ছেলেদের বোতাম ডানদিকে আর মেয়েদের বাঁদিকে কেন ?
নেপোলিয়ান থেকে ঘোড়ায় চড়া, তরোয়াল নিয়ে যুদ্ধ থেকে কোলের সন্তানকে দুধ খাওয়ানো, এ নিয়ে অনেক তত্ত্ব শোনা যায়, গল্পও। কোনােটাই খণ্ডন করার নয়।
নেপোলিয়ান বোনাপার্টের যে কোনও ছবিতেই দেখা যায়, তাঁর ডান হাত কোর্টের ভেতরে ঢোকানো এটা তখনই হয়, যদি কোটের বোতাম বাঁদিক থেকে ডানদিকে খুলতে হয়। বলা হয়, মেয়েদের ডানহাতও নাকি সেভাবেই থাকত।যার জন্য অনেকেই নেপোলিয়ানকে নিয়ে হাসাহাসি করতেন । তা নেপোলিয়ানের কানেও গিয়েছিল। এর পর তাঁরই নির্দেশে মেয়েদের জামার বোতাম বাঁ-দিকে করে দেওয়া হয়।
পুরুষরা সাধারণত নিজের জামা নিজেই পরে এসেছেন। তা তিনি রাজা-মহারাজাই হোন, বা অতি সাধারণ কেউ। কিন্তু, সম্পন্ন পরিবারের মেয়েদের জন্য বাড়িতে দাসী থাকতেন।তাঁরাই জামা পরিয়ে দিতেন। যেহেতু সেই দাসীদের বেশির ভাগই ডানহাতি বলে ধরে নেওয়া যায়, তাঁদের সুবিধার জন্যই মেয়েদের জামার বোতাম বাঁ দিকে রাখাই দস্তুর।
রাজাই হোক বা সেনানি, তাঁদের ডান হাতে ধরতে হয়েছে তরোয়াল। খালি বলতে বাঁ হাত। বাঁ হাতে বোতাম খোলাপরার সুবিধার জন্যই জামার বোতাম বসানো হত ডান দিকে।
আর মহিলাদের ক্ষেত্রে বাচ্চাকে যেহেতু বাঁ দিকে ধরতে হয়, তাই ডান হাত খালি থাকে। বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর সময় ডান হাতে বোতাম খুলতে হয়। সেক্ষেত্রে বোতাম ডানদিকে থাকলে খুলতে কষ্ট হতো। তা মাথায় রেখেই বাঁদিকে বোতাম বসানো হয়।
পুরুষরা ঘোড়া নিয়ে ছুটলে রাস্তার বাঁদিক ঘেঁষেই যেতেন, যাতে ডান দিকে তরোয়াল চালাতে সুবিধা হয়। সেই তরোয়াল গোঁজা থাকত বাঁ-কোমরে। বের করার সময় তরোয়াল যাতে জামা বা কোটের বোতামের খাঁজে আটকে না যায়, তার জন্যই বোতাম বসানো হতো ডানদিকে। মেয়েরা যখন ঘোড়ায় চড়ত বা এখন বাইকে বসেন, দুটো পা-ই সাধারণত বাঁদিকে থাকে।শার্টের ভিতরে যাতে হাওয়া না ঢুকতে পারে, তার জন্যই বোতাম বসানো হয় বাঁদিকে।
আরও একটি তত্ত্ব হল, মেয়েরা যে পুরুষদের থেকে কোনও অংশে কম নন, তা বোঝানোর জন্যই পুরুষের মতো জামা পরেছেন। তার পরেও বৈচিত্র্যর কথা ভেবে পরিকল্পিত ভাবেই মেয়েরা জামার বাঁদিকে বোতাম বসিয়েছেন।
দর্জিকে একসঙ্গে গাদাগুচ্ছের জামা বানাতে হত। পুরুষ ও মহিলাদের জামা যাতে মিশে না যায়, চট করে আলাদা করে নেওয়ার সুবিধার জন্যই এই ব্যবস্থা।
নেট থেকে সংগৃহীত
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন