে না ।অথাৎ কোনমহিলাকে তার অনুমতি ব্যতিত কোন প্রতিষ্ঠানে নৈশ পালায় কাজ করার জন্য নিয়োজিত করা যাবে না ।
কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় বেশরভাগ কারখানা ই জোরপূর্বক মহিলা শ্রমিকদের দিয়ে দিনের পর দিন নৈশ পালায় কাজ করায়,তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে জানে ই না যে “নাইট ডিউটি” তাদের অনুমতি লাগে ।
⛔ কোন কর্মী দীর্ঘ দিন নিখোঁজ থাকলে কি করবেন:
যে দিন কাল যাচ্ছে বলা যায় না, যে আপনার পাশের আসনে বসে কাজ করা লোকটা কোন দিন নিখোঁজ হয়ে গিয়ে অ-কাজ কু-কাজের সাথে জড়িয়ে পরছেন।
যদি কোন কর্মী ১০ দিনের বেশি সময় নিখোঁজ থাকেন তবে বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা-২৭(৩)(ক) অনুযায়ী কর্মীকে প্রথমে ১০ দিনের মধ্যে দীর্ঘ অনুপস্থির কারন ব্যাখ্যাসহ কাজে যোগদানের জন্য সময় প্রদান করে রেজিস্টার ডাক যোগে চিঠি প্রদান করতে হবে।
প্রথম ১০ দিনের মধ্যে যদি কর্মীর কোন উত্তর না পাওয়া যায়, তবে পূনরায় তাকে ৭ দিনের সময় দিয়ে রেজিস্টার ডাক যোগে চিঠি পাঠাতে হবে।
যদি উক্ত ৭ দিন পরেও কোন উত্তর না পাওয়া যায় তবে, কর্মীকে রেজিস্টার ডাক যোগে চুড়ান্ত অব্যাহতি পএ প্রদান করতে হবে।
অনেকে যে বিষয়টি বা সমস্যার কথা বলেন সেটা হল।
উক্ত কর্মী ২ মাস পরে এসে বলেন যে আমি আমার চাকুরী নেই ঠিক আছে আমার বেতন দেন।
লক্ষ্য করেন,
যখন একজন কর্মীকে খুজে পাওয়া যায় না তখন উক্ত কর্মীর মাসিক বেতন বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১৩১ ধারা অনুযায়ী শ্রম আদালতে জমা প্রদান করতে হয়। যদি আপনি টাকা আদালতে জমা দিয়ে দেন তবে শ্রমিকে বলে দিবেন শ্রম আদালতে যোগাযোগ করার জন্য এবং আপনি জামেলা মুক্ত হয়ে যাবেন।
কিন্ত যদি আপনি টাকা জমা না দেন তবে, আপনাকে শ্রম আইন অনুযায়ী যাবতীয় পাওনাদির নিষ্পত্তি করতে হবে।
আরেকটা সমস্যায় পরতে হয় যেমন কর্মীকে ১ম বা ২য় পএ দেয়ার পরে এসে হাজির হন।
তখন কি করনীয় থাকে,
১। কর্মী যে ব্যাখ্যা নিয়ে হাজির হবে সে ব্যাখ্যা যদি আপনার নিকট সন্তোষজনক হয় তবে কর্মীকে কাজ করতে দিতে পারেন।
২। যদি সন্তোষজনক না হয় তবে আপনি তার বিরুদ্ধে অসদাচরন মূলক ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
ইদানীং ভদ্র শ্রমিকগন একটা কাজ করেন যে মালিকের ল্যাপটপ এবং মোবাইল ফোন নিয়ে নিখোঁজ থাকেন। তাদের জন্য যে কাজটি করবেন তা হল ২৭(৩)(ক) এর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরে থানায় গিয়ে একটা জিডি করবেন এবং কোন ভাবেই মামলা করতে যাবেন না কারন মামলা করলে নানান জামেলাই পরবেন। শুধু থানায় গিয়ে বলবেন যে আমার একজন কর্মী নিখোঁজ আমি জিডি করতে চাই।চুরির কথা মুখে আনলেও কিন্ত পুলিশ জিডি নিবে না,তখন আপনাকে মামলা করতে হবে।
⛔ফায়ার সেফটি অফিসার:
বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫ প্রকাশের পরে ফায়ার সেফটি অফিসারের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব পেতে শুরু করে কারন শ্রম বিধিমালার বিধি- ৫৫ অনুযায়ী কমপক্ষে ৫০০ জন শ্রমিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত থাকলে ১ জন ফায়ার সেফটি অফিসার নিয়োগ প্রদান বাধ্যতামূলক।
বিধি-৫৫(১২) অনুযায়ী একজন ট্রেনিং প্রাপ্ত কর্মকর্তাকে রাখিতে হইবে।
এখন প্রশ্ন হল কে হবে উক্ত ফায়ার সেফটি অফিসার।
অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ বিধিমালা ২০১৪ এর বিধি ২(১১) অনুযায়ী "ফায়ার সেফটি আফিসার" অর্থ অগ্নি প্রতিরোধ, অগ্নি নির্বাপন,উদ্ধার কার্যক্রমে অধিদপ্তর কর্তৃক স্বীকৃত কোন প্রতিষ্ঠান হইতে অন্যূন ৬ মাস মেয়াদী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও অভিজ্ঞ কোন কর্মকর্তা এবং অধিদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবেন।
উক্ত অফিসারের কাজ হবে সব অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জামাদির যথাযথ সংরক্ষন এবং প্রস্তুত রাখা।
এছাড়াও বিধি-৫৫(১০) অনুযায়ী গঠিত তিনটি দলকে প্রতি ৬ মাস পরপর পুনঃপ্রশিক্ষন প্রদান করা।
⛔ প্রসূতি কল্যাণ সুবিধাঃ-
(১) প্রত্যেক মহিলা শ্রমিক তাহার মালিকের নিকট হইতে তাহার সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখের অব্যবহিত পূর্ববর্তী আট সপ্তাহ এবং সন্তান প্রসবের অব্যবহিত পরবর্তী আট সপ্তাহের জন্য প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা পাইবার অধিকারী হইবেন এবং তাহার মালিক তাহাকে এই সুবিধা প্রদান করিতে বাধ্য থাকিবেনঃ
তবে শর্ত থাকে যে, কোন মহিলা উক্তরূপ সুবিধা পাইবেন না যদি না তিনি তাহার মালিকের অধীন তাহার সন্তান প্রসবের অব্যবহিত পূর্বে অন্যূন ছয় মাস কাজ করিয়া থাকেন।
(২) কোন মহিলাকে উক্তরুপ সুবিধা প্রদেয় হইবে না যদি তাহার সন্তান প্রসবের সময় তাহার দুই বা ততোধিক সন্তান জীবিত থাকে, তবে এক্ষেত্রে তিনি কোন ছুটি পাইবার অধিকারী হইলে তাহা পাইবেন।
⛔শিক্ষানবিসকালে (Probation Period) কর্মী ছুটি পাবে কি না
অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে কর্মীকে শিক্ষানবিসকালে কোন প্রকার ছুটি প্রদান করা হয় না কারন হিসাবে বলা হয় যে, স্থায়ী না হলে ছুটি পাবে না।
বাংলাদেশ শ্রম আইনে শুধুমাএ দুই প্রকার ছুটি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে শর্তপূরণ করতে হয়।
১। বাৎসরিক ছুটি পেতে হলে এক বছর কাজ করতে হয়।
২। মাতৃত্বকালীন ছুটি পেতে ছয় মাস কাজ করতে হয়।
বাংলাদেশ শ্রম আইনে অন্য কোন ছুটি পেতে এমন কোন শর্তপূরণ করতে হয় না।
এছাড়াও যদি কোন শ্রমিক বছরের মাঝামাঝি সময়ে চাকুরীতে যোগদান করে, তবে তাকে বিধি-১০৬ অনুযায়ী আনুপাতিক হারে ছুটি প্রদান করতে হবে।
তবে অসুস্থতা ছুটি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে কর্মীকে ডাক্তারের পরামর্শ সনদ উপস্থাপন করতে হবে, অন্যথায় কর্মী উক্ত ছুটি পাইবেন না।
তাই যে সকল প্রতিষ্ঠান শিক্ষানবিসকালে ছুটি প্রদান করেন না, তারা বে-আইনী কাজে লিপ্ত আছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন