প্রসঙ্গ গার্মেন্টস শ্রমিক বেতন | Garments Factory Salary - Textile Lab | Textile Learning Blog

প্রসঙ্গ গার্মেন্টস শ্রমিক বেতন

শুধু একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার বলেই না। এই সেক্টরের সাথে যেহেতু আমি সরাসরি জড়িত তাই কিছু কথা না বললেই নয়!

যে সমস্ত পাব্লিক মহাশয়রা গার্মেন্টস এর নূন্যতম ধারনা রাখে না মূলত তারাই লাফা-লাফি বেশী করতেছে! আমি তো মনে করি গুজব ছড়িয়ে গার্মেন্টস শীল্প ধ্বংশের পিছনে এরাই মুল কালপ্রিট!! 

  
উল্লেখ্য যে, মজুরী বৃদ্ধির খসড়া সুপারিশের গেজেট বের হয়েছে গত ৮ অক্টোবর-২০১৮।

বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের সর্বনিম্ন বেতন ৮০০০ টাকা নির্ধারন করা হয়েছে। যা বর্তমান বেতন কাঠামোর ৫১% বেশি।

২০১৩ সালের পর থেকে পোশাক শ্রমিকের সর্বনিম্ন বেতন ৫৩০০ টাকায় আটকে ছিল। অর্থাৎ, কোন একজন নিয়োগ হলেই তার বেতন হবে সর্বনিম্ন ৫৩০০ টাকা। 

২০১৩ থেকে ২০১৮, দীর্ঘ এই সময়ে টেক্সটাইল শিল্পের দারুণ বিপ্লব ঘটেছে, নিঃসন্দেহে এক্সপোর্ট বেড়েছে অনেকগুন। বর্তমান সময়ে যেখানে ৫০ বিলিয়ন ডলার এক্সপোর্ট টার্গেট ধরা হয়, সেই তুলনায় শ্রমিকদের উপর মালিকপক্ষ ও সরকারের উদাসীনতা ছিল।

এনিওয়ে, ওনাদের উদ্দেশ্যে একটা সহজ অংক মিলিয়ে দিই-

• এই ছবিতে প্রথমেই গার্মেন্টস না বোঝা লোকেরা লাফিয়ে উঠবে! মাত্র ১৫ টাকা/ ২০ টাকা বাড়িয়েছে গ্রেড ভিত্তিক!!

আসুন একটু অতীত ঘাটি-
  
>>> সাল- ২০১৩ 

১ম গ্রেড-  ১৩,০০০/-

২য় গ্রেড- ১০,৯০০/-

৩য় গ্রেড- ৬৪০৫/-

৪র্থ গ্রেড- ৬৪২০/-

৫ম গ্রেড- ৬০৪২/-

৬ষ্টগ্রেড-  ৫৬৭৮/-

৭ম গ্রেড- ৫৩০০/-

মুলত যারা সরকারী নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী ২০১৮ আর ২০১৯ এর গড়মিল ধরতে পারছেন না...  তাদের চোখের পর্দাটা সরিয়ে দিই... 

নতুন বেতম কাঠামো অনুযায়ী ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে কার্যকর করা হইছে। মানে দাঁড়ায়- বর্তমান শ্রমিকেরা এই নির্ধারিত বেতন পাবে ২০১৯ এর জানুয়ারীতে/ অলরেডি পেয়েছে! 

যদিও সাল- ২০১৮ ( এক্টুয়ালী বেতন প্রাপ্তি ২০১৯ এর জানুয়ারী ৭ তারিখ)

পার্থ্যক্য মিলিয়ে নিই 

সাল- ২০১৩   --সাল-২০১৮ – বাড়তি বেতন
১ম- ১৩,০০০/- – ১৭৫১০/- = ৪৫১০/-
২য়-১০,৯০০/-  – ১৪৬৩০/- = ৩৭৩০ 
৩য়-৬৪০৫/-    -  ৯৫৯০/-  = ৩১৮৫/- 
৪র্থ-৬৪২০/-    -  ৯২৪৫/-   = ২৮২৫/- 
৫ম-৬০৪২/-    -  ৮৮৫৫/-  =২৮১৩/- 
৬ষ্ট-৫৬৭৮/-    -  ৮৪০৫/-  = ২৭২৭/-
৭ম-৫৩০০/-    - ৮০০০/-   = ২৭০০/-  

এখন কথা হইল, শ্রমিকেরা এতে সন্তুষ্ট না হওয়ায় বাড়তি বেতন পাওয়ার  -৩-৪ দিনের মাথায় আরো কিছু টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় ! যেটা সামনের পাবে ফেব্রুয়ারী মাসে-  

সাল-২০১৩-----২০১৮(ডিসে.) এবং ২০১৯(জানু.)-----মোট বাড়তি বেতন
১ম- ১৩,০০০ – (১৭৫১০) ১৮২৭৫/- = ৪৫১০/-+৭৬৫/- = ৫২৭৫/-
২য়-১০,৯০০  – (১৪৬৩০) ১৫৪১৬/- =৩৭৩০/-+৭৮৬/- = ৪৫১৬/- 
৩য়-৬৪০৫    –  (৯৫৯০)    ৯৮৪৫/-  = ৩১৮৫/-+২৫৫/- = ৩৪৪০/-
৪র্থ-৬৪২০    –  (৯২৪৫)   ৯৩৪৭/-   = ২৮২৫/-+১০২/- = ২৯২৭/-
৫ম-৬০৪২    –  (৮৮৫৫)   ৮৮৭৫/-  =২৮১৩/-+২০/- = ২৮৩৩/- 
৬ষ্ট-৫৬৭৮    –  (৮৪০৫)   ৮৪২০/-  = ২৭২৭/-+১৫/- = ২৭৪২/- 
৭ম-৫৩০০    –  (৮০০০)   ৮০০০/-   = ২৭০০/-

কোই আমি তো কোথাও শুধুমাত্র  ১৫ টাকা/ ২০ টাকা বাড়ানো দেখলাম না! 
তবে কেন এই অপপ্রচার?? কেন কিছু হলুদ মিডিয়া প্রতনিয়ত এ ধরনের আজগুবি হেডলাইন দিয়ে সংবাদ প্রচার করে আরো উস্কানী দিচ্ছে? 

 প্লীজ... না বুঝলে আরো একবার উপরের হিসেবটা দেখুন।। 

তবুও প্লিজ আর এভাবে উস্কানী দিয়েন না... বাংলাদেশের অর্থনীতি দাড়িয়ে  আছে এই পোশাক শিল্পের উপর। প্রায় ২.৫ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান যোগায় এই পোশাক কারখানা!

 বেকার সমস্যা সমাধান, কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এ শিল্পের অবদান ঈর্ষণীয়। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ এই শিল্পের হাত ধরে বিশ্ববাজারে একটি ব্র্যান্ড সৃষ্টি করেছে। যার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত আমাদের দেশ বিশ্বদরবারে নতুন পরিচিতি ও সুনাম অর্জন করছে। 

এই গেল সিম্পল বাড়তি বেতন নিয়ে কথা! এর বাইরেও রয়েছে হাজারো কথা। সে গুলো আগে জানবে হবে/ বুঝতে হবে। শুধু মালিকের লাভ দেখলেই হবে না। গার্মেন্টস চালানোর খরচটাও চিন্তা করতে হবে। 

এতগুলো মানুষের কর্মসংস্থান করা মুখের কথা না। খুব বেশী হলে তারা লাক্সারী লাইফ লীড করে। বাকী টাকা-পয়সা দিয়ে মালিকেরা  নতুন করে বিজনেস/ফ্যাক্টরী  বানায়। আরো নতুন বেকার মানুষের কাজের 
সু্যোগ করে দেয়... এই তো?

এটাই কি মালিকদের অপরাধ? 


আসুন এই দঃসময়ে ফ্যাক্টরী গুলোর পাশে দাঁড়াই... না দাড়াইলেও অন্তত গুজব সৃষ্টি থেকে বিরত থাকি।  

পরিশেষে বলতে চাই, ওভারটাইম সহ সব মিলিয়ে একজন গার্মেন্টস শ্রমিক আয় করে নিম্নতম ১০০০০ টাকা থেকে ১৬০০০ টাকা। তারপরও নেতিবাচক আলোচনা গার্ন্টমেস নিয়েই। 

NGO ভিত্তিক Trade Unions... নানা নামে শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশের এ সেক্টরের জন্য সবচেয়ে বড় ক্ষতিকর সংগঠন। তারাই দেশে ও বিদেশে এ সেক্টরের জন্য Negative ম্যাসেজ দিয়ে বেড়ায়। বর্তমানে তাঁরাও এ সেক্টরের অশান্তির জন্য দায়ী। সরকারকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে এবং নিতে হবে কার্যকর ব্যবস্থা। 

ave Gaments
By Murad Khan


প্রসঙ্গ গার্মেন্টস শ্রমিক বেতন | Garments Factory Salary


প্রসঙ্গ গার্মেন্টস শ্রমিক বেতন

শুধু একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার বলেই না। এই সেক্টরের সাথে যেহেতু আমি সরাসরি জড়িত তাই কিছু কথা না বললেই নয়!

যে সমস্ত পাব্লিক মহাশয়রা গার্মেন্টস এর নূন্যতম ধারনা রাখে না মূলত তারাই লাফা-লাফি বেশী করতেছে! আমি তো মনে করি গুজব ছড়িয়ে গার্মেন্টস শীল্প ধ্বংশের পিছনে এরাই মুল কালপ্রিট!! 

  
উল্লেখ্য যে, মজুরী বৃদ্ধির খসড়া সুপারিশের গেজেট বের হয়েছে গত ৮ অক্টোবর-২০১৮।

বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের সর্বনিম্ন বেতন ৮০০০ টাকা নির্ধারন করা হয়েছে। যা বর্তমান বেতন কাঠামোর ৫১% বেশি।

২০১৩ সালের পর থেকে পোশাক শ্রমিকের সর্বনিম্ন বেতন ৫৩০০ টাকায় আটকে ছিল। অর্থাৎ, কোন একজন নিয়োগ হলেই তার বেতন হবে সর্বনিম্ন ৫৩০০ টাকা। 

২০১৩ থেকে ২০১৮, দীর্ঘ এই সময়ে টেক্সটাইল শিল্পের দারুণ বিপ্লব ঘটেছে, নিঃসন্দেহে এক্সপোর্ট বেড়েছে অনেকগুন। বর্তমান সময়ে যেখানে ৫০ বিলিয়ন ডলার এক্সপোর্ট টার্গেট ধরা হয়, সেই তুলনায় শ্রমিকদের উপর মালিকপক্ষ ও সরকারের উদাসীনতা ছিল।

এনিওয়ে, ওনাদের উদ্দেশ্যে একটা সহজ অংক মিলিয়ে দিই-

• এই ছবিতে প্রথমেই গার্মেন্টস না বোঝা লোকেরা লাফিয়ে উঠবে! মাত্র ১৫ টাকা/ ২০ টাকা বাড়িয়েছে গ্রেড ভিত্তিক!!

আসুন একটু অতীত ঘাটি-
  
>>> সাল- ২০১৩ 

১ম গ্রেড-  ১৩,০০০/-

২য় গ্রেড- ১০,৯০০/-

৩য় গ্রেড- ৬৪০৫/-

৪র্থ গ্রেড- ৬৪২০/-

৫ম গ্রেড- ৬০৪২/-

৬ষ্টগ্রেড-  ৫৬৭৮/-

৭ম গ্রেড- ৫৩০০/-

মুলত যারা সরকারী নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী ২০১৮ আর ২০১৯ এর গড়মিল ধরতে পারছেন না...  তাদের চোখের পর্দাটা সরিয়ে দিই... 

নতুন বেতম কাঠামো অনুযায়ী ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে কার্যকর করা হইছে। মানে দাঁড়ায়- বর্তমান শ্রমিকেরা এই নির্ধারিত বেতন পাবে ২০১৯ এর জানুয়ারীতে/ অলরেডি পেয়েছে! 

যদিও সাল- ২০১৮ ( এক্টুয়ালী বেতন প্রাপ্তি ২০১৯ এর জানুয়ারী ৭ তারিখ)

পার্থ্যক্য মিলিয়ে নিই 

সাল- ২০১৩   --সাল-২০১৮ – বাড়তি বেতন
১ম- ১৩,০০০/- – ১৭৫১০/- = ৪৫১০/-
২য়-১০,৯০০/-  – ১৪৬৩০/- = ৩৭৩০ 
৩য়-৬৪০৫/-    -  ৯৫৯০/-  = ৩১৮৫/- 
৪র্থ-৬৪২০/-    -  ৯২৪৫/-   = ২৮২৫/- 
৫ম-৬০৪২/-    -  ৮৮৫৫/-  =২৮১৩/- 
৬ষ্ট-৫৬৭৮/-    -  ৮৪০৫/-  = ২৭২৭/-
৭ম-৫৩০০/-    - ৮০০০/-   = ২৭০০/-  

এখন কথা হইল, শ্রমিকেরা এতে সন্তুষ্ট না হওয়ায় বাড়তি বেতন পাওয়ার  -৩-৪ দিনের মাথায় আরো কিছু টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় ! যেটা সামনের পাবে ফেব্রুয়ারী মাসে-  

সাল-২০১৩-----২০১৮(ডিসে.) এবং ২০১৯(জানু.)-----মোট বাড়তি বেতন
১ম- ১৩,০০০ – (১৭৫১০) ১৮২৭৫/- = ৪৫১০/-+৭৬৫/- = ৫২৭৫/-
২য়-১০,৯০০  – (১৪৬৩০) ১৫৪১৬/- =৩৭৩০/-+৭৮৬/- = ৪৫১৬/- 
৩য়-৬৪০৫    –  (৯৫৯০)    ৯৮৪৫/-  = ৩১৮৫/-+২৫৫/- = ৩৪৪০/-
৪র্থ-৬৪২০    –  (৯২৪৫)   ৯৩৪৭/-   = ২৮২৫/-+১০২/- = ২৯২৭/-
৫ম-৬০৪২    –  (৮৮৫৫)   ৮৮৭৫/-  =২৮১৩/-+২০/- = ২৮৩৩/- 
৬ষ্ট-৫৬৭৮    –  (৮৪০৫)   ৮৪২০/-  = ২৭২৭/-+১৫/- = ২৭৪২/- 
৭ম-৫৩০০    –  (৮০০০)   ৮০০০/-   = ২৭০০/-

কোই আমি তো কোথাও শুধুমাত্র  ১৫ টাকা/ ২০ টাকা বাড়ানো দেখলাম না! 
তবে কেন এই অপপ্রচার?? কেন কিছু হলুদ মিডিয়া প্রতনিয়ত এ ধরনের আজগুবি হেডলাইন দিয়ে সংবাদ প্রচার করে আরো উস্কানী দিচ্ছে? 

 প্লীজ... না বুঝলে আরো একবার উপরের হিসেবটা দেখুন।। 

তবুও প্লিজ আর এভাবে উস্কানী দিয়েন না... বাংলাদেশের অর্থনীতি দাড়িয়ে  আছে এই পোশাক শিল্পের উপর। প্রায় ২.৫ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান যোগায় এই পোশাক কারখানা!

 বেকার সমস্যা সমাধান, কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এ শিল্পের অবদান ঈর্ষণীয়। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ এই শিল্পের হাত ধরে বিশ্ববাজারে একটি ব্র্যান্ড সৃষ্টি করেছে। যার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত আমাদের দেশ বিশ্বদরবারে নতুন পরিচিতি ও সুনাম অর্জন করছে। 

এই গেল সিম্পল বাড়তি বেতন নিয়ে কথা! এর বাইরেও রয়েছে হাজারো কথা। সে গুলো আগে জানবে হবে/ বুঝতে হবে। শুধু মালিকের লাভ দেখলেই হবে না। গার্মেন্টস চালানোর খরচটাও চিন্তা করতে হবে। 

এতগুলো মানুষের কর্মসংস্থান করা মুখের কথা না। খুব বেশী হলে তারা লাক্সারী লাইফ লীড করে। বাকী টাকা-পয়সা দিয়ে মালিকেরা  নতুন করে বিজনেস/ফ্যাক্টরী  বানায়। আরো নতুন বেকার মানুষের কাজের 
সু্যোগ করে দেয়... এই তো?

এটাই কি মালিকদের অপরাধ? 


আসুন এই দঃসময়ে ফ্যাক্টরী গুলোর পাশে দাঁড়াই... না দাড়াইলেও অন্তত গুজব সৃষ্টি থেকে বিরত থাকি।  

পরিশেষে বলতে চাই, ওভারটাইম সহ সব মিলিয়ে একজন গার্মেন্টস শ্রমিক আয় করে নিম্নতম ১০০০০ টাকা থেকে ১৬০০০ টাকা। তারপরও নেতিবাচক আলোচনা গার্ন্টমেস নিয়েই। 

NGO ভিত্তিক Trade Unions... নানা নামে শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশের এ সেক্টরের জন্য সবচেয়ে বড় ক্ষতিকর সংগঠন। তারাই দেশে ও বিদেশে এ সেক্টরের জন্য Negative ম্যাসেজ দিয়ে বেড়ায়। বর্তমানে তাঁরাও এ সেক্টরের অশান্তির জন্য দায়ী। সরকারকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে এবং নিতে হবে কার্যকর ব্যবস্থা। 

ave Gaments
By Murad Khan


কোন মন্তব্য নেই: