তিন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার বন্ধুর চাকরির ইন্টারভিউ ও তৃতীয় বন্ধুর জব না হওয়া:
ফাইনাল এক্সাম শেষে তিন বন্ধু চাকরির ইন্টারভিউ দিতে গেলেন দেশের স্বনামধন্য একটি নিট ফ্যাক্টরিতে । সেখানে গিয়ে দেখতে পান তাদেরই ব্যাচের কয়েকজন কিছুদিন হল সেখানে চাকরি শুরু করে দিয়েছেন ।
টেক্সটাইল সেক্টরে এটি অনেকটা স্বাভাবিক । ইন্টার্নশিপ শেষে ফাইনাল এক্সাম ও কম্প্রিহেনসিভ ভাইভার আগে-পরে কেউ কেউ চাকরিতে জয়েন করে ফেলেন । আবার কে কখন কোথায় জয়েন করেন তা অনেকে জানতে পারেন না ।
এইচ আর (হিউম্যান রিসোর্স) ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা তিন বন্ধুর প্রাথমিক ইন্টারভিউ পর্ব সেরে কনসার্ন ডিপার্টমেন্টের ব্যবস্থাপকের নিকট পাঠালেন সেকেন্ড ইন্টারভিউ এর জন্য । জব অপরচুনিটি ছিল নিটিং ডিপার্টমেন্টে ।
তিন বন্ধুর আলাদা আলাদা ইন্টারভিউ নিলেন । সেখানে ১২ ঘণ্টার শিপট । মাসের কিছুদিন সকাল ৯ টা থেকে রাত ৯ টা শিপটে ডিউটি , বাকি দিনগুলি রাত ৯ টা হতে সকাল ৯ টা পর্যন্ত শিপট ।
দুই বন্ধু রাজি হলেন । তৃতীয় জন রাজি হননি । রাত জেগে ১২ ঘন্টা শিপটে ডিউটি করা তার ভালো লাগেনি । ডে-নাইট শিপটিং এর পরিবর্তে জেনারেল শিপটে (সাধারনত ৯-৬ টা) ডিউটির ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল ।
প্রথম দুই বন্ধুর চাকরি হল । তৃতীয় বন্ধু ডাক পাননি । কেননা তিনি রাত জেগে শিপটিং ডিউটি করতে আগ্রহ দেখাননি ।
দুই বন্ধু চাকরি শুরু করে দিয়েছে । তৃতীয় বন্ধুর কাংখিত জবের অপেক্ষার সময় বাড়তে থাকে । স্টুডেন্ট লাইফ থেকেই প্রোডাকশন এর জবের চেয়ে তার আগ্রহ মার্চেন্ডাইজিং জবের প্রতি ।
মার্চেন্ডাইজিং জবের প্রতি আকর্ষন এর পেছনের কারনগুলোর অন্যতম - মার্চেন্ডাইজিং এ শিপটিং ডিউটি নেই, অফিস আওয়ার সাধারনত ৯-৬ টা (কাজের চাপ থাকলে বের হতে কিছুটা দেরি হতে পারে)। মার্চেন্ডাইজিং এ প্রথম থেকেই এসি রুমে বসে কম্পিউটার রিলেটেড কমিউনিকেশন বেসড জবের সুযোগ থাকে । পাশাপাশি বায়িং অফিসগুলোতেও জবের সুযোগ মিলে । দেশ-বিদেশে বায়ারদের সাথে মিটিং, কমিউনিকেশন এর মাধ্যমে বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে জানার সুযোগ পাওয়া যায় যা পরবর্তীকালে ব্যবসা-বানিজ্যের সুযোগ তৈরি করে ।
এক মাস দু মাস করে কয়েক মাস কেটে যায় । ইতিমধ্যে ব্যাচের প্রায় সবাই চাকরিতে জয়েন করে । তার দুই বন্ধুও চাকরি করে যাচ্ছে । তৃতীয় বন্ধু কাংখিত মার্চেন্ডাইজিং জব খুঁজে খুঁজে হয়রান । কয়েকমাস চেষ্টার পরও মার্চেন্ডাইজিং জবের সুযোগ না পেয়ে দু-এক বার প্রোডাকশন জবে ঢুকে যাওয়ার সিধান্ত নেয় । দীর্ঘসময় বেকার থাকলে মাঝে মাঝে যে কোনো একটা জবে ঢুকে যাওয়ার ইচ্ছে জাগে ।
তৃতীয় বন্ধুর মার্চেন্ডাইজিং জবে জয়েনের তীব্র আখাংকার নিকট কয়েকমাসের বেকার জীবনের হতাশার পরাজয় হয় । সে তার লক্ষ্যে অটল । মাঝে মাঝে হতাশ হলেও একদিন ঠিকই মার্চেন্ডাইজিং এ জব হবেই এ বিষয়ে আত্মবিশ্বাস ছিল ।
চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন । আল্লাহর মেহেরবানিতে প্রায় ৫ মাস পর মার্চেন্ডাইজিং জবের অফার পান । এক জায়গায় কনফার্ম হওয়ার পর একই সাথে আরো দুই প্রতিষ্ঠান হতে অফার আসে । ঢাকা থেকে আসা-যাওয়া করে ডিউটি করা যাবে কম দূরত্বের ফ্যাক্টরিতে মার্চেন্ডাইজিং এ জয়েন করার মধ্য দিয়ে তৃতীয় বন্ধু কর্মজীবন শুরু করেন । ততদিনে প্রথম দুই বন্ধুর চাকরির বয়স কয়েক মাস হয়ে গেছে ।
কয়েক বছর পর...
তৃতীয় বন্ধু তুলনামূলক ভালো সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন বায়িং হাউজে জব করেন । গ্রস সেলারি প্রথম ও দ্বিতীয় বন্ধুর সমান বা কিছুটা কম-বেশি । তৃতীয় বন্ধু তার জব নিয়ে সেটিসফাইড । চাকরির পাশাপাশি অবসর ও ছুটির দিনগুলিতে নিজের একটি বিজনেস এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপ নিয়ে কাজ করেন ।
মোরাল অব দ্যা স্টোরিঃ কাংখিত জিনিস পেতে দেরি হয় হোক । স্বপ্নের পেছনে লেগে থাকলে ইনশাআল্লাহ একদিন লক্ষ্যে পৌঁছাবেই ।
বি: দ্র: কাপড় জামা ডট কম এ প্রকাশিত উপরের লেখাটি পেইজের নিজস্ব । ভালো লাগলে শেয়ার করতে পারেন । কপি পেষ্ট করার ক্ষেত্রে অবশ্যই কার্টেসিতে #কাপড়_জামা_ডট_কম লিখে পেইজকে ট্যাগ করবেন । সংগৃহীত কিংবা কালেক্টেড লিখে ও কাটছাঁট করে কাপড় জামা ডট কম এর লেখা কপি পেষ্ট করা নিষেধ।
ফাইনাল এক্সাম শেষে তিন বন্ধু চাকরির ইন্টারভিউ দিতে গেলেন দেশের স্বনামধন্য একটি নিট ফ্যাক্টরিতে । সেখানে গিয়ে দেখতে পান তাদেরই ব্যাচের কয়েকজন কিছুদিন হল সেখানে চাকরি শুরু করে দিয়েছেন ।
টেক্সটাইল সেক্টরে এটি অনেকটা স্বাভাবিক । ইন্টার্নশিপ শেষে ফাইনাল এক্সাম ও কম্প্রিহেনসিভ ভাইভার আগে-পরে কেউ কেউ চাকরিতে জয়েন করে ফেলেন । আবার কে কখন কোথায় জয়েন করেন তা অনেকে জানতে পারেন না ।
এইচ আর (হিউম্যান রিসোর্স) ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা তিন বন্ধুর প্রাথমিক ইন্টারভিউ পর্ব সেরে কনসার্ন ডিপার্টমেন্টের ব্যবস্থাপকের নিকট পাঠালেন সেকেন্ড ইন্টারভিউ এর জন্য । জব অপরচুনিটি ছিল নিটিং ডিপার্টমেন্টে ।
তিন বন্ধুর আলাদা আলাদা ইন্টারভিউ নিলেন । সেখানে ১২ ঘণ্টার শিপট । মাসের কিছুদিন সকাল ৯ টা থেকে রাত ৯ টা শিপটে ডিউটি , বাকি দিনগুলি রাত ৯ টা হতে সকাল ৯ টা পর্যন্ত শিপট ।
দুই বন্ধু রাজি হলেন । তৃতীয় জন রাজি হননি । রাত জেগে ১২ ঘন্টা শিপটে ডিউটি করা তার ভালো লাগেনি । ডে-নাইট শিপটিং এর পরিবর্তে জেনারেল শিপটে (সাধারনত ৯-৬ টা) ডিউটির ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল ।
প্রথম দুই বন্ধুর চাকরি হল । তৃতীয় বন্ধু ডাক পাননি । কেননা তিনি রাত জেগে শিপটিং ডিউটি করতে আগ্রহ দেখাননি ।
দুই বন্ধু চাকরি শুরু করে দিয়েছে । তৃতীয় বন্ধুর কাংখিত জবের অপেক্ষার সময় বাড়তে থাকে । স্টুডেন্ট লাইফ থেকেই প্রোডাকশন এর জবের চেয়ে তার আগ্রহ মার্চেন্ডাইজিং জবের প্রতি ।
মার্চেন্ডাইজিং জবের প্রতি আকর্ষন এর পেছনের কারনগুলোর অন্যতম - মার্চেন্ডাইজিং এ শিপটিং ডিউটি নেই, অফিস আওয়ার সাধারনত ৯-৬ টা (কাজের চাপ থাকলে বের হতে কিছুটা দেরি হতে পারে)। মার্চেন্ডাইজিং এ প্রথম থেকেই এসি রুমে বসে কম্পিউটার রিলেটেড কমিউনিকেশন বেসড জবের সুযোগ থাকে । পাশাপাশি বায়িং অফিসগুলোতেও জবের সুযোগ মিলে । দেশ-বিদেশে বায়ারদের সাথে মিটিং, কমিউনিকেশন এর মাধ্যমে বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে জানার সুযোগ পাওয়া যায় যা পরবর্তীকালে ব্যবসা-বানিজ্যের সুযোগ তৈরি করে ।
এক মাস দু মাস করে কয়েক মাস কেটে যায় । ইতিমধ্যে ব্যাচের প্রায় সবাই চাকরিতে জয়েন করে । তার দুই বন্ধুও চাকরি করে যাচ্ছে । তৃতীয় বন্ধু কাংখিত মার্চেন্ডাইজিং জব খুঁজে খুঁজে হয়রান । কয়েকমাস চেষ্টার পরও মার্চেন্ডাইজিং জবের সুযোগ না পেয়ে দু-এক বার প্রোডাকশন জবে ঢুকে যাওয়ার সিধান্ত নেয় । দীর্ঘসময় বেকার থাকলে মাঝে মাঝে যে কোনো একটা জবে ঢুকে যাওয়ার ইচ্ছে জাগে ।
তৃতীয় বন্ধুর মার্চেন্ডাইজিং জবে জয়েনের তীব্র আখাংকার নিকট কয়েকমাসের বেকার জীবনের হতাশার পরাজয় হয় । সে তার লক্ষ্যে অটল । মাঝে মাঝে হতাশ হলেও একদিন ঠিকই মার্চেন্ডাইজিং এ জব হবেই এ বিষয়ে আত্মবিশ্বাস ছিল ।
চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন । আল্লাহর মেহেরবানিতে প্রায় ৫ মাস পর মার্চেন্ডাইজিং জবের অফার পান । এক জায়গায় কনফার্ম হওয়ার পর একই সাথে আরো দুই প্রতিষ্ঠান হতে অফার আসে । ঢাকা থেকে আসা-যাওয়া করে ডিউটি করা যাবে কম দূরত্বের ফ্যাক্টরিতে মার্চেন্ডাইজিং এ জয়েন করার মধ্য দিয়ে তৃতীয় বন্ধু কর্মজীবন শুরু করেন । ততদিনে প্রথম দুই বন্ধুর চাকরির বয়স কয়েক মাস হয়ে গেছে ।
কয়েক বছর পর...
তৃতীয় বন্ধু তুলনামূলক ভালো সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন বায়িং হাউজে জব করেন । গ্রস সেলারি প্রথম ও দ্বিতীয় বন্ধুর সমান বা কিছুটা কম-বেশি । তৃতীয় বন্ধু তার জব নিয়ে সেটিসফাইড । চাকরির পাশাপাশি অবসর ও ছুটির দিনগুলিতে নিজের একটি বিজনেস এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপ নিয়ে কাজ করেন ।
মোরাল অব দ্যা স্টোরিঃ কাংখিত জিনিস পেতে দেরি হয় হোক । স্বপ্নের পেছনে লেগে থাকলে ইনশাআল্লাহ একদিন লক্ষ্যে পৌঁছাবেই ।
বি: দ্র: কাপড় জামা ডট কম এ প্রকাশিত উপরের লেখাটি পেইজের নিজস্ব । ভালো লাগলে শেয়ার করতে পারেন । কপি পেষ্ট করার ক্ষেত্রে অবশ্যই কার্টেসিতে #কাপড়_জামা_ডট_কম লিখে পেইজকে ট্যাগ করবেন । সংগৃহীত কিংবা কালেক্টেড লিখে ও কাটছাঁট করে কাপড় জামা ডট কম এর লেখা কপি পেষ্ট করা নিষেধ।
লিখেছেনঃ
Mohammad Iqbal Hossain
বুটেক্স ৩৩ তম ব্যাচের প্রকৌশলী
প্রকাশক - কাপড় জামা ডট কম ( পেইজ )
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন